কোরান সূরা আস্র আয়াত 3 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Al Asr ayat 3 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা আস্র আয়াত 3 আরবি পাঠে(Al Asr).
  
   

﴿إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ﴾
[ العصر: 3]

কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের। [সূরা আস্র: 3]

Surah Al-Asr in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Al Asr ayat 3


তারা ব্যতীত যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করছে, আর পরস্পরকে সত্য অবলন্বনের জন্য মন্ত্রণা দিচ্ছে, এবং পরস্পরকে অধ্যবসায় অবলন্বনের পরামর্শ দিচ্ছে।


Tafsir Mokhtasar Bangla


৩. কেবল তারা ব্যতীত যারা আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের উপর ঈমান আনয়ন পূর্বক নেক আমল করে এবং একে অপরকে হকের পথে চলা ও এর উপর ধৈর্য ধারণের উপদেশ প্রদান করে। যারা এ সব বৈশিষ্ট্যে গুনান্বিত তারা নিজেদের ইহ ও পারলৌলিক জীবনে মুক্তিপ্রাপ্ত।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


কিন্তু তারা নয়, যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে[১] এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয়। [২] আর উপদেশ দেয় ধৈর্য ধারণের। [৩] [১] তবে ক্ষতি হতে সেই ব্যক্তিরা নিরাপত্তা লাভ করবে, যারা ঈমান এনে নেক আমল করবে। কেননা, তার পার্থিব জীবন যেমনভাবেই অতিবাহিত হোক না কেন, মৃত্যুর পর সে চিরস্থায়ী নিয়ামত এবং জান্নাতের চিরসুখ লাভ করে ধন্য হবে। পরবর্তীতে মু'মিনদের আরো কিছু গুণ বর্ণনা করা হয়েছে। [২] অর্থাৎ, তারা একে অপরকে আল্লাহ তাআলার শরীয়তের আনুগত্য করার এবং নিষিদ্ধ বস্তু এবং পাপাচার হতে দূরে থাকার উপদেশ দেয়। [৩] অর্থাৎ, মসীবত ও দুঃখ-কষ্টে ধৈর্য, শরীয়তের হুকুম-আহকাম ও ফরযসমূহ পালন করতে ধৈর্য, পাপাচার বর্জন করতে ধৈর্য, কামনা-বাসনা ও কুপ্রবৃত্তিকে দমন করতে ধৈর্য ধারণের উপদেশ দেয়। যদিও ধৈর্যধারণের উপদেশ সত্যের উপদেশেরই অন্তর্ভুক্ত, তবুও তা বিশেষ করে উল্লেখ করা হয়েছে। আর তাতে ধৈর্যধারণ ও তার উপদেশের মর্যাদা, মাহাত্ম্য এবং সুচরিত্রতায় তার পৃথক বৈশিষ্ট্য থাকার কথা সুস্পষ্ট হয়ে যায়।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


কিন্তু তারা নয় [], যারা ঈমান এনেছে [] এবং সৎকাজ করেছে [] আর পরস্পরকে উপদেশ দিয়েছে হকের [] এবং উপদেশ দিয়েছে ধৈর্যের []। [] এখানে পূর্ববর্তী আয়াতে বর্ণিত মানবজাতি যে অত্যন্ত ক্ষতিগ্ৰস্ততার মধ্যে আছে তার থেকে উত্তরণের পথ বলে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এই ক্ষতির কবল থেকে কেবল তারাই মুক্ত, যারা চারটি বিষয় নিষ্ঠার সাথে পালন করে-- ঈমান, সৎকর্ম, অপরকে সত্যের উপদেশ এবং সবরের উপদেশদান। দ্বীন ও দুনিয়ার ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার এবং মহা উপকার লাভ করার চার বিষয় সম্বলিত এ ব্যবস্থাপত্রের প্রথম দুটি বিষয় আত্মসংশোধন সম্পর্কিত এবং দ্বিতীয় দুটি বিষয় অপর মুসলিমদের হেদায়েত ও সংশোধন সম্পর্কিত। [ সাদী ] [] এই সূরার দৃষ্টিতে যে চারটি গুণাবলীর উপস্থিতিতে মানুষ ক্ষতি মুক্ত অবস্থায় থাকতে পারে তন্মধ্যে প্রথম গুণটি হচ্ছে ঈমান। ঈমান শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে স্বীকৃতি দেয়া। আর শরীয়তের পরিভাষায় এর অর্থ অন্তরে বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং কাজ-কর্মে বাস্তবায়ন। [ মাজমূ ‘ফাতাওয়া ৭/৬৩৮ ] এখন প্রশ্ন দেখা দেয়, ঈমান আনা বলতে কিসের ওপর ঈমান আনা বুঝাচ্ছে? এর জবাবে বলা যায়, কুরআন মজীদে একথাটি একবারে সুস্পষ্ট ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে। প্রথমত আল্লাহ্কে মানা। নিছক তাঁর অস্তিত্ব মেনে নেয়া নয়। বরং তাকে এমনভাবে মানা যাতে বুঝা যায় যে, তিনি একমাত্ৰ প্ৰভূ ও ইলাহ। তাঁর সর্বময় কর্তৃত্বে কোন অংশীদার নেই। একমাত্র তিনিই মানুষের ইবাদাত, বন্দেগী ও আনুগত্য লাভের অধিকারী। তিনিই ভাগ্য গড়েন ও ভাঙ্গেন। বান্দার একমাত্র তাঁরই কাছে প্রার্থনা এবং তাঁরই ওপর নির্ভর করা উচিত। তিনিই হুকুম দেন ও তিনিই নিষেধ করেন। তিনি যে কাজের হুকুম দেন তা করা ও যে কাজ থেকে বিরত রাখতে চান তা না করা বান্দার ওপর ফরয। তিনি সবকিছু দেখেন ও শোনেন। মানুষের কোন কাজ তাঁর দৃষ্টির আড়ালে থাকা তো দুরের কথা, যে উদ্দেশ্য ও নিয়তের ভিত্তিতে মানুষ কাজটি করে তাও তাঁর অগোচরে থাকে না। দ্বিতীয়ত রাসূলকে মানা। তাঁকে আল্লাহর নিযুক্ত পথ প্রদর্শক ও নেতৃত্বদানকারী হিসেবে মানা। তিনি যা কিছু শিক্ষা দিয়েছেন আল্লাহ্র পক্ষ থেকে দিয়েছেন, তা সবই সত্য এবং অবশ্যি গ্রহণযোগ্য বলে মেনে নেয়া। সাথে সাথে এটার স্বীকৃতি দেয়া যে, আল্লাহ্ তা‘আলা যুগে যুগে অনেক রাসূল ও নবী পাঠিয়েছেন। কিন্তু মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বশেষ নবী ও রাসূল। তার পরে আর কোন নবী বা রাসূল কেউ আসবে না। তৃতীয়ত ফেরেশতাদের উপর ঈমান। চতুর্থত আল্লাহ্র কিতাবসমমূহের উপর ঈমান, বিশেষ করে পবিত্র কুরআনের উপর ঈমান আনা ও কুরআনের নির্দেশ বাস্তবায়নে সদা সচেষ্ট থাকা। পঞ্চমত আখেরাতকে মানা। মানুষের এই বর্তমান জীবনটিই প্রথম ও শেষ নয়, বরং মৃত্যুর পর মানুষকে পুনরায় জীবিত হয়ে উঠতে হবে, নিজের এই দুনিয়ার জীবনে সে যা কিছু কাজ করেছে আল্লাহ্র সামনে তার জবাবদিহি করতে হবে এবং হিসেব-নিকেশে যেসব লোক সৎ গণ্য হবে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হবে এবং যারা অসৎ গণ্য হবে তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে, এই অর্থে আখেরাতকে মেনে নেয়া। ষষ্ঠত তাকদীরের ভাল বা মন্দ আল্লাহ্র পক্ষ থেকে নির্ধারিত থাকার বিষয়টি মেনে নেয়া। মূলত ঈমানের এই ছয়টি অঙ্গ যে কোন লোকের নৈতিক চরিত্র ও তার জীবনের সমগ্র কর্মকাণ্ডের জন্য অতীব জরুরি। যেখানে ঈমানের অস্তিত্ব নেই সেখানে মানুষের জীবন যতই সৌন্দর্য বিভূষিত হোক না কেন তা আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট গ্রহণযোগ্য নয়। বিস্তারিত দেখুন, ড.আবদুল আয়ীয আল-কারী; তাফসীর সূরাতিল আসার; ড.
সুলাইমান আল-লাহিম, রিবহু আইয়ামিল উমর ফী তাদাব্বুরি সূরাতিল আসর] [] ঈমানের পরে মানুষকে ক্ষতি থেকে বাঁচাবার জন্য দ্বিতীয় যে গুণটি অপরিহার্য সেটি হচ্ছে সৎকাজ। কুরআনের পরিভাষায় একে বলা হয় আ‘মাল সালেহা। সমস্ত সৎকাজ এর অন্তর্ভুক্ত। কোন ধরনের সৎকাজ ও সৎবৃত্তি এর বাইরে থাকে না। কিন্তু কুরআনের দৃষ্টিতে যে কাজের মূলে ঈমান নেই এবং যা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল প্রদত্ত হেদায়াতের ভিত্তিতে সম্পাদিত হয়নি তা কখনো সৎকাজের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না। তাই কুরআন মজীদের সর্বত্ৰ সৎকাজের আগে ঈমানের কথা বলা হয়েছে এবং এই সূরায়ও ঈমানের পরেই এর কথা বলা হয়েছে। [] হক শব্দের কয়েকটি অর্থ বর্ণিত হয়েছে। ইবন আব্বাসের মতে, ঈমান ও তাওহীদ [ বাগভী; কুরতুবী ] কাতাদা বলেন, কুরআন। [ কুরতুবী ] সুদ্দী বলেন, এখানে হক্ক বলে আল্লাহ্কেই উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। [ কুরতুবী ] কোন কোন মুফাসসিরের মতে, এখানে হক বলে “ শরী‘আত নির্দেশিত কাজগুলো করা এবং শরী‘আত নিষিদ্ধ কাজগুলো পরিত্যাগ করা বোঝানো হয়েছে [ ইবন কাসীর ] কারও কারও মতে, হক বলে এমন কাজ বোঝানো হয়েছে যা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। আর তা হচ্ছে যাবতীয় কল্যাণমূলক কাজ। সেটা তাওহীদ, শরী‘আতের আনুগত্য, আল্লাহ্র কিতাব ও তাঁর রাসূলের অনুসরণ, দুনিয়াবিমুখ ও আখেরাতমুখী হওয়া সবই বোঝায়। [ কাশশাফ ] বস্তুত: হকের আদেশের প্রতি আসিয়ত করার বিষয়টি ওয়াজিব হক ও নফল হক উভয়টিকেই শামিল করে। [ আত-তিবইয়ান ফী আকসামিল কুরআন ৮৩-৮৮ ] তাই সার্বিকভাবে আয়াতের অর্থ হচ্ছে: সঠিক, নির্ভুল, সত্য, ন্যায় ও ইনসাফ অনুসারী এবং আকীদা ও ঈমান বা পার্থিব বিষয়াদির সাথে সম্পর্কিত প্রকৃত সত্য অনুসারী কথা বলতে হবে। আর এটা না করলে অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বরং আল্লাহ্র লা‘নতে পতিত হবে। একথাটিই পবিত্র কুরআনের অন্যত্র বলা হয়েছে, “ দাউদ ও ঈসা ইবনে মারইয়ামের মুখ দিয়ে বনি ইসরাঈলদের ওপর লা‘নত করা হয়েছে কারণ এই যে, তাদের সমাজে গোনাহ ও যুলুম ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং লোকেরা পরস্পরকে খারাপ কাজে বাধা দেয়া থেকে বিরত থেকেছিল [ সূরা আল-মায়িদাহ: ৭৮-৭৯ ] আবার একথাটি অন্যত্র এভাবে বলা হয়েছে, “ বনী ইসরাঈলরা যখন প্ৰকাশ্যে শনিবারের বিধান অমান্য করে মাছ ধরতে শুরু করে তখন তাদের ওপর আযাব নাযিল করা হয় এবং সেই আযাব থেকে একমাত্র তাদেরকেই বাঁচানো হয় যারা লোকদেরকে এই গোনাহর কাজে বাধা দেবার চেষ্টা করতো । [ সূরা আল আ‘রাফ: ১৬৩-১৬৬ ] অন্য সূরায় আবার একথাটি এভাবে বলা হয়েছে, “ সেই ফিতনাটি থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করো যার ক্ষতিকর প্রভাব বিশেষ ভাবে শুধুমাত্র সেসব লোকের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না যারা তোমাদের মধ্যে গোনাহ করেছে [ সূরা আল-আনফাল: ২৫ ] সুতরাং এ সূরায় মুসলিমদের প্রতি একটি বড় নির্দেশ এই যে, নিজেদের দ্বীনকে কুরআন ও সুন্নাহর অনুসারী করে নেয়া যতটুকু গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি, ততটুকুই জরুরি অন্য মুসলিমদেরকেও ঈমান ও সৎকর্মের প্রতি আহ্বান করার সাধ্যমতো চেষ্টা করা। এ কারণেই কুরআন ও হাদীসে প্রত্যেক মুসলিমের প্রতি সাধ্যমতো সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ ফরয বা দায়িত্ব ও কর্তব্য গণ্য করা হয়েছে। [ দেখুন, সূরা আলে ইমরান: ১০৪ ] আর সেই উম্মতকে সর্বোত্তম উম্মত বলা হয়েছে, যারা এই দায়িত্ব পালন করে। [ দেখুন, সূরা আলে ইমরান ১১০ ] [] ‘সবার’ শব্দের আক্ষরিক অর্থ নিজেকে বাধা দেয়া ও অনুবর্তী করা। এখানে কয়েকটি অর্থ হতে পারে। এক.
যাবতীয় গোনাহের কাজ থেকে বেঁচে থাকা। দুই.
সৎকাজ করা এবং এর উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা। তিন.
বিপদাপদে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা। [ মাদারেজুস সালেকীন ২/১৫৬ ] সুতরাং সৎকর্ম সম্পাদন, গোনাহ থেকে আত্মরক্ষা এবং এতদসংক্রান্ত বিপদাপদ মোকাবেলা করা সবই ‘সবর’ এর শামিল। সুতরাং আয়াতের অর্থ হচ্ছে, হকের নসিহত করার সাথে সাথে দ্বিতীয় যে জিনিসটি ঈমানদারগণকে ও তাদের সমাজকে ক্ষতি থেকে বাঁচাবে তা হচ্ছে এই যে, এই সমাজের ব্যক্তিবর্গ পরস্পরকে সবর করার উপদেশ দিতে থাকবে। হককে সমর্থন করতে ও তার অনুসারী হতে গিয়ে যেসব সমস্যা ও বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয় এবং এ পথে যেসব কষ্ট, পরিশ্রম, বিপদ-আপদ, ক্ষতি ও বঞ্চনা মানুষকে নিরন্তর পীড়িত করে তার মোকাবেলায় তারা পরস্পর অবিচল ও দৃঢ়পদ থাকার উপদেশ দিতে থাকবে। সবরের সাথে এসব কিছু বরদাশত করার জন্য তাদের প্রত্যেক ব্যক্তি অন্যকে সাহস যোগাতে থাকবে। [ ড.
কারী, তাফসীর সূরাতিল আসর পৃ.
৬২-৬৩
]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


বর্ণিত আছে যে, হযরত আমর ইবনে আস ( রাঃ ) মুসলমান হওয়ার পূর্বে একবার মুসাইলামা কাযযাবের সাথে সাক্ষাৎ করেন। ঐ সময় মুসাইলামা নবুওয়াতের মিথ্যা দাবী করেছিল। হযরত আমর ( রাঃ )-কে সে জিজ্ঞাসা করলোঃ “ এখন কি তোমাদের রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর উপর কোন অহী অবতীর্ণ হয়েছে?” হযরত আমর ( রাঃ ) জবাবে বলেনঃ “একটি সংক্ষিপ্ত, অলংকার পূর্ণ সূরা নাযিল হয়েছে ।মুসাইলামা জিজ্ঞেস করলোঃ “ সেটি কি?” হযরত আমর ( রাঃ ) তখন ( আরবি ) সূরাটি পাঠ করে শুনালেন । মুসাইলামা কিছুক্ষণ চিন্তা করে বললোঃ “ জেনে রেখো, আমার উপরও এরকম সূরা নাযিল হয়েছে । হযরত আমর ( রাঃ ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “ সেটি কি?” সে তখন বললোঃ ( আরবি ) তারপর জিজ্ঞেস করলোঃ “হে আমর ( রাঃ )! বল, তোমার অভিমত কি?” তখন হযরত আমর ( রাঃ ) বললেনঃ “তুমি তো নিজেই জান যে, তোমার মিথ্যা ও ভণ্ডামী সম্পর্কে আমি অবহিত রয়েছি ।” হলো বিড়ালের মত আকৃতি বিশিষ্ট একটা পশু। তার কান দুটি ও বুক কিছুটা প্রশস্ত ও বড়। দেহের অন্যান্য অংশ খুবই নিকৃষ্ট ও বাজে। ভণ্ড, দুবৃত্ত ও মিথ্যাবাদী মুসাইলামা এ রকম বাজে কথাকে আল্লাহ পাকের পবিত্র কালামের সাথে তুলনা করতে চেয়েছিল। তার এ ধরনের ঘৃণ্য ভণ্ডামী দেখে আরবের মূর্তি পূজকরাও তাকে মিথ্যাবাদী এবং ফালতু বলে সহজেই বুঝে নিয়েছিল। দু’জন সাহাবীর অভ্যাস ছিল এই যে, যখন তাঁদের পরস্পর সাক্ষাৎ হতো তখন একজন এ সূরাটি পড়তেন এবং অপরজন শুনতেন। তারপর পরস্পর সালাম বিনিময় করে বিদায় নিতেন।হযরত ইমাম শাফেয়ী ( রঃ ) বলেন যে, মানুষ যদি এই একটি মাত্র সুরা চিন্তা ভাবনা ও মনোযোগের সাথে পাঠ করে এবং অনুধাবন করে তবে এই একটি সূরাই যথেষ্ট। ১-৩ নং আয়াতের তাফসীর ‘আসর এর অর্থ হলো কাল বা সময়, যেই কাল বা সময়ে মানুষ পাপ পূণ্যের কাজ করে হযরত যায়েদ ইবনে আসলাম ( রঃ ) বলেন যে, আসর এর অর্থ হলো আসরের নামায বা আসরের নামাযের সময়। কিন্তু প্রথমোক্ত উক্তিটিই মাশহুর বা প্রসিদ্ধ। এই কসমের পর আল্লাহ তা'আলা বলছেনঃ নিশ্চয়ই মানুষ অত্যন্ত ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। কিন্তু যারা ঈমান আনে ও ভাল কাজ করে এবং একে অন্যকে সত্যের উপদেশ দেয় অর্থাৎ নিজে সৎকাজ করে ও অন্যকে সৎকাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে, আর বিপদে-আপদে নিজে ধৈর্য ধারণ করে ও অন্যকেও ধৈর্য ধারণের উপদেশ দেয়, জনগণ কষ্ট দিলে ক্ষমার মাধ্যমে ধৈর্যের পরিচয় দেয় এবং ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ হতে বিরত থাকার নির্দেশ দিতে গিয়ে যে বাধাবিঘ্ন ও বিপদের সম্মুখীন হয় তাতেও ধৈর্য ধারণ করে, তারা এই সুস্পষ্ট ক্ষতি থেকে মুক্তি পাওয়ার সৌভাগ্যের অধিকারী।

সূরা আস্র আয়াত 3 সূরা

إلا الذين آمنوا وعملوا الصالحات وتواصوا بالحق وتواصوا بالصبر

سورة: العصر - آية: ( 3 )  - جزء: ( 30 )  -  صفحة: ( 601 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. তোমরা কি কানকথা বলার পূর্বে সদকা প্রদান করতে ভীত হয়ে গেলে? অতঃপর তোমরা যখন সদকা
  2. অতঃপর তিনি সেগুলোকে চূর্ণ-বিচুর্ণ করে দিলেন ওদের প্রধানটি ব্যতীতঃ যাতে তারা তাঁর কাছে প্রত্যাবর্তন করে।
  3. তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে রাত্রিতে প্রবিষ্ট করেন?
  4. যদি সব মানুষের এক মতাবলম্বী হয়ে যাওয়ার আশংকা না থাকত, তবে যারা দয়াময় আল্লাহকে অস্বীকার
  5. আল্লাহ ঈমানদারদের উপর অনুগ্রহ করেছেন যে, তাদের মাঝে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে নবী পাঠিয়েছেন। তিনি
  6. এবং যারা বলে, হে আমার পালনকর্তা, আমাদের কাছথেকে জাহান্নামের শাস্তি হটিয়ে দাও। নিশ্চয় এর শাস্তি
  7. দেশে যাদেরকে দূর্বল করা হয়েছিল, আমার ইচ্ছা হল তাদের প্রতি অনুগ্রহ করার, তাদেরকে নেতা করার
  8. আর যারা সৌভাগ্যবান তারা বেহেশতের মাঝে, সেখানেই চিরদিন থাকবে, যতদিন আসমান ও যমীন বর্তমান থাকবে।
  9. তারা বললঃ এর শাস্তি এই যে, যার রসদপত্র থেকে তা পাওয়া যাবে, এর প্রতিদানে সে
  10. আমি তোমাকে তোমার পালনকর্তার দিকে পথ দেখাব, যাতে তুমি তাকে ভয় কর।

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আস্র ডাউনলোড করুন:

সূরা Al Asr mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Al Asr শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত আস্র  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত আস্র  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত আস্র  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত আস্র  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত আস্র  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত আস্র  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত আস্র  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত আস্র  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত আস্র  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত আস্র  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত আস্র  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত আস্র  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত আস্র  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত আস্র  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত আস্র  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত আস্র  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত আস্র  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত আস্র  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত আস্র  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত আস্র  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত আস্র  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত আস্র  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত আস্র  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত আস্র  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত আস্র  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Tuesday, May 21, 2024

لا تنسنا من دعوة صالحة بظهر الغيب