কোরান সূরা আলে-ইমরান আয়াত 164 তাফসীর
﴿لَقَدْ مَنَّ اللَّهُ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ إِذْ بَعَثَ فِيهِمْ رَسُولًا مِّنْ أَنفُسِهِمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا مِن قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ﴾
[ آل عمران: 164]
আল্লাহ ঈমানদারদের উপর অনুগ্রহ করেছেন যে, তাদের মাঝে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে নবী পাঠিয়েছেন। তিনি তাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করেন। তাদেরকে পরিশোধন করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও কাজের কথা শিক্ষা দেন। বস্তুতঃ তারা ছিল পূর্ব থেকেই পথভ্রষ্ট। [সূরা আলে-ইমরান: 164]
Surah Al Imran in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Al Imran ayat 164
নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ বিশ্বাসীদের প্রতি অনুগ্রহ করেছিলেন যখন তিনি তাদের কাছে তাদের মধ্য থেকে দাঁড় করালেন একজন রসূল যিনি তাঁর নির্দেশাবলী তাদের কাছে পাঠ করেন ও তাদের পরিশোধিত করেন ও তাদের কিতাব ও জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষা দেন; যদিও এর আগে নিঃসন্দেহ তারা ছিল স্পষ্ট ভুলের মধ্যে।
Tafsir Mokhtasar Bangla
১৬৪. নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে বিশেষ নিয়ামত দিয়েছেন ও তাদের প্রতি প্রচুর অনুগ্রহ করেছেন যখন তিনি তাদের মাঝে তাদের জাত থেকেই একজন রাসূল পাঠিয়েছেন। যিনি তাদেরকে কুরআন পড়ে শুনাবেন। তাদেরকে শিরক ও চারিত্রিক পঙ্কিলতা থেকে পরিচ্ছন্ন করবেন উপরন্তু তাদেরকে কুরআন ও সুন্নাহ শিক্ষা দিবেন। বস্তুতঃ তারা এ রাসূলের রিসালাতের পূর্বে হিদায়েত ও সঠিক পথ হারিয়ে সুস্পষ্ট ভ্রষ্টতায় নিমগ্ন ছিলো।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
আল্লাহ অবশ্যই বিশ্বাসীদের প্রতি তাদের নিজেদের মধ্যে হতে রসূল প্রেরণ করে অনুগ্রহ করেছেন। [১] সে ( নবী ) তার আয়াতগুলি তাদের নিকট আবৃত্তি করে তাদেরকে পরিশুদ্ধ করে এবং তাদেরকে গ্রন্থ ও প্রজ্ঞা[২] শিক্ষা দেয়। আর অবশ্যই[৩] তারা পূর্বে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে ছিল। [১] নবীর মানুষ হওয়া এবং মানব-জাতিভুক্ত হওয়াকে মহান আল্লাহ একটি অনুগ্রহ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। আর বাস্তবিকই এটা একটি মহা অনুগ্রহ। কারণ, প্রথমতঃ তিনি তাঁর জাতির স্থানীয় ভাষায় আল্লাহর পায়গাম পৌঁছাতে পারবেন যা বুঝা প্রত্যেক মানুষের জন্য সহজ হবে। দ্বিতীয়তঃ একই জাতিভুক্ত হওয়ার কারণে মানুষ তাঁর ঘনিষ্ঠ হবে এবং তাঁর কাছ ঘেঁসবে। তৃতীয়তঃ মানুষের জন্য মানুষ হওয়াটাই সব দিক দিয়ে সমীচীন। কেননা, মানুষের পক্ষে মানুষের অনুসরণ করা সম্ভব, কিন্তু তাদের পক্ষে ফিরিশতাদের অনুসরণ করা সম্ভব নয়। অনুরূপ ফিরিশতাকুল মানুষের আবেগ ও অনুভূতির গভীরতা ও সূক্ষ্ণতা অনুধাবন করতে সক্ষম নন। কাজেই পয়গম্বর যদি ফিরিশতাদের মধ্য থেকে হতেন, তাহলে তিনি সেই সমূহ গুণাবলী থেকে বঞ্চিত হতেন, যা দ্বীনের দাওয়াতের জন্য অতি প্রয়োজন। আর এই জন্যই দুনিয়াতে যত নবী এসেছেন, তাঁরা সকলেই ছিলেন মানুষ। কুরআন তাঁদের মানুষ হওয়ার কথা সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছে। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, [وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ إِلَّا رِجَالًا نُوحِي] " তোমার পূর্বে আমি যতজনকে রসূল করে পাঠিয়েছি, তারা সবাই পুরুষ ছিল, তাদের প্রতি আমি অহী করেছি। " ( সূরা ইউসুফ ১২:১০৯ আয়াত ) তিনি আরো বলেন,[وَمَا أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنَ الْمُرْسَلِينَ إِلَّا إِنَّهُمْ لَيَأْكُلُونَ الطَّعَامَ وَيَمْشُونَ فِي الْأَسْوَاقِ] " তোমার পূর্বে যত রসূল প্রেরণ করেছি, তারা সবাই খাদ্য গ্রহণ করত এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করত। " ( সূরা ফুরকান ২৫:২০ আয়াত ) অনুরূপ তিনি নবী করীম ( সাঃ )-এর পবিত্র জবান দ্বারা ঘোষণা করলেন যে, [قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ يُوحَى إِلَيَّ] " বল, আমিও তোমাদের মত একজন মানুষ আমার প্রতি অহী আসে। " ( সূরা হা-মীম সাজদাহ ৪১:৬ আয়াত ) বর্তমানে বহু মানুষ এই ( রসূলের মানুষ হওয়া ) বিষয়টিকে মানতে না পেরে বিপথগামী হয়েছে।[২] উক্ত আয়াতে নবী প্রেরণের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য তুলে ধরা হয়েছে। যথা, ( ক ) আয়াতের তেলাঅত ও আবৃত্তি, ( খ ) পবিত্র ও পরিশুদ্ধকরণ, ( গ ) এবং কিতাব ও হিকমতের কথা শিক্ষা দেওয়া। কিতাবের শিক্ষায় তেলাঅত আপনা আপনিই এসে যায়। তেলাঅতের সাথেই শিক্ষা দেওয়া সম্ভব। তেলাঅত ব্যতীত শিক্ষার কথা ভাবাই যায় না। তা সত্ত্বেও তেলাঅতকে পৃথকভাবে উল্লেখ করার উদ্দেশ্য হল এ কথা পরিষ্কার করে দেওয়া যে, তেলাঅত করাও একটি পবিত্র ও সৎ কাজ, তাতে তেলাঅতকারী তার অর্থ বুঝুক বা না-ই বুঝুক। প্রত্যেক মুসলিমের জন্য কুরআনের অর্থ ও লক্ষ্য বুঝার চেষ্টা করা নিঃসন্দেহে একটি জরুরী বিষয়। তবুও তার অর্থ বুঝতে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত তা তেলাঅত করতে বৈমুখ থাকা বা তাতে অবহেলা প্রদর্শন করা বৈধ নয়। পবিত্রকরণ বলতে, আকীদা, আমল এবং নৈতিকতার সংশোধন। যেমন, নবী করীম ( সাঃ ) তাদেরকে শিরক থেকে বের করে তাওহীদের পথে প্রতিষ্ঠিত করেন। তদনুরূপ নেহাতই হীন চরিত্র ও জঘন্য আচরণে আলিপ্ত জাতিকে উচ্চ নৈতিকতার অধিকারী ও মহান কর্ম সম্পাদনকারী জাতি হিসাবে গড়ে তুলেন। 'হিকমত' ( প্রজ্ঞা )র অর্থ অধিকাংশ মুফাসসিরের নিকট হাদীস।[৩] إِنْ এখানে الْمُثَقَّلَةِ থেকে مُخَفَّفَةٌ রূপে ব্যবহূত হয়েছে। অর্থাৎ, إِنَّ ছিল। এর অর্থ হল, অবশ্যই, নিঃসন্দেহে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আল্লাহ মুমিনদের প্রতি অবশ্যই অনুগ্রহ করেছেন যে, তিনি তাদের নিজেদের মধ্য থেকে তাদের কাছে রাসূল পাঠিয়েছেন, যিনি তাঁর আয়াতসমূহ তাদের কাছে তেলাওয়াত করেন, তাদেরকে পরিশোধন করেন এবং কিতাব ও হেকমত শিক্ষা দেন, যদিও তারা আগে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতেই ছিল [ ১ ]। [ ১ ] এ আয়াতে বর্ণিত বিষয়বস্তুর প্রায় অনুরূপ বিষয় সূরা আল-বাক্কারার ১২৯ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এ আয়াতে একটি শব্দ অতিরিক্ত ব্যবহার করা হয়েছে তা হলো, ( لَقَدْ مَنَّ اللّٰهُ عَلَي الْمُؤْمِنِيْنَ ) এ প্রসঙ্গে প্রথম লক্ষণীয় বিষয় এই যে, কুরআনুল কারীমের বিশ্লেষণ অনুযায়ী মহানবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন সমগ্র বিশ্বের জন্য সবচাইতে বড় নেয়ামত ও মহাঅনুগ্রহ। কিন্তু এখানে এই আয়াতে শুধুমাত্র মুমিনদের জন্য নির্দিষ্ট করাটা কুরআনের অন্যান্য আয়াতের মাধ্যমে কুরআন সমগ্র বিশ্বের জন্য হেদায়াত হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত থাকা সত্ত্বেও ( ھُدًى لِّلْمُتَّقِيْنَ ) বা “ মুত্তাকীনদের জন্য হেদায়াত” বলারই অনুরূপ যে, কোন কোন ক্ষেত্রে তাকে মুত্তাকীনদের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে । তার কারণ, উভয় ক্ষেত্রেই এক। তা হল এই যে, যদিও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের অস্তিত্ব মুমিন-কাফের নির্বিশেষে সমগ্র বিশ্বের জন্যই মহা নেয়ামত এবং বিরাট অনুগ্রহ, তেমনিভাবে কুরআনুল কারীমও সমগ্র বিশ্ব-মানবের জন্য হেদায়াত, কিন্তু যেহেতু এই হেদায়াত ও নেয়ামতের ফল শুধু মুমিন-মুত্তাকীরাই উপভোগ করছে, সেহেতু কোন কোন স্থানে একে তাদেরই সাথে সম্পৃক্ত করে বর্ণনা করা হয়েছে।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১৫৯-১৬৪ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা স্বীয় নবী ( সঃ )-এর উপর ও মুসলমানদের উপর যে অনুগ্রহ করেছেন তা তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে, নবী ( সঃ )-কে মান্যকারী ও তাঁর অবাধ্যতা হতে বহু দূরে অবস্থানকারীদের জন্য তিনি স্বীয় নবী ( সঃ )-এর অন্তরকে কোমল করে দিয়েছেন। তাঁর অনুকম্পা না হলে তাঁর নবীর হৃদয় এত কোমল হতো না। হযরত কাতাদা ( রাঃ ) বলেন যে, ( আরবী ) শব্দটি ( আরবী ) যাকে আরববাসী কখনও বা ( আরবী )-এর সঙ্গে মিলিয়ে থাকে। যেমন ( আরবী )-এর মধ্যে। আবার কখনও ( আরবী )-এর সঙ্গেও মিলিয়ে থাকে। যেমন ( আরবী )-এর মধ্যে। এখানে ঐরূপই হয়েছে। অর্থাৎ হে নবী ( সঃ )! তুমি আল্লাহর করুণার ফলেই কোমল অন্তর বিশিষ্ট হয়েছ। হযরত হাসান বসরী ( রঃ ) বলেনঃ এটাই রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর চরিত্র যার উপর তিনি প্রেরিত হয়েছেন। যেমন এক জায়গায় আল্লাহ পাক বলেনঃ “ তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য হতে একজন রাসূল এসেছেন, যার উপর তোমদের কষ্ট কঠিন ঠেকে, যিনি তোমাদের উপর লোভী এবং যিনি মুমিনদের উপর স্নেহশীল, দয়ালু ।' মুসনাদ-ই-আহমাদে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হযরত আবু উমামা বাহেলী ( রাঃ )-এর হাত ধরে বলেন, “ হে আবূ উমামা! কতগুলো মুমিন এমন আছে যাদের জন্যে আমার হৃদয় স্পন্দিত হয় । ( আরবী ) শব্দের অর্থ হচ্ছে কর্কশ ভাষা। কেননা, এর পরে ( আরবী ) শব্দ রয়েছে। অর্থাৎ কঠিন হৃদয়। ইরশাদ হচ্ছে-যদি তুমি কর্কশ ভাষী ও কঠোর হৃদয় বিশিষ্ট হতে তবে মানুষ তোমার চতুম্পার্শ্ব হতে বিক্ষিপ্ত ও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে এবং তোমাকে পরিত্যাগ করতো। কিন্তু আল্লাহ তাআলা তাদের অন্তরে তোমার প্রতি ভালবাসা স্থাপন করেছেন। আর এজন্যে তাদের দিক হতে তোমাকেও প্রেম এবং তা দান করেছেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমার ( রাঃ ) বলেন, আমি পূর্ববর্তী গ্রন্থসমূহেও রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর গুণাবলী দেখেছি যে, তিনি কর্কশভাষী, কঠিন হৃদয়, বাজারে গোলমালকারী এবং ন্যায়ের প্রতিশোধ অন্যায় দ্বারা গ্রহণকারী ছিলেন না। বরং তিনি ছিলেন মার্জনাকারী ও ক্ষমাকারী। জামেউত্ তিরমিযীর মধ্যে একটি গারীব হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ মানুষকে অভিবাদন জানাতে, তাদের মঙ্গল কামনা করতে, তাদের অপরাধ এড়িয়ে চলতে আমাকে আল্লাহ পাকের পক্ষ হতে ঐ রূপই নির্দেশ দেয়া হয়েছে যেরূপভাবে অবশ্য পালনীয় কর্তব্যসমূহ বাধ্যতামূলকভাবে পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে'। অনুরূপভাবে উপরোক্ত আয়াতেও তাকে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে-হে নবী ( সঃ )! তুমি তাদেরকে ক্ষমা কর ও আল্লাহ পাকের নিকট তাদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং সকল কার্যে তাদের নিকট পরামর্শ গ্রহণ কর। এ কারণেই সাহাবীগণকে। সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে রাসুলুল্লাহ ( সঃ ) তাঁর সকল কার্যে তাদের নিকট পরামর্শ গ্রহণ করতেন এবং ওটা তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। যেমন বদরের যুদ্ধের দিন শত্রুবাহিনীর দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্যে তিনি তাঁদের নিকট পরামর্শ নেন। তখনি তাঁর সহচরবৃন্দ বলেছিলেন, যদি আপনি আমাদেরকে সমুদ্রের তীরে দাঁড় করতঃ পানিতে ঝাপিয়ে পড়ে সমুদ্র পাড়ি দেয়ারও নির্দেশ প্রদান করেন তবুও সে নির্দেশ পালনে আমরা মোটেই কুণ্ঠিত হবে না। আর যদি আপনি আমাদেরকে বারকুল গামাদ’ পর্যন্ত নিয়ে যেতে ইচ্ছে করেন তাহলেও আমরা দ্বিধাহীন চিত্তে আপনার সাথে গমন করবো। আমরা হযরত মূসা ( আঃ )-এর সহচরদের ন্যায় ‘তুমি ও তোমার প্রভু যুদ্ধ কর, আমরা এখানে বসে থাকছি’ এরূপ কথা কখনও মুখে আনব না। বরং আমরা আপনার ডানে, বামে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে শত্রুদের মোকাবিলা করবো। এরূপভাবে অবতরণস্থল কোথায় হবে তিনি তারও পরামর্শ গ্রহণ করেন। হযরত মুনযির ইবনে আমর ( রাঃ ) পরামর্শ দেন যে, আগে বেড়ে তাদের সম্মুখে হতে হবে। অনুরূপভাবে উহুদের যুদ্ধেও তিনি পরামর্শ নেন যে, মদীনার ভেতরে থেকেই যুদ্ধ করতে হবে, না বাইরে গিয়ে মুশরিকদের মোকাবিলা করতে হবে? অধিকাংশ লোক মদীনার বাইরে গিয়ে যুদ্ধ করারই মত প্রকাশ করেন। অতএব তিনি তাই করেন। পরিখার যুদ্ধেও রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) স্বীয় সহচরবৃন্দের সাথে পরামর্শ গ্রহণ করেন যে, মদীনার উৎপাদিত ফলের এক তৃতীয়াংশ প্রদানের অঙ্গীকারে বিরুদ্ধ দলের সাথে সন্ধি করা হবে কি? হযরত সা’দ ইবনে উবাদাহ ( রাঃ ) এবং সা'দ ইবনে মুআজ ( রাঃ ) এটা অস্বীকার করেন এবং তিনিও এ পরামর্শ গ্রহণ করেন ও সন্ধি করা থেকে বিরত থাকেন। অনুরূপভাবে হুদায়বিয়াতে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এ পরামর্শ নেন যে, মুশরিকদেরকে আক্রমণ করা হবে কি? তখন হযরত আবু বকর সিদ্দীক ( রাঃ ) বলেনঃ আমরা যুদ্ধ করতে আসিনি। উমরাব্রত পালন করাই আমাদের উদ্দেশ্য। আল্লাহর রাসূল ( সঃ ) এটাও স্বীকার করে নেন। এ রকমই যখন মুনাফিকরা রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর সহধর্মিণী হযরত আয়েশা সিদ্দীকা ( রাঃ )-এর উপর অপবাদ দেয় তখন তিনি বলেন, “ হে মুসলমান ভাই সব! যেসব লোক আমার গৃহিণীর দুর্নাম করছে তাদের ব্যাপারে আমি কি করতে পারি, তোমরা আমাকে এ পরামর্শ দান কর । আল্লাহর শপথ! আমার জানামতে তো আমার গৃহিণীর কোন দোষ নেই। আর যে লোকাটির সাথে অপবাদ দিচ্ছে, আল্লাহর কসম। সেও তো আমার মতে ভাল লোকই বটে। হযরত আয়েশা ( রাঃ )-কে পৃথক করণের ব্যাপারে তিনি হযরত আলী ও হযরত উসামা ( রাঃ )-এর পরামর্শ গ্রহণ করেন। মোটকথা যুদ্ধ সম্বন্ধীয় কার্যে এবং অন্যান্য কার্যেও রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) সাহাবীগণের সঙ্গে পরামর্শ করতেন। এ পরামর্শ রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর উপর ওয়াজিব ছিল, না সাহাবীগণের মনস্তুষ্টির জন্যে তার ইচ্ছের উপর নির্ভরশীল ছিল সে সম্বন্ধে আলেমদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। এ আয়াতে হযরত আবু বকর ও হযরত উমার ( রাঃ )-এর সাথে পরামর্শ করার নির্দেশ রয়েছে। ( হাকিম ) এ দু’জন সহচরই ছিলেন তাঁর সাহায্যকারী ও পরামর্শদাতা। আর ঐ দু’জনই ছিলেন মুসলমানদের পিতৃতুল্য। ( কালবী ) মুসনাদ-ই-আহমাদে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এ দু’জন সাহাবী ( রাঃ ) কে বলেছিলেনঃ “ কোন কার্যে যদি তোমারা দুজন একমত হয়ে যাও তবে আমি কখনও তোমাদের বিপরীত মত পোষণ করবো না ।' রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে জিজ্ঞেস করা হয়ঃ ( আরবী ) শব্দের অর্থ কি? তিনি বলেনঃ ‘জ্ঞানীদের পরামর্শক্রমে যখন কোন কার্যের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ে যাবে তখন তা মেনে নেয়া।' ( ইবনে মিরদুওয়াই ) সুনান-ই-ইবনে মাজার মধ্যে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিম্নের ঘোষণাও বর্ণিত আছেঃ যার নিকট পরামর্শ গ্রহণ করা যায় সে একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তি।' সুনান-ই-আবি দাউদ, জামেউত তিরমিযী এবং সুনান-ই-নাসাঈর মধ্যেও বর্ণনাটি রয়েছে। ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) এটাকে হাসান বলেছেন। অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ বলেছেনঃ যখন তোমাদের মধ্যে কেউ তার ভাই-এর নিকট কোন পরামর্শ গ্রহণ করে তখন সে যেন তাকে ভাল পরামর্শ দান করে।' ( ইবনে মিরদুওয়াই )এরপর আলাহ পাক বলেনঃ “ যখন তোমরা কোন কার্যের পরামর্শ গ্রহণের পর ওটা সাধনের দৃঢ় সংকল্প করে ফেল তখন মহান আল্লাহর উপর নির্ভর কর, আল্লাহ তা'আলা নির্ভরশীলদেরকে ভাল বাসেন ।' অতঃপর দ্বিতীয় আয়াতের ঘঘাষণা ঠিক এ রূপই যা পূর্বে বর্ণিত হয়েছে। তা হচ্ছে ( আরবী ) অর্থাৎ সাহায্য শুধু অল্লাহর পক্ষ থেকেই যিনি পরাক্রান্ত বিজ্ঞানময়। তার পরে বলা হচ্ছে যে, মুমিনদের শুধুমাত্র আল্লাহ তা'আলার উপর নির্ভর করা উচিত। অতঃপর আল্লাহ পাক বলেন- ‘আত্মসাত করা নবীর জন্য মোটেই শোভনীয় নয়। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, বদর যুদ্ধে যে গনীমতের মাল পাওয়া গিয়েছিল, তন্মধ্য হতে একটি লাল রং-এর চাদর হারিয়ে যায়। তখন লোকেরা বলাবলি করে যে, সম্ভবতঃ এটা রাসূলুল্লাহ-ই ( সঃ ) নিয়েছেন। তখনই এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। ( জামেউত তিরমিযী ) অন্য বর্ণনায় রয়েছে যে, মুনাফিকরা রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে কোন জিনিসের অপবাদ দিয়েছিল যার ফলে এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। সুতরাং সাব্যস্ত হচ্ছে যে, রাসূলগণের নেতা হযরত মুহাম্মাদ মোস্তফা ( সঃ ) যে কোন প্রকারের বিশ্বাসঘাকতা ও আত্মসাৎ করণ হতে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত ও পবিত্র। সেটা মাল বন্টনই হোক বা আমানত আদায় করার ব্যাপারেই হোক। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে এও বর্ণিত আছেঃ নবী ( সঃ ) আত্মসাত করতে পারেন না বা তিনি পক্ষপাতিত্বও করেন না যে, সৈন্যদের মধ্যে কাউকে যুদ্ধলব্ধ মালের অংশ দেবেন এবং কাউকে বঞ্চিত রাখবেন। এ আয়াতের তাফসীর নিম্নরূপও করা হয়েছেঃ এটা হতে পারে না যে, নবী ( সঃ ) আল্লাহর নাযিলকৃত কোন কিছু গোপন করবেন এবং স্বীয় উম্মতের নিকট পৌছিয়ে দেবেন না।' ( আরবী ) শব্দের ( আরবী )-কে পেশ দিয়েও পড়া হয়েছে। তখন অর্থ হবেঃ নবী ( সঃ )-এর ব্যক্তিত্ব এরূপ নয় যে, তার নিকটতম সহচরগণ তার বিশ্বাসঘাতকতা করবেন। যেহেতু হযরত কাতাদাহ ( রাঃ ) এবং হযরত রাবী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, বদরের যুদ্ধে প্রাপ্ত গনীমতের মাল হতে কিছু মাল রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর কয়েকজন সহচর বন্টনের পূর্বেই গ্রহণ করেছিল। সে সময় এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। ( তাফসীর-ই-ইবনে জারীর ) অতঃপর আত্মসাতকারী লোকদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে এবং ভীষণ শাস্তির সংবাদ দেয়া হচ্ছে। হাদীসসমূহে এ সম্পর্কে অনেক কিছু ভীতির কথা রয়েছে। যেমন মুসনাদ-ইআহমাদে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেন-‘সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতক হচ্ছে ঐ ব্যক্তি, যে তার প্রতিবেশীর ক্ষেত্রের ভূমি বা ঘরের মাটি দাবিয়ে নেয়। যদি এক হাত মাটিও অন্যায়ভাবে নিজের দিকে চেপে নেয় তবে সাতটি যমীনের গলাবদ্ধ তার গলায় পরিয়ে দেয়া হবে। মুসনাদ-ই-আহমাদের অন্য হাদীসে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ যাকে আমি শাসনকর্তা নিযুক্ত করি, তার বাড়ী না থাকলে বাড়ী করতে পারে, স্ত্রী না থাকলে স্ত্রী করতে পারে; খাদেম না থাকলে তা রাখতে পারে, সোয়ারী না থাকলে ওটাও সংগ্রহ করতে পারে এবং এগুলো ছাড়া যদি অন্য কিছু গ্রহণ করে তবে আত্মসাতকারী হিসেবে গণ্য হবে।' এ হাদীসটি সুনান-ই-আবি দাউদের মধ্যেও অন্য শব্দে বর্ণিত আছে। ইবনে জারীরের মধ্যে হাদীস রয়েছে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ আমি ঐ লোকটিকে চিনি যে কিয়ামতের দিন এমন ছাগল নিয়ে আগমন করবে যে ভ্যা ভ্যা চীৎকার করবে, লোকটি আমার নাম নিয়ে ডাক দেবে । আমি বলবো-আজ আমি আল্লাহর নিকট তোমার কোন কাজে আসবো না, আমি তো তোমার নিকট আল্লাহর বাণী পৌছিয়ে দিয়েছিলাম। আমি ঐ লোকটিকেও চিনি যে শব্দকারী উট নিয়ে আগমন করবে। সে বলবেঃ “ হে মুহাম্মাদ ( সঃ ), হে মুহাম্মদ ( সঃ )! আমি বলবো-আমি তোমার জন্যে আল্লাহর নিকট কোন কিছুরই অধিকারী নই । আমি তো তাবলীগ করেছিলাম। ঐ লোকটিকেও আমি চিনে। নেবো যে চিহি চিহি শব্দকারী ঘোড়া নিয়ে উঠবে। সেও আমাকে ডাক দেবে। আমি তাকেও বলবো- আমি তো ( আল্লাহর বাণী ) পৌছিয়ে দিয়েছিলাম। আজ আমি কোন কাজে আসবো না। আমি ঐ লোকটিকেও চিনি যে চামড়া নিয়ে উপস্থিত হবে এবং বলতে থাকবে- “ হে মুহাম্মাদ ( সঃ )! হে মুহাম্মাদ ( সঃ )'! আমি বলবো-আমি আল্লাহর নিকট তোমার জন্যে কোন উপকারের অধিকারী নই । আমি তো তোমার নিকট ( আল্লাহর বাণী ) পৌছিয়েই দিয়েছিলাম। এ হাদীসটি ছয়খানা বিশুদ্ধ হাদীস গ্রন্থে নেই। মুসনাদ-ই-আহমাদে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) ইদ গোত্রের একজন লোককে শাসনকর্তা করে পাঠান। লোকটিকে ইবনুল লাবতিয়্যাহ বলা হতো। সে যাকাত আদায় করে এসে বলে- এগুলো আপনারদের এবং এটা আমার যা তারা আমাকে উপঢৌকন স্বরূপ দিয়েছে। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তখন মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে বলেন-ঐ লোকদের কি হয়েছে যে, যখন আমি তাদেরকে কোন কাজে প্রেরণ করি তখন এসে বলে- ‘এটা আপনাদের এবং এটা আমার উপঢৌকন? এরা বাড়িতেই এসে বসে থাকলে দেখা যেতো, কেউ তাদেরকে উপঢৌকন পাঠায় কি-না। যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ রয়েছে। সেই সত্তার শপথ! তোমাদের মধ্যে যে কেউ ওর মধ্য হতে কোন কিছু গ্রহণ করবে, কিয়ামতের দিন সে ওটা স্কন্ধে বহন করে আগমন করবে। উট হলে চীৎকার করবে, গরু হলে হাম্বা রব করবে এবং ছাগল হলে ভ্যা ভ্যা শব্দ করবে।' অতঃপর তিনি স্বীয় হস্তদ্বয় এত উঁচু করেন যে, তার বগলের সাদা অংশ চোখে পড়ে যায় এবং তিনবার বলেন, হে আল্লাহ! আমি কি পৌছিয়ে দিয়েছি?' মুসনাদ- ই-আহমাদের একটি দুর্বল হাদীসে রয়েছে যে, এসব আদায়কারী ও শাসনকর্তা যেসব উপঢৌকন প্রাপ্ত হয় তা আত্মসাতের মধ্যেই গণ্য। এ বর্ণনাটি শুধুমাত্র মুসনাদ-ই-আহমাদের মধ্যেই রয়েছে এবং এটা দুর্বল। মনে হচ্ছে যেন এটা পূর্ববর্তী দীর্ঘ বর্ণনাগুলোরই সারাংশ। জামেউত তিরমিযীর মধ্যে রয়েছে, হযরত মুআহ্ ইবনে জাবাল ( রাঃ ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাকে ইয়ামেনে প্রেরণ করেন। আমি তথায় গমন করলে তিনি আমাকে ডেকে পাঠান। আমি তাঁর নিকট ফিরে আসলে তিনি আমাকে বলেনঃ “ আমি শুধুমাত্র কথা বলার জন্য ডেকে পাঠিয়েছি । তা হচ্ছে এই যে, আমার অনুমতি ছাড়া যেটা গ্রহণ করবে তা আত্মসাত এবং প্রত্যেক আত্মসাতকারী তার আত্মসাতকৃত জিনিস নিয়ে কিয়ামতের দিন উপস্থিত হবে। এ টুকুই আমার বলার ছিল। যাও, নিজ কার্যে লেগে পড়।' মুসনাদ-ইআহমাদে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) একদা সাহাবীগণের সামনে দাঁড়িয়ে বিশ্বাসঘাতকতা ও আত্মসাত করণের বর্ণনা দেন এবং ওর বড় বড় পাপ ও শাস্তির কথা বর্ণনা করে তাদেরকে ভয় প্রদর্শন করেন। অতঃপর মানুষের কিয়ামতের দিন জন্তুসমূহ নিয়ে উপস্থিত হওয়া ও রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিকট সাহায্যের জন্যে আবেদন করা এবং তাঁর অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করারও উল্লেখ আছে, যা পূর্বে বর্ণিত হয়েছে। তাতে সোনা-চাদিরও উল্লেখ রয়েছে। এ হাদীসটি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের মধ্যে রয়েছে। মুসনাদ-ই-আহমাদে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ হে লোক সকল! আমি যাকে আদায়কারী নিযুক্ত করি সে যদি একটি সুচ বা তার চেয়েও হালকা জিনিস চুরি করে তবে তা আত্মসাত রূপেই গণ্য হবে এবং তা নিয়ে সে কিয়ামতের দিন উপস্থিত হবে । এ কথা শুনে হযরত সা'দ ইবনে উবাদাহ ( রাঃ ) নামক শ্যাম বর্ণের একজন আনসারী দাঁড়িয়ে গিয়ে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আমি তাহলে আদায়কারী নিযুক্ত হতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করছি।' রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাকে বলেন, “ কেন?' তিনি বলেন, আপনার এ উক্তির কারণে ।' রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তখন বলেন, হ্যাঁ, আরও জেনে রেখো যে, যার উপর আমি কোন কার্যের দায়িত্ব অর্পণ করি তার উচিত হবে কম বেশী সব কিছুই নিয়ে আসা। যা তাকে দেয়া হবে তা সে গ্রহণ করবে এবং যা হতে বিরত রাখা হবে তা হতে বিরত থাকবে।' এ হাদীসটি সহীহ মুসলিম ও সুনান-ই-আবি দাউদেও রয়েছে। হযরত আবু রাফে’ ( রাঃ ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আসর নামাযের পরে প্রায়ই বানু আব্দুল আসহালের ওখানে গমন করতেন এবং প্রায়ই মাগরিব পর্যন্ত তথায় জনসমাবেশ থাকতো। একদা মাগরিবের সময় তিনি তথা হতে ফিরে আসছিলেন। সময় সংকীর্ণ ছিল বলে তিনি দ্রুত পদে চলছিলেন। বাকীতে ( জান্নাতুল বাকী নামক গোরস্থান ) পৌছে তিনি বলেনঃ তোমার প্রতি অভিশাপ! তোমার প্রতি অভিশাপ!' আমি মনে করি যে, তিনি আমাকেই বলছেন। তাই আমি আমার কাপড় ঠিকঠাক করতে গিয়ে তার পিছনে পড়ে যাই। তিনি আমাকে বললেনঃ ব্যাপার কি?' আমি বলি- “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আপনার এ উক্তির কারণে আমি পিছনে থেমে গিয়েছিলাম । তিনি বলেন, ‘আমি তোমাকে বলিনি, বরং এটি অমুক ব্যক্তির সমাধি। আমি তাকে অমুক গোত্রের আদায়কারী করে পাঠিয়েছিলাম। সে একটি চাদর লুকিয়ে নিয়েছিল। ঐ চাদরটি এখন আগুন হয়ে তার উপর জ্বলতে রয়েছে।' ( মুসনাদ-ই-আহমাদ ) হযরত উবাদা ইবনে সাবিদ ( রাঃ ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) গনীমতের মালের উষ্ট্রপৃষ্ঠের কিছু লোম গ্রহণ করতেন, অতঃপর বলতেনঃ ‘এতে আমার ঐ অধিকারই রয়েছে যে অধিকার তোমাদের কোন একজনের রয়েছে। তোমরা আত্মসাত হতে দূরে থাক। কিয়ামতের দিন আত্মসাতকারী লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবে। সুচ ও সূতাও পৌছিয়ে দাও এবং তদপেক্ষা নগণ্য জিনিসও ( পৌছিয়ে দাও )। আল্লাহর পথে নিকটবর্তীদের সাথে এবং দূরবর্তীদের সাথে যুদ্ধ কর। যুদ্ধ স্বদেশেও কর এবং বিদেশেও কর। জিহাদ হচ্ছে জান্নাতের দরজাসমূহের মধ্যে একটি দরজা। জিহাদের কারণে আল্লাহ তা'আলা কাঠিন্য হতে এবং দুঃখ ও চিন্তা হতে মুক্তি দিয়ে থাকেন। আল্লাহর শাস্তি নিকটবর্তীদের উপর ও দূরবর্তীদের উপর জারী কর। আল্লাহর কাজ হতে কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কার যেন তোমাদেরকে বিরত না রাখে। ( মুসনাদ-ই- আহমাদ ) এ হাদীসের কিছু অংশ সুনান-ই-ইবনে মাজার মধ্যেও বর্ণিত আছে। হযরত আবু মাসউদ আনসারী ( রাঃ ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাকে আদায়কারী করে পাঠাবার ইচ্ছে করে বলেনঃ “ হে আবু মাসউদ! যাও আমি তোমাকে যেন কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় না পাই যে, তোমার পৃষ্ঠোপরি শব্দকারী উট থাকে যা তুমি আত্মসাত করে নিয়েছে । আমি বলি-হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আমি তাহলে যেতে চাই না। তখন তিনি বলেনঃ “ আচ্ছা ঠিক আছে, আমি তোমাকে জোরপূর্বক পাঠাতেও চাইনে ।' ( সুনান-ই-আবি দাউদ ) ইবনে মিরদুওয়াই ( রঃ )-এর গ্রন্থে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ যদি কোন পাথর জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয় অতঃপর ওটা সত্তর বছর পর্যন্ত চলতে থাকে তথাপি জাহান্নামের তলদেশে পৌছতে পারবে না। আত্মসাতকৃত জিনিসকে ঐরূপভাবে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে এবং আত্মসাতকারীকে বলা হবে-যাও ওটা নিয়ে এসো’। আল্লাহ পাকের ( আরবী )-এ উক্তির ভাবার্থ এটাই। মুসনাদ-ই-আহমাদে রয়েছে যে, খাইবারের যুদ্ধের দিন সাহাবা-ই-কিরাম আসেন ও বলেন, অমুক শহীদ, অমুক শহীদ। একটি লোক সম্বন্ধে এ কথা বলা হলে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেন, 'কখনই নয়, আমি তাকে জাহান্নামে দেখেছি। কেননা, সে গনীমতের মাল হতে একটি চাদর আত্মসাত করেছিল। অতঃপর তিনি বলেন, “ হে উমার ইবনে খাত্তাব! তুমি যাও এবং জনগণের মধ্যে ঘোষণা করে দাও যে, শুধুমাত্র ঈমানদারগণই জান্নাতে যাবে ।' হযরত উমার ( রাঃ ) বলেন, আমি গিয়ে এটা ঘোষণা করে দেই।' এ হাদীসটি সহীহ মুসলিম ও জামেউত্ তিরমিযীর মধ্যেও রয়েছে। ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) এটাকে হাসান সহীহ বলেছেন। তাফসীর-ই-ইবনে জারীরে রয়েছে যে, একদা হযরত উমার ( রাঃ ) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উনায়েস ( রাঃ )-এর সঙ্গে সাদকা সম্বন্ধে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, আপনি কি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিম্নের ঘোষণা শুনেননি? তিনি সাদকার মধ্যে বিশ্বাসঘাতকতাকারীর সম্বন্ধে বলেছেন, ‘ওর মধ্য হতে যে ব্যক্তি উট অথবা ছাগল নিয়ে নেবে, তাকে কিয়ামতের দিন তা নিয়ে উঠতে হবে। হযরত আবদুল্লাহ ( রাঃ ) তখন বলেন, হ্যা'। এ বর্ণনাটি সুনান-ই-ইবনে মাজার মধ্যেও রয়েছে। তাফসীর-ই-ইবনে জারীরের মধ্যে হযরত সা'দ ইবনে উবাদাহ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাঁকে সাদকা আদায়কারী হিসেবে পাঠাবার ইচ্ছে করে বলেন, “ হে সা’দ! এরূপ যেন না হয় যে, কিয়ামতের দিন তুমি উচ্চ শব্দকারী উট বহন করে আগমন কর ।' তখন হযরত সা'দ ( রাঃ ) বলেন, “ আমি এ পদ গ্রহণও করব না, সুতরাং এরূপ হওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে না । অতএব রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাকে এ কার্য হতে নিষ্কৃতি দান করেন। মুসনাদ-ই-আহমাদে রয়েছে, রূম যুদ্ধে হযরত মুসলিম ইবনে আবদুল মালিকের সঙ্গে হযরত সালিম ইবনে আবদুল্লাহও ছিলেন। এক ব্যক্তির মালপত্রের মধ্যে কিছু আত্মসাতের মালও পাওয়া যায়। সেনাপতি হযরত সালিমকে ঐ ব্যক্তির সম্বন্ধে ফতওয়া জিজ্ঞেস করেন। তখন তিনি বলেন, আমাকে আমার পিতা আবদুল্লাহ ( রাঃ ) এবং তাঁর পিতা হযরত উমার ইবনে খাত্তাব ( রাঃ ) বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ 'কারও মালপত্রের মধ্যে তোমরা চুরির মাল পেলে তা পুড়িয়ে ফেলবে।' বর্ণনাকারী বলেন, “ আমার ধারণা এই যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এ কথাও বলেনঃ “এবং তাকে শাস্তি প্রদান করবে ।' ঐ লোকটির মাল বাজারের মধ্যে বের করা হলে ওর মধ্যে একখানা কুরআন মাজীদও পাওয়া যায়। হযরত সালিমকে পুনরায় ঐ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ওটা বিক্রি করে মূল্য সাদকা করে দিন।' এ হাদীসটি সুনান-ই-আবি দাউদ এবং জামেউত তিরিমিযীর মধ্যেও রয়েছে। ইমাম আলী ইবনে মাদীনী ( রঃ ) এবং ইমাম বুখারী ( রঃ ) প্রভৃতি বলেন যে, এ হাদীসটি মুনকার। ইমাম দারেকুতনী ( রঃ ) বলেন, 'সঠিক কথা এই যে, এটা হযরত সালিম ( রঃ )-এর ফতওয়া। হযরত ইমাম আহমাদ ( রঃ ) এবং তাঁর সঙ্গীগণেরও এটাই উক্তি। হযরত হাসান বসরীও ( রঃ ) এ কথাই বলেন। হযরত আলী ( রাঃ ) বলেন যে, তার মালপত্র জ্বালিয়ে দেয়া হবে, তাকে দাসের ‘হদ্দ’ অপেক্ষা কম প্রহার করা হবে এবং তাকে গনীমতের কোন অংশ দেয়া হবে না। ইমাম আবু হানীফা ( রঃ ), ইমাম মালিক ( রঃ ), ইমাম শাফিঈ ( রঃ ) এবং জমহূরের মাযহাব এর বিপরীত। তারা বলেন যে, তার আসবাবপত্র জ্বালিয়ে দিতে হবে না, বরং ওর তুল্য তাকে শাস্তি দেয়া হবে। ইমাম বুখারী ( রঃ ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আত্মসাতকারীর জানাযার নামায পড়তে অস্বীকার করেছেন, কিন্তু তার আসবাবপত্র জ্বালিয়ে দেননি। মুসনাদ-ইআহমাদে রয়েছে যে, যখন কুরআন কারীমের পরিবর্তনের নির্দেশ দেয়া হয় তখন হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) জনগণকে বলেন, “ তোমাদের মধ্যে কেউ পারলে যেন ওটা গোপন করে রাখে । কেননা, যে ব্যক্তি যে জিনিস গোপন করে রাখবে ঐ জিনিস নিয়েই সে কিয়ামতের দিন আগমন করবে। অতঃপর তিনি বলেন আমি সত্তর বার রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর ভাষায় পাঠ করেছি। তবে কি আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর পড়িয়ে দেয়া আয়াতকে পরিত্যাগ করবো?’ ইমাম অকী’ও স্বীয় তাফসীরে এটা এনেছেন। সুনান-ই-আবি দাউদে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর অভ্যাস ছিল এই যে, যখন গনীমতের মাল আসতো তখন তিনি হযরত বেলাল ( রাঃ )-কে দিয়ে ঘোষণা করে দিতেনঃ যার কাছে যা আছে তা যেন সে নিয়ে আসে। অতঃপর তিনি তা হতে এক পঞ্চমাংশ বের করে নিতেন এবং অবশিষ্ট বন্টন করে দিতেন। একবার এক ব্যক্তি এর পরে একগুচ্ছ চুল নিয়ে হাযির হয় এবং বলে, “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! এটা আমার নিকট রয়ে গিয়েছিল । তিনি বলেনঃ “ হযরত বেলাল ( রাঃ ) যে তিনবার ঘোষণা করেছেন তা কি শুনতে পাওনি?' সে বলেঃ “হাঁ, পেয়েছিলাম । তিনি বলেনঃ ‘তখন আননি কেন?' সে ওযর পেশ করে। তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ ‘আমি এটা আর কখনও নেব না। তুমি এটা কিয়ামতের দিন নিয়ে যেয়ো।' এরপর মহান আল্লাহ বলেনঃ যারা আল্লাহর শরীয়তের উপর চলে তার সন্তুষ্টি লাভ করে, তার পুণ্যের অধিকারী হয় এবং তার শাস্তি হতে পরিত্রাণ পায় আর যারা তাঁর ক্রোধে পতিত হয় এবং মৃত্যুর পর জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হয় এ দু’দল কি কখনও সমান হতে পারে? কুরআন কারীমের মধ্যে অন্য জায়গা রয়েছেঃ যারা আল্লাহর কথাকে সত্য বলে স্বীকার করেছে এবং যারা ওটা হতে অন্ধ রয়েছে তারা সমান নয়। অন্য স্থানে ইরশাদ হচ্ছে- 'যাদের সঙ্গে আল্লাহর উত্তম ওয়াদা হয়ে গেছে এবং যা তারা প্রাপ্ত হবে, তারা এবং দুনিয়ার উপকার লাভকারীরা সমান নয়। এরপর আল্লাহ পাক বলেন-“ ভাল ও মন্দের অধিকারীরা ভিন্ন সোপানের উপর রয়েছে; ওরা রয়েছে জান্নাতের সোপানে এবং এরা রয়েছে । জাহান্নামের সোপানে। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছে- ( আরবী ) অর্থাৎ প্রত্যেকের জন্যে তাদের কার্য অনুযায়ী শ্রেণী বিভাগ রয়েছে। তারপরে আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “ আল্লাহ তাআলা কার্যাবলী দেখতে রয়েছেন এবং অতিসত্বরই তিনি সকলকে পূর্ণ প্রতিদান প্রদান করবেন; না পুণ্য মারা যাবে, না পাপ বৃদ্ধি পাবে বরং আমল অনুযায়ী প্রতিদান ও শাস্তি দেয়া হবে । এরপর আল্লাহপাক বলেনঃ মুমিনদের উপর আল্লাহর বড় অনুগ্রহ রয়েছে যে তিনি তাদের মধ্যে তাদের নিজেদের মধ্য হতেই একজন নবী পাঠিয়েছেন যেন তারা তার সাথে কথাবার্তা বলতে পারে, জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে, তার পার্শ্বে উঠতে বসতে পারে এবং পূর্ণভাবে উপকার গ্রহণ করতে পারে। যেমন অন্য স্থানে রয়েছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ হে নবী ( সঃ )! তুমি বল নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মতই মানুষ, আমার নিকট এই প্রত্যাদেশ হয়েছে যে নিশ্চয়ই তোমাদের মা’বৃদ একজনই বটে।' ( ১৮:১১০ ) অন্য জায়গায় ইরশাদ হচ্ছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ হে নবী! তোমার পূর্বেও আমি যত নবী পাঠিয়েছিলাম তারা সবাই খাদ্য ভক্ষণ করতো এবং বাজারসমূহে চলাফেরা করতো । ( ২৫:২০ ) অন্য স্থানে রয়েছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ তোমার পূর্বেও আমি পুরুষ লোকদের নিকটই অহী করেছিলাম যারা পল্লী অঞ্চলের অধিবাসী ছিল।'( ১২:১০৯ ) আর এক জায়গায় ইরশাদ হচ্ছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ ‘হে দানব ও মানবগণ! তোমাদের নিকট কি তোমাদের মধ্য হতেই রাসূলগণ আসেনি?’ মোটকথা এটা পূর্ণ অনুগ্রহ যে সৃষ্টজীবের নিকট তাদেরই মধ্য হতে রাসূল পাঠান হয়েছে যেন তারা তাদের সঙ্গে উঠা বসা করে বার বার প্রশ্নোত্তর করতঃ ধর্ম সম্বন্ধে পূর্ণজ্ঞান লাভ করতে পারে। তাই আল্লাহ তা'আলা বলেন যে, রাসূল ( সঃ ) জনগণের নিকট আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করে থাকেন অর্থাৎ কুরআন কারীম পাঠ করে তাদেরকে শুনিয়ে থাকেন, ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ হতে নিষেধ করে থাকেন। এভাবে তিনি তাদের মধ্যে হতে শিক ও অজ্ঞতার অপবিত্রতা দূর করতঃ তাদেরকে নির্মল ও পবিত্র করেন। আর তাদেরকে কিতাব ও সুন্নাহ শিক্ষা দিয়ে থাকেন। এ রাসূল ( সঃ )-এর আগমনের পূর্বে মানুষ স্পষ্ট ভ্রান্তির মধ্যে ছিল। তাদের মধ্যে প্রকাশ্য অন্যায় ও পূর্ণ অজ্ঞতা বিরাজমান ছিল।
সূরা আলে-ইমরান আয়াত 164 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তারা যদি আপনার প্রতি মিথ্যারোপ করে, তাদের পূর্ববর্তীরাও মিথ্যারোপ করেছিল। তাদের কাছে তাদের রসূলগণ স্পষ্ট
- যারা পরকালের চাইতে পার্থিব জীবনকে পছন্দ করে; আল্লাহর পথে বাধা দান করে এবং তাতে বক্রতা
- তাদের পূর্ববর্তীরা মিথ্যারোপ করেছিল, অতঃপর কত কঠোর হয়েছিল আমার অস্বীকৃতি।
- তোমরা তোমাদের কথা গোপনে বল অথবা প্রকাশ্যে বল, তিনি তো অন্তরের বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক অবগত।
- নিশ্চয় যারা কুফরী করে এবং কাফের অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করে, সে সমস্ত লোকের প্রতি আল্লাহর ফেরেশতাগনের
- তার চাইতে অত্যাচারী কে, যে আল্লাহর পক্ষ থেকে তার কাছে প্রমাণিত সাক্ষ্যকে গোপন করে? আল্লাহ
- তারাই জান্নাতের অধিকারী! তারা তথায় চিরকাল থাকবে। তারা যে কর্ম করত, এটা তারই প্রতিফল।
- অতএব আজকের দিনে বাঁচিয়ে দিচ্ছি আমি তোমার দেহকে যাতে তোমার পশ্চাদবর্তীদের জন্য নিদর্শন হতে পারে।
- আপনি এ কোরআন দ্বারা তাদেরকে ভয়-প্রদর্শন করুন, যারা আশঙ্কা করে স্বীয় পালনকর্তার কাছে এমতাবস্থায় একত্রিত
- যারা ঈমান এনেছে এবং ভয় করতে রয়েছে।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আলে-ইমরান ডাউনলোড করুন:
সূরা Al Imran mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Al Imran শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers