কোরান সূরা রা'দ আয়াত 31 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Raad ayat 31 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা রা'দ আয়াত 31 আরবি পাঠে(Raad).
  
   

﴿وَلَوْ أَنَّ قُرْآنًا سُيِّرَتْ بِهِ الْجِبَالُ أَوْ قُطِّعَتْ بِهِ الْأَرْضُ أَوْ كُلِّمَ بِهِ الْمَوْتَىٰ ۗ بَل لِّلَّهِ الْأَمْرُ جَمِيعًا ۗ أَفَلَمْ يَيْأَسِ الَّذِينَ آمَنُوا أَن لَّوْ يَشَاءُ اللَّهُ لَهَدَى النَّاسَ جَمِيعًا ۗ وَلَا يَزَالُ الَّذِينَ كَفَرُوا تُصِيبُهُم بِمَا صَنَعُوا قَارِعَةٌ أَوْ تَحُلُّ قَرِيبًا مِّن دَارِهِمْ حَتَّىٰ يَأْتِيَ وَعْدُ اللَّهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ لَا يُخْلِفُ الْمِيعَادَ﴾
[ الرعد: 31]

যদি কোন কোরআন এমন হত, যার সাহায্যে পাহাড় চলমান হয় অথবা যমীন খন্ডিত হয় অথবা মৃতরা কথা বলে, তবে কি হত? বরং সব কাজ তো আল্লাহর হাতে। ঈমানদাররা কি এ ব্যাপারে নিশ্চিত নয় যে, যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে সব মানুষকে সৎপথে পরিচালিত করতেন? কাফেররা তাদের কৃতকর্মের কারণে সব সময় আঘাত পেতে থাকবে অথবা তাদের গৃহের নিকটবর্তী স্থানে আঘাত নেমে আসবে, যে, পর্যন্ত আল্লাহর ওয়াদা না আসে। নিশ্চয় আল্লাহ ওয়াদার খেলাফ করেন না। [সূরা রা'দ: 31]

Surah Ar-Rad in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Raad ayat 31


আর যদি এমন একখানা কুরআন থাকত যার দ্বারা পাহাড়গুলো হটিয়ে দেয়া যেতো, অথবা তার দ্বারা পৃথিবীকে ছিন্নভিন্ন করা যেতো, অথবা মৃতকে তার দ্বারা কথা বলানো যেতো। বস্তুতঃ হুকুম পুরোপুরি আল্লাহ্‌র। যারা বিশ্বাস করেছে তারা কি জানে না যে, যদি আল্লাহ্ তেমন ইচ্ছে করতেন তবে সব মানুষকে একই সাথে সৎপথে চালিত করতেন? আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা যা করে সেজন্য তাদের উপরে বিপর্যয় আঘাত হানতে ক্ষান্ত হবে না, অথবা এটি তাদের বাড়িঘরের নিকটেই আপতিত হতে থাকবে, যে পর্যন্ত না আল্লাহ্‌র ওয়াদা সমাগত হয়। আল্লাহ্ আলবৎ ওয়াদা খেলাপ করেন না।


Tafsir Mokhtasar Bangla


৩১. হে রাসূল! যদি কোন আসমানী কিতাবের এমন বৈশিষ্ট্য হতো যে, তার মাধ্যমে পাহাড়গুলোকে নিজ জায়গা থেকে সরিয়ে দেয়া হতো অথবা তার মাধ্যমে জমিন ফাটিয়ে সেটিকে নদী ও নালায় রূপান্তরিত করা হতো কিংবা মৃতদের উপর সেটিকে পড়ে তাদেরকে জীবিত করা হতো তাহলে আপনার উপর নাযিলকৃত এ কুর‘আনই তা হতো। কারণ, এটি হলো সুস্পষ্ট দলীল এবং অতীব প্রভাবশালী। যদি তারা আন্তরিকভাবে আল্লাহভীরু হতো তাহলে উপলব্ধি করতে পারতো। কিন্তু তারা তো অস্বীকারকারী। আসলে মু’জিযা বা অলৌকিক ঘটনা নাযিলের সকল ব্যাপারই আল্লাহর হাতে। আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসীরা কি জানে না যে, আল্লাহ তা‘আলা যদি কোন নিদর্শন ছাড়াই সকল মানুষের হিদায়েত চাইতেন তাহলে তিনি এসব ছাড়াই সবাইকে হিদায়েত দিতে পারতেন? তবে তিনি তা চাননি। যারা আল্লাহর সাথে কুফরি করেছে তাদের উপর নিজেদের কুফরি ও গুনাহের দরুন আঘাতকারী কঠিন বিপদ আসতেই থাকে অথবা সে বিপদ তাদের ঘরের কাছেই নাযিল হয়। যতক্ষণ না লাগাতার আযাব নাযিলের আল্লাহর ওয়াদা এসে পড়ে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা যখন তাঁর ওয়াদা বাস্তবায়নের নির্দিষ্ট সময় চলে আসে তখন তা থেকে পিছপা হন না।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


যদি কোন কুরআন এমন হত, যার দ্বারা পর্বতকে গতিশীল করা যেত অথবা পৃথিবীকে বিদীর্ণ করা যেত অথবা মৃতের সাথে কথা বলা যেত, ( তবুও তারা তাতে বিশ্বাস করত না )। বরং সমস্ত বিষয়ই আল্লাহর এখতিয়ারভুক্ত।[১] তবে কি যারা বিশ্বাস করেছে তাদের প্রত্যয় হয়নি যে, আল্লাহ ইচ্ছা করলে নিশ্চয় সকলকে সৎপথে পরিচালিত করতে পারতেন; যারা অবিশ্বাস করেছে তাদের কর্মফলের জন্য তাদের বিপর্যয় ঘটতেই থাকবে অথবা বিপর্যয় তাদের আশে পাশে আপতিত হতেই থাকবে;[২] যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহর প্রতিশ্রুতি এসে উপস্থিত হবে।[৩] নিশ্চয় আল্লাহ প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম করেন না। [১] ( 'কোন কুরআন' থেকে বুঝা যায়, কুরআন একাধিক। ) ইমাম ইবনে কাসীর বলেন, প্রত্যেক আসমানী গ্রন্থকে কুরআন বলা হয়। যেমন একটি হাদীসে এসেছে যে, " দাউদ ( আঃ ) সওয়ারী প্রস্তুত করার হুকুম দিতেন, এবং এই অবসরে কুরআনের অযীফা পড়ে নিতেন। ( বুখারী, আম্বিয়া অধ্যায় ) এখানে স্পষ্ট যে কুরআনের অর্থ যাবূর। আয়াতের অর্থ এই যে, যদি পূর্বে কোন আসমানী গ্রন্থ অবতীর্ণ হত, যা শুনে পাহাড় চলতে আরম্ভ করত অথবা পৃথিবীর পথ-দূরত্ব কমে আসত ( অথবা ভূমি বিদীর্ণ করে নদী সৃষ্টি হত ) অথবা মৃতেরা কথা বলত, তাহলে কুরআন কারীমের মধ্যে এই বৈশিষ্ট্য উত্তম রূপে পাওয়া যেত। কেননা কুরআন পূর্ববর্তী সমস্ত গ্রন্থের তুলনায় মু'জিযা এবং সাহিত্য-শৈলীতে উচ্চতর। কেউ কেউ এর অর্থ বলেছেন যে, যদি কুরআনের মাধ্যমে উক্ত মু'জিযাগুলি প্রকাশ পেত, তবুও এই কাফেররা ঈমান আনয়ন করত না, কেননা কারো ঈমান আনয়নের ব্যাপার আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল; মু'জিযার উপর নয়। তাই বলেছেন, "সমস্ত বিষয় আল্লাহর এখতিয়ারভুক্ত।" [২] যা তারা দেখতে অথবা জানতে অবশ্যই পারবে, যেন তারা উপদেশ গ্রহণ করতে পারে। [৩] অর্থাৎ, কিয়ামত চলে আসবে অথবা মুসলিমরা পূর্ণ বিজয় লাভ করবে।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


আর যদি কুরআন এমন হত যা দ্বারা পৰ্বতকে গতিশীল করা যেত অথবা যমীনকে টুকরো টুকরো করা যেত অথবা মৃতের সাথে কথা বলা যেত [], কিন্তু সববিষয়ই আল্লাহ্‌র ইখতিয়ারভুক্ত []। তবে কি যারা ঈমান এনেছে তারা জানে না [] যে, আল্লাহ্ ইচ্ছে করলে সবাইকেই সৎ পথে পরিচালিত করতে পারতেন? আর যারা কুফরী করেছে তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে তাদের বিপর্যয় ঘটতেই থাকবে, অথবা বিপর্যয় তাদের আবাসের আশেপাশে আপতিত হতেই থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি এসে পড়বে []। নিশ্চয় আল্লাহ্ প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম করেন না []। [] এখানে উত্তর উহ্য আছে। কিন্তু উহ্য পদটি নির্ধারণে বিভিন্ন মত এসেছে। এক, কোন কোন মুফাসসির বলেন, আয়াতের অর্থ হবেঃ ‘যদি কুরআন এমন হত যা দ্বারা পর্বতকে গতিশীল করা যেত অথবা যমীনকে বিদীর্ণ করা যেত অথবা মৃতের সাথে কথা বলা যেত, তবুও তারা তাতে বিশ্বাস করত না, তারা রহমানের সাথে কুফরী করত’। [ কুরতুবী ] পূর্ববর্তী আয়াতে বলা হয়েছে, “ আর তারা রহমানের সাথে কুফরী করছে” এ বাক্যটি উপরোক্ত অর্থের স্বপক্ষে জোরালো দলীল । দুই, কোন কোন মুফাসসির বলেন, আয়াতের অর্থ হবেঃ ‘যদি কোন কুরআন এমন হত যা দ্বারা পর্বতকে গতিশীল করা যেত অথবা পৃথিবীকে বিদীর্ণ করা যেত অথবা মৃতের সাথে কথা বলা যেত তা হলে তা এ কুরআনই হতো’। [ কুরতুবী; ইবন কাসীর ] কারণ, এ কুরআনে নিহিত রয়েছে চ্যালেঞ্জ। জিন ও মানব এর মত বা এর একটি সূরার মত কিছু আনতে অপারগ। সে হিসেবে কুরআন শব্দ দ্বারা পূর্ববর্তী সমস্ত কিতাবকেই বুঝানো হবে। পবিত্র কুরআনের অন্যত্র ‘কুরআন’ শব্দটিকে পূর্ববর্তী গ্রন্থ সমূহের জন্যও ব্যবহার করা হয়েছে। বলা হয়েছেঃ “ যেভাবে আমরা নাযিল করেছিলাম বিভক্তকারীদের উপর; যারা কুরআনকে বিভিন্নভাবে বিভক্ত করেছে ।” [ সূরা আল-হিজরঃ ৯০-৯১ ] আবার কোন কোন সহীহ হাদীসেও পূর্ববর্তী কোন কোন কিতাবকে কুরআন নাম দেয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দাউদ আলাইহিসসালামের উপর পড়াকে এতই সহজ করে দেয়া হয়েছিল যে, তিনি তার বাহনের লাগাম লাগানোর নির্দেশ দিতেন। আর তা লাগানোর পূর্বেই তার কুরআন পড়া শেষ হয়ে যেত”। [ বুখারীঃ ৩৪১৭ ] এখানে কুরআন বলে নিঃসন্দেহে তার কাছে নাযিলকৃত কিতাব যাবূরকেই বুঝানো হয়েছে। অর্থের দিক থেকেও পূর্ববর্তী গ্রন্থসমূহকে কুরআন বলা যায়। কারণ, কুরআন শব্দের অর্থ, জমা করা। সে সমস্ত গ্রন্থসমূহে আয়াত জমা করার পর তা কুরআনে পরিণত হয়েছে। [ ইবন কাসীর ] এ অর্থের আরেকটি দলীল হলোঃ ( قُرْاٰنًا ) শব্দের ( تنوين ) কারণ, এ তানভীনকে ( تنكير ) হলে তা আমাদের পরিচিত কুরআনকে বুঝানো হয়নি বলেই ধরে নিতে হয়। [] মূলত: এর কারণ হচ্ছে, সবকিছু আল্লাহ্ তা’আলার নিয়ন্ত্রণে। তিনি চাইলে তা হবে আর না চাইলে হবে না। তিনি যার হিদায়াত চান তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারবে না। আর তিনি যার ভ্রষ্টতা চান তাকে কেউ হিদায়াত দিতে পারবে না। [ ইবন কাসীর ] কারণ, তারা যে সব মু’জিযা প্রত্যক্ষ করেছে, সেগুলো এর চাইতে কম ছিল না। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইশারায় চন্দ্রের দ্বিখণ্ডিত হওয়া, পাহাড়ের স্বস্থান থেকে সরে যাওয়া এবং বায়ুকে আজ্ঞাবহ করার চাইতে অনেক বেশী বিস্ময়কর। এমনিভাবে নিষ্প্রাণ কংকরের কথা বলা এবং তাসবীহ্ পাঠ করা কোন মৃত ব্যক্তির জীবিত হয়ে কথা বলার চাইতে অধিকতর বিরাট মু’জিযা। মি’রাজের রাত্রিতে মসজিদুল আকসা, অতঃপর সেখান থেকে নভোমণ্ডলের সফর এবং সংক্ষিপ্ত সময়ে প্রত্যাবর্তন, সুলাইমান ‘আলাইহিসসালামের বায়ুকে বশ করার মু’জিযার চাইতে অনেক মহান। কিন্তু যালেমরা এগুলো দেখার পরও বিশ্বাস স্থাপন করেনি। [] আয়াতের মূলশব্দ হচ্ছে, ( يَايْـــــئـسِ ) শব্দটির যে অর্থ উপরে উল্লেখ করা হয়েছে তা আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে সহীহ সনদে বর্ণিত হয়েছে। [ আত-তাফসীরুস সহীহ ] সে অনুসারে অর্থ হবে, ঈমানদারগণ কি জানে না যে, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে সমস্ত মানুষকেই নিদর্শন দেখানো ছাড়াই হিদায়াত দিয়ে দিতে পারেন? [ কুরতুবী ] তাছাড়া শব্দটির অন্য আরেকটি অর্থ হলো, নিরাশ হওয়া। তখন আয়াতের ভাবার্থ এভাবে বলতে হবে যে, মুসলিমগণ মুশরিকদের হঠকারিতা দেখা ও জানা সত্বেও কি এখন পর্যন্ত তাদের ঈমানের ব্যাপারে নিরাশ হয়নি? আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে সমস্ত মানুষকেই হেদায়েত প্রদান করতেন। কারণ, মুসলিমরা কাফেরদের পক্ষ থেকে বার বার নিদর্শন দেখাবার দাবী শুনতো। ফলে তাদের মন অস্থির হয়ে উঠতো। তারা মনে করতো, আহা, যদি এদেরকে এমন কোন নিদর্শন দেখিয়ে দেয়া হতো যার ফলে এরা মেনে নিতো, তাহলে কতই না ভালো হতো! [ কুরতুবী ] বস্তুত: যারা কুরআনের শিক্ষাবলীতে, বিশ্ব-জগতের নিদর্শনসমূহের মধ্যে, নবীর পবিত্র-পরিচ্ছন্ন জীবনে, সাহাবায়ে কেরামের পবিত্র জীবনধারায় কোন সত্যের আলো দেখতে পাচ্ছে না, তোমরা কি মনে করো তারা পাহাড়ের গতিশীল হওয়া, মাটি ফেটে চৌঁচির হয়ে যাওয়া এবং কবর থেকে মৃতদের বের হয়ে আসার মত অলৌকিক ঘটনাবলীতে কোন আলোর সন্ধান পাবে? আবুল আলীয়া বলেন, এর অর্থ অবশ্যই ঈমানদাররা তাদের হিদায়াত সম্পর্কে নিরাশ হয়েছে, তবে আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে তাদের সবাইকেই তিনি হিদায়াত দিতে পারেন। [ ইবন কাসীর ] [] ( قَارِعَةٌ ) শব্দ দ্বারা উদ্দেশ্য, আকাশ থেকে শাস্তি নাযিল হওয়া। অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া [ ইবন কাসীর ] অথবা এর অর্থ, বিপদাপদ। [ ইবন কাসীর ] অর্থাৎ তাদের উপর আপদ-বিপদের এ ধারা অব্যাহতই থাকবে, যে পর্যন্ত আল্লাহ্ তা’আলার ওয়াদা পূর্ণ না হয়ে যায়। কারণ, আল্লাহ্‌র ওয়াদা কোন সময়ই টলতে পারে না। ওয়াদা বলে এখানে মক্কা বিজয় বুঝানো হয়েছে। [ ইবন কাসীর ] উদ্দেশ্য এই যে, তাদের উপর বিভিন্ন প্রকার আপদ আসতে থাকবে। এমন কি, পরিশেষে মক্কা বিজিত হবে এবং তারা সবাই পরাজিত ও পর্যুদস্ত হয়ে যাবে। তবে হাসান বসরীর মতে, ওয়াদার অর্থ এ স্থলে কেয়ামতও হতে পারে। [ ইবন কাসীর ] এ ওয়াদা সব নবীগণের সাথে সব সময়ই করা আছে। ওয়াদাকৃত সেই কেয়ামতের দিন প্রত্যেক কাফের ও অপরাধী কৃতকর্মের পুরোপুরি শাস্তি ভোগ করবে। [] অর্থাৎ তিনি রাসূলদের সাথে যে সমস্ত ওয়াদা করেছেন সেটা তিনি ভঙ্গ করেন না। তিনি তাদেরকে ও তাদের অনুসারীদেরকে সাহায্য সহযোগিতার যে ওয়াদা করেছেন তা অবশ্যই ঘটবে। চাই তা দুনিয়াতে হোক বা আখেরাতে। [ ইবন কাসীর ] অন্য আয়াতেও আল্লাহ্ সেটা বলেছেন, “ সুতরাং আপনি কখনো মনে করবেন না যে, আল্লাহ্ তাঁর রাসূলগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন । নিশ্চয় আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী”। [ সূরা ইবরাহীম: ৪৭ ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


এখানে আল্লাহ তাআ’লা স্বীয় পবিত্র গ্রন্থ কুরআনের প্রশংসা করছেন যে, যদি পূর্ববর্তী আসমানী গ্রন্থসমূহের কোনটার সাথে পাহাড় স্বীয় স্থান থেকে সরে গিয়ে থাকতো, যমীন বিদীর্ণ হয়ে থাকতো এবং মৃত কথা বলে থাকতো, তবে এই কুরআনই তো এ কাজের বেশী যোগ্য ছিল। কেননা, এটা পূর্ববর্তী সমস্ত আসমানী কিতাবের উপর শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে। এতে তো এই মু’জিযা রয়েছে যে, সমস্ত দানব ও মানব মিলিত হয়েও এর সূরার মত একটি সূরাও রচনা করতে পারে নাই। তথাপি মুশরিকরা এই কুরআনকেও অস্বীকার করছে। তা হলে সব দায়িত্ব আল্লাহ তাআ’লার উপরই অর্পন করে দাও। তিনি সবকিছুরই ম’লিক। সবই তাঁর ইখতিয়ারভুক্ত। তিনি যা চান তা হয় এবং যা চান না তা হয় না। তিনি যাকে সুপথ প্রদর্শন করেন তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে না, আর তিনি যাকে পথভ্রষ্ট করেন তাকে কেউ পথ দেখাতে পারে না। এটা স্মরনযোগ্য বিষয় যে, পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবগুলির উপরও কুরআনের প্রয়োগ হয়ে থাকে। কেননা, এটা সবটা থেকেই মুশতাক বা নির্গত। হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ হযরত দাউদের ( আঃ ) উপর কুরআনকে এতো সহজ করে দেয়া হয়েছিল যে, তাঁর নির্দেশক্রমে সওয়ারী কষা হতো এবং ওটা প্রস্তুত হয়ে যাওয়ার পূর্বেই তিনি কুরআন খতম করে ফেলতেন । তিনি স্ব হস্তের উপার্জন ছাড়া কিছুই খেতেন না।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম বুখারী ( রঃ ) একাকী তাখরীজ করেছেন)সুতরাং এখানে কুরআন দ্বারা যাবুরকে বুঝানো হয়েছে।মহান আল্লাহ বলেনঃ তবে কি মুমিনমু’মিনদের এখনও এ বিশ্বাস হয়নি যে, সমস্ত মানুষ ঈমান আনবে না? তাদের কি এ বিশ্বাসও হয়নি যে, আল্লাহ তাআ’লার ইচ্ছা হলে পৃথিবীর সমস্ত মানুষ ঈমান আনয়ন করতো। তারা আল্লাহ তাআ’লার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করতে পারে কি? এই কুরআনের পরে আর কোন মু’জিযার প্রয়োজন আছে কি? এর চেয়ে উত্তম, এর চেয়ে স্পষ্ট, এর চেয়ে পরিষ্কার এবং এর চেয়ে বেশি মনকে আকর্ষণকারী আর কোন কালাম হবে? এটা এমনই এক গ্রন্থ যে, যদি এটা বড় বড় পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ হতো তবে সেগুলি আল্লাহর ভয়ে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যেতো। সহীহ হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ প্রত্যেক নবীকে এইরূপ জিনিস দেয়া হয়েছে যে, লোকেরা ওর উপর ঈমান এনেছে । আমার এই রূপ জিনিস হচ্ছে সেই ওয়াহী যা আল্লাহ তাআ’লা আমার প্রতি অবতীর্ণ করেছেন। সুতরাং আমি আশা রাখি যে, সমস্ত নবী অপেক্ষা আমার অনুগামী বেশি হবে।” ভাবার্থ এই যে, সমস্ত নবীর মু'জিযা তাঁদের বিদায়ের সাথে সাথেই বিদায় হয়ে গেছে। কিন্তু তার মু'জিযা তত দিন শেষ হবে না যতদিন দুনিয়া থাকবে। না এর বিষ্ময়কর বিষয়গুলি শেষ হবে, অধিক পঠনের কারণে এটা ( কুরআন কারীম ) পুরানো হবে, না এর থেকে আলেমদের চাহিদা মিটে যাবে বা তাদের পেট পূর্ণ হয়ে যাবে। নিশ্চয় এটা মীমাংসাকারী বাণী এবং এটা নিরর্থক নয়। যে অবাধ্য একে পরিত্যাগ করবে, আল্লাহ তাআ’লা তাকে ধ্বংস করবেন। যে এটা ছাড়া অন্য কিছুতে হিদায়াত অনুসন্ধান করবে, আল্লাহ তাআ’লা তাকে পথভ্রষ্ট করবেন। হযরত আবু সাঈদ খুদরী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, কাফিররা রাসূলুল্লাহকে ( সঃ ) বলেঃ “ যদি আপনি পাহাড়কে এখান থেকে সরিয়ে দেন এবং এখানকার ভূমিকে ফসল উৎপাদনের যোগ্য করে দিতে পারেন, অথবা যেমনভাবে হযরত সুলাইমান ( আঃ ) বাতাস দ্বারা তার কওমের জন্যে মাটি কাটতেন তেমনিভাবে যদি আপনি আমাদের জন্যে মাটি কাটতে পারেন, অথবা যদি আপনি আমাদের জন্যে মৃতকে জীবিত করেন যেমন হযরত ঈসা ( আঃ ) তাঁর কওমের জন্যে করতেন ( তবে আমরা ঈমান আনবো )” তখন আল্লাহ তাআ’লা এই আয়াত অবতীর্ণ করেন। কাতাদা’ ( রঃ ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছেঃ যদি কোন কুরআনের সাথে এসব বিষয় প্রকাশ পেতো তবে তোমাদের কুরআনের সাথেও পেতো। সব কিছুই তাঁর অধিকারে রয়েছে। কিন্তু তিনি এরূপ করেন না। কারণ তার উদ্দেশ্য হচ্ছে তোমাদেরকে পরীক্ষা করা যে, তোমরা নিজেদের ইচ্ছায় ঈমান আন কি আন না।আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ “ তবে কি ঈমানদারদের প্রত্যয় হয় নাই যে, আল্লাহ ইচ্ছা করলে নিশ্চয় সকলকেই সৎপথে পরিচালিত করতে পারতেন? অন্য জায়গায় ( আরবি ) এর ( আরবি ) স্থলে ও রয়েছে । মু'মিনরা ঐ কাফিরদের হিদায়াত থেকে নিরাশ হয়ে গিয়েছিল। হাঁ, তবে আল্লাহ তাআ’লার ইখতিয়ারের ব্যাপারে কারো কিছু বলার নাই। ইচ্ছা করলে তিনি সকলকেই সুপথ প্রদর্শন করতে পারেন। এটা কাফিররা বরাবর লক্ষ্য করে। এসেছে যে, তাদের মিথ্যা প্রতিপন্ন করার কারণে আল্লাহ তাআ’লা বরাবরই তাদের উপর শাস্তি আপতিত করতে থেকেছেন বা তাদের আশে পাশেই বিপর্যয় আপতিত করতেই থেকেছেন। তবুও তারা কেন উপদেশ গ্রহণ করছে না? যেমন আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ অবশ্যই আমি তোমাদের চতুষ্পর্শ্বের বহু গ্রামবাসীকে তাদের দুষ্কর্মের কারণে ধ্বংস করে দিয়েছি এবং আমার বিভিন্ন প্রকারের নিদর্শনাবলী প্রকাশ করেছি যে, হয়তো তারা দুষ্কর্ম থেকে বিরত থাকবে।” ( ৪৬: ২৭ ) আর এক জায়গায় আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ তারা কি দেখে নাই যে, আমি যমীনকে কমিয়ে দিয়ে আসছি, তবুও কি এখনও তারা নিজেদেরকেই বিজয়ী মনে করবে?” ( ২১: ৪৪ )( আরবি ) এর ( আরবি ) বা কর্তা হচ্ছে শব্দটি । এটাই প্রকাশমান এবং বাকরীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কিন্তু হযরত ইবনু আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, এর অর্থ হচ্ছেঃ কাফিরদের কর্মফলের কারণে তাদের কাছে পৌঁছে যাবে ক্ষুদ্র ইসলামী সেনাবাহিনী অথবা তুমি ( মুহাম্মদ সঃ ) নিজেই তাদের শহরের নিটকবর্তী স্থানে অবতরণ করবে যতক্ষণ না আল্লাহর প্রতিশ্রুতি এসে পড়ে। এর দ্বারা মক্কা বিজয়কে বুঝানো হয়েছে। হযরত ইবনু আব্বাস ( রাঃ ) হতেই বর্ণিত আছে যে, ( আরবি ) দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে আসমানী শাস্তি এবং আশে পাশে অবতরণ করা দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে হযরত মুহাম্মদের ( সঃ ) তাঁর সেনাবাহিনীসহ তাদের সীমান্ত এলাকায় পৌঁছে যাওয়া এবং তাদের সাথে জিহাদ করা। মুজাহিদ ( রঃ ), কাতাদা’ ( রঃ ), ইকরামা ( রঃ ) প্রভৃতি গুরুজনও একথাই বলেছেন। তাঁদের সবারই উক্তি এটাই যে, এখানে আল্লাহর ওয়াদা দ্বারা মক্কা বিজয়কেই বুঝানো হয়েছে। কিন্তু হাসান বসরী ( রঃ ) বলেন যে, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে কিয়ামতের দিন। আল্লাহর প্রতিশ্রুতি হচ্ছে স্বীয় রাসূলদেরকে সাহায্য করা। এর ব্যতিক্রম হবার নয়। তাঁরা এবং তাঁদের অনুসারীরা অবশ্য অবশ্যই উর্ধে থাকবেন। যেমন আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ আল্লাহ তাঁর রাসূলদের সাথে কৃত ওয়াদার খেলাফ করবেন তা তুমি ধারণা করো না, নিশ্চয় আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, দণ্ডদাতা ।( ১৪:৪৭ )

সূরা রা'দ আয়াত 31 সূরা

ولو أن قرآنا سيرت به الجبال أو قطعت به الأرض أو كلم به الموتى بل لله الأمر جميعا أفلم ييأس الذين آمنوا أن لو يشاء الله لهدى الناس جميعا ولا يزال الذين كفروا تصيبهم بما صنعوا قارعة أو تحل قريبا من دارهم حتى يأتي وعد الله إن الله لا يخلف الميعاد

سورة: الرعد - آية: ( 31 )  - جزء: ( 13 )  -  صفحة: ( 253 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. নবী-পত্নীগণের জন্যে তাঁদের পিতা পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নি পুত্র, সহধর্মিনী নারী এবং অধিকার ভুক্ত দাসদাসীগণের
  2. অতঃপর এক প্রত্যুষে তাদের উপর একটা শব্দ এসে আঘাত করল।
  3. এবং যা তোমরা দেখ না, তার-
  4. তিনি জানেন যা তাদের সামনে আছে এবং যা পশ্চাতে আছে এবং সবকিছু আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তিত
  5. উত্তরে তাঁর কওম শুধু এ কথাটিই বললো, লূত পরিবারকে তোমাদের জনপদ থেকে বের করে দাও।
  6. অতএব, তোমরা উভয়ে তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে?
  7. সে ছিল আমার বিশ্বাসী বান্দাদের একজন।
  8. খোদাভীরুরা থাকবে জান্নাতে ও নির্ঝরিণীতে।
  9. আমি তোমাদের কাছে সত্যধর্ম পৌঁছিয়েছি; কিন্তু তোমাদের অধিকাংশই সত্যধর্মে নিস্পৃহ!
  10. তিনি পরিণামে যারা মুমিন ও সৎকর্ম পরায়ণ, তাদেরকে প্রতিদান দেবেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা রা'দ ডাউনলোড করুন:

সূরা Raad mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Raad শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত রা'দ  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত রা'দ  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত রা'দ  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত রা'দ  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত রা'দ  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত রা'দ  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত রা'দ  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত রা'দ  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত রা'দ  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত রা'দ  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত রা'দ  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত রা'দ  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত রা'দ  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত রা'দ  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত রা'দ  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত রা'দ  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত রা'দ  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত রা'দ  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত রা'দ  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত রা'দ  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত রা'দ  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত রা'দ  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত রা'দ  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত রা'দ  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত রা'দ  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Thursday, August 15, 2024

Please remember us in your sincere prayers