কোরান সূরা মারইয়াম আয়াত 80 তাফসীর
﴿وَنَرِثُهُ مَا يَقُولُ وَيَأْتِينَا فَرْدًا﴾
[ مريم: 80]
সে যা বলে, মৃত্যুর পর আমি তা নিয়ে নেব এবং সে আমার কাছে আসবে একাকী। [সূরা মারইয়াম: 80]
Surah Maryam in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Maryam ayat 80
আর সে যা বলে সে ব্যাপারে আমরা তাকে উত্তরাধিকার করব, আর আমাদের কাছে সে আসবে নিঃসঙ্গ অবস্থায়।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৮০. উপরন্তু তাকে ধ্বংস করার পর আমি তার ছেড়ে যাওয়া ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির উত্তরাধিকারী হবো। ফলে সে কিয়ামতের দিন আমার নিকট একাকী উপস্থিত হবে। যার ভোগের সম্পদ ও পদাদি কেড়ে নেয়া হয়েছে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
সে যার কথা বলে, তা থাকবে আমার অধিকারে এবং সে আমার নিকট একাকী আসবে।[১] [১] এই আয়াতগুলোর অবতীর্ণ হওয়ার কারণ হিসাবে বলা হয় যে, আমর বিন আ'স ( রাঃ )-এর পিতা আ'স বিন ওয়ায়েল ইসলামের চরম শত্রু ছিল। তার কাছে খাব্বাব বিন আরাত্তের কিছু ঋণ পাওনা ছিল। তিনি লোহার ( কামারের ) কাজ করতেন। খাব্বাব যখন ঋণ পরিশোধ করার ব্যাপারে তাগাদা করলেন, তখন আ'স বলল, 'যতক্ষণ তুমি মুহাম্মাদকে অস্বীকার না করবে ততক্ষণ আমি তোমার ঋণ পরিশোধ করব না।' খাব্বাব বললেন, 'আমি এ কাজ তো তুমি মরে গিয়ে পুনর্জীবিত হওয়ার পরেও করব না।' সে বলল, 'আচ্ছা যখন আমাকে মরার পর আবার জীবিত হতে হবে, তখন আমাকে ধন-সম্পদ ও সন্তানাদি দেওয়া হবে, তখন আমি তোমার ঋণ শোধ করে দেব।' ( বুখারী, মুসলিম ) আল্লাহ বলেন, সে যে এই দাবী করছে, তার কাছে কি গায়বের জ্ঞান আছে যে, ওখানে তাকে ধন ও সন্তান দান করা হবে? অথবা আল্লাহ কি তাকে কোন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন? এমন কখনই না। বরং তার কথায় রয়েছে অহংকার ও আল্লাহর আয়াতসমূহের ব্যাপারে উপহাস। এ ব্যক্তি যে মাল ও সন্তানের কথা বলছে তার উত্তরাধিকারী তো আমিই। অর্থাৎ মৃত্যুর পর পর সে সমস্ত হতে তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে এবং আমার নিকট একাকী আসবে; তখন সাথে না মাল থাকবে, না সন্তান না কোন সাঙ্গপাঙ্গ। বরং থাকবে আগুনের শাস্তি; যা তার জন্য ও তার মত অন্য লোকদের জন্য আমি বৃদ্ধি করতে থাকব।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর সে যা বলে তা থাকবে আমাদের অধিকারে [ ১ ] এবং সে আমাদের কাছে আসবে একা। [ ১ ] সে যে আখেরাতেও সন্তান-সন্তুতি, ধন-সম্পপদের অধিকারী হওয়ার দাম্ভিকতা দেখাচ্ছে সেটা কক্ষনো হবার নয়, কারণ সেগুলো তো তখন আল্লাহর মালিকানাধীন হবে। তার কাছ থেকে দুনিয়াতে প্ৰাপ্ত যাবতীয় সম্পদই কেড়ে নেয়া হবে। সে হাশরের মাঠে শুধু একাই রিক্ত হস্তে উপস্থিত হবে।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৭৭-৮০ নং আয়াতের তাফসীর: হযরত খাব্বাব ইবনু আরত ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “ আমি একজন কর্মকার ছিলাম । আ’স ইবনু ওয়ায়েলের উপর আমার কিছু ঋণ ছিল। আমি তাকে তাগাদা করতে গেলে সে বলেঃ “ আমি তো তোমার ঋণ ঐ পর্যন্ত পরিশোধ করবো না, যে পর্যন্ত না তুমি হযরত মুহাম্মদের ( সঃ ) আনুগত্য পরিত্যাগ করবে ।" আমি বললামঃ আমি তো এই কুফরী ঐ পর্যন্ত করতে পারবো না, যে পর্যন্ত না তুমি মরে গিয়ে পুনরুজ্জীবিত হবে। ঐ কাফির তখন বললোঃ “ ঠিক আছে, তাই হলো । যখন আমি মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত হবো, তখন আমি আমার মাল ও সন্তান সন্ততি অবশ্যই প্রাপ্ত হবো। তখন তুমি এসো, তোমার ঋণ পরিশোধ করে দেবো।" ঐ সময়। এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। ( এটা ইমাম আহমদ (রঃ ) কানা করেছেন। ইমাম বুখারী ( রঃ ) ও ইমাম মুসলিম ( রঃ ) এটা তখেরীজ করেছেন) অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, হযরত খাব্বাব ইবনু আরত ( রাঃ ) বলেছিলেনঃ “ আমি মক্কায় আস ইবনু ওয়ায়েলের একটি তরবারী বানিয়ে দিয়েছিলাম । আমার পারিশ্রমিক ধারে ছিল।” মহান আল্লাহ বলেনঃ সে কি অদৃশ্য সম্বন্ধে অবহিত হয়েছে অথবা দয়াময়ের নিকট হতে প্রতিশ্রুতি লাভ করেছে? আর একটি বর্ণনায় আছে যে, হযরত খাব্বাব ( রাঃ ) বলেনঃ “ তার উপর আমার বহু দিরহাম পাওনা হয়ে গিয়েছিল । সে আমাকে যে উত্তর দেয়, তা আমি রাসূলুল্লাহর ( সঃ ) নিকট বর্ণনা করলে এই আয়াতগুলি অবতীর্ণ হয়।আর একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, কয়েকজন মুসলমানের ঋণ তার উপর ছিল। তারা ঐ ঋণের তাগাদা করলে সে বলেঃ “ তোমাদের ধর্মে কি এটা নেই যে, জান্নাতে স্বর্ণ, রৌপ্য, রেশম, ফল, ফুল ইত্যাদি পাওয়া যাবে?” উত্তরে তারা বলেঃ “হাঁ, আছে তো ।” সে তখন বলেঃ “ তা হলে তো আমি সেখানে এ সব জিনিস অবশ্যই পাবো । সেখানে আমি তোমাদের পাওনা পরিশোধ করে দেবো।' তখন ( আরবী ) পর্যন্ত আয়াতগুলি অবতীর্ণ হয়।( আরবী ) শব্দের দ্বিতীয় কিরআত ( আরবী ) এর উপর পেশ দিয়েও রয়েছে। দুটোরই একই অর্থ। এটাও বলা হয়েছে যে, যবর দ্বারা এক বচন ও পেশ দ্বারা বহু বচনের অর্থ দেয়। কয়েস গোত্রের অভিধান এটাই। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে ঐ অহংকারকারীকে জবাব দেয়া হচ্ছেঃ তার কি অদৃশ্যের খবর রয়েছে? তার পরকালের পরিণাম সম্পর্কে সে কি কোন সংবাদ রেখেছে? সে কি করুণাময় আল্লাহর নিকট হতে কোন প্রতিশ্রুতি লাভ করেছে? সে কি আল্লাহর একত্ববাদকে স্বীকার করে নিয়েছে যে, এই কারণে তার জান্নাতী হওয়ার পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে?( আরবী ) এ বাক্য দ্বারা আল্লাহর একত্ববাদকে মেনে নেয়াই উদ্দেশ্য।এরপর মহান আল্লাহ তার কথাকে গুরুত্বের সাথে অস্বীকার করে বলছেনঃ কখনই নয়! সে যা বলে, আমি তা লিখে রাখবো এবং তার শাস্তি বৃদ্ধি করতে থাকবো। তার সেখানে ধন-মাল ও সন্তান-সন্ততি প্রাপ্তি তো দূরের কথা, বরং তার দুনিয়ার ধনসম্পদ ও সন্তান-সন্ততিও ছিনিয়ে নেয়া হবে। সে একাকী আমার এখানে হাজির হবে। হযরত ইবনু মাসউদের ( রাঃ ) কিরআতে ( আরবী ) রয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ সে যে বিষয়ের কথা বলে তা আমার অধিকারে থাকবে এবং তার আমলও আমার দখলে থাকবে। সে সবকিছু ছেড়ে শূন্য হস্তে একাকী আমার নিকট আসবে।
সূরা মারইয়াম আয়াত 80 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তোমরা যেখানেই থাক না কেন; মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের ভেতরেও
- যেদিন সিঙ্গায় ফূৎকার দেয়া হবে, সেদিন আমি অপরাধীদেরকে সমবেত করব নীল চক্ষু অবস্থায়।
- সম্মানিত মাস সম্পর্কে তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে যে, তাতে যুদ্ধ করা কেমন? বলে দাও এতে
- তিনি বললেনঃ আমি কি বলিনি যে, আপনি আমার সাথে কিছুতেই ধৈর্য্য ধরতে পারবেন না ?
- অতঃপর যদি তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে, তবে আপনার কাজ হল সুস্পষ্ট ভাবে পৌছে দেয়া মাত্র।
- ওরা এর প্রতি বিশ্বাস করবে না। পূর্ববর্তীদের এমন রীতি চলে আসছে।
- তিনি পুনরুজ্জীবিত করবেনই, যাতে যে বিষয়ে তাদের মধ্যে মতানৈক্য ছিল তা প্রকাশ করা যায় এবং
- তুমি তোমার হাতে এক মুঠো তৃণশলা নাও, তদ্বারা আঘাত কর এবং শপথ ভঙ্গ করো না।
- তাকে কেন স্বর্ণবলয় পরিধান করানো হল না, অথবা কেন আসল না তার সঙ্গে ফেরেশতাগণ দল
- তোমরা কি উপস্থিত ছিলে, যখন ইয়াকুবের মৃত্যু নিকটবর্তী হয়? যখন সে সন্তানদের বললঃ আমার পর
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা মারইয়াম ডাউনলোড করুন:
সূরা Maryam mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Maryam শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers