কোরান সূরা ত্বা-হা আয়াত 8 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah TaHa ayat 8 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা ত্বা-হা আয়াত 8 আরবি পাঠে(TaHa).
  
   

﴿اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ لَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَىٰ﴾
[ طه: 8]

আল্লাহ তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য ইলাহ নেই। সব সৌন্দর্যমন্ডিত নাম তাঁরই। [সূরা ত্বা-হা: 8]

Surah Ta-Ha in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah TaHa ayat 8


আল্লাহ্‌, তিনি ছাড়া অন্য উপাস্য নেই। তাঁরই হচ্ছে সব সুন্দর সুন্দর নামাবলী।


Tafsir Mokhtasar Bangla


৮. আল্লাহ মহান। তিনি ছাড়া সত্য মা’বূদ আর কেউ নেই। কেবল তাঁর জন্যই সুন্দরতম ও পরিপূর্ণ নামসমূহ।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


আল্লাহ, তিনি ছাড়া অন্য কোন ( সত্য ) উপাস্য নেই, সমস্ত উত্তম নাম তাঁরই। [১] [১] অর্থাৎ, উপাস্য ( ইবাদতের যোগ্য ) তিনিই, যিনি উপরোক্ত গুণাবলীর অধিকারী। আর তাঁর সুন্দর নামাবলীও আছে, যা দ্বারা তাঁকে আহবান করা হয়। উপাস্য তিনি ব্যতীত অন্য কেউ নয়, না তাঁর মত সুন্দর নাম কারো আছে। অতএব তাঁকে সঠিকভাবে জানা, তাঁকেই ভয় করা উচিত, তাঁকেই ভালবাসা উচিত, তাঁকেই বিশ্বাস করা উচিত এবং তাঁরই আজ্ঞা পালন করা উচিত। যাতে মানুষ যেদিন তাঁর নিকট ফিরে যাবে সেদিন লজ্জিত না হয়; বরং তাঁর কৃপা ও ক্ষমা লাভ করে আনন্দিত এবং তাঁর সন্তুষ্টি লাভ করে সৌভাগ্যবান ও সুখী হয়।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


আল্লাহ্ , তিনি ছাড়া অন্য কোন সত্য ইলাহ নেই , সুন্দর নামসমূহ তাঁরই []। [] এ আয়াতটিতে তাওহীদকে সুন্দরভাবে ফুটে তোলা হয়েছে। এখানে প্রথমেই মহান আল্লাহর নাম উল্লেখ করে তাঁর পরিচয় দেয়া হয়েছে যে, তিনি ব্যতীত সত্য কোন ইলাহ নেই। তারপর বলা হয়েছে যে, সুন্দর সুন্দর যত নাম সবই তাঁর। আর এটা সুবিদিত যে, যার যত বেশী নাম তত বেশী গুণ। আর সে-ই মহান যার গুণ বেশী। আল্লাহর প্রতিটি নামই অনেকগুলো গুণের ধারক। কুরআন ও হাদীসে আল্লাহর অনেক নাম ও গুণ বর্ণিত হয়েছে। তার নাম ও গুণের কোন সীমা ও শেষ নেই। কোন কোন হাদীসে এসেছে যে, মহান আল্লাহর এমন কিছু নাম আছে যা তিনি কাউকে না জানিয়ে তার ইলমে গায়েবের ভাণ্ডারে রেখে দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: যে কেউ কোন বিপদে পড়ে নিন্মোক্ত দোআ, পাঠ করবে। মহান আল্লাহ তাকে তা থেকে উদ্ধার করবেন সেটি হচ্ছেঃ হে আল্লাহ! আমি আপনার দাস এবং আপনারই এক দাস ও আরেক দাসীর পুত্র। আমার ভাগ্য আপনারই হাতে, আমার উপর আপনার নির্দেশ কার্যকর। আমার প্রতি আপনার ফয়সালা ইনসাফের উপর প্রতিষ্ঠিত। আমি আপনার যে সমস্ত নাম আপনি আপনার জন্য রেখেছেন অথবা আপনার যে নাম আপনি আপনার কিতাবে নাযিল করেছেন বা আপনার সৃষ্টি জগতের কাউকেও শিখিয়েছেন অথবা আপন ইলমে গাইবের ভাণ্ডারে সংরক্ষণ করে রেখেছেন সে সমস্ত নামের অসীলায় প্রার্থনা করছি আপনি কুরআনকে করে দিন আমার হৃদয়ের জন্য প্রশান্তি, আমার বক্ষের জ্যোতি, আমার চিন্তা-ভাবনার অপসারণকারী এবং উৎকণ্ঠা দূরকারী।” (সহীহ ইবন হিব্বান: ৩/২৫৩, মুসনাদে আহমাদ: ১/৩৯১] তবে কোন কোন হাদীসে এ সমস্ত নামের মধ্যে ৯৯টি নামের সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, সেগুলো সঠিকভাবে অনুধাবন করে সেগুলো দ্বারা আহবান জানালে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “ অবশ্যই আল্লাহর ৯৯টি নাম রয়েছে । কেউ সঠিকভাবে সেগুলোর মাধ্যমে আহবান করলে জান্নাতে প্রবেশ করবে’ [ বুখারী:২৭৩৬, মুসলিম:২৬৭৭ ] কিন্তু এর অর্থ এ নয় যে, শুধু এ ৯৯টিই আল্লাহর নাম, বরং এখানে আল্লাহর নামগুলোর মধ্য থেকে ৯৯টি নামের ফযীলত বৰ্ণনা করাই উদ্দেশ্য।

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


এই সূরা মক্কায় অবতারিত। ইমামদের ইমাম হযরত মুহাম্মদ ইবনু ইসহাক ইবনু খুযাইমা ( রাঃ ) স্বীয় কিতাব ‘আতাওহীদ’ এ হাদীস এনেছেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তাআলা হযরত আদমকে ( আঃ ) সৃষ্টি করার এক হাজার বছর পূর্বে সূরায়ে তা-হা ও সূরায়ে ইয়াসীন পাঠ করেন, যা শুনে ফেরেশতারা মন্তব্য করেনঃ “ঐ উম্মত বড়ই ভাগ্যবান যাদের উপর এই কালাম অবতীর্ণ হবে নিশ্চয় ঐ ভাষা কল্যাণ ও বরকত প্রাপ্তির হকদার যা দ্বারা আল্লাহর কালামের এই শব্দগুলি আদায় করা হবে।” ( এই রিওয়াইয়াতটি গারীব এবং এতে নাকারত বা অস্বীকৃতিও রয়েছে। এর কর্ণনাকারী ইবরাহীম ইবনু মুহাজির এবং তার শায়েখের সমালোচনা করা হয়েছে ) ১-৮ নং আয়াতের তাফসীর: সূরায়ে বাকারার প্রারম্ভে হুরূফে মুকাত্তাআ’র পূর্ণ তাফসীর গত হয়েছে। সুতরাং এখানে পুনরাবৃত্তি নিষ্প্রয়োজন। তবে এটাও বর্ণিত আছে যে, এর অর্থ হচ্ছে ‘হে ব্যক্তি! এটা মুজাহিদ ( রঃ ), ইকরামা ( রঃ ), সাঈদ ইবনু জুবাইর ( রঃ ), আতা ( রঃ ), মুহাম্মদ ইবনু কাব ( রঃ ), আবু মালিক ( রঃ ), আতিয়্যা আওফী ( রঃ ), হাসান ( রঃ ), যহ্হাক ( রঃ ), সুদ্দী ( রঃ ) এবং ইবনু আবাযীর ( রঃ ) উক্তি হযরত ইবনু আব্বাস ( রাঃ ) সাঈদ ইবনু জুবাইর ( রঃ ) এবং সাওরী ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, এটা নাতিয়া কালেমা। এর অর্থ হচ্ছে ‘হে লোকটি!' আবু সালেহ ( রঃ ) বলেন যে, এটা কালেমায়ে মুরাব।হযরত আনাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, নবী ( সঃ ) যখন নামায পড়তেন তখন এক পায়ের উপর দাড়াতেন ও অপর পাটি উঠিয়ে রাখতেন। তখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াত অবতীর্ণ করেন। অর্থাৎ হে নবী ( সঃ )! তুমি দু'পায়ের উপরই দাড়াও। আমি তোমাকে কেশ দিবার জন্যে তোমার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করি নাই।বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এবং তাঁর সাহাবীগণ যখন কুরআন কারীমের উপর আমল শুরু করে দেন তখন মুশরিকরা বলতে লাগেঃ “ এই লোকগুলি তো বেশ বিপদে পড়ে গেছে ।” তখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াত অবতীর্ণ করে জানিয়ে দেন যে, কুরআন মানুষকে কষ্ট ও বিপদে ফেলার জন্যে অবতীর্ণ হয় নাই। বরং এটা সৎ লোকদের জন্যে শিক্ষনীয় বিষয়। এটা খোদায়ী জ্ঞান। যে এটা লাভ করেছে সে খুব বড় সম্পদ লাভ করেছে। যেমন হযরত মুআবিয়া ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ আল্লাহ যার প্রতি কল্যাণের ইচ্ছা করেন তাকে তিনি বোধ শক্তি দান করেন । ( এ হাদীসটি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত আছে )হযরত সা'লাবা ইবনু হাকাম ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা যখন স্বীয় বান্দাদের মধ্যে ফায়সালার জন্যে কুরসীর উপর উপবেশন করবেন তখন তিনি আলেমদেরকে বলবেনঃ “আমি আমার ইলম ও হিকমত তোমাদেরকে এ জন্যেই দান করেছিলাম যে, তোমাদের পাপসমূহ আমি মার্জনা করে দেবো এবং তোমরা কি করেছে তার কোন পরওয়া করো না ।( এ হাদীসটি হাফিয আবুল কাসেম তিবরানী (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)প্রথম দিকে লোকেরা আল্লাহর ইবাদত করার সময় নিজেদেরকে রশিতে লটকিয়ে দিতো। অতঃপর আল্লাহ তাআলা স্বীয় কালাম পাকের মাধ্যমে তাদের ঐ কষ্ট দূর করে দেন এবং বলেনঃ “ এই কুরআন তোমাদেরকে কষ্ট ও বিপদের মধ্যে নিক্ষেপ করতে চায় না । যেমন তিনি এক জায়গায় বলেনঃ “ যত সহজে পাঠ করা যায় সে ভাবেই তা পাঠ কর ।” এ কুরআন কেশ ও কষ্টদায়ক জিনিস নয়। রং এটা হচ্ছে করুণা, জ্যোতি, দলীল এবং জান্নাত। এই কুরআন সৎ লোকদের জন্যে ও খোদাভীরু লোকদের জন্যে উপদেশ, হিদায়াত ও রহমত স্বরূপ। এটা শ্রবণ করে আল্লাহ তাআলার সৎ বান্দারাহারাম ও হালাল সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে। ফলে তাদের উভয় জগত সুখময় হয়। হে নবী ( সঃ )! এই কুরআন তোমার প্রতিপালকের কালাম এটা তারই পক্ষ হতে অবতারিত, যিনি সমস্ত কিছুর সৃষ্টিকর্তা, মালিক, আহার্যদাতা এবং ব্যাপক ক্ষমতাবান। যিনি যমীনকে নীচু ও ঘন করেছেন এবং আকাশকে করেছেন উঁচু ও সূক্ষ্ম।জামে তিরমিযী প্রভৃতি বিশুদ্ধ হাদীস গ্রন্থে রয়েছে যে, প্রত্যেক আকাশের পুরুত্ব হচ্ছে পাঁচ শ’ বছরের পথ। আর এক আকাশ হতে অপর আকাশের ব্যবধানও হলো পাঁচ শ’ বছরের রাস্তা। ইমাম ইবনু আবি হাতিম ( রঃ ) হযরত আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত হাদীসটি এই আয়াতের তাফসীরেই আনয়ন করেছেন।ঐ দয়াময় আল্লাহ আরশের উপর সমাসীন রয়েছেন। এর পূর্ণ তাফসীর সূরায়ে আ’রাফে গত হয়েছে। সুতরাং এখানে পুনরাবৃত্তির কোন দরকার নেই। নিরাপত্তাপূর্ণ পন্থা এটাই যে, আয়াত সমূহ ও হাদীস সমূহের সিফাতকে পূর্ব যুগীয় গুরুজনদের নীতি অনুসারেই ওগুলোর বাহ্যিক শব্দ হিসেবেই মানতে হবে। সমস্ত জিনিস আল্লাহ তাআলার অধিকারে রয়েছে। সবই তার দখল, চাহিদা,ও ইচ্ছাধীন। তিনিই সবারই সৃষ্টিকর্তা, অধিকর্তা উপাস্য ও পালনকর্তা। কারো তার সাথে কোন প্রকারের কোন অংশ নেই। সপ্ত যমীনের নীচেও যা আছে তারও মালিক তিনিই।হযরত কা'ব ( রাঃ ) বলেন যে, যমীনের নীচে আছে পানি, পানির নীচে আছে যমীন, আবার যমীনের নীচে আছে পানি। এভাবে ক্রমান্বয়ে চলে গেছে। তারপর এর নীচে একটি পাথর আছে। তার নীচে এক ফেরেশতা আছেন। তাঁর নীচে একটি মাছ আছে যার দুটি ডানা আশ পর্যন্ত চলে গেছে। তার নীচে আছে বায়ু ও অন্ধকার। মানুষের জ্ঞান এখান পর্যন্তই আছে। এরপর কি আছে না আছে তা একমাত্র আল্লাহ তাআলাই জানেন। হাদীসে রয়েছে যে, প্রতি দুই যমীনের মাঝে পঁাচ শ' বছরের পথের ব্যবধান রয়েছে। সর্বোপরি যমীনটি মাছের পিঠের উপর রয়েছে, যার দুটি ডানা আসমানের সাথে মিলিত আছে। এই মাছটি আছে একটি পাথরের উপর। ঐ পাথরটি ফেরেশতার হাতে আছে। দ্বিতীয় যমীনটি হলো বায়ুর ভাণ্ডার। তৃতীয় যমীনে আছে জাহান্নামের পাথর। চতুর্থ যমীনে জাহান্নামের গন্ধক রয়েছে। পঞ্চম যমীনে আছে জাহান্নামের সর্প। ষষ্ঠ যমীনে রয়েছে জাহান্নামী বৃশ্চিক বা বিচ্ছু। সপ্তম যমীনে আছে জাহান্নাম। সেখানে ইবলীস শৃংখলিত অবস্থায় আছে। তার একটি হাত আছে সামনে এবং একটি আছে পিছনে। আল্লাহ তাআ'লাই যখন ইচ্ছা করেন তখন তাকে ছেড়ে দেন। ( এ হাদীসটি খুবই গরীব। এটা রাসূলুল্লাহ (সঃ ) হতে বর্ণিত কিনা এ ব্যাপারেও চিন্তা ভাবনার অবকাশ রয়েছে)হযরত জাবির ইবনু আবদিল্লাহ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত তিনি বলেনঃ “ আমরা তাবুকের যুদ্ধ শেষে ফিরে আসছিলাম । কঠিন গরম পড়ছিল। দুজন দুজন এবং চারজন চারজন করে লোক বিচ্ছিন্ন ভাবে পথ চলছিলেন। আমি সৈন্যদের শুরুতে ছিলাম। অকস্মাৎ একজন আগন্তুক এসে সালাম করলেন এবং জিজ্ঞেস করলেনঃ “ আপনাদের মধ্যে মুহাম্মদ ( সঃ ) কোন ব্যক্তি?” আমি তখন তার সঙ্গে চললাম । আমার সঙ্গী আগে বেড়ে গেল। যখন সেনাবাহিনীর মধ্যভাগ আসলো তখন দেখা গেল যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) ঐ দলেই রয়েছেন। আমি ঐ আগন্তুককে বললামঃ ইনি হলেন হযরত মুহাম্মদ ( সঃ ) তিনি লাল বর্ণের উস্ত্রীর উপর সওয়ার ছিলেন। রৌদ্রের কারণে তিনি মাথায় কাপড় বেঁধে ছিলেন। ঐ লোকটি তার সওয়ারীর কাছে গেলেন এবং ওর লাগাম ধরে নিয়ে জিজ্ঞেস করলেনঃ “ আপনিই কি মুহাম্মদ ( সঃ )?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “হ্যাঁ” লোকটি তখন তাকে বললেনঃ “আমি এমন কতকগুলি প্রশ্ন করতে চাই যার উত্তর দুনিয়াবাসীদের দু একজন ছাড়া কেউ দিতে পারে না । তিনি বললেনঃ “ ঠিক আছে, যা প্রশ্ন করতে চান করুন । আগন্তুক বললেনঃ “ নবীগণ ঘুম যান কি?" উত্তরে নবী ( সঃ ) বললেনঃ “তাদের চক্ষু ঘুমায় বটে, কিন্তু তাঁদের অন্তর জাগ্রত থাকে । লোকটি বললেনঃ “ আপনি সঠিক উত্তরই দিয়েছেন । তিনি আবার প্রশ্ন করলেনঃ “ আচ্ছা বলুন তো, শিশু কখনো পিতার সাথে সাদৃশ্য যুক্ত হয় এবং কখনো মাতার সাথে হয়, এর কারণ কি?” তিনি জবাবে বলেনঃ“জেনে রাখুন যে, পুরুষ লোকের মণি বা বীর্য সাদা ও গাঢ় হয় । আর স্ত্রী লোকের বীর্য হয় পাতলা। যার বীর্য প্রাধান্য লাভ করে, শিশু তারই সাদৃশ্যযুক্ত হয়ে থাকে। লোকটি বলেনঃ “ আপনার এ উত্তরও সঠিক হয়েছে । পুণরায় লোকটি বললেনঃ “ আচ্ছা বলুনতো, শিশুর কোন কোন অঙ্গ পুরুষের বীর্য দ্বারা এবং কোন কোন অঙ্গ স্ত্রীর বীর্য দ্বারা গঠিত হয়?” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) উত্তরে বলেনঃ “পুরুষের বীর্য দ্বারা অস্থি, শিরা এবং পাছা গঠিত হয়, আর স্ত্রীর বীর্য দ্বারা গঠিত হয় গোশত, রক্ত ও চল । লোকটি বললেনঃ “ এটাও সঠিক উত্তর হয়েছে ।” অতঃপর বলেনঃ “ বলুন তো, এই যমীনের নীচে কি আছে?” তিনি বলেনঃ “একটি মাখলুক রয়েছে । লোকটি প্রশ্ন করেনঃ “ তার নীচে কি আছে?” তিনি উত্তর দেনঃ “যমীন ।” লোকটি জিজ্ঞেস করেনঃ “ এর নীচে কি আছে?” তিনি জবাব দেনঃ “পানি । আবার লোকটি প্রশ্ন করেনঃ “ পানির নীচে কি আছে?” তিনি উত্তরে বলেনঃ “অন্ধকার ।" লোকটি পুণরায় জিজ্ঞেস করেনঃ “ এর নীচে কি আছেঃ” তিনি জবাব দেনঃ “বায়ু ।” লোকটি প্রশ্ন করেনঃ “ বায়ুর নীচে কি আছে?" তিনি জবাবে বলেনঃ “মাটি । লোকটি জিজ্ঞেস করেনঃ “ তার নীচে কি আছে?" এবার রাসূলুল্লাহ( সঃ ) চক্ষু দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে । তিনি বলেনঃ “ মানুষের জ্ঞান তো এখন পর্যন্ত পৌঁছেই শেষ হয়ে গেছে । এরপরে কি আছে তার জ্ঞান একমাত্র সৃষ্টিকর্তারই আছে। হে প্রশ্নকারী! এই ব্যাপারে আপনি যাকে প্রশ্ন করলেন তিনি আপনার চেয়ে তা বেশী জানে না।” আগন্তুক ব্যক্তি তার সত্যতার সাক্ষ্য প্রদান করলেন। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাদেরকে জিজ্ঞেস করেনঃ “ এটা কে তা তোমরা জান কি?" সাহাবীগণ বললেনঃ “আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ( সঃ ) ভাল জানেন । তিনি বললেনঃ “ ইনি হলেন হযরত জিবরাঈল ( আঃ )" ( এ হাদীসটি মুসনাদে আবি ইয়ালাতে বর্ণিত হয়েছে। তবে হাদীসটি খুবই গরীব। ঘটনাটি বড়ই বিস্ময়কর। এর বর্ণনাকারীদের একজন কাসেম ইবনু আবদুর রহমান রয়েছেন। ইমাম ইয়াহইয়া ইবনু মুঈন (রঃ ) তাকে দুর্বল বলেছেন। ইমাম আবু হাতিম রাযী ( রঃ ) তাকে দুর্বল বলেছেন। ইমাম ইবনু আদী ( রঃ ) বলেছেন যে, তিনি অপরিচিত লোক। তিনি এতে গড়বড় করে দিয়েছেন। তিনি এটা ইচ্ছা করেই করুন বা এভাবেই পেয়ে থাকুন)আল্লাহ তিনিই যিনি প্রকাশ্য, গোপনীয়, উঁচু, নীচু, ছোট ও বড় সব কিছুই জানেন। যেমন অন্য জায়গায় আল্লাহ তাআলা বলেনঃ ( হে নবী (সঃ )! তুমি বলে দাওঃ তিনিই এটা অবতীর্ণ করেছেন যিনি আসমান সমূহ ও যমীনের গোপন বিষয়ের খবর রাখেন । তিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।”ইবনু আদম যা কিছু গোপন করে এবং স্বয়ং তার উপর যা কিছু গোপন রয়েছে, তা সবই আল্লাহ তাআলার নিকট প্রকাশমান। তার আমলকে তার জানার পূর্বেও আল্লাহ জানেন। সমস্ত অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ মাখলুকের সম্পর্কে জ্ঞান তার কাছে এমনই যেমন একজন লোকের সম্পর্কে জ্ঞান। সমস্ত মাখলুকের সৃষ্টি এবং তাদেরকে মেরে পুনরুজ্জীবিত করাও তাঁর কাছে একটি মানুষকে সৃষ্টি করা এবং তার মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত করার মতই ( সহজ )। মানুষের অন্তরের ধারণা ও কল্পনার খবরও তিনি রাখেন। মানুষ বড় জোর আজকের গোপন আমলের খবর রাখে। আর সে কাল কি গোপনীয় কাজ করবে সেই খবরও আল্লাহ তাআলা রাখেন। শুধু ইচ্ছা নয়, বরং কুমন্ত্রণাও তার কাছে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান। কৃতকর্ম এবং যে আমল সে পরে করবে সেটাও তাঁর কাছে প্রকাশমান। তিনি সত্য ও যোগ্য উপাস্য। সমস্ত উত্তম নাম তারই। সূরায়ে আরাফের তাফসীরের শেষে ( আরবী ) সম্পর্কে হাদীস সমূহ গত হয়েছে। সুতরাং প্রশংসা ও শুকরিয়া আল্লাহরই জন্যে।

সূরা ত্বা-হা আয়াত 8 সূরা

الله لا إله إلا هو له الأسماء الحسنى

سورة: طه - آية: ( 8 )  - جزء: ( 16 )  -  صفحة: ( 312 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. সেদিন তোমাদেরকে জাহান্নামের অগ্নির দিকে ধাক্কা মেরে মেরে নিয়ে যাওয়া হবে।
  2. অতএব, তোমরা উভয়ে তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে?
  3. রসূল বিশ্বাস রাখেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ
  4. তিনিই পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন মানবকে, অতঃপর তাকে রক্তগত, বংশ ও বৈবাহিক সম্পর্কশীল করেছেন। তোমার
  5. তোমরা যেখানেই থাক না কেন; মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের ভেতরেও
  6. মূসাকে যখন আমি নির্দেশনামা দিয়েছিলাম, তখন আপনি পশ্চিম প্রান্তে ছিলেন না এবং আপনি প্রত্যক্ষদর্শীও ছিলেন
  7. তিনি জানেন, যে কথা সশব্দে বল এবং যে কথা তোমরা গোপন কর।
  8. আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বোঝে ? তারা তো চতুস্পদ জন্তুর
  9. আল্লাহ বললেনঃ কিছু দিনের মধ্যে তারা সকাল বেলা অনুতপ্ত হবে।
  10. যেন তারা সেখানে কখনো বসবাসই করে নাই। জেনে রাখ, সামুদের প্রতি অভিসম্পাতের মত মাদইয়ানবাসীর উপরেও

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ত্বা-হা ডাউনলোড করুন:

সূরা TaHa mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি TaHa শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত ত্বা-হা  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Wednesday, December 18, 2024

Please remember us in your sincere prayers