কোরান সূরা নাহল আয়াত 2 তাফসীর
﴿يُنَزِّلُ الْمَلَائِكَةَ بِالرُّوحِ مِنْ أَمْرِهِ عَلَىٰ مَن يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ أَنْ أَنذِرُوا أَنَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنَا فَاتَّقُونِ﴾
[ النحل: 2]
তিনি স্বীয় নির্দেশে বান্দাদের মধ্যে যার কাছে ইচ্ছা, নির্দেশসহ ফেরেশতাদেরকে এই মর্মে নাযিল করেন যে, হুশিয়ার করে দাও, আমি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। অতএব আমাকে ভয় কর। [সূরা নাহল: 2]
Surah An-Nahl in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Nahl ayat 2
তিনি ফিরিশ্তাদের পাঠান তাঁর নির্দেশে প্রেরণা দিয়ে তাঁর বান্দাদের মধ্যের যার উপরে তিনি ইচ্ছে করেন, এই বলে -- ''তোমরা সাবধান করে দাও যে আমি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই, সুতরাং আমাকেই ভয়ভক্তি করো।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
২. আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ফায়সালার ওহী নিয়ে তাঁর রাসূলদের মধ্যকার যাকে চান তাঁর নিকট ফিরিশতা নাযিল করেন। হে রাসূলগণ! আপনারা মানুষদেরকে আল্লাহর সাথে শিরক করা থেকে ভীতি প্রদর্শন করুন। কারণ, আমি ছাড়া সত্য কোন মা’বূদ নেই। তাই হে মানুষ! তোমরা আমার আদেশ-নিষেধ মেনে আমাকেই ভয় করো।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা[১] স্বীয় নির্দেশে অহী ( প্রত্যাদেশ )[২] সহ ফিরিশতা অবতীর্ণ করেন, এই মর্মে সতর্ক করবার জন্য যে, আমি ছাড়া কোন ( সত্য ) উপাস্য নেই; সুতরাং তোমরা আমাকে ভয় কর। [১] অর্থাৎ, নবী রসূলগণ, যাঁদের উপর অহী অবতীর্ণ হত। যেমন মহান আল্লাহ বলেন,{اللهُ أَعْلَمُ حَيْثُ يَجْعَلُ رِسَالَتَهُ} নবুঅতের দায়িত্ব কাকে দেবেন তা আল্লাহ ভালভাবেই জানেন। ( সূরা আনআম ৬:১২৪ ) {يُلْقِي الرُّوحَ مِنْ أَمْرِهِ عَلَى مَن يَشَاء مِنْ عِبَادِهِ لِيُنذِرَ يَوْمَ التَّلَاقِ} তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা অহী করেন স্বীয় আদেশসহ, যাতে সে সতর্ক করতে পারে কিয়ামত দিন সর্ম্পকে। ( সূরা মু'মিন ৪০:১৫ ) [২] এখানে الروح বলতে অহী ( প্রত্যাদেশ )। যেমন অন্যত্র বলা হয়েছে,{وَكَذَلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ رُوحًا مِّنْ أَمْرِنَا مَا كُنتَ تَدْرِي مَا الْكِتَابُ وَلَا الْإِيمَانُ} অর্থাৎ, এভাবে আমি নিজ নির্দেশে তোমার প্রতি অহী ( প্রত্যাদেশ ) করেছি রূহ। তুমি তো জানতে না গ্রন্থ কি, ঈমান ( বিশ্বাস ) কি। ( সূরা শূরা ৪২:৫২ )
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছে [ ১ ] স্বীয় নির্দেশে রূহ [ ২ ]- ওহীসহ ফিরিশতা- পাঠান এ বলে যে, তোমরা সতর্ক কর, ‘নিশ্চয় আমি ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই [ ৩ ]; কাজেই তোমরা আমার ব্যাপারে তাকওয়া অবলম্বন কর [ ৪ ]। [ ১ ] এখানে যার প্রতি ইচ্ছা বলে তাঁর নবী-রাসূলদের বুঝানো হয়েছে। [ ফাতহুল কাদীর ] [ এ ব্যাপারে আরো দেখা যেতে পারে সূরা আল-হাজ্জঃ৭৫, সূরা গাফেরঃ ১৫, ১৬ ] [ ২ ] আয়াতে ( روح ) শব্দ বলে ইবনে আব্বাসের মতে ওহী বুঝানো হয়েছে। যা নবুওয়াতের রূহ। এ রূহ বা প্রাণসত্তায় উজ্জীবিত হয়েই নবী কাজ করেন ও কথা বলেন। স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক জীবনে প্রাণের যে মর্যাদা এ ওহী ও নবুওয়াতী প্রাণসত্তা নৈতিক জীবনে সেই একই মর্যাদার অধিকারী। ওহী দ্বারা মুমিনদের প্রাণ উজ্জীবিত হয়। এ ওহীর একটি হচ্ছে কুরআন। দ্বীনে কুরআনের মর্যাদা যেমন শরীরের সাথে রূহের সম্পর্ক। [ ফাতহুল কাদীর ] তাই কুরআনের বিভিন্ন স্থানে ওহীর জন্য রূহ’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। [ দেখুনঃ সূরা আস-শূরাঃ ৫২ ] কোন কোন তাফসীরবিদগণের মতে রূহ শব্দ দ্বারা এখানে হেদায়াত বোঝানো হয়েছে। [ ফাতহুল কাদীর ] অবশ্য দু' অর্থের মধ্যে বৈপরীত্য নেই। [ ৩ ] এ আয়াতে ইতিহাসগত দলীল দ্বারা তাওহীদ প্রমাণিত হয়েছে যে, আদম 'আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে শেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত দুনিয়ার বিভিন্ন ভূখণ্ডে এবং বিভিন্ন সময়ে যে রাসূলই আগমন করেছেন তিনি জনসমক্ষে তাওহীদের বিশ্বাসই পেশ করেছেন। [ দেখুন সূরা আল-আম্বিয়াঃ ২৫ ] অথচ বাহ্যিক উপায়াদীর মাধ্যমে এক জনের অবস্থা ও শিক্ষা অন্যজনের মোটেই জানা ছিল না। চিন্তা করুন, হাজার হাজার নবী-রাসূল, যারা বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন দেশে এবং বিভিন্ন ভূখণ্ডে জন্মগ্রহণ করেছেন, তারা সবাই যখন একই বিষয়ের প্রবক্তা, তখন স্বভাবতঃই মানুষ একথা বুঝতে বাধ্য হয় যে, বিষয়টি ভ্রান্ত হতে পারে না। বিশ্বাস স্থাপনের জন্য এককভাবে এ যুক্তিটিই যথেষ্ট। [ ৪ ] এই বাক্যের মাধ্যমে এ সত্যটি সুস্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়েছে যে, নবুওয়াতের রূহ যেখানেই যে ব্যক্তির ওপর অবতীর্ন হয়েছে সেখানেই তিনি এ একটিই দাওয়াত নিয়ে এসেছেন যে সার্বভৌম কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারিত এবং একমাত্র তাঁকেই ভয় করতে হবে, তিনি একাই এর হকদার। তিনি ছাড়া আর দ্বিতীয় এমন কোন সত্তা নেই যার অসন্তুষ্টির ভয়, যার শাস্তির আশংকা এবং যার নাফরমানির অশুভ পরিণামের ভয় করা যাবে। তিনি ছাড়া আর কারো ইবাদত করা যাবে না।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
এখানে ( আরবি ) দ্বারা ওয়াহী উদ্দেশ্য। যেমন আল্লাহ তাআলার উক্তিঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ এভাবেই আমি তোমার প্রতি আমার হুকুমে ওয়াহী অবতীর্ণ করেছি, অথচ তোমার তো এটাও জানা ছিল না যে, কিতাব কি এবং ঈমানই বা কি? কিন্তু আমি ওটাকে নূর বানিয়েছি এবং এর দ্বারা আমি আমার বান্দাদের মধ্যে যাকে চাই পথ প্রদর্শন করে থাকি ।” ( ৪২:৫২ ) এখানে মহান আল্লাহ বলেনঃ “ আমি আমার বান্দাদের মধ্যে যাকে চাই নুবওয়াত দান করে থাকি । নুবওয়াতের যোগ্য ব্যক্তি কে-এর পূর্ণজ্ঞান আমারই রয়েছে। যেমন তিনি বলেনঃ “ আল্লাহ তাআলার ফেরেশতাদের মধ্য হতে এবং লোকদের মধ্য হতে রাসূলদেরকে মনোনীত করে থাকেন ।” আর এক জায়গায় তিনি বলেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা ওয়াহী প্রেরণ করেন স্বীয় আদেশসহ, যাতে সে সতর্ক করতে পারে কিয়ামত দিবস সম্পর্কে । যেদিন মানুষ বের হয়ে পড়বে সেদিন আল্লাহর কাছে তাদের কিছু গোপন থাকবে না; আজ কতৃত্ব কার? এক পরাক্রমশালী আল্লাহরই।” ( ৪০:১৫-১৬ ) এটা এ জন্যে যে, তিনি লোকদের মধ্যে আল্লাহর একত্ববাদ ঘোষণা করবেন, মুশরিকদেরকে ভয় দেখাবেন এবং জনগণকে বুঝাবেন যে, তারা যেন আল্লাহকেই ভয় করে।
সূরা নাহল আয়াত 2 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের রাজত্ব আল্লাহরই। যেদিন কেয়ামত সংঘটিত হবে, সেদিন মিথ্যাপন্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
- যদি তোমাদের সাথে তারা বের হত, তবে তোমাদের অনিষ্ট ছাড়া আর কিছু বৃদ্ধি করতো না,
- তারাই তো কুফরী করেছে এবং বাধা দিয়েছে তোমাদেরকে মসজিদে হারাম থেকে এবং অবস্থানরত কোরবানীর জন্তুদেরকে
- তারা কি দেখে না যে, এটা তাদের কোন কথার উত্তর দেয় না এবং তারে কোন
- অথবা আপনি যেমন বলে থাকেন, তেমনিভাবে আমাদের উপর আসমানকে খন্ড-বিখন্ড করে ফেলে দেবেন অথবা আল্লাহ
- তারা যেন আপনার কাছে প্রত্যেকটি দক্ষ জাদুকর কে উপস্থিত করে।
- তারপর আমি বনী ইসলাঈলকে বললামঃ এ দেশে তোমরা বসবাস কর। অতঃপর যখন পরকালের ওয়াদা বাস্তবায়িত
- আমি তাদেরকে নিজের নিদর্শনাবলী দিয়েছি। অতঃপর তারা এগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
- যারা স্বচ্ছলতায় ও অভাবের সময় ব্যয় করে, যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে আর মানুষের প্রতি
- এ সম্পর্কে তোমরা সন্দেহে পতিত ছিলে।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা নাহল ডাউনলোড করুন:
সূরা Nahl mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Nahl শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers