কোরান সূরা আহ্যাব আয়াত 10 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Ahzab ayat 10 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা আহ্যাব আয়াত 10 আরবি পাঠে(Ahzab).
  
   

﴿إِذْ جَاءُوكُم مِّن فَوْقِكُمْ وَمِنْ أَسْفَلَ مِنكُمْ وَإِذْ زَاغَتِ الْأَبْصَارُ وَبَلَغَتِ الْقُلُوبُ الْحَنَاجِرَ وَتَظُنُّونَ بِاللَّهِ الظُّنُونَا﴾
[ الأحزاب: 10]

যখন তারা তোমাদের নিকটবর্তী হয়েছিল উচ্চ ভূমি ও নিম্নভূমি থেকে এবং যখন তোমাদের দৃষ্টিভ্রম হচ্ছিল, প্রাণ কন্ঠাগত হয়েছিল এবং তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে নানা বিরূপ ধারণা পোষণ করতে শুরু করছিলে। [সূরা আহ্যাব: 10]

Surah Al-Ahzab in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Ahzab ayat 10


স্মরণ করো! তারা তোমাদের উপরে এসে পড়েছিল তোমাদের উপর থেকে এবং তোমাদের চেয়ে নিচে থেকে, আর যখন চোখগুলো বিারিত হয়েছিল আর হৃৎপিন্ডগুলো পৌঁছেগিয়েছিল গলদেশে, আর তোমরা আল্লাহ্‌র সন্বন্ধে নানান ভুল ধারণা ধারণ করেছিলে।


Tafsir Mokhtasar Bangla


১০. আর তা তখন হয়েছিল যখন শত্রæরা উপত্যকার উপর ও নিচ দিয়ে পূর্ব ও পশ্চিম উভয় দিক থেকে এসেছিল। তখন সব দিক থেকে চক্ষু ফিরে গিয়ে শুধু শ্রত্রæদের প্রতি ধাবিত হয়েছিল। আর অন্তরগুলো কন্ঠনালীতে চলে এসেছিল এবং তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে নানারকম চিন্তা করতেছিলে। কখনো সাহায্যের চিন্তা। আবার কখনো তা থেকে নিরাশ হয়েছিলে।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


যখন ওরা তোমাদের বিরুদ্ধে উচ্চ অঞ্চল ও নিমন অঞ্চল হতে সমাগত হয়েছিল,[১] তোমাদের চক্ষু স্থির হয়ে গিয়েছিল, তোমাদের প্রাণ হয়ে পড়েছিল কণ্ঠাগত এবং তোমরা আল্লাহ সম্বন্ধে নানাবিধ ধারণা পোষণ করেছিলে।[২] [১] এর অর্থ এই যে, সর্বদিক থেকে শত্রু এসে পড়েছিল অথবা উচ্চ অঞ্চল থেকে উদ্দেশ্য হল, গাত্বফান, হাওয়াযিন এবং নাজদের অন্যান্য মুশরিকরা এবং নিম্ন অঞ্চল থেকে উদ্দেশ্য কুরাইশ এবং তাদের সাহায্যকারীরা। [২] এটা মুসলিমদের ঐ অবস্থার বিবরণ, যে অবস্থার সম্মুখীন তাঁরা ঐ সময় হয়েছিলেন।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


যখন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সমাগত হয়েছিল তোমাদের উপরের দিক ও নিচের দিক হতে [], তোমাদের চোখ বিস্ফোরিত হয়েছিল এবং তোমাদের প্রান হয়ে পরেছিল কণ্ঠাগত [], আর তোমরা আল্লাহ্ সম্মন্ধে নানাবিধ ধারনা পোষণ করছিলে; [] এর একটি অর্থ হতে পারে, সবদিক থেকে চড়াও হয়ে এলো। দ্বিতীয় অর্থ হতে পারে, নজ্‌দ ও খায়বারের দিক থেকে আক্রমণকারীরা ওপরের দিক থেকে এবং মক্কা মো’আয্‌যামার দিক থেকে আক্রমণকারীরা নিচের দিক থেকে আক্রমণ করলো। [ ফাতহুল কাদীর ] [] হাদীসে এসেছে, আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমরা খন্দকের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! অন্তরসমূহ কণ্ঠাগত হয়েছে, আমরা কি কিছু বলব? তিনি বললেন, হ্যাঁ, বল, اَللّهُمَّ استُرْعَوْراتِناوَآمن رَوْعَاتِنَا “ হে আল্লাহ! আমাদের গোপনীয়তা রক্ষা করা এবং আমাদেরকে ভীতি থেকে নিরাপত্তা দাও’ । আবু সাইদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ফলে আল্লাহ শক্ৰদের মুখে ঝঞ্ঝা বায়ু প্রবাহিত করলেন, এভাবেই আল্লাহ তাদেরকে বাতাস দিয়ে পরাজিত করলেন। [ মুসনাদে আহমাদ:৩/৩ ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


৯-১০ নং আয়াতের তাফসীর পঞ্চম হিজরীর শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। এই যুদ্ধে। আল্লাহ তা'আলা মুমিনদের উপর যে দয়া ও অনুগ্রহ করেছিলেন এখানে তিনি তারই বর্ণনা দিচ্ছেন। যখন মুশরিকরা মুসলমানদেরকে দুনিয়া হতে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার উদ্দেশ্যে পূর্ণ শক্তিসহ বিরাট বাহিনী নিয়ে তাদের উপর আক্রমণ করেছিল। কেউ কেউ বলেন যে, খন্দকের যুদ্ধ চতুর্থ হিজরীতে সংঘটিত হয়েছিল। এই যুদ্ধের ঘটনা এই যে, বানু নাযীরের ইয়াহুদী নেতৃবর্গ, যাদের মধ্যে সালাম ইবনে আবি হাকীক, সালাম ইবনে মুশকাম, কিনানাহ, ইবনে রাবী প্রমুখ ছিল, মক্কায় এসে পূর্ব হতেই প্রস্তুত কুরায়েশদেরকে যুদ্ধের জন্যে উত্তেজিত করলো এবং তাদের সাথে অঙ্গীকার করলো যে, তারা তাদের অধীনস্থ লোকদেরকে সাথে নিয়ে তাদের দলে যোগদান করবে। সেখানে তাদের সাথে কথা শেষ করে তারা গাতফান গোত্রের লোকদের নিকট গমন করলো এবং তাদের সাথে কথাবার্তা বলে তাদেরকেও তাদের সাথে মিলিত করলো। কুরায়েশরাও এদিক ওদিক ঘুরে ফিরে সারা আরবে আলোড়ন সৃষ্টি করলো এবং আরো কিছু লোক যোগাড় করে নিলো। এসবের সরদার নির্বাচিত হলেন আবু সুফিয়ান সাখর ইবনে হারব এবং গাতফান গোত্রের নেতা নির্বাচিত হলো উয়াইনা ইবনে হাসান ইবনে বদর। এভাবে চেষ্টা তদবীর চালিয়ে তারা দশ হাজার যোদ্ধা একত্রিত করলো এবং মদীনার দিকে ধাওয়া করলো। এদিকে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এ সংবাদ পেয়ে হযরত সালমান ফারসী ( রাঃ )-এর পরামর্শক্রমে, মদীনার পূর্ব দিকে খন্দক খনন করতে শুরু করলেন। সমস্ত মুহাজির ও আনসার এ খনন কার্যে অংশগ্রহণ করলেন। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) নিজেও একাজে অংশ নিলেন। স্বয়ং তিনি কাদা-মাটি বহন করতে লাগলেন। মুশরিকদের সেনাবাহিনী বিনা বাধায় মদীনা পর্যন্ত পৌঁছে গেল এবং মদীনার পূর্বাংশে উহুদ পাহাড় সংলগ্ন স্থানে নিজেদের শিবির স্থাপন করলো। এটা ছিল মদীনার নিম্নাংশ। মদীনার উপরাংশে তারা এক বিরাট সৈন্য দল পাঠিয়ে দিলো যারা মদীনার উঁচু অংশে শিবির স্থাপন করলো এবং নীচে ও উপরের দিক থেকে মুলমানদেরকে অবরোধ করে ফেললো। মুসলমানদের সৈন্যসংখ্যা তিন হাজারেরও কম ছিল। কোন কোন রিওয়াইয়াতে শুধু সাতশ’ বলা হয়েছে। এই অল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) মুকাবিলার জন্যে আসলেন। তিনি সালা পাহাড়কে পিছনের দিকে করলেন। শত্রুদের দিকে মুখ করে তিনি সৈন্য সমাবেশ করলেন। যে খন্দক তিনি খনন করেছিলেন তাতে পানি ইত্যাদি ছিল না। তা শুধু একটি গর্ত ছিল। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) শিশু ও মহিলাদেরকে মদীনার একটি মহল্লায় একত্রিত করে রেখে দেন। মদীনায় বানু কুরায়যা নামক ইয়াহুদীদের একটি গোত্র বসবাস করতো। তাদের মহল্লা ছিল মদীনার পূর্ব দিকে। নবী ( সঃ )-এর সাথে তাদের দৃঢ় সন্ধিচুক্তি ছিল। তাদেরও বিরাট দল ছিল। প্রায় আটশ’ জন বীর যোদ্ধা তাদের মধ্যে বিদ্যমান ছিল। মুশরিক ও ইয়াহূদীরা তাদের কাছে হুয়াই ইবনে আখতাব নারীকে পাঠিয়ে দিলো। সে তাদেরকে নানা প্রকারের লোভ-লালসা দেখিয়ে নিজেদের পক্ষে করে নিলো। তারাও ঠিক সময়ে মুসলমানদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলো এবং প্রকাশ্যভাবে সন্ধি ভেঙ্গে দিলো। বাইরে দশহাজার শত্রু সৈন্য ছাউনি ফেলে বসে আছে। এদিকে ইয়াহূদীদের এই বিশ্বাসঘাতকতা যেন বগলে ফোড়া বের হওয়া। বত্রিশ দাঁতের মধ্যে জিহ্বা অথবা আটার মধ্যে লবণের মত মুসলমানদের অবস্থা হয়ে গেল। এ সাতশ জন লোক কি-ই বা করতে পারে? এটা ছিল ঐ সময় যার চিত্র কুরআন কারীম অংকন করেছে যে, তখন মুমিনরা পরীক্ষিত হয়েছিল এবং তারা ভীষণভাবে প্রকম্পিত হয়েছিল। শত্রুরা একমাস ধরে অবরোধ অব্যাহত রাখলো। যদিও মুশরিকরা খন্দক অতিক্রম করতে মক্ষম হলো না। তবে তারা মাসাধিককাল ধরে মুসলমাদেরকে ঘিরে বসে থাকলো। এতে মুসলমানরা ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়লো। আমর ইবনে আবদে অদ্দ, যে ছিল আরবের বিখ্যাত বীর পুরুষ, সেনাপতিত্ব বিষয়ে যে ছিল অদ্বিতীয়, একবার সে নিজের সাথে কয়েকজন দুঃসাহসী বীরপুরুষকে নিয়ে সাহস করে অশ্বচালনা করলো এবং খন্দক পার হয়ে গেল। এ অবস্থা দেখে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) স্বীয় অশ্বারোহীদের প্রতি ইঙ্গিত করলেন। কিন্তু বলা হয় যে, তাদেরকে তিনি প্রস্তুত না পেয়ে হযরত আলী ( রাঃ )-কে তাদের মুকাবিলা করার নির্দেশ দিলেন। অল্পক্ষণ ধরে উভয় পক্ষের বীরপুরুষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলতে থাকলো। অবশেষে আল্লাহর সিংহ হযরত আলী ( রাঃ ) শত্রুদেরকে তরবারীর আঘাতে টুকরো টুকরো করে ফেললেন। এতে মুসলমানরা খুবই খুশী হলেন এবং তাঁদের সাহস ও উৎসাহ বেড়ে গেল। তারা বুঝে নিলেন যে, তাদের জয় সুনিশ্চিত। অতঃপর আল্লাহ তা'আলার নির্দেশক্রমে ভীষণ বেগে ঝড় তুফান ও ঘূর্ণিবার্তা প্রবাহিত হতে শুরু করলো। এর ফলে কাফিরদের সমস্ত তাঁবু মূলোৎপাটিত হলো। কিছুই অবশিষ্ট থাকলো না। অগ্নি জ্বালানো কঠিন হয়ে গেল। কোন আশ্রয়স্থল তাদের দৃষ্টিগোচর হলো না। পরিশেষে তারা ব্যর্থ মনোরথ হয়ে ফিরে গেল। এরই বর্ণনা কুরআন কারীমে দেয়া হয়েছে এবং আমি তাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছিলাম ঝঞাবায়ু। এ আয়াতে যে বায়ুর কথা বলা হয়েছে হযরত মুজাহিদ ( রঃ )-এর মতে ওটা ছিল পূবালী হাওয়া। রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিম্নের উক্তিও এর পৃষ্ঠপোষকতা করে। তিনি বলেনঃ “ পূবালী বায়ু দ্বারা আমাকে সাহায্য করা হয়েছে এবং আ’দ সম্প্রদায়কে দাৰূর’ দ্বারা ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে ।”ইকরামা ( রাঃ ) বলেন যে, দক্ষিণা হাওয়া উত্তরা হাওয়াকে আহযাবের যুদ্ধের সময় বলেঃ “ চল, আমরা উভয়ে গিয়ে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে সাহায্য করি ।” তখন উত্তরা হাওয়া জবাবে বলেঃ “ রাত্রে গরম বা প্রখরতা চলে না ।” অতঃপর পূবালী হাওয়া প্রবাহিত হলো। ( এটা ইমাম ইবনে জারীর (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমার ( রাঃ ) বলেনঃ “ আমার মামা হযরত উসমান ইবনে মাযউন ( রাঃ ) খন্দকের যুদ্ধের রাত্রে কঠিন শীত ও প্রচণ্ড বাতাসের সময় খাদ্য ও লেপ আনার জন্যে আমাকে মদীনায় প্রেরণ করেন । আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর কাছে অনুমতি প্রার্থনা করলে তিনি আমাকে অনুমতি প্রদান করেন। তিনি আমাকে বলেনঃ “ আমার কোন সাহাবীর সাথে তোমার দেখা হলে তাকে আমার কাছে পাঠিয়ে দেবে ।” আমি চললাম। ভীষণ জোরে বাতাস বইতে ছিল। যে সাহাবীর সাথে আমার সাক্ষাৎ হচ্ছিল আমি তাঁর কাছে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর পয়গাম পৌছিয়ে দিচ্ছিলাম। যিনি পয়গাম শুনছিলেন তিনিই তৎক্ষণাৎ রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর দিকে চলে আসছিলেন। এমনকি তাদের মধ্যে কেউ পিছন ফিরেও দেখছিলো না। বাতাস আমার ঢালে ধাক্কা দিচ্ছিল এবং আমি তাতে আঘাত পাচ্ছিলাম। এমনকি ওর লোহা আমার পায়ে পড়ে গেল। আমি ওটাকে নীচে ফেলে দিলাম। ( এটাও ইমাম ইবনে জারীর (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)মহান আল্লাহ বলেনঃ “ আমি এমন এক বাহিনী প্রেরণ করেছিলাম যা তোমরা দেখোনি ।” তাঁরা ছিলেন ফেরেশতা। তাঁরা মুশরিকদের অন্তর ও বক্ষ ভয়, সন্ত্রাস এবং প্রভাব দ্বারা পূর্ণ করে দিয়েছিলেন। এমনকি তাদের সমস্ত নেতা তাদের অধীনস্থ সৈন্যদেরকে কাছে ডেকে ডেকে বলেছিলঃ “ তোমরা মুক্তির পথ অন্বেষণ কর, বাঁচার পথ বের করে নাও ।” এটা ছিল ফেরেশতাদের নিক্ষিপ্ত ভয় ও প্রভাব এবং তারাই ছিলেন ঐ সেনাবাহিনী যার বর্ণনা এই আয়াতে রয়েছে।কুফার অধিবাসী একজন নব্যযুবক হযরত হুযাইফা ইবনে ইয়ামান ( রাঃ )-কে বলেনঃ “ হে আবু আবদিল্লাহ ( রাঃ )! আপনি বড়ই ভাগ্যবান যে, আপনি আল্লাহর নবী ( সঃ )-কে স্বচক্ষে দেখেছেন এবং তাঁর মজলিসে বসেছেন । বলুন তো, তখন আপনি কি করতেন?” হযরত হুযাইফা ( রাঃ ) উত্তরে বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তখন জীবন দানে প্রস্তুত থাকতাম ।”এ কথা শুনে যুবকটি বলেনঃ “ শুনুন চাচা! যদি আমরা নবী ( সঃ )-এর যামানা পেতাম তবে আল্লাহর শপথ! আমরা তাঁর পা মাটিতে পড়তে দিতাম না । তাঁকে আমরা নিজেদের ঘাড়ে উঠিয়ে নিয়ে ফিরতাম।” তিনি তখন বললেনঃ “ হে আমার প্রিয় ভ্রাতুস্পুত্র! তাহলে একটি ঘটনা বলি, শুননা । খন্দকের যুদ্ধের সময় রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) গভীর রাত্রি পর্যন্ত নামায পড়ছিলেন। নামায শেষ করে তিনি বললেনঃ “ কাফিরদের খবরাখবর আনতে পারে এমন কেউ তোমাদের মধ্যে আছে কি? আল্লাহর নবী ( সঃ ) তার সাথে শৰ্ত করছেন যে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে ।” তাঁর এ কথায় কেউই দাঁড়ালো না। কেননা সবারই ভয়, ক্ষুধা ও ঠাণ্ডা চরম পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। আবার তিনি অনেকক্ষণ ধরে নামায পড়লেন। তারপর পুনরায় বললেনঃ “ যে । ব্যক্তি বিপক্ষ দলের খবর নিয়ে আসবে, আমি তাকে অভয় দিচ্ছি যে, সে অবশ্যই ( অক্ষত ও নিরাপদ অবস্থায় ) ফিরে আসবে। আমি দু'আ করি যে, তাকে যেন আল্লাহ জান্নাতে আমার বন্ধু হিসেবে স্থান দেন।” এবারও কেউ দাঁড়ালো না। আর দাঁড়াবেই বা কি করে? ক্ষুধার জ্বালায় তাদের পেট কোমরের সাথে লেগে গিয়েছিল এবং ঠাণ্ডায় দাঁতে দাঁতে বাজতে শুরু করেছিল। ভয়ে তাদের রক্ত পানি হয়ে গিয়েছিল। অবশেষে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমার নাম ধরে ডাক দিলেন। আমার তো তখন আর তার ডাকে সাড়া দেয়া ছাড়া কোন উপায় থাকলো না। তিনি বললেনঃ “ হুযাইফা ( রাঃ ) তুমি যাও এবং দেখে এসো তারা কি করছে । দেখো, তুমি যে পর্যন্ত আমার কাছে ফিরে না আসো সে পর্যন্ত নতুন কোন কাজ করে বসো না।” আমি খুব আচ্ছা’ বলে আমার পথ ধরলাম। সাহস করে আমি শত্রুর মধ্যে ঢুকে পড়লাম। সেখানে গিয়ে বিস্ময়কর অবস্থা দেখলাম। তা এই যে, আল্লাহ তা'আলার অদৃশ্য সৈন্যরা আনন্দের সাথে নিজেদের কাজ করতে রয়েছে। বাতাস চুলার উপর হতে ডেকচিগুলোকে উল্টিয়ে ফেলেছে। তাঁবুর খুঁটি উৎপাটিত হয়েছে। তারা আগুন জ্বালাতে পারছে না। কোন কিছুই সজ্জিত অবস্থায় নেই। ঐ সময় আবু সুফিয়ান দাড়িয়ে উচ্চ স্বরে সকলকে সম্বোধন করে বললেনঃ “ হে কুরায়েশরা! তোমরা নিজ নিজ সঙ্গী হতে সতর্ক হয়ে যাও । নিজ সাথীদের দেখা শোনা কর। এমন যেন না হয় যে, অন্য কেউ তোমাদের পাশে দাড়িয়ে তোমাদের গতিবিধি লক্ষ্য করে।” আমি কথাগুলো শুনার সাথে সাথে আমার পাশে যে কুরায়েশী দাঁড়িয়েছিল তার হাত ধরে ফেললাম এবং তাকে। বললামঃ কে তুমি? সে উত্তরে বললো: “ আমি অমুকের পুত্র অমুক ।” আমি বললামঃ এখন থেকে সতর্ক থাকবে। আবু সুফিয়ান বললেনঃ “ হে কুরায়েশের দল! আল্লাহর কসম, আমাদের আর কোথাও দাঁড়াবার স্থান নেই । আমাদের গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তুগুলো এবং আমাদের উটগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। বানু কুরাইযা আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তারা আমাদেরকে খুব কষ্ট দিয়েছে। অতঃপর এই ঝড়ো হাওয়া আমাদেরকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছে। আমরা রান্না করে খেতে পারছি না। তবু ও থাকার স্থান আমরা ঠিক রাখতে পারছি না। তোমরা বিরক্ত হয়ে উঠেছে। আমি তো ফিরে যাবার কথা চিন্তা করছি। আমি তোমাদের সকলকেই ফিরে যাবার নির্দেশ দিচ্ছি।” এ কথা বলেই পাশে যে উটটি বসিয়ে রাখা হয়েছিল তার উপর তিনি উঠে বসলেন। উটকে মার দিতেই সে তিন পায়ে দাঁড়িয়ে গেল। সে সময় আমার এমন সুযোগ হয়েছিল যে, আমি ইচ্ছা করলে আবু সুফিয়ান ( রাঃ )-কে একটি তীরের আঘাতেই খতম করে দিতে পারতাম। কিন্তু রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নির্দেশ ছিল যে, আমি যেন নতুন কোন কাজ না করে বসি। তাই আমি এ কাজ হতে বিরত থাকলাম। এখন আমি ফিরে চললাম এবং আমার সৈন্যদলের মধ্যে পৌছে গেলাম। আমি যখন পৌঁছি তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) একটি চাদর গায়ে দিয়ে নামায পড়ছিলেন। চাদরটি ছিল তাঁর কোন এক পত্নীর। আমাকে দেখতে পেয়ে তিনি আমাকে তাঁর দুই পায়ের মাঝে বসিয়ে নিলেন এবং তাঁর ঐ চাদর দ্বারা আমাকে আবৃত করলেন। অতঃপর তিনি রুকু সিজদা করলেন। আর আমি সেখানেই চাদরমুড়ি দিয়ে বসে থাকলাম। তাঁর নামায পড়া শেষ হলে আমি তাকে সমস্ত ঘটনা খুলে বললাম। গাতফান গোত্র যখন কুরায়েশদের ফিরে যাবার কথা শুনলো তখন তারাও নিজেদের তলপি-তলপা বেঁধে নিয়ে ফিরে চললো।”অন্য একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, হযরত হুযাইফা ( রাঃ ) বলেছেনঃ আল্লাহর কসম! ককনে শীত সত্ত্বেও আমার মনে হচ্ছিল যে, আমি যেন কোন গরম হাম্মাম খানায় রয়েছি । ঐ সময় আবু সুফিয়ান ( রাঃ ) আগুন জ্বেলে তাপ গ্রহণ করছিল। আমি তাকে দেখে চিনে ফেললাম। সাথে সাথে আমি কামানে তীর যোজন করলাম। মনে করলাম যে, তীর ছুঁড়ে দিই। তিনি আমার তীরের আওতার মধ্যেই ছিলেন। আমার লক্ষ্যভ্রষ্ট হবার কোন কারণই ছিল না। কিন্তু রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর কথা আমার স্মরণ হয়ে গেল যে, আমি যেন এমন কোন নতুন কাজ করে না বসি যার ফলে শত্রুরা সতর্ক হয়ে যেতে পারে। সুতরাং আমি আমার বাসনা পরিত্যাগ করলাম। যখন আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিকট ফিরে আসলাম তার পূর্ব পর্যন্ত আমি কোন ঠাণ্ডা অনুভব করিনি। আমার মনে হচ্ছিল যে, যেন আমি গরম হাম্মাম খানায় আছি। তবে যখন আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিকট পৌছলাম তখন খুবই ঠাণ্ডা অনুভূত হতে লাগলো। আমি ঠাণ্ডায় কাঁপতে লাগলাম। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তার চাদর দিয়ে আমাকে ঢেকে দিলেন। আমি সকাল পর্যন্ত পড়ে পড়ে ঘুমালাম। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাকে এ বলে জাগালেনঃ “ হে নিদিত ব্যক্তি! জেগে ওঠো ।অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, যখন ঐ তাবেয়ী বলেনঃ “ হায়! যদি আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে দেখতাম এবং তাঁর যুগটা পেতাম ।” তখন হুযাইফা ( রাঃ ) বলেনঃ “ হায়! যদি তোমার মত আমার ঈমান হতো । তাকে না দেখেই তুমি তাঁর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রেখেছো! তবে হে আমার প্রিয় ভ্রাতুস্পুত্র! তুমি যে আকাক্ষা করছে তা শুধু আকাঙ্ক্ষাই মাত্র। সেই সময় থাকলে তুমি কি করতে তা তুমি জানো না। আমাদের উপর দিয়ে কত কঠিন সময় গত হয়েছে!” অতঃপর তিনি তাঁর সামনে উপরোল্লিখিত ঘটনাটি বর্ণনা করলেন। তাতে তিনি একথাও বললেনঃ “ ঝড় তুফানের সাথে সাথে বৃষ্টিও বর্ষিত হচ্ছিল ।”আর একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, হযরত হুযাইফা ( রাঃ ) রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর সাথের ঘটনাটি বর্ণনা করছিলেন তখন মজলিসে যারা উপস্থিত ছিলেন। তারা বললেনঃ “ আমরা যদি সে সময় উপস্থিত থাকতাম তবে এই করতাম, ঐ করতাম ।” তাঁদের একথা শুনে হযরত হুযাইফা ( রাঃ ) ঘটনাটি বর্ণনা করেনঃ ‘বাহির হতে তো দশ হাজার সৈন্য আমাদেরকে ঘিরে বসে আছে, আর ভিতর হতে বানু কুরাইযার আটশ' জন ইয়াহূদী বিদ্রোহী হয়ে গেছে এবং শিশুরা ও নারীরা মদীনায় পড়ে আছে। এভাবে সবদিক দিয়েই বিপদ লেগে আছে। যদি বানু কুরাইযা গোত্র এদিকে লক্ষ্য করে তাহলে ক্ষণেকের মধ্যে শিশু ও নারীদের ফায়সালা করে দিবে। আল্লাহর শপথ! এ রাত্রের মত ভীতি-বিহ্বল অবস্থা আমার আর কখনো হয়নি। এর উপর ঝড় বইছে, তুফান সমানভাবে চলতেই আছে, চতুর্দিক অন্ধকারে ছেয়ে গেছে, মেঘ গর্জন করছে, বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে, সবই মহাপ্রতাপান্বিত আল্লাহর ইচ্ছেতেই হচ্ছে। সাথীদেরকে কোথায় দেখা যাবে? নিজের হাতের অঙ্গুলীও দেখা যায় না। মুনাফিকরা বাহানা করতে শুরু করে দিয়েছে যে, তাদের ছেলে মেয়ে, স্ত্রী পরিবারকে দেখবার কেউ নেই। সুতরাং রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) যেন তাদেরকে ফিরে যাবার অনুমতি প্রদান করেন। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) কাউকেও ফিরে যেতে বাধা দিলেন না। যেই অনুমিত চায় তাকেই তিনি বলেনঃ “ যাও, আগ্রহের সাথেই যাও ।” সুতরাং তারা এক এক করে সরে পড়ে। আমরা শুধু প্রায় তিনশর মত রয়ে গেলাম। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এসে আমাদেরকে এক এক করে দেখলেন। আমার অবস্থা ছিল অত্যন্ত শোচনীয়। আমার কাছে শত্রুর হাত হতে রক্ষা পাওয়ার না ছিল কোন অস্ত্র এবং ঠাণ্ডা হতে বাঁচবার না ছিল কোন ব্যবস্থা। শুধু আমার স্ত্রীর ছোট একটি চাদর ছিল যা আমার হাঁটু পর্যন্ত পৌছেনি। যখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমার নিকট আসলেন তখন আমি আমার হাঁটুতে মাথা লাগিয়ে কাঁপছিলাম। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “ এটা কে?" আমি উত্তরে বললামঃ আমি হুযাইফা । তিনি তখন বললেনঃ “ হে হুযাইফা ( রাঃ )! শুন ।” তাঁর একথা শুনে আল্লাহর কসম! পৃথিবী আমার উপর সংকুচিত হয়ে গেল যে, না জানি হয়তো তিনি আমাকে দাঁড়াতে বলবেন। আর দাঁড়ালে তো আমার দুর্গতির কোন সীমা থাকবে না। কিন্তু করি কি? আল্লাহর রাসূল ( সঃ )-এর নির্দেশ তো? বাধ্য হয়ে বললামঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আমি আপনার আদেশ পালন করতে প্রস্তুত আছি ।” তিনি বললেনঃ “ শত্রুদের মধ্যে এক নতুন ব্যাপার শুরু হয়ে গেছে । যাও, এর খবর নাও।” আল্লাহর কসম! ঐ সময় আমার চেয়ে অধিক না কারো ভয়-ভীতি ছিল, না আমার চেয়ে বেশী কাউকেও ঠাণ্ডা লাগছিল। কিন্তু এতদসত্ত্বেও রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর আদেশ শোনা মাত্রই আমি রওয়ানা হয়ে গেলাম। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমার জন্যে দু'আ করছেন। এটা আমার কানে আসলো। তিনি দু'আ করছিলেনঃ “ হে আল্লাহ! তার সামনে হতে, পিছন হতে, ডান দিক হতে, বাম দিক হতে, উপর হতে এবং নীচ হতে তাকে হিফাযত করুন ।” তার দু'আর সাথে সাথে আমার অন্তর হতে ভয়-ভীতি দূর হয়ে গেল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাকে ডেকে বললেনঃ “ শুন হে হুযাইফা ( রাঃ )! সেখান হতে আমার নিকট ফিরে না আসা পর্যন্ত নতুন কিছু করে বসো না ।” এ রিওয়াইয়াতে এও আছে যে, হযরত হুযাইফা ( রাঃ ) বলেনঃ “ ইতিপূর্বে আমি আবু সুফিয়ান ( রাঃ )-কে চিনতাম না । ওখানে গিয়ে আমি এ শব্দই শুনতে পেলামঃ “ চল, ফিরে চল ।” একটি আশ্চর্য ব্যাপার এও দেখলাম যে, ঐ ভয়াবহ বাতাস যা ডেকচিগুলোকে উল্টিয়ে দিচ্ছিল তা শুধু তাদের সেনাবাহিনীর অবস্থানস্থল পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল। আল্লাহর শপথ! তা থেকে অর্ধ হাতও বাইরে যায়নি। আমি দেখলাম যে, পাথর উড়ে উড়ে তাদের উপর পড়ছিল। যখন আমি ফিরে আসলাম তখন দেখলাম যে, পাগড়ি পরিহিত প্রায় ২০ জন অশ্বারোহী রয়েছেন যারা আমাকে বললেনঃ “ যাও, রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে সংবাদ দাও যে, আল্লাহ তা'আলা তাঁর জন্যে যথেষ্ট হয়েছেন এবং তাঁর শত্রুদেরকে তিনি পরাজিত ও লাঞ্ছিত করেছেন ।” এই বর্ণনায় এও উল্লেখ আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর অভ্যাস ছিল, যখন তিনি কোন বিপদের সম্মুখীন হতেন তখন নামায পড়া শুরু করে দিতেন। এতে আরো রয়েছে যে, যখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে এ খবর পৌছানো হয় তখনই এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। সুতরাং এ আয়াতে নিম্ন অঞ্চল হতে আগমনকারী দ্বারা বানু কুরাইযাকে বুঝানো হয়েছে।মহাপ্রতাপান্বিত আল্লাহ বলেনঃ তোমাদের চক্ষু বিস্ফারিত হয়েছিল, তোমাদের প্রাণ হয়ে পড়েছিল কণ্ঠাগত এবং তোমরা আল্লাহ সম্বন্ধে নানাবিধ ধারণা পোষণ করছিলে। এমনকি কোন কোন মুনাফিক তো এটা মনে করে নিয়েছিল যে, এ যুদ্ধে কাফিররাই জয়যুক্ত হবে। সাধারণ মুনাফিকদের কথা তো দূরে থাক, এমনকি মুতাব ইবনে কুশায়ের বলতে শুরু করলো: রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তো আমাদেরকে বলেছিলেন যে, আমরা নাকি কাইসার ও কিসরার ধন-সম্পদের মালিক হয়ে যাবো, অথচ এখানকার অবস্থা এই যে, পায়খানায় যাওয়াও আমাদের জন্যে কষ্টকর হয়ে পড়েছে ।” এ রকম বিভিন্ন লোকের ধারণা বিভিন্ন ছিল। তবে মুসলমানদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, তাঁদের জয় সুনিশ্চিত।হযরত আবু সাঈদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ “ খন্দকের যুদ্ধের দিন আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আমাদের প্রাণ তো হয়েছে কণ্ঠাগত, এখন আমাদের বলার কিছু আছে কি?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “হ্যা, তোমরা বলো ( আরবি )অর্থাৎ “হে আল্লাহ! আপনি আমাদের মর্যাদা রক্ষা করুন এবং আমাদের ভয়-ভীতিকে শান্তি ও নিরাপত্তায় পরিবর্তিত করুন ।” এদিকে মুসলমানদের এ দু'আ উচ্চারিত হচ্ছিল, আর ঐ দিকে আল্লাহর সৈন্য বাতাসের রূপ ধারণ করে এসে পড়ে এবং কাফিরদের দুর্গতি চরম সীমায় পৌঁছিয়ে দেয়। ( এ হাদীসটি ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) ও ইমাম আহমাদ ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন)

সূরা আহ্যাব আয়াত 10 সূরা

إذ جاءوكم من فوقكم ومن أسفل منكم وإذ زاغت الأبصار وبلغت القلوب الحناجر وتظنون بالله الظنونا

سورة: الأحزاب - آية: ( 10 )  - جزء: ( 21 )  -  صفحة: ( 419 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. তোমরা স্বীয় কসমসমূহকে পারস্পরিক কলহ দ্বন্দ্বের বাহানা করো না। তা হলে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর
  2. তারা বলল, কোন ক্ষতি নেই। আমরা আমাদের পালনকর্তার কাছে প্রত্যাবর্তন করব।
  3. এবং সন্ধ্যায়, তার পরেও কি তোমরা বোঝ না?
  4. ছাড়া হবে তোমাদের প্রতি অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ও ধুম্রকুঞ্জ তখন তোমরা সেসব প্রতিহত করতে পারবে না।
  5. পৃথিবীকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন।
  6. আল্লাহ পাক নিঃসন্দেহে মশা বা তদুর্ধ্ব বস্তু দ্বারা উপমা পেশ করতে লজ্জাবোধ করেন না। বস্তুতঃ
  7. যদি শয়তানের পক্ষ থেকে আপনি কিছু কুমন্ত্রণা অনুভব করেন, তবে আল্লাহর শরণাপন্ন হোন। নিশ্চয় তিনি
  8. এ সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞান নেই এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরও নেই। কত কঠিন তাদের মুখের কথা।
  9. শোয়ায়েব (আঃ) বললেন-হে দেশবাসী, তোমরা কি মনে কর! আমি যদি আমার পরওয়ারদেগারের পক্ষ হতে সুস্পষ্ট
  10. তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যদি কেউ হাতছাড়া হয়ে কাফেরদের কাছে থেকে যায়, অতঃপর তোমরা সুযোগ পাও,

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আহ্যাব ডাউনলোড করুন:

সূরা Ahzab mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Ahzab শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত আহ্যাব  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত আহ্যাব  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত আহ্যাব  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত আহ্যাব  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত আহ্যাব  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত আহ্যাব  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত আহ্যাব  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত আহ্যাব  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত আহ্যাব  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত আহ্যাব  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত আহ্যাব  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত আহ্যাব  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত আহ্যাব  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত আহ্যাব  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত আহ্যাব  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত আহ্যাব  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত আহ্যাব  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত আহ্যাব  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত আহ্যাব  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত আহ্যাব  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত আহ্যাব  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত আহ্যাব  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত আহ্যাব  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত আহ্যাব  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত আহ্যাব  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Monday, November 18, 2024

Please remember us in your sincere prayers