কোরান সূরা আনফাল আয়াত 51 তাফসীর
﴿ذَٰلِكَ بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيكُمْ وَأَنَّ اللَّهَ لَيْسَ بِظَلَّامٍ لِّلْعَبِيدِ﴾
[ الأنفال: 51]
এই হলো সে সবের বিনিময় যা তোমরা তোমাদের পূর্বে পাঠিয়েছ নিজের হাতে। বস্তুতঃ এটি এ জন্য যে, আল্লাহ বান্দার উপর যুলুম করেন না। [সূরা আনফাল: 51]
Surah Al-Anfal in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Anfal ayat 51
''এ এ-জন্য যা তোমাদের হাত আগবাড়িয়ে দিয়েছিল, আর আল্লাহ্ কখনো বান্দাদের প্রতি অত্যাচারী নন।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
৫১. হে কাফিররা! তোমাদের রূহ কবযের সময়কার এ যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি এবং তোমাদের কবর ও পরকালে অগ্নিদগ্ধের শাস্তি এ সবই হলো দুনিয়ার জীবনে তোমাদের কৃতকর্মের ফল। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা মানুষের উপর যুলুম করেন না। বরং তিনি তাদের মাঝে ইনসাফের ফায়সালা করেন। বস্তুতঃ তিনি ন্যায়পরায়ণ ফায়সালাকারী।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
এ হল তাদের কর্মফল। আর আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি কখনও অন্যায় করেন না। [১] [১] এই মার ও আযাব তোমাদের নিজেদেরই কর্মফল। নচেৎ আল্লাহ তাআলা বান্দাদের উপর অত্যাচার করেন না। বরং তিনি হলেন ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ। তিনি প্রত্যেক ধরনের অন্যায় ও অত্যাচার করা হতে পাক-পবিত্র। হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, " হে আমার বান্দারা! আমি নিজের উপর যুলুমকে হারাম করেছি এবং তোমাদের মাঝেও তা হারাম করে দিয়েছি। অতএব তোমরাও আপোসে যুলুম করো না। হে আমার বান্দারা! এটা তোমাদেরই কৃত আমল যা আমি গণনা করে রেখেছি। অতএব যে নিজের আমলে কল্যাণ পাবে, সে যেন আল্লাহর প্রসংশা করে। আর যে তার বিপরীত পাবে, সে যেন নিজেকেই ভৎর্সনা করে। " ( সহীহ মুসলিমঃ নেকী করা ও অত্যাচার হারাম পরিচ্ছেদ )
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
এটা তো সে কারণে, যা তোমাদের হাত আগে পাঠিয়েছিল, আর আল্লাহ্ তো তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যাচারী নন [ ১ ]। [ ১ ] এ আয়াতে কাফেরদেরকে সম্বোধন করে বলা হয়েছে, দুনিয়া ও আখেরাতে এ আযাব তোমাদের নিজেদের হাতেরই অর্জিত ৷ সাধারণ কাজকর্ম যেহেতু হাতের দ্বারা সম্পাদিত হয়, সেহেতু এখানেও হাতেরই উল্লেখ করা হয়েছে। [ জালালাইন ] মৰ্মার্থ হল এই যে, এসব আযাব দুনিয়ার জীবনে তোমাদের নিজেদের খারাপ আমলেরই ফলাফল। সেটার শাস্তিই তোমাদের দেয়া হচ্ছে। [ ইবন কাসীর ] আর এ কথা সত্য যে, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের উপর যুলুমকারী নন যে, অকারণেই কাউকে আযাবে নিপতিত করে দেবেন। হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ “ হে আমার বান্দাগণ! আমি যুলুম করা আমার উপর নিষিদ্ধ করে নিয়েছি । আর তা তোমাদের উপরও হারাম করে দিয়েছি। সুতরাং তোমরা যুলুম করো না। হে আমার বান্দাগণ! এগুলো তো তোমাদের আমল যা আমি তোমাদের জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেব করে রাখি। যদি তোমাদের কেউ ভাল দেখতে পায়, তবে সে যেন আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে। আর যদি এর ব্যতিক্রম দেখতে পায়, তবে যেন সে নিজেকে ছাড়া আর কাউকে তিরস্কার না করে। [ মুসলিমঃ ২৫৭৭ ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৫০-৫১ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ হে মুহাম্মাদ ( সঃ )! ফেরেশতারা কত জঘন্যভাবে কাফিরদের রূহ কবয করে থাকে তা যদি তুমি দেখতে! তারা ঐ সময় কাফিরদের মুখমণ্ডলে ও পৃষ্ঠদেশে মারতে থাকে এবং বলে-“ নিজেদের দুষ্কার্যের প্রতিফল হিসেবে শাস্তির স্বাদ গ্রহণ কর ।” এর এক ভাবার্থ এও বর্ণনা করা হয়েছে যে, এটাও বদরের দিনেরই ঘটনা। সামনের দিক থেকেই সেইদিন ঐ কাফিরদের চেহারায় তরবারীর আঘাত লাগছিল এবং যখন তারা পলায়ন করছিল তখন তাদের পিঠের উপর তলোয়ার পড়ছিল।হাসান বসরী ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, একটি লোক বলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল! আমি আবু জেহেলের পিঠে কাঁটাসমূহের চিহ্ন দেখেছি ।” তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ এটা ফেরেশতাদের মারের চিহ্ন ।” আসল কথা এই যে, এই আয়াতটি বদরের সাথে নির্দিষ্ট নয়। শব্দগুলো সাধারণ। প্রত্যেক কাফিরেরই অবস্থা এরূপ হয়ে থাকে। সূরায়ে কিতালের মধ্যেও এ ঘটনা বর্ণিত হয়েছে এবং সূরায়ে আনআমের ....
( আরবী ) ( ৬:৯৩ )-এই আয়াতের মধ্যেও এর বর্ণনা তাফসীরসহ বর্ণিত হয়েছে। যেহেতু তারা ছিল নাফরমান লোক, সেহেতু তাদের মৃত্যুর সময় ফেরেশতাদের দ্বারা তাদেরকে খুবই কষ্ট দেয়া হয়। তাদের দুঙ্কার্যের কারণে তাদের রূহসমূহ তাদের দেহের মধ্যে লুকিয়ে যায়। সুতরাং ফেরেশতাগণ ওগুলো জোরপূর্বক বের করেন এবং বলেনঃ “ তোমার জন্যে আল্লাহর গজব রয়েছে । যেমন বারা’ ( রাঃ )-এর হাদীসে রয়েছে যে, মৃত্যুর যাতনার সময় ঐ অশুভ অবস্থায় মৃত্যুর ফেরেশতা কাফিরের কাছে এসে বলেনঃ “ হে কলুষিত আত্মা! গরম বাতাস, গরম পানি এবং গরম ছায়ার দিকে চল ।” তখন ঐ আত্মা দেহের মধ্যে লুকাতে থাকে। অবশেষে ফেরেশতা কোন জীবিত মানুষের গায়ের চামড়া খুলে নেয়ার মত ঐ আত্মাকে জোরপূর্বক টেনে বের করেন এবং সাথে সাথে শিরা উপশিরাও বেরিয়ে আসে। ফেরেশতা তাকে বলেনঃ “ এখন দহনের স্বাদ গ্রহণ কর । এটা তোমার পার্থিব দুষ্ককার্যাবলীর শাস্তি। আল্লাহ তাআলা বান্দাদের উপর মোটেই অত্যাচার করেন না। তিনি তো ন্যায়পরায়ণ হাকিম। তিনি কল্যাণময়, সর্বোচ্চ, অমুখাপেক্ষী, পবিত্র, মহামর্যাদা সম্পন্ন এবং প্রশংসিত। এজন্যেই সহীহ মুসলিমে আবু যার ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেন, আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “ হে আমার বান্দাগণ! আমি নিজের উপর অত্যাচার হারাম করে দিয়েছি এবং তোমাদের উপরও তা হারাম করেছি । সুতরাং তোমরা পরস্পর একে অপরের উপর অত্যাচার করো না। হে আমার বান্দারা! আমি তো শুধু তোমাদের কত আমলগুলোকে পরিবেষ্টন করেছি। সুতরাং যে ব্যক্তি কল্যাণ প্রাপ্ত হবে সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে। আর যে ব্যক্তি অন্য কিছু প্রাপ্ত হবে সে যেন নিজেকেই ভৎসনা করে।”
সূরা আনফাল আয়াত 51 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তারা তখন অবনমিত নেত্রে কবর থেকে বের হবে বিক্ষিপ্ত পংগপাল সদৃশ।
- তখন আপনি আপনার পালনকর্তার পবিত্রতা বর্ণনা করুন এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় তিনি
- আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল কে সৃষ্টি করেছে? তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ।
- আল্লাহর সামনে তারা আপনার কোন উপকারে আসবে না। যালেমরা একে অপরের বন্ধু। আর আল্লাহ পরহেযগারদের
- যখন তাঁরা সে স্থানটি অতিক্রম করে গেলেন, মূসা সঙ্গী কে বললেনঃ আমাদের নাশতা আন। আমরা
- তারা থাকবে কাঁটাবিহীন বদরিকা বৃক্ষে।
- সে দিন তারা কবর থেকে দ্রুতবেগে বের হবে, যেন তারা কোন এক লক্ষ্যস্থলের দিকে ছুটে
- এবং মিসকীনকে অন্নদানে পরস্পরকে উৎসাহিত কর না।
- প্রকৃত ঘটনা এমনিই। তার বৃত্তান্ত আমি সম্যক অবগত আছি।
- কাফেরদের জন্যে এটা সহজ নয়।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আনফাল ডাউনলোড করুন:
সূরা Anfal mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Anfal শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers