কোরান সূরা যুমার আয়াত 40 তাফসীর
﴿مَن يَأْتِيهِ عَذَابٌ يُخْزِيهِ وَيَحِلُّ عَلَيْهِ عَذَابٌ مُّقِيمٌ﴾
[ الزمر: 40]
কার কাছে অবমাননাকর আযাব এবং চিরস্থায়ী শাস্তি নেমে আসে। [সূরা যুমার: 40]
Surah Az-Zumar in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Zumar ayat 40
''কে সে যার কাছে আসছে শাস্তি যা তাকে লাঞ্ছিত করবে, আর কার উপরে বিধেয় হয়েছে স্থায়ী শাস্তি।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
৪০. অচিরেই তোমরা জানতে পারবে, কার উপর অপমান ও অপদস্তকারী শাস্তি নেমে আসবে। আর পরকালে তাকে স্থায়ী শাস্তি পেয়ে বসবে। যা কখনও বন্ধ ও দূরীভূত হওয়ার নয়।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
কার ওপর লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি আসবে[১] এবং স্থায়ী শাস্তি আপতিত হবে।’ [২] [১] যার দ্বারা স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, সত্যের ওপর কারা আছে এবং বাতিলের ওপর কারা আছে? এ থেকে পার্থিব আযাব বুঝানো হয়েছে। যেমন বদর যুদ্ধে ঘটেছিল। এতে কাফেরদের মধ্য থেকে ৭০ জন লোক মারা গিয়েছিল এবং ৭০ জন বন্দী হয়েছিল। এমনকি মক্কা বিজয়ের পর প্রভাব-প্রতিপত্তি ও কর্তৃত্ব মুসলিমরাই লাভ করেছিল। এর পর থেকে কাফেরদের জন্য লাঞ্ছনা ও অবমাননা বই কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। [২] এর অর্থ জাহান্নামের আযাব, যা কাফেররা চির দিনকার জন্য ভোগ করতে থাকবে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
'কার উপর আসবে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি আর আপতিত হবে তার উপর স্থায়ী শান্তি।'
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৩৬-৪০ নং আয়াতের তাফসীর: একটি কিরআতে ( আরবী ) রয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্যে কি যথেষ্ট নন? অর্থাৎ আল্লাহ তাআলাই তাঁর সমস্ত বান্দার জন্যে যথেষ্ট। সুতরাং সবারই তার উপরই ভরসা করা উচিত। হযরত ফুযালাহ ইবনে উবায়েদ আনসারী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে বলতে শুনেছেনঃ “ ঐ ব্যক্তি পরিত্রাণ লাভ করেছে যাকে ইসলামের পথে পরিচালিত করা হয়েছে, প্রয়োজন পরিমাণে রিযক দান করা হয়েছে এবং তাতেই সে তুষ্ট হয়েছে ।” ( এ হাদীসটি ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ ), ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) এবং ইমাম নাসাঈ ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন। আর ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) এটাকে সহীহ বলেছেন)মহান আল্লাহ স্বীয় নবী ( সঃ )-কে সম্বোধন করে বলেনঃ হে নবী ( সঃ )! তারা তোমাকে আল্লাহর পরিবর্তে অপরের ভয় দেখাচ্ছে। এটা তাদের অজ্ঞতা ও পথভ্রষ্টতা ছাড়া কিছুই নয়। আল্লাহ যাকে বিভ্রান্ত করেন তার জন্যে কোন পথ প্রদর্শক নেই। যেমন আল্লাহ যাকে সুপথ প্রদর্শন করেন তাকে কেউই পথভ্রষ্ট করতে পারে না। আল্লাহ পরাক্রমশালী ও দণ্ডবিধায়ক। যারা তার উপর নির্ভর করে তারা কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয় না এবং তাঁর দিকে যারা ঝুঁকে পড়ে তারা কখনো বঞ্চিত হয় না। তার চেয়ে বড় মর্যাদাবান আর কেউই নেই। অনুরূপভাবে তার চেয়ে বড় প্রতিশোধ গ্রহণকারীও আর কেউ নেই। যারা তার সাথে শরীক স্থাপন করে এবং তাঁর রাসূলদের সাথে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হয় তাদেরকে অবশ্যই তিনি কঠিন শাস্তি প্রদান করবেন।এরপর মুশরিকদের আরো অজ্ঞতা ও নির্বুদ্ধিতার বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে, আল্লাহ তা'আলাকে সব কিছুরই সৃষ্টিকর্তা মেনে নেয়া সত্ত্বেও তারা এমন মিথ্যা ও অসার মা’রূদের উপাসনা করছে যারা কোন লাভ ও ক্ষতির মালিক নয়। যাদের কোন বিষয়েরই কোন অধিকার নেই। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তুমি আল্লাহকে স্মরণ কর, তিনি তোমার হিফাযত করবেন । তুমি আল্লাহর যিকর কর, সব সময় তুমি তাকে তোমার কাছে পাবে। সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের সময় তার নিয়ামতরাজির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর, কাঠিন্যের সময় তিনি তোমার কাজে আসবেন। কিছু চাইতে হলে তাঁর কাছেই চাও এবং সাহায্য প্রার্থনা করতে হলে তাঁর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা কর। জেনে রেখো যে, আল্লাহর ইচ্ছা না হলে সারা দুনিয়া মিলে তোমার কোন ক্ষতি করতে চাইলে তোমার কোনই ক্ষতি তারা করতে পারবে না। অনুরূপভাবে সবাই মিলে তোমার কোন উপকার করতে হইলেও এবং সেটা তোমার তকদীরে লিখিত না থাকলে তোমার কোন উপকারও করতে তারা সক্ষম হবে না। পুস্তিকা শুকিয়ে গেছে এবং কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। বিশ্বাস ও কৃতজ্ঞতার সাথে ভাল কাজে নিমগ্ন হয়ে যাও। বিপদ আপদে ধৈর্য ধারণে বড়ই পুণ্য লাভ হয়। সবরের সাথে সাহায্য রয়েছে। সংকীর্ণতার সাথেই আছে প্রশস্ততা এবং কষ্টের সাথেই আছে স্বস্তি। ( এ হাদীসটি ইমাম ইবনে হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)মহান আল্লাহ স্বীয় নবী ( সঃ )-কে সম্বোধন করে বলেনঃ হে নবী ( সঃ )! তুমি তাদেরকে বলে দাও আমার জন্যে আল্লাহই যথেষ্ট। নির্ভরকারীরা আল্লাহর উপর নির্ভর করে। যেমন হযরত হূদ ( আঃ )-কে যখন তাঁর সম্প্রদায়ের লোকেরা বলেছিলঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ আমরা তো এটাই বলি যে, আমাদের মা’বৃদদের মধ্যে কেউ তোমাকে অশুভ দ্বারা আবিষ্ট করেছে ।” ( ১১:৫৪ ) তখন তাদের এ কথার উত্তরে তিনি বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ আমি আল্লাহকে সাক্ষী করছি এবং তোমরাও সাক্ষী হও যে, আমি তা হতে নির্লিপ্ত যাকে তোমরা আল্লাহর শরীক কর আল্লাহ ব্যতীত । তোমরা সবাই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কর, অতঃপর আমাকে অবকাশ দিয়ো না। আমি নির্ভর করি আমার ও তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহর উপর, এমন কোন জীবজন্তু নেই, যে তার পূর্ণ আয়ত্তাধীন নয়। আমার প্রতিপালক আছেন সরল পথে।” ( ১১:৫৪-৫৬ )। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যে ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী হতে চায় সে যেন আল্লাহর উপর নির্ভরশীল হয় । আর যে ব্যক্তি লোকদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা ধনী হতে চায় সে যেন তার নিজের হাতে যা রয়েছে তার উপর আস্থা রাখার চেয়ে বেশী আস্থা রাখে ঐ জিনিসের উপর যা আল্লাহর হাতে রয়েছে। যে ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা সম্মানিত ও মর্যাদাবান হতে চায় সে যেন মহামহিমান্বিত আল্লাহকে ভয় করে চলে।” ( এ হাদীসটি ইমাম ইবনে হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)এরপর মুশরিকদের ধমকের সুরে বলতে বলা হচ্ছেঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা স্ব স্ব অবস্থায় কাজ করতে থাকো, আমিও আমার কাজ করছি। শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে কার উপর আসবে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি এবং কার উপর আপতিত হবে স্থায়ী শাস্তি। আর এটা হবে কিয়ামতের দিন। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে এর থেকে রক্ষা করুন!
সূরা যুমার আয়াত 40 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তারা বললঃ হে যুলকারনাইন, ইয়াজুজ ও মাজুজ দেশে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। আপনি বললে আমরা আপনার
- যিনি তাঁর প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে সুন্দর করেছেন এবং কাদামাটি থেকে মানব সৃষ্টির সূচনা করেছেন।
- যে সৎকর্ম করে, সে নিজের উপকারের জন্যেই করে, আর যে অসৎকর্ম করে, তা তার উপরই
- অনেক মুখমন্ডল সেদিন হবে লাঞ্ছিত,
- অতঃপর তিনি তা তাদের কাছে পাঠ করতেন, তবে তারা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করত না।
- অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কোরবানী করুন।
- এ সম্পর্কে তোমরা সন্দেহে পতিত ছিলে।
- আমি উভয়কে দিয়েছিলাম সুস্পষ্ট কিতাব।
- যাতে তোমরা আল্লাহ ও রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর এবং তাঁকে সাহায্য ও সম্মান কর
- তিনি বললেনঃ তুমি জান যে, আসমান ও যমীনের পালনকর্তাই এসব নিদর্শনাবলী প্রত্যক্ষ প্রমাণস্বরূপ নাযিল করেছেন।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা যুমার ডাউনলোড করুন:
সূরা Zumar mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Zumar শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers