কোরান সূরা শুআরা আয়াত 28 তাফসীর
﴿قَالَ رَبُّ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَمَا بَيْنَهُمَا ۖ إِن كُنتُمْ تَعْقِلُونَ﴾
[ الشعراء: 28]
মূসা বলল, তিনি পূর্ব, পশ্চিম ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর পালনকর্তা, যদি তোমরা বোঝ। [সূরা শুআরা: 28]
Surah Ash-Shuara in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Shuara ayat 28
তিনি বললেন -- ''তিনি পূর্ব ও পশ্চিমের এবং এ দুইয়ের মধ্যে যা আছে তারও প্রভু, যদি তোমরা বুঝতে পারতে।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
২৮. মূসা ( আলাইহিস-সালাম ) বললেন: যে আল্লাহর দিকে আমি তোমাদেরকে ডাকছি তিনি পূর্ব, পশ্চিম ও এতদুভয়ে মধ্যকার সবকিছুর মালিক। তোমাদের যদি কোন বুদ্ধি-বিবেক থাকে তাহলে তোমরা তা বুঝতে পারবে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
মূসা বলল, ‘তিনি পূর্ব ও পশ্চিমের এবং ওদের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছুর প্রতিপালক; [১] যদি তোমরা বুঝে থাক।’ [১] যিনি পূর্বকে পূর্ব বানিয়েছেন, যেদিকে নক্ষত্রমালা উদিত হয় ও পশ্চিমকে পশ্চিম বানিয়েছেন যেদিকে নক্ষত্রমালা অস্ত যায়। অনুরূপ এই দুয়ের মধ্যবর্তী যা কিছু আছে সে সমস্তর প্রভু ও তাদের ব্যবস্থাপক তিনিই।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
মূসা বললেন, ‘তিনি পূর্ব ও পশ্চিমের এবং তাদের মধ্যবর্তী সব কিছুর রব; যদি তোমরা বুঝে থাক!’
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
২৩-২৮ নং আয়াতের তাফসীর ফিরাউন তার প্রজাবর্গকে বিভ্রান্ত করে রেখেছিল এবং তাদের অন্তরে এই বিশ্বাস জন্মিয়ে দিয়েছিল যে, পূজনীয় ও প্রতিপালক শুধু সেই, সে ছাড়া আর কেউই নয়। ফলে তাদের সবারই বিশ্বাস এটাই ছিল। হযরত মূসা ( আঃ ) যখন বললেন যে, তিনি জগতসমূহের প্রতিপালকের রাসূল তখন সে বললোঃ “ জগতসমূহের প্রতিপালক আবার কি?” তার উদ্দেশ্য ছিল এটাই যে, সে ছাড়া তো কোন প্রতিপালকই নেই । সুতরাং মূসা ( আঃ ) ভুল বলছেন। যেমন অন্য আয়াতে রয়েছেঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ হে মূসা ( আঃ )! তোমাদের দু'জনের প্রতিপালক কে?” ( ২০:৪৯ ) উত্তরে হযরত মূসা ( আঃ ) বললেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “আমাদের প্রতিপালক তিনি যিনি প্রত্যেক বস্তুকে তার যোগ্য আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর পথ-নির্দেশ করেছেন ।” ( ২০: ৫০ ) এখানে এটা স্মরণ রাখার বিষয় যে, কোন কোন তর্কশাস্ত্রবিদ এখানে হোঁচট খেয়েছেন। তারা বলেছেন যে, ফিরাউনের প্রশ্ন ছিল আল্লাহ তা'আলার মূল বা প্রকৃতি সম্পর্কে। কিন্তু এটা তাদের ভুল ধারণা। কেননা, মূল সম্পর্কে সে তখনই প্রশ্ন করতে যখন আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাসী হতো। সে তো আল্লাহর অস্তিত্বকেই বিশ্বাস করতো না। সে তার ঐ বিশ্বাসকেই প্রকাশ করতো এবং প্রত্যেককে এই বিশ্বাসই ঢোকের ঢাকে পান করাতো যদিও ওর বিপরীত দলীল প্রমাণাদি তার সামনে খুলে গিয়েছিল। তাই সে যখন প্রশ্ন করলো যে, রাব্বল আলামীন কে? তখন তিনি উত্তর দেন যে, যিনি সবারই সৃষ্টিকর্তা, সবারই মালিক এবং যিনি সব কিছুর উপরই সক্ষম তিনিই রাব্বল আলামীন। তিনি একাই পূজনীয়, তিনি এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোন অংশীদার নেই। ঊর্ধ্বজগত আকাশ এবং ওর সৃষ্টজীব ও সৃষ্টবস্তু নিম্নজগত পৃথিবী এবং ওর সৃষ্টজীব ও সৃষ্টবস্তু সবারই তিনি সৃষ্টিকর্তা। এতদুভয়ের মধ্যস্থিত জিনিস, যেমন বাতাস, পাখী ইত্যাদি সবই তাঁর সামনে নত এবং তাঁর ইবাদতে লিপ্ত। তিনি বলেনঃ “ হে ফিরাউন! তোমার অন্তর যদি বিশ্বাসরূপ সম্পদ হতে শূন্য না হতো এবং তোমার চক্ষু যদি উজ্জ্বল হতো তবে তাঁর এসব বিশেষণ তার সত্তাকে মানবার পক্ষে যথেষ্ট হতো ।” হযরত মূসা ( আঃ )-এর এ কথাগুলো শুনে ফিরাউন কোন উত্তর দিতে না পেরে কথাগুলোকে হাসি-তামাশা করে উড়িয়ে দেয়ার জন্যে তার বিশ্বাসে বিশ্বাসী লোকদেরকে লক্ষ্য করে বললোঃ “ দেখো, এ লোকটি আমাকে ছাড়া অন্যকে মা'বূদ বলে বিশ্বাস করছে, এটা বড়ই বিস্ময়কর ব্যাপারই বটে!” হযরত মূসা ( আঃ ) তার এ মনোযোগিতায় হতবুদ্ধি হলেন না, বরং তিনি আল্লাহর অস্তিত্বের আরো দলীল ঘমাণ বর্ণনা করতে শুরু করলেন । তিনি বললেনঃ “ তিনিই তোমাদের সবারই এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদের মালিক ও প্রতিপালক । তিনি ফিরাউনের লোকদেরকে বললেনঃ “ তোমরা যদি ফিরাউনকে খোদা বলে স্বীকার করে নাও তবে একটু চিন্তা করে দেখো তো যে, ফিরাউনের পূর্বে জগতবাসীর খোদা কে ছিল? তার অস্তিত্বের পূর্বে তো আসমান ও যমীনের অস্তিত্ব ছিল, তাহলে এগুলোর আবিষ্কারক কে ছিল? সুতরাং আল্লাহই আমার প্রতিপালক, তিনিই সারা আগতের প্রতিপালক । আমি তারই প্রেরিত রাসূল।”ফিরাউন হযরত মূসা ( আঃ )-এর কথাগুলোর কোন উত্তর খুঁজে পেলো না। তাই সে মুখ না পেয়ে তার লোকদেরকে বললোঃ “ তোমাদের প্রতি প্রেরিত তোমাদের এ রাসূলটি তো নিশ্চয়ই পাগল । তা না হলে আমাকে ছাড়া অন্যকে কেন সে প্রতিপালক বলে স্বীকার করবে?' হযরত মূসা ( আঃ ) এর পরেও তাঁর দলীল বর্ণনার কাজ চালিয়ে গেলেন। তার বাজে কথায় কর্ণপাত না করে তিনি বললেনঃ “ আল্লাহ পূর্ব ও পশ্চিমের এবং এ দুয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুরই প্রতিপালক । হে ফিরাউনের লোকেরা। ফিরাউন যদি তার খোদায়ী দাবীতে সত্যবাদী হয় তবে এর বিপরীত দেখিয়ে দিক। অর্থাৎ আল্লাহ পূর্বকে পূর্ব করেছেন এবং সেখান থেকে নক্ষত্রগুলো উদিত হয়। আর পশ্চিমকে তিনি পশ্চিম করেছেন এবং সেখানে তারকারাজি অস্তমিত হয়। সুতরাং ফিরাউন এগুলোর প্রতিপালক হলে সে এর বিপরীত করে দেখাক।” একথাই আল্লাহর খলীল হযরত ইবরাহীম ( আঃ ) তাঁর সময়ের বাদশাহকে তর্কে বলেছিলেন। প্রথমে তো তিনি আল্লাহর বিশেষণ বর্ণনা করেছিলেন যে, তিনি জীবিত রাখেন ও মৃত্যু দান করে থাকেন। কিন্তু ঐ নির্বোধ যখন ঐ বিশেষণকে আল্লাহর সাথে বিশিষ্ট করতে অস্বীকার করে এবং বলেঃ এ কাজ তো আমিও করতে পারি?' তখন তিনি ওর চেয়েও সুস্পষ্টতর দলীল তার সামনে পেশ করে বললেনঃ “ আচ্ছা, আমার প্রতিপালক সূর্য পূর্ব দিক হতে উদিত করেন, তুমি ওটা পশ্চিম দিক হতে উদিত কর দেখি?” হযরত ইবরাহীম ( আঃ )-এর এ কথা শুনে ঐ নির্বোধ বাদশাহ হতবাক হয়ে যায় । অনুরূপভাবে হযরত মূসা ( আঃ )-এর মুখে ক্রমান্বয়ে এরূপ সুস্পষ্ট ও উজ্জ্বল দলীল শুনে ফিরাউনের আক্কেল গুড়ুম হয়ে যায়। সে বুঝতে পারে যে, তার মত একটি লোক যদি হযরত মূসা ( আঃ )-কে না মানে তবে কি আসে যায়? এসব স্পষ্ট দলীল প্রমাণ তো তার লোকদের উপর ক্রিয়াশীল হয়ে যাবে। এ জন্যেই সে নিজের কওমের প্রতি মনোযোগ দিলো এবং হযরত মূসা ( সঃ )-কে ধমকাতে শুরু করলো, যেমন সামনে আসছে।
সূরা শুআরা আয়াত 28 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- আর এভাবেই আমি কিছু লোককে কিছু লোক দ্বারা পরীক্ষায় ফেলেছি যাতে তারা বলে যে, এদেরকেই
- অতএব, এটা তো কেবল এক মহা-নাদ,
- হে ঈমাণদারগণ! তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা কাফের হয়েছে এবং নিজেদের ভাই বন্ধুরা যখন
- হে ঈমানদারগণ, খেয়ানত করোনা আল্লাহর সাথে ও রসূলের সাথে এবং খেয়ানত করো না নিজেদের পারস্পরিক
- তিনি আপনাকে পেয়েছেন পথহারা, অতঃপর পথপ্রদর্শন করেছেন।
- সুলায়মান দাউদের উত্তরাধিকারী হয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘হে লোক সকল, আমাকে উড়ন্ত পক্ষীকূলের ভাষা শিক্ষা দেয়া হয়েছে
- যে আমার পরওয়ারদেগার আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং আমাকে সম্মানিতদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
- অতএব তোমরা এবং তোমরা যাদের উপাসনা কর,
- তারা বলেঃ দয়াময় আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন।
- এ কারণে যে, তারা দয়াময় আল্লাহর জন্যে সন্তান আহবান করে।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা শুআরা ডাউনলোড করুন:
সূরা Shuara mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Shuara শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers