কোরান সূরা ইয়াসীন আয়াত 67 তাফসীর
﴿وَلَوْ نَشَاءُ لَمَسَخْنَاهُمْ عَلَىٰ مَكَانَتِهِمْ فَمَا اسْتَطَاعُوا مُضِيًّا وَلَا يَرْجِعُونَ﴾
[ يس: 67]
আমি ইচ্ছা করলে তাদেরকে স্ব স্ব স্থানে আকার বিকৃত করতে পারতাম, ফলে তারা আগেও চলতে পারত না এবং পেছনেও ফিরে যেতে পারত না। [সূরা ইয়াসীন: 67]
Surah Ya-Sin in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Yasin ayat 67
আর আমরা যদি চাইতাম তবে আমরা তাদের বাড়িগুলোতেই তাদের নিশ্চল-নিস্তব্ধ করে দিতাম, তখন তারা এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে না, ফিরে আসতেও পারবে না।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৬৭. আর আমি চাইলে তাদের আকৃতি বিকৃত করে তাদেরকে পায়ের উপর বসিয়ে দিতে পারতাম। ফলে তারা তাদের অবস্থান স্থল থেকে সরতে পারত না। আর না তারা সামনে কিংবা পিছনে আসা যাওয়া করতে পারত।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
এবং আমি ইচ্ছা করলে এদের স্ব-স্ব স্থানে এদের আকার বিকৃত করে দিতে পারতাম, ফলে এরা আগে বাড়তে পারত না এবং ফিরেও আসতে পারত না। [১] [১] অর্থাৎ, না সামনে আসতে পারত আর না পিছনে ফিরে যেতে পারত, বরং পাথরের মত একই স্থানে পড়ে থাকত। مسخ এর অর্থ হল সৃষ্টির আমূল বিকৃতি সাধন, অর্থাৎ মানুষকে পাথর বা জন্তুর রূপে পরিবর্তন করে দেওয়া।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর আমরা ইচ্ছে করলে স্ব স্ব স্থানে এদের আকৃতি পরিবর্তন করে দিতাম, ফলে এরা এগিয়েও যেতে পারত না এবং ফিরেও আসতে পারত না।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৬৩-৬৭ নং আয়াতের তাফসীর:
জাহান্নাম জ্বলন্ত, শিখাযুক্ত ও বিকট চীৎকার করা অবস্থায় সামনে আসবে এবং কাফিরদেরকে বলা হবেঃ “ এটা ঐ জাহান্নাম আল্লাহর রাসূলগণ যার বর্ণনা দিতেন । যার থেকে তারা ভয় দেখাতেন এবং তোমরা তাদেরকে অবিশ্বাস করতে ও মিথ্যাবাদী বলতে। সুতরাং এখন তোমরা তোমাদের কুফরীর স্বাদ গ্রহণ কর। ওঠো, এর মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়।” যেমন মহিমান্বিত আল্লাহ অন্য জায়গায় বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ যেই দিন তাদেরকে জাহান্নামের আগুনের দিকে ধাক্কা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং বলা হবেঃ এটা ঐ জাহান্নাম যাকে তোমরা অবিশ্বাস করতে । বল তো, এটা কি যাদু, না তোমরা কিছুই দেখতে পাও না?”( ৫২:১৩-১৫ ) কিয়ামতের দিন যখন কাফির ও মুনাফিকরা নিজেদের পাপ অস্বীকার করবে এবং ওর উপর শপথ করবে তখন আল্লাহ তা'আলা তাদের মুখ বন্ধ করে দিবেন এবং তাদের দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো সত্য সাক্ষ্য দিতে শুরু করবে। হযরত আনাস ইবনে মালিক ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একদা আমরা নবী ( সঃ )-এর নিকট ছিলাম, হঠাৎ তিনি হেসে উঠলেন, এমন কি তাঁর দাঁতের মাড়ি পর্যন্ত দেখা গেল। অতঃপর তিনি বললেনঃ “ আমি কেন হাসলাম তা তোমরা জান কি?" উত্তরে আমরা বললামঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ( সঃ ) খুব ভাল জানেন । তিনি তখন বললেনঃ কিয়ামতের দিন বান্দার তার প্রতিপালকের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হওয়ার ব্যাপারটাই আমাকে হাসিয়েছে। সে বলবেঃ “ হে আমার প্রতিপালক! আপনি কি আমাকে যুলুম হতে রক্ষা করেননি?” আল্লাহ তা'আলা উত্তর দিবেনঃ “হ্যা, অবশ্যই । বান্দা তখন বলবেঃ “ তাহলে আমার বিপক্ষে কোন সাক্ষ্যদানকারীর সাক্ষ্য আমি স্বীকার করবো না । আমার দেহ শুধু আমার নিজের। বাকী সবাই আমার শত্রু।" তখন আল্লাহ তা'আলা বলবেনঃ “ আচ্ছা, ঠিক আছে, তাই হবে । তুমি নিজেই তোমার সাক্ষী হবে এবং আমার সম্মানিত লিপিকর ফেরেশতারা সাক্ষী হবে।” লাগিয়ে দেয়া হবে এবং তার দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোকে বলা হবেঃ তোমরা নিজেরাই সাক্ষ্য দাও যা সে করেছে। তারা তখন স্পষ্টভাবে খুলে খুলে সত্য সত্যভাবে প্রত্যেক কাজের কথা বলে দিবে। তারপর তার মুখ খুলে দেয়া হবে। সে তখন নিজের দেহের জোড় এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোকে বলবেঃ তোমাদের জন্যে অভিশাপ! তোমরাই আমার শত্রু হয়ে গেলে? তোমাদেরকে বাঁচাবার জন্যেই তো আমি চেষ্টা করেছিলাম এবং তোমাদেরই উপকারার্থে তর্ক-বিতর্ক করছিলাম।” ( এ হাদীসটি ইবনে আবি হাতিম (রঃ ), ইমাম মুসলিম ( রঃ ) এবং ইমাম নাসাঈ ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত বাহ ইবনে হাকীম ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি তাঁর পিতা হতে এবং তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেছেন যে, নবী ( সঃ ) বলেছেনঃ “ নিশ্চয়ই তোমাদেরকে তোমাদের প্রতিপালকের সামনে আহ্বান করা হবে যখন তোমাদের মুখ বন্ধ থাকবে । সর্বপ্রথম উরু ও স্কন্ধকে প্রশ্ন করা হবে।" ( এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম নাসাঈ (রঃ )) কিয়ামতের একটি দীর্ঘ হাদীসে আছে যে, ততীয়বারে তাকে বলা হবেঃ “ তুমি কি?” সে জবাবে বলবেঃ “আমি আপনার বান্দা । আমি আপনার উপর আপনার নবী ( সঃ )-এর উপর এবং আপনার কিতাবের উপর ঈমান এনেছিলাম। রোযা, নামায, যাকাত ইত্যাদির আমি পাবন্দ ছিলাম।” আরো বহু পুণ্যের কাজের কথা সে বলতে থাকবে। ঐ সময় তাকে বলা হবেঃ “ আচ্ছা, থামো । আমি সাক্ষী হাযির করছি।” সে চিন্তা করবে যে, কাকেই বা সাক্ষীরূপে পেশ করা হবে। হঠাৎ তার মুখ বন্ধ করে দেয়া হবে। অতঃপর তার উরুকে বলা হবেঃ “ তুমি সাক্ষ্য দাও ।” তখন উরু, অস্থি এবং গোশত কথা বলে উঠবে এবং ঐ মুনাফিকের সমস্ত কপটতা ও গোপন কথা প্রকাশ করে দিবে। এসব এজন্যেই হবে যাতে তার কোন যুক্তি পেশ করার সুযোগ না থাকে এবং শাস্তি হতে সে রক্ষা না পায়। আল্লাহ তা'আলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন বলেই পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে তার হিসাব নেয়া হবে। ( এ হাদীসটি ইমাম আবু দাউদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)অন্য একটি হাদীসে আছে যে, মুখের উপর মোহর লেগে যাওয়ার পর সর্বপ্রথম মানুষের বাম উরু কথা বলবে। হযরত আবু মূসা আশআরী ( রাঃ ) বলেন যে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা মুমিনকে ডেকে তার সামনে তার পাপ পেশ করে বলবেনঃ “ এটা কি ঠিক?” সে উত্তরে বলবেঃ “হে আমার প্রতিপালক! হ্যাঁ, অবশ্যই আমি এ কাজ করেছি ।” তিনি বলেন যে, আল্লাহ তাআলা তার পাপরাশি মার্জনা করে দিবেন এবং তিনি এগুলো গোপন করে রাখবেন। তার একটি পাপও সৃষ্টজীবের কারো কাছে প্রকাশিত হবে না। অতঃপর তার পুণ্যগুলো আনয়ন করা হবে এবং সমস্ত মাখলুকের সামনে ওগুলো খোলাখুলিভাবে প্রকাশ করে দেয়া হবে। তারপর কাফির ও মুনাফিককে আহ্বান করা হবে। অতঃপর তাকে বলা হবে:“ তুমি এসব কাজ করেছিলে কি?” তখন সে অস্বীকার করে বলবেঃ “হে আমার প্রতিপালক! আপনার মর্যাদার শপথ! আপনার এই ফেরেশতা এমন কিছু লিখেছেন যা আমি করিনি ।” তখন ফেরেশতা বলবেনঃ “ তুমি কি এটা অমুক দিন অমুক জায়গায় করনি?” সে জবাব দিবেঃ ‘না । হে আমার প্রতিপালক! আপনার ইযযতের কসম! আমি এটা করিনি।” যখন সে এ কথা বলবে তখন আল্লাহ তার মুখ বন্ধ করে দিবেন। হযরত আবু মূসা ( রাঃ )-এর ধারণায়। সর্বপ্রথম তার ডান উরু তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে। অতঃপর তিনি ...
( আরবী )-এই আয়াতটি পাঠ করেন। ( ইমাম ইবনে জারীর (রঃ ) এটা বর্ণনা করেছেন)এরপর মহান আল্লাহ বলেনঃ আমি ইচ্ছা করলে তাদের চক্ষুগুলোকে লোপ করে দিতে পারতাম, তখন তারা পথ চলতে চাইলে কি করে দেখতে পেতো? আর যদি আমি ইচ্ছা করতাম তবে তাদেরকে তাদের নিজেদের স্থানে বিকৃত করে দিতে পারতাম। তাদের চেহারা পরিবর্তন করে দিয়ে তাদেরকে ধ্বংস করে দিতাম, তাদেরকে পাথর বানিয়ে দিতাম এবং তাদের পা ভেঙ্গে দিতাম। ফলে তখন তারা চলতে পারতো না। অর্থাৎ তারা সামনেও যেতে পারতো না এবং পিছনেও ফিরে আসতে পারতো না। বরং মূর্তির মত একই জায়গায় বসে থাকতো।
সূরা ইয়াসীন আয়াত 67 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- অতএব, তোমরা উভয়ে তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে?
- আপনি জানেন, সিজ্জীন কি?
- তাঁর কাছেই অদৃশ্য জগতের চাবি রয়েছে। এ গুলো তিনি ব্যতীত কেউ জানে না। স্থলে ও
- আর যারা সর্বপ্রথম হিজরতকারী ও আনছারদের মাঝে পুরাতন, এবং যারা তাদের অনুসরণ করেছে, আল্লাহ সে
- আর সবার জন্যই রয়েছে কেবলা একেক দিকে, যে দিকে সে মুখ করে (এবাদত করবে)। কাজেই
- খোদাভীরুরা থাকবে জান্নাতে ও নির্ঝরিণীতে।
- তারা ওদের দিকে মুখ করে বললঃ তোমাদের কি হারিয়েছে?
- তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র। সবাই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ
- পূর্ববর্তী লোকদের কাছে আমি অনেক রসূলই প্রেরণ করেছি।
- তারা বললঃ হায়, দুর্ভোগ আমাদের, আমরা অবশ্যই পাপী ছিলাম।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ইয়াসীন ডাউনলোড করুন:
সূরা Yasin mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Yasin শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers