কোরান সূরা আবাসা আয়াত 42 তাফসীর
﴿أُولَٰئِكَ هُمُ الْكَفَرَةُ الْفَجَرَةُ﴾
[ عبس: 42]
তারাই কাফের পাপিষ্ঠের দল। [সূরা আবাসা: 42]
Surah Abasa in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Abasa ayat 42
এরা নিজেরাই সত্যপ্রত্যাখ্যানকারী, দুষ্কৃতিকারী।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৪২. উপরোক্ত অবস্থা হবে তাদের যারা কুফরী ও পাপাচারে লিপ্ত থাকবে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
তারাই কাফির ও পাপাচারী। [১] [১] অর্থাৎ, তারা আল্লাহর রসূলগণ এবং কিয়ামতকে অস্বীকারকারীও ছিল এবং পাপাচার ও চরিত্রহীনও ছিল। আল্লাহুম্মা লা তাজ্আলনা মিনহুম। ( অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে তাদের দলভুক্ত করো না। )
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৩৩-৪২ নং আয়াতের তাফসীর হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, ( আরবি ) কিয়ামতের একটি নাম। এ নামের কারণ এই যে, কিয়ামতের শিংগার আওয়াজ ও শোরগোলে কানের পর্দা ফেটে যাবে। সেদিন মানুষ তার নিকটাত্মীয়দেরকে দেখবে কিন্তু তাদেরকে দেখে পালিয়ে যাবে। কেউ কারো কোন কাজে আসবে না। স্বামী তার স্ত্রীকে দেখে বলবেঃ আমি পৃথিবীতে তোমার সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছিলাম? স্ত্রী উত্তরে বলবেঃ নিঃসন্দেহে আপনি আমার সাথে খুবই ভাল ব্যবহার করেছিলেন। আমাকে খুবই ভালবাসতেন। এ কথা শুনে স্বামী বলবেঃ আজ আমার একটি মাত্র পুণ্যের প্রয়োজন, তাহলেই আমি আজকের এই মহা বিপদ থেকে মুক্তি পেতে পারি। ঐ একটি পুণ্য তুমি আমাকে দাও। স্ত্রী বলবেঃ আপনি তো সামান্য জিনিসই চেয়েছেন, কিন্তু আমি যে অক্ষম! আজ পুণ্যের আমার নিজেরই একান্ত প্রয়োজন। আশংকা করছি আমিও বিপদে পড়ি না কি? কাজেই পুণ্য দেয়া সম্ভব নয়। পুত্র পিতার সাথে দেখা করে একই রকম আবেদন-নিবেদন জানাবে এবং একই রকম জবাব পাবে। সহীহ্ হাদীসে শাফাআত প্রসঙ্গে বর্ণনা করতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ বড় বড় পয়গাম্বরদের কাছে জনগণ শাফাআতের জন্যে আবেদন জানাবে, কিন্তু তাঁদের প্রত্যেকেই বলবেনঃ “ ইয়া নাফসী, ইয়া নাফসী!' এমনকি হ্যরত ঈসা রুহুল্লাহ্ ( আঃ ) পর্যন্ত বলবেনঃ আজ আল্লাহ্ তা'আলার কাছে নিজের প্রাণ ছাড়া অন্য কারো জন্যে আমি কিছুই বলবো না । এমনকি যার গর্ভ থেকে আমি ভূমিষ্ট হয়েছি সেই মা জননী হযরত মরিয়ম ( আঃ )-এর জন্যেও কিছু বলবো না। মোটকথা, বন্ধু বন্ধুর কাছ থেকে, আত্মীয় আত্মীয়ের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে চলে যাবে। প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত ও বিব্রত থাকবে। অন্যের প্রতি কেউ ক্ষেপ করবে না। রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) বলেনঃ “ তোমরা নগ্নপদে, নগ্নদেহে খত্নাবিহীন অবস্থায় আল্লাহ্র কাছে জমায়েত হবে ।” এ কথা শুনে তার এক স্ত্রী বলেনঃ “ হে আল্লাহ্র রাসূল ( সঃ )! তাহলে তো অন্যের লজ্জাস্থানের প্রতি চোখ পড়বে!” রাসূলুল্লাহ্ বললেন! ঐ মহা প্রলয়ের দিনে সব মানুষ এতো ব্যস্ত থাকবে যে, অন্যের প্রতি তাকানোর সুযোগ কারো থাকবে না ।” ( এ হাদীসটি ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)কোন কোন বর্ণনায় আছে যে, অতঃপর আল্লাহর নবী ( সঃ ) ( আরবি ) আয়াতটি তিলাওয়াত করেন।অন্য এক বর্ণনায় উল্লেখ আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর ঐ স্ত্রী ছিলেন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা ( রাঃ )। হযরত আয়েশা ( রাঃ ) রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ )-কে বলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আমার পিতা-মাতা আপনার প্রতি নিবেদিত হোক! আমি আপনাকে একটি কথা জিজ্ঞেস করছি, আপনি তার উত্তর দিন ।” রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) বললেনঃ “ জানা থাকলে অবশ্যই উত্তর দিবো ।” হযরত আয়েশা ( রাঃ ) তখন জিজ্ঞেস করলেনঃ “ মানুষের হাশর কিভাবে হবে?” রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) উত্তর দিলেনঃ আল্লাহর নবী ( সঃ ) উত্তর দিলেনঃ “নগ্নপায়ে ও নগ্নদেহে ।” কিছুক্ষণ পর হযরত আয়েশা জিজ্ঞেস করলেনঃ “ মহিলারাও কি ঐ অবস্থায় থাকবে?” রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) উত্তরে বললেনঃ “হ্যা ।” এ কথা শুনে উম্মুল মুমিনীন দুঃখ করতে লাগলেন। তখন আল্লাহর নবী ( সঃ ) বললেনঃ “ হে আয়েশা ( রাঃ )! এই আয়াতটি শোননা, তারপর পোশাক পরিধান করা না করা নিয়ে তোমার কোন আফসোস বা দুঃখ থাকবে না ।” হযরত আয়েশা ( রাঃ ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “ কোন্ আয়াত?” জবাবে রাসূলুল্লাহ্ ( সাঃ ) ( আরবি )-এ আয়াতটি পাঠ করলেন । অন্য এক বর্ণনায় উম্মুল মুমিনীন হযরত সাওদা ( রাঃ ) -এর জিজ্ঞেস করার কথা উল্লিখিত হয়েছে। সব মানুষ নগ্নপায়ে, নগ্নদেহে খত্নাবিহীন অবস্থায় হাশরের মাঠে সমবেত হবে। কেউ কান পর্যন্ত ঘামের মধ্যে ডুবে যাবে, কারো মুখ পর্যন্ত ঘাম পৌছবে তারপর রাসূলুল্লাহ্ ( সাঃ ) এই আয়াত তিলাওয়াত করেন।এরপর আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ সেখানে লোকদের দুটি দল হবে। এক দলের চেহারা আনন্দে চমকাতে থাকবে। তাদের মন নিশ্চিন্ত ও পরিতৃপ্ত থাকবে। তাদের মুখমণ্ডল সুদর্শন এবং উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। তারা হবে জান্নাতি দল। আর একটি দল হবে জাহান্নামীদের। তাদের চেহারা মসিলিপ্ত, কালিমাময় ও মলিন থাকবে। হাদীস শরীফে আছে যে, তাদের ঘাম হবে তাদের জন্যে লাগামের মত। তারা ধূলি-মলিন অবস্থায় পড়ে থাকবে। এরা সেই দল যাদের মনে কুফরী ছিল এবং আমল ছিল পাপে পরিপূর্ণ। যেমন অন্য এক জায়গায় আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ তারা জন্ম দিতে থাকবে শুধু দুষ্কৃতিকারী কাফির ।” ( ৭১:২৭ )
সূরা আবাসা আয়াত 42 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- এবং শপথ রাত্রির যখন তা গত হতে থাকে
- তারা যখন পিতার কথামত প্রবেশ করল, তখন আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধে তা তাদের বাঁচাতে পারল না।
- তারা ধারণা করেছে যে, কোন অনিষ্ট হবে না। ফলে তারা আরও অন্ধ ও বধির হয়ে
- মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ তা’আলার কাছে তওবা কর-আন্তরিক তওবা। আশা করা যায়, তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মন্দ
- তোমাদের মধ্যে যে সামনে অগ্রসর হয় অথবা পশ্চাতে থাকে।
- তাকে শোনানো সুসংবাদের দুঃখে সে লোকদের কাছ থেকে মুখ লুকিয়ে থাকে। সে ভাবে, অপমান সহ্য
- অতঃপর আমি বাঁচিয়ে নেই নিজের রসূলগণকে এবং তাদেরকে যারা ঈমান এনেছে এমনিভাবে। ঈমানদারদের বাঁচিয়ে নেয়া
- আমি তোমাদের জন্যে মহাদিবসের শাস্তি আশংকা করি।
- নিশ্চয় আসমান ও যমীন সৃষ্টিতে এবং রাত্রি ও দিনের আবর্তনে নিদর্শন রয়েছে বোধ সম্পন্ন লোকদের
- আর হে আমার কওম! তোমাদের পালন কর্তার কাছে তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা কর, অতঃপর তাঁরই প্রতি
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আবাসা ডাউনলোড করুন:
সূরা Abasa mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Abasa শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers