কোরান সূরা তাওবা আয়াত 129 তাফসীর
﴿فَإِن تَوَلَّوْا فَقُلْ حَسْبِيَ اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ ۖ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ﴾
[ التوبة: 129]
এ সত্ত্বেও যদি তারা বিমুখ হয়ে থাকে, তবে বলে দাও, আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত আর কারো বন্দেগী নেই। আমি তাঁরই ভরসা করি এবং তিনিই মহান আরশের অধিপতি। [সূরা তাওবা: 129]
Surah At-Tawbah in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Tawbah ayat 129
অতঃপর যদি তারা ফিরে যায় তাহলে বলো -- ''আল্লাহ্ আমার জন্যে যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত অন্য উপাস্য নেই, তাঁরই উপরে আমি নির্ভর করি, আর তিনিই তো মহাসিংহাসনের অধিপতি।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
১২৯. তারা আপনার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে আপনার আনীত বিধানকে বিশ্বাস না করলে হে রাসূল! আপনি তাদেরকে বলে দিন: আমার জন্য একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই যথেষ্ট। তিনি ছাড়া সত্য কোন মা’বূদ নেই। আমি কেবল তাঁর উপরই নির্ভর করছি। তিনি মহান আরশের মালিক।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়,[১] তবে তুমি বলে দাও, ‘আমার জন্য তো আল্লাহই যথেষ্ট।[২] তিনি ছাড়া অন্য কোন ( সত্য ) উপাস্য নেই। আমি তাঁরই উপর নির্ভর করেছি, আর তিনি হচ্ছেন অতি বড় আরশের মালিক।’ [৩] [১] অর্থাৎ, তোমার নিয়ে আসা শরীয়ত ও রহমতের দ্বীন থেকে। [২] যিনি আমাকে কাফের ও অস্বীকারকারীদের চক্রান্ত থেকে বাঁচিয়ে নেবেন। [৩] প্রকাশ থাকে যে, এই আয়াত পড়লে আল্লাহ সকল দুশ্চিন্তা ও সমস্যার জন্য যথেষ্ট হন-- এ হাদীসটি জাল।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
অতঃপর তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে আপনি বলুন, ‘আমার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া কোন সত্য ইলাহ্ নেই [ ১ ]। আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং তিনি মহা’আরশের [ ২ ] রব।‘ [ ১ ] অর্থাৎ আপনার যাবতীয় চেষ্টা-তদবীরের পরও যদি কিছু লোক ঈমান গ্রহণে বিরত থাকে, তবে ধৈর্য ধরুন এবং আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন। কারণ নবীগনের সমস্ত কাজ হল স্নেহ-মমতা ও হামদর্দির সাথে আল্লাহর পথে মানুষকে ডাকা, তাদের পক্ষ থেকে অবজ্ঞা ও যাতনার সম্মুখীন হলে, তা আল্লাহর প্রতি সোপর্দ করা এবং তাঁরই উপর ভরসা রাখা। [ ২ ] আরশ সম্পর্কে আলোচনা সূরা আল-আ’রাফের ৫৪ নং আয়াতে চলে গেছে।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১২৮-১২৯ নং আয়াতের তাফসীর: এই আয়াতে আল্লাহ তা'আলা মুমিনদের উপর নিজের ইহসান প্রকাশ করে বলেন- আমি তোমাদের জন্যে তোমাদেরই মধ্য হতে একজন রাসূল প্রেরণ করেছি। যেমন ইবরাহীম ( আঃ ) প্রার্থনা করেছিলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি তাদের মধ্যে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে একজন রাসূল প্রেরণ করুন ।” ( ২৪ ১২৯ ) আল্লাহ তা'আলা অন্য জায়গায় বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ অবশ্যই আল্লাহ মুমিনদের উপর ইহসান করেছেন, কারণ তিনি তাদের মধ্যে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে একজন রাসূল ( সঃ ) প্রেরণ করেছেন ।” ( ৩:১৬৪ ) অন্য এক জায়গায় আল্লাহ পাক বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ অবশ্যই তোমাদের কাছে তোমাদের নিজেদের মধ্য থেকেই একজন রাসূল আগমন করেছে । যেমন জাফর ইবনে আবি তালিব ( রাঃ ) নাজ্জাশীকে এবং মুগীরা ( রাঃ ) কিসরার ( পারস্য সম্রাট ) দূতকে বলেছিলেনঃ “ আল্লাহ তা'আলা আমাদের মধ্যে আমাদেরই কওমের একজনকে রাসূল হিসাবে প্রেরণ করেছেন যার বংশ সম্পর্কে আমরা অবহিত রয়েছি, যাঁর গুণাবলী আমরা জানি । যার উঠা, বসা, আসা, যাওয়া, সত্যবাদিতা, বিশ্বস্ততা ইত্যাদি সম্পর্কে আমাদের পূর্ণ জ্ঞান রয়েছে। অজ্ঞতার যুগ থেকেও যার বংশের মধ্যে কোন কলংক নেই।” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ আমি বিয়ের মাধ্যমে বের হয়েছি, ব্যভিচারের মাধ্যমে বের হইনি । আদম ( আঃ ) থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমার পূর্বপুরুষদের কেউই বিবাহের মাধ্যম ছাড়া জন্মগ্রহণ করেনি।”আলী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ আদম ( আঃ ) থেকে নিয়ে আমার পিতা মাতা আমাকে জন্ম দেয়া পর্যন্ত আমার বংশধারা বিবাহের মাধ্যমে চলে আসছে, ব্যভিচারের মাধ্যমে নয় ।” আল্লাহ পাকের উক্তিঃ ( আরবী ) অর্থাৎ হে উম্মতে মুহাম্মাদী। তোমাদের যে কোন কষ্ট ও ক্ষতিকর বিষয় তাঁর ( রাসূল সঃ-এর ) কাছে খুবই কঠিন ঠেকে। হাদীসে আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেঃ। অর্থাৎ “ আমি সহজ দ্বীন নিয়ে আগমন করেছি ।” সহীহ হাদীসে রয়েছে- “ এই শরীয়ত খুবই সহজ । আল্লাহ তা'আলা এটাকে খুবই সহজ করে পাঠিয়েছেন।”( আরবী ) অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা বড়ই আশা পোষণ করেন যে, তোমরা হিদায়াত লাভ করে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক উপকার প্রাপ্ত হও। আবূ যার ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “ রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাদেরকে এমন সাধারণ জ্ঞান দান করেন যে, আকাশে উড়ন্ত কোন পাখী সম্পর্কেও তিনি আমাদেরকে জ্ঞান দেন ।” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ জান্নাতের নিকটবর্তীকারী এবং জাহান্নাম হতে দূরকারী এমন কোন কিছু বাকী নেই যা আমি তোমাদের কাছে বর্ণনা করিনি ।” ( এই হাদীস দু’টি ইমাম তিবরানী (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক হারাম ও নাজায়েয বিষয় সম্পর্কে । তোমাদেরকে অবহিত করেছেন। সুতরাং যদি তোমরা তাঁর বর্ণনাকৃত হারাম বিষয় থেকে দূরে না থাকো তবে আমি তোমাদেরকে জানিয়ে দিচ্ছি যে, তোমরা এমনভাবে আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে যেমনভাবে পোকা মাকড় আগুনে পতিত হয়ে থাকে।” ( এই হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, ( একদা ) নবী ( সঃ )-এর কাছে দু’জন ফিরিশতা আগমন করেন। ঐ সময় তিনি ঘুমাচ্ছিলেন। একজন তার মাথার কাছে বসলেন। পায়ের কাছে উপবিষ্ট ফিরিশতা মাথার কাছে উপবিষ্ট ফিরিশতাকে বললেনঃ “ তাঁর ( নবী সঃ-এর ) এবং তাঁর উম্মতের অবস্থা উপযোগী কোন একটি উপমা বর্ণনা করুন!” তখন শিয়রে উপবিষ্ট ফিরিশতা বললেন, তাঁর উপমা তার উম্মতের সাথে এইরূপ, যেমন একদল লোক সফর করতে করতে এক জন-মানবহীন বিস্তীর্ণ মরু প্রান্তরের মাঝে পৌছে গেল । তাদের পাথেয় নিঃশেষ হয়ে গেছে। তারা এখন না পারছে সামনে অগ্রসর হতে, না পারছে পিছনে ফিরে আসতে। এমতাবস্থায় একজন সুন্দর পোশাক পরিহিত লোক তাদের কাছে আসলেন এবং বললেনঃ “ আমি কি তোমাদেরকে এখান থেকে বের করে এক সুন্দর সবুজ বাগানে নিয়ে যাবো? সেখানে রয়েছে নহর ও পানির হাউজ! তোমরা আমার সাথে যাবেকি?” তারা তার কথায় খুবই খুশী মনে সম্মত হয়ে যায় । তিনি তাদেরকে ঐ সুন্দর সবুজ বাগানে নিয়ে যান। তারা সেখানে সুস্বাদু ফল খেয়ে ও সুপেয় পানি পান করে পরিতুষ্ট ও পরিতৃপ্ত হয় এবং বেশ মোটা তাজা হয়। অতঃপর ঐ লোকটি তাদেরকে বলেনঃ “ আমি কি তোমাদের শুভাকাঙক্ষী হিসেবে তোমাদের হক আদায় করিনি এবং তোমাদেরকে সুন্দর শ্যামল স্থানে পৌছিয়ে দেইনি? এখন জেনে রেখো যে, তোমাদের সামনে এর চেয়েও বেশী মনোরম ও আনন্দদায়ক সবুজ শ্যামল বাগান রয়েছে এবং সেখানে সুপেয় পানির হাউজও রয়েছে । চল, আমি তোমাদেরকে সেখানে নিয়ে যাই।” তখন তাদের মধ্যে কেউ কেউ বললোঃ “ আপনি ইতিপূর্বেও সত্য কথা বলেছিলেন এবং এখনও সত্য কথাই বলছেন । অবশ্যই আমরা আপনার সাথে রয়েছি।” আর কতকগুলো তাক বললোঃ “ আমরা তো এখানেই ভাল রয়েছি । আমাদের জন্যে এটাই যথেষ্ট। ভবিষ্যতের ভোগ্য বস্তুর আমাদের কোনই প্রয়োজন নেই।” অর্থাৎ এরা হচ্ছে ঐসব লোক যারা দুনিয়ার পিছনেই পাগল হয়ে রয়েছে, পরকালের কোন খবর তাদের নেই। অথচ এখানকার তুলনায় সেখানকার সুখ বহুগুণে বেশী।আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, এক বেদুঈন রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর কাছে এসে কিছু আর্থিক সাহায্য চাইলো। ইকরামা ( রঃ ) বলেন, আমার মনে হয় লোকটি রক্তপণ আদায় করার জন্যে সাহায্য চেয়েছিল। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাকে কিছু দান করে বলেনঃ “ লও, আমি তোমার কাজ চালিয়ে দিলাম এবং তোমার সাথে উত্তম ব্যবহার করলাম ।” লোকটি তখন বললোঃ “ না, আপনি আমার প্রতি কোন ইহসান বা অনুগ্রহ করেননি । তার এ কথা শুনে কয়েকজন সাহাবী ক্রোধান্বিত হন এবং তাকে আক্রমণ করার ইচ্ছা করেন। তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) ইঙ্গিতে তাঁদেরকে নিষেধ করে দেন। অতঃপর তিনি উঠে নিজের মনযিলে চলে যান এবং ঐ বেদুঈনকে ডেকে পাঠান। তারপর তিনি তাকে বলেনঃ “ তুমি কিছু চেয়েছিলে, আমি তোমাকে দিয়েছিলাম । এর পর তুমি যা বলার তা বলেছো। আচ্ছা, আরো লও।” আবার তিনি তাকে জিজ্ঞেস করেনঃ “ এবারও কি আমি তোমার সাথে উত্তম ব্যবহার করিনি?” বেদুঈন উত্তরে বললোঃ “হা, আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান প্রদান করুন ।” তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাকে বলেনঃ “ আমার সাহাবীগণ তোমার প্রতি ক্রোধান্বিত রয়েছে । সুতরাং তুমি এখন তাদের কাছে যাও এবং আমার সামনে যা বললে তাদের সামনেও তাই বলো যাতে তাদের ক্রোধ দূর হয়ে যায়। বেদুঈন তখন বললোঃ “ আচ্ছা, ঠিক আছে ।” অতঃপর যখন বেদুঈন তাঁদের কাছে আসলো তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তার সম্পর্কে বললেনঃ “ এ লোকটি আমার কাছে কিছু চেয়েছিল, আমি কিছু তাকে দিয়েছিলাম । কিন্তু সে যা বলেছিল তা তোমরা অবগত আছ। তারপর আমি তাকে ডেকে আরো দিয়েছি। সে এখন সন্তুষ্ট হয়েছে। হে বেদুঈন! আমার এ কথা সত্য কি?” বেদুঈন উত্তরে বললোঃ “ হ্যা, আল্লাহ আপনাকে প্রতিদান প্রদান করুন!”রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেন, আমার ও এই বেদুঈনের দৃষ্টান্ত হচ্ছে এইরূপ, যেমন কোন লোকের একটি উন্ত্রী রয়েছে । উজ্জ্বীটি উত্তেজিত হয়ে উঠলো। জনগণ ওর পিছনে ছুটলো। উষ্ট্ৰীটি আরো দ্রুত বেগে পালাতে লাগলো। তখন উষ্ট্রীর মালিক জনগণকে বললোঃ “ তোমরা উজ্জ্বীটিকে অনুগত করার ব্যাপারটা আমার উপর ছেড়ে দাও । কারণ ওর আচরণ সম্পর্কে আমিই ভাল জানি। আমি ওকে নম্র করে নেবো।” তারপর সে ঘাস নিয়ে ওকে ডাকতে লাগলো। ও এসে গেল। লোকটি তখন ওকে ঘাস খেতে দিয়ে ধরে ফেললো। ওর উপর জিন ফেলে দিলো। আমিও যদি এই বেদুঈনের দুর্ব্যবহারের কারণে তোমাদের মত তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে যেতাম তবে সে জাহান্নামী হয়ে যেতো। ( এ হাদীসটি বাযযায (রঃ ) বর্ণনা করেছেন) কিন্তু এই হাদীসটি দুর্বল। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী। আল্লাহ পাকের উক্তিঃ ( আরবী ) এই আয়াতে কারীমাতেও এই নির্দেশই দেয়া হচ্ছে-হে মুহাম্মাদ ( সঃ )! যে মহান শরীয়ত তুমি আনয়ন করেছে, যদি এই লোকগুলো এর থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে তবে তুমি তাদেরকে বলে দাও-আমার জন্যে আল্লাহই যথেষ্ট। আমি তোমাদের উপর নয়, বরং তাঁরই উপর ভরসা করছি। তিনি প্রত্যেক জিনিসের মালিক ও স্রষ্টা, তিনি বিরাট আরশের রব। তার বিরাট আরশ হচ্ছে সারা মাখলুকাতের ছাদ স্বরূপ। যমীন ও আসমানের সমস্ত মাখলুক তার আরশের নীচে রয়েছে। সমস্ত সৃষ্টজীব তাঁর ক্ষমতার দখলে রয়েছে। তার জ্ঞান সমস্ত বস্তুকে পরিবেষ্টনকারী। উবাই ইবনে কা'ব ( রাঃ ) বলেন যে, আয়াতটিই হচ্ছে কুরআন কারীমের শেষ আয়াত। কুরআনের সমস্ত আয়াত ও সূরা আবু বকর ( রাঃ )-এর খিলাফতকালে বিন্যস্ত কুরআনের আকারে জমা করা হয়। লোকেরা লিখতেন এবং উবাই ইবনে কা'ব ( রাঃ ) লিখাতেন। যখন সূরায়ে বারাআতের ( আরবী ) -এই আয়াতে পৌছেন, তখন ধারণা করা হয় যে, এটাই কুরআন কারীমের শেষ আয়াত। তখন তিনি তাদেরকে বলেন, এর পরে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাকে নিম্নের দু'টি আয়াতও শুনিয়েছিলেনঃ ( আরবী ) হতে সূরার শেষ পর্যন্ত। তিনি বলেন যে, এ হচ্ছে কুরআন কারীমের শেষ আয়াত এবং যার উপর শুরু হয়েছিল তারই উপর শেষ হয়েছে। অর্থাৎ ঐ আল্লাহর নামে যিনি ছাড়া অন্য কোন মাবুদ নেই। এ সম্পর্কেই আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ ( হে নবী সঃ )! তোমার পূর্বে আমি যে নবীকেই পাঠিয়েছি তার কাছেই আমি এই অহী করেছি-আমি ছাড়া অন্য কোন মাবুদ নেই, সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদত করো ।” ( ২১:২৫ ) ( এ হাদীসটিও গারীব বা দুর্বল )আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, হারিস ইবনে খুযাইমা ( রাঃ ) সূরায়ে বারাআতের শেষ দু’টি আয়াত নিয়ে উমার ( রাঃ )-এর নিকট আগমন করেন। উমার ( রাঃ ) তাকে জিজ্ঞেস করেনঃ “ এই অহীর সাক্ষ্য আর কে দিবে?” হারিস ( রাঃ ) উত্তরে বলেনঃ “আর কেউ এটা জানে কি না তা তো আমার জানা নেই । তবে আল্লাহর কসম! আমি স্বয়ং এটা নবী ( সঃ )-এর মুখে শুনেছি এবং সঠিক মনে রেখেছি।” তখন উমার ( রাঃ ) বলেনঃ “ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি এটা রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হতে শুনেছি ।” তারপর তিনি বলেনঃ “ যদি এটা কমপক্ষে তিনটি আয়াত হতো তবে আমি এটাকে একটা পৃথক সূরারূপে নির্ধারণ করতাম । তুমি এটাকে কুরআন কারীমের কোন এক জায়গায় রেখে দাও।” সুতরাং এটাকে সূরায়ে বরাআতের শেষে রাখা হয়েছে।' ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন) এ কথা পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, উমার ইবনে খাত্তাব ( রাঃ )-ই আবু বকর ( রাঃ )-কে পরামর্শ দিয়েছিলেন যেন কুরআন কারীমের সমস্ত আয়াতকে খুঁজে খুঁজে এক জায়গায় জমা করা হয় এবং এটা খুবই কল্যাণকর কাজ হবে। সুতরাং আবু বকর ( রাঃ ) যায়েদ ইবনে সাবিত ( রাঃ )-কে কুরআন জমা করার নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ মোতাবেক যায়েদ ইবনে সাবিত ( রাঃ ) কুরআন জমা করতেন ও বিন্যস্ত করে চলতেন এবং উমার ( রাঃ )-ও সেখানে উপস্থিত থাকতেন।সহীহ হাদীসে রয়েছে যে, যায়েদ ( রাঃ ) বলেছেনঃ “ সূরায়ে বারাআতের শেষ অংশটুকু আমি খুযাইমা ইবনে সাবিত বা আবু খুযাইমা ( রাঃ )-এর নিকট পেয়েছিলাম । আর এটাও আমি বর্ণনা করে দিয়েছি যে, সাহাবীদের একটি দল নবী ( সঃ )-এর সামনে এর বর্ণনা করেছেন, যেমন খুযাইমা ইবনে সাবিত ( রাঃ ) বলেছিলেন। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সর্বাধিক জ্ঞানের অধিকারী। আবু দারদা ( রাঃ ) বর্ণনা করেছেন যে, যে ব্যক্তি সকাল সন্ধ্যায় নিম্নের কালেমা সাতবার করে পাঠ করে, আল্লাহ তা'আলা তার সকল কাজ সমাধা করে দেন এবং তার সকল ইচ্ছা পূর্ণ করেন। কালেমাটি হচ্ছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ আমার জন্যে আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া অন্য কোন মা'বুদ নেই, আমি তাঁরই উপর নির্ভর করেছি, আর তিনি হচ্ছেন অতি বড় আরশের মালিক ।” আর একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, যে ব্যক্তি এই অংশটুকু সাতবার পাঠ করবে, তার ইচ্ছা পূর্ণ করার জন্যে আল্লাহই যথেষ্ট, সে তা নিষ্টার সাথে পাঠ করুক বা নাই করুক। কিন্তু এই বর্ধিত অংশটুকু গারীব বা দুর্বল। একটি মারফু হাদীসেও অনুরূপ বর্ণনা রয়েছে। কিন্তু এটাও গ্রহণযোগ্য নয়। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সর্বাধিক জ্ঞানের অধিকারী।
সূরা তাওবা আয়াত 129 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- এবং পর্বতমালা চালিত হয়ে মরীচিকা হয়ে যাবে।
- আর যারা আমার আয়াতসমূহকে ব্যর্থ করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত হয়, তাদেরকে আযাবে উপস্থিত করা হবে।
- আর যারা কাফের এবং আমার আয়াতসমূহ ও পরকালের সাক্ষাতকারকে মিথ্যা বলছে, তাদেরকেই আযাবের মধ্যে উপস্থিত
- নভোমন্ডল, ভূমন্ডল এবং এতদুভয়ে অবস্থিত সবকিছুর আধিপত্য আল্লাহরই। তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
- তিনিই জীবিত করেন এবং মৃত্যু দেন। যখন তিনি কোন কাজের আদেশ করেন, তখন একথাই বলেন,
- হে নবী, তাদেরকে বলে দাও, যারা তোমার হাতে বন্দী হয়ে আছে যে, আল্লাহ যদি তোমাদের
- এটা অমূলক, বরং তোমরা এতীমকে সম্মান কর না।
- তোমাদেরকে যা কিছু দেয়া হয়েছে, তা পার্থিব জীবনের ভোগ ও শোভা বৈ নয়। আর আল্লাহর
- তিনি হলেন যাঁর রয়েছে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব। তিনি কোন সন্তান গ্রহণ করেননি। রাজত্বে তাঁর
- অতঃপর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তিনি তাদেরকে পরিপূর্ণ সওয়াব দান করবেন, বরং স্বীয়
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা তাওবা ডাউনলোড করুন:
সূরা Tawbah mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Tawbah শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers