কোরান সূরা নিসা আয়াত 25 তাফসীর
﴿وَمَن لَّمْ يَسْتَطِعْ مِنكُمْ طَوْلًا أَن يَنكِحَ الْمُحْصَنَاتِ الْمُؤْمِنَاتِ فَمِن مَّا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُم مِّن فَتَيَاتِكُمُ الْمُؤْمِنَاتِ ۚ وَاللَّهُ أَعْلَمُ بِإِيمَانِكُم ۚ بَعْضُكُم مِّن بَعْضٍ ۚ فَانكِحُوهُنَّ بِإِذْنِ أَهْلِهِنَّ وَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ مُحْصَنَاتٍ غَيْرَ مُسَافِحَاتٍ وَلَا مُتَّخِذَاتِ أَخْدَانٍ ۚ فَإِذَا أُحْصِنَّ فَإِنْ أَتَيْنَ بِفَاحِشَةٍ فَعَلَيْهِنَّ نِصْفُ مَا عَلَى الْمُحْصَنَاتِ مِنَ الْعَذَابِ ۚ ذَٰلِكَ لِمَنْ خَشِيَ الْعَنَتَ مِنكُمْ ۚ وَأَن تَصْبِرُوا خَيْرٌ لَّكُمْ ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾
[ النساء: 25]
আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বাধীন মুসলমান নারীকে বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে না, সে তোমাদের অধিকারভুক্ত মুসলিম ক্রীতদাসীদেরকে বিয়ে করবে। আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে ভালোভাবে জ্ঞাত রয়েছেন। তোমরা পরস্পর এক, অতএব, তাদেরকে তাদের মালিকের অনুমতিক্রমে বিয়ে কর এবং নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর এমতাবস্থায় যে, তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে-ব্যভিচারিণী কিংবা উপ-পতি গ্রহণকারিণী হবে না। অতঃপর যখন তারা বিবাহ বন্ধনে এসে যায়, তখন যদি কোন অশ্লীল কাজ করে, তবে তাদেরকে স্বাধীন নারীদের অর্ধেক শাস্তি ভোগ করতে হবে। এ ব্যবস্থা তাদের জন্যে, তোমাদের মধ্যে যারা ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার ব্যাপারে ভয় করে। আর যদি সবর কর, তবে তা তোমাদের জন্যে উত্তম। আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। [সূরা নিসা: 25]
Surah An-Nisa in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Nisa ayat 25
আর তোমাদের মধ্যে যার আর্থিক সংগতি নেই যে বিশ্বাসিনী স্বাধীন নারীকে বিয়ে করতে পারে, সে তবে তোমাদের ডান হাতে ধরে রাখা বিশ্বাসিনী কুমারীদের মধ্য থেকে। আর আল্লাহ্ ভালো জানেন তোমাদের ধর্মবিশ্বাস সন্বন্ধে, তোমরা একে অন্য থেকে কাজেই তাদের বিয়ে করো তাদের মনিবের অনুমতি নিয়ে, আর তাদের মহরানা তাদের দাও সুষ্ঠুভাবে, -- বিবাহ-বন্ধনের মাধ্যমে, ব্যভিচারের জন্যে নয় আর রক্ষিতারূপে গ্রহণ করেও নয়। অতএব যখন তাদের বিবাহ-বন্ধনে আনা হয়, তারপর যদি তারা অশ্লীল আচরণ করে তবে তাদের জন্য হচ্ছে স্বাধীন নারীদের জন্যে নির্ধারিত শাস্তির অর্ধেক। এ হচ্ছে তোমাদের মধ্যে তার জন্য যে পাপে পড়ার ভয় করে। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধরো, তবে সেটি তোমাদের জন্য বেশী ভালো। আর আল্লাহ্ ত্রাণকর্তা, অফুরন্ত ফলদাতা।
Tafsir Mokhtasar Bangla
২৫. হে পুরুষরা! তোমাদের মধ্যকার কেউ সম্পদের স্বল্পতার দরুন স্বাধীন নারীদেরকে বিবাহ করতে সক্ষম না হলে তার জন্য জায়িয অন্যের মালিকানাধীন বাঁদীদেরকে বিবাহ করা। যদি তারা বাহ্য দৃষ্টিতে মু’মিনা বলে প্রমাণিত হয়ে থাকে। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের ঈমানের হাকীকত বা সঠিকতা এবং তোমাদের ভিতরগত অবস্থা সম্পর্কে সম্যক অবগত। মূলতঃ তোমরা ও তারা ধর্ম ও মনুষ্যত্বের বিবেচনায় এক সমান। তাই তোমরা তাদেরকে বিবাহ করতে কোন ধরনের অনীহা প্রকাশ করো না। তোমরা তাদের মালিকের অনুমতি সাপেক্ষে তাদেরকে বিবাহ করো এবং কোন ধরনের তালবাহানা ও কমতি ছাড়া তাদের মোহরানাগুলো তাদেরকে দিয়ে দাও। যদি তারা সতী এবং প্রকাশ্য ব্যভিচারিণী না হয়ে থাকে। উপরন্তু তারা লুকিয়ে ব্যভিচারের জন্য কোন ধরনের অন্তরঙ্গ বন্ধু গ্রহণ না করে থাকে। যদি তারা বিবাহের পর ব্যভিচারের অশ্লীলতায় লিপ্ত হয় তাহলে তাদের দÐবিধি হবে স্বাধীন মহিলাদের শাস্তির অর্ধেক। তথা পঞ্চাশ বেত্রাঘাত। তবে তাদেরকে পাথর মেরে হত্যা করা হবে না। যা স্বাধীন বিবাহিতা মহিলাদের ব্যভিচারের বিপরীত। উক্ত বিধান তথা সতী মু’মিনা বাঁদীদেরকে বিবাহ করা জায়িয হওয়া ওই ব্যক্তির জন্য ছাড় যে নিজের ব্যাপারে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কাকারী এবং স্বাধীন নারীদেরকে বিবাহে অক্ষম। তবে বান্দি বিবাহ করার ব্যাপারে ধৈর্য ধারণ করাই সর্বাধিক শ্রেয়। যাতে সন্তানদেরকে গোলামি থেকে রক্ষা করা যায়। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর তাওবাকারী বান্দাদের প্রতি ক্ষমাশীল ও দয়ালু। তাঁর দয়ার কারণেই তিনি স্বাধীন নারীদেরকে বিবাহ করতে অক্ষম হওয়া অবস্থায় ব্যভিচারের আশঙ্কায় বান্দিদেরকে বিবাহ করার বিধান চালু করেন।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
আর তোমাদের মধ্যে কারো স্বাধীনা বিশ্বাসী ( মুমিন ) নারীকে বিবাহ করার সামর্থ্য না থাকলে, তোমরা তোমাদের অধিকারভুক্ত বিশ্বাসী ( মুমিন ) যুবতী বিবাহ করবে। আর আল্লাহ তোমাদের বিশ্বাস ( ঈমান ) সম্বন্ধে খুব ভালোরূপে পরিজ্ঞাত। তোমরা একে অপরে সমান। সুতরাং তারা ( প্রকাশ্যে ) ব্যভিচারিণী অথবা ( গোপনে ) উপপতি গ্রহণকারিণী না হয়ে সচ্চরিত্রা হলে, তাদের মালিকের অনুমতিক্রমে তাদেরকে বিবাহ কর[১] এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে তাদেরকে তাদের মোহর প্রদান কর। অতঃপর বিবাহিতা হয়ে যদি তারা ব্যভিচার করে, তাহলে তাদের শাস্তি ( অবিবাহিতা ) স্বাধীন নারীর অর্ধেক।[২] এ ( দাসী-বিবাহের বিধান ) তাদের জন্য, যারা তোমাদের মধ্যে ( কষ্ট ও ) ব্যভিচারকে ভয় করে। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর, তাহলে তাতে তোমাদের মঙ্গল রয়েছে। আল্লাহ মহা ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। [৩] [১] এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ক্রীতদাসীদের মালিক বা মনিবই তাদের ওলী ও অভিভাবক। কাজেই মনিবের অনুমতি ব্যতীত তার বিবাহ হতে পারে না। অনুরূপ ক্রীতদাসও তার মালিকের অনুমতি ছাড়া কোথাও বিয়ে করতে পারে না। [২] অর্থাৎ, ক্রীতদাসীদেরকে ১০০ বেত্রাঘাতের পরিবর্তে ( অর্ধেক অর্থাৎ ) পঞ্চাশ চাবুক মারা হবে। অর্থাৎ, তাদের জন্য রজম ( প্রস্তরাঘাতে হত্যা ) করার শাস্তি নেই, কারণ তা অর্ধেক হয় না। আর অবিবাহিতা ক্রীতদাসীকে শিক্ষামূলক কিছু শাস্তি দেওয়া হবে। (বিস্তারিত জানার জন্য দ্রষ্টব্যঃ তাফসীরে ইবনে কাসীর ) [৩] অর্থাৎ, এই ক্রীতদাসীদেরকে বিবাহ করার অনুমতি কেবল তাদের জন্য রয়েছে, যারা নিজেদের যৌবনের যৌন উত্তেজনা আয়ত্তে রাখার শক্তি রাখে না এবং ব্যভিচারে লিপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করে। যদি এ রকম আশঙ্কা না থাকে, তাহলে সেই পর্যন্ত ধৈর্য ধরাই উত্তম, যে পর্যন্ত না স্বাধীন মহিলাকে বিবাহ করার সামর্থ্য লাভ হয়।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর তোমাদের মধ্যে কারো মুক্ত ঈমানদার নারী বিয়ের সামর্থ্য [ ১ ] না থাকলে তোমরা তোমাদের অধিকারভুক্ত ঈমানদার দাসী বিয়ে করবে [ ২ ]; আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে পরিজ্ঞাত। তোমরা একে অপরের সমান; কাজেই তোমরা তাদেরকে বিয়ে করবে তাদের মালিকের অনুমতিক্রমে [ ৩ ] এবং তাদেরকে তাদের মাহ্র ন্যায়সংগতভাবে দেবে। তারা হবে সচ্চরিত্রা, ব্যভিচারিণী নয় ও উপপতি গ্রহণকারিণীও নয়। অতঃপর বিবাহিতা হওয়ার পর যদি তারা ব্যভিচার করে তবে তাদের শাস্তি মুক্ত নারীর অর্ধেক [ ৪ ]; তোমাদের মধ্যে যারা ব্যভিচারকে ভয় করে এগুলো তাদের জন্য; আর ধৈর্য ধারণ করা তোমাদের জন্য মঙ্গল [ ৫ ]। আল্লাহ ক্ষমাপরায়ণ, পরম দয়ালু। [ ১ ] আয়াতের অর্থ এই যে, যার স্বাধীন নারীদেরকে বিয়ে করার শক্তি-সামর্থ্য নেই কিংবা প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র নেই, সে ঈমানদার দাসীদেরকে বিয়ে করতে পারে। এতে বোঝা গেল যে, যতটা সম্ভব স্বাধীন নারীকেই বিয়ে করা উচিত -দাসীকে বিয়ে না করাই বাঞ্ছনীয়। অগত্যা যদি দাসীকে বিয়ে করতেই হয়, তবে ঈমানদার দাসী খোঁজ করতে হবে। স্বাধীন ইয়াহুদী-নাসারা নারীদেরকে বিয়ে করা যদিও বৈধ, কিন্তু তা থেকে বেঁচে থাকা উত্তম। বর্তমান যুগে এর গুরুত্ব অত্যাধিক। কেননা, ইয়াহুদী ও নাসারা নারীরা আজকাল সাধারণতঃ স্বয়ং স্বামীকে ও স্বামীর সন্তানদেরকে স্বধর্মে আনার উদ্দেশ্যেই মুসলিশদেরকে বিয়ে করে। [ ২ ] এর দ্বারা বোঝা যায় যে, ঈমানদার নয় এমন দাসী বিয়ে করা জায়েয নেই। অন্য আয়াতেও বলা হয়েছে, “ আর কিতাবী মহিলাদের মধ্যে যারা মুহসিনা” [ সূরা আল-মায়িদাহ ৫ ] অর্থাৎ তাদেরকে বিয়ে করা হালাল করা হয়েছে । এখানে মুহসিনা বলে কোন কোন মুফাসসিরের মতে স্বাধীনা বোঝানো হয়েছে। সুতরাং কোন অবস্থাতেই কাফের দাসীদেরকে বিয়ে করা জায়েয নেই। যদিও তারা কিতাবী হয়। [ তাবারী; আদওয়াউল বায়ান ] [ ৩ ] রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন মহিলা অপর মহিলাকে বিয়ে দেবে না। অনুরূপভাবে কোন মহিলা নিজেকেও বিয়ে দেবে না। যে মহিলা নিজেকে নিজে বিয়ে দেয়, সে ব্যভিচারে লিপ্ত। [ ইবন মাজাহঃ ১৮৮২ ] অর্থাৎ বিয়ের ব্যাপারে অবশ্যই অভিভাবকদের অনুমতি নিতে হবে। [ ৪ ] মুক্ত নারীর শাস্তির কথা এখানে বলা হয় নি। অন্যত্র বলে দেয়া হয়েছে যে, ‘ব্যভিচারিনী মহিলা ও ব্যভিচার পুরুষের প্রত্যেককে একশত বেত্ৰাঘাত কর’ [ সূরা আন-নূর: ২ ] সে হিসেবে এ আয়াত দ্বারা বোঝা যায় যে, ব্যভিচারিনী দাসীর শাস্তি হবে পঞ্চাশ বেত্ৰাঘাত। কিন্তু ব্যভিচারী দাসের ব্যাপারটি ভিন্ন কোন আয়াতে আসে নি। তাই ব্যাভিচারিনী দাসীর শাস্তি যেভাবে অর্ধেক হয়েছে সেভাবে ব্যভিচারী দাসের ক্ষেত্রেও তেমনি অর্ধেক শাস্তি হবে; কারণ দাসত্বের দিক থেকে উভয়েই সমান। এটাও এক প্রকার কিয়াস। [ আদওয়াউল বায়ান ] তবে এটা জানা আবশ্যক যে, দাস-দাসীরা বিবাহিত হোক বা অবিবাহিত হোক তাদের কোন ‘রজম’ তথা প্রস্তারাঘাতে মৃত্যুদণ্ড বা দেশান্তর নেই। [ তাবারী ] [ ৫ ] অর্থাৎ দাসী বিয়ে করার চেয়ে ধৈর্যধারণ করা উত্তম। যাতে করে আল্লাহ্ তা’আলা যখন তাকে সামর্থ দিবে, তখন যেন স্বাধীন নারী বিয়ে করতে পারে। [ তাবারী; আততাফসীরুস সহীহ ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
যারা স্বাধীনা নারীদেরকে বিয়ে করার ক্ষমতা রাখে না এখানে তাদেরই বর্ণনা দেয়া হচ্ছে। হযরত রাবীআ ( রঃ ) বলেন যে, ( আরবী ) শব্দের ভাবার্থ হচ্ছে ইচ্ছে ও বাসনা। অর্থাৎ দাসীকে বিয়ে করবে যখন তার প্রতি বাসনা জাগবে।ইমাম ইবনে জারীর ( রঃ ) এ উক্তিটি এনেছেন, অতঃপর তিনি সেটা খণ্ডন করেছেন। ভাবার্থ এই যে, মুসলমানদের অবস্থা যখন এরূপ হবে তখন তাদের অধিকারে যে দাসীগুলো থাকবে তাদেরকে তারা বিয়ে করবে।সমস্ত কার্যের যথার্থতা আল্লাহ পাকের নিকটে প্রকাশমান। মানুষ তো শুধু বাহ্যিকটাই দেখে থাকে। আল্লাহ তা'আলা বলেন- “ হে মানবমণ্ডলী! তোমরা স্বাধীন ও দাস সবাই ঈমানী সম্পর্কের দিক দিয়ে একই । দাসীদেরকে তাদের মনিবদের অনুমতিক্রমে বিয়ে কর। জানা যাচ্ছে যে, দাসীদের অভিভাবক হচ্ছে তাদের মনিবগণ। তাদের অনুমতি ছাড়া দাসীদের বিবাহ সাধিত হয় না। অনুরূপভাবে দাসেরাও তাদের মনিবদের সম্মতি লাভ ছাড়া বিয়ে করতে পারে না।হাদীস শরীফে রয়েছেঃ ‘যে দাস তার মনিবের অনুমতি ছাড়াই বিয়ে করে সে ব্যভিচারী। তবে যদি কোন দাসীর অধিকারিণী কোন স্ত্রীলোক হয় তবে তার অনুমতিক্রমে ঐ দাসীর বিয়ে ঐ ব্যক্তি দিয়ে দেবে যে স্ত্রীলোকের বিয়ে দিতে পারে। কেননা, হাদীস শরীফে রয়েছেঃ নারী যেন নারীর বিয়ে না করায়, নারী যেন নিজের বিয়ে নিজে না দেয়, ঐ নারীরা ব্যভিচারিণী যারা নিজেরা নিজেদের বিয়ে দিয়ে থাকে।এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেন-“ স্ত্রীদের মোহর সন্তুষ্টচিত্তে দিয়ে দাও । তারা দাসী বলে তুচ্ছ জ্ঞান করতঃ নির্ধারিত মোহর হতে কিছুই কম করো না।' অতঃপর বলা হচ্ছে-‘তোমরা লক্ষ্য রাখ যে, নারীরা যেন নির্লজ্জতার কাজে আসক্তা না হয়, না তারা এমন হয় যে, কেউ যদি তাদের প্রতি আসক্ত হয় তবে তারাও তাদের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে, না তারা প্রকাশ্যে ব্যভিচারিণী হয়, না গোপনে গোপনে ব্যভিচার করে যে এদিকে ওদিকে গোপন বন্ধু খুঁজে বেড়ায়। যাদের মধ্যে এরূপ জঘন্য আচরণ রয়েছে তাদেরকে বিয়ে করতে আল্লাহ তা'আলা চরমভাবে নিষেধ করেছেন। উহসিন্না শব্দের দ্বিতীয় পঠন আহসান্নাও রয়েছে। বলা হয়েছে যে, দু'টোর অর্থ একই। এখানে ( আরবী ) শব্দের ভাবার্থ ইসলাম বা বিবাহিতা হওয়া।মুসনাদ-ই-আহমাদের একটি মারফু হাদীসে রয়েছে যে, তাদের হচ্ছে ইসলাম ও পবিত্রতা। কিন্তু এ হাদীসটি মুনকার এবং এতে দুর্বলতাও রয়েছে। একজন বর্ণনাকারীর নাম নেই। এরূপ হাদীস দলীলের যোগ্য নয়। দ্বিতীয় উক্তি এই যে, শব্দের ভাবার্থ হচ্ছে বিবাহ। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ), মুজাহিদ ( রাঃ ), ইকরামা ( রঃ ), তাউস ( রঃ ), ইবনে যুবাইর ( রঃ ), হাসান বসরী ( রঃ ), কাতাদাহ ( রঃ ) প্রমুখের এটাই উক্তি।হযরত আবু আলী তাবারী ( রঃ ) স্বীয় ‘ঈযাহ’ নামক গ্রন্থে হযরত ইমাম শাফিঈ ( রঃ ) হতে এটাই নকল করেছেন। হযরত মুজাহিদ ( রঃ ) বলেন, দাসীর ( আরবী ) হওয়ার অর্থ এই যে, সে কোন স্বাধীন ব্যক্তির সাথে বিবাহিতা হয়ে যায়। অনুরূপভাবে দাসের ( আরবী ) হওয়া এই যে, সে কোন স্বাধীনা মুসলিমা নারীর সাথে বিবাহিত হয়। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতেও এটা নকল করা হয়েছে। হযরত শা’বী ( রঃ ) ও হযরত নাখঈ ( রঃ ) একথাই বলেন। এটাও বলা হয়েছে যে, এ দু' পঠন হিসেবে অর্থ কখনও পরিবর্তিত হয়ে যায়। ‘উহসিন্না’ শব্দের ভাবার্থ হচ্ছে বিবাহ এবং আহসান্না’ শব্দের ভাবার্থ হচ্ছে ইসলাম। ইমাম ইবনে জারীর ( রঃ ) এটাই পছন্দ করেন। কিন্তু বাহ্যতঃ ভাবার্থ এখানে বিবাহই হবে। কেননা, আয়াতের পরবর্তী আলোচনা ওটাই প্রমাণ করছে। আইমানের বর্ণনা তো শব্দসমূহের মধ্যেই বিদ্যমান রয়েছে।"মোটকথা জমহুরের মাযহাব অনুযায়ী আয়াতটির অর্থে এখনও জটিলতা রয়েছে। কেননা, জমহূরের উক্তি এই যে, দাসীকে ব্যভিচারের কারণে ৫০ চাবুক মারতে হবে, সে মুসলমানই হোক আর অবিশ্বাসিনীই হোক, বিবাহিতাই হোক বা অবিবাহিতাই হোক। অথচ আয়াতের অর্থে বুঝা যাচ্ছে যে, অবিবাহিতা দাসীর উপর কোন হদ্দই নেই ( শাস্তিই নেই )। এর বিভিন্ন উত্তর দেয়া হয়েছে। জমহরের উক্তি এই যে, প্রকাশ্য অর্থ ভাবার্থের উপর অগ্রগণ্য হয়ে থাকে। এ জন্যে যে সাধারণ হাদীসগুলোর মধ্যে দাসীদের হদ্দ মারার বর্ণনা রয়েছে ঐগুলোকে আমরা এ আয়াতের ভাবার্থের উপর অগ্রগণ্য করেছি।সহীহ মুসলিমের হাদীসে রয়েছে যে, হযরত আলী ( রাঃ ) স্বীয় ভাষণে বলেন, ‘হে জনমণ্ডলী! নিজেদের দাসীদের উপর হদ্দ’ প্রতিষ্ঠিত কর, তারা বিবাহিতাই হোক আর অবিবাহিতাই হোক। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাকে তাঁর ব্যভিচারিণী দাসীকে ব্যভিচারের ‘হদ’ ( শাস্তি ) মারার নির্দেশ প্রদান করেন। সে সময় দাসীটি ‘নিফাসের অবস্থায় ছিল বলে আমার ভয় হয় যে, না জানি সে হদ্দের চাবুক মারার কারণে মরেই যায়। তাই আমি সে সময় তাকে শাস্তি না দিয়ে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিকট ঘটনাটি বর্ণনা করি। তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ ‘তুমি ভাল কাজই করেছ। সে ঠিক না হওয়া পর্যন্ত ‘হদ্দ’ লাগাবে না।মুসনাদ-ই-আহমাদে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছিলেনঃ “ সে নিফাস হতে মুক্ত হলে তাকে পঞ্চাশ কোড়া মারবে ।' হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ “ যখন তোমাদের মধ্যে কারও দাসী ব্যভিচার করে এবং তা প্রকাশ পেয়ে যায় তখন সে যেন তাকে হদ্দ মারে, কিন্তু যেন তাকে শাসন গর্জন না করে । দ্বিতীয়বার যদি ব্যভিচার করে তবে আবার যেন শাস্তি দেয়, কিন্তু এবারেও যেন শাসন গর্জন না করে। তৃতীয়বার যদি যিনা করে এবং তা প্রকাশ হয়ে পড়ে তবে যেন তাকে বিক্রি করে দেয়, যদিও চুলের রশির বিনিময়েও হয়।'সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে, যদি তৃতীয়বার তার দ্বারা এ কাজ হয় তবে চতুর্থবার যেন বিক্রি করে দেয়। আবদুল্লাহ ইবনে আইয়াশ ইবনে আবু রাবী আমাখযুমী ( রঃ ) বলেন, আমাদের কয়েকজন কুরাইশ যুবককে হযরত উমার ফারূক ( রাঃ ) রাষ্ট্রীয় দাসীদের কয়েক জনকে হদ্দ মারার নির্দেশ দেন। আমরা তাদেরকে ব্যভিচারের শাস্তি হিসেবে পঞ্চাশ চাবুক মারি। এটা তাদেরই দ্বিতীয় উত্তর যারা একথার দিকে গেছেন যে, অবিবাহিতা দাসীদের উপর কোন শাস্তি নেই। তারা বলেন যে, এ প্রহার শুধুমাত্র আদব দেয়ার জন্যে এবং এ কাজ হতে বিরত রাখার জন্যে। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) এ দিকেই গিয়েছেন। তাউস ( রঃ ), সাঈদ ( রঃ ), আবু উবায়েদ ( রঃ ) এবং দাউদ ইবনে আলী আযযাহেরীরও ( রঃ ) এটাই মাযহাব। তাদের বড় দলীল হচ্ছে আয়াতের ভাবার্থ এবং শর্তের ভাবার্থ এটাই। অধিকাংশের নিকট এটাই নির্ভরযোগ্য। এ জন্যেই এটা সাধারণের উপর অগ্রগণ্য হতে পারে। আর হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) ও হযরত যায়েদ ইবনে খালিদ ( রঃ )-এর হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) জিজ্ঞাসিত হন, যখন অবিবাহিতা দাসী ব্যভিচার করে তখন তার হুকুম কি?' তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ যদি সে ব্যভিচার করে তবে তাকে হদ্দ লাগাও, যদি পুনরায় ব্যভিচার করে তবে পুনরায় চাবুক মার, অতঃপর তাকে চুল দ্বারা পাকান রঞ্জুর বিনিময়ে হলেও বিক্রি করে দাও। হাদীসটির বর্ণনাকারী ইবনে শিহাব ( রঃ ) বলেন, “ আমি জানিনা যে, তৃতীয়বারের পর বলেছেন কি চতুর্থবারের পর বলেছেন । সুতরাং এ হাদীসটিকে অবলম্বন করে তারা উত্তর দেন, দেখুন এখানে হদ্দের পরিমাণ ও চাবুকের সংখ্যা বর্ণনা করা হয়নি। কিন্তু বিবাহিতার ব্যাপারে পরিষ্কার বর্ণনা দেয়া হয়েছে এবং কুরআন পাকের মধ্যে নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে যে, দাসীদের শাস্তি হচ্ছে স্বাধীনা নারীদের অর্ধেক। সুতরাং কুরআন কারীম ও হাদীস শরীফের মধ্যে এভাবে আনুকল্য করা ওয়াজিব হয়ে গেল। এ বিষয়ে আল্লাহ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।এর চেয়েও অধিকতর স্পষ্ট হচ্ছে ঐ হাদীসটি যা হযরত সাঈদ ইবনে মানসুর ( রঃ ) হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে নকল করেছেন। হাদীসটি এই যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ ‘কোন দাসীর উপর হদ্দ নেই যে পর্যন্ত না সে বিবাহিতা হয়। অতএব যখন সে বিবাহিতা হবে তখন তার উপর বিবাহিতা স্বাধীনা নারীর অর্ধেক হদ্দ হবে।' ইবনে খুযাইমাও ( রঃ ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি বলেন যে, হাদীসটিকে মার’ বলা ভুল, বরং এটা মাওকুফ হাদীস। অর্থাৎ এটা হযরত ইবনে আব্বাসেরই ( রাঃ ) উক্তি। বায়হাকী ( রঃ ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তাঁর ফায়সালাও এটাই। তিনি বলেন যে, হযরত উমার ( রাঃ ) ও আলী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত হাদীসগুলো একই ঘটনার মীমাংসা। আর হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত হাদীসটিরও কয়েকটি উত্তর রয়েছে। একতো এই যে, এটাকে উঠানো হয়েছে ঐ দাসীর উপর যে বিবাহিতা। এরূপে হাদীসদ্বয়ের মধ্যে আরও সাদৃশ্য একত্রিত হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় এই যে, এ হাদীসের ‘হদ্দ’ শব্দটি কোন বর্ণনাকারী ঢুকিয়ে দিয়েছে এবং তার দলীল হচ্ছে উত্তরের প্রতারণা। তৃতীয় এই যে, এ হাদীসটি হচ্ছে দু’জন সাহাবীর এবং ঐ হাদীসটি শুধু একজন সাহাবীর এবং দুই ও একের মধ্যে দুই-ই অগ্রগণ্য। এভাবেই এ হাদীসটি সুনান-ই-নাসাঈর মধ্যেও বর্ণিত হয়েছে এবং ওর সনদ সহীহ মুসলিমের শর্তের উপর রয়েছে যে, হযরত ইবাদ ইবনে তামীম ( রঃ ) তাঁর চাচা বদরী সাহাবী হতে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ 'যখন দাসী ব্যভিচার করে তখন তাকে চাবুক মার, আবার করে তো আবার মার, পুনরায় ব্যভিচার করলে পুনরায় চাবুক মার, অতঃপর চুল দ্বারা পাকান একটি রঞ্জুর বিনিময়ে হলেও তাকে বিক্রি করে দাও। চতুর্থ উত্তর এই যে, কোন বর্ণনাকারী যে ( আরবী )-এর উপর ( আরবী ) শব্দের প্রয়োগ করেছেন এতে কোন বৈচিত্র নেই এবং তিনি হয়তো ‘ জিদ’কে ‘হদ্দ’ ধারণা করে থাকবেন কিংবা হয় তো আদব দেয়ার উদ্দেশ্যে শাস্তি দেয়ার উপর হদ্দ শব্দের প্রয়োগ করেছেন। যেমন হদ্দ শব্দের প্রয়োগ ঐ শাস্তির উপরও করা হয়েছে যে রুগ্ন ব্যভিচারীকে একটি খেজুরের গুচ্ছ দ্বারা প্রহার করেছিল যে গুচ্ছে ছোট ছোট একশটি শাখা ছিল। আর যেমন ‘হদ্দ’ শব্দের প্রয়োগ ঐ ব্যক্তির উপরও করা হয়েছে যে স্বীয় স্ত্রীর ঐ দাসীর সঙ্গে ব্যভিচার করেছিল যে দাসীকে তার স্ত্রী তার জন্যে হালাল করেছিল। তবুও তাকে শুধুমাত্র শাসনমূলক শাস্তির জন্যে একশ চাবুক মারা হয়েছিল।এটা ইমাম আহমাদ ( রঃ ) প্রমুখ পূর্ববর্তী মনীষীর ধারণা। কিন্তু প্রকৃত ‘হদ্দ’ শুধু এই যে, অবিবাহিতকে একশ চাবুক মারা হবে এবং বিবাহিতকে প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা করা হবে। এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন। হযরত সাঈদ ইবনে যুবাইর ( রাঃ )-এর ঘোষণা এই যে, দাসীর যে পর্যন্ত বিয়ে হবে সে পর্যন্ত তাকে ব্যভিচারের জন্যে প্রহার করা হবে না। এর ইসনাদ বিশুদ্ধ বটে, কিন্তু এর দু’টো অর্থ হতে পারে। একতো এই যে, তাকে মোটেই প্রহার করা হবে না। হদ্দের’ও না, অন্য কোন শাস্তিরও না। এটা অর্থ হলে এ উক্তি সম্পূর্ণই গারীব। হতে পারে যে, তিনি শব্দের প্রতি লক্ষ্য করেই এ ফতওয়া দিয়েছেন এবং তাঁর নিকট হয়তো হাদীস পৌছেনি। দ্বিতীয় অর্থ এই যে, তাকে হদ্দ মারা হবে না। যদি এ অর্থ নেয়া হয় তবে এটা ওর উল্টো নয় যে, তাকে অন্য কোন শাস্তি দেয়া হবে। তাহলে এটা হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) প্রমুখ মনীষীর ফতওয়ার অনুরূপ হয়ে যাবে। এ সম্বন্ধে পূর্ণ জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ পাকেরই আছে।তৃতীয় উত্তর এই যে, বিবাহিতা দাসীর উপর স্বাধীনা নারীর তুলনায় অর্ধেক শাস্তি হওয়ার প্রমাণ আয়াতে কারীমায় রয়েছে। কিন্তু বিবাহিতা হওয়ার পূর্বে কিতাব ও সুন্নাতের সাধারণত্বের মধ্যে এও জড়িত রয়েছে যে তাকেও একশ চাবুক মারা হবে। যেমন আল্লাহ তা'আলা ঘোষণা করেন ( আরবী ) অর্থাৎ ব্যভিচারিণী নারী ও ব্যভিচারী পুরুষের প্রত্যেককে একশ চাবুক মার।' ( ২৪:২ )আর যেমন হযরত উবাদা ইবনে সামিত ( রাঃ )-এর হাদীসে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমরা আমার কথা গ্রহণ কর, আমার কথা বুঝে নাও, আল্লাহ তাদের জন্যে রাস্তা বের করে দিয়েছেন, যদি উভয়ই অবিবাহিত ও অবিবাহিতা হয় তবে একশ চাবুক ও এক বছর নির্বাসন । আর যদি দু'জনই বিবাহিত ও বিবাহিতা হয় তবে এক বছর নির্বাসন ও প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা করণ।এ হাদীসটি সহীহ মুসলিম শরীফেও রয়েছে এবং এ প্রকারের আরও হাদীস রয়েছে। হযরত দাউদ ইবনে আলী আযাহেরী ( রঃ )-এরও এটাই উক্তি। কিন্তু এটা অত্যন্ত দুর্বল। কেননা, আল্লাহ তা'আলা বিবাহিতা দাসীদেরকে স্বাধীনা নারীদের তুলনায় অর্ধেক চাবুক মারার বর্ণনা দিয়েছেন অর্থাৎ পঞ্চাশ চাবুক। তাহলে যদি সে বিবাহিতা না হয় তদুপরি তাকে তার চেয়েও অধিক চাবুক কিরূপে মারা যেতে পারে? অথচ শরীয়তের তো আইন এই যে, বিবাহের পূর্বে শাস্তি কম হবে এবং বিবাহের পর শাস্তি বেশী হবে। সুতরাং এর বিপরীত কিরূপে সঠিক হতে পারে?রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে তাঁর সাহাবীগণ অবিবাহিতা দাসীর ব্যভিচারের শাস্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছেন এবং তিনি উত্তর দিচ্ছেনঃ তাকে চাবুক মার। কিন্তু ‘একশ চাবুক মার’ একথা বলছেন না। সুতরাং যদি তার এ হুকুমই হতো, যেমন দাউদ ইবনে আলী আযহেরী ( রঃ ) বুঝেছেন, তবে সে হুকুম বর্ণনা করে দেয়া রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর ওয়াজিব হতো। কেননা, তাঁদের এ প্রশ্ন তো শুধু এজন্যেই ছিল যে, দাসী বিবাহিতা হয়ে যাওয়ার পর তাকে একশ চাবুক মারার বর্ণনা দেয়া হয়নি। নচেৎ এ শর্ত লাগানোর কি প্রয়োজন ছিল যে, তাঁরা বলছেন, যদি সে বিবাহিতা না হয়? কেননা, ঐরূপ হলে বিবাহিতা ও অবিবাহিতার মধ্যে কোন পার্থক্য থাকতো না যদি এ আয়াত অবতীর্ণ না হতো।কিন্তু যেহেতু এ দু’ অবস্থার মধ্যে একটি অবস্থা সম্বন্ধে তারা অবহিত হয়েই গিয়েছিলেন, এ জন্যেই দ্বিতীয় অবস্থা সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করেছিলেন এবং রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাদেরকে তা জানিয়ে দিয়েছিলেন। যেমন সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে, সাহাবীগণ যখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে তাঁর উপর দরূদ পাঠ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করেন তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তা বর্ণনা করেন।অতঃপর তিনি বলেনঃ ইসলাম তো এরকমই যেরকম তোমাদের জানা আছে। অন্য একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, যখন ( আরবী ) ( ৩৩ :৫৬ ) আল্লাহ তা'আলার এ ফরমান অবতীর্ণ হয় এবং রাসূলুল্লাহ ( সঃ )- এর উপর দরূদ ও সালাম পাঠাবার নির্দেশ দেয়া হয় তখন সাহাবীগণ বলেন, 'সালামের নিয়ম ও ওর শব্দগুলো তো আমাদের জানা আছে, আপনি সালাতের অবস্থা বর্ণনা করুন। সুতরাং এ প্রশ্নটিও ঠিক ঐ রকমই।আয়াতের মাফহুমের চতুর্থ উত্তর হচ্ছে আবু সাওরের উত্তর যা দাউদের উত্তর হতেও বেশী দুর্বল। তিনি বলেন, যখন দাসীরা বিবাহিতা হয়ে যাবে তখন তাদের ব্যভিচারের ‘হদ্দ’ হবে বিবাহিতা স্বাধীনা ব্যভিচারিণী নারীদের হদ্দের অর্ধেক। তাহলে এটাতো স্পষ্ট কথা যে, বিবাহিতা স্বাধীনা ব্যভিচারিণী নারীদের শাস্তি হচ্ছে প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা। আর এটাও স্পষ্ট কথা যে, এরূপ শাস্তির অর্ধেক করা যায় না। সুতরাং সে অবস্থায় দাসীদেরকেও হত্যা করতে হয় এবং বিবাহের পূর্বে পঞ্চাশ চাবুক মারতে হয়। কেননা, বিবাহের পূর্বে স্বাধীনা নারীদের একশ চাবুক মারার নির্দেশ রয়েছে।অতএব বুঝা যাচ্ছে যে, প্রকৃতপক্ষে ভাবার্থ বুঝতেই তিনি ভুল করেছেন। এটা জমহুরের মতেরও বিপরীত। এমন কি ইমাম শাফিঈ ( রঃ ) বলেন, কোন মুসলমানের এতে মতবিরোধ নেই যে, দাস দাসীর ব্যভিচারের শাস্তি ‘রজম’ অর্থাৎ পাথর মেরে হত্যা করা মোটেই নয়। কেননা, আয়াত এটা প্রমাণ করছে যে, তাদের উপর স্বাধীনা নারীদের তুলনায় অর্ধেক শাস্তি। ( আরবী ) শব্দে যে ( আরবী ) রয়েছে তা হচ্ছে -এর আলিফ লাম। অর্থাৎ সেই। -এর মধ্যে যাদের বর্ণনায় আয়াতের প্রারম্ভের ( আরবী )-এর মধ্যে হয়ে গেছে। এর ভাবার্থ শুধুমাত্র স্বাধীনা নারীগণ। এ সময় এখানে স্বাধীনা নারীদের বিবাহের মাসআলার আলোচনা নয় বরং আলোচনা হচ্ছে এই যে, ইরশাদ হচ্ছে- স্বাধীন নারীদের ব্যভিচারের যে শাস্তি ছিল, দাসীদের উপর তার অর্ধেক শাস্তি। তাহলে জানা গেল যে, এটা ঐ শাস্তির বর্ণনা, যা অর্ধেক হতে পারে এবং তা হচ্ছে চাবুক। যেমন একশর অধের্ক পঞ্চাশ। কিন্তু রজম’ এমন এক শাস্তি যার অংশ হতে পারে না। এ বিষয়ে আল্লাহ তা'আলা সবচেয়ে ভাল জানেন।মুসনাদ-ই-আহমাদে একটি ঘটনা রয়েছে, যা আবু সাউরের মাযহাবের পূর্ণ খণ্ডনকারী। ঘটনাটি এই যে, সুফিয়া নাম্নী একটি দাসী একজন দাসের সঙ্গে ব্যভিচার করে এবং ঐ ব্যভিচারের ফলেই একটি শিশুর জন্ম হয়। ব্যভিচারী দাসটি শিশুটির দাবী করে। মুকাদ্দমাটি হযরত উসমান ( রাঃ )-এর নিকট নিয়ে যাওয়া হয়। হযরত উসমান ( রাঃ ) হযরত আলী ( রাঃ )-এর উপর এর মীমাংসার ভার অর্পণ করেন। হযরত আলী ( রাঃ ) বলেন, রাসূলল্লাহ ( সঃ ) স্বয়ং এ ব্যাপারে যে মীমাংসা করেছেন আমিও সে মীমাংসাই করবো। শিশুটি হবে দাসীর মনিবের এবং ব্যভিচারীর জন্যে পাথর রয়েছে। অতঃপর উভয়কে পঞ্চাশ পঞ্চাশ করে চাবুক মারেন।এও বলা হয়েছে যে, মাফহুম'-এর উদ্দেশ্য হচ্ছে উপর হতে নীচের উপর সতর্কতা। অর্থাৎ যখন সে বিবাহিতা হবে তখন তার হদ্দ’ হবে স্বাধীনা নারীদের তুলনায় অর্ধেক। অতএব, তাদের উপর রজম’ তো কোন অবস্থাতেই নেই। বিয়ের পূর্বেও নেই, পরেও নেই। উভয় অবস্থাতেই শুধু চাবুকই রয়েছে। এর দলীল হচ্ছে হাদীস। ইফসাহ’ নামক গ্রন্থের লেখক এ কথাই বলেন। ইবনে আবদিল হাকাম ( রঃ ) ইমাম শাফিঈ ( রঃ ) হতেও এটা বর্ণনা করেছেন। ইমাম বায়হকী স্বীয় পুস্তক কিতাবুস সুনানে ওয়াল আ'সারের মধ্যে এটা এনেছেন। কিন্তু এ উক্তিটি আয়াতের শব্দ হতে বহু দূরে রয়েছে। কেননা, অর্ধেক। শাস্তি হবার দলীল শুধু কুরআন কারীমের আয়াত, অন্য কিছুই নয়। সুতরাং ওটা ছাড়া অন্য কিছুর অর্ধেক হওয়া কিরূপে বুঝা যাবে? এটাও বলা হয়েছে যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে বিবাহিতা হওয়া অ ইমামই ‘হদ্দ’ কায়েম করতে পারেন, ঐ অবস্থায় ঐ দাসীর মনিব তার উপর ‘হদ্দ’ জারী করতে পারে না। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বলের মাযহাবে একটি উক্তি এটাই। তবে বিয়ের পূর্বে দাসীর মনিবের ঐ অবস্থায় তার উপর হদ্দ’ জারী করার অধিকার রয়েছে এমন কি তার উপর নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু উভয় অবস্থাতেই ‘হদ্দ’ অর্ধেকই থাকবে। এটাও কিন্তু বহু দূরের কথা। কেননা, আয়াতের মধ্যে এরও প্রমাণ নেই। যদি এ আয়াতটি না হতো তবে আমরা জানতে পারতাম না যে, দাসীদের ব্যাপারে অর্ধেক শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে এবং সে অবস্থায় তাদেরকেও সাধারণেই অন্তর্ভুক্ত করে পূর্ণ হদ্দ অর্থাৎ একশ চাবুক এবং প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যার হুকুম তাদের উপরও জারী করা ওয়াজিব হতো। যেমন সাধারণ বর্ণনা দ্বারা এটা সাব্যস্ত রয়েছে। হযরত আলী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, “ হে জনগণ! তোমাদের অধীনস্থা দাসীদের উপর হদ্দ’ জারী কর । বিবাহিতাই হোক আর অবিবাহিতাই হোক। তাছাড়া পূর্ব বর্ণিত অন্যান্য সাধারণ হাদীসগুলোর মধ্যেও স্বামীবিশিষ্টা বা স্বামীহীনার কোন ব্যাখ্যা নেই। হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত যে হাদীসটিকে জমহুর দলীলরূপে গ্রহণ করেছেন তা এই যে, যখন তোমাদের কারও দাসী ব্যভিচার করে, অতঃপর তার ব্যভিচার প্রকাশিত হয় তখন তার উপর হদ্দ’ জারী করা তার উচিত এবং পরে শাসন গর্জন করা উচিত নয়।মোটকথা, দাসীর ব্যভিচারের শাস্তির ব্যাপারে কয়েকটি উক্তি রয়েছে। প্রথমতঃ এই যে, তার বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তাকে পঞ্চাশ চাবুক মারতে হবে এবং বিয়ে হওয়ার পরেও এ শাস্তিই থাকবে। কিন্তু তাকে নির্বাসন দেয়া হবে কি-না সে ব্যাপারে তিনটি উক্তি রয়েছে। প্রথম উক্তি এই যে, তাকে নির্বাসন দেয়া হবে। দ্বিতীয় এই যে, তাকে নির্বাসন দেয়া হবে না। তৃতীয় উক্তি এই যে, তার নির্বাসন অর্ধসমাপ্ত রাখা হবে। অর্থাৎ ছ'মাসের নির্বাসন হবে, পূর্ণ এক বছরের নয়। পূর্ণ এক বছর নির্বাসন হলো স্বাধীনা নারীদের জন্যে। এ তিনটি উক্তিই ইমাম শাফিঈর মাযহাবেরই অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু আবু হানীফা ( রঃ )-এর মতে নির্বাসন শুধুমাত্র শাসনমূলক শাস্তি, ‘হদ্দ’ হিসেবে নয়। এটা ইমামের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে। তিনি নির্বাসন দিতেও পারেন, নাও দিতে পারেন। পুরুষ ও নারী উভয়ই এ হুকুমেরই অন্তর্গত। তবে ইমাম মালিকের মাযহাব এই যে, নির্বাসন শুধু পুরুষদের জন্যে, নারীদের জন্যে নয়। কেননা, নির্বাসন তো শুধু তার নিরাপত্তার জন্যে এবং নারীদেরকে যদি নির্বাসন দেয়া হয় তবে নিরাপত্তা হতে বেরিয়ে যাবে। নর ও নারীদেরকে দেশান্তর করা সম্বন্ধীয় হাদীস শুধুমাত্র হযরত উবাদাহ ইবনে সাবিত ( রাঃ ) এবং হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতেই বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) অবিবাহিতা ব্যভিচারীর ব্যাপারে ‘হদ্দ’ মারার এবং এক বছর দেশান্তর করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ( সহীহ বুখারী ) এর ভেতরে উদ্দেশ্যে এটাই ছিল যে, এতে তার নিরাপত্তা থাকবে, কিন্তু নারীকে দেশান্তর করাতে কোন নিরাপত্তা নেই। এ বিষয়ে আল্লাহ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।দ্বিতীয় উক্তি এই যে, অবিবাহিতা দাসীকে ব্যভিচারের কারণে পঞ্চাশ চাবুক মারতে হবে এবং তাকে আদব দেয়ার উদ্দেশ্যে কিছু মারপিট করতে হবে। কিন্তু তার জন্যে কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই। পূর্বে বর্ণিত হয়েছে যে, বিবাহের পূর্বে তাকে মারা হবে না, যেমন হযরত সাঈদ ইবনে মুসাইয়াব ( রঃ )-এর উক্তি। কিন্তু যদি তার ভাবার্থ এই হয় যে, তাকে মোটেই না মারা উচিত তবে এটা জটিল ব্যাখ্যাযুক্ত মাযহাব হবে। নচেৎ তাকে দ্বিতীয় উক্তির অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। সে উক্তিটি এই যে, বিবাহের পূর্বে একশ চাবুক এবং বিবাহের পর পঞ্চাশ চাবুক। যেমন দাউদ ইবনে আলী আযযাহেরীর উক্তি এবং এটাই হচ্ছে সমস্ত উক্তির মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল উক্তি এবং এটাও দ্রুপ যে, বিয়ের পূর্বে পঞ্চাশ চাবুক ও বিয়ের পর ‘রজম’। যেমন আবু সাউরের উক্তি। সঠিক কথা আল্লাহ পাকই সবচেয়ে বেশী জানেন।এরপরে বলা হচ্ছে-‘উপরোক্ত শর্তগুলোর বিদ্যমানতায় দাসীদেরকে বিয়ে করার অনুমতি দেয়া হলো ঐ লোকদেরকে যাদের ব্যভিচারে পতিত হয়ে যাবারও ভয় রয়েছে এবং স্ত্রী মিলনের উপর ধৈর্যধারণ কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তাদের জন্যে অবশ্যই পবিত্র দাসীদের সাথে বিবাহ বৈধ।' সে সময়েও কিন্তু ধৈর্যধারণ করতঃ দাসীদেরকে বিয়ে না করাই উত্তম। কেননা, তাদের গর্ভে যেসব সন্তান জন্মগ্রহণ করবে তারা তাদের মনিবের দাসী বা দাস হবে। হ্যা, তবে যদি তাদের স্বামী দরিদ্র হয় তবে ইমাম শাফিঈ ( রঃ )-এর প্রাচীন উক্তি অনুযায়ী এ সন্তানগুলোর অধিকারী তাদের মনিব হবে না।অতঃপর আল্লাহ তা'আলা বলেন- যদি তোমরা ধৈর্যধারণ কর তবে এটা তোমাদের জন্যে উত্তম এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। জমহর উলামা এ আয়াত। দ্বারা দলীল গ্রহণ করেছেন যে, দাসীর সঙ্গে বিবাহ বৈধ। তবে এটা অবশ্যই বৈধ। সে সময় যে সময় স্বাধীনা নারীদেরকে বিয়ে করার ক্ষমতা না থাকবে এবং স্বীয় প্রবৃত্তিকে দমন করারও শক্তি থাকবে না। বরং ব্যভিচারে পতিত হয়ে যাবারও ভয় থাকবে। কেননা, এতে একটি অসুবিধা এই রয়েছে যে, এর ফলে সন্তানেরা দাসত্বে আবদ্ধ হয় এবং স্বাধীনা নারীদেরকে ছেড়ে দিয়ে দাসীদেরকে বিয়ে করায় এক প্রকারের মানহানির কারণ হয়। তবে ইমাম আবু হানীফা ( রঃ ) ও তাঁর সহচরগণ জমহরের বিপরীত মতপোষণ করেন। তারা বলেন যে, এ দু'টো শর্ত নেই বরং যার বিয়েতে কোন স্বাধীনা নারী নেই তার জন্যে দাসীকে বিয়ে করা বৈধ। ঐ দাসী মুসলমানই হোক বা আহলে কিতাবই হোক, যদিও তার আযাদ নারীকে বিয়ে করার ক্ষমতাও থাকে এবং যদিও তার নির্লজ্জতার কাজে পতিত হওয়ার ভয়ও না থাকে। এর বড় দলীল হচ্ছে নিম্নের আয়াতটিঃ ( আরবী ) অর্থাৎ এবং তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের পবিত্র ও পরহেজগার নারীদেরকে ( বিয়ে কর )।' তারা বলেন যে, আয়াতটি সাধারণ। এর মধ্যে স্বাধীন ও দাসী সবাই জড়িত রয়েছে। ( আরবী ) বলা হয় পবিত্র ও পরহেযগার মহিলাদেরকে। কিন্তু এর বাহ্যিক লক্ষণও ঐ মাসআলার উপরই রয়েছে যা জমহরের মাযহাব। এ বিষয়ে আল্লাহ পাকই সবচেয়ে ভাল জানেন।
সূরা নিসা আয়াত 25 সূরা
ومن لم يستطع منكم طولا أن ينكح المحصنات المؤمنات فمن ما ملكت أيمانكم من فتياتكم المؤمنات والله أعلم بإيمانكم بعضكم من بعض فانكحوهن بإذن أهلهن وآتوهن أجورهن بالمعروف محصنات غير مسافحات ولا متخذات أخدان فإذا أحصن فإن أتين بفاحشة فعليهن نصف ما على المحصنات من العذاب ذلك لمن خشي العنت منكم وأن تصبروا خير لكم والله غفور رحيم
سورة: النساء - آية: ( 25 ) - جزء: ( 5 ) - صفحة: ( 82 )English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- অতঃপর আমি বললামঃ হে আদম, এ তোমার ও তোমার স্ত্রীর শত্রু, সুতরাং সে যেন বের
- আর যখন আমি মূসার সাথে ওয়াদা করেছি চল্লিশ রাত্রির অতঃপর তোমরা গোবৎস বানিয়ে নিয়েছ মূসার
- আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক। আর তাদেরকে
- যখন সব কাজের ফায়সলা হয়ে যাবে, তখন শয়তান বলবেঃ নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে সত্য ওয়াদা দিয়েছিলেন
- অতঃপর তাঁরা আমার বান্দাদের মধ্যে এমন একজনের সাক্ষাত পেলেন, যাকে আমি আমার পক্ষ থেকে রহমত
- যখন তিনি তার পিতাকে বললেনঃ হে আমার পিতা, যে শোনে না, দেখে না এবং তোমার
- আর যারা ঈমান এনেছে পরবর্তী পর্যায়ে এবং ঘর-বাড়ী ছেড়েছে এবং তোমাদের সাথে সম্মিলিত হয়ে জেহাদ
- আমি মূসা ও হারুণকে দান করেছিলাম মীমাংসাকারী গ্রন্থ, আলো ও উপদেশ, আল্লাহ ভীরুদের জন্যে
- আমি আশা করি তিনিই বিচারের দিনে আমার ক্রটি-বিচ্যুতি মাফ করবেন।
- তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে ধরবেন না, কিন্তু সেসব কসমের ব্যাপারে ধরবেন, তোমাদের মন
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা নিসা ডাউনলোড করুন:
সূরা Nisa mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Nisa শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers