কোরান সূরা সাদ আয়াত 33 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Sad ayat 33 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা সাদ আয়াত 33 আরবি পাঠে(Sad).
  
   

﴿رُدُّوهَا عَلَيَّ ۖ فَطَفِقَ مَسْحًا بِالسُّوقِ وَالْأَعْنَاقِ﴾
[ ص: 33]

এগুলোকে আমার কাছে ফিরিয়ে আন। অতঃপর সে তাদের পা ও গলদেশ ছেদন করতে শুরু করল। [সূরা সাদ: 33]

Surah Saad in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Sad ayat 33


''ওদের আমার কাছে নিয়ে এসো।’’ তখন তিনি পা ও ঘাড় মালিশ করতে লাগলেন।


Tafsir Mokhtasar Bangla


৩৩. তোমরা আমার নিকট এসব ঘোড়া নিয়ে আস। এ নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে সেগুলোকে নিয়ে আসা হলে তিনি সেগুলোর পায়ের নলা ও গর্দানে তরবারী দ্বারা আঘাত করলেন।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


এইগুলিকে পুনরায় আমার সম্মুখে আনো।’ অতঃপর সে ওগুলির পা ও গর্দান ছেদন করতে লাগল। [১] [১] এই অনুবাদের পরিপ্রেক্ষিতে أَحْبَبْتُ ( ভালোবেসে ফেলেছি ) এর অর্থ آثَرْتُ ( প্রাধান্য দিয়ে ফেলেছি ) আর عَنْ এখানে عَلى এর অর্থে ব্যবহার হয়েছে। ( এর দ্বিতীয় অনুবাদ হলঃ আমি তো আমার প্রতিপালকের স্মরণ হতে বিমুখ হয়ে সম্পদ-প্রীতিতে মগ্ন হয়ে পড়েছি। ) আর تَوَارَتْ এর স্ত্রীলিঙ্গ কর্তৃকারক হল شَمْسٌ ( সূর্য ), যা আয়াতে পূর্বে উল্লিখিত হয়নি; কিন্তু বাগধারায় তা অনুমেয়। এই তফসীরের পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব আয়াতের ( مَسْحًا بِالسُّوْقِ وَالْاَعْنَاقِ ) এর অর্থও হবে যবেহ করা অর্থাৎ উদ্দেশ্য مَسْحًا بِالسَّيْفِ । সারমর্ম এই যে, অশ্বরাজি পরিদর্শন করতে গিয়ে সুলাইমান ( আঃ ) আসর নামাযের সময় অতিবাহিত করে ফেলেন অথবা তখন তিনি যে অযীফা করতেন তা ছুটে যায়। যার জন্য তিনি অনুতপ্ত হলেন এবং বলতে লাগলেন যে, আমি অশ্বরাজির মহব্বতে এমন মগ্ন হয়ে গেছি যে, সূর্য অস্তমিত হয়ে গেল এবং আমি আল্লাহর স্মরণ, নামায বা অযীফা থেকে অমনোযোগী হয়ে থেকে গেলাম। সুতরাং তার প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ তিনি সমস্ত অশ্বরাজি আল্লাহর রাস্তায় কুরবানী করে দিয়েছিলেন। ইমাম শাওকানী ও ইবনে কাসীর ( রঃ ) উক্ত তফসীরকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন। কোন কোন তফসীরবিদ এর আলাদা তফসীর করেছেন। তাঁদের তফসীর অনুযায়ী عَنْ أَجَلٌ এর অর্থে ব্যবহূত হয়েছে। ِأي: لأَجَلِ ذِكْرِ رَبِّيْ অর্থাৎ আমার পালনকর্তার স্মরণের উদ্দেশ্যেই আমি এই অশ্বরাজির প্রতি মহব্বত রাখি। কারণ তার দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ হয়। অতঃপর তিনি অশ্বরাজিকে দৌড়ালেন। সুতরাং তারা তাঁর দৃষ্টি থেকে উধাও হয়ে গেল। তিনি এগুলোকে পুনরায় সামনে উপস্থিত করার আদেশ দিলেন। তাঁর নিকট পুনরায় উপস্থিত করা হলে তিনি মহব্বতের সাথে তাদের গর্দানে ও পায়ে হাত বুলাতে লাগলেন। خَيْرٌ শব্দটি কুরআনে সম্পদের অর্থে ব্যবহার হয়েছে। কিন্তু এখানে এই শব্দটি অশ্বরাজির অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। تَوَارَتْ শব্দের কর্তৃকারক অশ্বরাজি বলা হয়েছে। ইমাম ইবনে জারীর ত্বাবারী ( রঃ ) এই দ্বিতীয় তফসীরকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন এবং এই তফসীরই বিভিন্ন দিক দিয়ে সহীহ মনে হচ্ছে। আর আল্লাহই ভালো জানেন।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


এগুলোকে আমার কাছে ফিরিয়ে আন।' তারপর তিনি ওগুলোর পা এবং গলা ছেদন করতে লাগলেন []। [] আলোচ্য ৩০-৩৩ নং আয়াতসমূহে সুলাইমান আলাইহিস সালাম-এর একটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রসিদ্ধ বিবরণের সারমর্ম এই যে, সুলাইমান আলাইহিস সালাম অশ্বরাজি পরিদর্শনে এমনভাবে মগ্ন হয়ে পড়েন যে, আসরের সালাত আদায়ের নিয়মিত সময় অতিবাহিত হয়ে যায়। পরে সম্বিৎ ফিরে পেয়ে তার প্রতিকার করেন। এখন প্রশ্ন হলো, কিভাবে তিনি সে প্রতিকার করেছিলেন? কুরআন বলছে, فَطَفِقَ مَسْحًا بِالسُّوقِ وَالْأَعْنَاقِ এর অর্থ বর্ণনায় বিভিন্ন মত রয়েছে, এক, তিনি সমস্ত অশ্ব যবোহ করে দেন। কেননা, এগুলোর কারণেই আল্লাহর স্মরণ বিঘ্নিত হয়েছিল। এ সালাত নফল হলেও কোন আপত্তির কারণ নেই। কেননা, নবী-রাসূলগণ এতটুকু ক্ষতিও পুরণ করার চেষ্টা করে থাকেন। পক্ষান্তরে তা ফরয সালাত হলে ভুলে যাওয়ার কারণে তা কাযা হতে পারে এতে কোন গোনাহ হয় না। কিন্তু সুলাইমান আলাইহিস সালাম তার উচ্চ মর্যাদার পরিপ্রেক্ষিতে এরও প্ৰতিকার করেছেন। এ তাফসীরটি কয়েকজন তাফসীরবিদ থেকে বর্ণিত হয়েছে। হাফেয ইবন কাসীরের ন্যায় অনুসন্ধানী আলেমও এই তাফসীরকে অগ্ৰাধিকার দিয়েছেন। কিন্তু এতে সন্দেহ হয় যে, অশ্বরাজি আল্লাহ প্রদত্ত একটি পুরস্কার ছিল। নিজের সম্পদকে এভাবে বিনষ্ট করা একজন নবীর পক্ষে শোভা পায় না। কোন কোন তাফসীরবিদ এর জওয়াবে বলেন যে, এ অশ্বরাজি সুলাইমান আলাইহিস সালাম-এর ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ছিল। তার শরীআতে গরু, ছাগল ও উটের ন্যায় অশ্ব কোরবানী করাও বৈধ ছিল। তাই তিনি অশ্বরাজি বিনষ্ট করেননি; বরং আল্লাহর নামে কোরবানী করেছেন। দুই, আলোচ্য আয়াতের আরও একটি তাফসীর আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত আছে। তাতে ঘটনাটি সম্পূর্ণ ভিন্ন পথে বর্ণনা করা হয়েছে। এই তফসীরের সারমর্ম এই যে, সুলাইমান আলাইহিস সালাম-এর সামনে জেহাদের জন্যে তৈরি অশ্বরাজি পরিদর্শনের নিমিত্তে পেশ করা হলে সেগুলো দেখে তিনি খুব আনন্দিত হন। সাথে সাথে তিনি বললেনঃ এই অশ্বরাজির প্রতি আমার যে মহব্বত ও মনের টান, তা পার্থিব মহব্বতের কারণে নয়; বরং আমার পালকর্তার স্মরণের কারণেই। কারণ, এগুলো জেহাদের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। জেহাদ একটি উচ্চস্তরের ইবাদত। ইতিমধ্যে অশ্বরাজির দল তার দৃষ্টি থেকে উধাও হয়ে গেল। তিনি আদেশ দিলেনঃ এগুলোকে আবার আমার সামনে উপস্থিত কর। সে মতে পুনরায় উপস্থিত করা হলে তিনি অশ্বরাজির গলদেশে ও পায়ে আদর করে হাত বুলালেন। প্রাচীন তাফসীরবিদগণের মধ্যে হাফেয ইবনে জরীর, তাবারী, ইমাম রাযী প্রমুখ এ তাফসীরকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন। কেননা, এই তাফসীর অনুযায়ী সম্পদ নষ্ট করার সন্দেহ হয় না। পবিত্র কুরআনের ভাষ্যে উভয় তাফসীরের অবকাশ আছে। এ আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, আল্লাহর স্মরণে শৈথিল্য হলো নিজের উপর শাস্তি নির্ধারণ করা ধর্মীয় মর্যাদাবোধের দাবী। কোন সময় আল্লাহর স্মরণে শৈথিল্য হয়ে গেলে নিজেকে শাস্তি দেয়ার জন্যে কোন মুবাহ ( অনুমোদিত ) কাজ থেকে বঞ্চিত করে দেয়া জায়েয। কোন সৎকাজের অভ্যাস গড়ে তোলার জন্যে নিজের উপর এ ধরনের শাস্তি নির্ধারণ করা আত্মশুদ্ধির একটি ব্যবস্থা। এ ঘটনা থেকে এর বৈধতা বরং পছন্দনীয়তা জানা যায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে যে, একবার আবু জাহম রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে একটি শামী চাদর উপহার দেন। চাদরটি ছিল কারুকার্যখচিত। তিনি চাদর পরিধান করে সালাত পড়লেন এবং ফিরে এসে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে বললেন, চাদরটি আবু জাহামের কাছে ফেরত পাঠিয়ে দাও। কেননা, সালাতে আমার দৃষ্টি এর কারুকার্যের উপর পড়ে গিয়েছিল এবং আমার মনোনিবেশে বিপর্যয় সৃষ্টি হওয়ার উপক্রম হয়েছিল ৷ [ বুখারী: ৩৭৩, মুসলীম: ১৭৬ ] হাদীসে আরও এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “ তুমি আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করতে গিয়ে যা-ই ত্যাগ করবে আল্লাহ তার থেকে উত্তম বস্তু তোমাকে দিবে । [ মুসনাদে আহমাদ: ৫/৭৮,৭৯, ৩৬৩ ] [ দেখুন, কুরতুবী ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


৩০-৩৩ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা হযরত দাউদ ( আঃ )-কে যে একটি বড় নিয়ামত দান করেছিলেন এখানে তারই বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে, তিনি হযরত সুলাইমান ( আঃ )-কে তাঁর নবুওয়াতের উত্তরাধিকারী করেছিলেন। এজন্যেই হযরত সুলাইমান ( আঃ )-এর উল্লেখ করা হয়েছে। নচেৎ হযরত দাউদ ( আঃ )-এর তো। আরো বহু সন্তান ছিল। দাসীরা ছাড়াও তার একশজন স্ত্রী ছিল। সুতরাং হযরত সুলাইমান ( আঃ ) হযরত দাউদ ( আঃ )-এর নবুওয়াতের ওয়ারিশ হয়েছিলেন। যেমন মহান আল্লাহ অন্য আয়াতে বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ সুলাইমান ( আঃ ) দাউদ ( আঃ )-এর ওয়ারিশ হলো ।( ২৭:১৬ ) অর্থাৎ নবুওয়াতের ওয়ারিশ হলেন। হযরত দাউদ ( আঃ )-এর পর হযরত সুলাইমান ( আঃ ) নবুওয়াত লাভ করেন।মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘সে ছিল উত্তম বান্দা এবং অতিশয় আল্লাহ অভিমুখী। অর্থাৎ তিনি বড়ই ইবাদতগুয়ার ছিলেন এবং খুব বেশী আল্লাহর দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন।হযরত মাকহুল ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, যখন আল্লাহ তা'আলা হযরত দাউদ ( আঃ )-কে দান করলেন সুলাইমান ( আঃ )-কে তখন হযরত দাউদ ( আঃ ) হযরত সুলাইমান ( আঃ )-কে প্রশ্ন করলেনঃ “ হে আমার প্রিয় বৎস! আচ্ছা বল তোঃ সবচেয়ে উত্তম জিনিস কি?” তিনি জবাব দিলেনঃ “আল্লাহর পক্ষ হতে আগত চিত্ত-প্রশান্তি এবং ঈমান ।” আবার জিজ্ঞেস করলেনঃ “ সবচেয়ে মন্দ জিনিস কি?” উত্তরে তিনি বললেনঃ “ঈমানের পর কুফরী ।” পুনরার প্রশ্ন করলেনঃ “ সবচেয়ে মিষ্টি জিনিস কি?” তিনি উত্তর দিলেনঃ “আল্লাহর রহমত বা করুণা ।" আবার প্রশ্ন করলেনঃ “ সবচেয়ে শীতল জিনিস কি?” তিনি জবাবে বললেনঃ “আল্লাহ তা'আলার মানুষকে ক্ষমা করে দেয়া এবং মানুষের একে অপরকে মাফ করা ।” তখন হযরত দাউদ ( আঃ ) হযরত সুলাইমান ( আঃ )-কে বললেনঃ “ তাহলে তুমি নবী ।( এটা ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত সুলাইমান ( আঃ )-এর রাজত্বের আমলে তাঁর সামনে তার ঘোড়াগুলো হাযির করা হয় যেগুলো ছিল খুবই দ্রুতগামী এবং ওগুলো তিন পায়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকতো। একটি উক্তি এও আছে যে, এগুলো ছিল উড়ন্ত ঘোড়া, যেগুলোর সংখ্যা ছিল বিশ। ইবরাহীম তাইমী ( রঃ ) ঘোড়াগুলোর সংখ্যা বিশ হাজার বলেছেন। এসব ব্যাপারে সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী একমাত্র আল্লাহ।সুনানে আবি দাউদে হযরত আয়েশা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাবুক অথবা খায়বারের যুদ্ধ হতে ফিরে এসেছিলেন। তিনি বাড়ীতে প্রবেশ করেছেন এমন সময় প্রচণ্ড বেগে বাতাস বইতে শুরু করে। ফলে ঘরের এক কোণের পর্দা সরে যায়। ঐ জায়গায় হযরত আয়েশা ( রাঃ )-এর খেলনার পুতুলগুলো রাখা ছিল। ওগুলোর প্রতি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর দৃষ্টি পড়লে তিনি হযরত আয়েশা ( রাঃ )-কে জিজ্ঞেস করলেনঃ “ ওগুলো কি?” তিনি জবাবে বললেনঃ “ওগুলো আমার পুতুল ।রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) দেখতে পান যে, মধ্যভাগে একটি ঘোড়ার মত কি যেন বানানো রয়েছে যাতে কাপড়ের তৈরী দুটি ডানাও লাগানো আছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ “ এটা কি?" উত্তরে হযরত আয়েশা ( রাঃ ) বললেনঃ “এটা ঘোড়া । তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেনঃ “ কাপড়ের তৈরী ওর উপরে দুই দিকে ও দুটো কি?” তিনি জবাব দিলেনঃ “এ দুটো ওর ডানা ।রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বললেনঃ “ ঘোড়াও ভাল এবং ডানা দুটিও উত্তম ।” তখন হযরত আয়েশা ( রাঃ ) বললেনঃ “ আপনি কি শুনেননি যে, হযরত সুলাইমান ( আঃ )-এর ডানা বিশিষ্ট ঘোড়া ছিল?" একথা শুনে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হেসে উঠলেন । এমনকি তাঁর শেষ দাঁতটিও দেখা গেল।হযরত সুলাইমান ( আঃ ) ঘোড়াগুলোর দেখা শোনায় এমন ব্যস্ত হয়ে পড়লেন যে, তাঁর আসরের নামাযের খেয়ালই থাকলো না। নামাযের কথা তিনি সম্পূর্ণরূপে বিস্মরণ হয়ে গেলেন। যেমন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) খন্দকের যুদ্ধের সময় একদিন যুদ্ধে মগ্ন থাকার কারণে আসরের নামায পড়তে পারেননি। মাগরিবের নামাযের পর ঐ নামায আদায় করেন।সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে, সূর্য ডুবে যাওয়ার পর হযরত উমার ( রাঃ ) কুরায়েশ কাফিরদেরকে মন্দ বলে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিকট আসলেন এবং বললেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আমি তো আসরের নামায পড়তে পারিনি?" রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) উত্তরে বললেনঃ “এখন পর্যন্ত আমিও নামায আদায় করতে সক্ষম হইনি ।” অতঃপর তারা বাতহান নামক স্থানে গিয়ে অযু করলেন এবং সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর আসরের নামায আদায় করলেন এবং পরে মাগরিবের নামায পড়লেন। এটাও হতে পারে যে, হযরত সুলাইমান ( আঃ )-এর দ্বীনে যুদ্ধ-ব্যস্ততার কারণে নামাযকে বিলম্বে আদায় করা জায়েয ছিল। তাঁর ঘোড়াগুলো হয়তো যুদ্ধের ঘোড়া ছিল যেগুলোকে একমাত্র ঐ উদ্দেশ্যেই রাখা হয়েছিল। যেমন কোন কোন আলেম একথাও বলেছেন যে, সালাতে খাওফ ( ভয়ের সময়ের নামায ) জারী হওযার পূর্বে এই অবস্থাই ছিল। যখন তরবারী চৰ্চ করে ওঠে এবং শত্রু সৈন্য এসে ভিড়ে যায়, আর নামাযের জন্যে রুকু-সিজদা করার সুযোগই হয় না তখন এই হুকুম রয়েছে। যেমন সাহাবীগণ ( রাঃ ) তাসতির’ বিজয়ের সময় এরূপ করেছিলেন। কিন্তু আমাদের প্রথম উক্তিটিই সঠিক। কেননা, এরপরেই হযরত সুলাইমান ( আঃ )-এর এই ঘোড়াগুলোকে পুনরায় তলব করা ইত্যাদির বর্ণনা রয়েছে। তিনি ওগুলোকে কেটে ফেলার নির্দেশ দেন এবং বলেনঃ “ এগুলো তো আমাকে আমার প্রতিপালকের ইবাদত হতে উদাসীন করে ফেলেছে । সুতরাং এগুলো রাখা চলবে না।" অতঃপর ঐ ঘোড়াগুলোর পা ও গলদেশ কেটে ফেলা হয়। কিন্তু হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, হযরত সুলাইমান ( আঃ ) শুধু ঘোড়াগুলোর কপালের লোমগুলো ইত্যাদির উপর হাত ফিরিয়েছিলেন। ইমাম ইবনে জারীরও ( রঃ ) এই উক্তিটি গ্রহণ করেছেন যে, বিনা কারণে জন্তুকে কষ্ট দেয়া অবৈধ। ঐ জন্তুগুলোর কোনই দোষ ছিল না যে, তিনি ওগুলো কেটে ফেলবেন। কিন্তু আমি বলি যে, হয়তো তাদের শরীয়তে এ কাজ বৈধ ছিল, বিশেষ করে ঐ সময়, যখন ঐগুলো আল্লাহর স্মরণে বাধা সৃষ্টি করলো এবং নামাযের ওয়াক্ত সম্পূর্ণরূপে চলেই গেল। তাহলে তার ঐ ক্রোধ আল্লাহর জন্যেই ছিল। আর এর ফলে আল্লাহ তা'আলা তাঁকে ওগুলোর চেয়ে দ্রুতগামী ও হালকা জিনিস দান করেছিলেন। অর্থাৎ বাতাসকে তিনি তার অনুগত করে দিয়েছিলেন।হ্যরত কাতাদা ( রঃ ) হযরত আবুদ দাহমা ( রঃ ) প্রায়ই হজ্ব করতেন। তারা বলেন, একবার এক গ্রামে একজন বেদুইনের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ হয়। সে বলে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমার হাত ধরে আমাকে বহু কিছু দ্বীনী শিক্ষা দিয়েছিলেন। তাতে এও ছিলঃ “ তুমি আল্লাহকে ভয় করে যে জিনিস ছেড়ে দিবে, আল্লাহ তা'আলা তোমাকে তদপেক্ষা উত্তম জিনিস দান করবেন ।" ( এটা ইমাম আহমাদ (রঃ ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন)

সূরা সাদ আয়াত 33 সূরা

ردوها علي فطفق مسحا بالسوق والأعناق

سورة: ص - آية: ( 33 )  - جزء: ( 23 )  -  صفحة: ( 455 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. এরাই হল সেসব লোক আখেরাতে যাদের জন্য আগুন ছাড়া নেই। তারা এখানে যা কিছু করেছিল
  2. তারা রাতের বেলায় কাঁদতে কাঁদতে পিতার কাছে এল।
  3. আল্লাহ জানেন যা তোমরা গোপন কর এবং যা তোমরা প্রকাশ কর।
  4. তিনি তোমাদের জন্যে দ্বীনের ক্ষেত্রে সে পথই নিধারিত করেছেন, যার আদেশ দিয়েছিলেন নূহকে, যা আমি
  5. অতএব, তোমরা উভয়ে তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে?
  6. সে তো এক বান্দাই বটে আমি তার প্রতি অনুগ্রহ করেছি এবং তাকে করেছি বণী-ইসরাঈলের জন্যে
  7. নিশ্চয় চক্রান্ত করেছে তাদের পূর্ববর্তীরা, অতঃপর আল্লাহ তাদের চক্রান্তের ইমারতের ভিত্তিমূলে আঘাত করেছিলেন। এরপর উপর
  8. প্রত্যেক খবরের একটি সময় নির্দিষ্ট রয়েছে এবং অচিরেই তোমরা তা জেনে নিবে।
  9. তার ঠিকানা হবে হাবিয়া।
  10. আমি আপনাকে পাঠ করাতে থাকব, ফলে আপনি বিস্মৃত হবেন না

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা সাদ ডাউনলোড করুন:

সূরা Sad mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Sad শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত সাদ  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত সাদ  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত সাদ  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত সাদ  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত সাদ  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত সাদ  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত সাদ  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত সাদ  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত সাদ  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত সাদ  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত সাদ  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত সাদ  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত সাদ  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত সাদ  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত সাদ  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত সাদ  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত সাদ  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত সাদ  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত সাদ  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত সাদ  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত সাদ  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত সাদ  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত সাদ  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত সাদ  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত সাদ  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Wednesday, December 18, 2024

Please remember us in your sincere prayers