কোরান সূরা মা'আরিজ আয়াত 7 তাফসীর
﴿وَنَرَاهُ قَرِيبًا﴾
[ المعارج: 7]
আর আমি একে আসন্ন দেখছি। [সূরা মা'আরিজ: 7]
Surah Al-Maarij in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Maarij ayat 7
কিন্তু আমরা দেখছি এ নিকটে।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৭. আর আমি সেটিকে নিকটবর্তী ও অবশ্যম্ভাবী বলে দেখি।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
কিন্তু আমি এটাকে আসন্ন দেখছি।[১] [১] 'সুদূর' অর্থ, অসম্ভব। আর 'আসন্ন' বা 'নিকট' অর্থ, সুনিশ্চিত। অর্থাৎ, কাফেররা কিয়ামতকে অসম্ভব মনে করে থাকে। আর মুসলিমদের বিশ্বাস হল যে, তা অবশ্যই ঘটবে। যেহেতু, كُلُّ مَا هُوَ آتٍ فَهُوَ قَرِيْبٌ অর্থাৎ, প্রতিটি জিনিস যা আসবে তা অতি নিকটেই।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
কিন্তু আমরা দেখছি তা আসন্ন [ ১ ] [ ১ ] কারও কারও মতে এখানে স্থান ও কালের দিক দিয়ে দূর ও নিকট বাোঝানো হয়নি; সম্ভাব্যতার ও বাস্তবতার দূরবর্তীতা বাোঝানো হয়েছে। আয়াতের অর্থ এই যে তারা কেয়ামতের বাস্তবতা বরং সম্ভাব্যতাকেও সুদূর পরাহত মনে করে আর আমি দেখছি যে, এটা নিশ্চিত | [ দেখুন, কুরতুবী ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১-৭ নং আয়াতের তাফসীর
এখানে ( আরবি )-এর মধ্যে যে, ( আরবি ) রয়েছে তা এটাই বলে দিচ্ছে যে, এ জায়গায় ( আরবি )-এর অনুপ্রবেশ ঘটেছে। এখানে ( আরবি ) যেন উহ্য রয়েছে। অর্থাৎ এই কাফিররা শাস্তি চাওয়ার ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করছে। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ তারা তোমার কাছে আযাব চাওয়ার ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করছে, আর আল্লাহ কখনো তার ওয়াদার বিপরীত করবেন না ।"( ২২:৪৭ ) অর্থাৎ তাঁর আযাব ওর নির্ধারিত সময়ে অবশ্যই আসবে।সুনানে নাসাঈতে হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, কাফিররা আল্লাহর আযাব চেয়েছে যা অবশ্যই তাদের উপর আসবে, অর্থাৎ আখিরাতে। তাদের এই আযাব চাওয়ার শব্দগুলোও কুরআন কারীমে নিম্নরূপে বর্ণিত হয়েছেঃ ( আরবি )অথাৎ “ হে আল্লাহ! যদি এটা আপনার পক্ষ হতে সত্য হয়ে থাকে তাহলে আমাদের উপর আকাশ হতে প্রস্তর বর্ষণ করুন অথবা আমাদের উপর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি নিয়ে আসুন ।”( ৮:৩২ )হযরত ইবনে যায়েদ ( রঃ ) প্রমুখ গুরুজন বলেন যে, ( আরবি ) দ্বারা ঐ শাস্তির উপত্যকা উদ্দেশ্য যা হতে কিয়ামতের দিন শাস্তি প্রবাহিত হবে। কিন্তু এটা খুবই দুর্বল উক্তি এবং প্রকৃত ভাবার্থ হতে বহু দূরে। প্রথমটিই সঠিক উক্তি। বচন ভঙ্গী দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয়। মহাপ্রতাপান্বিত আল্লাহ বলেনঃ এ শাস্তি কাফিরদের জন্যে অবধারিত, এটা প্রতিরোধ করার কেউ নেই। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ )-এর তাফসীর অনুসারে ( আরবি ) এর অর্থ হলো শ্রেণী বিশিষ্ট। অর্থাৎ উচ্চ মর্যাদা ও সম্মান বিশিষ্ট। হযরত মুজাহিদ ( রঃ ) বলেন যে, ( আরবি )-এর অর্থ হলো আকাশের সোপানসমূহ। হযরত কাতাদাহ ( রঃ ) বলেন যে, এর অর্থ হলোঃ ফযল, করম, নিয়ামত ও রহমতের অধিকারী। অর্থাৎ এই আযাব ঐ প্রতিপালকের পক্ষ হতে অবতারিত যিনি এসব গুণ বিশিষ্ট। ফেরেশতা এবং রূহ তাঁর দিকে ঊর্ধ্বগামী হয়। ‘রূহ' শব্দের তাফসীর করতে গিয়ে হযরত আবূ সালিহ ( রঃ ) বলেন যে, এটা এক প্রকারের সৃষ্টজীব যা মানুষ নয়, কিন্তু মানুষের সাথে সম্পূর্ণরূপে সাদৃশ্যযুক্ত। আমি বলি যে, সম্ভবতঃ এর দ্বারা হযরত জিবরাঈল ( আঃ )-কে বুঝানো হয়েছে। এবং এটা হবে ( আরবি )-এর সংযোগ ( আরবি )-এর উপর। আর এও হতে পারে যে, এর দ্বারা হযরত আদম ( আঃ )-এর সন্তানদের রূহ উদ্দেশ্য। কেননা, এটাও কবয হওয়ার পর আকাশের দিকে উঠে যায়। যেমন হযরত বারা ( রাঃ ) বর্ণিত দীর্ঘ হাদীসে রয়েছে যে, যখন ফেরেশতা পবিত্র রূহ বের করেন তখন ওটাকে নিয়ে এক আকাশ হতে অন্য আকাশে উঠে যান। শেষ পর্যন্ত সপ্ত আকাশের উপর উঠে যান। ( এ হাদীসের কোন কোন বর্ণনাকারীর সমালোচনা করা হলেও এটা মাশহুর হাদীস। এ হাদীসটির সাক্ষী হিসেবে হযরত আবূ হুরাইরা (রাঃ ) বর্ণিত হাদীসটিও রয়েছে। যেমন ইতিপূর্বে ইমাম আহমাদ ( রঃ ), ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) এবং ইমাম ইবনে মাজাহ ( রঃ )-এর রিওয়াইয়াতে গত হয়েছে। এ হাদীসের সনদের বর্ণনাকারী একটি জামাআতের শর্তের উপর রয়েছেন। প্রথম হাদীসটিও মুসনাদে আহমাদ, সুনানে আবূ দাউদ, সুনানে নাসাঈ এবং সুনানে ইবনে মাজাহতেও রয়েছে। আমরা এর শব্দগুলো এবং এর ধারাগুলোর বিস্তারিত বর্ণনা …….
( আরবি ) ( ১৪:২৭ )-এ আয়াতের তাফসীরে করে দিয়েছি)মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ এটা হবে এমন এক দিনে যা পার্থিব পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। এতে চারটি উক্তি রয়েছে। প্রথম হচ্ছেঃ এর দ্বারা ঐ দূরত্ব উদ্দেশ্য যা আসফালুস সাফিলীন হতে আরশে মুআল্লা পর্যন্ত রয়েছে। আর এরূপই আরশের নীচ হতে উপর পর্যন্ত স্থানের দূরত্ব। আরশে মুআল্লা হলো লাল রঙ এর ইয়াকূত পাথর দ্বারা নির্মিত। যেমন ইমাম ইবনে আবী শায়বাহ ( রঃ ) স্বীয় কিতাব ‘সিফাতুল আরশ,-এর মধ্যে উল্লেখ করেছেন। মুসনাদে ইবনে আবী হাতিমে হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, এর হুকুমের শেষ সীমা নীচের যমীন হতে আকাশ সমূহের উপর পর্যন্ত জায়গার পঞ্চাশ হাজার বছর। আর এক দিন এক হাজার বছরের সমান। অর্থাৎ আসমান হতে যমীন পর্যন্ত এবং যমীন হতে আসমান পর্যন্ত একদিন, যা এক হাজার বছরের সমান। কেননা, যমীন ও আসমানের মধ্যে ব্যবধান হলো পাচঁ’শ বছরের পথ। এই রিওয়াইয়াতটিই অন্য ধারায় হযরত মুজাহিদ ( রঃ )-এর উক্তিতে বর্ণিত হয়েছে, হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ )-এর উক্তিতে নয়। মুসনাদে আবী হাতিমে হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, প্রত্যেক যমীনের পুরুত্ব পাঁচশ বছরের ব্যবধান। আর এক যমীন হতে দ্বিতীয় যমীনের ব্যবধান হলো পাচঁশ বছর। তাহলে সাত হাজার বছর হয়ে গেল। অনুরূপভাবে আসমানগুলোর মাঝে হলো চৌদ্দ হাজার বছরের দূরত্ব। আর সপ্তম আকাশ হতে আরশে আযীমের ব্যবধান হলো ছত্রিশ হাজার বছর। আল্লাহ তা’আলার উক্তির তাৎপর্য এটাই যে, ফেরেশতারা এবং রূহ আল্লাহর দিকে ঊর্ধ্বগামী হয় এমন একদিনে যা পার্থিব পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান।দ্বিতীয় উক্তি হলোঃ এর দ্বারা উদ্দেশ্য এই যে, যখন আল্লাহ তা'আলা এই জগতকে সৃষ্টি করেছেন তখন থেকে নিয়ে কিয়ামত পর্যন্ত সময়কাল হলো পঞ্চাশ হাজার বছর। যেমন হযরত মুজাহিদ ( রঃ ) বলেন যে, দুনিয়ার মোট বয়সকাল হলো পঞ্চাশ হাজার বছর। আর এটাই এক দিন যা এই আয়াতের ভাবার্থ নেয়া হয়েছে। হযরত ইকরামা ( রঃ ) বলেন যে, দুনিয়ার পুরো সময়কাল এটাই বটে, কিন্তু এর কতকাল অতীত হলো এবং কতকাল অবশিষ্ট রয়েছে, তা কারো জানা নেই। এটা একমাত্র আল্লাহ তা'আলাই জানেন। তৃতীয় উক্তি এই যে, এটা হলো ঐ দিন যা দুনিয়ার ও আখিরাতের মধ্যে ব্যবধান। হযরত মুহাম্মাদ ইবনে কা'ব ( রঃ ) একথাই বলেন। কিন্তু এ উক্তিটি অত্যন্ত গারীব বা দুর্বল। চতুর্থ এই যে, এর দ্বারা কিয়ামতের দিনকে বুঝানো হয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে এটা সহীহ সনদে বর্ণিত হয়েছে। হযরত ইকরামাও ( রঃ ) একথাই বলেন। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ )-এর উক্তি এই যে, আল্লাহ তা'আলা কিয়ামতের দিনকে কাফিরদের জন্যে পঞ্চাশ হাজার বছর করে দিবেন। মুসনাদে আহমাদে হযরত আবূ সাঈদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে বলা হলোঃ “ যেদিন পার্থিব পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান, ওটা তো তাহলে খুবই বড় ও দীর্ঘ দিন হবে?” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) উত্তরে বলেনঃ “যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তাঁর শপথ! আল্লাহ মুমিনের উপর এই দিনকে এতো হালকা করে দিবেন যে, দুনিয়ায় তার এক ওয়াক্ত ফরয নামায আদায় করতে যে টুকু সময় লাগতো, ঐদিনকে ঐটুকু সময়ের কম বলে তার কাছে অনুভূত হবে ।” ( এ হাদীসটি ইমাম ইবনে জারীরও (রঃ ) বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এ হাদীসের দুজন বর্ণনাকারী দাররাজ ও তাঁর শায়েখ আবূল হাইসাম দুর্বল। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন)মুসনাদে আহমাদের অন্য একটি হাদীসে আছে যে, বানু আমির গোত্রের একটি লোক হযরত আবূ হুরাইরা ( রাঃ )-এর পার্শ্ব দিয়ে গমন করে। জনগণ বলেঃ জনাব! এ লোকটি তার গোত্রের মধ্যে একজন বড় ধনী লোক। হযরত আবূ হুরাইরা ( রাঃ ) তখন লোকটিকে ডাকলেন এবং বললেনঃ “ সত্যিই কি তুমি সবচেয়ে বড় সম্পদশালী?” লোকটি উত্তরে বললোঃ “হ্যাঁ, আমার কাছে আছে রঙ বেরঙ এর বহু উট, বিভিন্ন প্রকারের দাস-দাসী এবং উন্নতমানের ঘোড়া ইত্যাদি ।” তখন হযরত আবূ হুরাইরা ( রাঃ ) তাকে বললেনঃ “ সাবধান! এরূপ যেন না হয় যে, তোমার জন্তুগুলো তোমাকে পদদলিত করে এবং শিং দিয়ে গুঁতো মারে ।” তিনি একথা বারবার বলতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত আমিরী লোকটির চেহারা বিবর্ণ হয়ে যায় এবং সে বলেঃ “ জনাব, এটা কেন হবে?” হযরত আবূ হুরাইরা ( রাঃ ) উত্তরে বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে বলতে শুনেছিঃ “যে তার উটের হক আদায় করবে না ( অর্থাৎ ওগুলোর যাকাত প্রদান করবে না ) স্বচ্ছল ও অস্বচ্ছল অবস্থায়, তাকে আল্লাহ তা'আলা লম্বা চওড়া ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ময়দানে চিৎ করে শুইয়ে দিবেন এবং সমস্ত জন্তুকে মোটা তাজা করে নির্দেশ দিবেন যে, তারা যেন তাকে পদদলিত করে । তখন ঐ জন্তগুলো এক এক করে তাকে পদদলিত করতে করতে চলে যাবে। যখন দলের শেষ ভাগটি অতিক্রম করে যাবে তখন প্রথম ভাগটি আবার ফিরে আসবে। এই ভাবে শাস্তি হতেই থাকবে। এটা হবে এমন এক দিনে যা পার্থিব পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। শেষ পর্যন্ত লোকদের মধ্যে ফায়সালা করা হবে। তারপর তারা নিজ নিজ পথ দেখে নিবে। অনুরূপভাবে গরু, ঘোড়া, বকরী ইত্যাদি শিং বিশিষ্ট জন্তুগুলোও শিং দ্বারা তাকে মারতে থাকবে। ওগুলোর মধ্যে কোনটিও শিং বিহীন ও শিং ভাঙ্গা থাকবে না।” তখন ঐ আমেরী লোকটি জিজ্ঞেস করলোঃ “ হে আবূ হুরাইরা ( রাঃ )! উটের মধ্যে আল্লাহর হক কি?” হযরত আবূ হুরাইরা ( রাঃ ) উত্তরে বললেনঃ “দরিদ্রদেরকে সওয়ারীর জন্যে উপহার স্বরূপ দেয়া, অভাবগ্রস্তদের সাথে সদাচরণ করা, দুধপানের জন্যে জন্তু দান করা, মাদীর জন্যে প্রয়োজনে বিনা মূল্যে নর ( এঁড়ে ) ছেড়ে দেয়া । ( এ হাদীসটি সুনানে আবী দাউদ ও সুনানে নাসাঈতেও অন্য সনদে বর্ণিত হয়েছ )মুসনাদে আহমাদে হযরত আবূ হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ স্বর্ণ ও রৌপ্য পুঞ্জীভূতকারী যে ব্যক্তি ওগুলোর হক আদায় করে না ওগুলোকে ফালি করা হবে এবং তা জাহান্নামের অগ্নিতে উত্তপ্ত করা হবে ও তা দ্বারা তার ললাট, পার্শ্বদেশ এবং পৃষ্ঠদেশে দাগ দেয়া হবে, শেষ পর্যন্ত আল্লাহ্ তা'আলা স্বীয় বান্দাদের মধ্যে ফায়সালা করবেন এমন এক দিনে যা পার্থিব পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান । অতঃপর সে তার পথ দেখে নিবে, জান্নাতের পথ অথবা জাহান্নামের পথ।” এরপর উটের ও বকরীর বর্ণনা রয়েছে, যেমন ইতিপূর্বে গত হয়েছে। আর এটাও বর্ণিত হয়েছে যে, ঘোড়া তিন ব্যক্তির জন্যে ( তিন রকম )। এক ব্যক্তির জন্যে ওটা পুরস্কার, দ্বিতীয় ব্যক্তির জন্যে ওটা পর্দা এবং তৃতীয় ব্যক্তির জন্যে ওটা বোঝা।” এ হাদীসটি পুরোপুরিভাবে সহীহ মুসলিমেও রয়েছে। এই রিওয়াইয়াতগুলোকে পূর্ণভাবে বর্ণনা করার ও সনদ এবং শব্দাবলী পূর্ণরূপে বর্ণনার জায়গা হলো আহকামের কিতাবুয যাকাত। এখানে শুধুমাত্র এ শব্দগুলো দ্বারা বর্ণনা করার উদ্দেশ্য আমাদের এটাই যে, আল্লাহ্ তা’আলা স্বীয় বান্দাদের মধ্যে ফায়সালা করবেন এমন এক দিনে যা পার্থিব পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান।ইবনে আবী মুলাইকা ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, একটি লোক হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ )-কে জিজ্ঞেস করেঃ “ যে দিনটি পার্থিব এক হাজার বছরের সমান ওটা কোন দিন?” এ কথা শুনে হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) লোকটিকে উলটিয়ে প্রশ্ন করেনঃ “যে দিনটি পার্থিব পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান ওটা কোন দিন?” লোকটি তখন বললোঃ “জনাব! আমি নিজেই তো প্রশ্ন করতে এসেছি!” তখন হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) তাকে বলেনঃ “এটা ঐ দিন যার বর্ণনা আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা'আলা স্বীয় কিতাবে দিয়েছেন । এর প্রকৃত তত্ত্ব একমাত্র তিনিই জানেন। আমি না জানা সত্ত্বেও আল্লাহর কিতাব সম্পর্কে কিছু বলবো এটা আমি পছন্দ করি না।” ( আরবি ) এরপর মহান আল্লাহ্ স্বীয় নবী ( সঃ )-কে বলেনঃ হে নবী ( সঃ )! তোমার সম্প্রদায় যে তোমাকে অবিশ্বাস করছে এবং আযাব তাদের উপর আপতিত হওয়াকে অসম্ভব মনে করে ওর জন্যে যে তাড়াহুড়া করছে, এতে তুমি ধৈর্যহারা হয়ো না, বরং ধৈর্য ধারণ কর। যেমন অন্য জায়গায় আল্লাহ্ পাক বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ যারা কিয়ামতকে বিশ্বাস করে না তারা কিয়ামত তাড়াতাড়ি সংঘটিত হোক এ ব্যাপারে তাড়াহুড়া করছে, পক্ষান্তরে মুমিনরা এটাকে সত্য জেনে সদা ভীত-সন্ত্রস্ত রয়েছে ।”( ৪২:১৮ ) এ জন্যেই মহা প্রতাপান্বিত আল্লাহ্ এখানে বলেনঃ তারা ঐ দিনকে মনে করে সুদূর, কিন্তু আমি দেখছি এটাকে আসন্ন। অর্থাৎ মুমিন তো এর আগমন সত্য জানছে এবং বিশ্বাস রাখছে যে, এটা অবশ্যই সংঘটিত হবে। না জানি আকস্মিকভাবে কখন কিয়ামত এসে পড়বে এবং আযাব আপতিত হয়ে যাবে। কেননা, এর সঠিক সময়ের কথা তো আল্লাহ্ ছাড়া আর কারো জানা নেই! সুতরাং যার আগমনে কোন সংশয় ও সন্দেহ নেই তার আগমন নিকটবতীই মনে করা হয়ে থাকে এবং ওটা এসে পড়ার ব্যাপারে সদা ভয় ও সন্ত্রাস লেগেই থাকে।
সূরা মা'আরিজ আয়াত 7 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- অনন্তর যারা অজ্ঞতাবশতঃ মন্দ কাজ করে, অতঃপর তওবা করে এবং নিজেকে সংশোধন করে নেয়, আপনার
- আপনার কাছে আচ্ছন্নকারী কেয়ামতের বৃত্তান্ত পৌঁছেছে কি?
- অতঃপর তোমাদের কি হল যে, মুনাফিকদের সম্পর্কে তোমরা দু’দল হয়ে গেলে? অথচ আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে
- আল্লাহ কোন মন্দ বিষয় প্রকাশ করা পছন্দ করেন না। তবে কারো প্রতি জুলুম হয়ে থাকলে
- বলূনঃ হে আমার পালনকর্তা, ক্ষমা করুন ও রহম করুন। রহমকারীদের মধ্যে আপনি শ্রেষ্ট রহমকারী।
- তওরাত নাযিল হওয়ার পূর্বে ইয়াকুব যেগুলো নিজেদের জন্য হারাম করে নিয়েছিলেন, সেগুলো ব্যতীত সমস্ত আহার্য
- তারা থাকবে, সুউচ্চ জান্নাতে।
- আর, তোমাদের হবে অর্ধেক সম্পত্তি, যা ছেড়ে যায় তোমাদের স্ত্রীরা যদি তাদের কোন সন্তান না
- এখন আমাদের আর মৃত্যু হবে না।
- নিঃসন্দেহে আল্লাহ আদম (আঃ) নূহ (আঃ)͠ও ইব্রাহীম (আঃ) এর বংশধর এবং এমরানের খান্দানকে নির্বাচিত করেছেন।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা মা'আরিজ ডাউনলোড করুন:
সূরা Maarij mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Maarij শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers