কোরান সূরা নামল আয়াত 80 তাফসীর
﴿إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ الْمَوْتَىٰ وَلَا تُسْمِعُ الصُّمَّ الدُّعَاءَ إِذَا وَلَّوْا مُدْبِرِينَ﴾
[ النمل: 80]
আপনি আহবান শোনাতে পারবেন না মৃতদেরকে এবং বধিরকেও নয়, যখন তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে চলে যায়। [সূরা নামল: 80]
Surah An-Naml in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Naml ayat 80
তুমি নিশ্চয়ই মৃতকে শোনাতে পারবে না আর বধিরকেও আহ্বান শোনাতে পারবে না, যখন তারা ফিরে যায় পিছু হটে।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৮০. হে রাসূল! নিশ্চয়ই আপনি মৃতদেরকে কোন কিছু শুনাতে পারবেন না। যাদের অন্তরগুলো আল্লাহর সাথে কুফরি করার দরুন মরে গিয়েছে। না আপনি বধিরদেরকে নিজের ডাক শুনাতে পারবেন, যদি তারা আপনার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে চলে যেতে চায়।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
মৃতকে তুমি শোনাতে পারবে না, আর বধিরকেও তোমার আহবান শোনাতে পারবে না;[১] যখন ওরা পিছন ফিরে চলে যায়। [২] [১] এটি ঐ সব কাফেরদের পরোয়া না করা এবং শুধু আল্লাহর উপর ভরসা করার দ্বিতীয় কারণ। আর তা হল তারা মৃত; যারা কিছু শুনে উপকৃত হতে সক্ষম নয়। অথবা বধির; যারা শুনতেও পায় না, বুঝেও না এবং পথও খুঁজে পায় না। অর্থাৎ, কাফেরদেরকে মৃতদের সাথে তুলনা করা হয়েছে; যাদের মধ্যে না কোন অনুভূতি থাকে, আর না জ্ঞান। অথবা বধিরদের সাথে তুলনা করা হয়েছে; যারা না উপদেশ ও নসীহত শোনে, আর না আল্লাহর দাওয়াত কবুল করে। [২] অর্থাৎ, তারা পুরোপুরি সত্য হতে বৈমুখ ও বীতশ্রদ্ধ। কারণ বধির ব্যক্তি সামনা-সামনিই কোন কথা শুনতে সক্ষম নয়। সুতরাং মুখ ফিরিয়ে চলে যাওয়ার সময় তারা কিভাবে শুনতে সক্ষম হবে? কুরআন কারীমের এই আয়াত হতে এটাও জানা গেল যে, মৃতরা শুনতে পায় -এই বিশ্বাস করা কুরআনের পরিপন্থী। মৃতরা কারো কথা শুনতে পায় না। অবশ্য ঐ সব অবস্থার কথা স্বতন্ত্র; যে অবস্থায় তাদের শোনার ব্যাপারে শরীয়তের স্পষ্ট দলীল আছে। যেমন হাদীসে এসেছে যে, যখন মানুষ মৃতকে দাফন করার পর ফিরে যায়, তখন তারা তাদের জুতোর শব্দ শুনতে পায়। ( বুখারী ৩৩৮, মুসলিম ২২০নং ) অনুরূপ বদর যুদ্ধের পর যখন কাফেরদের মৃত লাশগুলোকে এক পরিত্যক্ত কূপে ফেলে দেওয়া হল, তখন নবী ( সাঃ ) তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বললেন। সাহাবাগণ বললেন, 'আপনি প্রাণহীন দেহের সঙ্গে কথা বলছেন?' তিনি বললেন, " তোমাদের থেকে তারা আমার কথা বেশি ভালোভাবে শুনছে। " অর্থাৎ, মু'জিযাস্বরূপ মহান আল্লাহ তাঁর কথা মৃতদেরকে শুনিয়ে দিয়েছিলেন। ( বুখারী ১৩০৭নং )
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
মৃতকে তো আপনি শোনাতে পারবেন না [ ১ ], বধিরকেও পারবেন না ডাক শুনাতে, যখন তারা পিঠ ফিরিয়ে চলে যায়। [ ১ ] মৃতরা কি কিছু শুনতে পায়? আর মৃতদের কি কিছু শোনানো সম্ভব? যে সমস্ত বিষয়ে সাহাবায়ে কিরাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমদের মাঝেও মতপার্থক্য ছিল মৃতদের শ্রবণ করার বিষয়টি সেগুলোর অন্যতম। [ মাজমু‘ ফাতাওয়াঃ ৩/২৩০, ১৯/১২৩; আল-মুস্তাদরাক আলা মাজমূয়িল ফাতাওয়াঃ ১/৯৪ ] আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা এর পক্ষে এবং আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বিপক্ষে মতপ্রকাশ করেছেন। [ দেখুন, বুখারীঃ ৩৯৮০, ৩৯৮১; মুসলিমঃ ৯৩২ ] তাই তাবেয়ীগণ এবং এর পরবর্তী আলেমগণ সবাই ভিন্ন দুটি মতে বিভক্ত হয়েছেন। কুরআনের বিভিন্ন স্থানে যা এসেছে এখানে তা বর্ণনা করছি। আলোচ্য সূরা আন-নামল এর আয়াতে বলা হয়েছে, “ মৃতকে তো আপনি শোনাতে পারবেন না” । সূরা আর-রূমে বলা হয়েছে, “ আপনি তো মৃতকে শুনাতে পারবেন না” [ ৫২ ] অনুরূপভাবে সূরা ফাতিরে এসেছে, “আপনি শোনাতে পারবেন না যারা কবরে রয়েছে তাদেরকে” [ ২২ ] এতে বুঝা যায় যে, মৃতদেরকে শোনানোর দায়িত্ব মানুষের নয়, এটা আল্লাহ্র কাজ । তাই সর্বাবস্থায় মৃতরা শুনতে পাবে এটার সপক্ষে কোন দলীল নেই। তবে আল্লাহ্র ইচ্ছায় মাঝে মধ্যে তারা যে শুনতে পায় তার প্রমাণ আমরা পাচ্ছি এক হাদীসে, বদরের যুদ্ধের পরে কাফেরদের লাশ যখন একটি গর্তে রেখে দেয়া হলো, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের লাশদের উদ্দেশ্য করে নাম ধরে ডেকে ডেকে বললেনঃ তোমরা কি তোমাদের মা‘বুদদের কৃত ওয়াদাকে বাস্তব পেয়েছ? আমরা তো আমাদের মা‘বুদের ওয়াদা বাস্তব পেয়েছি। সাহাবীগণ বললেনঃ রাসূল! আপনি এমন লোকদের সাথে কি কথা বলছেন যারা মরে পচে গেছে? তিনি বললেনঃ ‘আল্লাহ্র শপথ! তোমরা আমার কথা তাদের থেকে বেশী শুনতে পাচ্ছ না’। [ বুখারীঃ ৩৭৫৭ ] সুতরাং কবর যেহেতু আখেরাতের ব্যাপার। আর আখেরাতের ব্যাপারে যতটুকু কুরআন ও হাদীসে যা এসেছে তার বাইরে কোন কিছু বলা কোন ক্রমেই ঠিক নয়। [ বিস্তারিত দেখুন, কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর; নূ‘মান খাইরুদ্দীন আল-আলুসী, আল-আয়াতুল বাইয়্যিনাত ফী ‘আদামি সামা‘য়িল আমিওয়াত ]
সূরা নামল আয়াত 80 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তোমরা যখন তাদের থেকে পৃথক হলে এবং তারা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের এবাদত করে তাদের থেকে,
- বরং আমরাও তো বলি যে, আমাদের কোন দেবতা তোমার উপরে শোচনীয় ভূত চাপিয়ে দিয়েছে। হুদ
- এবং যিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন পরিমিত। আতঃপর তদ্দ্বারা আমি মৃত ভূ-ভাগকে পুনরুজ্জীবিত করেছি।
- তারা আরও বলে যে, তাঁর কাছে কোন ফেরেশতা কেন প্রেরণ করা হল না ? যদি
- এবং যাদের পাল্লা হাল্কা হবে তারাই নিজেদের ক্ষতিসাধন করেছে, তারা দোযখেই চিরকাল বসবাস করবে।
- বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো
- আমি তোমাদের উপর সুপ্তপথ সৃষ্টি করেছি এবং আমি সৃষ্টি সম্বন্ধে অনবধান নই।
- বল তো কে নিঃসহায়ের ডাকে সাড়া দেন যখন সে ডাকে এবং কষ্ট দূরীভূত করেন এবং
- এরপর আমি ভূমিকে বিদীর্ণ করেছি,
- শপথ সূর্যের ও তার কিরণের,
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা নামল ডাউনলোড করুন:
সূরা Naml mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Naml শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers