কোরান সূরা হুজরাত আয়াত 5 তাফসীর
﴿وَلَوْ أَنَّهُمْ صَبَرُوا حَتَّىٰ تَخْرُجَ إِلَيْهِمْ لَكَانَ خَيْرًا لَّهُمْ ۚ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾
[ الحجرات: 5]
যদি তারা আপনার বের হয়ে তাদের কাছে আসা পর্যন্ত সবর করত, তবে তা-ই তাদের জন্যে মঙ্গলজনক হত। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [সূরা হুজরাত: 5]
Surah Al-Hujuraat in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Hujurat ayat 5
আর যদি তারা ধৈর্য ধরত যতক্ষণ না তুমি তাদের কাছে বেরিয়ে আস তাহলে তাদের জন্য তা বেশি ভাল হতো । আর আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৫. হে রাসূল! আপনাকে আপনার স্ত্রীদের ঘরের পেছন থেকে আহŸানকারীরা আপনার বেরিয়ে আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে নিচু স্বরে আপনাকে সম্বোধন করতো তাহলে তা তাদের জন্য আপনাকে হুজরাসমূহের আড়াল থেকে আহŸান করা অপেক্ষা উত্তম হতো। যেহেতু এতে রয়েছে সম্মান ও মর্যাদাবোধ। বস্তুতঃ আল্লাহ তাদের মধ্য হতে কিংবা অন্যদের মধ্য হতে তাওবাকারীদের জন্য ক্ষমাশীল। তিনি তাদের মূর্খতার জন্য ক্ষমাশীল ও তাদের প্রতি দয়াপরবশ।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
তুমি বের হয়ে তাদের নিকট আসা পর্যন্ত যদি তারা ধৈর্যধারণ করত, তাহলে তাই তাদের জন্য উত্তম হত।[১] আর আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [২] [১] অর্থাৎ, তোমার বের হওয়ার অপেক্ষা করত এবং তোমাকে ডাকার ব্যাপারে তাড়াহুড়ো না করত, তবে তা দ্বীন ও দুনিয়া উভয় দিক দিয়ে তাদের জন্য উত্তম হত। [২] এই জন্য তাদেরকে পাকড়াও করেননি, বরং আগামীতে নবী ( সাঃ )-এর প্রতি আদব ও শ্রদ্ধা-সম্মানের খেয়াল রাখার তাকীদ করে দিলেন।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর আপনি বের হয়ে তাদের কাছে আসা পর্যন্ত যদি তারা ধৈর্য ধারণ করত, তবে তা-ই তাদের জন্য উত্তম হত [ ১ ]। আর আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [ ১ ] এই আয়াত নাযিল হওয়ার কারণ সম্পর্কে বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে, বনি-তামিমের লোকগণ দুপুরের সময় মদীনায় উপস্থিত হয়েছিল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোনো এক হুজরায় বিশ্রামরত ছিলেন। তারা ছিল বেদুঈন এবং সামাজিকতার রীতি-নীতি সম্পর্কে অজ্ঞ। কাজেই তারা হুজরার বাইরে থেকেই ডাকাডাকি শুরু করল, এর পরিপ্রেক্ষিতে আলোচ্য আয়াত অবতীর্ণ হয়। [ মুসনাদে আহমাদ: ৩/৪৮৮ ] এতে এভাবে ডাকাডাকি করতে নিষেধ করা হয় এবং অপেক্ষা করার আদেশ দেয়া হয়। সাহাবী ও তাবেয়িগণ তাদের আলেম ও উস্তাদ-মাশায়েখের সাথেও এই আদব ব্যবহার করেছেন। ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত আছে— আমি যখন কোনো আলেম সাহাবীর কাছ থেকে কোনো হাদিস লাভ করতে চাইতাম, তখন তার গৃহে পৌঁছে ডাকাডাকি অথবা দরজার কড়া নাড়া থেকে বিরত থাকতাম এবং দরজার বাইরে বসে অপেক্ষা করতাম। তিনি যখন নিজেই বাইরে আগমন করতেন, তখন আমি তার কাছে হাদিস জিজ্ঞেস করতাম। তিনি আমাকে দেখে বলতেনঃ হে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চাচাত ভাই। আপনি দরজার কড়া নেড়ে আমাকে সংবাদ দিলেন না কেন? ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু উত্তরে বলতেনঃ আলেম কোন জাতির জন্যে নবী সদৃশ। আল্লাহ তা'আলা নবী সম্পর্কে আদেশ দিয়েছেন যে, তার বাইরে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা কর। [ দারমী: ২/১২৩, ১২৭, মুস্তাদরাকে হাকিম: ৩৩৪, ৫৮১৩, ৬৩৫৫, ৮০৭৫ ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৪-৫ নং আয়াতের তাফসীর: এই আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা'আলা ঐ লোকগুলোর নিন্দে করছেন যারা রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে তার বাড়ীর পিছন হতে ডাকতো, যেমন এটা আরববাসীদের মধ্যে প্রচলিত ছিল। তাই আল্লাহ পাক বলেন যে, তাদের অধিকাংশই নির্বোধ।অতঃপর এই ব্যাপারে আদব বা দ্রতা শিক্ষা দিতে গিয়ে বলেনঃ “ হে নবী ( সঃ )! তুমি বের হয়ে তাদের নিকট আসা পর্যন্ত তারা যদি ধৈর্য ধারণ করতে তবে ওটাই তাদের জন্যে উত্তম হতো ।' অর্থাৎ তাদের উচিত ছিল যে, তারা নবী ( সঃ )-এর অপেক্ষায় থাকতো এবং যখন তিনি বাড়ী হতে বের হতেন তখন তাকে যা বলার ছিল তাই তারা বলতো এবং বাহির হতে তাঁকে ডাক দেয়া তাদের জন্যে মোটেই উচিত ছিল না। এরূপভাবে বাহির হতে তাঁকে ডাক না দিলে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ তারা লাভ করতো। অতঃপর মহান আল্লাহ যেন হুকুম দিচ্ছেন যে, এরূপ লোকদের উচিত আল্লাহ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা। কেননা, তিনি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। এ আয়াতটি হযরত আকরা ইবনে হাবিস ( রাঃ )-এর ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়। মুসনাদে আহমাদে রয়েছে যে, একটি লোক রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে হে মুহাম্মাদ ( সঃ ), হে মুহাম্মাদ ( সঃ )! এভাবে নাম ধরে ডাক দেয়। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) কোন জবাব দিলেন না। তখন সে বলেঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আমার প্রশংসা করা শ্রেষ্ঠত্নের কারণ । এবং আমার নিন্দা করা লাঞ্ছনার কারণ।” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তখন বলেনঃ “ এরূপ । সত্তা তো হলেন একমাত্র মহামহিমান্বিত আল্লাহ।” হযরত সুফিয়ান সাওরী ( রঃ ) হযরত হাবীব ইবনে আবি উমরা ( রঃ ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, একদা বিশর ইবনে গালিব এবং লাবীদ ইবনে আতারিদ হাজ্জাজের সামনে বসেছিলেন। বিশর ইবনে গালিব লাবীদ ইবনে আতারিদকে বললেনঃ “ তোমার কওম বানু তামীমের ব্যাপারে ( আরবী )-এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে ।” যখন হযরত সাঈদ ইবনে জুবায়ের ( রাঃ )-এর সামনে এটা বর্ণনা করা হলো তখন তিনি বললেনঃ সে যদি আলেম হতো তবে এ সূরার ( আরবী )-এই আয়াত পাঠ করে জবাব। দিতো। তারা বলেছিলঃ “ আমরা ইসলাম গ্রহণ করেছি, সুতরাং বানু আসাদ গোত্র আপনার সাথে যুদ্ধ করবে না ।”হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ কতকগুলো আরব বেদুঈন একত্রিত হয় এবং তারা বলেঃ “ চলো, আমরা এ লোকটির ( নবী সঃ )-এর কাছে যাই । যদি তিনি নবী হন তাহলে তাঁর নিকট হতে সৌভাগ্য লাভ করার ব্যাপারে আমরাই বড় হকদার। আর যদি তিনি বাদশাহ হন তবে আমরা তার ডানার নীচে পড়ে থাকবো।” আমি গিয়ে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে এ খবর দিলাম। ইতিমধ্যে তারা এসে পড়লো এবং রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে তার ঘরের পিছন হতে হে মুহাম্মাদ ( সঃ )! হে মুহাম্মাদ ( সঃ )! বলে ডাকতে লাগলো। তখন আল্লাহ তা'আলা ( আরবী ) আয়াতটি অবতীর্ণ করলেন। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তখন আমার কান ধরে বললেনঃ “ হে যায়েদ ( রাঃ )! আল্লাহ তোমার কথা সত্যরূপে দেখিয়েছেন । হে যায়েদ ( রাঃ )! অবশ্যই আল্লাহ তোমার কথা সত্যরূপে দেখিয়েছেন।”
সূরা হুজরাত আয়াত 5 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- যারা তা লোক-দেখানোর জন্য করে
- এবং আমি মনে করি না যে, কেয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। যদি কখনও আমার পালনকর্তার কাছে আমাকে
- এটা কিতাব, এর আয়াতসমূহ বিশদভাবে বিবৃত আরবী কোরআনরূপে জ্ঞানী লোকদের জন্য।
- তারা বলল, এবার সঠিক তথ্য এনেছ। অতঃপর তারা সেটা জবাই করল, অথচ জবাই করবে বলে
- আমি কত জনপদ ধ্বংস করেছি এমতাবস্থায় যে, তারা ছিল গোনাহগার। এই সব জনপদ এখন ধ্বংসস্তুপে
- আলিফ-লাম-মীম।
- আপনি তো তাদেরকে সোজা পথে দাওয়াত দিচ্ছেন;
- কেয়ামতের দিন সে তার জাতির লোকদের আগে আগে থাকবে এবং তাদেরকে জাহান্নামের আগুনে পৌঁছে দিবে।
- তুমি তোমার হাতে এক মুঠো তৃণশলা নাও, তদ্বারা আঘাত কর এবং শপথ ভঙ্গ করো না।
- কোন কোন আহলে কিতাব এমনও রয়েছে, তোমরা যদি তাদের কাছে বহু ধন-সম্পদ আমানত রাখ, তাহলেও
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা হুজরাত ডাউনলোড করুন:
সূরা Hujurat mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Hujurat শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers