কোরান সূরা সাবা আয়াত 9 তাফসীর
﴿أَفَلَمْ يَرَوْا إِلَىٰ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُم مِّنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ ۚ إِن نَّشَأْ نَخْسِفْ بِهِمُ الْأَرْضَ أَوْ نُسْقِطْ عَلَيْهِمْ كِسَفًا مِّنَ السَّمَاءِ ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً لِّكُلِّ عَبْدٍ مُّنِيبٍ﴾
[ سبأ: 9]
তারা কি তাদের সামনের ও পশ্চাতের আকাশ ও পৃথিবীর প্রতিলক্ষ্য করে না? আমি ইচ্ছা করলে তাদের সহ ভূমি ধসিয়ে দেব অথবা আকাশের কোন খন্ড তাদের উপর পতিত করব। আল্লাহ অভিমুখী প্রত্যেক বান্দার জন্য এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। [সূরা সাবা: 9]
Surah Saba in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Saba ayat 9
তারা কি তবে দেখে না তাদের সামনে কী রয়েছে আর কী রয়েছে তাদের পেছনে -- মহাকাশে ও পৃথিবীতে। আমরা যদি চাইতাম তবে তাদের সঙ্গে পৃথিবীকে ধসিয়ে দিতাম, অথবা তাদের উপরে আকাশ থেকে একটি চাঙড় ফেলে দিতাম। নিঃসন্দেহ এতে তো এক নিদর্শন রয়েছে প্রত্যাবৃত প্রত্যেক বান্দার জন্য।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৯. এ সব পুনরুত্থানের প্রতি মিথ্যারোপকারীরা কি দেখেনা তাদের সামনে যে যমীন রয়েছে আর পেছনে যে আসমান রয়েছে? আমি চাইলে তাদের পায়ের নিচ থেকে যমীনকে ধ্বসিয়ে দিতে পারি। এমনিভাবে চাইলে তাদের উপর আসমান থেকে এক টুকরো ভূপাতিত করতে পারি। এতে অবশ্যই প্রত্যেক ওই সব দাস বান্দার জন্য অকাট্য নিদর্শন রয়েছে যে স্বীয় প্রতিপালকের আনুগত্যের প্রতি বেশী বেশী প্রত্যাবর্তনকারী। সে এর মাধ্যমে আল্লাহর ক্ষমতার উপর প্রমাণ গ্রহণ করবে। কেননা, যিনি এই কাজের উপর ক্ষমতাবান তিনি তোমাদের মৃত্যু ও শরীর ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর পুনরুত্থানে সক্ষম।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
ওরা কি ওদের সম্মুখে ও পশ্চাতে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা আছে, তার প্রতি লক্ষ্য করে না?[১] আমি ইচ্ছা করলে ওদেরকে সহ ভূমি ধসিয়ে দেব অথবা ওদের ওপর আকাশ হতে ( আযাবের ) কোন অংশ পতিত করব।[২] আল্লাহ-অভিমুখী প্রতিটি দাসের জন্য এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। [১] অর্থাৎ, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে না? আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ধমক দিয়ে বলেন যে, পরকালকে অস্বীকার আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টি রহস্য নিয়ে চিন্তা-ভাবনা না করার ফল। তাছাড়া যে আল্লাহ বর্ণনাতীত উচ্চ ও প্রশস্ত আকাশের মত বস্তু এবং বিশাল লম্বা-চওড়া পৃথিবীর মত বস্তু সৃষ্টি করতে পারেন, সেই আল্লাহর জন্য তাঁরই সৃষ্টি করা বস্তুকে পুনরায় সৃষ্টি করা এবং তা পুনরায় পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা কি সম্ভব নয়? [২] উক্ত আয়াতটি দুটি বিষয়ের বর্ণনা দিয়েছে; প্রথমতঃ আল্লাহর পূর্ণ ক্ষমতার বর্ণনা, যা এক্ষুনি বর্ণিত হল। দ্বিতীয়তঃ কাফেরদের জন্য সতর্কতা ও ধমক এইভাবে যে, যে আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবীকে সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখেন, উভয়ের উপরে ও মাঝে যা কিছু আছে তার সকল কিছুর উপর তাঁর ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণ, তিনি যখন ইচ্ছা তাদের উপর আযাব প্রেরণ করে সকলকে ধ্বংস করতে পারেন। মাটি ধসিয়েও তিনি ধ্বংস করতে পারেন, যেমন কারূনকে ধসিয়ে ছিলেন অথবা আকাশ থেকে কিছু নিক্ষেপ করেও ধ্বংস করতে পারেন, যেমন আইকাবাসীকে ধ্বংস করা হয়েছিল।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
তারা কি তাদের সামনে ও তাদের পিছনে, আসমান ও যমীনে যা আছে তার প্রতি লক্ষ্য করে না [ ১ ]? আমরা ইচ্ছে করলে ধ্বসিয়ে দেব তাদেরসহ যমীন অথবা পতন ঘটাব তাদের উপর আসমান থেকে এক খণ্ড; নিশ্চয় এতে রয়েছে নিদর্শন, আল্লাহর অভিমুখী প্রতিটি বান্দার জন্য। [ ১ ] কাতাদাহ বলেন, তারা কি তাদের ডানে ও তাদের বাঁয়ে তাকিয়ে দেখে না যে, কিভাবে আসমান তাদেরকে পরিবেষ্টন করে আছে? যদি তিনি ইচ্ছা করেন তবে যমীন তাদেরকে নিয়ে ধ্বসে যেতে পারে যেমন তাদের পূর্বে কিছু লোকের ব্যাপারে তা ঘটেছিল। অথবা আমরা আকাশ থেকে একটি টুকরো তাদের উপর নিক্ষেপ করতে পারি। [ তাবারী ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৭-৯ নং আয়াতের তাফসীর: কাফির ও বিপথগামী, যারা কিয়ামত সংঘটিত হওয়াকে অস্বীকার করে এবং এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে উপহাস করে, এখানে তাদেরই খবর আল্লাহ তা'আলা দিচ্ছেন। তারা পরস্পর বলাবলি করতোঃ দেখো, আমাদের মধ্যে এমন এক ব্যক্তি রয়েছে যে বলে যে, যখন আমরা মরে মাটির সাথে মিশে যাবো ও চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবো, তার পরেও নাকি আমরা আবার জীবিত হয়ে উঠবো! এ লোকটা সম্পর্কে দুটো কথা বলা যায়। হয়তো সে আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ। করছে, না হয় সে উন্মাদ। আল্লাহ তাআলা তাদের এ কথার জবাবে বলেনঃ না, এ কথা নয়। বরং মুহাম্মাদ ( সঃ ) সত্যবাদী, সৎ, সুপথ প্রাপ্ত ও জ্ঞানী। সে যাহেরী ও বাতেনী জ্ঞানে পরিপক্ক। সে বড়ই দূরদর্শী। কিন্তু এর কি ওষুধ আছে যে কাফিররা মূর্খতা এবং অজ্ঞতামূলক কাজ-কাম করতে রয়েছে? তারা চিন্তা-ভাবনা করে কোন কাজের গভীরতায় পৌঁছবার কোন চেষ্টাই করে না। তারা শুধু অস্বীকার করতেই জানে। তারা যে কোন কথায় যেখানে সেখানে শুধু অস্বীকার করেই থাকে। কেননা, সত্য কথা ও সঠিক পথ তারা ভুলে যায়। সেখান থেকে তারা বহু দূরে ছিটকে পড়ে।এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ তারা কি তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে, আসমানে ও যমীনে যা আছে তার প্রতি লক্ষ্য করে না? তিনি এতে ক্ষমতাবান যে, এতে আকাশ ও এমন বিস্তৃত যমীন সৃষ্টি করেছেন! না আকাশ ভেঙ্গে পড়ছে, না যমীন ধ্বসে যাচ্ছে। যেমন তিনি বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ আমি আকাশকে স্বহস্তে সৃষ্টি করেছি এবং আমি প্রশস্ততার অধিকারী । আর আমি যমীনকে বিছিয়ে দিয়েছি এবং আমি বিছিয়ে দেয়ার ব্যাপারে কতই না উত্তম!”( ৫১:৪৭-৪৮ ) তাদের উচিত সামনে ও পিছনে এবং আকাশ ও পৃথিবীর প্রতি লক্ষ্য করা। এগুলোর প্রতি লক্ষ্য করলেই তারা অনুধাবন করতে পারবে যে, যিনি এত বড় সৃষ্টির সৃষ্টিকর্তা এবং ব্যাপক ও অসীম শক্তির অধিকারী, তিনি কি মানুষের ন্যায় ক্ষুদ্র সৃষ্টিকে দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখেন না? তিনি তো ইচ্ছা করলে তাদেরকেসহ ভূমি ধ্বসিয়ে দিতে পারেন অথবা তাদের উপর আকাশ খণ্ডের পতন ঘটিয়ে দিতে পারেন! এরূপ অবাধ্য বান্দা কিন্তু এরূপ শাস্তিরই যোগ্য। কিন্তু ক্ষমা করে দেয়া আল্লাহর অভ্যাস। তিনি মানুষকে অবকাশ দিচ্ছেন মাত্র। যার জ্ঞান-বুদ্ধি আছে, দূরদর্শিতা আছে, আছে চিন্তা-ভাবনা করার ক্ষমতা, যার মধ্যে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার যোগ্যতা আছে, যার অন্তর আছে এবং অন্তরে জ্যোতি আছে, সে এসব বিরাট বিরাট নিদর্শন দেখার পর মহাশক্তির অধিকারী ও সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর এ সৃষ্টিতে সন্দেহ পোষণ করতেই পারে না যে, মৃত্যুর পর মানুষ পুনরুজ্জীবিত হবে। আকাশের ন্যায় সামিয়ানা এবং পৃথিবীর ন্যায় বিছানা যিনি সৃষ্টি করেছেন তাঁর জন্যে মানুষকে দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করা তো মোটেই কঠিন কাজ নয়! যিনি প্রথমবার হাড়-গোশত সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন, সেগুলো সড়ে পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে যাবার পর আবার ঐগুলোকে পুনর্বার সৃষ্টি করতে কেন তিনি সক্ষম হবেন না? যেমন মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেছেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন তিনি কি তাদের অনুরূপ সৃষ্টি করতে সমর্থ নন? হ্যা, নিশ্চয়ই ( তিনি সক্ষম ) ।”( ৩৬:৮১ ) আর একটি আয়াতে আছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টি তো মানব সৃষ্টি অপেক্ষা বেশী কঠিন । কিন্তু অধিকাংশ লোকই জানে না।” ( ৪০:৫৭ )
সূরা সাবা আয়াত 9 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- আর সবার জন্যই রয়েছে কেবলা একেক দিকে, যে দিকে সে মুখ করে (এবাদত করবে)। কাজেই
- তাদের জন্যে একটি নিদর্শন মৃত পৃথিবী। আমি একে সঞ্জীবিত করি এবং তা থেকে উৎপন্ন করি
- তারা বলে, আমাদের পার্থিব জীবনই তো শেষ; আমরা মরি ও বাঁচি মহাকালই আমাদেরকে ধ্বংস করে।
- তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ মেঘমালাকে সঞ্চালিত করেন, অতঃপর তাকে পুঞ্জীভূত করেন, অতঃপর তাকে
- তিনি স্বীয় নির্দেশে বান্দাদের মধ্যে যার কাছে ইচ্ছা, নির্দেশসহ ফেরেশতাদেরকে এই মর্মে নাযিল করেন যে,
- তারা কি লক্ষ্য করে না যে, আমি উষর ভূমিতে পানি প্রবাহিত করে শস্য উদগত করি,
- সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
- বলা হবে, আজ আমি তোমাদেরকে ভুলে যাব, যেমন তোমরা এ দিনের সাক্ষাৎকে ভুলে গিয়েছিলে। তোমাদের
- তাদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায় মিথ্যারোপ করেছিল, আর তাদের পরে অন্য অনেক দল ও প্রত্যেক সম্প্রদায়
- যদি আপনি দেখতেন, যখন তারা ভীতসস্ত্রস্ত হয়ে পড়বে, অতঃপর পালিয়েও বাঁচতে পারবে না এবং নিকটবর্তী
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা সাবা ডাউনলোড করুন:
সূরা Saba mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Saba শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers