কোরান সূরা কাহ্ফ আয়াত 44 তাফসীর
﴿هُنَالِكَ الْوَلَايَةُ لِلَّهِ الْحَقِّ ۚ هُوَ خَيْرٌ ثَوَابًا وَخَيْرٌ عُقْبًا﴾
[ الكهف: 44]
এরূপ ক্ষেত্রে সব অধিকার সত্য আল্লাহর। তারই পুরস্কার উত্তম এবং তারই প্রদত্ত প্রতিদান শ্রেষ্ঠ। [সূরা কাহ্ফ: 44]
Surah Al-Kahf in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Kahf ayat 44
এই তো! অভিভাবকত্ব আল্লাহ্রই, যিনি সত্য। তিনিই পুরস্কারদানে শ্রেষ্ঠ আর পরিণাম নির্ধারণেও শ্রেষ্ঠ।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৪৪. এ জায়গায় সাহায্য করার ক্ষমতা কেবল আল্লাহর জন্য। তিনি তাঁর মু’মিন বন্ধুদের উত্তম প্রতিদানকারী। তিনি তাদেরকে দ্বিগুণ সাওয়াব দিয়ে থাকেন। আর তিনিই তাদের জন্য সর্বোত্তম পরিণাম ফল।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
এই ক্ষেত্রে সাহায্য করবার অধিকার সত্য আল্লাহরই।[১] পুরস্কারদানে ও পরিণাম নির্ধারণে তিনিই শ্রেষ্ঠ। [২] [১] وِلاَيَةٌ এর অর্থ, বন্ধুতত্ত্ব ও সাহায্য। অর্থাৎ, এ রকম মুহূর্তে প্রত্যেক মু'মিন ও কাফের অবগত হয়ে যায় যে, আল্লাহ ব্যতীত কেউ কারো সাহায্য করতে এবং তাঁর আযাব থেকে নিষ্কৃতি দিতে সক্ষম নয়। আর এটাই কারণ যে, এ রকম মুহূর্তে বড় বড় অবাধ্য যালেমও ঈমান প্রকাশ করতে বাধ্য হয়ে যায়, যদিও এ সময় ঈমান ফলপ্রসূ ও গৃহীত হয় না। যেমন, কুরআন ফিরআউনের ব্যাপারে উল্লেখ করেছে যে, যখন সে ডুবতে লাগল, তখন বলতে লাগল যে, ﴿آمَنْتُ أَنَّهُ لاَ إِلَهَ إِلَّا الَّذِي آمَنَتْ بِهِ بَنُو إِسْرائيلَ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ﴾ " যে কথায় বানী ইস্রাঈল বিশ্বাস করেছে, আমিও তাতে বিশ্বাস করলাম যে, তিনি ছাড়া অন্য কোন ( সত্য ) মাবূদ নেই এবং আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত। " ( সূরা ইউনুস ১০:৯০ আয়াত ) অন্য কাফেরদের ব্যাপারে বলা হয়েছে যে, তারা যখন আমার আযাব দেখল, তখন বলল, " আমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করলাম এবং যাদের শরীক করতাম, তাদেরকে পরিহার করলাম "। ( সূরা মু'মিন ৪০:৮৪ ) যদি الولاية এর و অক্ষরে জের ( الوِلاية ) হয়, তাহলে তার অর্থ হবে, শাসন ও এখতিয়ার। ( ইবনে কাসীর ) [২] তিনি তাঁর বন্ধুদের উৎকৃষ্ট প্রতিদান দেবেন এবং উত্তম পরিণাম দানে ধন্য করবেন।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
এখানে কর্তৃত্ব আল্লাহ্রই [ ১ ], যিনি সত্য [ ২ ]। পুরস্কার প্রদানে ও পরিণাম নির্ধারণে তিনিই শ্রেষ্ঠ। [ ১ ] আয়াতটির অর্থ নির্ধারণে দু'টি প্রসিদ্ধ মত এসেছে: এক, আয়াতে উল্লেখিত هنالك শব্দটির অর্থ আগের বাক্যের সাথে করা হবে। আর الو لاية থেকে নতুনভাবে অর্থ করা হবে। সে মতে পূর্বের আয়াতের অর্থ হবে: যেখানে আল্লাহর আযাব নাযিল হয়েছে সেখানে আল্লাহ ছাড়া তাকে সাহায্য করার কোন লোকজন ছিল না এবং সে নিজেও প্রতিকারে সমর্থ হলো না। দুই, আর যদি هنالك শব্দটিকে এ আয়াতের পরবর্তী বাক্য الو لا ية এর সাথে মিলিয়ে অর্থ করা হয় তখন আয়াতের দু’ধরনের অর্থ হয়। যদি الو لا ية শব্দটির واو এর উপর فتحة দিয়ে পড়া হয় তখন শব্দটির অর্থ হয়, অভিভাবকত্ব, বন্ধুত্ব। আর আয়াতের অর্থ দাঁড়ায়: যখন আযাব নাযিল হয় তখন কাফের বা মুমিন সবাই অভিভাবক ও বন্ধু হিসেবে একমাত্র আল্লাহর দিকেই ফিরবে, তাঁর আনুগত্য মেনে নিবে। এর বাইরে কোন কিছু চিন্তাও করবে না। যেমন কুরআনের অন্যত্র বলা হয়েছে, “ তারপর তারা যখন আমার শাস্তি দেখতে পেল তখন বলল, “আমরা এক আল্লাহতেই ঈমান আনলাম এবং আমরা তাঁর সাথে যাদেরকে শরীক করতাম তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করলাম ।" [ সূরা গাফের: ৮৪ ] অনুরূপভাবে ফিরআউনের মুখ থেকেও বিপদকালে এ কথাই বের হয়েছিল, মহান আল্লাহ বলেন: “ পরিশেষে যখন সে নিমজ্জমান হল তখন বলল, “আমি বিশ্বাস করলাম বনী ইসরাঈল যার উপর বিশ্বাস করে । নিশ্চয়ই তিনি ছাড়া অন্য কোন সত্য ইলাহ নেই এবং আমি আত্মসমর্পণকারীদের অন্তর্ভুক্ত। ‘এখন! ইতিপূর্বে তো তুমি অমান্য করেছ এবং তুমি অশান্তি সৃষ্টিকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে।” [ সূরা ইউনুস: ৯০-৯১ ] আর যদি الولاية শব্দটির واو এর নীচে كسرة দিয়ে পড়া হয়। যেমনটি কোন কোন قراءة তে আছে, তখন শব্দটির অর্থ হয় ক্ষমতা, নির্দেশ ও আইন। আর আয়াতের অর্থ দাঁড়ায়: যখন আযাব নাযিল হবে তখন একমাত্র মহান আল্লাহর ক্ষমতা, আইন ও নির্দেশই কার্যকর হবে। অন্য কারো কোন কথা চলবে না। তিনি তাদের ধ্বংস করেই ছাড়বেন। [ ইবন কাসীর ] [ ২ ] আয়াতের দু'টি অর্থ করা যায়। এক, তখন একমাত্র হক্ক ও সত্য ইলাহ আল্লাহ তা'আলারই কর্তৃত্ব। যেমন অন্যত্র বলা হয়েছে, “ তারপর তাদের হক্ক ও সত্য প্রতিপালক আল্লাহর দিকে তারা ফিরে আসে । দেখুন, কর্তৃত্ব তো তাঁরই এবং হিসেব গ্রহনে তিনিই সবচেয়ে তৎপর।” [ সূরা আল-আন’আম: ৬২ ] দুই, তখন একমাত্র হক্ক ও সত্য কর্তৃত্ব ও অভিভাবকত্ব আল্লাহরই। যেমন অন্যত্র বলা হয়েছে, “ সে দিন সত্য ও হক্ক কর্তৃত্ব ও অভিভাকত্ব হবে কেবলমাত্র দয়াময়ের এবং কাফিরদের জন্য সে দিন হবে কঠিন । ” [ সূরা আল-ফুরকান: ২৬ ] [ ইবন কাসীর ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৪২-৪৪ নং আয়াতের তাফসীর: ঐ লোকটির সমস্ত মাল ধ্বংস হয়ে গেল। ঐ মু'মিন লোকটি তাকে যা থেকে ভয় প্রদর্শন করছিল তা হয়েই গেল। ধন-মাল ধ্বংস হয়ে যাবার পর সে দুঃখে হাত মলতে লাগলো এবং অকাংখা করে বললোঃ হায়! যদি আমি আল্লাহর সাথে কাউকেও শরীক না করতাম তবে কতই না ভাল হতো!' যেগুলির উপর সে গর্ব করতো সেগুলি ঐ সময় তার কোনই কাজে আসলো না। সন্তান-সন্ততি, কবীলা-গোত্র সব থেকে গেল। কেউই তাকে সাহায্য করতে পারলো না। তার গর্ব অহংকার মাটির সাথে মিশে গেল। না কেউ তার সাহায্যার্থে এগিয়ে এলো, না সে নিজে প্রতিকারে সমর্থ হলো। কেউ কেউ ( আরবী ) এর উপর ( আরবী ) বা বিরতি মেনে থাকেন এবং প্রথম বাক্যটিকে ওর সাথে মিলিয়ে নেন। অর্থাৎ সেখানে সে প্রতিশোধ নিতে পারলো না। আবার কেউ কেউ ( আরবী ) এর উপর আয়াত শেষ করে পর থেকে নতুন বাক্য। শুরু করেন ( আরবী ) শব্দটি দ্বিতীয় পঠনে ( আরবী ) ও রয়েছে। প্রথম পঠনে ভাবার্থ হবেঃ প্রত্যেক মু'মিন ও কাফির আল্লাহ তাআলার নিকটই প্রত্যাবর্তনকারী, তাঁর নিকট ছাড়া আর কোন আশ্রয় স্থল নেই। শাস্তির সময় তিনি ছাড়া অন্য কেউই কাজে আসবে না। যেমন অন্য আয়াতে রয়েছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তারা আমার শাস্তি দেখে বলতে লাগলোঃ আমরা এক আল্লাহর উপর ঈমান আনছি ।” ( ৪০:৮৪ ) যেমন ফিরাউন ডুবে যাওয়ার সময় বলেছিলঃ “ আমি আল্লাহর উপর ঈমান আনছি যার উপর বাণী ইসরাঈল ঈমান এনেছে এবং আমি মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছি ।” ঐ সময় উত্তরে বলা হয়েছিলঃ “ এখন তুমি ঈমান আনছো? অথচ ইতিপূর্বে তুমি নাফরমান ছিলে এবং বিশৃংখলা সৃষ্টিকারীদের অন্তর্ভুক্ত রয়ে গিয়েছিলে ।”( আরবী ) এ যের দেয়া অবস্থায় অর্থ হবেঃ ‘সেখানে সঠিকভাবে হুকুম আল্লাহর জন্যেই।' এর দ্বিতীয় কিরআত এর উপর পেশ দিয়ে রয়েছে। কেননা, এটা এর বা বিশেষণ। যেমন ( আরবী ) ( ২৫:২৬ )এই জায়গায় রয়েছে। আবার কেউ কেউ ( আরবী ) কে যের সহ পড়ে থাকেন। তাদের মতে এটা ( আরবী ) এর ( আরবী ) বা বিশেষণ। যেমন অন্য আয়াতে রয়েছেঃ অর্থাৎ ( আরবী ) ( ৬:৬২ ) “ অতঃপর তাদেরকে সেই আল্লাহর কাছে ফিরিয়ে নেয়া হবে যিনি তাদের প্রকৃত ও সত্য মাওলা ।"এজন্যেই আবার তিনি বলেনঃ যে আমল শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যেই হয় তার পুণ্য খুব বেশী হয় এবং পরিণাম হিসেবেও হয় খুবই উত্তম।
সূরা কাহ্ফ আয়াত 44 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- রহমান-এর বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের সাথে যখন মুর্খরা কথা বলতে
- ফেরাউন তার সম্প্রদায়কে ডেকে বলল, হে আমার কওম, আমি কি মিসরের অধিপতি নই? এই নদী
- এবং যিনি তৃণাদি উৎপন্ন করেছেন,
- অথচ তারা অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে। অতএব আপনি জালেমদের পথভ্রষ্টতাই বাড়িয়ে দিন।
- এ প্রত্যাহার না করা আপনার পালনকর্তার মেহেরবানী। নিশ্চয় আপনার প্রতি তাঁর করুণা বিরাট।
- সালেহ বললেন এই উষ্ট্রী, এর জন্যে আছে পানি পানের পালা এবং তোমাদের জন্যে আছে পানি
- এই কিতাবে ইদ্রীসের কথা আলোচনা করুন, তিনি ছিলেন সত্যবাদী নবী।
- অতঃপর যখন তাদের আঙ্গিনায় আযাব নাযিল হবে, তখন যাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিল, তাদের সকাল বেলাটি
- যখন তিনি তাঁর পিতা ও তাঁর সম্প্রদায়কে বললেনঃ এই মূর্তিগুলো কী, যাদের তোমরা পূজারী হয়ে
- যারা দৃঢ়পদ রয়েছে এবং তাদের পালনকর্তার উপর ভরসা করেছে।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা কাহ্ফ ডাউনলোড করুন:
সূরা Kahf mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Kahf শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers