কোরান সূরা ফুরকান আয়াত 19 তাফসীর
﴿فَقَدْ كَذَّبُوكُم بِمَا تَقُولُونَ فَمَا تَسْتَطِيعُونَ صَرْفًا وَلَا نَصْرًا ۚ وَمَن يَظْلِم مِّنكُمْ نُذِقْهُ عَذَابًا كَبِيرًا﴾
[ الفرقان: 19]
আল্লাহ মুশরিকদেরকে বলবেন, তোমাদের কথা তো তারা মিথ্যা সাব্যস্ত করল, এখন তোমরা শাস্তি প্রতিরোধ করতে পারবে না এবং সাহায্যও করতে পারবে না। তোমাদের মধ্যে যে গোনাহগার আমি তাকে গুরুতর শাস্তি আস্বাদন করাব। [সূরা ফুরকান: 19]
Surah Al-Furqan in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Furqan ayat 19
''সুতরাং তোমরা যা বলছ সে-সন্বন্ধে তারা তো তোমাদের মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে, কাজেই তোমরা প্রতিরোধ করতে পারবে না, আর সাহায্যও পাবে না। আর তোমাদের মধ্যে যে কেউ অন্যায় করেছে তাকে আমরা বিরাট শাস্তি আস্বাদন করাব।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
১৯. হে মুশরিকরা! আল্লাহ ছাড়া তোমরা যাদের ইবাদাত করেছিলে তারা তোমাদের দাবিকে অস্বীকার করেছে। ফলে না তোমরা নিজেদের অক্ষমতার দরুন নিজেদের শাস্তিকে প্রতিরোধ করতে পারছো। না নিজেদের কোন ধরনের সহযোগিতা করতে পারছো। হে মু’মিনরা! তোমাদের কেউ আল্লাহর সাথে শিরকের যুলুম করলে আমি তাকে পূর্ববর্তীদের ন্যায় কঠিন শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করাবো।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
আল্লাহ অংশীবাদীদেরকে বলবেন, ‘তোমরা যা বলতে, ওরা তা মিথ্যা মনে করেছে। সুতরাং তোমরা শাস্তি প্রতিরোধ করতে পারবে না এবং কোন সাহায্যও পাবে না।’[১] আর তোমাদের মধ্যে যে সীমালংঘন করবে,[২] আমি তাকে মহাশাস্তি আস্বাদ করাব। [১] এটি আল্লাহর কথা, যা তিনি মুশরিকদেরকে সম্বোধন করে বলবেন যে, তোমরা যাদেরকে মা'বূদ ধারণা করতে, তারা তোমাদেরকে তোমাদের কথায় মিথ্যুক প্রমাণিত করেছে এবং তোমরা এও দেখছ যে, তারা তোমাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথাও ঘোষণা করে দিয়েছে। অর্থাৎ, তোমরা যাদেরকে সাহায্যকারী মনে করতে, তারা তোমাদের সাহায্যকারী নয়। এখন তোমাদের মধ্যে এমন শক্তি আছে কি, যার দ্বারা আমার আযাব রদ্দ্ করতে পারো এবং নিজেদের সাহায্য করতে পার? [২] যুলম বা সীমালঙ্ঘন বলতে শিরককেই বুঝানো হয়েছে, যেমন পূর্বাপর বাগধারা হতে স্পষ্ট হয়। আর কুরআনেও সুরা লুকমান ১৩ আয়াতে শিরকে বড় যুলম ( মহা অন্যায় ) বলে অবিহিত করা হয়েছে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
( আল্লাহ্ মুশরিকদেরকে বলবেন ) ‘তোমরা যা বলতে তারা তো তা মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে। কাজেই তোমরা শাস্তি প্রতিরোধ করতে পারবে না এবং সাহায্যও পাবে না। আর তোমাদের মধ্যে যে যুলম তথা শির্ক করবে আমরা তাকে মহাশাস্তি আস্বাদন করাব [ ১ ]।’ [ ১ ] এখানে জুলুম বলতে আল্লাহ্র সাথে শির্ক করাকে বুঝানো হয়েছে। [ ইবন কাসীর, আদওয়াউল বায়ান ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১৭-১৯ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তা'আলা বলছেন যে, মুশরিকরা আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য যেসব মা’রূদের ইবাদত করতো, কিয়ামতের দিন তাদেরকে তাদের সামনে শাস্তি প্রদান ছাড়াও মৌখিকভাবেও তিরস্কার করা হবে, যাতে তারা লজ্জিত হয়। হযরত ঈসা ( আঃ ), হযরত উযায়ের ( আঃ ) এবং ফেরেশতামণ্ডলী, যাদের যাদের উপাসনা করা হতো তারা সবাই সেদিন বিদ্যমান থাকবেন এবং সমাবেশে ইবাদতকারীরাও হাযির থাকবে। ঐ সময় আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা ঐ উপাস্যদেরকে জিজ্ঞেস করবেনঃ “ তোমরা কি আমার এই বান্দাদেরকে তোমাদের উপাসনা করতে বলেছিলে, না তারা নিজেদের ইচ্ছাতেই তোমাদের ইবাদত করতে শুরু করে দিয়েছিল?” হযরত ঈসা ( আঃ )-কেও অনুরূপ প্রশ্ন করা হবে । যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “ আল্লাহ যখন বলবেন, হে মারইয়াম তনয় ঈসা ( আঃ )! তুমি কি লোকদেরকে বলেছিলে- তোমরা আল্লাহ ব্যতীত আমাকে ও আমার জননীকে মা'বূদ রূপে গ্রহণ কর? সে বলবেঃ আপনিই মহিমান্বিত! যা বলার আমার অধিকার নেই তা বলা আমার পক্ষে শোভনীয় নয় । যদি আমি তা বলতাম তবে আপনি তা জানতেন। আমার অন্তরের কথা তো আপনি অবগত আছেন, কিন্তু আপনার অন্তরের কথা আমি অবগত নই; আপনি তো অদৃশ্য সম্বন্ধে সম্যক পরিজ্ঞাত। আপনি আমাকে যে আদেশ করেছেন তা ব্যতীত তাদেরকে আমি কিছুই বলিনি। ( শেষ পর্যন্ত )।”দ্রুপ এসব উপাস্য যাঁদের মুশরিকরা আল্লাহ ব্যতীত উপাসনা করতো এবং ভরা আল্লাহর খাঁটি বান্দা ও শিরকের প্রতি অসন্তুষ্ট, উত্তরে বলবেনঃ “ কোন মাখলুকের, আমাদের ও তাদের জন্যে এটা শোভনীয় ছিল না যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো উপাসনা করে । হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা কখনো তাদেরকে শিরকের শিক্ষা দিইনি। তারা নিজেদের ইচ্ছাতেই অন্যদের পূজা শুরু করে দিয়েছিল। আমরা তাদের থেকে এবং তাদের উপাসনা থেকে অসন্তুষ্ট। আমরা তাদের ঐ শিরক থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত। আমরা তো নিজেরাই আপনার উপাসনাকারী। সুতরাং আমাদের পক্ষে উপাস্যের পদে অধিষ্ঠিত হওয়া কী করে সম্ভব? আমরা তো মোটেই এর যোগ্যতা রাখতাম না। আপনার সত্তা এর থেকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র যে, কেউ আপনার অংশীদার হবে। যেমন আল্লাহ তা'আলা অন্য আয়াতে বলেন ( আরবি ) অর্থাৎ “ যেদিন তিনি তাদের সকলকে একত্রিত করবেন, অতঃপর ফেরেশতাদেরকে বলবেন- এরা কি তোমাদেরই উপাসনা করতো? তারা বলবেআমরা আপনার মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করছি ।” ( ৩৪:৪০-৪১ )( আরবি ) এর দ্বিতীয় পঠন ( আরবি ) ও রয়েছে। অর্থাৎ আমাদের জন্যে এটা উপযুক্ত ছিল না যে, লোকেরা আমাদের উপাসনা করতে শুরু করে দেয় এবং আপনার ইবাদত পরিত্যাগ করে। কেননা, আমরা তো আপনার দ্বারের ভিখারী। দুই অবস্থাতেই ভাবার্থ কাছাকাছি একই।তাদের বিভ্রান্তির কারণ আমরা এটাই বুঝি যে, তারা বয়স পেয়েছিল, তারা পানাহারের বস্তু যথেষ্ট পরিমাণে লাভ করেছিল, কাজেই তারা ভোগ-বিলাসে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল। এমনকি রাসূলদের মাধ্যমে যে উপদেশাবলী তাদের নিকট পৌঁছেছিল সেগুলোও তারা ভুলে বসেছিল। তারা আপনার উপাসনা ও তাওহীদ হতে সরে পড়েছিল। তারা এসব হতে ছিল সম্পূর্ণরূপে উদাসীন। তাই তারা ধ্বংসের গর্তে নিক্ষিপ্ত হয় এবং তাদের সর্বনাশ ঘটে। ( আরবি ) শব্দ দ্বারা ধ্বংসপ্রাপ্তই বুঝানো হয়েছে।অতঃপর আল্লাহ তা'আলা ঐ মুশরিকদেরকে বলবেনঃ এখন তোমাদের উপাস্যরা তো তোমাদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করছে। তোমরা তো তাদেরকে নিজের মনে করে এই বিশ্বাস রেখে তাদের উপাসনা শুরু করে দিয়েছিলে যে, তাদের মাধ্যমে তোমরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করবে। কিন্তু আজ তো তারা তোমাদেরকে ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে, তোমাদের থেকে পৃথক হচ্ছে এবং তোমাদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করছে। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ তার চেয়ে বড় পথভ্রষ্ট আর কে হতে পারে যে আল্লাহ ব্যতীত এমন মা’রূদকে আহবান করে যে কিয়ামতের দিন তার আহ্বানে সাড়া দেবে না? আর তারা তাদের আহ্বান হতে উদাসীন থাকবে । যখন মানুষকে একত্রিত করা হবে। তখন তারা ( উপাস্যরা ) তাদের ( উপাস্যদের ) শত্রু হয়ে যাবে এবং তাদের উপাসনাকে পরিষ্কারভাবে অস্বীকার করবে।” ( ৪৬: ৫-৬ ) সুতরাং কিয়ামতের দিন এই মুশরিকরা না নিজেদের থেকে আল্লাহর শাস্তি দূর করতে পারবে, না নিজেদেরকে সাহায্য করতে সক্ষম হবে, না কাউকেও নিজেদের সাহাযাকারীরূপে প্রাপ্ত হবে।মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ তোমাদের মধ্যে যে সীমালংঘন করবে আমি তাকে মহাশাস্তি আস্বাদন করাবো।
সূরা ফুরকান আয়াত 19 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- আর যারা কুফরের দিকে ধাবিত হচ্ছে তারা যেন তোমাদিগকে চিন্তাম্বিত করে না তোলে। তারা আল্লাহ
- আমি তাদের সামনে ও পিছনে প্রাচীর স্থাপন করেছি, অতঃপর তাদেরকে আবৃত করে দিয়েছি, ফলে তারা
- বলুনঃ ‘হে আহলে-কিতাবগণ! একটি বিষয়ের দিকে আস-যা আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সমান-যে, আমরা আল্লাহ
- যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং
- বরং তা আসবে তাদের উপর অতর্কিত ভাবে, অতঃপর তাদেরকে তা হতবুদ্ধি করে দেবে, তখন তারা
- বলে দিনঃ এই আমার পথ। আমি আল্লাহর দিকে বুঝে সুঝে দাওয়াত দেই আমি এবং আমার
- আপনি তো তাদেরকে সোজা পথে দাওয়াত দিচ্ছেন;
- আপনাকে তো তাই বলা হয়, যা বলা হত পূর্ববর্তী রসূলগনকে। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তার কাছে রয়েছে
- তারাই কাফের পাপিষ্ঠের দল।
- আর আল্লাহ তা’আলা শিখালেন আদমকে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীর নাম। তারপর সে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীকে ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ফুরকান ডাউনলোড করুন:
সূরা Furqan mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Furqan শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers