কোরান সূরা মায়িদা আয়াত 103 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Maidah ayat 103 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা মায়িদা আয়াত 103 আরবি পাঠে(Maidah).
  
   

﴿مَا جَعَلَ اللَّهُ مِن بَحِيرَةٍ وَلَا سَائِبَةٍ وَلَا وَصِيلَةٍ وَلَا حَامٍ ۙ وَلَٰكِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا يَفْتَرُونَ عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ ۖ وَأَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ﴾
[ المائدة: 103]

আল্লাহ ‘বহিরা’ ‘সায়েবা’ ওসীলা’ এবং ‘হামী’ কে শরীয়তসিদ্ধ করেননি। কিন্তু যারা কাফের, তারা আল্লাহর উপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে। তাদের অধিকাংশেরই বিবেক বুদ্ধি নেই। [সূরা মায়িদা: 103]

Surah Al-Maidah in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Maidah ayat 103


আল্লাহ্ তৈরি করেন নি কোনো বাহীরাহ্‌, বা সা’ইবাহ্‌, বা ওস্বীলাহ্‌, বা হামি, কিন্তু যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে এই মিথ্যা রচনা করেছে। কিন্তু তাদের অধিকাংশই বুঝতে পারে না।


Tafsir Mokhtasar Bangla


১০৩. আল্লাহ তা‘আলা চতুস্পদ জন্তু হালাল করে দিয়েছেন সেগুলোর কোনটিই তিনি হারাম করেননি যা মুশরিকরা তাদের মূর্তির জন্য নিজেদের উপর হারাম করেছে। যেমন: “ বাহীরা ” তথা নির্দিষ্ট সংখ্যক বাচ্চা প্রসবের পর যে উটের কান কেটে দেয়া হয়, “ সায়িবাহ ” তথা নির্দিষ্ট বয়সের পর যে উটকে তাদের মূর্তির জন্য ছেড়ে দেয়া হয়, “ ওয়াসীলাহ ” তথা যে উট একটার পর একটা মাদি বাচ্চাই প্রসব করে, “ হামী ” তথা যে মাদা উটের ঔরস থেকে কিছু সংখ্যক উট জন্ম নেয়। কাফিররা মিথ্যা ও অপবাদবশত ধারণা করে যে, আল্লাহ তা‘আলা উল্লিখিত পশুগুলোকে হারাম করে দিয়েছেন। বস্তুতঃ অধিকাংশ কাফিরই হক ও বাতিল এবং হালাল ও হারামের মাঝে পার্থক্য করতে পারে না।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


আল্লাহ বাহীরা, সায়েবা, অস্বীলা ও হাম[১] বিধিবদ্ধ করেননি। কিন্তু যারা অবিশ্বাস করে, তারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে থাকে। বস্তুতঃ তাদের অধিকাংশ উপলব্ধি করে না। [১] এগুলি ঐ সকল পশুর বিভিন্ন নাম, যা আরবের বাসিন্দাগণ তাদের প্রতিমার নামে উৎসর্গ করত। এগুলির বিভিন্ন ব্যাখ্যা বর্ণনা করা হয়েছে। সহীহ বুখারীতে সাঈদ বিন মুসাইয়েব কর্তৃক এইরূপ ব্যাখ্যা উল্লেখ হয়েছে, 'বাহীরা' ঐ জন্তুকে বলা হত, যার দুধ দোহন করা হত না এবং বলত যে, এ দুধ প্রতিমার জন্য। সুতরাং কোন লোকই তার ওলানে ( দুধের বাঁটে ) হাত লাগাত না। 'সায়েবা' ঐ জন্তুকে বলা হয়, যাকে মূর্তির নামে স্বাধীন ছেড়ে দেওয়া হত; না তার উপর আরোহণ করা হত আর না তার উপর কোন বোঝা বহন করা হত। 'অস্বীলা' ঐ উটনীকে বলা হত, যা প্রথমবার একটা মাদী বাচ্চা প্রসব করার পর দ্বিতীয় বারেও মাদী বাচ্চা প্রসব করত। ( অর্থাৎ প্রথম মাদী বাচ্চার সাথে দ্বিতীয় মাদী বাচ্চা মিলিত হত এবং উভয়ের মাঝে নর বাচ্চা পার্থক্য সৃষ্টি করত না ) তাহলে ঐ ধরনের উটনীকে মূর্তির নামে স্বাধীন ছেড়ে দেওয়া হত। 'হাম' ঐ ষাঁড় উটকে বলা হত, যার বীর্যে বহু বাচ্চা জন্মলাভ করত ( এবং তার বংশ যথেষ্ট বৃদ্ধি পেত ), তখন তার দ্বারা বোঝা বহনের কাজ নেওয়া হত না এবং তার উপর আরোহণ করাও হত না। তাকে মূর্তির নামে স্বাধীন ছেড়ে দেওয়া হত। আর তাকে 'হামী' বলা হত। এই বর্ণনায় এ হাদীসও উল্লেখ করা হয়েছে যে, আমর বিন আমের খুযাঈ সর্বপ্রথম মূর্তির নামে জন্তু উৎসর্গ করার প্রথা চালু করেছিল। নবী করীম ( সাঃ ) বলেন, " আমি তাকে জাহান্নামে নিজ নাড়ীভুঁড়ি নিয়ে টানাটানি করতে দেখেছি। " ( বুখারীঃ সূরা মায়েদার তফসীর ) আলোচ্য আয়াতে বলা হয়েছে যে, মহান আল্লাহ এই জন্তুগুলোকে ঐভাবে শরীয়তরূপে নির্ধারণ করেননি। কেননা তিনি নযর-নিয়ায শুধু নিজের জন্যই নির্দিষ্ট করেছেন। মূর্তির নামে নযর-নিয়াযের পদ্ধতি মুশরিকদের চালু করা জঘন্য প্রথা। বলা বাহুল্য, মূর্তি ও বাতেল উপাস্যদের নামে জন্তু উৎসর্গ করা এবং নযর-নিয়ায পেশ করার ধারা আজও মুশরিকদের মাঝে বিদ্যমান। এমনকি কিছু নামধারী মুসলিমদের মাঝেও এই শিরকী কাজ প্রচলিত। আমরা এই সমস্ত কর্ম থেকে আল্লাহর আশ্রয় কামনা করি।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


বাহীরাহ্‌, সায়েবাহ্‌, ওছীলাহ্‌ ও হামী আল্লাহ্‌ প্রবর্তণ করেননি; কিন্তু কাফেররা আল্লাহ্‌র উপর মিথ্যা আরোপ করে এবং তাদের অধিকাংশই বুঝে না []। [] বাহিরাহ, সায়েবাহ, ওহীলাহ, হামী প্রভৃতি সবই জাহেলিয়াত যুগের কুপ্রথা ও কুসংস্কারের সাথে সম্পর্কযুক্ত বিষয়। এগুলোর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে তাফসীরবিদদের মধ্যে বিস্তর মতভেদ রয়েছে। তবে আলোচ্য শব্দগুলোর মধ্যে প্রত্যেকটি বিভিন্ন প্রকারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হওয়া সম্ভবপর। আমরা সহীহ বুখারী থেকে সায়ীদ ইবন মূসাইয়্যেবের ব্যাখ্যা উদ্ধৃত করছি- ‘বাহীরাহ’ এমন জন্তুকে বলা হয় যার দুধ প্রতিমার নামে উৎসর্গ করা হত এবং কেউ নিজের কাজে ব্যবহার করত না । ‘সায়েবাহ ঐ জন্তু যাকে প্রতিমার নামে আমাদের দেশে ষাঁড়ের মত ছেড়ে দেয়া হত। ‘হামী’ পুরুষ উট, যে বিশেষ সংখ্যক রমন ক্রিয়া সমাপ্ত করে। এরূপ উটকেও প্রতিমার নামে ছেড়ে দেয়া হত। ‘ওহীলাহ’ যে উষ্ট্রী উপর্যুপরি মাদী বাচ্ছা প্রসব করে। জাহেলিয়াত যুগে এরূপ উষ্ট্রীকেও প্রতিমার নামে ছেড়ে দেয়া হত । [ বুখারী ৪৬২৩; অনুরূপ মুসলিম: ২৮৫৬ ] এসব কর্মকাণ্ড এমনিতেই শির্ক তদুপরি যে জন্তুর গোস্ত, দুধ ইত্যাদি দ্বারা উপকৃত হওয়া আল্লাহর আইনে বৈধ, নিজেদের পক্ষ থেকে শর্তাদি আরোপ করে সে জন্তুকে হালাল ও হারাম করার অধিকার তারা কোথায় পেল? বাস্তবে তারা যেন শরীআত প্রণেতার পদে নিজেরাই আসীন হয়ে গিয়েছিল । আরো অবিচার এই যে, নিজেদের এসব মুশরিকসুলভ কুপ্রথাকে তারা আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি ও নৈকট্যের উপায় বলে মনে করত । এর উত্তরে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ্ তা'আলা কখনও এসব প্রথা নির্ধারণ করেননি; বরং তাদের বড়রা আল্লাহর প্রতি এ অপবাদ আরোপ করেছে এবং অধিকাংশ নির্বোধ জনগণ একে গ্রহণ করে নিয়েছে । [ ফাতহুল কাদীর, সা’দী ] যারা এরূপ করে তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ আমি আমর ইবন আমের আল-খুজায়ীকে জাহান্নামে তার নিজের অন্ত্র নিয়ে টানাটানি করতে দেখলাম । কেননা, সে প্রথম সায়েবাহ ছেড়েছিল । [ বুখারীঃ ৪৬২৩-৪৬২৪, মুসলিমঃ ২৮৫৬, আহমাদঃ ২/২৭৫ ]

সূরা মায়িদা আয়াত 103 সূরা

ما جعل الله من بحيرة ولا سائبة ولا وصيلة ولا حام ولكن الذين كفروا يفترون على الله الكذب وأكثرهم لا يعقلون

سورة: المائدة - آية: ( 103 )  - جزء: ( 7 )  -  صفحة: ( 124 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. আমি কোন জনপদ ধবংস করিনি; কিন্ত তার নির্দিষ্ট সময় লিখিত ছিল।
  2. আল্লাহকে সেজদা করে যা কিছু নভোমন্ডলে আছে এবং যা কিছু ভুমন্ডলে আছে এবং ফেরেশতাগণ; তারা
  3. হে আমার কওম, আমি তোমাদের জন্যে প্রচন্ড হাঁক-ডাকের দিনের আশংকা করি।
  4. যারা ঈমান আনে আর সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নেয়ামতে ভরা জান্নাত।
  5. আর যখন তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করবে তখন স্ত্রীদের ঘর থেকে বের না করে এক
  6. আপনি কোন কাজের বিষয়ে বলবেন না যে, সেটি আমি আগামী কাল করব।
  7. আমি তো সুস্পষ্ট আয়াত সমূহ অবর্তীর্ণ করেছি। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালনা করেন।
  8. এতে আছে ফলমূল এবং বহিরাবরণবিশিষ্ট খর্জুর বৃক্ষ।
  9. নিশ্চয় তারা কাফের, যারা বলেঃ আল্লাহ তিনের এক; অথচ এক উপাস্য ছাড়া কোন উপাস্য নেই।
  10. প্রকৃতপক্ষে এরাই সত্য প্রত্যাখ্যাকারী। আর যারা সত্য প্রত্যাখ্যানকারী তাদের জন্য তৈরী করে রেখেছি অপমানজনক আযাব।

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা মায়িদা ডাউনলোড করুন:

সূরা Maidah mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Maidah শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত মায়িদা  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত মায়িদা  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত মায়িদা  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত মায়িদা  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত মায়িদা  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত মায়িদা  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত মায়িদা  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত মায়িদা  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত মায়িদা  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত মায়িদা  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত মায়িদা  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত মায়িদা  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত মায়িদা  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত মায়িদা  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত মায়িদা  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত মায়িদা  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত মায়িদা  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত মায়িদা  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত মায়িদা  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত মায়িদা  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত মায়িদা  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত মায়িদা  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত মায়িদা  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত মায়িদা  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত মায়িদা  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Wednesday, December 18, 2024

Please remember us in your sincere prayers