কোরান সূরা ইউনুস আয়াত 78 তাফসীর
﴿قَالُوا أَجِئْتَنَا لِتَلْفِتَنَا عَمَّا وَجَدْنَا عَلَيْهِ آبَاءَنَا وَتَكُونَ لَكُمَا الْكِبْرِيَاءُ فِي الْأَرْضِ وَمَا نَحْنُ لَكُمَا بِمُؤْمِنِينَ﴾
[ يونس: 78]
তারা বলল, তুমি কি আমাদেরকে সে পথ থেকে ফিরিয়ে দিতে এসেছ যাতে আমরা পেয়েছি আমাদের বাপ-দাদাদেরকে? আর যাতে তোমরা দুইজন এদেশের সর্দারী পেয়ে যেতে পার? আমরা তোমাদেরকে কিছুতেই মানব না। [সূরা ইউনুস: 78]
Surah Yunus in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Yunus ayat 78
তারা বলল -- ''তুমি কি আমাদের কাছে এসেছ আমাদের বিচ্যুত করতে তা থেকে যার উপরে আমাদের পিতৃপুরুষদের পেয়েছি, আর যেন তোমাদের দুজনেরই প্রতিপত্তি হয় এ দেশে? সুতরাং তোমাদের দুজনের প্রতি আমরা তো বিশ্বাসী হচ্ছি না।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
৭৮. ফির‘আউনের সম্প্রদায় মূসা ( আলাইহিস-সালাম ) এর উত্তরে বললো: তুমি কি আমাদেরকে নিজেদের বাপ-দাদার ধর্ম থেকে দূরে সরানো এবং তুমি ও তোমার ভাইয়ের জন্য ক্ষমতা চ‚ড়ান্ত করতে আমাদের নিকট এ জাতীয় যাদু নিয়ে এসেছো? হে মূসা ও হারূন! আমরা কখনোই এ কথা স্বীকার করবো না যে, নিশ্চয়ই তোমাদেরকে আমাদের নিকট রাসূল হিসেবে পাঠানো হয়েছে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
তারা বলল, ‘তুমি কি আমাদের নিকট এই জন্য এসেছ যে, আমাদেরকে সেই পথ হতে ফিরিয়ে দেবে, যাতে আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে পেয়েছি, আর পৃথিবীতে তোমাদের দু’জনের আধিপত্য স্থাপিত হবে?[১] আমরা তোমাদের দু’জনকে বিশ্বাস করবার নই।’ [১] এটা অস্বীকারকারীদের অন্য একটি কাটহুজ্জতি; যা তারা প্রমাণাদি পেশ করতে অক্ষম হয়ে প্রয়োগ করে থাকে। প্রথম এই যে, তুমি আমাদেরকে আমাদের বাপ-দাদার পথ থেকে দূরে সরিয়ে দিতে চাচ্ছ। দ্বিতীয় এই যে, ধন-সম্পদ ও কর্তৃত্ব আমাদের হাতে, তা আমাদের নিকট থেকে ছিনিয়ে নিয়ে তুমি নিজের আয়ত্তে করতে চাচ্ছ। ফলে আমরা কখনই তোমার প্রতি ঈমান আনব না। অর্থাৎ, বাপ-দাদার মতবাদে অটল অন্ধ বিশ্বাস এবং পার্থিব ধন-সম্পদ ও মর্যাদার বাসনা তাদেরকে ঈমান গ্রহণ করা থেকে বিরত রেখেছিল। এর পরবর্তীতে ফিরআউনের বিচক্ষণ যাদুকরদের ডাকা এবং মূসা ও যাদুকরদের মুকাবিলা করার কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। যেমন সূরা আ'রাফে উল্লেখ হয়েছে এবং সূরা ত্বহাতেও তার বিস্তারিত আলোচনা আসবে ইনশাআল্লাহ।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
তারা বলল, ‘আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যাতে পেয়েছি তুমি কি তা থেকে আমাদেকরকে বিচ্যুত করার জন্য আমাদের কাছে এসেছ এবং যাতে যমীনে তোমাদের দুজনের প্রতিপত্তি হয়, এজন্য? আমরা তোমাদের প্রতি ঈমান আনয়নকারী নই।’
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৭৫-৭৮ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা বলেন, এই রাসূলদের পরে আমি ফিরআউন ও তার দলবলের কাছে মূসা ( আঃ ) ও হারূন ( আঃ )-কে পাঠালাম এবং তাদের সাথে আমার নিদর্শনাবলী, দলীল প্রমাণাদি ও মুজিযাসমূহও ছিল। কিন্তু ঐ পাপিষ্ঠ কওম সত্যের অনুসরণ ও আনুগত্য অস্বীকার করে বসে। যখন তাদের কাছে আমার পক্ষ থেকে সত্য বিষয়গুলো পৌঁছে গেল, তখন তারা কোন চিন্তা না করেই বলতে লাগলো- এটা তো সুস্পষ্ট যাদু। তারা যেন নিজেদের অবাধ্যতার উপর শপথই করে বসেছিল। অথচ তাদের নিজেদেরই বিশ্বাস ছিল যে, তারা যা কিছু বলছে প্রকৃতপক্ষে তা মিথ্যা ও অপবাদ ছাড়া কিছুই নয়। যেমন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা বলেন, তারা অস্বীকার তো করছে বটে, কিন্তু তাদের অন্তর স্বয়ং বিশ্বাস রাখছে যে, ওটা তাদের যুলুম ও অবাধ্যাচরণ। মোটকথা, মূসা ( আঃ ) তাদের দাবী খণ্ডন করতে গিয়ে বলেন- সত্য যখন তোমাদের কাছে এসে যাচ্ছে, তখন তোমরা বলছো যে, এটা যাদু ছাড়া কিছুই নয়। অথচ যাদুকররা তো কখনো কল্যাণ ও মুক্তির মুখ দেখতে পারে না।ঐ অবাধ্যরা মূসা ( আঃ )-কে বললো- হে মূসা ( আঃ )! আপনি তো আমাদের কাছে এজন্যেই এসেছেন যে, আমাদেরকে আমাদের পূর্বপুরুষদের ধর্ম থেকে ফিরিয়ে দিবেন, অতঃপর শ্রেষ্ঠত্ব, রাজত্ব এবং বিজয় গৌরব সবই হয়ে যাবে আপনার ও আপনার ভাই হারূন ( আঃ )-এর জন্যে।আল্লাহ পাক মূসা ( আঃ ) ও ফিরআউনের কাহিনী কয়েক জায়গায় বর্ণনা করেছেন। কেননা, এটা হচ্ছে বিস্ময়কর কাহিনী। ফিরআউন পূর্ব হতেই মূসা ( আঃ ) থেকে আতংকিত ছিল। কিন্তু কি আশ্চার্যজনক ব্যাপার যে, যে ফিরআউন মূসা ( আঃ )-কে এতো ভয় করতো, আল্লাহ্ তা'আলা তার কাছেই তাঁকে লালিত পালিত করলেন। রাজকুমাররূপে মূসা ( আঃ ) ফিরআউনের কাছে লালিত পালিত হতে থাকলেন। অতঃপর একটা বিপ্লব ঘটে গেল এবং এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো যে, তিনি ফিরআউনের কাছে আর টিকতে পারলেন না। তাকে তার নিকট থেকে পালিয়ে যেতে হলো। আল্লাহ পাক তাকে নবুওয়াত ও রিসালাত দান করে গৌরবান্বিত করলেন এবং তাকে এতো বড় সম্মান দিলেন যে, স্বয়ং তিনি তাঁর সাথে কথা বললেন। এরপর তিনি তাঁকে ঐ ফিরআউনের কাছেই নবীরূপে প্রেরণ করলেন এবং বলে দিলেন। তাকে গিয়ে বল যে, সে যেন আমার দিকে প্রত্যাবর্তন করে এবং বে-দ্বীনীর পরিবর্তে দ্বীনের উপর চলে । অথচ ফিরআউন সেই সময় বিপুল ধন-সম্পদ ও ক্ষমতার অধিকারী ছিল। যা হাক, আল্লাহ তাআলার নির্দেশক্রমে মূসা ( আঃ ) ফিরআউনের কাছে পয়গাম নিয়ে। আসলেন। ঐ সময় তার ভাই হারূন ( আঃ ) ছাড়া তার আর কোন সাহায্যকারী ছিল না। ফিরআউন কিন্তু ক্ষমতার গর্বে গর্বিত হয়ে উঠলো এবং তাঁর দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করলো। সে এমন এক দাবী করে বসলো, যার সে মোটেই হকদার ছিল না। বানী ইসরাঈলের মুমিনদেরকে সে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করলো। এরূপ সংকীর্ণ পরিস্থিতিতেও মূসা ( আঃ ) ও হারূন ( আঃ ) ফিরআউনের অন্যায়ের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে গেলেন। আল্লাহ পাক তাদেরকে স্বীয় তত্ত্বাবধানে নিয়ে নিলেন। একের পর এক মূসা ( আঃ )-এর সঙ্গে ফিরআউনের বিবাদ ও তর্ক বিতর্ক হতে থাকলো। মূসা ( আঃ ) এমন এমন নিদর্শন ও মু'জিযা পেশ করতে লাগলেন যে, যা দেখে হতবাক হতে হয় এবং স্বীকার করতে হয় যে, আল্লাহর পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া কেউই এরূপ দলীল কখনো পেশ করতে পারে না। কিন্তু তা সত্ত্বেও ফিরআউন ও তার দলবল এই শপথ করে বসলো যে, তারা কখনো মূসা ( আঃ )-কে মানবে না। অবশেষে এমন শাস্তি নেমে আসলো যে, তা রদ করার ক্ষমতা কারো থাকলো না। একদিন ফিরআউন ও তার দলবলকে নদীতে ডুবিয়ে দেয়া হলো এবং এইভাবে ঐ অত্যাচারী কওমের মূলোচ্ছেদ হয়ে গেল।
সূরা ইউনুস আয়াত 78 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- বলুনঃ আমি তোমাদের ক্ষতি সাধন করার ও সুপথে আনয়ন করার মালিক নই।
- হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্য গৃহে প্রবেশ করো না, যে পর্যন্ত আলাপ-পরিচয় না
- যিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু।
- তিনি বললেনঃ তোমরা কি আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর এবাদত কর, যা তোমাদের কোন উপকার ও
- আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম যাতে তারা সৎপথ পায়।
- যদি সে নৈকট্যশীলদের একজন হয়;
- আমি আ’দ ও সামুদকে ধ্বংস করে দিয়েছি। তাদের বাড়ী-ঘর থেকেই তাদের অবস্থা তোমাদের জানা হয়ে
- তারা তাতে চিরকাল অবস্থান করবে।
- তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে মৃত জীব, রক্ত, শুকরের মাংস, যেসব জন্তু আল্লাহ ছাড়া অন্যের
- এবং একটি কাফেলা এল। অতঃপর তাদের পানি সংগ্রাহককে প্রেরণ করল। সে বালতি ফেলল। বললঃ কি
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ইউনুস ডাউনলোড করুন:
সূরা Yunus mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Yunus শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers