কোরান সূরা মু'মিনুন আয়াত 98 তাফসীর
﴿وَأَعُوذُ بِكَ رَبِّ أَن يَحْضُرُونِ﴾
[ المؤمنون: 98]
এবং হে আমার পালনকর্তা! আমার নিকট তাদের উপস্থিতি থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি। [সূরা মু'মিনুন: 98]
Surah Al-Muminun in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Muminun ayat 98
''আর আমার প্রভু! তোমারই কাছে আমি আশ্রয় নিচ্ছি পাছে তারা আমার কাছে হাজির হয়।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
৯৮. হে আমার প্রতিপালক! আমি আরো আপনার আশ্রয় কামনা করছি আমার যে কোন কাজে তাদের উপস্থিতি হতে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
হে আমার প্রতিপালক! আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি আমার নিকট ওদের ( শয়তানদের ) উপস্থিতি হতে।’[১] [১] এই কারণে নবী ( সাঃ ) প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করার পূর্বে আল্লাহর নাম নিতেন; অর্থাৎ, 'বিসমিল্লাহ' বলে শুরু করতেন। কারণ, আল্লাহর স্মরণ শয়তান বিতাড়িত করে। সেই জন্য তিনি এই দু'আও করতেন, اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ الْهَدْمِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ التَّرَدِّي وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ الْغَرَقِ وَالْحَرَقِ وَالْهَرَمِ وَأَعُوذُ بِكَ أَنْ يَتَخَبَّطَنِي الشَّيْطَانُ عِنْدَ الْمَوْتِ وَأَعُوذُ بِكَ أَنْ أَمُوتَ فِي سَبِيلِكَ مُدْبِرًا وَأَعُوذُ بِكَ أَنْ أَمُوتَ لَدِيغًا অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট দেওয়াল চাপা পড়া, উপর থেকে পড়ে যাওয়া, পানিতে ডুবে যাওয়া, আগুনে পুড়ে যাওয়া এবং বার্ধক্যের স্থবিরতা থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি, যাতে আমার মৃত্যুর সময় শয়তান আমাকে স্পর্শ না করে, আমি যেন তোমার পথে ( জিহাদে ) পলায়ন অবস্থায় না মরি এবং সর্প দংশনেও যেন আমার মৃত্যু না হয়। ( আবূ দাউদঃ বিতর অধ্যায় ) ঘুমন্ত অবস্থায় ভয় পেলে তিনি এই দু'আটি পাঠ করতেন, أَعُوْذُ بِكَلمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيْطَانِ وَأَنْ يَحْضُرُوْنَ অর্থাৎ, আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাণীসমূহের অসীলায় তাঁর ক্রোধ ও শাস্তি হতে, তাঁর বান্দাদের অনিষ্ট হতে, শয়তানের প্ররোচনাদি এবং আমার নিকট ওদের হাজির হওয়া থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (আহমাদ ২/১৮১, আবু দাউদঃ চিকিৎসা অধ্যায়, তিরমিযীঃ দু ' আ অধ্যায়)
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
‘আর হে আমার রব! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি আমার কাছে তাদের উপস্থিতি থেকে।’
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৯৩-৯৮ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাআলা স্বীয় নবী মুহাম্মাদ ( সঃ )-কে নির্দেশ নিচ্ছেন যে, শাস্তি অবতীর্ণ হওয়ার সময় তিনি যেন দু'আ করেনঃ হে আমার প্রতিপালক! আপনি যদি আমার বিদ্যমানতায় ঐ অসৎ লোকদের উপর শাস্তি অবতীর্ণ করেন তবে আমাকে ঐ শাস্তি হতে বাঁচিয়ে নিন। যেমন হাদীসে এসেছে যে, নবী ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যখন আপনি কোন কওমকে ফিৎনায় পতিত করার ইচ্ছা করেন তখন ফিৎনায় পতিত করার পূর্বেই আমাকে আপনার নিকট উঠিয়ে নেন ।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) এবং ইমাম তিরিমিযী ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) এটাকে বিশুদ্ধ বলেছেন)আল্লাহ পাক স্বীয় নবী ( সঃ )-কে এই শিক্ষা দেয়ার পর বলেনঃ আমি তাদেরকে যে বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি তা আমি তোমাকে দেখাতে অবশ্যই সক্ষম। অর্থাৎ আমার পক্ষ থেকে ঐ কাফিরদের উপর যে শাস্তি ও বিপদ-আপদ আসবে তা ইচ্ছা করলে আমি তোমাকে দেখাতে পারি। এরপর মহান আল্লাহ তাঁর রাসূল ( সঃ )-কে এমন কথা শিখিয়ে দিচ্ছেন যা সমস্ত কঠিন সমস্যা ও বিপদ-আপদ দূর করতে সক্ষম। তা হলো, তুমি মন্দের মুকাবিলা কর যা উত্তম তা দ্বারা; তারা যা বলে আমি সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবগত। অর্থাৎ যারা তোমার সাথে মন্দ ব্যবহার করে তুমি তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার কর যাতে তাদের শত্রুতা বন্ধুত্বে এবং ঘৃণা প্রেম-প্রীতিতে পরিবর্তিত হয়। যেমন অন্য আয়াতে তিনি বলেছেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ মন্দ প্রতিহত কর উৎকৃষ্ট দ্বারা; ফলে তোমার সাথে যার শত্রুতা আছে, সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মত । এই গুণের অধিকারী করা হয় শুধু তাদেরকেই যারা ধৈর্যশীল; এই গুণের অধিকারী করা হয় শুধু তাদেরকেই যারা। মহা ভাগ্যবান।” ( ৪১:৩৪-৩৫ )মানুষের অনিষ্ট থেকে বাঁচবার উত্তম পন্থা বলে দেয়ার পর মহান আল্লাহ, শয়তানের অনিষ্ট হতে বাঁচবার উপায় বলে দিচ্ছেনঃ বল, হে আমার প্রতিপালক! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি শয়তানের প্ররোচনা হতে। কেননা, তার প্ররোচনা হতে বাঁচবার অস্ত্র এই প্রার্থনা ছাড়া তোমাদের অধিকারে আর কিছুই নেই। সদাচরণ দ্বারা সে মানুষের বশে আসতে পারে না। আশ্রয় প্রার্থনা করার বর্ণনায় আমরা লিখে এসেছি যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) পাঠ করতেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ আমি শ্রোতা ও জ্ঞাতা আল্লাহর নিকট বিতাড়িত শয়তানের প্ররোচনা, কুমন্ত্রণা ও ফুৎকার হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি ।”আল্লাহ তা'আলার উক্তিঃ ( আরবী ) অর্থাৎ হে আমার প্রতিপালক! আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি আমার নিকট তাদের উপস্থিতি হতে। শয়তান যেন আমার কোন কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে।সুতরাং প্রত্যেক কাজের প্রারম্ভে আল্লাহর স্মরণ ঐ কাজের মধ্যে শয়তানের প্রবেশকরণকে সরিয়ে রাখে। পানাহার, সহবাস, যবেহ ইত্যাদি প্রত্যেকটি কাজের শুরুতে আল্লাহকে স্মরণ করা উচিত। বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) নিম্নের দু'আটিও পাঠ করতেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি অতি বার্ধক্য হতে, আশ্রয় চাচ্ছি পিষ্ট হয়ে ( আকস্মিকভাবে ) মৃত্যুবরণ করা হতে ও ডুবে মরা হতে এবং শয়তান যেন আমাকে আমার মৃত্যুর সময় বিভ্রান্ত করতে না পারে সে জন্যে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা কছি ।” ( এটা ইমাম আবু দাউদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আমর ইবনে শশাআইব ( রাঃ ) তাঁর পিতা হতে এবং তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেছেনঃ রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাদেরকে একটি দু'আ শিখাতেন যেন ওটা আমা ঘুমোবার সময় পাঠ করি যাতে উদ্বেগের কারণে নিদ্রা ভঙ্গ হয়ে যাওয়ার রাগে দূর হয়ে যায়। তা হলোঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ আমি আল্লাহর নামে তাঁর পূর্ণ কালেমার মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করছি তার গযব হতে, তার শাস্তি হতে, তাঁর বান্দাদের অনিষ্ট হতে, শয়তানদের প্ররোচনা হতে এবং আমার নিকট তাদের উপস্থিতি হতে ।” হযরত ইবনে উমার ( রাঃ )-এর নীতি ছিল এই যে, তিনি তাঁর প্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানদেরকে উপরোক্ত দু'আটি শিখিয়ে দিতেন এবং এটা লিখে অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানদের গলায় লটকিয়ে দিতেন। ( ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন। ইমাম আবু দাঊদ ( রঃ ), ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) ইমাম নাসাঈও ( রঃ ) এটা বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) এটাকে হাসান গারীব বলেছেন)
সূরা মু'মিনুন আয়াত 98 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- আমরা জানি না পৃথিবীবাসীদের অমঙ্গল সাধন করা অভীষ্ট, না তাদের পালনকর্তা তাদের মঙ্গল সাধন করার
- সমস্ত নামাযের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাযের ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের
- কোন সময় কাফেররা আকাঙ্ক্ষা করবে যে, কি চমৎকার হত, যদি তারা মুসলমান হত।
- কখনও না, এটা তো উপদেশ মাত্র।
- আমরা অবশ্যই আমাদের পালনকর্তার দিকে ফিরে যাব।
- কোন কোন আহলে-কিতাবের আকাঙ্খা, যাতে তোমাদের গোমরাহ করতে পারে, কিন্তু তারা নিজেদের ছাড়া অন্য কাউকেই
- হে আমাদের পালনকর্তা! তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দিন এবং তাদেরকে মহা অভিসম্পাত করুন।
- হে আদম তুমি এবং তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর। অতঃপর সেখান থেকে যা ইচ্ছা খাও
- সে বললঃ তবে হে মূসা, তোমাদের পালনকর্তা কে?
- আমি তাদের প্রতি প্রেরণ করেছিলাম প্রস্তর বর্ষণকারী প্রচন্ড ঘূর্ণিবায়ু; কিন্তু লূত পরিবারের উপর নয়। আমি
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা মু'মিনুন ডাউনলোড করুন:
সূরা Muminun mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Muminun শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers