কোরান সূরা হাদীদ আয়াত 3 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Hadid ayat 3 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা হাদীদ আয়াত 3 আরবি পাঠে(Hadid).
  
   

﴿هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ ۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ﴾
[ الحديد: 3]

তিনিই প্রথম, তিনিই সর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও অপ্রকাশমান এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত। [সূরা হাদীদ: 3]

Surah Al-Hadid in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Hadid ayat 3


তিনিই আদি ও অন্ত আর প্রকাশ্য ও গুপ্ত, কেননা তিনিই সব-কিছু সন্বন্ধে সর্বজ্ঞাতা।


Tafsir Mokhtasar Bangla


৩. তিনিই প্রথম; যাঁর পূর্বে কোন কিছু ছিলো না। তিনিই শেষ; যাঁর পর আর কিছুই থাকবে না। তিনিই প্রকাশ্য; যাঁর ঊর্ধ্বে কিছুই নেই। তিনিই অপ্রকাশ্য; যাঁর অপেক্ষা গভীরে অন্য কিছু নেই। তিনিই সর্ব বিষয়ে পরিজ্ঞাত; তাঁর বাইরে কোন কিছুই নেই।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


তিনিই আদি, অন্ত, ব্যক্ত ও গুপ্ত[১] এবং তিনি সর্ববিষয়ে সম্যক অবহিত। [১] তিনিই আদি বা প্রথম; তাঁর পূর্বে কিছু ছিল না। তিনিই অন্ত বা সর্বশেষ; তাঁরপর কিছু থাকবে না। তিনি ব্যক্ত বা প্রকাশমান। অর্থাৎ, তিনি সবার উপর জয়ী, তাঁর উপর কেউ জয়ী নয়। তিনি গুপ্ত বা অপ্রকাশমান। অর্থাৎ, যাবতীয় গোপন খবর একমাত্র তিনিই জানেন। অথবা তিনি মানুষের দৃষ্টি ও জ্ঞানের অন্তরালে। ( ফাতহুল ক্বাদীর ) নবী করীম ( সাঃ ) তাঁর কন্যা ফাতিমা ( রাঃ ) কে এই দু'আটি পাঠ করতে তাকীদ করেছিলেনঃ اَللَّهُمَّ رَبَّ السَّمَوَاتِ السَّبْعِ وَرَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، رَبَّنَا وَرَبَّ كُلِّ شَيْءٍ، مُنْزِلَ التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ وَالْفُرْقَانِ، فَالِقَ الْحَبِّ وَالنَّوَى، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ شَيْءٍ أَنْتَ آخِذٌ بِنَاصِيَتِهِ، أَنْتَ الْأَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْآخِرُ فَلَيْسَ بَعْدَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُونَكَ شَيْءٌ، اقْضِ عَنِّا الدَّيْنَ وَأَغْنِنِا مِنْ الْفَقْرِ অর্থাৎ, হে আল্লাহ! হে আকাশ মন্ডলী, পৃথিবী ও মহা আরশের অধিপতি। হে আমাদের ও সকল বস্তুর প্রতিপালক! হে শস্যবীজ ও আঁটির অঙ্কুরোদয়কারী! হে তাওরাত, ইনজীল ও ফুরকানের অবতারণকারী! আমি তোমার নিকট প্রত্যেক অনিষ্টকারীর অনিষ্ট থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি- যার ললাটের কেশগুচ্ছ তুমি ধারণ করে আছ। হে আল্লাহ! তুমিই আদি তোমার পূর্বে কিছু নেই। তুমিই অন্ত তোমার পরে কিছু নেই। তুমিই ব্যক্ত ( অপরাজেয় ), তোমার ঊর্ধ্বে কিছু নেই এবং তুমিই ( সৃষ্টির গোচরে ) অব্যক্ত, তোমার নিকট অব্যক্ত কিছু নেই। আমাদের তরফ থেকে আমাদের ঋণ পরিশোধ করে দাও এবং আমাদেরকে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিয়ে সচ্ছল ( অভাবশূন্য ) করে দাও। (মুসলিমঃ যিকর ও দু ' আ অধ্যায়) ঋণ পরিশোধের জন্য পঠনীয় এই দু'আর মধ্যে 'আওয়াল', 'আখির' এবং 'যাহির' ও 'বাতিন'এর ব্যাখ্যা করে দেওয়া হয়েছে।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


তিনিই প্রথম ও শেষ ; প্রকাশ্য ( উপরে ) ও গোপন ( নিকটে ) আর তিনি সবকিছু সম্পর্কে সম্যক অবগত []। [] ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেনঃ কোন সময় তোমার অন্তরে আল্লাহ তা’আলা ও ইসলাম সম্পর্কে শয়তানী কুমন্ত্রণা দেখা দিলে هُوَالْاَوَّلُ وَالْاٰخِرُ وَالظَّاهِرُوَالْبَاطِنُ وَهُوَبِكُلِّ شَىْءٍعِلِيْمٌ আয়াতখানি আস্তে পাঠ করে নাও। [ আবু দাউদ: ৫১১০ ] এই আয়াতের তাফসীর এবং “ আউয়াল”, “আখের”, “যাহের” ও “বাতেন” এ শব্দ চারটির অর্থ সম্পর্কে তফসীরবিদগণের বহু উক্তি বর্ণিত আছে । তন্মধ্যে “ আউয়াল” শব্দের অর্থ তো প্ৰায় নির্দিষ্ট; অর্থাৎ অস্তিত্বের দিক দিয়ে সকল সৃষ্টজগতের অগ্রে ও আদি । কারণ, তিনি ব্যতীত সবকিছু তাঁরই সৃজিত। তাই তিনি সবার আদি। “ আখের” এর অর্থ কারও কারও মতে এই যে, সবকিছু বিলীন হয়ে যাওয়ার পরও তিনি বিদ্যমান থাকবেন । [ সা’দী ] যেমন كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ إِلَّا وَجْهَهُ [ সূরা আল-কাসাস: ৮৮ ] আয়াতে এর পরিষ্কার উল্লেখ আছে। ইমাম বুখারী বলেন, যাহের’ অর্থ জ্ঞানে তিনি সবকিছুর উপর, অনুরূপ তিনি ‘বাতেন’ অৰ্থাৎ জ্ঞানে সবকিছুর নিকটে। বিভিন্ন হাদীসে এ আয়াতের তাফসীর এসেছে, এক হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুমানোর সময় বলতেন, “ হে আল্লাহ! সাত আসমানের রব, মহান আরশের রব, আমাদের রব এবং সবকিছুর রব, তাওরাত, ইঞ্জীল ও ফুরকান নাযিলকারী, দানা ও আঁটি চিরে বৃক্ষের উদ্ভবকারী, আপনি ব্যতীত কোন হক্ক মা’বুদ নেই, যাদের কপাল আপনার নিয়ন্ত্রণে এমন প্ৰত্যেক বস্তুর অনিষ্ট হতে আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি, আপনি অনাদি, আপনার আগে কিছু নেই, আপনি অনন্ত আপনার পরে কিছুই থাকবে না । আপনি সবকিছুর উপরে, আপনার উপরে কিছুই নেই, আপনি নিকটবর্তী, আপনার চেয়ে নিকটবর্তী কেউ নেই, আমার পক্ষ থেকে আপনি আমার ঋণ পরিশোধ করে দিন এবং আমাকে দারিদ্রতা থেকে মুক্তি দিন।” [ মুসলিম: ২৭১৩, মুসনাদে আহমাদ ২/৪০৪ ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


হযরত ইরবায ইবনে সারিয়াহ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) শয়নের পূর্বে ঐ সূরাগুলো পাঠ করতেন যেগুলোর শুরুতে বা রয়েছে। এবং বলতেনঃ “ এগুলোর মধ্যে এমন একটি আয়াত রয়েছে যা হাজার আয়াত হতেও উত্তম ।( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ), ইমাম আবু দাউদ ( রঃ ), ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) এবং ইমাম নাসাঈ ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন)এ হাদীসে যে আয়াতটির প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে, আল্লাহ তা'আলাই খুব ভাল জানেন, আয়াতটি হলোঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তিনিই আদি, তিনিই অন্ত, তিনিই ব্যক্ত, তিনিই গুপ্ত এবং তিনি সর্ব বিষয়ে সম্যক অবহিত ।” এর বিস্তারিত বর্ণনা সত্বরই আসছে ইনশা-আল্লাহ। ১-৩ নং আয়াতের তাফসীর: সমস্ত প্রাণী ও উদ্ভিদ আল্লাহ তা'আলার পবিত্রতা বর্ণনা করে থাকে। সপ্ত আসমান ও যমীন এবং এগুলোর মধ্যস্থিত সমস্ত মাখলূক ও প্রত্যেক জিনিস তাঁর প্রশংসা ও গুণকীর্তনে মগ্ন রয়েছে। কিন্তু মানুষ এদের তাসবীহ পাঠ বুঝতে পারে। যেমন আল্লাহ তা'আলা অন্য জায়গায় বলেনঃ ( আরবী )অর্থাৎ “ সপ্ত আকাশ ও যমীন এবং এগুলোর মধ্যে যারা রয়েছে, সবাই তাঁর ( আল্লাহর ) পবিত্রতা ঘোষণা করে থাকে । আর যত কিছু রয়েছে সবই তাঁর সপ্রশংস মহিমা ঘোষণা করে থাকে, কিন্তু তোমরা তাদের তাসবীহ বুঝতে পার না, নিশ্চয়ই তিনি সহনশীল, ক্ষমাকারী।” ( ১৭:৪৪ ) সবাই তার সামনে নীচু, অক্ষম এবং শক্তিহীন। তাঁর নির্ধারিত শরীয়ত এবং তাঁর আহকাম হিকমতে পরিপূর্ণ। প্রকৃত বাদশাহ তিনিই যার কর্তৃত্বাধীনে আসমান ও যমীন রয়েছে। সৃষ্টজীবের ব্যবস্থাপক তিনিই। জীবন ও মৃত্যু তাঁরই অধিকারভুক্ত। তিনিই ধ্বংস করেন এবং তিনিই সৃষ্টি করেন। যাকে তিনি যা কিছু দেয়ার ইচ্ছা করেন, দিয়ে থাকেন। তিনি সব কিছুর উপরই পূর্ণ ক্ষমতাবান। তিনি যা চান তাই হয় এবং যা চান না তা হতে পারে না।এরপরে ...
( আরবী )-এ আয়াতটি রয়েছে যার ব্যাপারে উল্লিখিত হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, এটা এক হাজার আয়াত হতেও উত্তম।হযরত আবু যামীল ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ )-কে জিজ্ঞেস করেনঃ “ আমার মনে এক সন্দেহ বা খা আছে, কিন্তু মুখে তা আনতে ইচ্ছা হচ্ছে না । তাঁর একথা শুনে হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) মুচকি হেসে বললেন, সম্ভবতঃ এটা এমন সন্দেহ হবে যা থেকে কেউই বাঁচতে পারেনি। এমন কি কুরআন কারীমেও রয়েছেঃ ( আরবী )অর্থাৎ “ তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তাতে যদি তোমার সন্দেহ হয়, তাহলে তোমার পূর্বে যারা কুরআন পড়ে তাদেরকে জিজ্ঞেস কর । অবশ্যই তোমার কাছে তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে সত্য এসেছে।” ( ১০:৯৪ ) তারপর তিনি বলেনঃ “ যখন তোমার মনে কোন সন্দেহ আসবে তখন ( আরবী )-এ আয়াতটি পড়ে নিয়ো ।( এটা ইমাম আবু দাউদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)এ আয়াতের তাফসীরে দশেরও অধিক উক্তি রয়েছে। ইমাম বুখারী ( রঃ ) বলেন যে, ইয়াহইয়া বলেনঃ ( আরবী )( আরবী ) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ইলমের দিক দিয়ে ব্যক্ত ও গুপ্ত হওয়া। এই ইয়াহ্ইয়া হলেন যিয়াদ ফারার পুত্র। তাঁর রচিত একটি পুস্তক রয়েছে যার নাম মাআনিল কুরআন।হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) শয়নের সময় নিম্নলিখিত দু'আটি পাঠ করতেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ হে আল্লাহ, হে সপ্ত আকাশ এবং বড় আরশের রব! হে আমাদের এবং সমস্ত জিনিসের প্রতিপালক! হে তাওরাত ও ইনজীল অবতীর্ণকারী! হে দানা ও বিচি উদগীরণকারী! আপনি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কেউ নেই । এমন প্রত্যেক জিনিসের অনিষ্ঠ হতে আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি যার ঝুঁটি আপনার হাতে রয়েছে। আপনিই প্রথম এবং আপনার পূর্বে কিছুই ছিল না, আপনিই শেষ এবং আপনার পরে কিছুই থাকবে না। আপনি ব্যক্ত বা প্রকাশ্য এবং আপনার উপর কোন কিছুই নেই, আপনি গুপ্ত এবং কোন কিছুই আপনার কাছে গুপ্ত নয়, আমাদের ঋণ আপনি আদায় করে দিন এবং আমাদেরকে দারিদ্রমুক্ত করে দিন।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত সুহায়েল ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত আবু সালেহ ( রঃ ) স্বীয় পরিবারের লোককে এই দু'আ শিক্ষা দিতেন এবং বলতেন যে, যখন তারা শয়ন করবে তখন যেন ডান পাশে শুয়ে এ দু'আটি পড়ে নেয়।" ( এটা ইমাম মুসলিম (রঃ ) স্বীয় সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)হযরত আয়েশা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নির্দেশক্রমে তার জন্যে কিবলামুখী করে বিছানা বিছিয়ে দেয়া হতো। তিনি তাঁর ডান হস্ত-তালুর উপর মাথা রেখে আরাম করতেন। তারপর আস্তে আস্তে কিছু পাঠ করতেন। কিন্তু শেষ রাত্রে উপরোক্তে দু'আটি উচ্চস্বরে পড়তেন। তবে শব্দগুলোতে কিছু হেরফের রয়েছে।” ( এ হাদীসটি হাফিয আবু ইয়ালা (রঃ ) বর্ণনা করেছেন) এ আয়াতের তাফসীরে জামেউত তিরমিযীতে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) একদা স্বীয় সাহাবীবর্গসহ বসেছিলেন এমতাবস্থায় তাঁদের উপর এক খণ্ড মেঘ দেখা দেয়। তিনি সাহাবীদেরকে জিজ্ঞেস করেনঃ “ এটা কি তা তোমরা জান কি?” তাঁরা জবাবে বললেনঃ “আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ( সঃ ) ভাল জানেন ।” তিনি তখন বললেনঃ “ এটাকে ‘ইনাল; বলা হয় এটা যমীনকে সায়রাব বা পানিসিক্ত করে থাকে। জনগণের উপর এটা বর্ষিত হয় যারা না আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, না তাকে ডাকে। আবার তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ “ তোমাদের উপর এটা কি তা জান কি?” তারা উত্তর দিলেনঃ “আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল ( সঃ )-ই বেশী অবহিত ।“ এটা হলো উঁচু সুরক্ষিত ছাদ ও জড়িয়ে ধরা তরঙ্গ ।” বললেন তিনি। এরপর তিনি বললেনঃ “ তোমাদের এবং এর মধ্যে কতটা ব্যবধান আছে তা কি তোমরা জান?” তারা উত্তরে বললেনঃ “এ সম্পর্কে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল ( সঃ )-এর জ্ঞানই সবচেয়ে বেশী ।” তিনি বললেনঃ “ তোমাদের ও এর মধ্যে পাঁচশ’ বছরের পথের ব্যবধান ।” তিনি পুনরায় প্রশ্ন করলেনঃ “ এর উপরে কি আছে তা কি তোমরা জান?” তারা উত্তর দিলেনঃ “আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ( সঃ ) বেশী খবর রাখেন ।” তিনি বললেনঃ “ এর উপরে দ্বিতীয় আকাশ রয়েছে । আর এই দুই আকাশের মধ্যবর্তী ব্যবধান হলো পাঁচশ' বছরের পথ। অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) সাতটি আকাশের কথা বললেন এবং প্রত্যেকটির মাঝে এই পরিমাণ দূরত্বেরই বর্ণনা দিলেন। এরপর তিনি প্রশ্ন করলেনঃ “ সপ্তম আকাশের উপর কি আছে তা কি তোমাদের জানা আছে?” সাহাবীগণ ( রাঃ ) জবাব দিলেনঃ “আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল ( সঃ )-ই বেশী অবগত ।” তিনি বললেনঃ “ সপ্তম আকাশের উপর এই পরিমাণ দূরত্বে আরশ রয়েছে অতঃপর তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ “তোমাদের নীচে কি আছে তা কি তোমরা জান?” তাঁরা জবাব দিলেনঃ “আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল ( সঃ )-ই সবচেয়ে ভাল জানেন ।” তিনি বললেনঃ “ তাহলো যমীন ।” তারপর বললেনঃ “ এর নীচে কি আছে তা কি জান?” তারা উত্তর দিলেনঃ “আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ( সঃ )-এর জ্ঞানই সবচেয়ে বেশী ।” তিনি বললেনঃ “ এর নীচে আর একটি যমীন আছে । এই দুই যমীনের মধ্যেও পাঁচশ' বছরের পথের ব্যবধান।” এই ভাবে তিনি সাতটি যমীনের কথা সমপরিমাণ দূরত্ব সহ বর্ণনা করলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ “ যাঁর হাতে মুহাম্মাদ ( সঃ )-এর প্রাণ রয়েছে তাঁর শপথ! তোমরা যদি সর্বাপেক্ষা নিম্নতম যমীনে একটি রশি লটকিয়ে দাও তবে ওটাও আল্লাহ তাআলারই নিকট পৌঁছবে ।” অতঃপর তিনি ( আরবী ) আয়াতটি পাঠ করেন।” ( ইমাম তিরমিযী (রঃ ) এ হাদীসটি বর্ণনা করার পর বলেন যে, এটা গারীব, কেননা এর বর্ণনাকারী হাসানের তার উস্তাদ হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে শোন প্রমাণিত নয়। যেমন এটা আইয়ুব ( রঃ ), ইউনুস ( রঃ ), আলী ইবনে যায়েদ ( রঃ ) প্রমুখ মুহাদ্দিসের উক্তি)কোন কোন আহলুল ইলম এই হাদীসের শরাহতে বলেছেন যে, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো রশির আল্লাহ তা'আলারই ইলমে কুদরত পর্যন্ত পৌঁছা, তার সত্তা পর্যন্ত পৌঁছা উদ্দেশ্য নয়। আল্লাহ তাআলার ইলম ও তার প্রভাব এবং তার রাজত্ব নিঃসন্দেহে সব জায়গাতেই রয়েছে, কিন্তু তিনি তাঁর জাত বা সত্তারূপে আরশের উপর রয়েছেন। যেমন তিনি তার এই বিশেষণ স্বীয় কিতাবের মধ্যে স্বয়ং বর্ণনা করেছেন। মুসনাদে আহমাদেও এ হাদীসটি রয়েছে এবং তাতে দুই যমীনের মাঝে দূরত্ব সাত শ' বছরের পথ বলে বর্ণিত হয়েছে। মুসনাদে ইবনে আবি হাতিম এবং মুসনাদে বাযযারেও এ হাদীসটি আছে, কিন্তু মুসনাদে ইবনে আবি হাতিমে রশি লটকিয়ে দেয়ার বাক্যটি নেই এবং প্রত্যেক দুই যমীনের মাঝের দূরত্ব তাতেও পাঁচশ বছরের পথের কথা রয়েছে। ইমাম বাযযার ( রঃ ) বলেন যে, হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) ছাড়া আর কেউই এটা নবী ( সঃ ) হতে বর্ণনা করেননি। ইমাম ইবনে জারীর ( রঃ )-ও এ হাদীসটি মরসালরূপে বর্ণনা করেছেন অর্থাৎ হযরত কাতাদা ( রঃ ) বলেনঃ “ আমাদের নিকট এটা বর্ণনা করা হয়েছে ।” অতঃপর তিনি হাদীস বর্ণনা করেন এবং সাহাবীর নাম উল্লেখ করেননি। সম্ভবতঃ এটাই সঠিক। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।মুসনাদে বাযযার কিতাবুল আসমা এবং ওয়াস সিফাতুল বায়হাকীতে এ হাদীসটি হযরত আবু যর গিফারী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে। কিন্তু এর ইসনাদের ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনার অবকাশ আছে এবং মতনে গারাবাত ও নাকারাত রয়েছে। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী। ইমাম ইবনে জারীর ( রঃ ) ( আরবী ) ( ৬৫:১২ )-এর তাফসীরে। হযরত কাতাদা ( রঃ )-এর উক্তি আনয়ন করেছেন যে, আসমান ও যমীনের মাঝে চারজন ফেরেশতার সাক্ষাৎ হয়। তারা একে অপরকে জিজ্ঞেস করেনঃ “ তুমি কোথা হতে আসলে?” তখন একজন উত্তর দেনঃ “মহামহিমান্বিত আল্লাহ আমাকে সপ্তম আকাশ হতে প্রেরণ করেছেন এবং আমি সেখানে আল্লাহ তা'আলাকে ছেড়ে এলাম ।” দ্বিতীয়জন বলেনঃ আল্লাহ তা'আলা আমাকে সপ্তম যমীন হতে প্রেরণ করেছিলেন এবং তিনি সেখানে ছিলেন । তৃতীয়জন বলেনঃ আল্লাহ তা'আলা আমাকে মাশারিক ( পূর্ব দিক ) হতে প্রেরণ করেছেন এবং সেখানে আল্লাহ তা'আলা ছিলেন । চতুর্থ জন বলেনঃ আল্লাহ তা'আলা আমাকে মাগরিব ( পশ্চিম দিক ) হতে পাঠিয়েছেন এবং তথায় আমি তাঁকে ছেড়ে আসলাম ।( এ হাদীসটিও গারীব, বরং মনে হচ্ছে যে, হযরত কাতাদা (রঃ ) বর্ণিত হাদীসটি যা উপরে মুরসালরূপে উল্লিখিত হলো, সম্ভবতঃ ওটাও হযরত কাতাদারই ( রঃ ) নিজের উক্তি হবে, যেমন এটা স্বয়ং তাঁরই উক্তি। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন)

সূরা হাদীদ আয়াত 3 সূরা

هو الأول والآخر والظاهر والباطن وهو بكل شيء عليم

سورة: الحديد - آية: ( 3 )  - جزء: ( 27 )  -  صفحة: ( 537 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. ওযর-আপত্তির অবকাশ না রাখার জন্যে অথবা সতর্ক করার জন্যে।
  2. এবং যারা আমার ক্ষমতা সম্পর্কে বিতর্ক করে, তারা যেন জানে যে, তাদের কোন পলায়নের জায়গা
  3. সর্বদা বসবাসের উদ্যান, তারা যাতে প্রবেশ করবে। এর পাদদেশে দিয়ে স্রোতস্বিনী প্রবাহিত হয় তাদের জন্যে
  4. শপথ আকাশের এবং যিনি তা নির্মাণ করেছেন, তাঁর।
  5. তার কর্ম শীঘ্রই দেখা হবে।
  6. নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।
  7. আর যাদের মুখ উজ্জ্বল হবে, তারা থাকবে রহমতের মাঝে। তাতে তারা অনন্তকাল অবস্থান করবে।
  8. বলে দিন, তোমরা যদি মনের কথা গোপন করে রাখ অথবা প্রকাশ করে দাও, আল্লাহ সে
  9. তাদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায়ও মিথ্যারোপ করেছিল। তারা মিথ্যারোপ করেছিল আমার বান্দা নূহের প্রতি এবং বলেছিলঃ
  10. আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অনর্থক শপথের জন্যে; কিন্তু পাকড়াও করেন ঐ শপথের জন্যে

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা হাদীদ ডাউনলোড করুন:

সূরা Hadid mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Hadid শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত হাদীদ  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত হাদীদ  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত হাদীদ  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত হাদীদ  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত হাদীদ  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত হাদীদ  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত হাদীদ  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত হাদীদ  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত হাদীদ  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত হাদীদ  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত হাদীদ  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত হাদীদ  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত হাদীদ  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত হাদীদ  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত হাদীদ  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত হাদীদ  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত হাদীদ  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত হাদীদ  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত হাদীদ  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত হাদীদ  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত হাদীদ  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত হাদীদ  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত হাদীদ  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত হাদীদ  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত হাদীদ  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Friday, November 22, 2024

Please remember us in your sincere prayers