কোরান সূরা ক্বাসাস আয়াত 24 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Qasas ayat 24 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা ক্বাসাস আয়াত 24 আরবি পাঠে(Qasas).
  
   

﴿فَسَقَىٰ لَهُمَا ثُمَّ تَوَلَّىٰ إِلَى الظِّلِّ فَقَالَ رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ﴾
[ القصص: 24]

অতঃপর মূসা তাদের জন্তুদেরকে পানি পান করালেন। অতঃপর তিনি ছায়ার দিকে সরে গেলেন এবং বললেন, হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ নাযিল করবে, আমি তার মুখাপেক্ষী। [সূরা ক্বাসাস: 24]

Surah Al-Qasas in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Qasas ayat 24


সুতরাং তিনি তাদের দুজনের জন্য পানি খাওয়ালেন, তারপর ছায়ার দিকে ফিরে গেলেন আর বললেন -- ''আমার প্রভু! তুমি আমার প্রতি যে কোনো অনুগ্রহ পাঠাবে আমি তারই জন্যে ভিখারী হয়ে আছি।’’


Tafsir Mokhtasar Bangla


২৪. তাই তিনি দয়া করে তাদের ছাগলগুলোকে পানি পান করিয়ে ছায়ায় ফিরে এসে বিশ্রাম নিলেন। আর নিজ প্রতিপালককে প্রয়োজনের ইঙ্গিত দিয়ে ডেকে বললেন: হে আমার প্রতিপালক! নিশ্চয়ই আপনি আমার উপর যে কল্যাণই নাযিল করবেন আমি তার মুখাপেক্ষী।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


মূসা তখন ওদের পশুগুলিকে পানি পান করাল। তারপর সে ছায়ার নীচে আশ্রয় গ্রহণ করে বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমার প্রতি যে কল্যাণ অবতীর্ণ করবে, নিশ্চয় আমি তার মুখাপেক্ষী।’ [১] [১] মূসা ( আঃ ) এত দূর সফর করে মিসর থেকে মাদয়্যান পৌঁছলেন, খাওয়া ও পান করার মত সঙ্গে কিছু ছিল না। দীর্ঘ সফরের ফলে ক্ষুধার্ত ও ক্লান্ত-শ্রান্ত। সেই জন্য তাদের পশুগুলিকে পানি পান করানোর পর একটি গাছের ছায়ার আশ্রয় নিয়ে দু'আয় মগ্ন হলেন। خَير ( কল্যাণ ) শব্দটি অনেক অর্থে ব্যবহার হয়; যেমন, খাদ্য, কল্যাণময় কর্ম ও ইবাদত, শক্তি-সামর্থ্য এবং ধন-মাল ইত্যাদি। ( আয়সারুত তাফাসীর ) এখানে উক্ত শব্দটি খাদ্যের অর্থে ব্যবহার হয়েছে। অর্থাৎ, আমার এখন খাবারের প্রয়োজন।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


মুসা তখন তাদের পক্ষে জানোয়ারগুলোকে পানি পান করালেন। তারপর তিনি ছায়ার নীচে আশ্রয় গ্রহন করে বললেন, ‘হে আমার রব ! আপনি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ করবেন আমি তার কাঙ্গাল []।’ [] মূসা আলাইহিসসালাম বিদেশে অনাহারে কাটাচ্ছেন। তিনি এক গাছের ছায়ায় এসে আল্লাহ্‌ তা‘আলার সামনে নিজের অবস্থা ও অভাব পেশ করলেন। এটা দো‘আ করার একটি সূক্ষ পদ্ধতি। خير শব্দটির অর্থ কল্যাণ। এখানে তিনি আহার্য হতে শুরু করে যাবতীয় কল্যাণের জন্য আল্লাহ্‌ তা‘আলার মুখাপেক্ষী হলেন। [ কুরতুবী ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


২১-২৪ নং আয়াতের তাফসীর এই লোকটির মাধ্যমে হযরত মূসা ( আঃ ) যখন ফিরাউন ও তার লোকদের ষড়যন্ত্রের কথা অবহিত হন তখন তিনি অতি সন্তর্পণে একাকী সেখান থেকে পালিয়ে যান। ইতিপূর্বে তিনি রাজপুত্রদের মত জীবন যাপন করেছিলেন বলে এই সফর তাঁর কাছে খুবই কঠিন বোধ হয়। কিন্তু ভয় ও ত্রাসের কারণে তিনি এদিক ওদিক দেখছিলেন এবং সোজা পাড়ি দিচ্ছিলেন। আর তিনি আল্লাহ তাআলার নিকট প্রার্থনা করছিলেনঃ “ হে আমার প্রতিপালক! আমাকে আপনি ফিরাউনের ও তার লোকদের অনিষ্ট হতে রক্ষা করুন ।” বর্ণিত আছে যে, হযরত মূসা ( আঃ )-কে মিসরের পথ-প্রদর্শনের জন্যে আল্লাহ তা'আলা একজন ফেরেশতা পাঠিয়ে দেন যিনি ঘোড়ায় চড়ে তাঁর নিকট আগমন করেন এবং তাঁকে পথ-প্রদর্শন করেন। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী।অল্পক্ষণ পরেই তিনি বন-জঙ্গল ও মরুভূমি অতিক্রম করে মাদইয়ানের পথে পৌঁছে যান। এতে তিনি খুবই খুশী হন এবং বলে ওঠেনঃ “ আমি মহান আল্লাহর নিকট আশা রাখি যে, তিনি আমাকে সঠিক পথে চালিত করবেন । আল্লাহ তা'আলা তাঁর এ আশাও পূরণ করেন এবং তাঁকে শুধু দুনিয়া ও আখিরাতের সঠিক পথ-প্রদর্শন করেই ক্ষান্ত হলেন না, বরং তাকে অন্যদের জন্যে সঠিক পথ-প্রদর্শকও বানালেন। মাদইয়ানের পার্শ্ববর্তী কূপের নিকট এসে তিনি দেখলেন যে, রাখালরা কুপ হতে পানি উঠিয়ে তাদের জন্তুগুলোকে পান করাচ্ছে। তিনি এটাও দেখতে পেলেন যে, দু’টি মহিলা তাদের বকরীগুলোকে ঐ জন্তুগুলোর সাথে পানি পান করানো হতে বিরত রয়েছে। তিনি যখন এ অবস্থা অবলোকন করলেন যে, মহিলাদ্বয় নিজেরাও তাদের বকরীগুলোকে পানি পান করাতে পারছে না এবং ঐ রাখালরাও তাদের জানোয়ারগুলোর সাথে ঐ বকরীগুলোকে পানি পান করানোর কোন প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে না তখন তার মনে করুণার উদ্রেক হলো। তাই তিনি মহিলা দুটিকে জিজ্ঞেস করলেনঃ “ তোমরা তোমাদের এ বকরীগুলোকে পানি পান করানো হতে বিরত থাকছো কেন?” তারা উত্তরে বললোঃ “আমরা বকরীগুলোকে পানি পান করাতে পারি না যতক্ষণ না রাখালরা তাদের জানোয়াগুলোকে নিয়ে সরে যায় । আমাদের পিতা অতি বৃদ্ধ।” তাদের একথা শুনে তিনি নিজেই পানি উঠিয়ে তাদের বকরীগুলোকে পান করালেন।হযরত উমার ইবনে খাত্তাব ( রাঃ ) বলেন যে, রাখালরা একটি বিরাট পাথর দ্বারা ঐ কূপটির মুখ বন্ধ করে দিয়েছিল যা দশজন লোক মিলে সরাতে পারতো। অথচ হযরত মূসা ( আঃ ) একাকী ঐ পাথরটি সরিয়ে ফেলেন। তিনি মাত্র এক বালতি পানি উঠিয়েছিলেন যাতে মহান আল্লাহ বরকত দান করেছিলেন, ফলে ঐ মহিলাদ্বয়ের বকরীগুলো ঐ পানি পান করেই পরিতৃপ্ত হয়েছিল। অতঃপর হযরত মূসা ( আঃ ) ক্লান্ত শ্রান্ত এবং ক্ষুধার্ত অবস্থায় একটি গাছের ছায়ার নীচে বসে পড়েন। মিসর হতে মাদইয়ান পর্যন্ত তিনি দৌড়িয়ে পালিয়ে এসেছিলেন। তাই তাঁর পায়ে ফোসকা উঠে গিয়েছিল। খাওয়ার কোন দ্রব্য তাঁর সাথে ছিল না। গাছের পাতা, ঘাস ইত্যাদি তিনি ভক্ষণ করে আসছিলেন। পেট পিঠের সাথে লেগে গিয়েছিল। ঐ সময় তিনি আধখানা খেজুরেরও মুখাপেক্ষী ছিলেন। অথচ সেই সময় সমস্ত সৃষ্টজীবের মধ্যে তিনিই ছিলেন আল্লাহ তা'আলার নিকট সবচেয়ে প্রিয় ও মনোনীত বান্দা! হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) বলেনঃ “ দুই দিনের সফর শেষে আমি মাদইয়ানে পৌঁছি । আমি জনগণকে ঐ গাছের পরিচয় জানতে চাই যে গাছের ছায়ায় হযরত মূসা ( আঃ ) আশ্রয় নিয়েছিলেন। জনগণ আমাকে গাছটি দেখিয়ে দেয়। আমি দেখি যে, ওটা একটি সবুজ-শ্যামল বৃক্ষ। আমার আরোহণের পশুটি ক্ষুধার্ত ছিল। তাই সে ঐ গাছের পাতা মুখ দ্বারা ছিড়ে নেয় এবং অতি কষ্টে চিবাতে থাকে। কিন্তু শেষে সে পাতা মুখ হতে বের করে ফেলে। দেয়। আমি হযরত কালীমুল্লাহ ( আঃ )-এর দু'আ করে সেখান হতে ফিরে আসি।”অন্য একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) ঐ গাছটি দেখতে গিয়েছিলেন যেখান থেকে আল্লাহ তা'আলা হযরত মুসা ( আঃ )-এর সাথে কথা বলেছিলেন। এর বর্ণনা সত্ত্বরই আসবে ইনশাআল্লাহ!সুদ্দী ( রঃ ) বলেন যে, ওটা ছিল বাবলার গাছ। মোটকথা, হযরত মূসা ( আঃ ) ঐ গাছের ছায়ায় বসে আল্লাহ তা'আলার নিকট প্রার্থনা করেছিলেনঃ “ হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ করবেন আমি তার মুখাপেক্ষী । হযরত আতা ( রঃ ) বলেন যে, ঐ মহিলাটিও তাঁর এ প্রার্থনা শুনেছিল।

সূরা ক্বাসাস আয়াত 24 সূরা

فسقى لهما ثم تولى إلى الظل فقال رب إني لما أنـزلت إلي من خير فقير

سورة: القصص - آية: ( 24 )  - جزء: ( 20 )  -  صفحة: ( 388 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. আমি মানুষকে নেয়ামত দান করলে সে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং অহংকারে দুরে সরে যায়; যখন
  2. আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলে-হে পরওয়ারদেগার! আমাদিগকে দুনয়াতেও কল্যাণ দান কর এবং আখেরাতেও কল্যাণ
  3. আপনি কিছুকালের জন্যে তাদেরকে উপেক্ষা করুন।
  4. যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তারা পূর্বে যা ভক্ষণ করেছে, সে জন্য তাদের
  5. এবং আমরা সবাই সদা শংকিত।
  6. যখন ওদের সামনে আমার আয়তসমূহ পাঠ করা হয়, তখন ওরা দম্ভের সাথে এমনভাবে মুখ ফিরিয়ে
  7. খোদাভীরুরা থাকবে জান্নাতে ও নির্ঝরিণীতে।
  8. তুমি কি তাদেকে দেখনি, যারা নিজেদেরকে পূত-পবিত্র বলে থাকে অথচ পবিত্র করেন আল্লাহ যাকে ইচ্ছা
  9. তারা মুসলমান হয়ে আপনাকে ধন্য করেছে মনে করে। বলুন, তোমরা মুসলমান হয়ে আমাকে ধন্য করেছ
  10. আর তাদের চেয়ে বড় যালেম কে হতে পারে, যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করে। এসব লোককে

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ক্বাসাস ডাউনলোড করুন:

সূরা Qasas mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Qasas শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Tuesday, July 16, 2024

Please remember us in your sincere prayers