কোরান সূরা ইউসুফ আয়াত 64 তাফসীর
﴿قَالَ هَلْ آمَنُكُمْ عَلَيْهِ إِلَّا كَمَا أَمِنتُكُمْ عَلَىٰ أَخِيهِ مِن قَبْلُ ۖ فَاللَّهُ خَيْرٌ حَافِظًا ۖ وَهُوَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ﴾
[ يوسف: 64]
বললেন, আমি তার সম্পর্কে তোমাদেরকে কি সেরূপ বিশ্বাস করব, যেমন ইতিপূর্বে তার ভাই সম্পর্কে বিশ্বাস করেছিলাম? অতএব আল্লাহ উত্তম হেফাযতকারী এবং তিনিই সর্বাধিক দয়ালু। [সূরা ইউসুফ: 64]
Surah Yusuf in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Yusuf ayat 64
তিনি বললেন -- ''তোমাদের কি তার সন্বন্ধে বিশ্বাস করতে পারি যেভাবে তার ভাইয়ের ব্যাপারে এর আগে তোমাদের আমি বিশ্বাস করেছিলাম? বস্তুতঃ আল্লাহ্ই রক্ষণাবেক্ষণে সর্বশ্রেষ্ঠ, আর তিনিই ফলদানকারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ফলদাতা।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
৬৪. তাদের পিতা তাদেরকে বললো: আমি কি তোমাদেরকে তার ব্যাপারে তেমনিভাবে নিরাপদ ভাববো যেমননিভাবে তোমাদেরকে ইতিপূর্বে নিরাপদ ভেবেছিলাম তার আপন ভাই ইউসুফের ব্যাপারে?! আমি তোমাদেরকে তার ব্যাপারে নিরাপদ ভেবে তোমাদের কাছ থেকে হিফাযতের অঙ্গীকারও নিয়েছিলাম। তবে তোমরা সেই অঙ্গীকার পুরা করোনি। তাই তোমাদের পক্ষ থেকে একে হিফাযতের অঙ্গীকারের প্রতি আমার আর কোন আস্থা নেই। আমার আস্থা কেবল আল্লাহর প্রতি। তিনি যার রক্ষা চাইবেন তার জন্য তিনি সর্বোত্তম রক্ষক। আর যার প্রতি দয়া করতে চাইবেন তার জন্য সর্বোচ্চ দয়াশীল।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
সে বলল, ‘আমি কি তোমাদেরকে ওর সম্বন্ধে সেইরূপই বিশ্বাস করব, যেরূপ বিশ্বাস ওর ভাই সম্বন্ধে পূর্বে তোমাদেরকে করেছিলাম?[১] সুতরাং আল্লাহই শ্রেষ্ঠ রক্ষণাবেক্ষণকারী এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ দয়ালু।’ [২] [১] অর্থাৎ, ইউসুফকেও সাথে নিয়ে যাবার সময় এ ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে, কিন্তু যা কিছু হলো তা সকলের কাছে স্পষ্ট। এখন বল আমি তোমাদের প্রতি কিভাবে আস্থা রাখি? [২] আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও যেহেতু শস্যের অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল, তাই পিতা বিনয়্যামীনকে তাদের সাথে পাঠাতে অস্বীকার করা উচিত মনে করলেন না এবং আল্লাহর উপর ভরসা করে তাকে পাঠাবার জন্য তৈরী হয়ে গেলেন।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
তিনি বললেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে তার সম্বন্ধে সেরূপ নিরাপদ মনে করব, যেরূপ আগে নিরাপদ মনে করেছিলাম তোমাদেরকে তার ভাই সম্বন্ধে? তবে আল্লাহ্ই রক্ষণাবেক্ষণে শ্ৰেষ্ঠ এবং তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু [ ১ ]।’ [ ১ ] এ আয়াতসমূহে ঘটনার অবশিষ্টাংশ বর্ণিত হয়েছে যে, ইউসুফ ‘আলাইহিস্ সালাম-এর ভ্রাতারা যখন মিসর থেকে খাদ্যশস্য নিয়ে গৃহে প্রত্যাবর্তন করল, তখন পিতার কাছে মিসরের অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে একথাও বললঃ আযীযে মিসর ভবিষ্যতের জন্য আমাদেরকে খাদ্যশস্য দেয়ার ব্যাপারে একটি শর্ত আরোপ করেছেন। তিনি বলেছেন যে, ছোটভাইকে সাথে আনলে খাদ্যশস্য পাবে, অন্যথায় নয়। তাই আপনি ভবিষ্যতে বিনইয়ামীনকেও আমাদের সাথে প্রেরণ করবেন -যাতে ভবিষ্যতেও আমরা খাদ্যশস্য পাই। আমরা তার পুরোপুরি হেফাজত করব। তার কোনরূপ কষ্ট হবে না। পিতা বললেনঃ আমি কি তার সম্পর্কে তোমাদেরকে তেমনি বিশ্বাস করব, যেমন ইতিপূর্বে তার ভাই ইউসুফের ব্যাপারে করেছিলাম? উদ্দেশ্য, এখন তোমাদের কথায় কি বিশ্বাস! একবার বিশ্বাস করে বিপদ ভোগ করেছি, ইউসুফকে হারিয়েছি। তখনও হেফাজতের ব্যাপারে তোমরা এ ভাষাই প্রয়োগ করেছিলে। এটা ছিল তাদের কথার উত্তর। কিন্তু পরে পরিবারের প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে নবীসুলভ তাওয়াক্কুল এবং এ বাস্তবতায় ফিরে গেলেন যে, লাভ-ক্ষতি কোনটাই বান্দার ক্ষমতাধীন নয় -যতক্ষণ আল্লাহ্ তা'আলা ইচ্ছা না করেন। আল্লাহ্র ইচ্ছা হয়ে গেলে তা কেউ টলাতে পারে না। তাই বললেন, তোমাদের হেফাজতের ফল তো ইতিপূর্বে দেখে নিয়েছি। এখন আমি আল্লাহ্র হেফাজতের উপরই ভরসা করি এবং তিনি সর্বাধিক দয়ালু। মোটকথা, ইয়াকূব ‘আলাইহিস্ সালাম বাহ্যিক অবস্থা ও সন্তানদের ওয়াদা-অঙ্গীকারের উপর ভরসা করলেন না। তবে আল্লাহ্র ভরসায় কনিষ্ঠ সন্তানকেও তাদের সাথে প্রেরণ করতে সম্মত হলেন।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৬৩-৬৪ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তাআ’লা হযরত ইউসুফের ( আঃ ) ভাইদের সম্পর্কে বলেন যে, তাঁরা তাঁদের পিতার কাছে ফিরে যাবার পর তাদের পিতাকে বললো: “ হে পিতা! এরপরে যদি আপনি আমাদের সাথে আমাদের ভাইকে ( বিনইয়ামীনকে ) না পাঠান তবে আমাদেরকে আর খাদ্য দ্রব্য দেয়া হবে । যদি তাকে আমাদের সাথে পাঠিয়ে দেন তবে অবশ্যই আমরা রসদ পেয়ে যাবো। আপনি তার সম্পর্কে নিশ্চিন্ত থাকুন। আমরা অবশ্যই তার রক্ষণাবেক্ষণ করবো।” ( আরবি ) অন্য পঠনে ( আরবি ) ও রয়েছে। তাঁদের এ কথা শুনে তাঁদের পিতা হযরত ইয়াকুব ( আঃ ) বললেন : “ তোমরা এর সাথে ঐ ব্যবহারই করবে যে ব্যবহার ইতিপূর্বে তাঁর ভাই এর সাথে করেছিলে । তোমরা একে এখান থেকে নিয়ে যাবে এবং ফিরে এসে ( তার হারিয়ে যাওয়া সম্পর্কে ) বানিয়ে সানিয়ে কথা বলবে।” ( আরবি ) শব্দটি অন্য কিরআতে ( আরবি ) ও রয়েছে। এরপর তিনি বলেনঃ “ আল্লাহ তাআ’লাই হচ্ছেন সর্বোত্তম রক্ষণাবেক্ষণকারী এবং সর্বাপেক্ষা অধিক দয়ালুও বটে । তিনি আমাকে আমার এই বার্ধক্যের অবস্থায় অসহায় করবেন না। বরং তিনি আমার প্রতি দয়া করবেন এবং আমার ছেলে ইউসুফের ( আঃ ) জন্যে আমি যে অত্যন্ত শোকার্ত রয়েছি তা তিনি অবশ্যই দূর করে দেবেন। তাঁর পবিত্র সত্ত্বার প্রতি আমার অগাধ বিশ্বাস রয়েছে যে, তিনি ইউসুফকে ( আঃ ) আমার নিকট অবশ্যই ফিরিয়ে দেবেন এবং মনের ব্যাকুলতা দূর করবেন।তাঁর কাছে কোন কাজই কঠিন নয় এবং তিনি স্বীয় বান্দাদের প্রতি করুণা বর্ষণ করা হতে বিরত থাকবেন না।”
সূরা ইউসুফ আয়াত 64 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- আর তারা যদি বিরত থাকে, তাহলে আল্লাহ অত্যন্ত দয়ালু।
- হে মুমিনগণ, তোমাদের কোন কোন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি তোমাদের দুশমন। অতএব তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাক।
- আমি তাকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়াকুব, তাঁর বংশধরদের মধ্যে নবুওয়ত ও কিতাব রাখলাম এবং
- আমার বান্দাদের একদলে বলতঃ হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব তুমি আমাদেরকে ক্ষমা
- যিনি তোমাকে তাঁর ইচ্ছামত আকৃতিতে গঠন করেছেন।
- মানুষের মা’বুদের
- হে জিন ও মানব! আমি শীঘ্রই তোমাদের জন্যে কর্মমুক্ত হয়ে যাব।
- তখন ফেরেশতারা সবাই মিলে সেজদা করল।
- লিপিকারের হস্তে,
- অতএব লক্ষ্য করুন, যাদেরকে ভীতিপ্রদর্শণ করা হয়েছিল, তাদের পরিণতি কি হয়েছে।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ইউসুফ ডাউনলোড করুন:
সূরা Yusuf mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Yusuf শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers