কোরান সূরা ত্বা-হা আয়াত 97 তাফসীর
﴿قَالَ فَاذْهَبْ فَإِنَّ لَكَ فِي الْحَيَاةِ أَن تَقُولَ لَا مِسَاسَ ۖ وَإِنَّ لَكَ مَوْعِدًا لَّن تُخْلَفَهُ ۖ وَانظُرْ إِلَىٰ إِلَٰهِكَ الَّذِي ظَلْتَ عَلَيْهِ عَاكِفًا ۖ لَّنُحَرِّقَنَّهُ ثُمَّ لَنَنسِفَنَّهُ فِي الْيَمِّ نَسْفًا﴾
[ طه: 97]
মূসা বললেনঃ দূর হ, তোর জন্য সারা জীবন এ শাস্তিই রইল যে, তুই বলবি; আমাকে স্পর্শ করো না, এবং তোর জন্য একটি নির্দিষ্ট ওয়াদা আছে, যার ব্যতিক্রম হবে না। তুই তোর সেই ইলাহের প্রতি লক্ষ্য কর, যাকে তুই ঘিরে থাকতি। আমরা সেটি জালিয়ে দেবই। অতঃপর একে বিক্ষিপ্ত করে সাগরে ছড়িয়ে দেবই। [সূরা ত্বা-হা: 97]
Surah Ta-Ha in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah TaHa ayat 97
তিনি বললেন, ''তবে দূর হও, নিঃসন্দেহ তোমার জীবদ্দশায় তবে এটিই রইল যে তুমি বলবে, 'ছুয়াঁছুঁয়ি নেই।’ আর নিঃসন্দেহ তোমার জন্য রয়েছে একটি ওয়াদা -- তোমাদের জন্য কখনো তার খেলাফ হবে না। আর তোমার উপাস্যের দিকে তাকাও যাকে ঘিরে বসে থেকে তুমি পূজো করতে। আমরা অবশ্যই এটি পুড়ে ফেলব, তারপর নিশ্চয়ই এটিকে ছিটিয়ে দেব সাগরে ছুঁড়ে ছুঁড়ে।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
৯৭. মূসা ( আলাইহিস-সালাম ) সামিরীকে বললেন: তুমি এখান থেকে চলে যাও। তুমি যতো দিন বেঁচে থাকবে ততোদিন বলবে: আমি কাউকে স্পর্শ করবো না, আবার অন্য কেউও আমাকে স্পর্শ করবে না। ফলে তুমি পরিত্যক্ত ও পরিত্যাজ্য হয়েই জীবন যাপন করবে। আর কিয়ামতের দিন তো তোমার হিসাব ও শাস্তির জন্য নির্ধারিত রয়েছেই। আল্লাহ তা‘আলা এই ওয়াদার খিলাফ করবেন না। আর তুমি দেখবে, তুমি যে গো-বাছুরকে মা’বূদ বানিয়েছো এবং আল্লাহ ব্যতিরেকে যার ইবাদাতে রত রয়েছো তার গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দেবো যাতে তা নিঃশেষ হয়ে যায়। অতঃপর তার ছাইগুলোকে সাগরে ছিটিয়ে দেবো। যাতে তার কোন নিশানাই না থাকে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
মূসা বললেন, ‘দূর হও! তোমার জীবদ্দশায় তোমার জন্য এটিই থাকল যে, তুমি বলবে ‘‘আমি অস্পৃশ্য’’[১] এবং তোমার জন্য থাকল এক নির্দিষ্টকাল যার ব্যতিক্রম হবে না।[২] আর তুমি তোমার সেই উপাস্যের প্রতি লক্ষ্য কর, যার পূজায় তুমি রত ছিলে, আমরা অবশ্যই ওকে জ্বালিয়ে দেব অতঃপর ওকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে সাগরে নিক্ষেপ করব। [৩] [১] অর্থাৎ, তুমি সারা জীবন এটি বলতে থাকবে যে, আমার নিকট হতে দূরে থাকো, আমাকে স্পর্শ করো না বা ছুঁয়ো না। কারণ তাকে স্পর্শ করার সাথে সাথে ( সামেরী ও স্পর্শকারী ) উভয়েই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়ত। সেই কারণে যখনই সে কোন মানুষকে দেখত, তখনই হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠত, 'আমাকে ছুঁয়ো না।' কথিত আছে যে, পরবর্তীতে সে মানুষের বসতি এলাকা ছেড়ে জঙ্গলে চলে যায়। সেখানে জীব-জন্তুদের সাথে তার জীবন অতিবাহিত হয় এবং সে মানুষের জন্য শিক্ষার এক নমুনা হয়ে যায়। অর্থাৎ মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্য যে যত বেশী বাহানা, ছল-চাতুরি ও ধোঁকাবাজি করবে দুনিয়া ও আখেরাতে তার শাস্তিও সেই হিসাবে তত বেশী কঠিন ও শিক্ষণীয় হবে। [২] অর্থাৎ, আখেরাতের শাস্তি এর ভিন্ন অতিরিক্ত; যা তাকে অবশ্য-অবশ্যই ভোগ করতে হবে। [৩] এখান হতে বুঝা গেল যে, শিরকের চিহ্ন নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া; বরং তার নাম-নিশান ও অস্তিত্ব মিটিয়ে ফেলা দরকার, চাহে তার সম্পর্ক যত বড়ই ব্যক্তিত্বের সাথে হোক না কেন। আর এটা তাঁর প্রতি অশ্রদ্ধা ও অপমান নয়; যেমন বিদআতী, কবর ও তাজিয়া পূজারীরা মনে করে থাকে, বরং এটি তাওহীদের উদ্দেশ্য ও ধর্মীয় আত্মচেতনাবোধের দাবী। যেমন এই ঘটনায় 'দূত ( জিবরীল )এর পদচিহ্ন'-এর মাহাত্ম্য খেয়াল করা হয়নি; যাতে বাহ্য-দৃষ্টিতে আধ্যাত্মিক বরকত দৃষ্টিগোচর হয়েছিল। বরং তা সত্ত্বেও তার পরোয়া করা হয়নি। কারণ তা শিরকের মাধ্যম ও অসীলা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
মূসা বললেন, ‘যাও; তোমার জীবদ্দশায় তোমার জন্য এটাই রইলো যে, তুমি বলবে, ‘আমি অস্পৃশ্য [ ১ ] এবং তোমার জন্য রইল এক নির্দিষ্ট সময়, তোমার বেলায় যার ব্যতিক্রম হবে না। আর তুমি তোমার সে ইলাহের প্রতি লক্ষ্য কর যার পুজায় তুমি রত ছিলে; আমরা সেটাকে জ্বালিয়ে দেবই, তারপর সেটাকে বিক্ষিপ্ত করে সাগরে ছড়িয়ে দেবই। [ ১ ] মূসা আলাইহিস সালাম সামেরীর জন্য পার্থিব জীবনে এই শাস্তি ধার্য করেন যে, সবাই তাকে বর্জন করবে এবং কেউ তার কাছে ঘেঁষবে না। তিনি তাকেও নির্দেশ দেন যে, কারো গায়ে হাত লাগাবে না। সারা জীবন এভাবেই সে বন্য জন্তুদের ন্যায় সবার কাছ থেকে আলাদা থাকবে। [ দেখুন, কুরতুবী ]
সূরা ত্বা-হা আয়াত 97 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- অতএব, আমরাও তোমার মোকাবেলায় তোমার নিকট অনুরূপ যাদু উপস্থিত করব। সুতরাং আমাদের ও তোমার মধ্যে
- কোন সম্প্রদায় তার নির্দিষ্ট সময়ের অগ্রে যায় না এবং পশ্চাতে থাকে না।
- তারা কি কোরআন সম্পর্কে গভীর চিন্তা করে না? না তাদের অন্তর তালাবদ্ধ?
- কোন মানুষকে আল্লাহ কিতাব, হেকমত ও নবুওয়ত দান করার পর সে বলবে যে, ‘তোমরা আল্লাহকে
- তারা তো আপনাকে এ ভুখন্ড থেকে উৎখাত করে দিতে চুড়ান্ত চেষ্টা করেছিল যাতে আপনাকে এখান
- তিনিই প্রেরণ করেছেন আপন রসূলকে হেদায়েত ও সত্য দ্বীন সহকারে, যেন এ দ্বীনকে অপরাপর দ্বীনের
- আর আল্লাহরই জন্যে সে সবকিছু যা কিছু রয়েছে আসমান সমূহে ও যমীনে। আল্লাহই যথেষ্ট কর্মবিধায়ক।
- সবার মান্যবর, সেখানকার বিশ্বাসভাজন।
- এ তো শুনলে, যে ব্যক্তি নিপীড়িত হয়ে নিপীড়ন পরিমাণে প্রতিশোধ গ্রহণ করে এবং পুনরায় সে
- পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ত্বা-হা ডাউনলোড করুন:
সূরা TaHa mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি TaHa শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers