কোরান সূরা ইউনুস আয়াত 10 তাফসীর
﴿دَعْوَاهُمْ فِيهَا سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَتَحِيَّتُهُمْ فِيهَا سَلَامٌ ۚ وَآخِرُ دَعْوَاهُمْ أَنِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ﴾
[ يونس: 10]
সেখানে তাদের প্রার্থনা হল ‘পবিত্র তোমার সত্তা হে আল্লাহ’। আর শুভেচ্ছা হল সালাম আর তাদের প্রার্থনার সমাপ্তি হয়, ‘সমস্ত প্রশংসা বিশ্বপালক আল্লাহর জন্য’ বলে। [সূরা ইউনুস: 10]
Surah Yunus in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Yunus ayat 10
সেখানে তাদের আহ্বান হবে -- ''তোমারই মহিমা হোক, হে আল্লাহ্?’’ আর তাদের অভিবাদন সেখানে হবে -- ''সালাম’’, আর তাদের শেষ আহ্বান হবে -- ''সকল প্রশংসা হচ্ছে আল্লাহ্র যিনি সমস্ত বিশ্বজগতের প্রভু’’।
Tafsir Mokhtasar Bangla
১০. জান্নাতে তাদের দু‘আ হবে তাসবীহ ও আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করা। তাদের জন্য আল্লাহ, ফিরিশতা এবং তাদের একের জন্য অপরের সম্ভাষণ হবে সালাম। আর তাদের দু‘আর পরিসমাপ্তি হবে সকল সৃষ্টির প্রতিপালক আল্লাহর প্রশংসা দিয়ে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
সেখানে তাদের বাক্য হবে, ‘সুবহানাকাল্লাহুম্মা’ ( হে আল্লাহ! তুমি মহান পবিত্র )![১] এবং পরস্পরের অভিবাদন হবে সালাম।[২] আর তাদের শেষ বাক্য হবে, ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’ ( সমস্ত প্রশংসা সারা জাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য )। [১] অর্থাৎ জান্নাতিগণ সর্বদা আল্লাহর প্রশংসা ও তসবীহ পাঠে রত থাকবে। যেমন হাদীসে এসেছে যে " জান্নাতিগণের মুখে এমনভাবে তসবীহ ও তাহমীদ স্বয়ংক্রিয় করা হবে, যেমন শ্বাস-প্রশ্বাস স্বয়ংক্রিয়। " ( মুসলিম ) অর্থাৎ, যেমন নিজের কোন ইচ্ছা ব্যতিরেকে যেরূপ শ্বাস-প্রশ্বাস চলতে থাকে, অনুরূপ জান্নাতীদের মুখে কোন ইচ্ছা ছাড়াই আল্লাহর হামদ ও তাসবীহর শব্দ আসতে থাকবে। [২] অর্থাৎ তারা পরস্পরকে এই ( আসসালামু আলাইকুম ) বলে সালাম দেবে, ফিরিশতাগণও তাদেরকে সালাম দেবেন।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
সেখানে তাদের ধ্বনি হবেঃ ‘হে আল্লাহ্! আপনি মহান, পবিত্র [ ১ ]! এবং সেখানে তাদের অভিবাদন হবে, ‘সালাম’ [ ২ ] আর তাদের শেষ ধ্বনি হবেঃ ‘সকল প্রশংসা সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ্র প্রাপ্য [ ৩ ]!’ [ ১ ] এ আয়াতে জান্নাতবাসীদের প্রথম ও প্রধান অবস্থা বর্ণিত হয়েছে [ সা’দী ] বলা হয়েছে যে, জান্নাতবাসীদের ( دعوى ) হবে ( سُبْحٰنَكَ اللّٰهُمَّ )। এখানে ( دعوى ) শব্দটির অর্থ কি, এ ব্যাপারে বিভিন্ন মত রয়েছে। কারণ, ( دعوى ) শব্দটির কয়েকটি অর্থ রয়েছে- ( এক ) দাবী করা। তখন আয়াতের অর্থ হবে, দুনিয়ায় ও আখেরাতে সবসময়ই জান্নাতবাসীগণের দাবী ছিল আল্লাহ্ তা'আলাকে যাবতীয় দোষ-ত্রুটিমুক্ত ঘোষণা করা, তাঁর জন্য উলুহিয়াত তথা যাবতীয় ইবাদাত সাব্যস্ত করা। তাই তারা জান্নাতেও এটার দাবী করবে। [ তাবারী ] কোন কোন মুফাসসির আবার এ অর্থ করেছেন যে, এখানে দাবী করার অর্থ সার্বক্ষণিক এ কাজে লেগে থাকা। ছুটতে থাকে। [ ফাতহুল কাদীর ] ( দুই ) দোআ করা। [ তাবারী ] আর দোআ করার অর্থ নির্ধারণে আলেমগণ বেশকিছু মতামত ব্যক্ত করেছেন- ( ক ) তাদের আহবান ও সম্বোধন হবে তাসবীহ ও তাহমীদের মাধ্যমে। ( খ ) তাদের ইবাদাত হবে সুবাহানাকাল্লাহুম্মা এ কালেমার মাধ্যমে। [ বাগভী ] ( গ ) তাদের কথা ও কাজও হবে উক্ত কালেমার মাধ্যমে। [ বাগভী ] এসবগুলোই অর্থ হতে পারে। কারণ, আমরা জানি যে, দুআ দু'প্রকার। ( এক ) চাওয়ার মাধ্যমে দু’আ। যেমন আল্লাহ আমাকে অমুক বস্তু দান করুন। এ ধরণের দোআ অনেক পরিচিত। ( দুই ) ইবাদাত ও প্রশংসার মাধ্যমে দোআ যাতে আল্লাহর প্রশংসা এবং শুকরিয়া থাকে। এ হিসাবে কুরআন ও সুন্নায় বহু দোআ এসেছে। যেমন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ সবচেয়ে উত্তম দোআ হলো আলহামদুলিল্লাহ। [ তিরমিযীঃ ৩৩০৫, ইবনে মাজাহঃ ৩৭৯০ ]। অনুরূপভাবে অন্য হাদিসে বলা হয়েছেঃ মুসীবতের দো’আ হচ্ছে- ( لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ الْعَظِيمُ الْحَلِيمُ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَبُّ السَّمَوَاتِ، وَرَبُّ الْأَرْضِ، وَرَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ ) অর্থাৎ, ‘আল্লাহ ছাড়া ইবাদাতের যোগ্য কোন মা’বুদ নেই, তিনি মহান, সহিষনু। আল্লাহ্ ছাড়া কোন মা’বুদ নেই, তিনি আরশের মহান রব। আল্লাহ্ ছাড়া ইবাদাতের যোগ্য কোন মা’বুদ নেই, তিনি আসমান-যমীনের রব এবং ‘আরশের মহান রব’। [ বুখারীঃ ৬৩৪৫, মুসলিমঃ ২৭৩০ ] অনুরূপভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেনঃ যিন্নুন ( ইউনুস ) 'আলাইহিস সালাম যখন মাছের পেটে ছিলেন তখন তার দো'আ ( লা ইলাহা ইল্লা আনৃতা সুবহানাকা ইন্নিকুন্তু মিনায্যোয়ালিমীন ) এ দোআ দ্বারা যখনই কোন মুসলিম কিছুর জন্য দো'আ করবে, আল্লাহ তার দো'আ কবুল করবেন। [ তিরমিযীঃ ৩৫০০ ] এ সমস্ত হাদীস এবং এ জাতীয় অন্যান্য অনেক হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হচ্ছে যে, আল্লাহর প্রশংসা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে দোআ করার নির্দেশ শরীআতে এসেছে। তাই অনেক আলেম এ ধরণের প্রশংসাসূচক দোআকে চাওয়াসূচক দোআ হতে শ্রেষ্ঠ বলে মত প্রকাশ করেছেন। এসব কিছু থেকে একথা স্পষ্ট হচ্ছে যে, জান্নাতের অধিবাসীগণের আল্লাহর প্রশংসা, পবিত্রতা ঘোষণা করা মূলতঃ আল্লাহর কাছে দোআ করা। কোন কোন মুফাসসির বলেন, যেহেতু তাদের উপর থেকে ইবাদতের যাবতীয় বোঝা নামিয়ে দেয়া হয়েছে, তখন তাদের কাছে শুধু বাকী থাকবে সবচেয়ে বড় স্বাদের বিষয়। আর তা হচ্ছে আল্লাহর যিকর করা। যা অন্যান্য যাবতীয় নে’আমতের চেয়ে তাদের কাছে বেশী মজাদায়ক হবে। যাতে থাকবে না কোন কষ্ট। [ সা'দী ] ( তিন ) আশা-আকাঙ্খা করা, [ ফাতহুল কাদীর ] অর্থাৎ জান্নাতে তাদের সবধরণের নেয়ামত লাভের পর তাদের আর কোন চাহিদা বাকী থাকবে না। তাই তারা শুধু সুবাহানাকা আল্লাহুম্মা বা হে আল্লাহ্! আপনি কতই না পবিত্র! এ প্রশংসামূলক বাক্যই তাদের দ্বারা সর্বক্ষণ ঘোষিত হোক এমনটি আশা করবে এবং বলতে চাইবে। ইবন কাসীর মোটকথা, জান্নাতবাসীদের যাবতীয় দোআ, কাজ, কথা, দাবী, আশা-আকাঙ্খা সবকিছুই হবে আল্লাহর তাসবীহ পাঠ ও তার তাহমীদ বা প্রশংসায় নিয়োজিত থাকা। এ ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ "জান্নাতবাসীগণ জান্নাতে খাবে এবং পান করবে, কিন্তু কোন থুথু, পায়খানা-পেশাব, সর্দি-কাশির সম্মুখীন হবে না। শুধুমাত্র ঢেকুর আসবে যাতে মিস্কের সুঘ্ৰাণ থাকবে। তাদের মনে শ্বাস-প্রশ্বাসের মতই আল্লাহর তাসবীহ তাহমীদ ( সুবাহানাল্লাহ-আলহামদুলিল্লাহ ) পাঠ করতে ইলহাম ( মনে উদিত করে দেয়া ) হবে। [ মুসলিমঃ ২৮৩৫ ] [ ২ ] জান্নাতবাসীদের দ্বিতীয় অবস্থা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে ( وَ تَحِیَّتُهُمۡ فِیۡهَا سَلٰمٌ ) প্রচলিত অর্থে ( تَحِيَّةٌ ) বলা হয় এমন শব্দ বা বাক্যকে যার মাধ্যমে কোন আগন্তুক কিংবা অভ্যাগতকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। যেমন, সালাম, স্বাগতম, খোশ আমদেদ, কিংবা আহলান ওয়া সাহ্লান প্রভৃতি। সুতরাং আয়াতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ্ তা'আলা অথবা ফিরিশতাদের পক্ষ থেকে জান্নাতবাসীদেরকে ( سلام ) এর মাধ্যমে অভ্যর্থনা জানানো হবে। কুরতুবী; ফাতহুল কাদীরা অর্থাৎ এ সুসংবাদ দেয়া হবে যে, তোমরা যে কোন রকম কষ্ট ও অপছন্দনীয় বিষয় থেকে হেফাযতে থাকবে। এ সালাম স্বয়ং আল্লাহ্ তা'আলার পক্ষ থেকেও হতে পারে। যেমন, সূরা ইয়াসীনে রয়েছে ( سَلٰمٌ ۟ قَوۡلًا مِّنۡ رَّبٍّ رَّحِیۡمٍ ) আবার ফিরিশতাদের পক্ষ থেকেও হতে পারে। আবার ফিরিশতা কর্তৃক তাদের রবের পক্ষ থেকেও হতে পারে। [ বাগভী ] যেমন, অন্যত্র এরশাদ হয়েছে ( وَ الۡمَلٰٓئِکَةُ یَدۡخُلُوۡنَ عَلَیۡهِمۡ مِّنۡ کُلِّ بَابٍ ٭ سَلٰمٌ عَلَیۡکُمۡ ) অর্থাৎ ফিরিশতাগণ প্রতিটি দরজা দিয়ে সালামুন আলাইকুম বলতে বলতে জান্নাতবাসীদের কাছে আসতে থাকবেন। [ সূরা আর-রাদঃ ২৩-২৪ ] আর এ দু'টি বিষয়ে বিরোধ-বৈপরীত্ব নেই যে, কখনো সরাসরি স্বয়ং আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে এবং কখনো ফিরিশতাদের পক্ষ থেকে সালাম আসবে। আবার জান্নাতীগণ পরস্পরকে এ সালামের মাধ্যমে সাদর সম্ভাষণ জানাবেন। [ ফাতহুল কাদীর; সাদী ] আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ ( تَحِیَّتُهُمۡ یَوۡمَ یَلۡقَوۡنَهٗ سَلٰمٌ ) অর্থাৎ "যেদিন তারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎকরবে, সেদিন তাদের পরস্পর সম্ভাষণ হবে সালামের মাধ্যমে”। [ সূরা আহ্যাবঃ ৪৪, অনুরূপ আয়াত আরো দেখুন, ওয়াকি'আঃ ২৫-২৬ ] অর্থাৎ সালাম শব্দটি তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে, ফিরিশতাদের পক্ষ থেকে এবং মুমিনগণ পরস্পর নিজেদের মধ্যে বিনিময় করবে। সালাম শব্দের আরেক অর্থ দোআ বা যাবতীয় আপদ থেকে নিরাপত্তা। তখন অর্থ হবে, জাহান্নামবাসীরা যে বিপদের সম্মুখীন হয়েছে তা থেকে তোমাদেরকে নিরাপত্তা প্রদান করা হচ্ছে। [ তাবারী ] [ ৩ ] জান্নাতবাসীদের তৃতীয় অবস্থা বর্ণনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে যে, জান্নাতবাসীদের সর্বশেষ দোআ হবে ( اَلۡحَمۡدُ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ) অর্থাৎ জান্নাতবাসীরা জান্নাতে পৌছার পর আল্লাহ তা'আলাকে জানার ক্ষেত্রে বিপুল উন্নতি লাভ করবে। তখন তারা শুধু তার প্রশংসাই করতে থাকবে। জান্নাতবাসীদের প্রাথমিক দো’আ হবে ( سُبْحَانَكَ اللّٰهُمَّ ) আর সর্বশেষ দো’আ হবে ( اَلۡحَمۡدُ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ) এতে আল্লাহ রাববুল আলামীন-এর বিশেষ কিছু গুণ-বৈশিষ্টের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। [ বাগভী ] যেমন, পরাক্রম ও মহত্ত্ব গুণ যাতে যাবতীয় দোষ-ত্রুটি হতে আল্লাহ তা'আলার পবিত্রতার কথা ব্যক্ত করা হয়েছে। আরো রয়েছে সিফাতে করম যাতে তার মহানুভবতা, পরিপূর্ণতা ও পরাকাষ্ঠার উল্লেখ রয়েছে। কুরআনুল কারীমের ( تَبٰرَکَ اسۡمُ رَبِّکَ ذِی الۡجَلٰلِ وَ الۡاِکۡرَامِ ) [ সূরা আর-রাহমান: ৭৮ ] আয়াতে এতদুভয় গুণ-বৈশিষ্টের প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে। এ আয়াত এবং এ জাতীয় অন্যান্য আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হচ্ছে যে, আল্লাহ তা'আলা সদা প্রশংসিত। সহীহ হাদীসে এসেছে, “ জান্নাতবাসীগণকে তাসবীহ ও তাহমীদ যথা সুবহানাল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহর ইলহাম এমনভাবে করা হবে যেমনিভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের ইলহাম করা হবে" [ মুসলিমঃ ২৮৩৫ ] এটা একথাই প্রমাণ করে যে, মহান আল্লাহ সদা প্রসংশিত । আমরা যদি কুরআনের বিভিন্ন আয়াতের প্রতি তাকাই তাহলে দেখতে পাব যে, আল্লাহ নিজেকে বিভিন্নভাবে প্রশংসনীয় বলে ব্যক্ত করেছেন। সূরা আলফাতিহার তাফসীরে তার বর্ণনা চলে গেছে।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৯-১০ নং আয়াতের তাফসীর: এখানে ঐ ভাগ্যবানদের খবর দেয়া হচ্ছে যারা ঈমান এনেছে, নবী রাসূলদের সত্যতা স্বীকার করেছে, আল্লাহ ও তার রাসূল ( সঃ )-এর অনুগত হয়েছে এবং ভাল কাজ করেছে, তাদের ব্যাপারে এই ওয়াদা করা হয়েছে যে, তাদের নেক আমলের বিনিময়ে তাদেরকে হিদায়াত দান করা হবে। এখানে :এর । অক্ষরটি ( কারণবোধক ) হতে পারে। অর্থাৎ দুনিয়ায় তাদের ঈমান আনয়নের কারণে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে সরল সঠিক পথের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখবেন। শেষ পর্যন্ত তারা সেই পথ অতিক্রম করে নেবে এবং জান্নাত পর্যন্ত পৌছে যাবে। আবার এই অক্ষরটি ( সাহায্যবোধক ) হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন মুজাহিদ ( রঃ ) বলেছেন যে, তাদের সাথে একটা নূর ( আলো ) থাকবে যার সাহায্যে তারা পথ চলতে থাকবে। ইবনে জারীর ( রঃ )-এর উক্তি এই যে, তাদের আমলগুলো একটি সুন্দর প্রতিকৃতি ও সুগন্ধময় হাওয়ার আকার বিশিষ্ট হবে এবং তারা যখন কবর হতে উঠবে তখন এই সুন্দর প্রতিকৃতি তাদের আগে আগে চলবে এবং তাদেরকে সর্বপ্রকারের সুসংবাদ দিতে থাকবে । যখন সেই নেককার ব্যক্তি ঐ প্রতিকৃতিকে জিজ্ঞেস করবেঃ “ তুমি কে?" সে উত্তরে বলবেঃ “আমি তোমার নেক আমল ।” সে আলোকবর্তিকারূপে তার আগে আগে চলবে, এবং তাকে জান্নাত পর্যন্ত পৌছিয়ে দেবে। এজন্যেই আল্লাহ পাক ( আরবী )-এ কথা বলেছেন। পক্ষান্তরে কাফিরের আমলগুলো অত্যন্ত কুৎসিত প্রতিকৃতির আকারে হবে এবং দুর্গন্ধময় হাওয়ার দেহ ধারণ করবে। সে তার সঙ্গীকে আঁকড়ে ধরে থাকবে এবং জাহান্নামে নিয়ে গিয়ে ফেলে দেবে। কাতাদা ( রঃ )-এরও উক্তি এটাই। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সর্বাধিক জ্ঞানের অধিকারী।জান্নাতবাসীদের অবস্থা এই হবে যে, ( আরবী ) হবে তাদের সম্বোধন। ইবনে জুরাইজ ( রঃ ) বলেন যে, যখন তাদের পার্শ্ব দিয়ে এমন পাখী উড়ে যাবে যার চাহিদা তাদের মনে জেগে উঠবে তখন উল্লিখিত কালেমা তাদের মুখে উচ্চারিত হবে। তথায় এটাই হবে তাদের উক্তি। তখন একজন ফিরিশতা তাদের আকাঙ্ক্ষিত বস্তু নিয়ে হাযির হয়ে তাদেরকে সালাম করবেন। তারা সালামের জবাব দেবে। তাই আল্লাহ তাআলা ( আরবী ) -এ কথা বলেছেন। তারা ঐ খাদ্য খাওয়ার পর আল্লাহর শাকর ও প্রশংসা করবেন। এ জন্যেই মহান আল্লাহ ( আরবী )-এই উক্তি করেছেন। মুকাতিল ইবনে হাইয়ান ( রঃ ) বলেন যে, জান্নাতবাসী যখন কোন খাবার চেয়ে নেয়ার ইচ্ছে করবে তখন ( আরবী ) বলবে। তখন তার কাছে দশ হাজার খাদেম একটি সোনার খাঞ্জা নিয়ে হাযির হয়ে যাবে। প্রত্যেক খাঞ্জায় এমন নতুন খাদ্য থাকবে যা অন্য খাঞ্জায় থাকবে না। জান্নাতবাসী তখন প্রত্যেক খাঞ্জা হতেই কিছু না কিছু খাবে। সুফইয়ান সাওরী ( রঃ ) বলেন যে, যখন কোন লোক কোন জিনিস চাইবে তখন ( আরবী ) বলবে। এই আয়াতটি ( আরবী ) ( ৩৩:৪৪ ) এবং ( আরবী ) ( ৫৬:২৫-২৬ ) ইত্যাদি আয়াতগুলোর সহিত সাদৃশ্যযুক্ত। এগুলো একথাই প্রমাণ করে যে, আল্লাহ পাক সদা সর্বদাই প্রশংসিত এবং সর্বদাই পূজনীয়। এজন্যেই সৃষ্টির শুরুতেও তিনি স্বীয় সত্তার প্রশংসা করেছেন এবং অবতারণের শুরুতেও। যেমন তিনি বলেছেনঃ ( আরবী ) ( ১৮:১ ) আর এক জায়গায় বলেছেনঃ ( আরবী ) ইত্যাদি। ( ৬:১ )তিনি প্রথমেও প্রশংসিত এবং শেষেও প্রশংসিত, হয় দুনিয়াই হাক বা দ্বীনই হাক। এজন্যেই হাদীসে এসেছে যে, জান্নাতবাসীকে তাসবীহ ও তাহমীদ শেখানো হয়েছে, যেমন নফসের কামনা ও বাসনাও তাদেরকে দেয়া হয়েছে। যেমন আল্লাহর নিয়ামতরাজী তাদের উপর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়, তেমন তার তাহমীদ ও তাবীও বর্ধিত হতে থাকে। তা কখনও শেষ হবার নয়। আল্লাহ ছাড়া কোন মা’রূদ ও প্রতিপালক নেই।
সূরা ইউনুস আয়াত 10 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা প্রবল পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
- কখনই নয়; যদি তোমরা নিশ্চিত জানতে।
- অতঃপর তাঁর পালনকর্তা তাঁকে উত্তম ভাবে গ্রহণ করে নিলেন এবং তাঁকে প্রবৃদ্ধি দান করলেন-অত্যন্ত সুন্দর
- যাদের মনে ভয় রয়েছে, তাদের উপর শয়তানের আগমন ঘটার সাথে সাথেই তারা সতর্ক হয়ে যায়
- না তার কন্যা-সন্তান আছে আর তোমাদের আছে পুত্রসন্তান?
- আর কিই বা ক্ষতি হত তাদের যদি তারা ঈমান আনত আল্লাহর উপর কেয়ামত দিবসের উপর
- আমি একে নাযিল করেছি শবে-কদরে।
- না তারা নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছে? বরং তারা বিশ্বাস করে না।
- এ হলো গায়েবী সংবাদ, যা আমি আপনাকে পাঠিয়ে থাকি। আর আপনি তো তাদের কাছে ছিলেন
- আর যখন আল্লাহ দু’টি দলের একটির ব্যাপারে তোমাদের সাথে ওয়াদা করেছিলেন যে, সেটি তোমাদের হস্তগত
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ইউনুস ডাউনলোড করুন:
সূরা Yunus mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Yunus শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers