কোরান সূরা নাহল আয়াত 47 তাফসীর
﴿أَوْ يَأْخُذَهُمْ عَلَىٰ تَخَوُّفٍ فَإِنَّ رَبَّكُمْ لَرَءُوفٌ رَّحِيمٌ﴾
[ النحل: 47]
কিংবা ভীতি প্রদর্শনের পর তাদেরকে পাকড়াও করবেন? তোমাদের পালনকর্তা তো অত্যন্ত নম্র, দয়ালু। [সূরা নাহল: 47]
Surah An-Nahl in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Nahl ayat 47
অথবা তাদের তিনি পাকড়াবেন না ভয়ভীতি দিয়ে? সুতরাং তোমাদের প্রভু নিশ্চয়ই তো পরম স্নেহময়, অফুরন্ত ফলদাতা।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৪৭. না কি তারা এ ব্যাপারে নিরাপদ যে, তাদের ভীতি অবস্থায় তাদের উপর আল্লাহর আযাব আসবে না। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে সর্বাবস্থায় শাস্তি দিতে সক্ষম। নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক অতি দয়ালু ও অত্যন্ত মেহেরবান। তিনি দ্রæত শাস্তি দেন না। যেন তাঁর বান্দারা তাওবার সুযোগ পায়।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
অথবা তাদেরকে তিনি ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় পাকড়াও করবেন না?[১] তোমাদের প্রতিপালক তো অবশ্যই অত্যন্ত স্নেহশীল, পরম দয়ালু। [২] [১] تخوف এর এ অর্থও হতে পারে যে, পূর্ব থেকেই অন্তরে আযাব ও পাকড়াও-এর ভয় বিদ্যমান থাকে। যেমন কোন সময় মানুষ বড় ধরনের কোন পাপ করে ফেলে, অতঃপর সে ভয় করে যে, যেন আল্লাহ আমাকে ধরে না ফেলেন। কোন কোন সময় এ ধরনের পাকড়াও হয়ে থাকে। [২] তিনি পাপের পর পরই ধরে ফেলেন না; বরং অবকাশ দেন। আর এই অবকাশে অধিকাংশ মানুষ তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগ লাভ করে থাকে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
অথবা তাদেরকে তিনি ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় পাকড়াও করবেন না? নিশ্চয় তোমাদের রব অতি দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু [ ১ ]। [ ১ ] আলোচ্য আয়াতসমূহে দুনিয়ার বিভিন্ন আযাব বর্ণনা করার পর সর্বশেষে বলা হয়েছে ( فَاِنَّ رَبَّكُمْ لَرَءُوْفٌ رَّحِيْمٌ ) এতে আল্লাহর দয়ালু হওয়া ব্যক্ত করে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, দুনিয়ার হুশিয়ারী প্রকৃতপক্ষে স্নেহ ও দয়ার কারণেই হয়ে থাকে, যাতে গাফেল মানুষ হুশিয়ার হয়ে স্বীয় কর্মকাণ্ড সংশোধন করে নেয়। তবে তা শুধুমাত্র গোনাহগার ঈমানদারদের ব্যাপারে। কিন্তু যারা কাফের তাদের জন্য দুনিয়ার আযাবের সাথে আখেরাতের আযাবও অপেক্ষা করছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “ আল্লাহর চেয়ে বড় সহিষ্ণু আর কেউ নেই যে খারাপ শোনার পরও ধৈর্যধারণ করে, তারা তার জন্য সন্তান সাব্যস্ত করে তারপরও তিনি তাদেরকে রিযিক দেন এবং তাদের নিরাপত্তা বিধান করেন । [ বুখারীঃ ৬০৯৯ ] অপর হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ অবশ্যই আল্লাহ যালেমকে ছাড় দিতেই থাকেন, তারপর যখন তাকে পাকড়াও করেন তখন সে তার ধরা থেকে পালানোর কোন পথ পায় না, তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করলেনঃ "এরূপই আপনার রবের শাস্তি! তিনি শাস্তি দান করেন জনপদসমূহকে যখন ওরা যুলুম করে থাকে । নিশ্চয়ই তার শাস্তি মর্মম্ভদ, কঠিন।" [ সূরা হুদঃ ১০২ ] [ মুসলিমঃ ২৫৮৩ ] অনুরূপভাবে আল্লাহ্ তা'আলা সূরা হজ্জের ৪৮ নং আয়াতেও এটা উল্লেখ করেছেন।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৪৫-৪৭ নং আয়াতের তাফসীর সারা বিশ্বের সৃষ্টিকর্ত, আসমান ও যমীনের মালিক আল্লাহ তাআলা নিজের অবগতি সত্ত্বেও সহনশীলতা এবং ক্রোধ সত্ত্বেও নিজের মেহেরবানীর খবর দিচ্ছেন যে, তিনি ইচ্ছা করলে নিজের পাপী বান্দাদের যমীনে ধ্বসিয়ে দিতে পারেন এবং তাদের অজান্তে তাদের উপর শাস্তি আনয়ন করতে পারেন। কিন্তু নিজের সীমাহীন মেহেরবানীর কারণে তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে থাকেন। যেমন তিনি বলেনঃ “ তোমরা কি নিশ্চিন্ত রয়েছে যে, আকাশে যিনি রয়েছেন তিনি তোমাদেরকেসহ ভূমিকে ধ্বসিয়ে দিবেন না । আর ওটা আকস্মিকভাবে থরথর করে কাঁপতে থাকবে? অথবা তোমরা কি নিশ্চিন্ত আছ যে, আকাশে যিনি রয়েছেন তিনি তোমাদের উপর কংকরবর্ষী ঝটিকা প্রেরণ করবেন না? তখন তোমরা জানতে পারবে কিরূপ ছিল আমার সতর্কবাণী।” আবার এটাও হতে পারে যে, আল্লাহ তাআলা এইরূপ ষড়যন্ত্রকারী দুষ্ট প্রকৃতির লোকদেরকে তাদের চলা-ফেরা, আসা-যাওয়া, খাওয়া এবং উপার্জন করা অবস্থাতেই পাকড়াও করেন। সফরে, বাড়ীতে, দিনে-রাত্রে যখন ইচ্ছা তাদেরকে ধরে ফেলেন। যেমন তিনি বলেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ গ্রামবাসী কি নির্ভয় হয়ে গেছে যে, তাদের উপর আমার শাস্তি রাত্রি কালে তাদের শয়ন অবস্থাতেই এসে পড়বে? কিংবা বেলা ওঠার পর তাদের খেলাধুলায় মগ্ন থাকার অবস্থাতেই এসে পড়বে?” আল্লাহকে কোন ব্যক্তি বা কোন কাজ অপারগ করতে পারে না, তিনি পরাজিত ও ক্লান্ত হওয়ার নন এবং তিনি অকৃতকার্য হওয়ারও নন । এও হতে পারে যে, তারা ভীত-সন্ত্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে আল্লাহ ধরে ফেলবেন। তাহলে দুটো শাস্তি একই সাথে হয়ে যাবে। একটা হলো ভয়, আর অপরটা হলো পাকড়াও। একটি হলো মৃত্যু অন্যটি হলো সন্ত্রাস। কিন্তু মহান আল্লাহ, বিশ্বপ্রতিপালক বড়ই করুণাময়। একারণেই তিনি তাড়াতাড়ি পাকড়াও করেন না।সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে, স্বভাব বিরুদ্ধে কথা শুনে ধৈর্য ধারণ করার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা অপেক্ষা বেশী ধৈর্য ধারণকারী আর কেউই নেই। লোকেরা তাঁর সন্তান সাব্যস্ত করছে, অথচ তিনি তাদেরকে খেতে দিচ্ছেন এবং নিরাপদে রাখছেন।আল্লাহ তাআলা যালিমকে অবকাশ দেন। কিন্তু যখন পাকড়াও করেন তখন অকস্মাৎ পাকড়াও করেন এবং সে ধ্বংস হয়ে যায়। অতঃপর রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) পাঠ করেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ তোমার প্রতিপালকের পাকড়াও এরূপই যে, যুলুম করা অবস্থায় যখন তিনি কোন গ্রামবাসীকে পাকড়াও করেন তখন নিঃসন্দেহে তাঁর । পাকড়াও কঠিন যন্ত্রণাদায়ক হয়।” ( ১১:১০২ ) আর এক জায়গায় রয়েছেঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ বহু এমন গ্রামবাসী রয়েছে যাদেরকে আমি কিছু দিনের জন্যে অবকাশ দিয়ে থাকি তাদের যুলুম করা অবস্থায়, অতঃপর তাদেরকে পাকড়াও করি, তাদের প্রত্যাবর্তন তো আমার কাছেই ।” ( ২২:৪৮ )
সূরা নাহল আয়াত 47 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- যখন আমি কোন জনপদকে ধ্বংস করার ইচ্ছা করি তখন তার অবস্থাপন্ন লোকদেরকে উদ্ধুদ্ধ করি অতঃপর
- এই কিতাব পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।
- তিনি বললেনঃ আমি কি বলিনি যে, আপনি আমার সাথে ধৈর্য্য ধরে থাকতে পারবেন না।
- আর কাফেররা যেন একা যা মনে না করে যে, তারা বেঁচে গেছে; কখনও এরা আমাকে
- রসূল বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা, আমার সম্প্রদায় এই কোরআনকে প্রলাপ সাব্যস্ত করেছে।
- যাদের অন্তরে রোগ আছে, তারা কি মনে করে যে, আল্লাহ তাদের অন্তরের বিদ্বেষ প্রকাশ করে
- অতঃপর আল্লাহর পরিবর্তে তারা যাদেরকে সান্নিধ্য লাভের জন্যে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছিল, তারা তাদেরকে সাহায্য করল
- তাছাড়া এরা যদি তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, তবে তোমার পূর্বেও এরা এমন বহু নবীকে মিথ্যা
- এগুলো হলো আল্লাহর নিদর্শন, যা আমরা তোমাদেরকে যথাযথভাবে শুনিয়ে থাকি। আর আপনি নিশ্চিতই আমার রসূলগণের
- তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা নাহল ডাউনলোড করুন:
সূরা Nahl mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Nahl শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers