কোরান সূরা সাফ্ফাত আয়াত 89 তাফসীর
﴿فَقَالَ إِنِّي سَقِيمٌ﴾
[ الصافات: 89]
এবং বললঃ আমি পীড়িত। [সূরা সাফ্ফাত: 89]
Surah As-Saaffat in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Assaaffat ayat 89
তখন তিনি বললেন -- ''আমি যারপর নাই বিরক্ত!’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
৮৯. তাই তাঁর জাতির সাথে তাদের উৎসবে বের না হওয়ার কারণ দর্শালেন এই বলে যে, তিনি অসুস্থ।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
এবং বলল, ‘আমি অসুস্থ।’[১] [১] তিনি চিন্তা-ভাবনা করার জন্য আকাশের দিকে দৃষ্টিপাত করলেন; যেমন অনেকে এরূপ করে থাকে। অথবা নিজ সম্প্রদায় যারা জগতের কাজ-কারবারে তারকারাজির পরিভ্রমণকে প্রভাবশালী মনে করত, তাদেরকে ভুল ধারণা দেওয়ার জন্য এরূপ ( হেত্বাভাস ব্যবহার ) করেছিলেন। এ ঘটনাটি ঐ দিনের যেদিন তাঁর জাতি শহর ছেড়ে বাইরে গিয়ে খুশী ও জাতীয় উৎসব পালন করত। জাতির মানুষ তাঁকেও সাথে যাওয়ার জন্য বলল। কিন্তু ইবরাহীম ( আঃ ) একাকী হওয়ার সুযোগ খুঁজছিলেন, যাতে তাদের মূর্তির ঝামেলা চুকিয়ে দেওয়া যায়। সুতরাং তিনি এটিকে একটি সুবর্ণ সুযোগ বলে মনে করলেন যে, আগামী কাল সম্প্রদায়ের সমস্ত লোক বাইরে উৎসবে চলে গেলে আমি আমার ইচ্ছা পূরণ করেই ছাড়ব। সুতরাং ওজর পেশ করে তিনি বললেন, 'আমি অসুস্থ।' অথবা আকাশের ( তারকারাজির ) রাশিচক্র বলছে যে, আমি অসুস্থ হয়ে পড়ব। তাঁর এই কথা মিথ্যা ছিল না, কারণ প্রায় সময়ে প্রত্যেক মানুষের কোন না কোন অসুখ থেকেই থাকে। তাছাড়া সম্প্রদায়ের শিরকী কর্মকান্ড ইবরাহীম ( আঃ )-এর মানসিক পীড়া হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যা দেখে তিনি বড় কষ্ট পেতেন। আসলে ইবরাহীম ( আঃ ) 'তাওরিয়া' ব্যবহার করেছিলেন। ( তাওরিয়া হল, এমন দ্ব্যর্থবোধক বাক্যে কথা বলা, যার বাহ্যিক অর্থ বাস্তবের প্রতিকূল এবং বক্তার উদ্দিষ্ট অর্থ বাস্তবের অনুকূল হয়। ) যা প্রকৃতপক্ষে মিথ্যা নয়, কিন্তু যার উদ্দেশ্যে বলা হয়, সে বাহ্যিক আকারে ভুল ধারণার শিকার হয়। যার ফলে তিন মিথ্যা কথার যে হাদীস, তাতে এই কথাকে মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যেমন এর বিস্তারিত আলোচনা সূরা আম্বিয়ার ২১:৬৩ নং আয়াতের টীকায় করা হয়েছে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
এবং বললেন, 'নিশ্চয় আমি অসুস্থ [ ১ ]।' [ ১ ] ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তার জীবনে তিনটি মিথ্যা বলেছিলেন বলে যে কথা বলা হয়ে থাকে এটি তার একটি। কোন কোন মুফাসসির বলেন, এখানে অসুস্থ বলে বোঝানো হয়েছে যে, আমি অসুস্থ হয়ে পড়ব। কারণ, আরবী ভাষায় فعيل এর পদবাচ্য বহুল পরিমাণে ভবিষ্যৎ কালের জন্য ব্যবহৃত হয়। যেমন পবিত্র কুরআনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করে বলা হয়েছে اِنَّكَ مَيِّتٌ وَّاِنَّهُمْ مَّيِّتُوْنَ [ সূরা আয-যুমার: ৩০ ] এর বাহ্যিক অর্থ আপনিও মৃত এবং তারাও মৃত। কিন্তু এখানে এরূপ অর্থ উদ্দেশ্য নয়, বরং অর্থ হল, আপনিও মৃত্যুবরণ করবেন এবং তারাও মৃত্যুবরণ করবে। এমনিভাবে ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম سقيم এর অর্থ নিয়েছিলেন যে, “ আমি অসুস্থ হয়ে পড়ব” । এ কথা বলার কারণ এই যে, মৃত্যুর পূর্বে প্রত্যেক মানুষের অসুস্থ হওয়া স্থির নিশ্চিত। কোন কোন মুফাসসির বলেন, এতে তার উদ্দেশ্য ছিল মানসিক সংকোচ; যা স্বগোত্রের মুশরিকসুলভ কাণ্ডকীর্তি দেখে তার মনে সৃষ্টি হচ্ছিল। ‘আমার মন খারাপ’ বলেও এ অর্থ অনেকটা ব্যক্ত করা যায়। বলা বাহুল্য, এ বাক্যে 'মানসিক সংকোচ’ অর্থেরও পুরোপুরি অবকাশ রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এর একথাটিকে মিথ্যা বা বাস্তববিরোধী বলার জন্য প্রথমে কোন উপায়ে একথা জানা উচিত যে, সে সময় ইবরাহীম আলাইহিসসালামের কোন প্রকারের কোন কষ্ট ও অসুস্থতা ছিল না এবং তিনি নিছক বাহানা করে একথা বলেছিলেন। যদি এর কোন প্রমাণ না থেকে থাকে, তাহলে অযথা কিসের ভিত্তিতে একে মিথ্যা গণ্য করা হবে? হতে পারে ইব্রাহীম আলাইহিসসালাম তখন বাস্তবিকই কিছুটা অসুস্থ ছিলেন; তবে উৎসবে যোগদানে প্রতিবন্ধক হতে পারে, এমন অসুস্থতা ছিল না। তিনি তার মামুলি অসুস্থতার কথাই এমনভাবে ব্যক্ত করেছেন, যাতে শ্রোতারা মনে করে নেয় যে, তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, কাজেই মেলায় যাওয়া সম্ভবপর নয়। আলেমগণ এটাকেই তাওরিয়াহ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। যা বাহ্যিক আকার-আকৃতিতে মিথ্যা মনে হয়, কিন্তু বক্তার উদ্দেশ্যের দিকে লক্ষ্য করলে মিথ্যা হয় না। অর্থাৎ যার বাহ্যিক অৰ্থ বাস্তবের প্রতিকূলে এবং বক্তার উদ্দিষ্ট অর্থ বাস্তবের অনুকূলে। [ দেখুন-তাবারী; ফাতহুল কাদীর ] এ ব্যাখ্যা সর্বাধিক যুক্তিযুক্ত এবং সন্তোষজনক। কারণ, এক হাদিসে ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এর উক্তি فَقَالَ اَنِّىْ سَقِيْمٌ এর জন্যে كذب ( মিথ্যা ) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। [ বুখারী: ৩৩৫৮ ] এ হাদীসেরই কোন কোন বর্ণনায় আরও বলা হয়েছে, “ এগুলোর মধ্যে কোন মিথ্যা এরূপ নয়; যা আল্লাহর দ্বীনের প্রতিরক্ষা ও সমর্থনে বলা হয়নি” । [ তিরমিয়ী: ৩১৪৮ ]
সূরা সাফ্ফাত আয়াত 89 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তবে আল্লাহ যার প্রতি দয়া করেন, তার কথা ভিন্ন। নিশ্চয় তিনি পরাক্রমশালী দয়াময়।
- তারা মনে করে শক্রবাহিনী চলে যায়নি। যদি শক্রবাহিনী আবার এসে পড়ে, তবে তারা কামনা করবে
- ঈমানদার ব্যক্তি কি অবাধ্যের অনুরূপ? তারা সমান নয়।
- আল্লাহ তাকে মহা আযাব দেবেন।
- যে কেউ আল্লাহ ও রসূলের অবাধ্যতা করে এবং তার সীমা অতিক্রম করে তিনি তাকে আগুনে
- তারা বলবে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের প্রতি তাঁর ওয়াদা পূর্ণ করেছেন এবং আমাদেরকে এ
- এবং জননীর অনুগত থাকতে এবং আমাকে তিনি উদ্ধত ও হতভাগ্য করেননি।
- তিনি ইচ্ছা করলে বাতাসকে থামিয়ে দেন। তখন জাহাজসমূহ সমুদ্রপৃষ্ঠে নিশ্চল হয়ে পড়ে যেন পাহাড়। নিশ্চয়
- আর আল্লাহর জন্যই হল আসমান ও যমিনের বাদশাহী। আল্লাহই সর্ব বিষয়ে ক্ষমতার অধিকারী।
- এবং তাদের বাঞ্ছিত ফল-মূলের মধ্যে।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা সাফ্ফাত ডাউনলোড করুন:
সূরা Assaaffat mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Assaaffat শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers