কোরান সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত 100 তাফসীর
﴿قُل لَّوْ أَنتُمْ تَمْلِكُونَ خَزَائِنَ رَحْمَةِ رَبِّي إِذًا لَّأَمْسَكْتُمْ خَشْيَةَ الْإِنفَاقِ ۚ وَكَانَ الْإِنسَانُ قَتُورًا﴾
[ الإسراء: 100]
বলুনঃ যদি আমার পালনকর্তার রহমতের ভান্ডার তোমাদের হাতে থাকত, তবে ব্যয়িত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় অবশ্যই তা ধরে রাখতে। মানুষ তো অতিশয় কৃপণ। [সূরা বনী ইসরাঈল: 100]
Surah Al-Isra in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Al Isra ayat 100
বলো -- ''যদি তোমরা আমার প্রভুর করুণা-ভান্ডারের উপরে কর্তৃত্ব করতে তাহলে তোমরা নিশ্চয়ই তা ধরে রাখতে খরচ করার ভয়ে।’’ আর মানুষ বড় কৃপণ।
Tafsir Mokhtasar Bangla
১০০. হে রাসূল! আপনি এ মুশরিকদেরকে বলুন যে, যদি তোমরা আমার প্রতিপালকের রহমতের ভাÐারগুলোর মালিক হতে যা কখনো শেষ ও পরিসমাপ্ত হবে না তাহলে তোমরা তা নিঃশেষ হওয়ার ভয়ে খরচ করতে অস্বীকৃতি জানাতে। যাতে তোমরা ফকির না হয়ে যাও। বস্তুতঃ মানুষের স্বভাবই হলো কৃপণ হওয়া। তবে যদি সে মু’মিন হয় তখন সে আল্লাহর সাওয়াবের আশায়ই খরচ করে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
বল, ‘যদি তোমরা আমার প্রতিপালকের দয়ার ভান্ডারের অধিকারী হতে, তবুও তোমরা ব্যয় করে ( নিঃস্ব ) হয়ে যাবে এই আশংকায় তা ধরে রাখতে। আসলে মানুষ তো অতিশয় কৃপণ।’ [১] [১] خَشْيَةَ الإِنْفَاقِ এর অর্থ, خَشْيَةَ أَنْ يُنْفِقُوْا فَيَفْتَقِرُوْا " এই ভয়ে যে, দান করলে ধন শেষ হয়ে যাবে এবং পরিশেষে নিঃস্ব হয়ে যাবে। " অথচ, এটা আল্লাহর ধন-ভান্ডার যা শেষ হওয়ার নয়। কিন্তু মানুষ সংকীর্ণ চিত্তের অধিকারী হওয়ায় কার্পণ্য করে। অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন, ﴿أَمْ لَهُمْ نَصِيبٌ مِنَ الْمُلْكِ فَإِذًا لا يُؤْتُونَ النَّاسَ نَقِيرًا﴾ অর্থাৎ, " এরা যদি আল্লাহর রাজত্বের কিছু অংশ পেয়ে যায়, তবে এরা মানুষদেরকে একটি তিল পরিমাণও কিছু দেবে না। " ( সূরা নিসা ৪:৫৩ আয়াত ) খেজুরের আঁটির পিঠে যে বিন্দু থাকে সেটাকে 'নাক্বীর' বলা হয়। অর্থাৎ, সামান্য পরিমাণও কিছুই দেবে না। এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া যে, তিনি তাঁর ধন-ভান্ডারের মুখ মানুষের জন্য খুলে রেখেছেন। যেমন, হাদীসে আছে, " আল্লাহর হাত পরিপূর্ণ। তিনি রাত-দিন ব্যয় করেন, তবুও তা থেকে কিছুই কমে না। লক্ষ্য কর, যখন থেকে আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন, তখন থেকে তিনি কতই না ব্যয় করেই যাচ্ছেন, তা সত্ত্বেও তাঁর হাতে যা কিছু আছে তা থেকে কিছুই কমে যায়নি। " ( বুখারীঃ কিতাবুত্ তাওহীদ, মুসলিমঃ কিতাবুয্ যাকাত )
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
বলুন , ‘যদি তোমরা আমার রবের দয়ার ভাণ্ডারের অধিকারী হতে , তবুও ‘ব্যয় হয়ে যাবে’ এ আশংকায় তোমরা তা ধরে রাখতে; আর মানুষ তো খুবই কৃপণ [ ১ ]। [ ১ ] আয়াতে বলা হয়েছে; যদি তোমরা আল্লাহর রহমতের ভান্ডারের মালিক হয়ে যাও, তবে তাতেও কৃপণতা করবে। কাউকে দেবে না। এ আশঙ্কায় যে, এভাবে দিতে থাকলে ভান্ডারই নিঃশেষ হয়ে যাবে। অবশ্য আল্লাহর রহমতের ভান্ডার কখনও নিঃশেষ হয় না। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ আল্লাহর হাত পরিপূর্ণ, খরচে তা কমেনা, দিন রাতে প্রচুর প্রদানকারী, তোমরা কি দেখ না যে, আসমান ও যমীনের সৃষ্টির সময় থেকে এ পর্যন্ত যা কিছু তিনি খরচ করেছেন তাতে তার ডান হাতের মধ্যস্থিত কিছুই কমেনি । ” [ বুখারীঃ ৭৪১৯, মুসলিমঃ ৯৯৩ ] কিন্তু মানুষ স্বভাবগতভাবে ছোটমানা ও কম সাহসী। [ দেখুন, সূরা আল-মা'আরিজঃ ১৯-২২ ] অকাতরে দান করার সাহস তার নেই।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
এখানে আল্লাহ তাআলা মানব প্রকৃতির অভ্যাস বর্ণনা করছেন যে, মানুষ যদি আল্লাহ তাআলার রহমত বা দয়ার ভাণ্ডারেরও অধিকারী হয়ে যেতো, যা কখনো কিছুই কম হবার নয়, তবুও খরচ হয়ে যাবে এই ভয়ে তারা তা ধরে রাখতো। যেমন অন্য আয়াতে রয়েছেঃ “ যদি তারা রাজ্যের কোন অংশের মালিক হয়ে যায় তবে তারা কাউকে এক কানা কড়িও দিবে না । এটাই হচ্ছে মানব প্রকৃতি। তবে হাঁ, আল্লাহর পক্ষ থেকে যারা হিদায়াত প্রাপ্ত হয় এবং উত্তম তাওফীক লাভ করে তারা এই বদ অভ্যাসকে ঘৃণা করে। তারা দানশীল হয় এবং অপরের কল্যাণ সাধন করে। “ মানুষ বড়ই তাড়াহুড়াকারী ও দুর্বল মনী । কষ্ট ও বিপদের সময় তারা একেবারে মুষড়ে পড়ে এবং আরাম ও সুখের সময় গর্বভরে ফুলে ওঠে। এ সময় তারা কাউকেও কিছুই দান করে না, বরং কার্পণ্য করে। তবে নামাযীরা ব্যতীত ( শেষ পর্যন্ত )।” এই ধরনের আয়াত কুরআন কারীমের মধ্যে আরো বহু রয়েছে। এগুলি দ্বারা আল্লাহ তাআ’লরি ফযল ও করম এবং দান ও দয়ার পরিচয় মিলে।সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত আছে যে, আল্লাহ তাআলার হাত। পরিপূর্ণ রয়েছে। দিন রাত্রির খরচে তা হতে কিছুই কমে যায় না। শুরু থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত তিনি খরচ করে যাচ্ছেন, তথাপি তাঁর ভাণ্ডারের কিছুই কমে নাই।
সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত 100 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তিনি তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলী দেখান। অতএব, তোমরা আল্লাহর কোন কোন নিদর্শনকে অস্বীকার করবে?
- অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে বলে দিনঃ আমি তোমাদেরকে পরিস্কার ভাবে সতর্ক করেছি
- নিশ্চয়ই যে তার পালনকর্তার কাছে অপরাধী হয়ে আসে, তার জন্য রয়েছে জাহান্নাম। সেখানে সে মরবে
- আমি যাদেরকে কিতাব দান করেছি, তারা তাকে চেনে, যেমন করে চেনে নিজেদের পুত্রদেরকে। আর নিশ্চয়ই
- তারা ঐ শাস্ত্রের অনুসরণ করল, যা সুলায়মানের রাজত্ব কালে শয়তানরা আবৃত্তি করত। সুলায়মান কুফর করেনি;
- তোমরা যখন যুদ্ধলব্ধ ধন-সম্পদ সংগ্রহের জন্য যাবে, তখন যারা পশ্চাতে থেকে গিয়েছিল, তারা বলবেঃ আমাদেরকেও
- আর আল্লাহ সে ওয়াদাকে সত্যে পরিণত করেছেন, যখন তোমরা তাঁরই নির্দেশে ওদের খতম করছিলে। এমনকি
- ওরা উর্ধ্ব জগতের কোন কিছু শ্রবণ করতে পারে না এবং চার দিক থেকে তাদের প্রতি
- এবং তার পালনকর্তার নাম স্মরণ করে, অতঃপর নামায আদায় করে।
- এক বৃদ্ধা ব্যতীত, সে ছিল ধ্বংস প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা বনী ইসরাঈল ডাউনলোড করুন:
সূরা Al Isra mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Al Isra শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers