কোরান সূরা বাকারাহ্ আয়াত 10 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Baqarah ayat 10 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা বাকারাহ্ আয়াত 10 আরবি পাঠে(Baqarah).
  
   

﴿فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ فَزَادَهُمُ اللَّهُ مَرَضًا ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ بِمَا كَانُوا يَكْذِبُونَ﴾
[ البقرة: 10]

তাদের অন্তঃকরণ ব্যধিগ্রস্ত আর আল্লাহ তাদের ব্যধি আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। বস্তুতঃ তাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে ভয়াবহ আযাব, তাদের মিথ্যাচারের দরুন। [সূরা বাকারাহ্: 10]

Surah Al-Baqarah in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Baqarah ayat 10


তাদের অন্তরে ব্যারাম, তাই আল্লাহ্ তাদের জন্য ব্যারাম বাড়িয়ে দিয়েছেন, আর তাদের জন্য ব্যথাদায়ক শাস্তি, যেহেতু তারা মিথ্যা বলে চলেছে।


Tafsir Mokhtasar Bangla


১০. তাদের অন্তরে সন্দেহ বাসা বেঁধেছে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের সন্দেহ আরো বাড়িয়ে দেন। কারণ, প্রতিদান সাধারণত যে কারো আমল অনুযায়ীই হয়ে থাকে। তাদের জন্য জাহান্নামের তলদেশে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। কারণ, তারা আল্লাহ ও তাঁর বান্দাদের সাথে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। উপরন্তু তারা মুহাম্মাদ ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) আনীত বিধানের প্রতি মিথ্যারোপ করেছে।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


তাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে। অতঃপর আল্লাহ তাদের ব্যাধি বৃদ্ধি করেছেন[১] ও তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি, কারণ তারা মিথ্যাচারী। [১] 'ব্যাধি' বলতে এখানে কুফরী ও নিফাক্বের ( হার্দিক ) ব্যাধিকে বুঝানো হয়েছে। এই ব্যাধি যদি সারানোর চিন্তা না করা হয়, তাহলে তা বাড়তে থাকে। অনুরূপ মিথ্যা বলা মুনাফিক্বদের একটি নিদর্শন; যা হতে দূরে থাকা অপরিহার্য।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


তাদের অন্তরসমূহে রয়েছে ব্যধি। অতঃপর আল্লাহ্‌ তাদের ব্যধি আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন []। আর তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি, কারণ তারা মিথ্যাবাদী []। [] এ আয়াতে বলা হয়েছে যে, তাদের অন্তর রোগাক্রান্ত বা অসুস্থ। তাই আল্লাহ্‌ তা'আলা তাদের এ রোগকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন। রোগ সে অবস্থাকেই বলা হয়, যে অবস্থায় মানুষ স্বাভাবিক অবস্থার বাইরে চলে যায় এবং তাদের কাজ-কর্মে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। যার শেষ পরিণাম ধ্বংস ও মৃত্যু। এ আয়াতে তাদের অন্তর্নিহিত কুফরকে রোগ বলা হয়েছে যা আত্মিক ও দৈহিক উভয় বিবেচনায়ই বড় রোগ। রূহানী ব্যাধি তো প্রকাশ্য; কেননা, প্রথমতঃ এ থেকে স্বীয় পালনকর্তার না-শোকরি ও অবাধ্যতা সৃষ্টি হয়। যাকে কুফর বলা হয়, তা মানবাত্মার জন্য সর্বাপেক্ষা কঠিন ব্যাধি। মানবসভ্যতার জন্যও অত্যন্ত ঘৃণ্য দোষ। দ্বিতীয়তঃ দুনিয়ার হীন উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য সত্যকে গোপন করা এবং স্বীয় অন্তরের কথাকে প্রকাশ করার হিম্মত না করা - এ ব্যাপারটিও অন্তরের বড় রোগ। মুনাফেকদের দৈহিক রোগ এজন্য যে, তারা সর্বদাই এ ভয়ের মধ্যে থাকে যে, না জানি কখন কোথায় তাদের প্রকৃত স্বরূপ প্রকাশ হয়ে পড়ে। দিনরাত এ চিন্তায় ব্যস্ত থাকাও একটা মানসিক ও রীরিক ব্যাধিই বটে। তাছাড়া এর পরিণাম অনিবার্যভাবেই ঝগড়া ও শক্ৰতা। কেননা, মুসলিমদের উন্নতি ও অগ্রগতি দেখে তারা সবসময়ই হিংসার আগুনে দ্বন্ধ হতে থাকে, কিন্তু সে হতভাগা নিজের অন্তরের কথাটুকুও প্রকাশ করতে পারে না। ফলে সে শারিরীক ও মানসিকভাবে অসুস্থ থাকে। আল্লাহ্‌ তাদের রোগকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন”-এর অর্থ এই যে, তারা যেহেতু তাদের অন্তরকে ব্যাধি দিয়ে কলুষিত করেছে সেহেতু তাদের এ কলুষতা দিন দিন বাড়তেই থাকবে । এখানে মূলতঃ যা বুঝানো হয়েছে তা হলো, আল্লাহ্ তা'আলা কারও উপর যুলুম করেন না। কেউ খারাপ পথে চলতে না চাইলে তাকে সে পথে জোর করে চলতে বাধ্য করেন না এ কথা কুরআনের অন্যান্য আয়াতেও এসেছে। যেমন, সূরা আল-মায়েদার ৪৯, সূরা আল-আন’আমের ১১০, সূরা আত-তাওবাহর ১২৫, সূরা আস্-সফফ -এর ৫নং আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বুঝানো হয়েছে যে, তাদের খারাপ কর্মকাণ্ডের কারণেই তাদের পরিণতি খারাপ হয়েছে। আর হিদায়াতও নসীব হয়নি। [] মুনাফিকদের এমন দু’টি চরিত্র ছিল যে, তারা নিজেরা মিথ্যা বলত, অপরকেও মিথ্যাবাদী বলত। [ ইবনে কাসীর ] এর দ্বারা বোঝা যায় যে, মিথ্যা বলার অভ্যাসই তাদের প্রকৃত অন্যায়। এ বদ-অভ্যাসই তাদেরকে কুফর ও নিফাক পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। এ জন্যই অন্যায়ের পর্যায়ে যদিও কুফর ও নিফাকই সর্বাপেক্ষা বড়, কিন্তু এসবের ভিত্তি ও বুনিয়াদ হচ্ছে মিথ্যা। তাই আল্লাহ্‌ তা'আলা মিথ্যা বলাকে মূর্তিপূজার সাথে যুক্ত করে বলেছে, “ মূর্তিপূজার অপবিত্রতা ও মিথ্যা বলা হতে বিরত থাক” । [ সূরা আল-হাজ্জ:৩০ ] হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ তোমরা মিথ্যা থেকে বেঁচে থাক কেননা, মিথ্যা ঈমান দূর করে”। [ মুসনাদে আহমাদ: ১/৫ ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


পীড়ার অর্থ এখানে সংশয় ও সন্দেহ। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ), হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) এবং অন্যান্য কয়েকজন সাহাবী ( রাঃ ) হতে এটাই বর্ণিত আছে। হযরত মুজাহিদ ( রঃ ), হযরত ইকরামা ( রাঃ ), হযরত হাসান বসরী ( রঃ ), হযরত আবুল আলিয়া ( রঃ ), হযরত রাবী' বিন আনাস ( রঃ ) এবং হযরত কাতাদারও ( রঃ ) এটাই মত। হযরত ইকরামা ( রঃ ) এবং হযরত তাউস ( রঃ ) এর তাফসীর করেছেন রিয়া বা কৃত্রিমতা এবং হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে এর তাফসীর ‘নিফাক' বা কপটতাও বর্ণিত হয়েছে হযরত যায়েদ বিন আসলাম ( রঃ ) বলেন যে, এখানে উদ্দেশ্য হচ্ছে ধর্মীয় রোগ, শারীরিক রোগ নয়। ইসলাম সম্পর্কে তাদের সংশয় ও সন্দেহজনিত একটা বিশেষ রোগ ছিল, আল্লাহ তাদের সেই রোগ বাড়িয়ে দিলেন। যেমন কুরআন মাজীদে আছেঃ ‘ঈমানদারদের ঈমান আরও বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় এবং তারা এতে আরও আনন্দ উপভোগ করে; আর যাদের অন্তরে রোগ আছে তাদের এই অশ্লীলতা ও অপবিত্রতা আরও বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়। অর্থাৎ তাদের পাপ ও গুমরাহী আরও বেড়ে যায় এবং এই প্রতিদান তাদের কাজের সঙ্গে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপুর্ণ।এই তাফসীরই উত্তম। এই ফরমানও ঠিক এরই মতঃ ( আল্লাহ ) হিদায়াত প্রাপ্তদের হিদায়াত বৃদ্ধি করে দেন এবং তাদেরকে পরহেযগারী দান করেন। কারীগণ ইয়াকযেবুনকে ইউকায়েবুনাও পড়েছেন। মুনাফিকদের মধ্যে এই বদ অভ্যাস ছিল যে, তারা মিথ্যা কথাও বলতো এবং অবিশ্বাসও করতো। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) মুনাফিকদেরকে চেনা সত্ত্বেও তাদেরকে হত্যা করেননি। এর কারণ এই যে, সহীহ বুখারী ও মুসলিমের বর্ণনায় আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হযরত উমারকে ( রাঃ ) বলেনঃ মুহাম্মদ ( সঃ ) তাঁর সঙ্গীগণকে হত্যা করে থাকেন এ চর্চা হওয়াটা আমি আদৌ পছন্দ করি না।' ভাবার্থ এই যে, কপটদেরকে তাদের অন্তরের কুফরীর জন্যে যে হত্যা করা হয়েছে, আশে পাশের মরুচারী বেদুঈনদের এটা জানা থাকবে না। তাদের দৃষ্টি তো শুধু বাহ্যিকের উপরই থাকবে। সুতরাং যখন তাদের মধ্যে এ সংবাদ প্রচারিত হবে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) নিজের সঙ্গীগণকে হত্যা করেছেন তখন তারা হয়তো ভয়ে ইসলাম গ্রহণ থেকে বিরত থাকবে। কুরতুবী ( রঃ ) বলেনঃ “ আমাদের আলেমদেরও এটাই মত । ঠিক এরূপভাবেই রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) মুআল্লাফাতে কুবকে ( অর্থাৎ যাদের মন ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করা হতো ) মালধন দান করতেন, যদিও তিনি তাদের খারাপ আকীদা সম্পর্কে অবহিত থাকতেন।হযরত ইমাম মালিকও ( রঃ ) মুনাফিকদের হত্যা না করার কারণ এটাই বর্ণনা করেছেন। যেমন মুহাম্মদ বিন জাহাম ( রঃ ), কাযী ইসমাঈল ( রঃ ) এবং আবহারী ( রঃ ) নকল করেছেন। হযরত ইবনে মাজেশনের ( রঃ ) কথায় একটি কারণ এও নকল করা হয়েছেঃ নবী ( সঃ )-এর উম্মত যেন জানতে পারে যে, বিচারক নিজের অবগতির উপর ফায়সালা করতে পারেন না, মুনাফিকদেরকে হত্যা না করার এটাও ছিল অন্যতম কারণ। অন্যান্য ধর্মীয় নীতির ব্যাপারে আলেমদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও এ বিষয়ে সবাই একমত যে, বিচারক শুধু নিজের অবগতির উপর ভিত্তি করে কাউকে হত্যা করতে পারেন না। হযরত ইমাম শাফিঈ ( রঃ ) আরও একটি কারণ বর্ণনা করেছেন। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেনঃ মুনাফিকরা নিজেদের ঈমানের কথা মুখে প্রকাশ করতো বলেই রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাদেরকে হত্যা করা হতে বিরত ছিলেন, যদিও তিনি জানতেন যে, তাদের অন্তর এর বিপরীত, কিন্তু এ প্রকাশ্য কথাই হত্যা করার সিদ্ধান্তকে দূরে সরিয়ে রাখতো।' একথার সমর্থনে সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম ইত্যাদির বিশুদ্ধ হাদীসও পেশ করা যেতে পারে।একটি হাদীসে আছে, রাসুলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ আমি জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ । করার জন্যে আদিষ্ট হয়েছি যে পর্যন্ত না তারা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলে। যখন তারা এটা বলে দেবে তখন তারা তাদের জান ও মাল আমার কাছ থেকে বাঁচিয়ে নেবে এবং তাদের হিসাব মহাসম্মানিত আল্লাহর উপর ন্যস্ত থাকবে।' উদ্দেশ্য এই যে, এ কালেমা বলার সঙ্গে সঙ্গে তাদের উপর ইসলামের প্রকাশ্য নির্দেশাবলী চালু হয়ে যাবে। এখন যদি তাদের আন্তরিক বিশ্বাসও এর অনুরূপ হয় তবে তো এটা আখেরাতে তাদের মুক্তির কারণ হবে, নতুবা এটা সেখানে কোনই উপকারে আসবে না। কিন্তু দুনিয়ার বুকে তাদের উপর অন্যান্য মুসলমানদের আইন চালু থাকবে। এসব লোকের নাম ধাম এখানে যদিও মুসলমানদের নামের তালিকার অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু আখেরাতে ঠিক পুলসিরাতের উপর মুসলমানদের মধ্য হতে তাদেরকে দূরে পৃথক করে দেয়া হবে। তখন তার অন্ধকারে বিচলিত হয়ে উচ্চশব্দে মুলমানদেরকে ডাক দিয়ে বলবেঃ ‘আমরা কি তোমাদেরই সঙ্গে একত্রে ছিলাম না? উত্তর আসবেঃ ‘ছিলে বটে, কিন্তু তোমরা কপটতার মধ্যে পড়ে গিয়েছিলে এবং অপেক্ষমান ও সন্দিহান থেকে প্রবৃত্তির ফাদে জড়িয়ে পড়েছিলে, ঠিক এমতাবস্থায় আল্লাহর নির্দেশ এসে গেছে। মোট কথা, পরকালেও মুনাফিকরা মুসলমানদের পিছনে থেকে তাদেরকে জড়িয়ে থাকতে সচেষ্ট হবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদেরকে আলাদা করে দূরে সরিয়ে দেয়া হবে। তাদের মধ্যে ও তাদের আশা আকাংখার মধ্যে বাধার বিন্ধ্যাচল সৃষ্টি হয়ে যাবে, তারা মুসলমানদের সঙ্গে সিজদায় পড়ে যাবে, কিন্তু সিজদা করতে সক্ষম হবে না। যেমন এটা হাদীসসমূহে বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। কোন কোন বিশ্লেষণকারীর মতে তাদেরকে হত্যা না করার কারণ ছিল এই যে, রাসূলুল্লাহ( সঃ ) বিদ্যমানতায় তাদের দুষ্টুমি মারাত্মক ধরনের কোন ক্ষতির কারণ ছিল না। কেননা, মহান আল্লাহ ওয়াহীর দ্বারা মুসলমানদেরকে তাদের দুষ্টুমি হতে রক্ষা করতেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ( সঃ ) পরে আল্লাহ না করুন, যদি এরূপ লোক থাকে যাদের কপটতা প্রকাশ পেয়ে যায় এবং মুসলমানেরা ভালভাবে জানতে পারে তবে তাদেরকে হত্যা করে দেয়া উচিত হবে। ইমাম মালিকের ( রঃ ) মতে নিফাক ছিল রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর সোনালী যুগে। কিন্তু আজকাল আছে ‘যিনদাকাহ বা ধর্মহীনতা এবং আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসহীনতা। যিন্দীক' বা আল্লাহর একত্ববাদে অবিশ্বাসীদের সম্বন্ধে আলেমগণের মধ্যে মতভেদ রয়েছে যে, তাদের কুফরী প্রকাশ পেলে তাদেরকে হত্যা করার কথা বলা হবে কি না? আর যে যিন্দীকরা অন্য মানুষকে তার শিক্ষা দিয়ে থাকে এবং যারা শিক্ষা দেয় না তাদের মধ্যে কোন পার্থক্যের সীমারেখা টানতে হবে কি এই কুফরী কয়েকবার প্রকাশ পেলেও কি এই নির্দেশ কিংবা একবার হলেও কি এই নির্দেশ? আবার এ ব্যাপারেও মতভেদ আছে যে, এই ইসলাম গ্রহণ বা এই কুফরী হতে প্রত্যাবর্তন স্বয়ং তাদের পক্ষ থেকে হলে বা তাদের উপর বিজয় লাভের পর হলে কি এ নির্দেশই থাকবে? মোট কথা এসব বিষয়ে মতভেদ আছে। কিন্তু ঐগুলো বর্ণনার জায়গা হচ্ছে আহকামের কিতাবসমূহ, তাফসীর নয়। সুতরাং আমরাও তা আর বর্ণনা করতে চাইনে।চৌদ্দজন প্রধান ও কুখ্যাত লোকের নিফাক' রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) নিশ্চিত রূপেই জানতেন। এসব কলুষিত লোক তারাই ছিল যারা তাবুকের যুদ্ধে পরস্পরের সুপরিকল্পিত পরামর্শক্রমে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল যে, তারা রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর সঙ্গে প্রতারণা করবেই। তারা তাকে হত্যা করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র এটেছিল যে, রাতের দুর্ভেদ্য অন্ধকারে যখন তিনি অমুক ঘাটির নিকটবর্তী হবেন তখন তাঁর উষ্ট্রিকে তারা তাড়া করবে। এর ফলে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) ঘাঁটির মধ্যে পড়ে যাবেন। আল্লাহ্ তা'আলা স্বীয় নবীকে ( সঃ ) তাঁর ওয়াহীর মাধ্যমে এই মারাত্মক জঘন্য কপটতার কথা জানিয়ে দেন। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হুজাইফাকে ( রাঃ ) ডেকে এ ঘটনার সংবাদ দেন, এমন কি এক এক করে ঐ কপটদের নাম পর্যন্তও তিনি বলে দেন। তথাপি তিনি উপরোক্ত কারণে তাদেরকে হত্যা করার নির্দেশ জারী করলেন না। এরা ছাড়া অন্যান্য মুনাফিকদের নাম তার জানা ছিল। আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ তোমাদের আশে পাশের কতকগুলো বেদুঈন হচ্ছে মুনাফিক এবং কতক ( দুষ্ট প্রকৃতির মুনাফিক ) মদীনাতেও আছে, তোমরা তাদেরকে জান না, কিন্তু আমি তাদেরকে জানি ।' ( ৯:১০১ ) অন্য এক জায়গায় তিনি বলেছেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ এই নাপাক অন্তর বিশিষ্ট বিবাদী ও অহংকারী মুনাফিকরা যদি তাদের দুষ্টুমি থেকে বিরত না হয় তবে আমিও তাদের ছেড়ে দেবো না এবং তারা মদীনার মাটিতে আশে পাশে খুব কমই অবশিষ্ট থাকবে। তাদের উপর অভিশাপ দেওয়া হবে, যেখানেই পাওয়া যাবে তাদেরকে মারা ও ধরা হবে এবং টুকরো টুকরো করে দেয়া হবে।' ( ৩৩:৬০-৬১ ) এই আয়াতগুলো থেকে জানা গেল যে, ঐ মুনাফিকরা কে কে ছিল, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তা জানতেন না। তবে তাদের নিন্দনীয় স্বভাবের যে বর্ণনা দেয়া হয়েছিল তা যাদের মধ্যে পাওয়া যেতো, তাদের উপর নিফাক প্রযোজ্য হতো। যেমন এক জায়গায় আল্লাহ পাক স্পষ্টভাবেই বলেছেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ আমি যদি ইচ্ছে করি তবে তোমাকে আমি তাদেরকে দেখিয়ে দিতে পারি, কিন্তু তুমি নিশান ও কথাবার্তার মধ্যেই তাদেরকে চিনে নেবে।' ( ৪৭:৩০ )এই কপটাচারী মুনাফিকদের মধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ছিল আবদুল্লাহ বিন উবাই বিন সাল। হযরত যায়েদ বিন আরকাম ( রাঃ ) তার কপটতাপূর্ণ স্বভাব সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর সামনে সাক্ষ্য দানও করেছিলেন, যা ইতিপূর্বে। মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য প্রসঙ্গে বিবৃত হয়েছে। এ সত্ত্বেও আমরা দেখতে পাই যখন সে মারা যাচ্ছে তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তার জানাযার নামায পড়েছেন। এবং অন্যান্য মুসলমান সাহাবীদের ( রাঃ ) মত তারও দাফন কার্যে অংশগ্রহণ করেছেন। এমন কি হযরত উসমান ( রাঃ ) যখন একটু জোর দিয়ে তার কপটতার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, তখন তিনি বলছেনঃ আরবের লোক সমালোচনা করবে যে, মুহাম্মদ ( সঃ ) তাঁর সহচরগণকে হত্যা করে থাকেন, এ আমি চাই না।'সহীহ হাদীসের বর্ণনায় আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ আমাকে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার বা না করার স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে । কিন্তু আমি ক্ষমা প্রার্থনা করাকেই পছন্দ করেছি। অন্য একটি বর্ণনায় আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ আমি যদি জানতাম যে সত্তর বারের অধিক ক্ষমা প্রার্থনা করলে তাকে মার্জনা করা হবে, তবে আমি অবশ্যই তার অধিকই করতাম ।

সূরা বাকারাহ্ আয়াত 10 সূরা

في قلوبهم مرض فزادهم الله مرضا ولهم عذاب أليم بما كانوا يكذبون

سورة: البقرة - آية: ( 10 )  - جزء: ( 1 )  -  صفحة: ( 3 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. তারা বললঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা আশঙ্কা করি যে, সে আমাদের প্রতি জুলুম করবে কিংবা
  2. তথা জাহান্নাম। তারা সেখানে প্রবেশ করবে। অতএব, কত নিকৃষ্ট সেই আবাস স্থল।
  3. আল্লাহ বললেনঃ তাই ঠিক, আর আমি সত্য বলছি-
  4. তারপর যদি তারা গ্রহণ না করে, তাহলে প্রমাদ সৃষ্টিকারীদেরকে আল্লাহ জানেন।
  5. তোমাদের মুখ থেকে সাধারনতঃ যেসব মিথ্যা বের হয়ে আসে তেমনি করে তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা
  6. হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু।
  7. যারা বড় বড় গোনাহ ও অশ্লীলকার্য থেকে বেঁচে থাকে ছোটখাট অপরাধ করলেও নিশ্চয় আপনার পালনকর্তার
  8. ইতিপূর্বে তোমাদের কাছে ইউসুফ সুস্পষ্ট প্রামাণাদিসহ আগমন করেছিল, অতঃপর তোমরা তার আনীত বিষয়ে সন্দেহই পোষণ
  9. আমি তাকে সুসংবাদ দিয়েছি ইসহাকের, সে সৎকর্মীদের মধ্য থেকে একজন নবী।
  10. কিন্তু সে মিথ্যারোপ করল এবং অমান্য করল।

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা বাকারাহ্ ডাউনলোড করুন:

সূরা Baqarah mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Baqarah শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Friday, November 22, 2024

Please remember us in your sincere prayers