কোরান সূরা তাওবা আয়াত 15 তাফসীর
﴿وَيُذْهِبْ غَيْظَ قُلُوبِهِمْ ۗ وَيَتُوبُ اللَّهُ عَلَىٰ مَن يَشَاءُ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ﴾
[ التوبة: 15]
এবং তাদের মনের ক্ষোভ দূর করবেন। আর আল্লাহ যার প্রতি ইচ্ছা ক্ষমাশীল হবে, আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। [সূরা তাওবা: 15]
Surah At-Tawbah in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Tawbah ayat 15
আর তিনি তাদের বুকের ক্ষোভ দূর করবেন। আর যাকে ইচ্ছে করেন তার প্রতি আল্লাহ্ ফেরেন। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।
Tafsir Mokhtasar Bangla
১৫. তেমনিভাবে তিনি তাঁর মু’মিন বান্দাদেরকে কাফিরদের উপর জয়ী করে তাদের অন্তরের রাগ মিটাবেন। আর হঠকারীদের মধ্যকার যাদের ব্যাপারে তিনি তাওবা কবুল করার ইচ্ছা করেন তাদের তাওবা কবুল করবেন যদি তারা তাওবা করে। যা ঘটেছে মক্কা বিজয় দিবসে সে এলাকার কিছু লোকের পক্ষ থেকে। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলাই জানেন তাদের মধ্যকার তাওবাকারীদের সত্যবাদিতা সম্পর্কে এবং তিনি তাঁর সৃষ্টি, পরিচালনা ও শরীয়তের ব্যাপারে অত্যন্ত প্রজ্ঞাময়।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
এবং ওদের হৃদয়ের ক্ষোভ দূর করবেন। [১] আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে তওবা করার তওফীক দিয়ে থাকেন। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। [১] অর্থাৎ, মুসলিমরা যখন দুর্বল ছিল তখন মুশরিকরা তাদের উপর অত্যাচার করত। যার কারণে মুসলিমদের হৃদয় দুঃখ-পীড়িত ও ব্যথিত ছিল। যখন তোমাদের হাতে ওরা খুন হবে এবং অপমান ও লাঞ্ছনা তাদের ভাগে আসবে, তখন স্বাভাবিকভাবে অত্যাচারিত মুসলিমদের কলিজা ঠান্ডা হবে ও তাদের মনের রাগ ও ক্ষোভ দূর হয়ে যাবে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর তিনি তাদের [ ১ ] অন্তরের ক্ষোভ দূর করবেন এবং আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা তার তাওবা কবুল করবেন। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। [ ১ ] অর্থাৎ ঈমানদারদের মনের ক্ষোভ দূর করবেন। [ তাবারী ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১৩-১৫ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা এখানে মুসলমানদেরকে পূর্ণমাত্রায় জিহাদের প্রতি উৎসাহিত করে বলছেন, এই চুক্তি ও কসম ভঙ্গকারী কাফির ওরাই যারা রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে দেশান্তর করার পূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। তাদের ইচ্ছা ছিল যে, তারা তাকে বন্দী করবে বা হত্যা করে ফেলবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করবে। তারা চক্রান্ত করলো, কিন্তু আল্লাহ তাদের চক্রান্ত বানচাল করলেন এবং আল্লাহ উত্তম চক্রান্ত ( বানচাল ) কারী। আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “ তারা রাসূল ( সঃ )-কে ও তোমাদেরকে ( মুমিনদেরকে ) এ কারণেই বের করেছিল যে, তোমরা তোমাদের প্রভু আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছো ।” বিবাদ সৃষ্টি প্রথমে তারাই করেছে। বলা হয়েছে যে, এর দ্বারা বদরের দিনকে বুঝানো হয়েছে, যেই দিন তারা তাদের বাণিজ্যিক কাফেলাকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিল। তাদের যাত্রীদল রক্ষা পেয়ে গেল। কিন্তু তারা দম্ভ ও অহংকারের সাথে আল্লাহর সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করার উদ্দেশ্যে মুসলমানদের বিরুদ্ধে বদর প্রান্তরে যুদ্ধ ঘোষণা করলো। এর পূর্ণ ঘটনা পূর্বে বর্ণিত হয়েছে। তারা সন্ধি-চুক্তি ভঙ্গ করতঃ তাদের মিত্রদের সাথে মিলিত হয়ে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর মিত্রদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। খুযাআ’র বিরুদ্ধে বানু বকরকে সাহায্য করে। এই ওয়াদা খেলাফের কারণে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাদেরকে পদানত করেন। সুতরাং সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই জন্যে। আল্লাহ পাক বলেন, তোমরা এই ( অপবিত্র ) লোকদেরকে ভয় করছো? তোমরা যদি মুমিন হও তবে আল্লাহ ছাড়া আর কাউকেও ভয় করা তোমাদের উচিত নয়। তিনি এরই হকদার যে, মুমিনরা শুধুমাত্র তাঁকেই ভয় করবে। অন্য জায়গায় আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “ তাদেরকে ভয় করো না বরং আমাকেই ভয় কর । আমার প্রতাপ, আমার আধিপত্য, আমার শাস্তি, আমার ক্ষমতা এবং আমার অধিকার অবশ্যই এই যোগ্যতা রাখে যে, সর্বসময়ে প্রতিটি অন্তর আমার ভয়ে কাঁপতে থাকবে। সমুদয় কাজ কারবার আমার হাতে রয়েছে। আমি যা চাই তা করতে পারি এবং করে থাকি। আমার ইচ্ছা ছাড়া কিছুই হতে পারে না।”মুসলিমদের উপর জিহাদ ফরয হওয়ার রহস্য বর্ণনা করা হচ্ছে যে, আল্লাহ তা'আলা ইচ্ছা করলে এই কাফির ও মুশরিকদেরকে যে কোন শাস্তি দিতে পারতেন। কিন্তু হে মুমিনরা! তিনি তোমাদের হাত দ্বারা তাদেরকে শাস্তি দিতে চান। তাদেরকে তোমরা নিজেরাই ধ্বংস করে দাও। যাতে তোমাদের মনের ঝাল ও আক্রোশ মিটে যায় এবং তোমাদের মনে প্রশান্তি নেমে আসে ও প্রফুল্লতা লাভ কর। এটা সমস্ত মুমিনের জন্যে সাধারণ। মুজাহিদ ( রঃ ), ইকরামা ( রঃ ) এবং সুদ্দী ( রঃ ) বলেন যে, ( আরবী ) দ্বারা খুযাআ গোত্রকে বুঝানো হয়েছে যাদের উপর কুরায়েশরা সন্ধি-চুক্তি ভঙ্গ করে তাদের মিত্রদের সাথে মিলিত হয়ে আক্রমণ চালিয়েছিল। ( আরবী )-এর সর্বনামটিও তাদেরই দিকে প্রত্যাবর্তিত। ইবনে আসাকির ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন। যে, আয়েশা ( রাঃ ) যখন রাগান্বিত হতেন তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাঁর নাকটি ধরে নিতেন এবং ( আদর করে ) বলতেন- হে উওয়ায়েশ! এ দু'আটি পাঠ করঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ হে আল্লাহ! নবী মুহাম্মাদ ( সঃ )-এর প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা করে দিন । আমার অন্তরের ক্রোধ দূর করুন! আর আমাকে বিভ্রান্তিকর ফিত্না থেকে রক্ষা করুন।”ঐ আল্লাহ তাআলা স্বীয় বান্দাদের মধ্যকার যার প্রতি ইচ্ছা হয় তার তাওবা কবুল করে থাকেন। বান্দাদের জন্যে কল্যাণকর কি তা তিনি ভালরূপেই জানেন। তিনি তাঁর সমস্ত কাজ-কর্মে, সমস্ত শরঈ বিধানে ও সমস্ত হুকুমকরণে অতি নিপুণ ও বিজ্ঞানময়। তিনি যা চান তাই করেন এবং যা ইচ্ছা করেন তাই নির্দেশ দেন। তিনি ন্যায় বিচারক ও হাকিম। তিনি অত্যাচার করা থেকে পবিত্র। তিনি অণু পরিমাণও ভাল বা মন্দ নষ্ট করেন না, বরং তার প্রতিদান দুনিয়ায় ও আখিরাতে দিয়ে থাকেন।
সূরা তাওবা আয়াত 15 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- সে ছিল আমার বিশ্বাসী বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত।
- বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের পালনকর্তার,
- হে রসূল, পৌছে দিন আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে। আর যদি
- মানুষের মা’বুদের
- আপনি কি মুনাফিকদেরকে দেখেন নি? তারা তাদের কিতাবধারী কাফের ভাইদেরকে বলেঃ তোমরা যদি বহিস্কৃত হও,
- আর যে মৃত ছিল অতঃপর আমি তাকে জীবিত করেছি এবং তাকে এমন একটি আলো দিয়েছি,
- তারা বলছেঃ তোমরা তোমাদের উপাস্যদেরকে ত্যাগ করো না এবং ত্যাগ করো না ওয়াদ, সূয়া, ইয়াগুছ,
- অতঃপর সে প্রবল আঘাতে তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল।
- যারা প্রাচীরের আড়াল থেকে আপনাকে উচুস্বরে ডাকে, তাদের অধিকাংশই অবুঝ।
- মুমিনদের জন্যে পথ নির্দেশ ও সুসংবাদ।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা তাওবা ডাউনলোড করুন:
সূরা Tawbah mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Tawbah শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers