কোরান সূরা মায়িদা আয়াত 11 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Maidah ayat 11 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা মায়িদা আয়াত 11 আরবি পাঠে(Maidah).
  
   

﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ هَمَّ قَوْمٌ أَن يَبْسُطُوا إِلَيْكُمْ أَيْدِيَهُمْ فَكَفَّ أَيْدِيَهُمْ عَنكُمْ ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ﴾
[ المائدة: 11]

হে মুমিনগণ, তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর, যখন এক সম্প্রদায় তোমাদের দিকে স্বীয় হস্ত প্রসারিত করতে সচেষ্ট হয়েছিল, তখন তিনি তাদের হস্ত তোমাদের থেকে প্রতিহত করে দিলেন। আল্লাহকে ভয় কর এবং মুমিনদের আল্লাহর উপরই ভরসা করা উচিত। [সূরা মায়িদা: 11]

Surah Al-Maidah in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Maidah ayat 11


ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের উপরে আল্লাহ্‌র নিয়ামত স্মরণ করো -- যখন একটি দল দৃঢ়সঙ্কল্প করেছিল তোমাদের দিকে তাদের হাত বাড়াতে, কিন্তু তিনি তোমাদের বিরুদ্ধে তাদের হাত ঠেকিয়ে রেখেছিলেন, কাজেই আল্লাহ্‌কে ভয়-শ্রদ্ধা করো। আর আল্লাহ্‌র উপরেই তবে নির্ভর করুক মুমিন সব।


Tafsir Mokhtasar Bangla


১১. হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের অন্তর ও মুখ দিয়ে স্মরণ করো আল্লাহর দেয়া নিরাপত্তার নিয়ামত এবং যে ভয় তোমাদের শত্রæর অন্তরে ঢেলে দিয়েছেন যখন তোমাদেরকে কঠিনভাবে ধরে হত্যা করার জন্য তারা তোমাদের দিকে তাদের হাত বাড়ানোর ইচ্ছা করেছে। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে তোমাদের থেকে সরিয়ে দিয়েছেন এবং তোমাদেরকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। তাই তোমরা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে তাঁকে ভয় করো। দ্বীন ও দুনিয়ার সুবিধাদি হাসিলের ক্ষেত্রে মু’মিনরা যেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার উপরই ভরসা করে।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের প্রতি আল্লাহর নিয়ামত স্মরণ কর, যখন এক সম্প্রদায় তোমাদের বিরুদ্ধে হস্ত প্রসারিত করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন আল্লাহ তোমাদের উপর থেকে তাদের হস্তকে প্রতিহত করেছিলেন[১] এবং আল্লাহকে ভয় কর। আর বিশ্বাসীগণের উচিত, কেবল আল্লাহর উপরেই ভরসা করা। [১] এই আয়াতের শানে নুযুল বা অবতীর্ণের কারণ সম্পর্কে কুরআনের ভাষ্যকারগণ বিভিন্ন ঘটনা উল্লেখ করেছেন যেমন; ( ক ) একজন বেদুঈনের ঘটনা, কোন এক সফর থেকে প্রত্যাবর্তনের সময় রসূল ( সাঃ ) কোন এক গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন এবং তরবারিটিকে গাছে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। ( সুযোগ বুঝে ) ঐ বেদুঈন ( তাঁর দিকে ধাবিত হয়ে ) তরবারিটি হস্তগত করে ফেলল। অতঃপর তাঁর দিকে তরবারি উঁচিয়ে বলল, 'হে মুহাম্মাদ! আমার কবল থেকে কে তোমাকে রক্ষা করবে?' রসূল ( সাঃ ) নিশ্চিন্তে উত্তর দিলেন; 'আল্লাহ।' ( অর্থাৎ আল্লাহ রক্ষা করবেন। ) শুধু এতটুকু কথা বলতে যত দেরী, ( অদৃশ্য শক্তির ইঙ্গিতে ) তার হাত থেকে তরবারিটি পড়ে গেল। ( খ ) আবার কেউ বলেন যে, কা'ব বিন আশরাফ ও তার সহযোগীরা রসূল ( সাঃ ) ও তাঁর সাহাবা ( রাঃ )গণের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও ছল-চাতুরী করে তাঁদের ক্ষতি করার ষড়যন্ত্র করেছিল; যখন তিনি ও সাহাবাগণ তার বাড়িতে পৌঁঁছেছিলেন। কিন্তু তাদের এ ষড়যন্ত্র আল্লাহ তাআলা যথাসময়ে তাঁর রসূল ( সাঃ )-কে অবগত করে ব্যর্থ করে দেন। ( গ ) আবার কেউ বলেন যে, একজন মুসলমানের হাতে ভুলক্রমে আ'মেরী গোত্রের দুই ব্যক্তি খুন হয়েছিল। আল্লাহর রসূল ( সাঃ ) ও সাহাবায়ে কেরাম ( রাঃ ) সহ রক্তপণ আদায়ের ব্যাপারে সন্ধিচুক্তি মোতাবেক সহযোগিতার কামনায় ইয়াহুদীদের গোত্র বানী নাযবীরের বস্তীতে গমন করেন। তিনি একটি দেওয়ালের সাথে হেলান দিয়ে বসেন। অপর দিকে তারা ষড়যন্ত্র করেছিল যে, উপর থেকে যাঁতার একটি পাথর ফেলে তাঁকে হত্যা করা হবে। আল্লাহ তাআলা তাঁর রসূল ( সাঃ )-কে অহীর মাধ্যমে ( তাদের সংকল্পের কথা ) জানিয়ে দেন এবং তৎক্ষণাৎ তিনি সেখান থেকে প্রস্থান করেন। সম্ভবতঃ উক্ত সমস্ত ঘটনার পরেই এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। কেননা একটি আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার ব্যাপারে বিভিন্ন কারণ ও পটভূমিকা থাকতে পারে। ( তাফসীরে ইবনে কাসীর, আইসারুত তাফাসীর ও ফাতহুল ক্বাদীর )

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


হে মুমিনগণ! তোমাদের প্রতি আল্লাহর নেয়ামত স্মরণ কর যখন এক সম্প্রদায় তোমাদের বিরুদ্ধে তাদের হাত প্রসারিত করতে চেয়েছিল, অতঃপর আল্লাহ তাদের হাত তোমাদের থেকে নিবৃত রাখলেন। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। আল্লাহর উপরই যেন মুমিনগণ তাওয়াক্কুল করে []। [] এ আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শক্ররা বার বার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুসলিমদেরকে হত্যা, লুন্ঠন ও ধরাপৃষ্ঠ থেকে মুছে ফেলার যেসব পরিকল্পনা করে, সেগুলো আল্লাহ ব্যর্থ করে দেন। ইসলামের ইতিহাসে সামগ্রিকভাবে কাফেরদের পরিকল্পনা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হওয়ার অসংখ্য ঘটনা রয়েছে। তাফসীরবিদগণ এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে কিছু সংখ্যক বিশেষ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাও উল্লেখ করেছেন। সে সবগুলোই আলোচ্য আয়াতের সাক্ষী হতে পারে। আয়াতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুসলিমদের অদৃশ্য হেফাযতের কথা উল্লেখ করার পর প্রথমতঃ বলা হয়েছে যে, আল্লাহর নেয়ামত লাভ করার জন্য তাকওয়া ও আল্লাহর উপর নির্ভর করা জরুরী। যে কোন জাতি অথবা ব্যক্তি যে কোন সময় বা কোন স্থানে এ দুটি গুণ অবলম্বন করবে, আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে তারই এভাবে হেফাযত ও সংরক্ষণ করা হবে। [ বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন, তাফসীর ইবন কাসীর ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


৭-১১ নং আয়াতের তাফসীর: এ বিরাট ধর্ম এবং এ মহান রাসূল ( সঃ )-কে পাঠিয়ে আল্লাহ তা'আলা এ উম্মতের উপর যে ইহসান করেছেন সেটাই তিনি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। আর সেই অঙ্গীকারের উপর দৃঢ় থাকার জন্যে তাদেরকে হিদায়াত করেছেন, যে অঙ্গীকার মুসলমানরা করেছিল, তারা আল্লাহর রাসূলের ( সঃ ) অনুগত হবে, তাঁকে সর্ব প্রকারের সাহায্য করবে, দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে, নিজেরা তা কবুল করবে এবং অপরের নিকটও তা পৌছিয়ে দেবে। ইসলাম গ্রহণের সময় প্রতিটি মুমিন স্বীয় বায়আতে উক্ত জিনিসগুলো স্বীকার করতো। সাহাবায়ে কিরাম নিম্নলিখিত ভাষায় বলেছিলেনঃ “ আমরা আল্লাহর রাসূল ( সঃ )-এর নিকট বায়আত গ্রহণ করছি যে, আমরা শুনতে থাকবো, মানতে থাকবো । আমাদের মনের চাহিদা হোক বা না-ই হোক অথবা অন্যদেরকে আমাদের উপর প্রাধান্য দেয়া হোক না কেন। কোন যোগ্য লোকের নিকট থেকে আমরা কোন কাজ ছিনিয়ে নেবো না।"ইরশাদ হচ্ছে-তোমরা ঈমান আনছো না কেন? অথচ রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তোমাদেরকে তোমাদের প্রভুর উপর ঈমান আনার আহ্বান জানাচ্ছেন! আর তিনি তোমাদের নিকট অঙ্গীকারও নিয়েছেন, যদি তোমাদের বিশ্বাস হয়। এটাও বলা হয়েছে যে, এ আয়াতে ইয়াহদীদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হচ্ছে তাদেরকে বলা হচ্ছে- তোমরা তো রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর আনুগত্য স্বীকারের কথা দিয়েছো, এরপরেও তাঁকে মান্য না করার কি অর্থ হতে পারে? একথাও বলা হয়েছে যে, হযরত আদমের পৃষ্ঠ থেকে বের হবার পর আল্লাহ তা'আলা বানু আদমের নিকট থেকে যে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন- আমি কি তোমাদের প্রভু নই? সবাই স্বীকারোক্তি করেছিল-হা, আমরা এর উপর সাক্ষী থাকলাম। কিন্তু প্রথম উক্তিটিই বেশী প্রকাশমান। সুদ্দী ( রঃ ) হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে এটাই বর্ণিত আছে। ইমাম ইবনে জারীরও ( রঃ ) একে পছন্দনীয় বলেছেন। সর্বাবস্থায় মানুষের আল্লাহকে ভয় করা উচিত। তিনি অন্তরের ও বক্ষের গোপনীয় কথাও পূর্ণভাবে অবগত রয়েছেন। ঘোষিত হচ্ছে-হে মুমনিগণ! লোকদেরকে দেখাবার জন্যে নয়, বরং আল্লাহর জন্যে সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক এবং ইনসাফের সাথে সঠিক সাক্ষী হয়ে যাও। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত নোমান ইবনে বাশীর ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ আমার পিতা আমাকে একটি দান দিয়ে রেখেছিলেন। তখন আমার মা উমরাহ বিনতে রাওয়াহা ( রাঃ ) বলেনঃ “ আমি এ পর্যন্ত নিশ্চিন্ত হতে পারি না যে পর্যন্ত না রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে এর উপর সাক্ষী বানানো হয় ।' এ কথা শুনে আমার পিতা রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিকট হাযির হয়ে ঘটনাটি বর্ণনা করেন। তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমার পিতাকে জিজ্ঞেস করেনঃ “ তোমার অনান্য সন্তানদেরকেও কি এরূপ দান দিয়ে রেখেছো?” আমার পিতা উত্তরে বললেনঃ ‘না রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তখন বললেনঃ আল্লাহকে ভয় কর এবং স্বীয় সন্তানদের মধ্যে ইনসাফ কায়েম কর । যাও, আমি কোন অত্যাচারের উপর সাক্ষী হতে পারি না। আমার পিতা তখন ঐ দান আমার নিকট হতে ফিরিয়ে নেন।ইরশাদ হচ্ছে- কোন সম্পদায়ের শত্রুতা যেন তোমাদেরকে আদল ও ইনসাফের পথ থেকে সরিয়ে না দেয়। ( এখানে কওম' দ্বারা ইয়াহূদকে বুঝানো হয়েছে। তারা নবী (সঃ )-কে হত্যা করার ইচ্ছা করেছিল। যেমন ইবনে জারীর ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন। আর সুহাইলী বলেন যে, এখানে কওম’ দ্বারা গাওরাস ইবনে হারিস গাতফানীকে বুঝানো হয়েছে) বন্ধু হোক বা শত্রু হোক, তোমাদের ইনসাফের পক্ষ অবলম্বন করা উচিত। এটাই হচ্ছে তাকওয়ার অধিক নিকটবর্তী। এখানে ( আরবী )( আরবী )-এর উপর ( আরবী ) করেছে যার দিকে ( আরবী ) টি ফিরেছে। এ নযীর কুরআন মাজীদে আরও রয়েছে। আরবদের কথাতেও এর ব্যবহার দেখা যায়। কুরআন কারীমের এক জায়গায় রয়েছে- ( আরবী ) অর্থাৎ তোমরা যদি কোন বাড়ীতে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা কর, “ আর সে সময় তোমাদেরকে বলা হয়- ফিরে যাও, তাহলে তোমরা ফিরে যাবে, এটাই তোমাদের জন্যে অধিক পবিত্র থাকার কারণ হবে ।( ২৪:২৮ ) সুতরাং এখানেও ( আরবী ) -এর ( আরবী ) -এর উল্লেখ করা হয়নি, কিন্তু ( আরবী ) এর ( আরবী ) বিদ্যমান রয়েছে। অর্থাৎ ফিরে যাওয়া। অনুরূপভাবে আয়াতেও এ ( আরবী ) অর্থাৎ “ ইনসাফ করা বিদ্যমান রয়েছে । এটাও স্মরণীয় বিষয় যে, এখানে শব্দটি ( আরবী ) -এর রূপ। এটা এমন জায়গায় রয়েছে যে অন্যদিকে আর কিছুই নেই। যেমনঃ ( আরবী ) ( ২৫ ২৪ )-এ আয়াতটিতে রয়েছে। আর যেমন এক মহিলার হযরত উমার ( রাঃ )-কে ( আরবী ) -এ কথা বলা। এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয়ই তিনি তোমাদের আমল সম্বন্ধে পূর্ণ ওয়াকিফহাল। তিনি ভাল ও মন্দের পূর্ণ প্রতিদান প্রদান করবেন। তিনি মুমিনদের পাপ ক্ষমা করে তাদেরকে মহান পুরস্কার অর্থাৎ জান্নাত দান করার অঙ্গীকার করেছেন। যদিও প্রকৃতপক্ষে তারা এ রহমত একমাত্র আল্লাহর অনুগ্রহের ফলেই লাভ করবে, কিন্তু এ রহমতের প্রতি মনোযোগ দেয়ার কারণ হবে তাদের আমল। অতএব, প্রকৃতপক্ষে সর্বপ্রকারের প্রশংসার যোগ্য একমাত্র আল্লাহ এবং সব কিছুই তারই অনুগ্রহ ও দয়া মাত্র। জ্ঞান ও ইনসাফের দাবী তো এটাই যে, মুমিন ও সৎ লোকদেরকে জান্নাত দেয়া হোক এবং কাফির ও মিথ্যা প্রতিপন্নকারীদেরকে জাহান্নামে প্রবিষ্ট করা হোক। সুতরাং হবেও তাই। তারপর আল্লাহ পাক নিজের আর একটি নিয়ামতের কথা মুমিনদেরকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। যার বিস্তারিত বিবরণ নিম্নরূপঃহযরত জাবির ( রাঃ ) বর্ণনা করেন যে, কোন এক সফরে নবী ( সঃ ) একটি মনযিলে অবতরণ করেন। জনগণ ছায়াযুক্ত বৃক্ষরাজির খোঁজে বিচ্ছিন্নভাবে এদিক ওদিক ঘোরাফেরা করছিলেন। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) স্বীয় হাতিয়ার একটি গাছে লটকিয়ে রাখেন। এমন সময় এক বেদুঈন এসে তাঁর তরবারীখানা হাতে টেনে নিয়ে বলে, আপনাকে এখন আমার হাত থেকে কে বাঁচাতে পারে? উত্তরে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ মহামহিমান্বিত আল্লাহ ( আমাকে বাঁচাবেন )” সে দ্বিতীয়বার এ প্রশ্নই করলো। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) পুনরায় এ উত্তরই দিলেন। বেদুঈন তৃতীয়বার বললো, “ আপনাকে আমা থেকে রক্ষা করবে কে?” তিনি উত্তরে বললেনঃ আল্লাহ বর্ণনাকারী বলেন যে, এ কথা বলার সাথে সাথে বেদুঈনের হাত থেকে তরবারী পড়ে গেল। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) সাহাবীদেরকে ডাক দিলেন। তাঁরা এসে গেলে তিনি তাঁদের কাছে বেদুঈনের ঘটনাটি বর্ণনা করলেন। সে তখনও তার পার্শ্বে উপবিষ্ট ছিল। কিন্তু তিনি তার কোন প্রতিশোধ নিলেন না। কাতাদাহ ( রঃ ) বলেন যে, কতগুলো তোক প্রতারণা করে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে হত্যা করতে চেয়েছিল এবং তারাই ঐ বেদুঈনকে গুপ্তঘাতক হিসেবে তাঁর নিকট পাঠিয়েছিল। কিন্তু মহান আল্লাহ তাদের পরিকল্পনা এভাবে ব্যর্থ করে দেন। সহীহ হাদীস দ্বারা জানা যায় যে, ঐ বেদুঈনের নাম ছিল গাওরাস ইবনে হারিস। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) ও তাঁর সাহাবীদেরকে হত্য করার উদ্দেশ্যে খাদ্যে বিষ মিশিয়ে তাদেরকে দাওয়াত করে। কিন্তু মহান আল্লাহ এ সংবাদ রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে জানিয়ে দেন। সুতরাং তারা বেঁচে যান। একথাও বলা হয়েছে যে, কা'ব ইবনে আশরাফ এবং তার ইয়াহূদী সঙ্গীরা রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে বাড়ীতে ডেকে নিয়ে কষ্ট দিতে চেয়েছিল। এটা ঐ সময়ের ঘটনা, যখন নবী ( সঃ ) আমেরী লোকদের দিয়াত গ্রহণের জন্যে তাদের নিকট গিয়েছিলেন। ঐ সময় দুষ্টেরা আমর ইবনে জাহাশ ইবনে কা'বকে উত্তেজিত করতঃ বলেছিল- “ আমরা রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে নীচে দাঁড় করিয়ে রেখে আলোচনায় লিপ্ত করিয়ে রাখবো, এ সুযোগে তুমি উপর থেকে তার উপর পাথর ফেলে দিয়ে তাঁকে দুনিয়া হতে বিদায় করে দেবে ।” কিন্তু মহান আল্লাহ স্বীয় রাসূল ( সঃ )-কে পথেই তাদের দুষ্টামির কথা জানিয়ে দেন। সুতরাং রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) সাহাবীগণসহ সেখান হতে ফিরে আসেন। এ আয়াতে ঐ ঘটনারই উল্লেখ রয়েছে।ইরশাদ হচ্ছে-মুমিনদের আল্লাহর উপর ভরসা করা উচিত। বিপদ আপদ থেকে রক্ষাকারী একমাত্র তিনিই। এরপর রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) মহান আল্লাহর নির্দেশক্রমে বানূ নাযীরের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী নিয়ে অগ্রসর হন। তাদের কিছু সংখ্যক লোককে হত্যা করেন এবং কতক লোককে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেন।

সূরা মায়িদা আয়াত 11 সূরা

ياأيها الذين آمنوا اذكروا نعمة الله عليكم إذ هم قوم أن يبسطوا إليكم أيديهم فكف أيديهم عنكم واتقوا الله وعلى الله فليتوكل المؤمنون

سورة: المائدة - آية: ( 11 )  - جزء: ( 6 )  -  صفحة: ( 109 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. তারাই সে লোক, যাদের প্রচেষ্টা পার্থিবজীবনে বিভ্রান্ত হয়, অথচ তারা মনে করে যে, তারা সৎকর্ম
  2. আল্লাহ কোন মানুষের মধ্যে দুটি হৃদয় স্থাপন করেননি। তোমাদের স্ত্রীগণ যাদের সাথে তোমরা যিহার কর,
  3. ঢোক গিলে তা পান করবে। এবং গলার ভিতরে প্রবেশ করতে পারবে না। প্রতি দিক থেকে
  4. বস্তুতঃ আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের মাঝে সাক্ষী হিসাবে যথেষ্ট। আমরা তোমাদের বন্দেগী সম্পর্কে জানতাম না।
  5. যারা কুফুরী করে, তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি আল্লাহর সামনে কখনও কাজে আসবে না। আর তারাই
  6. যাতে করে সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে দেন, যদিও পাপীরা অসন্তুষ্ট হয়।
  7. আপনি নিক্ষেপ করুন আপনার লাঠি। অতঃপর যখন তিনি তাকে সর্পের ন্যায় ছুটাছুটি করতে দেখলেন, তখন
  8. তুমি কি তাদেকে দেখনি, যারা নিজেদেরকে পূত-পবিত্র বলে থাকে অথচ পবিত্র করেন আল্লাহ যাকে ইচ্ছা
  9. আল্লাহ বললেনঃ তবে তুমি এখান থেকে বের হয়ে যাও। তুমি বিতাড়িত।
  10. যখন জাহান্নামের অগ্নি প্রজ্বলিত করা হবে

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা মায়িদা ডাউনলোড করুন:

সূরা Maidah mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Maidah শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত মায়িদা  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত মায়িদা  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত মায়িদা  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত মায়িদা  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত মায়িদা  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত মায়িদা  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত মায়িদা  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত মায়িদা  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত মায়িদা  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত মায়িদা  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত মায়িদা  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত মায়িদা  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত মায়িদা  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত মায়িদা  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত মায়িদা  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত মায়িদা  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত মায়িদা  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত মায়িদা  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত মায়িদা  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত মায়িদা  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত মায়িদা  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত মায়িদা  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত মায়িদা  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত মায়িদা  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত মায়িদা  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Thursday, May 16, 2024

لا تنسنا من دعوة صالحة بظهر الغيب