কোরান সূরা তাওবা আয়াত 45 তাফসীর
﴿إِنَّمَا يَسْتَأْذِنُكَ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَارْتَابَتْ قُلُوبُهُمْ فَهُمْ فِي رَيْبِهِمْ يَتَرَدَّدُونَ﴾
[ التوبة: 45]
নিঃসন্দেহে তারাই আপনার কাছে অব্যাহতি চায়, যারা আল্লাহ ও রোজ কেয়ামতে ঈমান রাখে না এবং তাদের অন্তর সন্দেহগ্রস্ত হয়ে পড়েছে, সুতরাং সন্দেহের আবর্তে তারা ঘুরপাক খেয়ে চলেছে। [সূরা তাওবা: 45]
Surah At-Tawbah in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Tawbah ayat 45
তোমার নিকট অনুমতি চায় কেবল ওরাই যারা আল্লাহ্তে ও শেষদিনে ঈমান আনে না, আর তাদের হৃদয় দ্বিধাগ্রস্ত। কাজেই তাদের সন্দেহের মধ্যেই তারা দোল খাচ্ছে।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৪৫. হে রাসূল! যারা আল্লাহর পথে জিহাদ না করার জন্য আপনার অনুমতি কামনা করে তারা অবশ্যই এমন মুনাফিক যারা আল্লাহ তা‘আলা ও কিয়ামতের দিবসে বিশ্বাস করে না এবং যাদের অন্তরে আল্লাহর দীন সম্পর্কে অবশ্যই সন্দেহ রয়েছে। ফলে তারা নিজেদের সন্দেহে অস্থিরভাবেই ঘুরপাক খাচ্ছে। সত্যের প্রতি তারা কোন পথই খুঁজে পাচ্ছে না।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
অবশ্য ঐসব লোক তোমার কাছে অনুমতি চেয়ে থাকে, যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে না, আর তাদের অন্তরসমূহ সন্দেহগ্রস্ত। অতএব তারা নিজেদের সন্দেহে হতবুদ্ধি হয়ে রয়েছে।[১] [১] এখানে সেই মুনাফিক্বদের কথা বর্ণনা হচ্ছে, যারা ছোট্ট ধরনের বাহানা বের করে রসূলের সাথে জিহাদে না যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিল। তাদের ব্যাপারে বলা হয়েছে যে, তারা আল্লাহ এবং আখেরাতের উপর বিশ্বাস রাখে না। আর তার অর্থ এই যে, সেই ঈমানহীনতাই তাদেরদেরকে জিহাদে না যেতে বাধ্য করেছিল। পক্ষান্তরে যদি ঈমান তাদের অন্তরে সুদৃঢ় হত, তাহলে তারা না জিহাদ থেকে গা বাঁচাতো, আর না-ই তাদের মনে কোন প্রকার সংশয়-সন্দেহ সৃষ্টি হতো। জেনে রাখা দরকার যে, উক্ত জিহাদে অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে মুসলিমরা চার দলে বিভক্ত ছিলেন। প্রথম দল হল তাঁরা, যাঁরা নির্দ্বিধায় প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিলেন। দ্বিতীয় দল তাঁরা, যাঁদের প্রথম প্রথম দ্বিধা ছিল এবং তাঁদের মন ভ্রষ্ট ছিল। কিন্তু সত্বর তাঁরা সে দ্বিধাকে কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলেন। তৃতীয় দল তাঁরা, যাঁদের শারীরিক দুর্বলতা ও অসুস্থতার কারণে অথবা সওয়ারী ও সফরের খরচ না থাকার কারণে সত্যসত্যই ওজর ছিল। যাঁদেরকে স্বয়ং আল্লাহ অনুমতি দান করেছিলেন। ( এ ব্যাপারে বর্ণনা ৯১-৯২নং আয়াতে এসেছে। ) চতুর্থ দল তাঁরা, যাঁরা কেবল অলসতার কারণে শরীক হননি এবং যখন নবী ( সাঃ ) ফিরে এলেন তখন তাঁরা নিজেদের ত্রুটি ও গোনাহর কথা স্বীকার করে নিজেদেরকে তওবা ও শাস্তির জন্য পেশ করে দিলেন। এ ছাড়া বাকী লোকেরা মুনাফিক্বদল ও তাদের গুপ্তচর ছিল। এখানে মুসলিমদের প্রথম দল এবং মুনাফিক্বদের কথা উল্লেখ হয়েছে। বাকী তিন দল মুসলিমদের বর্ণনা পরবর্তীতে আসবে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আপনার কাছে অব্যাহতি প্রার্থনা করে শুধু তারাই যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে না। আর তাদের অন্তরসমূহ সংশয়গ্রস্ত হয়ে গেছে, সুতরাং তারা আপন সংশয়ে দ্বিধাগ্রস্ত।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৪৩-৪৫ নং আয়াতের তাফসীর: ইবনে আবি হাতিম ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন যে, আউন ( রাঃ ) স্বীয় সাথীদেরকে জিজ্ঞেস করেন, আপনারা কি এর চেয়ে উত্তম তিরস্কারের কথা শুনেছেন? মহান আল্লাহ স্বীয় রাসূল ( সঃ )-কে তিরস্কারপূর্ণ কথা বলার পূর্বেই তাকে ক্ষমা করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেনঃ “ ( হে নবী! ) আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বটে, কিন্তু কেন তুমি তাদেরকে যুদ্ধ হতে অব্যাহতির অনুমতি দিয়েছো?" ( ইবনে জারীর (রঃ ) তাখরীজ করেছেন যে, পূর্বে কোন নির্দেশ ছাড়াই নবী দু’টি কাজ করেছেন । একটি হলো মুনাফিকদের যুদ্ধ হতে অব্যাহতির অনুমতি দান এবং দ্বিতীয় হলো বদরের বন্দীদের নিকট থেকে ফিদিয়া গ্রহণ । তখন আল্লাহ তা'আলা ঐ আয়াত অবতীর্ণ করেন) এরপর তিনি সূরায়ে নূরে আয়াত অবতীর্ণ করে তাঁর রাসূল ( সঃ )-কে অবকাশ দেন যে, তিনি ইচ্ছা করলে তাদেরকে অনুমতি দিতে পারেন। তিনি বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ তাদের কেউ যদি কোন কাজ ও ব্যস্ততার কারণে তোমার কাছে। যুদ্ধের অব্যাহতির অনুমতি প্রার্থনা করে তবে তুমি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুমতি দিতে পার।" ( ২৪:৬২ ) মুজাহিদ ( রঃ ) বলেন যে, সূরায়ে তাওবার এ আয়াতটি ঐ লোকদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয় যারা পরস্পর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, তারা রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর কাছে যুদ্ধ হতে অব্যাহতির অনুমতি প্রার্থনা করবে। যদি অনুমতি মিলে যায় তবে তো ভাল কথা। আর যদি তিনি অনুমতি নাও দেন তবুও তারা যুদ্ধে গমন করবে না। এ জন্যেই আল্লাহ তা'আলা বলেন যে, যদি তারা অনুমতি লাভ না করতো তবে এটুকু লাভ তো অবশ্যই হতো যে, সত্য ওষরকারী ও মিথ্যা। বাহানাকারীদের মধ্যে পার্থক্য প্রকাশ পেয়ে যেতো। ভাল ও মন্দ এবং সৎ ও অসতের মধ্যে প্রভেদ সৃষ্টি হতো। অনুগত লোকেরা তো হাযির হয়েই যেতো। আর অবাধ্য লোকেরা যুদ্ধ হতে অব্যাহতি লাভের অনুমতি না পেয়েও বের হতো না। কেননা, তারা তো এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েই ছিল যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাদেরকে অনুমতি দিন আর নাই দিন, তারা যুদ্ধে গমন করবেই না। এ জন্যেই আল্লাহ তাআলা পরবর্তী আয়াতে ঘোষণা করেন- এটা সম্ভব নয় যে, খাঁটি ঈমানদার লোকেরা তোমার কাছে যুদ্ধ হতে অব্যাহতি লাভের অনুমতি প্রার্থনা করবে। তারা তো জিহাদকে আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায় মনে করে নিজেদের জান ও মালকে আল্লাহর পথে উৎসর্গ করতে সর্বদা আকাক্ষী। আল্লাহ তাআলা এই পরহেযগার লোকদেরকে ভালরূপেই অবগত আছেন। আর এ লোকগুলো, যাদের শরীয়ত সম্মত কোনই ওর নেই, যারা শুধু বাহানা করে যুদ্ধ হতে অব্যাহতি লাভের অনুমতি প্রার্থনা করছে তারা বেঈমান লোক। তারা আখিরাতের পুরস্কারের কোন আশা রাখে না। হে নবী! তারা এখনও তোমার শরীয়তের ব্যাপারে সন্দিহান রয়েছে এবং তারা সদা উদ্বিগ্ন হয়ে ফিরছে। তারা এক পা সামনের দিকে বাড়িয়ে দিচ্ছে তো আর এক পা পিছনের দিকে সরাচ্ছে। তাদের কোন ধৈর্য ও মনের স্থিরতা নেই। তারা না আছে এদিকে, না আছে। ওদিকে। হে নবী! আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তুমি কখনো তার জন্যে কোন পথ পাবে না।
সূরা তাওবা আয়াত 45 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- শপথ চক্রশীল আকাশের
- যাদেরকে তাদের ঘর-বাড়ী থেকে অন্যায়ভাবে বহিস্কার করা হয়েছে শুধু এই অপরাধে যে, তারা বলে আমাদের
- আর সে যে মহিলার ঘরে ছিল, ঐ মহিলা তাকে ফুসলাতে লাগল এবং দরজাসমূহ বন্ধ করে
- যখন খাঁটিভাবে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়, তখন যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, তাদের অন্তর
- আর যে ব্যক্তি আল্লাহর দিকে আহবানকারীর কথা মানবে না, সে পৃথিবীতে আল্লাহকে অপারক করতে পারবে
- মূসা বলল, তিনি তোমাদের পালনকর্তা এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরও পালনকর্তা।
- নিশ্চয় তাদের প্রত্যাবর্তন আমারই নিকট,
- আমি রাত্রি ও দিনকে দুটি নিদর্শন করেছি। অতঃপর নিস্প্রভ করে দিয়েছি রাতের নিদর্শন এবং দিনের
- আর তাদেরকে শুনিয়ে দাও নূহের অবস্থা যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বলল, হে আমার সম্প্রদায়, যদি
- আর পক্ষীকুলকেও, যারা তার কাছে সমবেত হত। সবাই ছিল তাঁর প্রতি প্রত্যাবর্তনশীল।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা তাওবা ডাউনলোড করুন:
সূরা Tawbah mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Tawbah শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers