কোরান সূরা হাজ্জ আয়াত 18 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Hajj ayat 18 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা হাজ্জ আয়াত 18 আরবি পাঠে(Hajj).
  
   

﴿أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يَسْجُدُ لَهُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَمَن فِي الْأَرْضِ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ وَالنُّجُومُ وَالْجِبَالُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَابُّ وَكَثِيرٌ مِّنَ النَّاسِ ۖ وَكَثِيرٌ حَقَّ عَلَيْهِ الْعَذَابُ ۗ وَمَن يُهِنِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِن مُّكْرِمٍ ۚ إِنَّ اللَّهَ يَفْعَلُ مَا يَشَاءُ ۩﴾
[ الحج: 18]

তুমি কি দেখনি যে, আল্লাহকে সেজদা করে যা কিছু আছে নভোমন্ডলে, যা কিছু আছে ভুমন্ডলে, সূর্য, চন্দ্র, তারকারাজি পর্বতরাজি বৃক্ষলতা, জীবজন্তু এবং অনেক মানুষ। আবার অনেকের উপর অবধারিত হয়েছে শাস্তি। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন, তাকে কেউ সম্মান দিতে পারে না। আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন [সূরা হাজ্জ: 18]

Surah Al-Hajj in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Hajj ayat 18


তুমি কি দেখ না যে নিশ্চয় আল্লাহ্ -- তাঁরই প্রতি সিজদা করে যারাই আছে মহাকাশমন্ডলীতে ও যারা আছে পৃথিবীতে, আর সূর্য ও চন্দ্র ও তারকারাজি এবং পাহাড়-পর্বত ও গাছপালা, আর জীবজন্ত ও বহুসংখ্যক লোকজন? আর অনেক আছে যাদের উপরে শাস্তি ন্যায়সংগত হয়েছে। আর যাকে আল্লাহ্ লাঞ্ছিত করেন তার জন্য তবে সম্মানদানের কেউ নেই। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ যা ইচ্ছা করেন তাই করে থাকেন।


Tafsir Mokhtasar Bangla


১৮. হে রাসূল! আপনি কি জানেন না যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলার জন্য আকাশের ফিরিশতারা এবং জমিনের মু’মিন জিন ও মানুষরা আনুগত্যের সাজদাহ করে। তেমনিভাবে সূর্য, চন্দ্র, আকাশের নক্ষত্রারাজী এবং জমিনের পাহাড়, গাছ ও পশুরা বশ্যতার সাজদাহ করে। বস্তুতঃ তাঁর জন্য অনেক লোক আনুগত্যের সাজদাহ করে আবার অনেকে আনুগত্যের সাজদাহ করতে অস্বীকৃতি জানায়। এদের কুফরির দরুন আল্লাহর শাস্তি তাদের উপর পতিত হয়। মূলতঃ যার কুফরির দরুন আল্লাহ তা‘আলা তার লাঞ্ছনা ও অবমাননার ফায়সালা করেন কেউ তাকে সম্মানিত করতে পারবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা যা চান তা করেন। তাঁকে বাধ্য করার কেউ নেই।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


তুমি কি দেখো না যে, আল্লাহকে সিজদা করে যারা আছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে; সিজদা করে সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্রমন্ডলী, পর্বতরাজি, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু,[১] এবং সিজদা করে মানুষের মধ্যে অনেকে; [২] আর অনেকের প্রতি অবধারিত হয়েছে শাস্তি।[৩] আল্লাহ যাকে হেয় করেন তার সম্মানদাতা কেউই নেই; [৪] নিশ্চয় আল্লাহ যা ইচ্ছা তা করেন।[৫] ( সাজদাহ-৬ ) [১] কিছু ব্যাখ্যাকারী বলেছেন, এই সিজদার অর্থ ঐ সমস্ত জিনিসের আল্লাহর নিয়ম-বিধির অনুগত হওয়া। কারো এ শক্তি নেই যে, সে বিধির অন্যথা করে। তাঁদের নিকট সিজদা বলতে আনুগত্য ও ইবাদতের সিজদা নয়; যা একমাত্র জ্ঞানসম্পন্ন জীবের সাথে সম্পৃক্ত। তবে কিছু কিছু ব্যাখ্যাকারিগণ তা মূল অর্থেই ব্যবহার হয়েছে বলে মনে করেন। তাঁরা বলেন, প্রতিটি সৃষ্টি নিজ নিজ পদ্ধতিতে সিজদা করে থাকে। যেমনঃ 'যারা আকাশমন্ডলীতে আছে' বলতে ফিরিশতাগণ, 'যারা পৃথিবীতে আছে' বলতে প্রত্যেক মানুষ, জীন ও পশুপক্ষী এবং অন্যান্য সব কিছুকে বুঝানো হয়েছে। এরা সবাই নিজ নিজ ভঙ্গিমায় আল্লাহকে সিজদা করে এবং তাঁর মহিমা ঘোষণা করে। মহান আল্লাহ বলেন, সপ্ত আকাশ, পৃথিবী এবং ওদের অন্তর্বর্তী সব কিছু তাঁরই পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং এমন কিছু নেই যা তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে না; কিন্তু ওদের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা তোমরা অনুধাবন করতে পার না। ( সূরা ইসরা ১৭:৪৪ ) এখানে চন্দ্র সূর্য্য নক্ষত্রমন্ডলীর কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যেহেতু মুশরিকরা এদের ইবাদত করত তাই। আল্লাহ বললেন, তোমরা এদেরকে সিজদা কর, অথচ এরা আল্লাহকে সিজদা করে ও তাঁর আজ্ঞা পালন করে। অতএব তোমরা এদেরকে সিজদা করো না, বরং সিজদা তাঁকে কর, যিনি এদের সৃষ্টিকর্তা। ( দেখুন, ফুসসিলাত ৪১:৩৭ ) সহীহ হাদীসে এসেছে, আবু যার ( রাঃ ) বলেন, একদা নবী ( সাঃ ) আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, " তুমি কি জানো, সূর্য কোথায় যায়? " আমি বললাম, 'আল্লাহ ও তাঁর রসূলই ভাল জানেন।' তিনি বললেন, " সূর্য যখন ডুবে যায় তখন আরশের নীচে গিয়ে আল্লাহকে সিজদা করে। তারপর তাকে পূর্বাকাশে উদিত হওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু একদিন এমন আসবে, যেদিন বলা হবে, তুমি ফিরে যাও; অর্থাৎ যেখান হতে এসেছ, ওখানেই ফিরে যাও। " ( বুখারী, মুসলিম ) এভাবেই একজন সাহাবীর কথা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি স্বপ্নে গাছকে নিজের সাথে সিজদা করতে দেখেছেন। ( তিরমিযী, ইবনে মাজাহ ১০৫৩নং ) পাহাড় ও গাছের সিজদায় তাদের ছায়া পূর্ব-পশ্চিমে ঝুঁকে পড়াও শামিল। এ ব্যাপারে সূরা রা'দের ১৩:১৫ আয়াতে ও নাহল ১৬:৪৮-৪৯ আয়াতে ইঙ্গিত করা হয়েছে।[২] এখানে সিজদা বলতে আনুগত্য ও ইবাদতের সিজদা, যা বহু সংখ্যক মানুষ করে থাকে এবং তার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের অধিকারী হয়।[৩] এরা ওরাই যারা ইবাদতের সিজদাকে অস্বীকার করে কুফরীর পথ অবলম্বন করে। অন্যথায় সৃষ্টিগতভাবে প্রাকৃতিক নিয়মের অধীন হয়ে সিজদাকে অস্বীকার করার উপায় তাদেরও নেই।[৪] কুফরী অবলম্বন করার পরিণতি অসম্মান ও লাঞ্ছনা এবং আখেরাতের চিরস্থায়ী আযাব। যা থেকে রক্ষা করে কাফেরদেরকে সম্মান দেওয়ার মত কেউই থাকবে না।[৫] এই আয়াত শেষে তিলাঅতের সিজদা করা মুস্তাহাব। সিজদার আহকাম জানতে সূরা আ'রাফের শেষ আয়াতের ৭:২০৬ টীকা দ্রষ্টব্য।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


আপনি কি দেখেন না যে, আল্লাহকে সিজদা করে যারা আছে আসমানসমূহে ও যারা আছে যমীনে , আর সূর্য, চাঁদ, নক্ষত্রমণ্ডলী, পর্বতরাজি, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু [] এবং সিজদা করে মানুষের মধ্যে অনেকে []? আবার অনেকের প্রতি অবধারিত হয়েছে শাস্তি []। আল্লাহ্ যাকে হেয় করেন [] তার সম্মানদাতা কেউই নেই; নিশ্চয় আল্লাহ্ যা ইচ্ছে তা করেন। [] সমগ্র সৃষ্টজগত স্রষ্টার আজ্ঞাধীন ও ইচ্ছাধীন। কারো কারো মতে এখানে সিজদা করার দ্বারা আনুগত্য করা বোঝানো হয়েছে। [ ফাতহুল কাদীর ] সৃষ্টজগতের এই আজ্ঞানুবর্তিতা দুই প্রকার- ( এক ) সৃষ্টিগত ব্যবস্থাপনার অধীনে বাধ্যতামূলক আনুগত্য। মুমিন, কাফের, জীবিত, মৃত, জড়পদার্থ ইত্যাদি কেউ এই আনুগত্যের আওতা বহির্ভূত নয়। এই দৃষ্টিকোণ থেকে সবাই সমভাবে আল্লাহ তা'আলার আজ্ঞাধীন ও ইচ্ছাধীন। বিশ্ব-চরাচরের কোন কণা অথবা পাহাড় আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতিরেকে এতটুকুও নড়াচড়া করতে পারে না। ( দুই ) সৃষ্টজগতের ইচ্ছাধীন আনুগত্য। অর্থাৎ স্ব-ইচ্ছায় আল্লাহ তা’আলার বিধানাবলী মেনে চলা। আয়াতে এ প্রকার আনুগত্যই বোঝানো হয়েছে। আসমান যমীনে যত কিছু আছে যেমন ফেরেশতা, যাবতীয় জীব-জন্তু সবাই আল্লাহকে সিজদা করে বা তাঁর আনুগত্য করে। অনুরূপভাবে সূর্য, চন্দ্র ও তারকাসমূহও আল্লাহর আনুগত্য ও সিজদা করে। সূর্য, চন্দ্র ও তারকাসমূহকে আলাদাভাবে বর্ণনা করার কারণ হচ্ছে, আল্লাহ ব্যতীত এ গুলোর ইবাদাত করা হয়েছিল, তাই জানিয়ে দেয়া হলো যে, তোমরা এদের পূজা কর, অথচ এরা আল্লাহর জন্য সিজদা করে। অন্য আয়াতে সেটা স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, “ তোমরা সূর্যকে সিজদা করো না, চাঁদকেও নয় ; আর সিজদা কর আল্লাহকে, যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন , যদি তোমরা কেবলমাত্র তাঁরই ইবাদাত কর ।” [ সূরা ফুসসিলাত: ৩৭ ] [ ইবন কাসীর ] যদি প্রশ্ন করা হয় যে, ইচ্ছাধীন আনুগত্য তো শুধু বিবেকবান মানুষ, জিন ইত্যাদির মধ্যে হতে পারে। জীবজন্তু, উদ্ভিদ ও জড়পদার্থের মধ্যে তো বিবেক ও চেতনাই নেই। এমতাবস্থায় এগুলোর মধ্যে ইচ্ছাধীন আনুগত্য কিভাবে হবে? এর উত্তর এই যে, কুরআনুল কারীমের বহু আয়াত ও বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত আছে যে, বিবেক, চেতনা ও ইচ্ছা থেকে কোন সৃষ্টবস্তুই মুক্ত নয়। সবার মধ্যেই কম-বেশী এগুলো বিদ্যমান আছে। জন্তু-জানোয়ারের বিবেক ও চেতনা সাধারণতঃ অনুভব করা হয়। উদ্ভিদের বিবেক ও চেতনাও সামান্য চিন্তা ও গবেষণা দ্বারা চেনা যায়, কিন্তু জড় পদার্থের বিবেক ও চেতনা এতই অল্প ও লুক্কায়িত যে, সাধারণ মানুষ তা বুঝতেই পারে না। কিন্তু তাদের স্রষ্টা ও মালিক বলেছেন যে, তারাও বিবেক ও চেতনার অধিকারী। যেমন আল্লাহ বলেন, “ এমন কিছু নেই । যা তাঁর সপ্ৰশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে না” [ সূরা আল-ইসরা: ৪৪ ] তাছাড়া সূর্য আরশের নিচে সিজদা করার কথা হাদীসে এসেছে। আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি জান, সূর্য কোথায় যায়? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল বেশী জানেন। তিনি বললেন, এটা যায় তারপর আরাশের নিচে সিজদা করে। অতঃপর অনুমতি গ্ৰহণ করে। অচিরেই এমন এক সময় আসবে যখন তাকে বলা হবে, যেখান থেকে এসেছি সেখানেই ফিরে যাও। [ বুখারী: ৩১৯৯ ] আবুল আলীয়া বলেন, আকাশের যত তারকা আছে, সূর্য ও চাঁদ সবই যখন ডুবে তখন আল্লাহর জন্য সিজদা করে, যতক্ষণ সেগুলোকে অনুমতি না দেয়া হয়, ততক্ষণ সেগুলো ফিরে আসে না। তারপর তাদের উদিত হওয়ার স্থানে উদিত হয়। আর পাহাড় ও গাছের সিজদা হচ্ছে ডানে ও বামে তাদের ছায়া পড়া। [ ইবন কাসীর ] কাজেই আলোচ্য আয়াতে সে আনুগত্যকে সিজদা শব্দ দ্বারা ব্যক্ত করা হয়েছে, তা ইচ্ছাধীন আনুগত্য। আয়াতের অর্থ এই যে, মানব জাতি ছাড়াও ( জিনসহ ) সব সৃষ্টবস্তু স্বেচ্ছায় ও স্বজ্ঞানে আল্লাহ্ তা'আলার দরবারে সিজদা করে অর্থাৎ আজ্ঞা পালন করে। তবে মানব ও জিন জাতিকে আল্লাহ্ তা'আলা বিবেক ও চেতনার একটি পূর্ণস্তর দান করেছেন। এ কারণেই তাদেরকে আদেশ ও নিষেধের অধীন করা হয়েছে। মানব জাতিই সর্বাধিক বিবেক ও চেতনা লাভ করেছে। এ জন্য তারা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে- ( এক ) মুমিন, অনুগত ও সিজদাকারী এবং ( দুই ) কাফের, অবাধ্য ও সিজদার প্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শনকারী। সিজদার তাওফীক না দিয়ে আল্লাহ তা'আলা শেষোক্ত দলকে হেয় করেছেন। [ সা'দী ] হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ যখন আদম৷ সন্তান সিজদার আয়াত পড়ে ( এবং সিজদা করে ), শয়তান তখন দূরে গিয়ে কাঁদতে থাকে । সে বলতে থাকে, আদম সন্তানকে সিজদা করতে বলা হয়েছে সে সিজদা করেছে, তার জন্য নির্ধারিত হল জান্নাত। আর আমাকে সিজদা করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল আর আমি তা করতে অস্বীকার করেছি, ফলে আমার জন্য নির্ধারিত হলো জাহান্নাম ' [ মুসলিম: ৮১ ] এ আয়াতটি সিজদার আয়াত। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, ‘সুরা আল-হজ্জে দু'টি সাজদাহ রয়েছে। ' [ মুস্তাদরাকে হাকিম: ৩৪৭২ ] [] অর্থাৎ এমন বহু মানুষ রয়েছে যারা নিছক বাধ্য হয়েই নয় বরং ইচ্ছাকৃতভাবে, সানন্দে ও আনুগত্যশীলতা সহকারেও তাঁকে সিজদা করে। [ ইবন কাসীর ] পরবর্তী বাক্যে তাদের মোকাবিলায় মানব সম্পপ্রদায়ের অন্য যে দলের কথা বলা হচ্ছে তারা স্বেচ্ছায় আল্লাহর সামনে মাথা নত হতে অস্বীকার করে এবং অহংকার করে। [ ইবন কাসীর ] কিন্তু অন্যান্য স্বাধীন ক্ষমতাহীন সৃষ্টির মতো তারাও প্রাকৃতিক আইনের বাঁধন মুক্ত নয়। কিন্তু তারাও ইচ্ছে করলেই যা ইচ্ছে তা করে বেড়াতে পারে না। তাদেরকেও জন্ম, মৃত্যু, জ্বরা, রোগ-শোক ইত্যাদিতে আল্লাহর নিয়মনীতির বাইরে চলার সুযোগ দেয়া হয়নি। সে হিসেবে আনুগত্যের ব্যাপকতা ও বাধ্যতামূলক সিজদার মধ্যে তারাও শামিল রয়েছে। নিজেদের ক্ষমতার পরিসরে বিদ্রোহের নীতি অবলম্বনের কারণে তারা আযাবের অধিকারী হয়। [] তাদের অনেকের উপর আযাব অবধারিত হওয়ার কারণ হচ্ছে, তারা আনুগত্য করেনি। তারা সিজদা করেনি। [ কুরতুবী ] [] অর্থাৎ তাকে আল্লাহ কাফের ও দূর্ভাগা বানিয়ে অপমানিত করেছেন। সুতরাং তাকে সম্মান দেয়ার আর কেউ নেই যে সে তার দ্বারা সৌভাগ্যশালী ও সম্মানিত হতে পারে। আল্লাহ যা ইচ্ছে তা করতে পারেন। দূৰ্ভাগা হওয়া, সৌভাগ্যশালী হওয়া, সম্মানিত বা অপমানিত হওয়া এ সবই আল্লাহর ইচ্ছাধীন। [ ফাতহুল কাদীর ] যে ব্যক্তি চোখ মেলে প্রকাশ্য ও উজ্জ্বল সত্য দেখে না এবং যে তাকে বুঝায় তার কথাও শোনে না সে নিজেই নিজের জন্য লাঞ্ছনা ও অবমাননার ডাক দেয়। সে নিজে যা প্রার্থনা করে, আল্লাহ তার ভাগ্যে তাই লিখে দেন। তারপর আল্লাহই যখন তাকে সত্য অনুসরণ করার মর্যাদা দান করেননি তখন তাকে এ মর্যাদায় অভিষিক্ত করার ক্ষমতা আর কার আছে?

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


আল্লাহ তাআলা খবর দিচ্ছেন যে, ইবাদতের হকদার একমাত্র তিনিই। তিনি এক। তাঁর কোন অংশীদার নেই। তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার সামনে সমস্ত কিছুই মাথা নত করে, তার খুশীতেই হোক অথবা বাধ্য হয়েই হোক। প্রত্যেক জিনিসের সিজদা ওর স্বভাবের মধ্যেই রয়েছে। ছায়ার ডানে বামে আল্লাহর সামনে সিজদাবনত থাকার কথাও কুরআন কারীমে বর্ণিত হয়েছে। বলা। হয়েছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তারা কি লক্ষ্য করে না আল্লাহর সৃষ্ট বস্তুর প্রতি যার ছায়া দক্ষিণে ও বামে ঢলে পড়ে আল্লাহর প্রতি সিজদাবনত হয়?” ( ১৬:৪৮ ) সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজিও তার সামনে সিজদায় পড়ে যায় । পথকভাবে এই তিনটি। জিনিসের বর্ণনা করার কারণ এই যে, কতকগুলি লোক এগুলির উপাসনা করে থাকে। অথচ ঐগুলি নিজেরাই আল্লাহর সামনে সিজদাবনত হয়। এ জন্যেই তিনি বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তোমরা সূর্য ও চন্দ্রকে সিজুদা করো না, বরং সিজুদা করো ঐ আল্লাহকে যিনি ওগুলিকে সৃষ্টি করেছেন ।" ( ৪১:৩৭ )।হযরত আবু যার ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাঁকে জিজ্ঞেস করেনঃ “ এই সূর্য কোথায় যায় তা জান কি?” উত্তরে তিনি বলেনঃ “আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ( সঃ ) ভাল জানেন । তিনি তখন বলেনঃ “ এটা আরশের নীচে গিয়ে আল্লাহকে সিজদা করে । আবার ওটা তার কাছে অনুমতি প্রার্থনা করে। সত্বরই এমন সময় আসছে যে, ওকে বলা হবেঃ “ তুমি যেখান থেকে এসেছিলে সেখানেই ফিরে যাও ।" ( এহাদীসটি সহীহ্ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে )সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের হাদীসে আছে যে, সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর সৃষ্টি বস্তু সমূহের মধ্যে দু'টি সৃষ্ট বস্তু। এ দুটোতে কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে গ্রহণ লাগে না বরং আল্লাহ তাআলা স্বীয় মাখলুক সমূহের যার উপরই ঔজ্জ্বল্য নিক্ষেপ করেন তখন ওটা তার সামনে সিজদাবনত হয়।” ( এ হাদীসটি মুসনাদে আহমাদ এবং সুনানে আবি দাউদ, নাসায়ী ও ইবনু মাজাহতে বর্ণিত হয়েছে ) আবুল আলিয়া, ( রাঃ ) বলেন যে, সূর্য, চন্দ্র এবং সমস্ত তারকা অস্তমিত হয়ে সিজদায় পড়ে থাকে এবং আল্লাহ তাআলার নিকট অনুমতি নিয়ে ডান দিক হতে ফিরে এসে আবার নিজের উদয় স্থলে পৌঁছে। আর পাহাড় পর্বত ও গাছপালার সিজদা হলো ওগুলোর ডানে বামে ছায়া পড়ে। একটি লোক নবীর ( সঃ ) নিকট এসে নিজের এক স্বপ্নের কথা বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ “ আমি স্বপ্নে দেখি যে, আমি যেন একটি গাছের পিছনে নামায পড়ছি । আমি যখন সিজদায় গেলাম তখন দেখি যে, গাছটিও সিজদায় গেল এবং আমি শুনতে পেলাম যে, গাছটি সিজদায় গিয়ে নিম্ন লিখিত দুআ পড়তে রয়েছেঃ - ( আরবী ) অর্থাৎ “ হে আল্লাহ! এই সিজদার কারণে আমার জন্যে আপনি আপনার নিকট প্রতিদান ও সওয়াব লিপিবদ্ধ করুন! আর আমার গুনাহ্ মাফ করে দিন । এবং এটাকে আমার জন্যে আখেরাতে সঞ্চিত ধন হিসেবে রেখে দিন! আর এটাকে ককূল করে নিন যেমন কবূল করেছিলেন আপনার বান্দা হযরত দাউদের ( আঃ ) সিজদাকে।” ( এটা হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত ইবনু আব্বাস ( রাঃ ) বলেনঃ “ এরপর আমি একদিন দেখি যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) সিজ্জদার আয়াত পাঠ করেন, অতঃপর সিজদা করেন এবং সিদায় এই দুআটিই পাঠ করেন ।( এটা ইমাম তিরমিযী (রঃ ), ইমাম ইবনু মাজাহ ( রঃ ) এবং ইবনু হিব্বান ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন)সমস্ত জীবজন্তুও আল্লাহকে সিজ্দা করে থাকে। যেমন মুসনাদে আহমাদে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমাদের পশুর পিঠকে তোমরা মিম্বর বানিয়ে নিয়ো না । কেননা, বহু সওয়ারী জন্তু সওয়ার অপেক্ষাও ভাল হয় এবং বেশী যিকারী হয়ে থাকে।মহান আল্লাহ বলেনঃ মানুষের অনেকে আল্লাহকে সিদা করে থাকে। আবার তাদের মধ্যে অনেকে এমনও আছে যে, তাদের উপর আল্লাহর শাস্তি অবধারিত হয়েছে। তারা অহংকার করে ও উদ্ধত হয়। ঘোষিত হচ্ছেঃ আল্লাহ যাকে হেয় করেন তার সম্মানদাতা কেউই নেই। তিনি যা ইচ্ছা তা-ই করেন।জাফর ( রঃ ) তাঁর পিতা মুহাম্মদ ( রাঃ ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, একটি লোক হযরত আলীকে ( রাঃ ) বলেঃ “ এখানে এমন একজন লোক রয়েছে যে আল্লাহর ইচ্ছার স্বাধীনতাকে স্বীকার করে না ।” তখন হযরত আলী ( রাঃ ) লোকটিকে ডেকে বলেনঃ “ আচ্ছা বলতো, তোমার সৃষ্টি তোমার ইচ্ছানুযায়ী হয়েছে, না আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী হয়েছে?" সে উত্তর দেয়ঃ “আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী হয়েছে । আবার তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ তুমি কি নিজের ইচ্ছায় রোগাক্রান্ত হও, না আল্লাহর ইচ্ছায় সে জবাবে বলেঃ আল্লাহর ইচ্ছায় ।" তিনি প্রশ্ন করেনঃ “ রোগমুক্তি তোমার ইচ্ছায় হয়, না আল্লাহর ইচ্ছায়?” উত্তরে সে বলেঃ “আল্লাহর ইচ্ছায় পুনরায় তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ “বলতো, এখন তিনি যেখানে ইচ্ছা তোমাকে নিয়ে যাবেন, না তুমি যেখানে ইচ্ছা সেখানে যেতে পারবে?" জবাবে সে বলেঃ “তিনি যেখানে ইচ্ছা করবেন । তাহলে তার ইচ্ছার স্বাধীনতার ব্যাপারে আর বাকী থাকলো কি? জেনে রেখো যে, তুমি যদি এর বিপরীত জবাব দিতে তবে আমি তোমার মস্তক উড়িয়ে দিতাম।" ( এটা ইবনু আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ আদম সন্তান যখন সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে সিজদা করে তখন শয়তান সরে গিয়ে কাঁদতে শুরু করে এবং বলেঃ “হায়, আফসোস! ইবনু আদমকে সিজদা করার হুকুম দেয়া হয়েছে এবং সে সিজদা করেছে, ফলে সে জান্নাতী হয়েছে । পক্ষান্তরে, আমি এতে অস্বীকৃতি জানিয়েছি, কাজেই আমি জাহান্নামী হয়ে গেছি।” ( এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ ) রিওয়াইয়াত করেছেন)হযরত উব্বা ইবনু আমির ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! সূরায়ে হাজ্জকে অন্যান্য সূরার উপর প্রাধান্য দেয়া হয়েছে কি এই হিসেবে যে, তাতে দুটি সিদা রয়েছে?" উত্তরে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “হা যে এ দুটি আয়াত পাঠ করে সিজ্দা করে না তার উচিত আয়তি দুটি পাঠই না করা । ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন। ইমাম আবু দাউদ ( রঃ ) ও ইমাম তিরমিযীও ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) বলেন যে, এ হাদীসটি সবল সবল নয়)হযরত খালিদ ইবনু মা’দান ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ সূরায়ে হাজ্জকে অন্যান্য সূরা সমূহের উপর এই ফযীলত দেয়া হয়েছে যে, তাতে দুটি সিজুদা রয়েছে ।( এ হাদীসটি ইমাম আবু দাউদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন যে, অন্য সনদেও এটা বর্ণনা করা হয়েছে কিন্তু এটা বিশুদ্ধ নয়)আবুল জাহাম ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত উমার ( রাঃ ) হুদায়বিয়ায় এই সূরাটি পাঠ করেন এবং দুটি সিজদা দেন। অতঃপর তিনি বলেনঃ “ এই সূরাটিকে দু'টি সিজ্দার ফযীলত দেয়া হয়েছে ।( এটা হাফিজ আবু বকর ইসমাঈলী (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আমর ইবনুল আস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তঁাকে কুরআন কারীমে পনরোটি সিজ্দা পড়িয়ে দেন। তন্মধ্যে তিনটি সূরায়ে মুফাস্সালে এবং দুটি সূরায়ে হাজ্জে।” ( এটা ইমাম আবূ দাউদ (রঃ ) ও ইমাম ইবনু মাজাহ ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন। সুতরাং এগুলি এটাকে পূর্ণভাবে সবল করছে)

সূরা হাজ্জ আয়াত 18 সূরা

ألم تر أن الله يسجد له من في السموات ومن في الأرض والشمس والقمر والنجوم والجبال والشجر والدواب وكثير من الناس وكثير حق عليه العذاب ومن يهن الله فما له من مكرم إن الله يفعل ما يشاء

سورة: الحج - آية: ( 18 )  - جزء: ( 17 )  -  صفحة: ( 334 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. সুলায়মান বললেন, এখন আমি দেখব তুমি সত্য বলছ, না তুমি মিথ্যবাদী।
  2. নিশ্চয় দিবাভাগে রয়েছে আপনার দীর্ঘ কর্মব্যস্ততা।
  3. তাদের পূর্বে যে সব জ্বিন ও মানুষ গত হয়েছে, তাদের মধ্যে এ ধরনের লোকদের প্রতিও
  4. তারা এবাদত করে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর, যা তাদের উপকার করতে পারে না এবং ক্ষতিও
  5. যারা কোরআনকে খন্ড খন্ড করেছে।
  6. তারপর যদি তারা গ্রহণ না করে, তাহলে প্রমাদ সৃষ্টিকারীদেরকে আল্লাহ জানেন।
  7. তারাই তো কুফরী করেছে এবং বাধা দিয়েছে তোমাদেরকে মসজিদে হারাম থেকে এবং অবস্থানরত কোরবানীর জন্তুদেরকে
  8. যা কিছু আকাশসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু যমীনে আছে, সব আল্লাহরই। যদি তোমরা মনের কথা
  9. শপথ সূর্যের ও তার কিরণের,
  10. তারা কি তাদের সামনের ও পশ্চাতের আকাশ ও পৃথিবীর প্রতিলক্ষ্য করে না? আমি ইচ্ছা করলে

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা হাজ্জ ডাউনলোড করুন:

সূরা Hajj mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Hajj শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত হাজ্জ  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত হাজ্জ  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত হাজ্জ  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত হাজ্জ  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত হাজ্জ  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত হাজ্জ  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত হাজ্জ  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত হাজ্জ  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত হাজ্জ  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত হাজ্জ  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Saturday, May 18, 2024

لا تنسنا من دعوة صالحة بظهر الغيب