কোরান সূরা হুদ আয়াত 11 তাফসীর
﴿إِلَّا الَّذِينَ صَبَرُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أُولَٰئِكَ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ كَبِيرٌ﴾
[ هود: 11]
তবে যারা ধৈর্য্যধারণ করেছে এবং সৎকার্য করেছে তাদের জন্য ক্ষমা ও বিরাট প্রতিদান রয়েছে। [সূরা হুদ: 11]
Surah Hud in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Hud ayat 11
তারা ছাড়া যারা ধৈর্যধারণ করে ও সৎকর্ম করে, এরাই -- এদের জন্য রয়েছে পরিত্রাণ ও মহাপুরস্কার।
Tafsir Mokhtasar Bangla
১১. তবে যারা অনাকাক্সিক্ষত কষ্টে, আনুগত্যের ক্ষেত্রে এবং গুনাহসমূহে পতিত হওয়ার ব্যাপারে ধৈর্য ধারণ করে উপরন্তু সৎ আমল করে, তাদের অবস্থা কিন্তু অন্য রকম। তাদেরকে নিরাশা আচ্ছন্ন করে না, তারা আল্লাহর নেয়ামতের অকৃতজ্ঞ হয় না এবং তারা মানুষের সাথে অহংকারও করে না। যারা এধরনের গুণে গুণান্বিত তাদের জন্য রয়েছে গুনাহখাতা হতে তাদের রবের পক্ষ থেকে ক্ষমা এবং পরকালে রয়েছে তাদের জন্য মহা প্রতিদান।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
কিন্তু যারা ধৈর্য ধরে ও ভাল কাজ করে ( তারা এরূপ হয় না ); এমন লোকদের জন্য রয়েছে ক্ষমা এবং মহা প্রতিদান। [১] [১] অর্থাৎ, মু'মিনগণ সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে থাকুক বা দুঃখ-কষ্টে থাকুক উভয় অবস্থাতেই তারা আল্লাহর বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করেন। যেমন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, নবী ( সাঃ ) শপথ করে বলেছেন, " সেই সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ আছে! আল্লাহ তাআলা মু'মিনদের জন্য যে ফায়সালাই করেন, তাদের ভালোর জন্যই করেন। যদি সে সুখ লাভ করে, তাহলে তার উপর সে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, যা তার জন্য মঙ্গলময় ( অর্থাৎ, নেকীর কারণ হয় )। আর যদি কোন দুঃখ-কষ্ট পায়, তাহলে ধৈর্য ধারণ করে, আর এটাও তাঁর জন্য মঙ্গলময় ( অর্থাৎ, নেকীর কারণ ) হয়। এই বৈশিষ্ট্য একজন মু'মিন ব্যতীত অন্য কারো নয়। " ( মুসলিম ) অন্য আরো একটি হাদীসে বলেন যে, " একজন মু'মিন যখন কোন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয় এবং কষ্ট পায়, এমনকি তার পায়ে কাঁটা প্রবিষ্ট হয়, তখন আল্লাহ তাআলা তার কারণে তাঁর গুনাহ মাফ করে দেন। " ( আহমাদ ৩/৪ ) সূরা মাআরিজের ৭০:১৯-২২ নং আয়াতেও এই বিষয়টি বর্ণনা করা হয়েছে।)
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
কিন্তু যারা ধৈর্যশীল [ ১ ] ও সৎকর্মপরায়ণ তাদেরই জন্য আছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার। [ ১ ] এ আয়াতে সত্যিকার মানুষকে সাধারণ মানবীয় দুর্বলতা হতে পৃথক করে বলা হয়েছে যে, সে সব ব্যক্তি সাধারণ মানবীয় দুর্বলতার উর্ধের্ব যাদের মধ্যে দুটি বিশেষ গুণ রয়েছে। একটি হচ্ছে ধৈর্য ও সহনশীলতা, দ্বিতীয়টি সৎকর্মশীলতা। সবর শব্দটি আরবী ভাষায় অনেক ব্যাপকতর অর্থে ব্যবহৃত হয়। সবরের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বাধা দেয়া, বন্ধন করা। কুরআন ও হাদীসের পরিভাষায় অন্যায় কার্য হতে প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করাকে সবর বলে। সুতরাং শরীআতের পরিপন্থী যাবতীয় পাপকার্য হতে প্রবৃত্তিকে দমন করা যেমন সবরের অন্তর্ভুক্ত তদ্রুপ ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাত ও মুস্তাহাব ইত্যাদি নেক কাজের জন্য প্রবৃত্তিকে বাধ্য করাও সবরের শামিল। এর বাইরে বিপদাপদে নিজেকে সংযত রাখতে পারাও সবরের অন্তর্ভুক্ত। [ ইবনুল কাইয়্যেম: মাদারেজুস সালেকীন ] রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “ যার হাতে আমার আত্মা তার শপথ করে বলছি, একজন মুমিনের উপর আপতিত যে কোন ধরনের চিন্তা, পেরেশানী, কষ্ট, ব্যথা, দুর্ভাবনা এমনকি একটি কাঁটা ফুটলেও এর মাধ্যমে আল্লাহ তার গুণাহের কাফ্ফারা করে দেন” । [ বুখারীঃ ৫৬৪১, ৫৬৪২, মুসলিমঃ ২৫৭৩ ] অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “ যার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ করে বলছি, আল্লাহ মুমিনের জন্য যে ফয়সালাই করেছেন এটা তার জন্য ভাল হয়ে দেখা দেয়, যদি কোন ভাল কিছু তার জুটে যায় তখন সে শুকরিয়া আদায় করে সুতরাং তা তার জন্য কল্যাণ । আর যদি খারাপ কিছু তার ভাগ্যে জুটে যায় তখন সে ধৈর্য ধারণ করে তখন তার জন্য তা কল্যাণ হিসেবে পরিগণিত হয়। একমাত্র মুমিন ছাড়া কারো এ ধরনের সৌভাগ্য হয় না। [ মুসলিমঃ ২৯৯৯ ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৯-১১ নং আয়াতের তাফসীর পূর্ণ ঈমানদারগণ ছাড়া সাধারণভাবে জনগণের মধ্যে যে সব খারাপ গুণ ও বদ অভ্যাস রয়েছে, আল্লাহ তাআ’লা এখানে তারই বর্ণনা দিচ্ছেন যে, মানুষ সুখের পর দুঃখ-কষ্টে পতিত হলে সম্পূর্ণরূপে নিরাশ ও অকৃতজ্ঞ হয়ে পড়ে এবং মহান আল্লাহর প্রতি বদ ধারণা পোষণ করতে শুরু করে দেয়, ইতিপূর্বে যেন সে কোন আরাম ও সুখ ভোগ করেই নাই। অথবা এই দুঃখ-কষ্টের পর পুনরায় যে তাদের উপর শান্তি নেমে আসতে পারে এ আশাও তারা করে না। পক্ষান্তরে, দুঃখ-কষ্টে পতিত হওয়ার পর যদি সুখ শান্তি তাদেরকে স্পর্শ করে তখন তারা বলতে শুরু করে যে, দুঃসময় তাদের উপর থেকে সরে গেছে। এ কথা বলে তারা খুশীতে আত্মহারা হয়ে যায় এবং অন্যদের উপর গর্ব করতে থাকে। এর পর আবার যে তাদের উপর দুঃখ বিপদ নেমে আসতে পারে সে সম্পর্কে তারা সম্পূর্ণরূপে বেখেয়াল ও নিশ্চিন্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু যারা মু’মিন তারা এই বদ অভ্যাস থেকে মুক্ত। তারা দুঃখ-দুর্দশায় ধৈর্য ধারণ করে এবং সুখ ও আরামের সময় মহান আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ও তার অনুগত হয়ে থাকে। এসব লোক এর বিনিময়ে ক্ষমা ও বড় পুরস্কার লাভ করে। যেমন হাদীসে এসেছে ( রাসূলুল্লাহ (সঃ ) বলেছেন): “ যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তাঁর শপথ! মু'মিনের উপর এমন কোন কষ্ট, বিপদ, দুঃখ ও চিন্তা পতিত হয় না যার কারণে আল্লাহ তাআ’লা তার গুণাহ মাফ না করেন, এমন কি একটা কাঁটা ফুটলেও ।” সহীহ্ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছে। ( যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ ) বলেছেন): “ যাঁর হাতে আমার জীবন রয়েছে তাঁর শপথ! “মু'মিনের জন্যে আল্লাহর প্রত্যেকটা ফায়সালা কল্যাণকর হয়ে থাকে । সে সুখ শান্তির সময় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, ফলে তা তার জন্যে কল্যাণকর হয় এবং দুঃখ-কষ্টের সময় ধৈর্য ধারণ করে, ফলে তখনই সে কল্যাণ লাভ করে থাকে।” এ জন্যেই আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ “ আসরের সময়ের শপথ! নিশ্চয় মানুষ অত্যন্ত ক্ষতির মধ্যে রয়েছে । কিন্তু যারা ঈমান আনে, ভাল কাজ করে, একে অপরকে সত্যের প্রতি উপদেশ দিতে থাকে এবং একে অন্যকে ( আমলের ) পাবন্দ থাকার উপদেশ দিতে থাকে। ( তারাই ক্ষতি হতে রক্ষা পাবে )” মহান আল্লাহ আর এক জায়গায় বলেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ নিশ্চয় মানুষকে দুর্বল মনা করে সৃষ্টি করা হয়েছে । যখন তাকে দুঃখ স্পর্শ করে তখন সে হায়-হুতাশ করতে থাকে। আর যখন সে স্বচ্ছল হয় তখন কার্পণ্য করতে শুরু করে। ( ৭০:১৯ )
সূরা হুদ আয়াত 11 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- না তারা বলেঃ এই কোরআন সে নিজে রচনা করেছে? বরং তারা অবিশ্বাসী।
- তারা বলল, আমরা শক্তিশালী এবং কঠোর যোদ্ধা। এখন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা আপনারই। অতএব আপনি ভেবে
- তারা থাকবে কাঁটাবিহীন বদরিকা বৃক্ষে।
- হে মুমিনগণ, আল্লাহ তোমাদেরকে এমন কিছু শিকারের মাধ্যমে পরীক্ষা করবেন, যে শিকার পর্যন্ত তোমাদের হাত
- মনে রেখো যারা আল্লাহর বন্ধু, তাদের না কোন ভয় ভীতি আছে, না তারা চিন্তান্বিত হবে।
- আমরা ওহী লাভ করেছি যে, যে ব্যক্তি মিথ্যারোপ করে এবং মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার উপর
- ইউসুফ বললেনঃ এটা এজন্য, যাতে আযীয জেনে নেয় যে, আমি গোপনে তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করিনি।
- এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর।
- এবং তাদেরই একজনকে তাদের মধ্যে রসূলরূপে প্রেরণ করেছিলাম এই বলে যে, তোমরা আল্লাহর বন্দেগী কর।
- যিনি তাঁর প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে সুন্দর করেছেন এবং কাদামাটি থেকে মানব সৃষ্টির সূচনা করেছেন।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা হুদ ডাউনলোড করুন:
সূরা Hud mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Hud শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers