কোরান সূরা মারইয়াম আয়াত 95 তাফসীর
﴿وَكُلُّهُمْ آتِيهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَرْدًا﴾
[ مريم: 95]
কেয়ামতের দিন তাদের সবাই তাঁর কাছে একাকী অবস্থায় আসবে। [সূরা মারইয়াম: 95]
Surah Maryam in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Maryam ayat 95
আর তাদের সবকয়জনকেই কিয়ামতের দিনে তাঁর কাছে আসতে হবে নিঃসঙ্গ অবস্থায়।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৯৫. তাদের সবাই কিয়ামতের দিন তাঁর নিকট একাকীভাবে আসবে। সেদিন তার কোন সাহায্যকারী ও সম্পদ থাকবে না।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
কিয়ামতের দিন তাদের সকলেই তাঁর নিকট আসবে একাকী অবস্থায়। [১] [১] অর্থাৎ, কেউ কারো সাহায্যকারী হবে না, আর না মালই কারো কোন কাজে আসবে। {يَوْمَ لَا يَنفَعُ مَالٌ وَلَا بَنُونَ} অর্থাৎ, সেদিন না ধন-মাল কোন কাজ দেবে, আর না সন্তান-সন্ততি। ( সূরা শুআরা ২৬:৮৮ ) প্রত্যেককেই একা একা নিজ হিসাব দিতে হবে। আর মানুষ পৃথিবীতে যাদের জন্য কিয়ামতের দিন সাহায্যকারী ও সহায়ক হবে বলে মনে করে, তারা সবাই অদৃশ্য ও উধাও হয়ে যাবে। কেউ কারো সাহায্যের জন্য উপস্থিত হবে না।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর কিয়ামতের দিন তাদের সবাই তাঁর কাছে আসবে একাকি অবস্থায়।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৮৮-৯৫ নং আয়াতের তাফসীর: এই পবিত্র সূরার প্রারম্ভে এই কথার প্রমাণ গত হয়েছে যে, হযরত ঈসা ( আঃ ) আল্লাহর বান্দা। তাঁকে আল্লাহ তাআলা পিতা ছাড়াই নিজের হুকুমে হযরত মারইয়ামের ( রাঃ ) গর্ভে জন্ম দান করেন। এ জন্যে যারা তাকে আল্লাহ্ব পুত্র বলে থাকে ( নাউযুবিল্লাহ )। অথচ এর থেকে তিনি সম্পূর্ণরূপে পবিত্র। তাদের উক্তির বর্ণনা দেয়ার পর আল্লাহ তাআ'লাবলেন যে, এটা বড়ই অন্যায় কথা। হযরত ইবনু আব্বাস ( রাঃ ), হযরত মুজাহিদ ( রঃ ), হযরত কাতাদা ( রঃ ) এবং হযরত মালিক ( রঃ ) ( আরবী ) শব্দের অর্থ করেছেন ( আরবী ) অর্থাৎ বড় বা বিরাট। এটাকে ( আরবী ) এবং ( আরবী ) এই তিন রূপেই পড়া হয়েছে। কিন্তু পঠনই বেশী প্রসিদ্ধ। তাদের এই কথাটি এতই জঘন্য ও অপ্রীতিকর যে, যেন আকাশ বিদীর্ণ হয়ে যাবে, পৃথিবী খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে পড়বে এবং পর্বত রাজি চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে। কেননা, আকাশ ও পৃথিবী আল্লাহ্ তাআলার শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা বুঝে। তারা তাঁর একত্ববাদে বিশ্বাসী। তারা জানে যে, এ দুষ্ট ও নির্বোধ লোকেরা আল্লাহর সত্ত্বার উপর অপবাদ আরোপ করছে। তাঁর পিতামাতা নেই, সন্তান সন্ততি নেই, কোন অংশীদার নেই এবং সমতুল্য কেউ নেই। সমস্ত মাখলুক তার একত্বের সাক্ষ্য দানকারী। কবি বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ প্রত্যেক জিনিসের মধ্যেই তার জন্যে নিদর্শন রয়েছে, যা প্রমাণ করছে যে, তিনি এক ।” সারা বিশ্বের এক একটি অনুপরমাণু আল্লাহ তাআলার তাওহীদের প্রমাণ পেশ করছে। শিরুককারীদের শিকের কারণে সমস্ত মাখলুক প্রকম্পিত হচ্ছে। এর ফলে যেন জগতের পরিচালনায় ও ব্যবস্থাপনায় বিশৃংখলা দেখা দেয়ার উপক্রম হচ্ছে। শিকের সাথে কোন সৎকাজ ফলদায়ক হয় না। পক্ষান্তরে, এতে বিস্ময়ের কিছুই নেই যে, তাওহীদের সাথে সমস্ত গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দিবেন। যেমন হাদীসে আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমরা তোমাদের মরণোন্মুখ ব্যক্তিকে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর শাহাদাত পাঠ করাতে থাকো । কেননা, যে ব্যক্তি তার মৃত্যুর সময় এটা পাঠ করবে তার জন্যে জান্নাত। ওয়াজিব হয়ে যাবে।” সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ ) যে ব্যক্তি সুস্থাবস্থায় এটা পাঠ করবে ( তার হুকুম কি? )” তিনি উত্তরে বলেনঃ “এটা তো ( জান্নাত ) আরো বেশী ওয়াজিবকারী, এটাতো ( জান্নাত ) আরো বেশী ওয়াজিবকারী ।” অতঃপর তিনি বলেনঃ “ যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে । তাঁর শপথ! যমীন ও আসমান এবং এতোদুভয়ের মাঝের সমস্ত কিছু এবং নিম্নের সমস্ত জিনিস যদি মীযানের ( তারায়ূর ) এক পাল্লায় রাখা হয় এবং “ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর শাহাদাত দ্বিতীয় পাল্লায় রাখা হয় তবে এই শাহাদাতের ওজনই ভারী হয়ে যাবে ।” এর আরো দলীল হচ্ছে ঐ হাদীসটি যাতে তাওহীদের একটি ক্ষুদ্র খণ্ড পাপরাশির বড় বড় দফতরের চেয়ে ভারী হওয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে। ( এই হাদীস ইমাম ইবনু জারীর (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)সুতরাং তাদের ( আল্লাহর সন্তান আছে ) এই উক্তিটি এতো বড় অন্যায় যে, আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও বড়ত্বের কারণে আকাশ যেন কেঁপে ওঠে এবং যমীন যেন ক্রোধে ফেটে পড়ার উপক্রম হয়। আর পাহাড় যেন চূর্ণ বিচুর্ণ হয়ে পড়বে।হযরত আবদুল্লাহ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, একটি পাহাড় অপর পাহাড়কে জিজ্ঞেস করেঃ “ আল্লাহর যিকর করেছেন এরূপ কোন লোকও কি তোমার উপর আরোহণ করেছে?” ঐ পাহাড়টি তখন খুশী হয়ে উত্তর দেয়ঃ “হাঁ, করেছে ।” সুতরাং পাহাড়ও বাতিল ও মিথ্যা কথা এবং ভাল কথা শুনতে পায়, অন্য কেউ শুনতে পায় না। অতঃপর তিনি এই আয়াতটি পাঠ করেন। বর্ণিত আছে যে, আল্লাহ তাআলা যখন যমীনকেও ওর বৃক্ষ লতাদি সৃষ্টি করেন তখন সমস্ত বৃক্ষ আদম সন্তানকে ফল ফুল ও উপকার দিতে থাকে। কিন্তু যখন যমীনের অধিবাসীরা আল্লাহর জন্যে সন্তান আরোপ করে তখন যমীন নড়তে শুরু করে এবং গাছগুলিতে কাটা হয়ে যায়। হযরত কা'ব ( রাঃ ) বলেন যে, ফেরেশতারা ক্রোধান্বিত হয়ে যান এবং জাহান্নাম ভীষণভাবে প্রজ্জ্বলিত হয়ে ওঠে।হযরত আবু মূসা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ কষ্টদায়ক কথায় আল্লাহ তাআলা অপেক্ষা অধিক ধৈর্য ধারণকারী আর কেউ নেই । মানুষ তার সাথে শরীক স্থাপন করে এবং তার জন্যে সন্তান নির্ধারণ করে, অথচ তিনি তাদেরকে নিরাপদে রাখেন এবং আহার্য দান করতে থাকেন। তাদের থেকে তিনি বিপদ আপদ দূর করে দেন। সুতরাং আল্লাহর সন্তান রয়েছে তাদের এ কথায় যমীন, আসমান ও পাহাড় পর্বত চরম অস্বস্তিবোধ করে। আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব চরম অস্বস্তি সন্তান মোটেই শোভনীয় নয়। কারণ সমস্ত সৃষ্টজীব তাঁরই দাসত্ব করছে। তার সঙ্গী সাথী বা তার সমতুল্য কেউই নেই। যমীন ও আসমানে যত কিছু রয়েছে সবই তাঁর আদেশাধীন ও তার অনুগত দাস। তিনি সবারই প্রতিপালক ও রক্ষক। সবারই গণনাতার কাছে রয়েছে। তার জ্ঞান সবকেই পরিবেষ্টন করে আছে। সবাই তার ক্ষমতার আওতার মধ্যে রয়েছে। সমস্ত পুরুষ, নারী, ছোট ও বড় এবং ভাল ও মন্দের খবর তিনি রাখেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত কিছুর জ্ঞান তার আছে। তার কোন সাহায্যকারী নেই। তার সঙ্গী ও অংশীদারও নেই। প্রত্যেক বন্ধু বান্ধব ও সহায়কহীন অবস্থায় কিয়ামতের দিন তাঁর সামনে হাজির হবে। সমস্ত মাখলুকের ফায়সালা তারই হাতে। তিনি এক ও অংশী বিহীন। সবারই ফায়সালা তিনিই করবেন। তিনি যা চাবেন তাই করবেন। তিনি ন্যায় বিচারক, অত্যাচারী নন। কারো হক নষ্ট করা তাঁর সাহায্যের উল্টো।
সূরা মারইয়াম আয়াত 95 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তিনি পরম দয়াময়, আরশে সমাসীন হয়েছেন।
- তার কারণ এই যে, আল্লাহ কখনও পরিবর্তন করেন না, সে সব নেয়ামত, যা তিনি কোন
- অতঃপর সে সুখী জীবন-যাপন করবে,
- সে বিশ্বাস করেনি এবং নামায পড়েনি;
- তারা বললঃ আমরা আপনাকে সত্য সু-সংবাদ দিচ্ছি! অতএব আপনি নিরাশ হবেন না।
- অতএব, তোমরা হীনবল হয়ো না এবং সন্ধির আহবান জানিও না, তোমরাই হবে প্রবল। আল্লাহই তোমাদের
- এবং অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকুন।
- আর তাদের চেয়ে বড় যালেম কে হতে পারে, যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করে। এসব লোককে
- আমি তাকে আমার অনুগ্রহের অন্তর্ভুক্ত করেছিলাম। সে ছিল সৎকর্মশীলদের একজন।
- এবং পৃথিবী তার গর্ভস্থিত সবকিছু বাইরে নিক্ষেপ করবে ও শুন্যগর্ভ হয়ে যাবে।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা মারইয়াম ডাউনলোড করুন:
সূরা Maryam mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Maryam শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers