কোরান সূরা লুকমান আয়াত 30 তাফসীর
﴿ذَٰلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ وَأَنَّ مَا يَدْعُونَ مِن دُونِهِ الْبَاطِلُ وَأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْعَلِيُّ الْكَبِيرُ﴾
[ لقمان: 30]
এটাই প্রমাণ যে, আল্লাহ-ই সত্য এবং আল্লাহ ব্যতীত তারা যাদের পূজা করে সব মিথ্যা। আল্লাহ সর্বোচ্চ, মহান। [সূরা লুকমান: 30]
Surah Luqman in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Luqman ayat 30
এটিই, কেননা নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ -- তিনিই চরম সত্য, আর কেননা তাঁকে বাদ দিয়ে তারা যাকে ডাকে তা মিথ্যা, আর কেননা আল্লাহ্, -- তিনিই সমুচ্চ, মহামহিম।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৩০. এহেন পরিচালনা ও নির্ধারণ সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহই একক সত্য। তিনি তাঁর সত্তায়, গুণে ও কাজে সত্য। পক্ষান্তরে মুশরিকরা আল্লাহর পরিবর্তে যার এবাদত করে তা বাতিল; তার কোন ভিত্তি নেই। বস্ততঃ আল্লাহ তাঁর সত্তা, প্রতিপত্তি ও সকল সৃষ্টির উপর ক্ষমতায় সমুন্নত। যাঁর উপরে অন্য কিছুই নেই; তিনিই সব কিছুর উপরে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
এগুলি প্রমাণ করে যে, আল্লাহই ধ্রুব সত্য এবং ওরা তাঁর পরিবর্তে যাকে ডাকে, তা মিথ্যা।[১] আর নিশ্চয় আল্লাহ তিনিই সুউচ্চ, সুমহান। [২] [১] অর্থাৎ, এ সকল ব্যবস্থাপনা ও নিদর্শন আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা বুঝতে পারো যে, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের পরিচালক একমাত্র আল্লাহ তাআলা। যার আদেশ ও ইচ্ছায় এ সব কিছু নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়ে থাকে এবং তিনি ছাড়া সব উপাস্যই বাতিল। অর্থাৎ তাদের কারোর নিকট কোন এখতিয়ার বা শক্তিই নেই; বরং সকলে তাঁর মুখাপেক্ষী। কারণ সবই তাঁর সৃষ্টি ও সবাই তাঁর অধীনস্থ। তাদের মধ্যে কেউ অণু পরিমাণও কিছু নড়াবার ক্ষমতা রাখে না। [২] না তাঁর তুলনায় বড় মর্যাদাবান কেউ আছে এবং না তাঁর মত মহান কেউ আছে। বরং তাঁর সুউচ্চ মর্যাদা ও মহত্ত্বের সামনে সব কিছু তুচ্ছ ও হীন।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
এগুলো প্রমাণ যে, আল্লাহ্ তিনিই সত্য [ ১ ] এবং তারা তাঁকে ছাড়া যাকে ডাকে, তা মিথ্যা [ ২ ]। আর নিশ্চয় আল্লাহ্, তিনি তো সর্বোচ্চ [ ৩ ], সুমহান। [ ১ ] অর্থাৎ প্রকৃত সার্বভৌম ক্ষমতাধর কর্তা, সৃষ্টি ও পরিচালনা ব্যবস্থাপনার আসল ও একচ্ছত্র মালিক হচ্ছেন মহান আল্লাহ। [ মুয়াসসার ] [ ২ ] অর্থাৎ তারা সবাই নিছক তোমাদের কাল্পনিক ইলাহ। তোমরা কল্পনার জগতে বসে ধারণা করে নিয়েছো যে, অমুকজন আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতার অংশীদার এবং অমুক মহাত্মা সংকট নিরসন ও অভাব মোচন করার ক্ষমতা রাখেন। অথচ প্রকৃতপক্ষে তাদের কেউ কোন কিছুই করার ক্ষমতা রাখে না। [ ইবন কাসীর ] [ ৩ ] অর্থাৎ প্রত্যেকটি জিনিসের উর্ধে এবং সবার শ্রেষ্ঠ। তাঁর সামনে সব জিনিসই নীচু। [ ইবন কাসীর ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
২৯-৩০ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তা'আলা খবর দিচ্ছেন ও রাত্রিকে কিছু ছোট করে দিবসকে বাড়িয়ে দেয়া এবং দিবসকে কিছু ছোট করে রাত্রিকে বাড়িয়ে দেয়া আমারই কাজ। শীতের দিনে রাত্রি বড় ও দিন ছোট এবং গ্রীষ্মকালে দিন বড় ও রাত্রি ছোট হওয়া আমারই শক্তির প্রমাণ। চন্দ্র-সূর্যের চক্র ও আবর্তন আমারই আদেশক্রমে হয়ে থাকে। এগুলো নির্ধারিত স্থানের দিকেই চলে। নিজ স্থান থেকে এতোটুকুও এদিক ওদিক যেতে পারে না। হযরত আবু যার ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাঁকে বলেনঃ “ হে আবু যার ( রাঃ ) । এই সূর্য কোথায় যায় তা তুমি জান কি?” উত্তরে তিনি বলেনঃ “ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ( সঃ )-ই খুব ভাল জানেন ।” তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ এটা গিয়ে আল্লাহর আরশের নীচে সিজদায় পড়ে যায় এবং স্বীয় প্রতিপালকের কাছে অনুমতি প্রার্থনা করতে থাকে । এটা খুব নিকটবর্তী যে, একদিন তাকে বলে দেয়া হবে- “ যেখান হতে এসেছে সেখানে ফিরে যাও ।” ( এ হাদীসটি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে )হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, সূর্য ‘সাফিয়াহ’ ( পশ্চাৎ ভাগের ফৌজ )-এর ন্যায় কাজ করে। দিনে নিজের চক্রের কাজে লেগে থাকে, তারপর অস্তমিত হয়ে আবার রাত্রে যমীনের নীচে চলে গিয়ে ঘুরতে থাকে। অতঃপর পরের দিন আবার সকালে উদিত হয়। এভাবেই চাঁদও কাজ করতে থাকে।মহান আল্লাহ বলেনঃ তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে অবহিত। যেমন অন্য জায়গায় তিনি বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ তুমি কি জান না যে, আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তিনি জানেন?” ( ২২:৭০ ) তিনি সবারই সৃষ্টিকর্তা এবং সবারই খবর তিনিই রাখেন । যেমন তিনি বলেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ আল্লাহ তিনিই যিনি সৃষ্টি করেছেন সপ্ত আকাশ এবং অনুরূপ সংখ্যক যমীন ।” ( ৬৫:১২ )।মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ এগুলো এরই প্রমাণ যে, আল্লাহই সত্য এবং তারা তাঁর পরিবর্তে যাকে ডাকে তা মিথ্যা। আল্লাহ, তিনি তো সমুচ্চ, মহান। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন এবং সবাই তারই মুখাপেক্ষী। সবাই তার সৃষ্ট এবং তাঁর দাস। কারো এ ক্ষমতা নেই যে, তাঁর হুকুম ছাড়া একটি অণুকে নড়াতে পারে। একটি মাছি সৃষ্টি করার জন্যে যদি সমস্ত দুনিয়াবাসী একত্রিত হয় তবুও তারা তাতে অপারগ হয়ে যাবে। এ জন্যেই মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ এগুলো এটাই প্রমাণ করে যে, আল্লাহই সত্য এবং তারা তাঁর পরিবর্তে যাকে ডাকে তা মিথ্যা। আল্লাহ সমুচ্চ ও মহান। তার উপর কারো কোন কর্তৃত্ব চলে না। তাঁর কাছে সবাই হেয় ও তুচ্ছ।
সূরা লুকমান আয়াত 30 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তাড়াতাড়ি শিখে নেয়ার জন্যে আপনি দ্রুত ওহী আবৃত্তি করবেন না।
- স্বাদ গ্রহণ কর, তুমি তো সম্মানিত, সম্ভ্রান্ত।
- আমি আল্লাহর উপর নিশ্চিত ভরসা করেছি যিনি আমার এবং তোমাদের পরওয়ারদেগার। পৃথিবীর বুকে বিচরণকারী এমন
- কিন্তু যারা এরপর তওবা করে এবং সংশোধিত হয়, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান।
- হে বস্ত্রাবৃত!
- অতঃপর ফেরাউন পরিবার মূসাকে কুড়িয়ে নিল, যাতে তিনি তাদের শত্রু ও দুঃখের কারণ হয়ে যান।
- যারা কুফর করে ও আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে এবং সেই মসজিদে হারাম থেকে বাধা
- কিরূপে? তারা তোমাদের উপর জয়ী হলে তোমাদের আত্নীয়তার ও অঙ্গীকারের কোন মর্যাদা দেবে না। তারা
- আমি যতবারই তাদেরকে দাওয়াত দিয়েছি, যাতে আপনি তাদেরকে ক্ষমা করেন, ততবারই তারা কানে অঙ্গুলি দিয়েছে,
- তোমরা কি বিষয়ে বিতর্ক করবে যা সে দেখেছে?
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা লুকমান ডাউনলোড করুন:
সূরা Luqman mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Luqman শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
لا تنسنا من دعوة صالحة بظهر الغيب