কোরান সূরা তালাক্ব আয়াত 1 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Talaq ayat 1 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা তালাক্ব আয়াত 1 আরবি পাঠে(Talaq).
  
   

﴿يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا طَلَّقْتُمُ النِّسَاءَ فَطَلِّقُوهُنَّ لِعِدَّتِهِنَّ وَأَحْصُوا الْعِدَّةَ ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ رَبَّكُمْ ۖ لَا تُخْرِجُوهُنَّ مِن بُيُوتِهِنَّ وَلَا يَخْرُجْنَ إِلَّا أَن يَأْتِينَ بِفَاحِشَةٍ مُّبَيِّنَةٍ ۚ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ ۚ وَمَن يَتَعَدَّ حُدُودَ اللَّهِ فَقَدْ ظَلَمَ نَفْسَهُ ۚ لَا تَدْرِي لَعَلَّ اللَّهَ يُحْدِثُ بَعْدَ ذَٰلِكَ أَمْرًا﴾
[ الطلاق: 1]

হে নবী, তোমরা যখন স্ত্রীদেরকে তালাক দিতে চাও, তখন তাদেরকে তালাক দিয়ো ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে এবং ইদ্দত গণনা করো। তোমরা তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করো। তাদেরকে তাদের গৃহ থেকে বহিস্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয় যদি না তারা কোন সুস্পষ্ট নির্লজ্জ কাজে লিপ্ত হয়। এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। যে ব্যক্তি আল্লাহর সীমালংঘন করে, সে নিজেরই অনিষ্ট করে। সে জানে না, হয়তো আল্লাহ এই তালাকের পর কোন নতুন উপায় করে দেবেন। [সূরা তালাক্ব: 1]

Surah At-Talaq in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Talaq ayat 1


হে প্রিয় নবী! যখন তোমরা স্ত্রীলোকদের তালাক দাও তখন তাদের তালাক দিয়ো তাদের নির্ধারিত দিনের জন্য, আর ইদ্দতের হিসাব রেখো, আর তোমাদের প্রভু আল্লাহ্‌কে ভয়-ভক্তি করো। তোমরা তাদের বের করে দিও না তাদের থাকা-ঘর থেকে, এবং তারাও যেন বেরিয়ে না যায় যদি না তারা স্পষ্ট অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়ে থাকে। আর এগুলোই আল্লাহ্‌র সীমা। আর যে কেউ আল্লাহ্‌র বিধান লংঘন করে সে তো তবে নিজের অন্তরা‌ত্মার প্রতি অন্যায় করেই ফেলেছে। তুমি জানো না, হয়ত আল্লাহ্ এর পরে কোনো উপায় করে দেবেন।


Tafsir Mokhtasar Bangla


১. হে নবী! যখন আপনি কিংবা আপনার উম্মতের কেউ নিজ স্ত্রীকে তালাক দিতে চায় তখন যেন সে তার প্রথম ইদ্দত তথা এমন পবিত্রতার সময় তালাক দেয় যাতে তাদের মিলন হয় নি। আর তোমরা ইদ্দতের হিসেব রাখো। যাতে তোমরা নিজেদের স্ত্রীদেরকে ফেরত নিতে চাইলে তা করতে পারো এবং তোমরা আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে নিজেদের প্রতিপালককে ভয় করো। তোমরা তালাকপ্রাপ্তাদেরকে নিজেদের আবাসন থেকে বের করে দিয়ো না। আর না তারা ইদ্দত পরিপূর্ণ হওয়ার পূর্বেই সেখান থেকে বের হবে। তবে হ্যাঁ, যদি তারা স্পষ্ট অশ্লীল কাজ যেমন ব্যভিচার করে বসে। এ সব হলো আল্লাহ কর্তৃক বান্দার জন্য নির্ধারিত সীমারেখা। যে ব্যক্তি এগুলো অতিক্রম করবে সে স্বীয় রবের অবাধ্যতার কারণে নিজেকে ধ্বংসের মধ্যে নিমজ্জিত করে নিজের উপর অবিচার করবে। হে তালাকদাতা! তুমি জানো না, হতে পারে পরবর্তীতে আল্লাহ উক্ত স্বামীর অন্তরে আগ্রহ সৃষ্টি করে দিতে পারেন। ফলে আপন স্ত্রীকে সে ফেরত নিবে।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


হে নবী! ( তোমার উম্মতকে বল, ) তোমরা যখন তোমাদের স্ত্রীদেরকে তালাক দিতে ইচ্ছা কর[১] তখন তাদেরকে তালাক দিয়ো ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে,[২] ইদ্দতের হিসাব রেখো[৩] এবং তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করো; তোমরা তাদেরকে তাদের বাসগৃহ হতে বহিষ্কার করো না[৪] এবং তারা নিজেও যেন বের না হয়; [৫] যদি না তারা লিপ্ত হয় স্পষ্ট অশ্লীলতায়।[৬] এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা। আর যে আল্লাহর সীমা লংঘন করে, সে নিজের উপরই অত্যাচার করে।[৭] তুমি জান না, হয়তো আল্লাহ এর পর কোন উপায় করে দেবেন।[৮] [১] নবী করীম ( সাঃ )-কে সম্বোধন করা হয়েছে তাঁর সম্মান ও মর্যাদার কারণে। নচেৎ এই নির্দেশ উম্মতকে দেওয়া হচ্ছে। অথবা সম্বোধন তাঁকেই করা হয়েছে এবং বহুবচন ক্রিয়া তাঁর সম্মানার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। আর উম্মতের জন্য তো তাঁর আদর্শই যথেষ্ট। طَلَّقْتُمْ এর অর্থ হল, যখন তালাক দেওয়ার পাকা ইচ্ছা করে নিবে। ( ইদ্দত মানে গণনা। অর্থাৎ, তালাকের নির্ধারিত দিন গণনা করা। )[২] এতে তালাক দেওয়ার তরীকা ও তার সময় উল্লেখ করা হয়েছে। لِعِدَّتِهِنَّ তে 'লাম' অক্ষরটি 'তাওক্বীত' ( সময় নির্ণয় ) এর জন্য ব্যবহার হয়েছে। অর্থাৎ, لأَوَّلِ অথবা لاسْتِقْبَالِ عِدَّتِهِنَّ ( ইদ্দতের শুরুতে ) তালাক দাও। অর্থাৎ, যখন মহিলা ঋতু ( মাসিক ) থেকে পবিত্র হয়ে যাবে, তখন তার সাথে আর সহবাস না করেই তালাক দাও। পবিত্র অবস্থা হল তার ইদ্দতের শুরু। এর অর্থ হল, মাসিক অবস্থায় অথবা পবিত্র অবস্থায় সহবাস করার পর তালাক দেওয়া ভুল তরীকা। এটাকেই ফিকাহ শাস্ত্রের পন্ডিতগণ 'বিদয়ী তালাক' এবং পূর্বের ( সঠিক ) তরীকাকে 'সুন্নী তালাক' বলে আখ্যায়িত করেছেন। এর সমর্থন হাদীসেও পাওয়া যায়; ইবনে উমার ( রাঃ ) মাসিক অবস্থায় তাঁর স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেন। এতে রসূল ( সাঃ ) রাগান্বিত হন এবং তাঁকে তালাক প্রত্যাহার করে নিতে বলার সাথে সাথে পবিত্র অবস্থায় তালাক দেওয়ার নির্দেশ দেন। আর এর সমর্থনে তিনি এই আয়াতকেই দলীল হিসাবে গ্রহণ করেন। ( বুখারীঃ তালাক অধ্যায় ) তবে মাসিক অবস্থায় দেওয়া তালাকও বিদআত হওয়া সত্ত্বেও তা তালাক বলে গণ্য হবে। মুহাদ্দিসগণের এবং অধিকাংশ আলেমগণের এটাই উক্তি। অবশ্য ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ ( রঃ ) এবং ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম ( রঃ ) বিদয়ী তালাককে তালাক গণ্য করেননি। ( বিস্তারিত জানার জন্য দ্রষ্টব্যঃ নাইলুল আওতার, তালাক অধ্যায়, পরিচ্ছেদ, মাসিক ও পবিত্র অবস্থায় তালাক দেওয়া নিষেধ। এ ছাড়া অন্যান্য হাদীসের ব্যাখ্যাগ্রন্থও দেখুন। ) [৩] অর্থাৎ, এর প্রথম ও শেষটার খেয়াল রাখ, যাতে স্ত্রী এর পর দ্বিতীয় বিবাহ করতে পারে। অথবা তোমরাই যদি রুজু' ( প্রত্যাহার ) করতে ( স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে ) চাও, তবে ( প্রথম এবং দ্বিতীয় তালাকের পর ) ইদ্দতের ভিতরেই যেন রুজু' করতে পার[৪] অর্থাৎ, তালাক দেওয়ার সাথে সাথেই স্ত্রীকে নিজ ঘর থেকে বের করে দিও না, বরং ইদ্দত পর্যন্ত তাকে তোমাদেরই ঘরে থাকতে দাও। ইদ্দত শেষ হওয়া পর্যন্ত তার বাসস্থান ও ভরণ-পোষণের দায়িত্ব তোমাদের উপরেই থাকবে।[৫] অর্থাৎ, ইদ্দতের দিনগুলোতে স্ত্রীও যেন ঘর হতে বের হওয়া থেকে বিরত থাকে। তবে যদি একান্ত কোন জরুরী কাজে বের হতে হয় তবে সে কথা ভিন্ন।[৬] অর্থাৎ, ব্যভিচার, মুখ-খিস্তি, গালাগালি, ঝগড়া বা চরম অভদ্রতা প্রদর্শন করলে, যা থেকে ঘরের লোকদের কষ্ট হয়। এই অবস্থায় তাকে ( বাড়ি থেকে ) বের করা জায়েয হবে।[৭] অর্থাৎ, উল্লিখিত সমূহ বিধান হল আল্লাহর কর্তৃক নির্ধারিত সীমারেখা। যা অতিক্রম করা নিজের উপর যুলুম করার নামান্তর। কেননা, এই সীমালঙ্ঘনের যাবতীয় ক্ষতি ভোগ করতে হবে সীমালঙ্ঘনকারী নিজেকেই।[৮] অর্থাৎ, পুরুষের অন্তরে তালাকপ্রাপ্তা মহিলার প্রতি চাহিদা ও আকর্ষণ সৃষ্টি করে দেবেন ফলে সে রুজু করার প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়ে যাবে। কেননা, প্রথম ও দ্বিতীয় তালাকের পর স্বামী ইদ্দতের ভিতরেই ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার রাখে। এই জন্য কোন কোন মুফাসসিরদের মত হল, এই আয়াতে আল্লাহ কেবল এক তালাক দেওয়ার আদেশ করেছেন এবং এক সাথে তিন তালাক দিতে নিষেধ করেছেন। কেননা, সে যেদি একই সময়ে তিন তালাক দিয়ে দেয় ( আর শরীয়ত যদি তার এই তালাককে বৈধ গণ্য করে কার্যকরী করে দেয় ), তবে এ কথা বলার কি কোন অর্থ হবে যে, 'হয়তো আল্লাহ কোন নতুন উপায় বের করে দেবেন।' ( ফাতহুল ক্বাদীর ) এটাকেই দলীল বানিয়ে ইমাম আহমাদ ও অন্যান্য উলামাগণ বলেছেন যে, বাসস্থান ও ভরণ-পোষণের উপর যে তাকীদ করা হয়েছে, তা কেবল সেই মহিলাদের জন্য, যাদেরকে তাদের স্বামীরা প্রথম অথবা দ্বিতীয় তালাক দিয়েছে। কেননা, এতে স্বামীর ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার অবশিষ্ট থাকে। আর যে মহিলাকে ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময়ে দুই তালাক দেওয়া হয়ে গেছে, তৃতীয় তালাক তার জন্য তালাকে 'বাত্তাহ' অথবা 'বায়েনাহ' ( কুবরা; যার পর আর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার থাকে না ) গণ্য হবে। তার বাসস্থান এবং ভরণ-পোষণ স্বামীর দায়িত্বে থাকে না। তাকে সত্বর স্বামীর ঘর থেকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হবে। কেননা, স্বামী আর তাকে ফিরিয়ে নিয়ে তার সাথে সংসার করতে পারে না। ﴿حَتَّى تَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ﴾ " যে পর্যন্ত না স্ত্রী কোন অন্য পুরুষকে বিবাহ করেছে। " ( অতঃপর সে স্বামী তালাক দিয়েছে বা মারা গেছে তারপর তাকে পুনর্বিবাহ করেছে। ) এই জন্য এই স্ত্রীর আর তার স্বামীর কাছে থাকার এবং তার কাছ থেকে খোরপোশ আদায় করার অধিকার থাকে না। এর সমর্থন ফাতিমা বিনতে ক্বাইস ( রাঃ ) র ঘটনা থেকেও হয় যে, যখন তাঁর স্বামী তাঁকে তৃতীয় তালাকও দিয়ে দিলেন এবং তাঁকে স্বামীর ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য বলা হলে তিনি বের হতে চাইলেন না। পরিশেষে বিষয়টা রসূল ( সাঃ )-এর কাছে পৌঁছলে তিনি ফায়সালা করলেন যে, তাঁর বাসস্থান ও ভরণ-পোষণ নেই। তাকে সত্বর কোন অন্যত্র স্থানান্তরিত হওয়া উচিত। এমন কি কোন কোন বর্ণনায় পরিষ্কারভাবে এসেছে যে, ( إِنَّمَا النَّفَقَةُ وَالسُّكْنَى لِلْمَرْأَةِ عَلَى زَوْجِهَا مَا كَانَتْ لَهُ عَلَيْهَا رَجْعَةٌ ) অর্থাৎ, ভরণ-পোষণ ও বাসস্থান কেবল সেই মহিলার জন্য আছে, যাকে ফিরিয়ে নেওয়া তার স্বামীর অধিকারে আছে। ( আহমাদ, নাসাঈ ) অবশ্য কোন কোন বর্ণনায় গর্ভবতী মহিলার জন্যেও বাসস্থান ও খোরপোশের কথার উল্লেখ রয়েছে। ( বিস্তারিত জানার জন্য নাইলুল আওতার দ্রষ্টব্যঃ ) কেউ কেউ এই বর্ণনাগুলোকে কুরআনের উল্লিখিত ﴿لاَ تُخْرِجُوْهُنَّ مِنْ بُيُوْتِهِنَّ﴾ ( তোমরা তাদেরকে তাদের ঘর হতে বের করে দিও না ) এই নির্দেশের পরিপন্থী মনে করে তা প্রত্যাখ্যান করেন, যা সঠিক নয়। কেননা, কুরআনের আয়াত তার পূর্বাপর প্রাসঙ্গিক আলোচনার ভিত্তিতে প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত নির্দেশ রজয়ী তালাক ( যে তালাকের পর ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার থাকে ) প্রাপ্তা মহিলার ক্ষেত্রে দেওয়া হয়েছে। আর যদি এটাকে ব্যাপক ধরে নেওয়াও যায়, তবে হাদীসের এই বর্ণনাগুলো তার নির্দিষ্টকারী হবে। অর্থাৎ, কুরআনের সাধারণ নির্দেশকে হাদীসের এই বর্ণনাগুলো রজয়ী তালাকপ্রাপ্তা মহিলার জন্য নির্দিষ্ট করে দিল এবং 'বায়েনাহ' তালাকপ্রাপ্তা মহিলাকে উক্ত সাধারণ হুকুমের আওতা থেকে বের করে নিল।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


হে নবী! তোমরা যখন তোমাদের স্ত্রীগণকে তালাক দিতে ইচ্ছে কর তাদেরকে তালাক দিও ইদ্দতের প্রতি লক্ষ রেখে [] এবং তোমরা ইদ্দতের হিসেব রেখো। আর তোমাদের রব আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করো। তোমারা তাদেরকে তাদের ঘড়বাড়ি থেকে বহিস্কার করো না [] এবং তারাও বের হবে না, যদি না তারা লিপ্ত হয় স্পষ্ট অশ্লীলতায় []। আর এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমা ; যে আল্লাহর সীমা লঙ্ঘন করে সে নিজেরই উপর অত্যাচার করে। আপনি জানেন না, হয়ত আল্লাহ্‌ এর পর কোন উপায় করে দেবেন। [] আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বর্ণনা করেন যে, তিনি তার স্ত্রীকে হায়েয অবস্থায় তালাক দিয়েছিলেন। ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এ কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর গোচরীভূত করলে তিনি খুব নারায হয়ে বললেনঃ তার উচিত হায়েয অবস্থায় তালাক প্রত্যাহার করে নেয়া এবং স্ত্রীকে বিবাহে রেখে দেয়া( তালাকটি রাজয়ী তালাক ছিল, যাতে প্রত্যাহারের সুযোগ থাকে ) এই হায়েয থেকে পবিত্র হওয়ার পর আবার যখন স্ত্রীর হায়েয হবে এবং তা থেকে পবিত্র হবে, তখন যদি তালাক দিতেই চায়, তবে সহবাসের পূর্বে পবিত্র অবস্থায় তালাক দিবে। এই ইদতের প্রতি লক্ষ্য রেখে তালাক প্রদানের আদেশই আল্লাহ তা'আলা ( আলোচ্য ) আয়াতে দিয়েছেন। [ বুখারী: ৫২৫১, মুসলিম: ১৪৭১ ] [] এখানে ইদ্দত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে কি ব্যবহার করতে হবে তা জানিয়ে দেয়া হচ্ছে, বলা হচ্ছে, স্ত্রীদেরকে তাদের গৃহ থেকে বহিষ্কার করো না। এখানে তাদের গৃহ বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, যে পর্যন্ত তাদের বসবাসের হক পুরুষের দায়িত্বে থাকে, সেই পর্যন্ত গৃহে তাদের অধিকার আছে। [ দেখুন-ইবন কাসীর ] [] প্রকাশ্য নির্লজ্জ কাজ বলে কি বোঝানো হয়েছে, এ সম্পর্কে তিন প্রকার উক্তি বৰ্ণিত আছে। ( এক ) নির্লজ্জ কাজ বলে খোদ গৃহ থেকে বের হয়ে যাওয়াই বোঝানো হয়েছে। এমতাবস্থায় এটা দৃশ্যত ব্যতিক্রম, যার উদ্দেশ্য গৃহ থেকে বের হওয়ার অনুমতি দেয়া নয়; বরং নিষেধাজ্ঞাকে আরও জোরদার করা। অর্থাৎ তালাকপ্ৰাপ্তা স্ত্রীরা তাদের স্বামীর গৃহ থেকে বের হবে না, কিন্তু যদি তারা অশ্লীলতায়ই মেতে উঠে ও বের হয়ে পড়ে তবে সে গুণাহগার হবে। সুতরাং এর অর্থ বের হয়ে যাওয়ার বৈধতা নয়; বরং আরও বেশি নিন্দা ও নিষিদ্ধতা প্রমাণ করা। ( দুই ) নির্লজ্জ কাজ বলে ব্যভিচার বোঝানো হয়েছে। এমতাবস্থায় ব্যতিক্রম যথার্থ অর্থেই বুঝতে হবে। অর্থাৎ তালাকপ্ৰাপ্ত স্ত্রী ব্যভিচার করলে এবং অপরাধ প্রমাণিত হলে তার প্রতি শরীআতের শাস্তি প্রয়োগ করার জন্যে অবশ্যই তাকে ইদ্দতের গৃহ থেকে বের করা হবে। ( তিন ) নির্লজ্জ কাজ বলে কটু কথাবার্তা, ঝগড়া-বিবাদ বোঝানো হয়েছে। আয়াতের অর্থ হবে এই যে, তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীদেরকে তাদের গৃহ থেকে বহিষ্কার করা জায়েয নয়। কিন্তু যদি যারা কটুভাষিণী ও ঝগড়াটে হয় এবং স্বামীর আপনজনদের সাথে দুর্ব্যবহার করে, তবে তাদেরকে ইন্দতের গৃহ থেকে বহিষ্কার করা যাবে। [ দেখুন-কুরতুবী, বাগভী ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


প্রথমতঃ নবী ( সঃ )-কে মর্যাদা ও সম্মানের সাথে সম্বোধন করা হয়েছে, অতঃপর এরই অনুসরণে তাঁর উম্মতকে সম্বোধন করা হয়েছে এবং তাদেরকে তালাকের মাসআলা শিক্ষা দেয়া হয়েছে।হযরত আনাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হযরত হাফসা ( রাঃ )-কে তালাক দেন। তখন তিনি তাঁর পিতা-মাতার বাড়ীতে চলে যান। ঐ সময় এই আয়াত অবতীর্ণ হয় এবং রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে বলা হয়ঃ “ তাকে ( হযরত তাফসা রাঃ-কে ) ফিরিয়ে নাও । সে খুব বেশী রোযাব্রত পালনকারিণী ও অধিক নামায আদায়কারিণী। সে দুনিয়াতেও তোমার স্ত্রী এবং জান্নাতেও তোমার স্ত্রীদেরই অন্তর্ভুক্ত থাকবে।” ( এ হাদীসটি ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন। এই রিওয়াইয়াটিই ইমাম ইবনে জারীরও ( রঃ ) মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন) অন্যান্য সনদেও এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হযরত হাফসা ( রাঃ )-কে তালাক দিয়েছিলেন, অতঃপর রুকূ করেছিলেন বা ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমার ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি তাঁর স্ত্রীকে মাসিক ঋতুর অবস্থায় তালাক দেন। হযরত উমার ( রাঃ ) ঘটনাটি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিকট বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) অসন্তুষ্ট হন এবং বলেনঃ “ সে যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয় এবং ঋতু হতে পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রীরূপেই রেখে দেয় । অতঃপর পুনরায় ঋতুবতী হওয়ার পর যখন পবিত্র হবে তখন ইচ্ছা হলে এই পবিত্র অবস্থায় সহবাসের পূর্বেই তালাক দিবে। এটাই ঐ ইদ্দত যার হুকুম আল্লাহ তা'আলা দিয়েছেন।” ( এ হাদীসটি সহীহ বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে। এটাও আরো বহু হাদীস গ্রন্থে সনদে বর্ণিত হয়েছে )হযরত আবূ যুবায়ের ( রঃ ) ইযযাহর মাওলা হযরত আবদুর রহমান ইবনে আয়মান ( রঃ ) হতে শুনেছেন যে, তিনি হযরত ইবনে উমার ( রাঃ )-কে জিজ্ঞেস করেনঃ “ যে ব্যক্তি তার স্ত্রীকে হায়েযের অবস্থায় তালাক দেয় তার ব্যাপারে আপনার অভিমত কি?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “তাহলে শুনো! হযরত ইবনে উমার ( রাঃ ) অর্থাৎ তিনি নিজেই রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর জীবদ্দশায় তাঁর স্ত্রীকে ঋতুর অবস্থায় তালাক দিয়েছিলেন । তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাঁকে নির্দেশ দেন যে, তিনি যেন স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেন। তখন হযরত ইবনে উমার ( রাঃ ) তাকে ফিরিয়ে নেন। তারপর রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাঁকে বলেন যে, এখন হয় তিনি তাকে তালাক দিবেন, না হয় রেখে দিবেন। অতঃপর নবী ( সঃ ) ( আরবি )-এই আয়াতটি পাঠ করেন। ( সহীহ মুসলিমে এটা বর্ণিত হয়েছে ) অন্য রিওয়াইয়াতে ( আরবি )-এর ভাবার্থ করা হয়েছেঃ “ যে তোহর বা পবিত্রাবস্থায় সহবাস করা হয়নি ঐ তোহরে তালাক দেয়া ।' বহু লোকই এটাই বলেছেন। হযরত ইবনে উমার ( রাঃ ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছেঃ হায়েযের অবস্থায় তালাক দিয়ো না এবং ঐ তোহরেও তালাক দিয়ো না যাতে স্ত্রী-সহবাস করেছো, বরং ঐ সময় পর্যন্ত ছেড়ে রেখো যে, আবার তার হায়েয হবে এবং ঐ হায়েয হতে আবার পবিত্রতা লাভ করবে। ঐ পবিত্র অবস্থায় একটি তালাক দিয়ে দাও। হযরত ইকরামা ( রঃ ) বলেন যে, ইদ্দত দ্বারা তোহর উদ্দেশ্য। কুরু দ্বারা উদ্দেশ্য হলো হায়েয। অথবা হামল বা গর্ভবতী অবস্থায় তালাক দাও, যখন হামল প্রকাশিত হয়ে যাবে। যে তোহরে সহবাস করেছো ঐ তোহরে তালাক দিয়ো না। কেননা, এর দ্বারা স্ত্রীর হামল হলো কি না তা জানা যায় না।এখান হতেই বিজ্ঞ আলেমগণ তালাকের আহকাম গ্রহণ করেছেন এবং তালাকের দুই প্রকার করেছেন। তালাকে সুন্নাত ও তালাকে বিদআত। তালাকে সুন্নাত তো এটাই যে, এমন তোহরে বা পবিত্র অবস্থায় তালাক দিবে যাতে স্ত্রী-সহবাস করেনি অথবা হামলের অবস্থায় তালাক দিবে। আর তালাকে বিদআত এই যে, হায়েযের অবস্থায় তালাক দিবে অথবা এমন তোহরে তালাক দিবে যাতে স্ত্রী-সহবাস করেছে এবং হামল হয়েছে কি-না তা জানা যায়নি। তালাকের তৃতীয় প্রকারও রয়েছে যা তালাকে সুন্নাত নয় এবং তালাকে বিদআতও নয়। ওটা হচ্ছে নাবালেগা বা অপ্রাপ্ত বয়স্কা মেয়ের তালাক এবং ঐ স্ত্রী লোকের তালাক যার হায়েযই হয় না এবং ঐ নারীর তালাক যার সাথে মিলন হয়নি। এসবের আহকাম ও বিস্তারিত আলোচনার জায়গা হচ্ছে ফুরূর কিতাবগুলো, তাফসীর নয়। এসব ব্যাপারে মহান আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন। এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ তোমরা ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে ইদ্দতের হিসাব রাখবে। এমন যেন না হয় যে, ইদ্দতের দীর্ঘতার কারণে স্ত্রীর অন্য স্বামী গ্রহণ করার ব্যাপারে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। আর এই ব্যাপারে তোমরা প্রকৃত মাবুদ আল্লাহকে ভয় করবে। ইদ্দতের সময় পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তালাকপ্রাপ্তা নারীর বসবাসের জায়গা দেয়ার দায়িতু স্বামীর উপর ন্যস্ত থাকবে। স্বামী তাকে তার বাড়ী হতে বের করে দিবে না এবং সে নিজেও বের হয়ে যাবে না। কেননা, সে স্বামীর অধিকারে আবদ্ধা রয়েছে।( আরবি ) ব্যভিচারকেও অন্তর্ভুক্ত করে এবং এটাও এর মধ্যে শামিল যে, স্ত্রী স্বামীকে বিপদে ফেলবে, তার বিরোধিতা করবে, তাকে কষ্ট দিবে, তার সাথে দুর্ব্যবহার এবং স্বামীর পরিবারের লোকদেরকে কষ্ট দিবে। এরূপ অবস্থায় স্বামীর তার স্ত্রীকে বাড়ী হতে বের করে দেয়া জায়েয।আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বলেনঃ এগুলো আল্লাহর বিধান অর্থাৎ তাঁর শরীয়ত ও সীমারেখা। যে আল্লাহর বিধান লংঘন করে সে নিজেরই উপর অত্যাচার করে। আল্লাহ হয়তো এরপর কোন উপায় করে দিবেন। আল্লাহর ইচ্ছা কেউই জানতে পারে না। ইদ্দতের সময়কাল পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত নারীর তার স্বামীর বাড়ীতে অবস্থান করা, এটা আল্লাহর হুকম। এর মধ্যে এই যৌক্তিকতা রয়েছে যে, হয়তো এই ইদ্দতের মধ্যে তার স্বামীর মত পরিবর্তন হয়ে যাবে। সে হয়তো তালাক দেয়ার কারণে লজ্জিত হবে। তার অন্তরে হয়তো স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার খেয়াল জেগে উঠবে এবং সে স্ত্রীকে রাজআত করেও নিবে। অতঃপর স্বামী-স্ত্রী সুখে শান্তিতে ঘর-সংসার করতে থাকবে। নতুন কোন উপায় উদ্ভাবন করা দ্বারাও এই রাজআতকেই বুঝানো হয়েছে। এর ভিত্তিতেই কতক পূর্ব যুগীয় গুরুজন এবং তাদের অনুসারীদের যেমন হযরত আহমাদ ইবনে হাম্বল ( রঃ ) প্রমুখের মাযহাব এই যে, ( আরবি ) নারী অর্থাৎ ঐ তালাকপ্রাপ্তা নারী যাকে রাজআত করার অধিকার স্বামীর বাকী নেই, এর ইদ্দত পূর্ণ হবার সময় পর্যন্ত বসবাসের জায়গা দেয়া স্বামীর দায়িত্ব নয়। অনুরূপভাবে যে নারীর স্বামী মারা যাবে তার ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার সময় পর্যন্ত তাকে স্থান দেয়া স্বামীর ওয়ারিশদের উপর ওয়াজিব নয়। তাঁদের দলীল হলো হযরত ফাতিমা বিনতু ফাহরিয়্যাহ ( রাঃ ) সম্পর্কীয় হাদীসটি। তা এই যে, যখন তার স্বামী হযরত আবূ আমর ইবনে হাফস ( রাঃ ) তাঁকে তৃতীয় ও সর্বশেষ তালাক দিয়ে দেন তখন তিনি তাঁর স্ত্রীর নিকট বিদ্যমান ছিলেন না। বরং ঐ সময় তিনি ইয়ামনে ছিলেন। সেখান হতেই তিনি স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। তখন তাঁর ওয়াকীল তাঁর স্ত্রীর নিকট সামান্য যব পাঠিয়েছিলেন এই বলে যে, এটা তাঁকে খোরাক হিসেবে দেয়া হলো। এতে ঐ নারী অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হন। ওয়াকীল তাকে বললেনঃ “ অসন্তুষ্ট হচ্ছ কেন? তোমার খরচ বহন করার দায়িত্ব আমাদের নয় ।” মহিলাটি তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিকট গমন করে এটা জিজ্ঞেস করেন। উত্তরে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ হ্যাঁ, ঠিকই বটে । তোমার খরচ বহন করার দায়িত্ব তোমার এই স্বামীর উপর নয়।" সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে, তাঁকে তিনি বলেনঃ “ তোমাকে বসবাসের জন্যে ঘর দেয়াও তোমার এ স্বামীর দায়িত্ব নয় । অতঃপর তাকে নির্দেশ দিলেন যে, তিনি যেন উম্মে শুরায়েক ( রাঃ )-এর বাড়ীতে তার ইদ্দতের দিনগুলো অতিবাহিত করেন। তারপর বলেনঃ “ সেখানে তো আমার অধিকাংশ সাহাবী যাতায়াত করে থাকে । তুমি বরং আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম ( রাঃ )-এর গৃহে ইদ্দত পালন কর। সে অন্ধ মানুষ। তুমি সেখানে তোমার কাপড়ও রেখে দিতে পারবে ( শেষ পর্যন্ত )।”মুসনাদে আহমাদে রয়েছে যে, ঐ মহিলাটির স্বামীকে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) কোন এক যুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন। তিনি সেখান হতেই তাঁর স্ত্রীকে তালাক পাঠিয়ে দেন।তাঁর স্বামীর ভাই তখন তাঁকে তাঁর স্বামীর বাড়ী হতে চলে যেতে বলেন। মহিলাটি তখন তাঁর স্বামীর ভাইকে বলেনঃ “ আমার ইদ্দত পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত আমার পানাহার ও বাসস্থানের দায়িত্ব আমার স্বামীর ।” তাঁর স্বামীর ভাই এটা অস্বীকার করেন। শেষ পর্যন্ত এ ঘটনাটির খবর নবী ( সঃ )-এর নিকট পৌঁছে যায়। তিনি ফাতিমা নাম্নী ঐ মহিলাটিকে বলেনঃ “ তোমার ভরণ-পোষণ ও বাসস্থানের দায়িত্ব তোমার স্বামীর উপর ঐ সময় রয়েছে যখন তোমাকে রাজআত করার অধিকার তার আছে । এটা যখন নেই তখন ওটাও নেই। তুমি এখান হতে চলে যাও এবং অমুক স্ত্রীলোকের বাড়ীতে তোমার ইদ্দত পালন কর।” অতঃপর বললেনঃ “ সেখানে তো আমার সাহাবীরা যাতায়াত করে থাকে! তুমি বরং ইবনে উম্মে মাকতুম ( রাঃ )-এর বাড়ীতে তোমার ইদ্দতের দিনগুলো অতিবাহিত কর । সে অন্ধ মানুষ। সুতরাং সে তোমাকে দেখতে পাবে না ( শেষ পর্যন্ত )।” আবূল কাসিম তিবরানী ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন যে, হযরত ফাতিমা বিনতু কায়েস ( রাঃ ) হযরত যহ্‌হাক ইবনে কায়েস কারাশীর ( রাঃ ) ভগ্নী ছিলেন। তাঁর স্বামী ছিলেন হযরত আবূ আমর ইবনে হাফস ইবনে মুগীরাহ আল মাখযূমী ( রাঃ ) হযরত ফাতিমা ( রাঃ ) বলেনঃ “ আমার স্বামী সেনাবাহিনীর সাথে ইয়ামন গিয়েছেন । সেখান হতে তিনি আমাকে তালাক পাঠিয়েছেন। আমি তখন আমার স্বামীর ওলীদের কাছে আমার ভরণ-পোষণ ও বাসস্থান প্রার্থনা করলে তারা বলেনঃ “ তোমার স্বামী আমাদের কাছে কিছুই পাঠায়নি এবং আমাদেরকে কোন অসিয়তও করেনি । আমি তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিকট গিয়ে তাঁকে বললাম ও আমার স্বামী আমর ইবনে হাফস ( রাঃ ) আমাকে তালাক পাঠিয়েছেন। আমি তখন তাঁর ওলীদের নিকট আমার বাসস্থান ও খাওয়া খরচ প্রার্থনা করলে তারা বলেন যে, তিনি তাঁদের কাছে কোন কিছু পাঠানওনি এবং তাঁদেরকে কোন অসিয়তও করেননি। তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ এমন স্ত্রীর জন্যে বাসস্থান ও খাওয়া খরচের দায়িত্ব স্বামীর উপর রয়েছে যাকে রাজআত করার অধিকার তার স্বামীর উপর রয়েছে । অতঃপর অন্য স্বামী গ্রহণ না করা পর্যন্ত যে স্ত্রী তার স্বামীর জন্যে হালাল নয় তার খাওয়া-পরা ও বাসস্থানের দায়িত্বও তার স্বামীর নেই।"

সূরা তালাক্ব আয়াত 1 সূরা

ياأيها النبي إذا طلقتم النساء فطلقوهن لعدتهن وأحصوا العدة واتقوا الله ربكم لا تخرجوهن من بيوتهن ولا يخرجن إلا أن يأتين بفاحشة مبينة وتلك حدود الله ومن يتعد حدود الله فقد ظلم نفسه لا تدري لعل الله يحدث بعد ذلك أمرا

سورة: الطلاق - آية: ( 1 )  - جزء: ( 28 )  -  صفحة: ( 558 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. অথবা আপনার জন্যে খেজুরের ও আঙ্গুরের একটি বাগান হবে, অতঃপর আপনি তার মধ্যে নির্ঝরিনীসমূহ প্রবাহিত
  2. পলায়ন করো না এবং ফিরে এস, যেখানে তোমরা বিলাসিতায় মত্ত ছিলে ও তোমাদের আবাসগৃহে; সম্ভবত;
  3. হে বনী-ইসরাঈল! আমি তোমাদেরকে তোমাদের শক্রুর কবল থেকে উদ্ধার করেছি, তুর পাহাড়ের দক্ষিণ পার্শ্বে তোমাদেরকে
  4. পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার
  5. মানুষ যা চায়, তাই কি পায়?
  6. যাতে আল্লাহ তা’আলা জেনে নেন যে, রসূলগণ তাঁদের পালনকর্তার পয়গাম পৌছিয়েছেন কি না। রসূলগণের কাছে
  7. আপনার পূর্বে আমি যেসব রসূল প্রেরণ করেছি, তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, দয়াময় আল্লাহ ব্যতীত আমি কি
  8. গোনাহগারদের জন্যে এছাড়া আরও শাস্তি রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না।
  9. তোমরা কি লক্ষ্য কর না যে, আল্লাহ কিভাবে সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন।
  10. তারাই হল সত্যিকার ঈমানদার! তাদের জন্য রয়েছে স্বীয় পরওয়ারদেগারের নিকট মর্যাদা, ক্ষমা এবং সম্মানজনক রুযী।

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা তালাক্ব ডাউনলোড করুন:

সূরা Talaq mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Talaq শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত তালাক্ব  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত তালাক্ব  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত তালাক্ব  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত তালাক্ব  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত তালাক্ব  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত তালাক্ব  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত তালাক্ব  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত তালাক্ব  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত তালাক্ব  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত তালাক্ব  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত তালাক্ব  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত তালাক্ব  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত তালাক্ব  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত তালাক্ব  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত তালাক্ব  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত তালাক্ব  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত তালাক্ব  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত তালাক্ব  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত তালাক্ব  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত তালাক্ব  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত তালাক্ব  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত তালাক্ব  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত তালাক্ব  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত তালাক্ব  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত তালাক্ব  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Sunday, November 3, 2024

Please remember us in your sincere prayers