কোরান সূরা ইউনুস আয়াত 93 তাফসীর
﴿وَلَقَدْ بَوَّأْنَا بَنِي إِسْرَائِيلَ مُبَوَّأَ صِدْقٍ وَرَزَقْنَاهُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ فَمَا اخْتَلَفُوا حَتَّىٰ جَاءَهُمُ الْعِلْمُ ۚ إِنَّ رَبَّكَ يَقْضِي بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيمَا كَانُوا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ﴾
[ يونس: 93]
আর আমি বনী-ইসরাঈলদিগকে দান করেছি উত্তম স্থান এবং তাদেরকে আহার্য দিয়েছি পবিত্র-পরিচ্ছন্ন বস্তু-সামগ্রী। বস্তুতঃ তাদের মধ্যে মতবিরোধ হয়নি যতক্ষণ না তাদের কাছে এসে পৌছেছে সংবাদ। নিঃসন্দেহে তোমার পরওয়ারদেগার তাদের মাঝে মীমাংসা করে দেবেন কেয়ামতের দিন; যে ব্যাপারে তাদের মাঝে মতবিরোধ হয়েছিল [সূরা ইউনুস: 93]
Surah Yunus in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Yunus ayat 93
আর ইসরাইলের বংশধরদের আমরা অবশ্যই উত্তম আবাসভূমিতে বসবাস করালাম, আর তাদের আমরা উত্তম বিষয়বস্তু দিয়ে জীবিকাদান করলাম, আর তারা বিভেদ সৃষ্টি করে নি যে পর্যন্ত না তাদের কাছে জ্ঞান এল। নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু কিয়ামতের দিনে তাদের মধ্যে বিচার করবেন সে-সন্বন্ধে যাতে তারা মতভেদ করেছিল।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৯৩. আমি বনী ইসরাঈলকে বরকতময় শাম এলাকার পছন্দনীয় জায়গা ও প্রশংসনীয় অবস্থানে উন্নীত করেছি। আর তাদেরকে পবিত্র হালাল রিযিক দিয়েছি। অতঃপর তারা কুর‘আন আসা পর্যন্ত নিজেদের ধর্মকে নিয়ে কোন মতভেদ করে নি। যা তাওরাতে পঠিত মুহাম্মাদ ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) এর গুণাবলীর সত্যায়নকারী। তবে যখন তারা এটিকে অস্বীকার করেছে তখন তাদের এলাকাগুলো ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। হে রাসূল! নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক কিয়ামতের দিন তাদের দ্ব›দ্বপূর্ণ বিষয়ে ফায়সালা করবেন। অতঃপর তিনি তাদের মধ্যকার সত্য ও বাতিলপন্থীকে তাদের উপযুক্ত প্রতিদান দিবেন।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
আমি বানী ইস্রাঈলকে বসবাস করার জন্য অতি উত্তম বাসস্থান প্রদান করলাম, আর আমি তাদেরকে আহার করবার জন্য উৎকৃষ্ট বস্তুসমূহ দান করলাম। অতঃপর তাদের নিকট জ্ঞান আসার পরই তারা মতভেদ করল।[১] যাতে তারা মতভেদ করত নিঃসন্দেহে তোমার প্রতিপালক কিয়ামত দিবসে তাদের মধ্যে তার ফায়সালা করবেন। [১] অর্থাৎ, প্রথমতঃ আল্লাহর কৃতজ্ঞতা না করে নিজেদের মাঝে মতভেদ শুরু করে দেয়, আর এই মতভেদ মূর্খতা ও অজ্ঞতার কারণে ছিল না; বরং জ্ঞানলাভ করার পর করেছিল। যাতে পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে, এই মতভেদ শুধুমাত্র শত্রুতা ও অহংকারবশতঃ ছিল।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর অবশ্যই আমরা বনী ইসরাইলকে উৎকৃষ্ট আবাসভূমিতে বসবাস করালাম [ ১ ] এবং আমরা তাদেরকে উত্তম রিযক দিলাম, অতঃপর তাদের কাছে জ্ঞান আসলে তারা বিভেদ সৃষ্টি করল [ ২ ]। নিশ্চয় তারা যে বিষয়ে বিভেদ সৃষ্টি করত [ ৩ ] আপনার রব তাদের মধ্যে কিয়ামতের দিনে সেটার ফয়সালা করে দেবেন। [ ১ ] এ আয়াতে ফিরআউনের করুণ পরিণতির মোকাবেলায় সে জাতির ভবিষ্যৎ দেখানো হয়েছে, যাদেরকে ফির’আউন হীন ও পদদলিত করে রেখেছিল। বলা হয়েছে, আমি বনী-ইসরাঈলকে উত্তম আবাস দান করেছি। আর এ উত্তম আবাসকে কুরআনুল কারীমে ( مُبَوَّاَ صِدۡقٍ ) শব্দে ব্যক্ত করেছে। এখানে ( صِدْقٍ ) অর্থ উপযোগী। [ মুয়াসসার ] অর্থাৎ এমন আবাসভূমি তাদেরকে দান করা হয়েছে যা তাদের জন্য সর্বদিক দিয়েই কল্যাণকর ও উপযোগী ছিল। অধিকাংশ মুফাসসির ‘উত্তম আবাসভূমি’ বলে সূরা আল-ইসরায় বর্ণিত ( اَلَّذِيْ بٰرَكْنَا حَوْلَهٗ ) বলে যা বুঝানো হয়েছে তা সবই উদ্দেশ্য নিয়েছেন। [ ইবন কাসীর; আদওয়াউল বায়ান ] তখন এ স্থানটি অত্যন্ত ব্যাপক এলাকাকে শামিল করবে। অর্থাৎ বায়তুল মাকদিস সংলগ্ন এলাকা, যা বর্তমান ফিলিস্তিন, সিরিয়া, লেবানন ও জর্দানের বেশ কিছু এলাকাকে শামিল করে। এ ছাড়া সাধারণভাবে মিশরও তাদের পদানত হওয়ার কথা। কারণ, ফিরআউন ধ্বংস হওয়ার পর মিশর রাজত্ব যতটুকু ছিল ততটুকু সবটাই মূসা আলাইহিস সালামের আয়ত্বে চলে আসে। [ ইবন কাসীর ] কিন্তু ইতিহাসে এটা প্রমাণিত হয়নি যে, তারা আবার মিশরে ফিরে গিয়েছিল। [ ২ ] অর্থাৎ তারা এরপর যে সমস্ত বিষয়ে মতভেদ করেছিল তা অজ্ঞতার কারণে নয়। তাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছিল। যার অর্থ হচ্ছে বিভেদ ও মতপার্থক্য না করা। কারণ, জ্ঞান দেয়ার মাধ্যমে আল্লাহ তাদের থেকে সন্দেহ, সংশয় দূর করেছিলেন। কিন্তু তারা মতভেদই করেছিল।[ ইবন কাসীর ] কোন কোন মুফাসসির বলেন এ আয়াতাংশের অর্থ হচ্ছে, পরবতী পর্যায়ে তারা নিজেদের দ্বীনের মধ্যে যে দলাদলি শুরু করে এবং নতুন নতুন মাযহাব তথা ধমীয় চিন্তাগোষ্ঠির উদ্ভব ঘটায় তার কারণ এ ছিল না যে, তারা প্রকৃত সত্য জানতো না এবং এ না জানার কারণে তারা বাধ্য হয়ে এমনটি করে। বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদেরকে সুস্পষ্টভাবে সত্য দ্বীন, তার মূলনীতি, তার দাবী ও চাহিদা, কুফর ও ইসলামের পার্থক্য সীমা, আনুগত্য ইত্যাদির জ্ঞান দেয়া হয়েছিল। তাদেরকে গোনাহ, আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতা সম্পর্কেও জ্ঞান দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এ সুস্পষ্ট হেদায়াত সত্ত্বেও তারা একটি দ্বীনকে অসংখ্য দ্বীনে পরিণত করে এবং আল্লাহর দেয়া বুনিয়াদগুলো বাদ দিয়ে অন্য বুনিয়াদের ওপর নিজেদের ধমীয় ফেরকার প্রাসাদ নির্মাণ করে। তাদের এ সমস্ত কর্মকাণ্ডের কারণে বায়তুল মুকাদ্দাস ও ফিলিস্তিন এলাকায় অবস্থান কালে বারবার বিভিন্ন বিপর্যয়ে পতিত হয়। মূসা ও হারূন আলাইহিমাসসালামের মৃত্যুর পর ইউসা’ বনি নূন তাদেরকে নিয়ে বায়তুল মুকাদ্দাস এলাকা জয় করেন। তারপর বুখতনসর তাদেরকে সেখান থেকে উৎখাত করে। কন্তিু তারা আবার আল্লাহর দিকে ফিরে আসলে আবার তাদের হাতে বায়তুল মুকাদ্দাস ফিরে আসে। এরপর তারা আবার পথভ্রষ্ট হয়ে পড়লে তারা গ্রীকদের অধীন হয়। ইত্যবসরে আল্লাহ্ তা'আলা তাদের মাঝে ঈসা আলাইহিসসালামকে পাঠালেন। কিন্তু তারা গ্রীক রাজাদেরকে ঈসা আলাইহিসসালামের উপর এই বলে ক্ষেপিয়ে তুলল যে, তিনি প্রজাদের মধ্যে বিদ্রোহ সৃষ্টির পঁয়তারা চালাচ্ছেন। গ্রীকগণ তখন ঈসা আলাইহিসসালামকে ধরার জন্য লোক পাঠাল। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীদের একজনকে আল্লাহ্ তা'আলা ঈসা আলাইহিসসালামের আকৃতি দিয়ে ঈসা আলাইহিসসালামকে আসমানে উঠিয়ে নিলেন। এর ৩০০ বছর পরে গ্রীক সম্রাট কস্টান্টিন নাসারা ধর্মে প্রবেশ করে। সে তখন বিভিন্ন ভিন্নমতাবলম্বী এবং নিজের পক্ষ থেকে জুড়ে দিয়ে নতুন অনেকগুলো আকীদা-বিশ্বাস ও শরীআত প্রবর্তন করল এবং রাষ্ট্রিয় ক্ষমতাবলে সেগুলোকে বিভিন্নভাবে প্রতিষ্ঠিত করল। যারা ঈসা আলাইহিসসালাম আনীত দ্বীনের উপর ছিল তাদেরকে নানাভাবে নির্যাতন করল। তারা বিভিন্নস্থানে পালিয়ে গেল। সে সবস্থানে তার মনমত লোক সেট করল। এবং দেশে দেশে তার মতের লোকদের দ্বারা উপাসনালয় প্রতিষ্ঠা করল। তাদের সে সমস্ত নতুন আকীদার মধ্যে ছিল, ঈসা আলাইহিসসালাম নবী নন। তিনি তিন ইলাহর একজন। তার মধ্যে ঐশ্বরিক এবং মানবিক দু'ধরণের গুণের সমাহার ছিল। তখন থেকে তারা ক্রুশকে পবিত্র চিহ্ন বলে বিবেচনা করল। শুকরের গোস্ত হালাল করল। বিভিন্ন গীর্জায় ঈসা ও মারইয়াম আলাইহিমাসসালামের কল্পিত ছবি স্থাপন করল। এভাবে তারা তাদের দ্বীনকে বিভিন্নভাবে পরিবর্তন করে ফেলল। পরিণতিতে আল্লাহ্ তা'আলা তাদেরকে এ পবিত্র ভূমির উত্তরাধিকার থেকে তাড়িয়ে দিয়ে সেখানে সুস্থ সঠিক আকীদার উপর প্রতিষ্ঠিত মুসলিমদের প্রতিষ্ঠা করেন। উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর সময়ে সাহাবাগণ বায়তুল মুকাদ্দাসের অধিকারী হন। [ ইবন কাসীর, সংক্ষেপিত ] [ ৩ ] তাদের বিভেদ সৃষ্টি সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন যে, ইয়াহুদীগণ একাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছে। আর নাসারাগণ বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছে। আর এ উম্মত তিয়াত্তর দলে বিভক্ত হবে। [ সহীহ ইবনে হিব্বানঃ ৬২৪৭, ৬৭৩১ ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
আল্লাহ তাআলা বানী ইসরাঈলের উপর ইহলৌকিক ও পারলৌকিক নিয়ামতের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেনঃ আমি তাদেরকে বসবাসের জন্যে উত্তম জায়গা দান করেছি। অর্থাৎ মিসর ও সিরিয়া, যা বায়তুল মুকাদ্দাসের নিকটেই অবস্থিত । আল্লাহ তা'আলা যখন ফিরআউন ও তার দলবলকে ধ্বংস করে দেন। তখন তিনি মিসরের উপর মূসা ( আঃ )-এর শাসন পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ “ আর আমি সেই লোকদেরকে, যারা অতিশয় দুর্বল বিবেচিত হতো, সেই ভূখণ্ডের পূর্ব ও পশ্চিমের উত্তরাধিকারী করে দিলাম যাতে আমি ( যাহেরী ও বাতেনী ) বরকত রেখেছি; আর তোমার প্রতিপালকের মঙ্গলকর অঙ্গীকার বানী ইসরাঈলের প্রতি পূর্ণ হলো তাদের ধৈর্যধারণের কারণে, আর আমি ধ্বংস করে দিলাম ফিরআউন ও তার সম্প্রদায়ের তৈরী কারখানাসমূহ এবং যেসব সুউচ্চ প্রাসাদ তারা নির্মাণ করতে ।” অন্য আয়াতে আল্লাহ পাক বলেনঃ “ অবশেষে আমি তাদেরকে ( ফিরআউন ও তার কওমকে ) বাগানসমূহ ও ঝর্ণাসমূহ হতে বের করে দিলাম । আর ধন-ভাণ্ডারসমূহ এবং উত্তম প্রাসাদ হতেও। ( আমি ) এইরূপ করলাম; আর তাদের পরে বানী ইসরাঈলকে তৎসমুদয়ের মালিক করে দিলাম।” মহান আল্লাহ আরো বলেনঃ “ তারা ছেড়ে গিয়েছিল কতই না উদ্যান ও ঝর্ণাসমূহ!”বানী ইসরাঈল কিন্তু মূসা ( আঃ )-এর কাছে বায়তুল মুকাদ্দাস শহরের জন্যে আবেদন জানায়, যা ইবরাহীম খলীল ( আঃ )-এর বাসভূমি ছিল । ঐ সময় বায়তুল মুকাদ্দাস ‘আমালেকা সম্প্রদায়ের অধিকারভুক্ত ছিল। বানী ইসরাঈলকে তাদের সাথে যুদ্ধ করতে বলা হলে তারা অস্বীকার করে বসে। আল্লাহ পাক তখন তাদেরকে তীহ ময়দানে হারিয়ে দেন। চল্লিশ বছর ধরে তারা সেখানে উড্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়। এর মধ্যে হারূন ( আঃ ) ইন্তেকাল করেন এবং পরে মূসাও ( আঃ ) মৃত্যুমুখে পতিত হন। অতঃপর বানী ইসরাঈল ইউশা ইবেন নূন ( আঃ )-এর সাথে তীহের ময়দান হতে বেরিয়ে পড়েন এবং তাঁর হাতে আল্লাহ তা'আলা বায়তুল মুকাদ্দাস বিজিত করেন। কিছুকাল এটা তার অধিকারে থাকে। তারপর ‘বাখতে নাসার’ তা দখল করে নেয়। এরপর ইউনানী রাজাদের ওর উপর আধিপত্য লাভ হয়। বহুদিন পর্যন্ত ওর উপর এদের শাসন চলতে থাকে । এই সময়ের মধ্যে আল্লাহ তা'আলা ঈসা ইবনে মারইয়াম ( আঃ )-কে সেখানে পাঠিয়ে দেন। ইয়াহূদীরা ঈসা ( আঃ )-এর সাথে খুবই দুর্ব্যবহার করে এবং রটনা করে যে, তিনি জনগণের মধ্যে ফিৎনা ফাসাদ সৃষ্টি করছেন। ইউনানী বাদশাহ তাকে ধরে শূলে দেয়ার ইচ্ছা করে। কিন্তু মহান আল্লাহর ইচ্ছায় একজন হাওয়ারীকে ঈসা ( আঃ ) মনে করে তারা তাকে ধরে শূলে চড়িয়ে দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “ প্রকৃতপক্ষে তারা তাকে হত্যা করেনি বরং আল্লাহ তাকে তার কাছে উঠিয়ে নিয়েছেন এবং আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, বিজ্ঞানময় ।” অতঃপর ঈসা ( আঃ )-এর প্রায় তিনশ’ বছর পর কুসতুনতীন’ নামক একজন ইউনানী বাদশাহ খ্রীষ্টান ধর্ম ককূল করে। কিন্তু সে ছিল একজন দার্শনিক। কেউ বলে যে, ভয়ে সে খ্রীষ্টান ধর্ম গ্রহণ করেছিল, আবার একথাও বলা হয়েছে যে, ঈসা ( আঃ )-এর ধর্মে ফিৎনা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে বাহানা করে সে খ্রীষ্টান ধর্ম গ্রহণ করেছিল। খ্রীষ্টান পাদ্রীরা তার নির্দেশক্রমে শরীয়তের নতুন নতুন আইন তৈরী করে নেয়, বিদআত ছড়িয়ে দেয়, ছোট বড় গীজা ও ইবাদতখানা নির্মাণ করে এবং প্রতিমা ও মূর্তি বানিয়ে নেয়। ঐ সময় খ্রীষ্টান ধর্ম ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং তাতে বহু পরিবর্তন ও পরিবর্ধন হতে থাকে। সন্যাসীত্ব ও বৈরাগ্য সৃষ্টি হয়ে গেল এবং ঈসা ( আঃ )-এর সত্য ধর্মের বিরোধিতা শুরু হয়ে গেল। প্রকৃত ধর্ম শুধুমাত্র কয়েকজন ধার্মিক লোকের মধ্যেই অবশিষ্ট থাকলো। এখন এরাও বৈরাগীদের আকারে জঙ্গলে ও প্রান্তরে গীর্জা তৈরী করে থাকতে লাগলো। সিরিয়া, জাযীরা এবং রোম দেশের উপর খ্রীষ্টানদের প্রতিপ্রত্তি জমে গেল। ঐ সম্রাটই ( কুতুনতীন ) কুসতুনতুনিয়া ( কনৃস্টান্টিনোপল ) ও কামামা শহর স্থাপন করলো। বায়তুল মুকাদ্দাসের মধ্যে বায়তুল লাহাম’ ও গীজা নির্মাণ করলো এবং হাওরানের শহর স্থাপন করলো, যেমন বুসরা ইত্যাদি। সে বড় বড় ও মজবুত অট্টালিকাসমূহ নির্মাণ করলো । এখান থেকেই ক্রুশ-পূজার সূচনা হয়, যা সুদূর প্রাচ্য পর্যন্ত পৌঁছে যায়। ওখানেও গীর্জা নির্মাণ করা হয়। তারা শূকরের মাংস হালাল করে নেয়। দ্বীনের মূল ও শাখার মধ্যে অদ্ভুত অদ্ভুত বিদআত সৃষ্টি হয়। বাদশাহর নির্দেশক্রমে শরীয়তের নতুন নতুন বিধান বানিয়ে নেয়া হয়। এর ব্যাখ্যা খুবই দীর্ঘ। মোটকথা, ঐ শহরগুলোর উপর তাদের কর্তৃত্ব সাহাবীদের যুগ পর্যন্ত চলতে থাকে। অবশেষে বায়তুল মুকাদ্দাস উমার ইবনুল খাত্তাব ( রাঃ )-এর হাতে বিজিত হয়। সুতরাং সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই জন্য। আল্লাহ পাক বলেন, আমি তাদেরকে আহার করবার জন্যে উৎকৃষ্ট বস্তুসমূহ দান করেছি। কিন্তু মাযহাব সম্পর্কে জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও তারা ঐ ব্যাপারে মতভেদ করতে থাকে। অথচ মাযহাব সম্পর্কে মতভেদ সৃষ্টি করার কোনই কারণ ছিল না। আল্লাহ তাআলা তো সমস্ত কথাই অতি সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে দিয়েছিলেন।হাদীসে এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ ইয়াহুদীরা একাত্তরটি দল বানিয়ে নিয়েছিল, আর খ্রীষ্টানরা বানিয়ে নিয়েছিল বাহাত্তরটি দল । আমার উম্মত তেহাত্তরটি দল বানিয়ে নেবে। ওগুলোর মধ্যে শুধু একটি দল মুক্তিপ্রাপ্ত হবে এবং বাকী সবগুলোই হবে জাহান্নামী। জিজ্ঞেস করা হলোঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! ঐ একটি দল কোনটি? তিনি উত্তরে বললেনঃ “যার উপর আমি ও আমার সাহাবীবর্গ রয়েছি ।” ( এ হাদীসটি ইমাম হাকিম (রঃ ) তাঁর ‘মুসতাদরিক’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)আল্লাহ তা'আলা বলেন, নিশ্চয়ই আমি কিয়ামতের দিন ঐ সব বিষয়ের উপর মীমাংসা করবো, যে বিষয়ে তারা মতভেদ করছিল।
সূরা ইউনুস আয়াত 93 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে, তা পরিত্যাগ কর,
- তিনিই দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী, পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু,
- বরং আমি তাদেরকে এবং তাদের বাপ-দাদাকে ভোগসম্বার দিয়েছিলাম, এমনকি তাদের আয়ুস্কালও দীর্ঘ হয়েছিল। তারা কি
- আল্লাহর নেয়ামত ও অনুগ্রহের জন্যে তারা আনন্দ প্রকাশ করে এবং তা এভাবে যে, আল্লাহ, ঈমানদারদের
- মুমিনগণ! তোমরা যখন মুমিন নারীদেরকে বিবাহ কর, অতঃপর তাদেরকে স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দিয়ে দাও,
- তোমাদেরকে প্রতিপালকের পয়গাম পৌঁছাই এবং তোমাদেরকে সদুপদেশ দেই। আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে এমনসব বিষয় জানি,
- এরপর অন্যদেরকে নিপাত করলাম।
- আর তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা ব্যভিচারিণী তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য থেকে চার জন পুরুষকে সাক্ষী
- তারপর যখন মূসার রাগ পড়ে গেল, তখন তিনি তখতীগুলো তুলে নিলেন। আর যা কিছু তাতে
- হে যাকারিয়া, আমি তোমাকে এক পুত্রের সুসংবাদ দিচ্ছি, তার নাম হবে ইয়াহইয়া। ইতিপূর্বে এই নামে
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ইউনুস ডাউনলোড করুন:
সূরা Yunus mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Yunus শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers