কোরান সূরা আনফাল আয়াত 1 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Anfal ayat 1 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা আনফাল আয়াত 1 আরবি পাঠে(Anfal).
  
   

﴿يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْأَنفَالِ ۖ قُلِ الْأَنفَالُ لِلَّهِ وَالرَّسُولِ ۖ فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَصْلِحُوا ذَاتَ بَيْنِكُمْ ۖ وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ﴾
[ الأنفال: 1]

আপনার কাছে জিজ্ঞেস করে, গনীমতের হুকুম। বলে দিন, গণীমতের মাল হল আল্লাহর এবং রসূলের। অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং নিজেদের অবস্থা সংশোধন করে নাও। আর আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের হুকুম মান্য কর, যদি ঈমানদার হয়ে থাক। [সূরা আনফাল: 1]

Surah Al-Anfal in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Anfal ayat 1


তারা তোমাকে যুদ্ধে-লব্ধ ধনসম্পদ সন্বন্ধে জিজ্ঞাসা করছে। বলো -- ''যুদ্ধে-লব্ধ ধনসম্পত্তি আল্লাহ্ ও রসূলের জন্য। সুতরাং আল্লাহ্‌কে তোমরা ভয়ভক্তি করো, আর তোমাদের নিজেদের মধ্যে সাব স্থাপন করো, আর আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলকে মেনে চলো যদি তোমরা মুমিন হও।’’


Tafsir Mokhtasar Bangla


১. হে রাসূল! আপনার সাথীরা আপনাকে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে সেটির বন্টন কী ধরনের হবে? এবং কারা কারা সে সম্পদের অধিকারী হবে? হে রাসূল! আপনি তাদের প্রশ্নের উত্তরে বলুন: যুদ্ধলব্ধ সম্পদগুলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্য। এর বন্টন ও ব্যবহারের ক্ষমতা কেবল আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্যই। তোমাদের কাজ হবে শুধু তা মেনে নেয়া ও তার সামনে মাথা নত করা। হে মু’মিনরা! তোমরা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে তাঁকেই ভয় করো। আর তোমাদের নিজেদের পারস্পরিক সম্পর্ককে বিনষ্ট না করে ভালোবাসা, পারস্পরিক যোগাযোগ, সচ্চরিত্র ও ক্ষমার মাধ্যমে দৃঢ় ও মজবুত করার চেষ্টা করো। তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যকে আঁকড়ে ধরো যদি তোমরা সত্যিকারার্থে মু’মিন হয়ে থাকো। কারণ, ঈমান বস্তুতঃ আনুগত্যে উৎসাহিত ও গুনাহ থেকে দূরে রাখে। উপরোক্ত প্রশ্নটি মূলতঃ বদরের যুদ্ধের পরপরই করা হয়েছিলো।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


লোকে তোমাকে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ সম্বন্ধে প্রশ্ন করে।[১] বল, ‘যুদ্ধলব্ধ সম্পদ আল্লাহ এবং রসূলের।’[২] সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং নিজেদের মধ্যে সদ্ভাব স্থাপন কর; যদি তোমরা বিশ্বাসী হও, তাহলে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য কর। [৩] [১] أنفال نفل শব্দের বহুবচন। যার অর্থ অতিরিক্ত। নফল ঐ সম্পদকে বলা হয় যা কাফেরদের সাথে যুদ্ধকালীন সময়ে মুসলিমদের হস্তগত হয়। যাকে গনীমতের মালও বলা হয়। আর একে নফল এই জন্য বলা হয় যে, এই মাল ঐ সকল বস্তুর মধ্যে গণ্য যা পূর্বের জাতির জন্য হারাম ছিল, এভাবে উম্মতে মুহাম্মাদীর জন্য এটি একটি অতিরিক্ত হালাল। অথবা এই মালকে নফল এই জন্য বলা হয় যে, জিহাদের যে প্রতিদান তা পরকালে দেওয়া হবে। তার উপর এই মাল একটি অতিরিক্ত জিনিস, যা কখনো কখনো পৃথিবীতেই পাওয়া যায়। [২] অর্থাৎ, এ ব্যাপারে ফায়সালা করার অধিকারী তাঁরা। আল্লাহর রসূল আল্লাহর আদেশে তা বণ্টন করবে; তোমরা যেভাবে চাও, সেভাবে নয়। [৩] এর অর্থ এই যে, উপরি উক্ত তিনটি বিষয়ে আমল না করা পর্যন্ত ঈমান পূর্ণাঙ্গ নয়। এখান থেকে তাকওয়া, পরস্পর সদ্ভাব রাখা এবং রসূল ( সাঃ )-এর আনুগত্য করার গুরুত্ব স্পষ্ট হয়। বিশেষ করে গনীমতের মাল বণ্টনের সময় এই তিনটি বিষয়ের উপর আমল অত্যন্ত জরুরী। মাল বণ্টনের সময় আপোসে বিশৃংখলা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান। এ জন্য এখানে পরস্পর সদ্ভাব বজায় রাখার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। মাল বণ্টনে নয়-ছয় ও খিয়ানতেরও আশংকা থাকে। সেই কারণে তাকওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। এসব সত্ত্বেও যদি কোন দুর্বলতা থেকে যায়, তাহলে তা দূর করার একমাত্র উপায় আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


লোকেরা আপনাকে জিজ্ঞাসা করে [] আনফাল [] ( যুদ্ধ লব্ধ সম্পদ ) সম্বদ্ধে;বলুন, ‘ যুদ্ধলব্ধ সম্পদ আল্লাহ্‌ এবং রাসূলের []; সুতরাং তোমারা আল্লাহ্‌র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং নিজেদের মধ্যে সদ্ভাব স্থাপন কর আর আল্লাহ্‌ই তাঁর রাসূলের অনুগত্য কর, যদি তোমারা মুমিন হও।’ সূরা সংক্রান্ত আলোচনাঃ আয়াত সংখ্যাঃ ৭৫। নাযিল হওয়ার স্থানঃ এ সূরা সর্বসম্মতভাবে মাদানী সূরা। নামকরণঃ এ সূরার নাম সূরা আল-আনফাল; কারণ সূরার প্রথম আয়াতেই এ শব্দটির উল্লেখ আছে, যার অর্থ যুদ্ধলব্ধ সম্পদ। এর অধিকাংশ বর্ণনা এ সংক্রান্ত। কেউ কেউ এটাকে সূরা ‘বদর’ও নাম দিয়েছেন। [ বুখারীঃ ৪৮৮২ ] কারণ, অধিকাংশ আলোচনা ছিল বদর যুদ্ধের। আবার কেউ কেউ এ সূরাকে সূরা ‘জিহাদ' নামেও অভিহিত করেছেন। নাযিল হওয়ার সময়কালঃ আল-আনফাল সম্পর্কে ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেনঃ বদরের যুদ্ধ সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। [ বুখারীঃ ৪৬৪৫, মুসলিমঃ ৩০৩১ ]। সে হিসেবে এই সূরা ২য় হিজরী সনে বদর যুদ্ধের পরেই নাযিল হয়েছে। ----------------------- [] এ আয়াতটি বদর যুদ্ধে সংঘটিত একটি ঘটনার সাথে সম্পর্কিত। আয়াতের বিস্তারিত তাফসীরের পূর্বে সে ঘটনাটি জানা থাকলে এর তাফসীর বুঝতে সহজ হবে। ঘটনাটি হল এই যে, কুফর ও ইসলামের প্রথম সংঘর্ষ বদর যুদ্ধে যখন মুসলিমদের বিজয় সূচিত হয়ে গেল এবং কিছু গনীমতের মাল-সামান হাতে এল, তখন সেগুলোর বিলি-বন্টন নিয়ে সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে মতভেদ হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে এ আয়াতটি নাযিল হয়। [ মুসনাদে আহমাদঃ ৫/৩২২ ] বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী উবাদা রাদিয়াল্লাহু আনহুর নিকট কোন এক ব্যক্তি আয়াতে উল্লেখিত ‘আনফাল' শব্দের মর্ম জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ “ এ আয়াতটি তো আমাদের অর্থাৎ বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের সম্পর্কেই নাযিল হয়েছে সে ঘটনাটি ছিল এই যে, গনীমতের মালামাল বিলিবন্টনের ব্যাপারে আমাদের মাঝে সামান্য মতবিরোধ হয়ে গিয়েছিল, যাতে আমাদের পবিত্র চরিত্রে একটি অশুভ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। আল্লাহ এ আয়াতের মাধ্যমে গনীমতের সমস্ত মালামাল আমাদের হাত থেকে নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে অর্পণ করেন। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদরে অংশগ্রহণকারী সবার মধ্যে তা সমভাবে বন্টন করে দেন। অন্য এক হাদীসে উবাদা ইবন সামেত রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ বদরের যুদ্ধে আমরা সবাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বেরিয়ে যাই এবং উভয় দলের মধ্যে তুমুল যুদ্ধের পর আল্লাহ্ তা'আলা যখন শক্রদের পরাজিত করেন, তখন আমাদের সেনাবাহিনী তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। কিছু লোক শক্ৰদের পশ্চাদ্ধাবন করেন, যাতে তারা পুনরায় ফিরে আসতে না পারে। কিছু লোক কাফেরদের পরিত্যক্ত গনীমতের মালামাল সংগ্রহে মনোনিবেশ করেন। আর কিছু লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পাশে এসে সমবেত হন, যাতে গোপনে লুকিয়ে থাকা কোন শক্র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর আক্রমণ করতে না পারে। যুদ্ধ শেষে সবাই যখন নিজেদের অবস্থানে এসে উপস্থিত হন, তখন যারা গনীমতের মালামাল সংগ্রহ করেছিলেন, তারা বলতে লাগলেন যে, এ সমস্ত মালামাল যেহেতু আমরা সংগ্রহ করেছি, কাজেই এতে আমাদের ছাড়া অপর কারো ভাগ নেই। আর যারা শক্রর পশ্চাদ্ধাবন করতে গিয়েছিলেন, তারা বললেন, এতে তোমরা আমাদের চাইতে বেশী অধিকারী নও। কারণ, আমরাই তো শক্রকে হটিয়ে দিয়ে তোমাদের জন্য সুযোগ করে দিয়েছি যাতে তোমরা নিশ্চিন্তে গনীমতের মালামালগুলো সংগ্রহ করে আনতে পার। পক্ষান্তরে যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হেফাযতকল্পে তার পাশে সমবেত ছিলেন, তারা বললেন, আমরাও ইচ্ছা করলে গনীমতের এই মাল সংগ্রহে তোমাদের সাথে অংশগ্রহণ করতে পারতাম, কিন্তু আমরা জিহাদের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ কাজ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হেফাযতে নিয়োজিত ছিলাম। অতএব আমরাও এর অধিকারী সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম-দের এসব কথাবার্তা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌঁছার পর এ আয়াতটি নাযিল হয়। এতে পরিস্কার হয়ে যায় যে, এসব মালামাল আল্লাহ তা'আলার; একমাত্র আল্লাহ ব্যতিত এর অন্য কোন মালিক বা অধিকারী নেই; শুধু তাকে ছাড়া, যাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দান করেন। সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ রাববুল আলামীন-এর নির্দেশ অনুযায়ী এসব মালামাল জিহাদে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সমানভাবে বন্টন করে দেন। [ মুসনাদে আহমাদঃ ৫/৩২৪ ] অতঃপর সবাই আল্লাহ ও তার রাসূলের এই সিদ্ধান্ত সস্তুষ্টচিত্তে মেনে নেন। [] ( انفالٌ ) শব্দটি ( نَفْلٌ ) এর বহুবচন। এর অর্থ অনুগ্রহ, দান ও উপটৌকন। নফল সালাত, রোযা, সদকা প্রভৃতিকে এ কারণেই নফল বলা হয় যে, এগুলো কারো উপর অপরিহার্য কর্তব্য ও ওয়াজিব নয়। যারা তা করে, নিজের খুশীতেই করে থাকে। কুরআন ও সুন্নাহর পরিভাষায় নফল ও আনফাল গনীমত বা যুদ্ধলব্ধ মালামালকে বোঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়, যা যুদ্ধকালে কাফেরদের থেকে লাভ করা হয়। তবে কুরআনুল কারীমে যুদ্ধ লব্ধ সম্পদ সম্পর্কে তিনটি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে-[] আনফাল [] গনীমত এবং [] ফায়। ( انفالٌ ) শব্দটি তো এ আয়াতেই রয়েছে। আর ( غنيمة ) ( গনীমত ) শব্দ এবং তার বিশ্লেষণ এ সূরার একচল্লিশতম আয়াতে আসবে। আর ( فيئ ) এবং তার ব্যাখ্যা সূরা হাশরের আয়াত ( وَمَااَفَاءَاللهُ ) প্রসঙ্গে করা হয়েছে। এ তিনটি শব্দের অর্থ যৎসামান্য পার্থক্যসহ বিভিন্ন রকম। সামান্য ও সাধারণ পার্থক্যের কারণে অনেক সময় একটি শব্দকে অন্যটির জায়গায় শুধু ‘গনীমতের মাল’ অর্থেও ব্যবহার করা হয়( انفالٌ ) বা গনীমত সাধারণতঃ সে মালকে বলা হয়, যা যুদ্ধ-জিহাদের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে হাসিল করা হয়। [ কুরতুবী; আত-তাহরীর ওয়াত তানওয়ীর ] আর ( فيئ ) বা ফায় বলা হয় সে মালকে যা কোন রকম যুদ্ধ-বিগ্রহ ছাড়াই কাফেরদের কাছ থেকে পাওয়া যায়। তা সেগুলো ফেলে কাফেররা পালিয়েই যাক, অথবা স্বেচ্ছায় দিয়ে দিতে রাজী হোক। [ আত-তাহরীর ওয়াত তানওয়ীর ] আর ( نفل ) বা ( انفال ) ( নফল বা আনফাল ) পুরস্কার অর্থেও ব্যবহৃত হয়, যা জিহাদের অধিনায়ক কোন বিশেষ মুজাহিদকে তার কৃতিত্বের বিনিময় হিসেবে গনীমতের প্রাপ্য অংশের অতিরিক্ত পুরস্কার হিসেবে দিয়ে থাকেন। কাশশাফ; আত তাহরীর ওয়াত তানওয়ীর আব্দুল্লাহ ইবন আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকেও এ অর্থ বর্ণিত হয়েছে। আবার কখনো 'নফল’ ও ‘আনফাল’ শব্দ দ্বারা সাধারণ গনীমতের মালকেও বোঝানো হয়। এ আয়াতের ক্ষেত্রেও অধিকাংশ মুফাসসির এই সাধারণ অর্থই গ্রহণ করেছেন। সহীহ বুখারী শরীফে আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে এ অর্থই উদ্ধৃত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এ শব্দটি সাধারণ-অসাধারণ উভয় অর্থেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এতে কোন মতবিরোধ নেই। বস্তুতঃ এর সর্বোত্তম ব্যাখ্যা ও পর্যালোচনা হলো সেটাই; যা ইমাম আবু ওবাইদ রাহিমাহুল্লাহ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, মূল অভিধান অনুযায়ী নফল বলা হয় দান ও পুরস্কারকে। আর এই উম্মতের প্রতি এটা এক বিশেষ দান যে, জিহাদ ও লড়াইয়ের মাধ্যমে যেসব মাল-সামান হয়েছে। বিগত উম্মতের মধ্যে এই প্রচলন ছিল না। [ কিতাবুল আমওয়াল:৪২৬; ইবন কাসীর ] [] উল্লেখিত আয়াতে আনফালের বিধান বর্ণনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে যে, এগুলো আল্লাহর এবং রাসূলের তার অর্থ এই যে, এগুলোর প্রকৃত মালিকানা আল্লাহরাববুল আলামীনএর এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হচ্ছেন সেগুলোর ব্যবস্থাপক। তিনি আল্লাহ তা'আলার নির্দেশ মোতাবেক স্বীয় কল্যাণ বিবেচনায় সেগুলো বিলিবন্টন করবেন। সেজন্যই আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস, ইকরিম রাদিয়াল্লাহু আনহুম এবং মুজাহিদ ও সুদী রাহিমাহুমাল্লাহ প্রমূখ তাফসীরবিদগণের মতে এই হুকুমটি ছিল ইসলামের প্রাথমিক আমলের, যখন গনীমতের মাল-সামান বিলি-বন্টনের ব্যাপারে কোন আইন নাযিল হয়নি। [ ইবন কাসীর ] এ আয়াতে গনীমতের যাবতীয় মালামালের বিষয়টি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কল্যাণ বিবেচনার উপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তিনি যেভাবে ইচ্ছা তার ব্যবস্থা করতে পারেন। কিন্তু পরবর্তীতে যে বিস্তারিত বিধি-বিধান এসেছে, তাতে বলা হয়েছে যে, গনীমতের সম্পূর্ণ মালামালকে পাঁচ ভাগ করে তার এক ভাগ বায়তুলমালে সাধারণ মুসলিমদের প্রয়োজন পূরণের লক্ষ্যে সংরক্ষণ করতে হবে এবং বাকী চার ভাগ বিশেষ নিয়ম-নীতির ভিত্তিতে জিহাদে অংশগ্রহণকারী মুজাহিদদের মধ্যে বন্টন করে দেয়া হবে। এ সম্পর্কিত বিস্তারিত বিবরণ হাদীসে উল্লেখ রয়েছে। সে সমস্ত বিস্তারিত ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ সূরা আল-আনফালের আলোচ্য প্রথম আয়াতটিকে রহিত করে দিয়েছে। আবার কোন কোন মনীষী বলেছেন যে, এখানে কোন ‘নাসেখ-মনসূখ’ অর্থাৎ রহিত কিংবা রহিতকারী নেই, বরং সংক্ষেপন ও বিশ্লেষণের পার্থক্য মাত্র। [ বাগভী ] সূরা আল-আনফালের প্রথম আয়াতে যা সংক্ষেপে বলা হয়েছে, একত্রিশতম আয়াতে তারই বিশ্লেষণ করা হয়েছে। অবশ্য ‘ফায়'-এর মালামাল- যার বিধান সূরা হাশরে বিবৃত হয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অধিকারভুক্ত। তিনি নিজের ইচ্ছা ও বিবেচনা অনুযায়ী যেভাবে ইচ্ছা ব্যবহার করতে পারেন। সে কারণেই সেখানে তার বিধান বর্ণনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছেঃ “ আমার রাসূল যা কিছু তোমাদের দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা থেকে বারণ করেন, তা থেকে বিরত থাক” । এই বিশ্লেষণের দ্বারা প্রতীয়মান হচ্ছে যে, গনীমতের মাল হলো সে সমস্ত মালামালযা যুদ্ধ-জিহাদের মাধ্যমে হস্তগত হয়। আর ফায় হলো সে সমস্ত মালামাল- যা কোন রকম জিহাদ এবং লড়াই ছাড়াই হাতে আসে। আর ( انفال ) ( আনফাল ) শব্দটি উভয় মালামালের জন্য সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয় এবং সেই বিশেষ পুরস্কার বা উপটৌকনের অর্থেও ব্যবহৃত হয়, যা জিহাদের নেতা বা পরিচালক দান করেন। এ প্রসঙ্গে সার্থীদেরকে পুরস্কার দেয়ার চারটি রীতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে প্রচলিত ছিল। ( এক ) এ কথা ঘোষণা করে দেয়া যে, যে লোক কোন বিরোধী শক্রকে হত্যা করতে পারবে- যে সামগ্ৰী তার সাথে থাকবে সেগুলো তারই হয়ে যাবে, যে হত্যা করেছে। এসব সামগ্ৰী গনীমতের সাধারণ মালামালের সাথে জমা হবে না। ( দুই ) বড় কোন সৈন্যদল থেকে কোন দলকে পৃথক করে কোন বিশেষ দিকে জিহাদ করার জন্য পাঠিয়ে দেয়া এবং এমন নির্দেশ দেয়া যে, এদিক থেকে যেসব গনীমতের মালামাল সংগৃহীত হবে সেগুলো উল্লেখিত বিশেষ দলের সদস্যদের জন্য নির্দিষ্ট হয়ে যাবে। তবে এতে শুধু এটুকু করতে হবে যে, সমস্ত মালামাল থেকে এক-পঞ্চমাংশ সাধারন মুসলিমদের প্রয়োজনে বায়তুল মালে জমা করতে হবে। ( তিন ) বায়তুল মালে গনীমতের যে এক-পঞ্চমাংশ জমা করা হয়, তা থেকে কোন বিশেষ গাযী ( জয়ী )-কে তার কোন বিশেষ কৃতিত্বের প্রতিদান হিসেবে আমীরের কল্যাণ বিবেচনা অনুযায়ী কিছু দান করা। ( চার ) সমগ্র গনীমতের মালামালের মধ্য থেকে কিছু অংশ পৃথক করে যারা মুজাহিদ বা সৈনিকদের ঘোড়া প্রভৃতি দেখাশোনা এবং তাদের বিভিন্ন কাজে সাহায্য করে তাদেরকে বিনিময় হিসাবে দান করা। [ ইবন কাসীর ] তাহলে আয়াতের মোটামুটি বিষয়বস্তু দাঁড়ালো এই যে, এতে আল্লাহ্ তাআলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন যে, আপনার নিকট লোকেরা আনফাল’ সম্পর্কে প্রশ্ন করে- আপনি তাদেরকে বলে দিন যে, আনফাল সবই হল আল্লাহ এবং তার রাসূলের। অর্থাৎ নিজস্বভাবে কেউ এসবের অধিকারী কিংবা মালিক নয়। আল্লাহর নির্দেশক্রমে তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগুলোর ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নেবেন, তাই কার্যকর হবে।

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, ‘আনফাল গনীমত বা যুদ্ধলব্ধ সম্পদকে বলা হয়। তিনি আরও বলেন যে, সূরায়ে আনফাল বদর যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। তিনি বলেনঃ “ আনফাল হচ্ছে ঐ গনীমতের মাল যাতে একমাত্র নবী ( সঃ ) ছাড়া আর কারও অধিকার নেই । তিনি বলেন যে, হযরত উমার ইবনে খাত্তাব ( রাঃ )-কে যখন কোন কথা জিজ্ঞেস করা হতো তখন তিনি বলতেনঃ “ আমি অনুমতিও দিচ্ছি না এবং নিষেধও করছি না ।” অতঃপর হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেনঃ আল্লাহর শপথ! আল্লাহ তাআলা নবী ( সঃ )-কে নিষেধকারী, আদেশকারী এবং হারাম ও হালালের ব্যাখ্যাদানকারী রূপে প্রেরণ করেছেন ।” কাসিম ( রঃ ) বলেন যে, হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ )-এর কাছে একটি লোক এসে তাঁকে আনফাল’ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। তখন তিনি উত্তরে বলেনঃ “ আনফাল এই যে, একটি লোক যুদ্ধে অপর একটি লোককে হত্যা করে তার ঘোড়া ও অস্ত্রশস্ত্র গনীমতের মাল হিসেবে নিয়ে নিলো । লোকটি পুনরায় জিজ্ঞেস করলো। তিনি ঐ উত্তরই দিলেন। সে আবার জিজ্ঞেস করলে তিনি রেগে ওঠেন এবং তাকে আক্রমণ করতে উদ্যত হন। অতঃপর তিনি বলেনঃ “ এ লোকটির দৃষ্টান্ত তো ঐ ব্যক্তির মত যাকে হযরত উমার ইবনে খাত্তাব ( রাঃ ) প্রহার করেছিলেন, এমন কি তার দেহের রক্ত তার পায়ের গোড়ালি দিয়ে বইতে শুরু করেছিল ।” তখন লোকটি তাঁকে বলে, “ আপনি কি ঐ ব্যক্তি নন যে, আল্লাহ উমার ( রাঃ )-এর প্রতিশোধ আপনার দ্বারা গ্রহণ করেছেন?” এই ইসনাদটি বিশুদ্ধ । ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) নফলের তাফসীর ঐ গনীমতের মাল দ্বারা করেছেন যা যুদ্ধে ছিনিয়ে নেয়া হয়। আর ইমাম কোন কোন লোককে মূল গনীমত বন্টনের পরে আরও কিছু বেশী প্রদান করেন। অধিকাংশ ফকীহও ‘আনফাল’ -এর ভাবার্থ এটাই গ্রহণ করেছেন। জনগণ নবী ( সঃ )-কে ঐ পঞ্চমাংশ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে যা চার অংশ বের করার পরে অবশিষ্ট থেকে যায়। তখন ( আরবী )-এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) এবং মাসরূক ( রঃ ) বলেন যে, ( আরবী ) শব্দের প্রয়োগ যুদ্ধ দিবসে। ছিনিয়ে নেয়া সম্পদের উপর নয়, বরং যুদ্ধের ব্যুহ রচনা করার পূর্বে হয়ে থাকে। কেননা, ওটাও তো এক প্রকারের বাড়াবাড়ি। ইবনে মুবারক ( রঃ ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে- হে নবী ( সঃ ) ! তোমাকে মানুষ ঐ ক্রীতদাসী, ক্রীতদাস, সওয়ারী, আসবাবপত্র ইত্যাদি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে যেগুলো বিনা যুদ্ধে মুসলমানরা মুশরিকদের নিকট থেকে লাভ করেছে। সুতরাং এর উত্তর এই যে, এ সবকিছুর অধিকারী হচ্ছেন নবী ( সঃ ) ! তিনি নিজের ইচ্ছামত ওগুলো বিলি বন্টন করতে পারেন। এর দ্বারা এই ফল বের হলো যে, তিনি মালে ফাই’কে ( আরবী ) মনে করতেন। আর মালে ফাই’ ঐ মালকে বলা হয় যা বিনা যুদ্ধে কাফিরদের নিকট থেকে লাভ করা যায়। আর অন্যদের মত এই যে, সারিয়ার মাধ্যমে যে মাল মুসলমানদের হস্তগত হয় সেটাই আনফাল। অর্থাৎ মুসলমানগণ কাফিরদের সাথে যুদ্ধ করার জন্যে গিয়েছেন এবং কাফিরগণ যুদ্ধ না করেই নিজেদের সম্পদ ও আসবাবপত্র ছেড়ে পালিয়ে গেল। আর সেই সম্পদ মুসলমানদের হাতে আসলো এবং নবী ( সঃ ) ঐ সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। আবার এ কথাও বলা হয়েছে যে, এর অর্থ হচ্ছে- মুসলিম সেনাবাহিনীর কোন অংশবিশেষকে সেই সময়ের ইমাম তাদের কর্মনৈপুণ্য ও উচ্চমনার প্রতিদান হিসেবে সাধারণ বন্টনের পরেও কিছু বেশী প্রদান করে থাকেন।সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস ( রাঃ ) বলেনঃ বদরের যুদ্ধে আমার ভাই উমাইর নিহত হয়। তখন আমিও সাঈদ ইবনুল আসকে হত্যা করে ফেলি এবং তার যুলকুইফা নামক তরবারী খানা নিয়ে নিই। ওটা আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর কাছে নিয়ে আসলে তিনি আমাকে বলেনঃ “ ওটা অধিকৃত মালের স্তুপের মধ্যে রেখে দাও ।” আমি তখন ওটা তাতে রেখে দেয়ার জন্যে যাচ্ছিলাম। ঐ সময় আমার মনের অবস্থা কিরূপ ছিল তা একমাত্র আল্লাহই জানেন। এক তো ভাই-এর হত্যা, দ্বিতীয়তঃ আমি যা কিছু ছিনিয়ে নিয়েছিলাম সেটাও আমাকে জমা দিতে হচ্ছে! কিন্তু আমি অল্প দূর গিয়েছি এমন সময় সূরায়ে আনফালের এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাকে ডেকে নিয়ে বলেনঃ “ যাও, তুমি তোমার ছিনিয়ে নেয়া মাল নিয়ে নাও ।” সা’দ ইবনে মালিক হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত সা'দ ( রাঃ ) বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আল্লাহ আজ আমাকে মুশরিকদের নিকট পরাজিত হওয়ার গ্লানি থেকে রক্ষা করেছেন। সুতরাং এখন এ তরবারী খানা আমাকে দান করুন। তখন তিনি বললেনঃ “ এ তরবারী তোমারও নয় আমারও নয় । কাজেই ওটা রেখে দাও।” আমি তখন ওটা রেখে দিয়ে ফিরে আসলাম। আর আমি মনে মনে বললাম, আমি যদি এটা না পাই তবে কেউ অবশ্যই পেয়ে যাবে যে আমার মত এর হকদার নয় এবং আমার ন্যায় বিপদ আপদও সহ্য করেনি। এমন সময় কেউ একজন আমাকে পিছন থেকে ডাক দিলেন। আমি নবী ( সঃ )-এর কাছে গেলাম এবং আরয করলামঃ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! কোন অহী অবতীর্ণ হয়েছে কি? তিনি উত্তরে বললেনঃ “ তুমি আমার কাছে তরবারী চেয়েছিলে । কিন্তু ওটা আমার ছিল না যে, তোমাকে দিতাম। এখন আল্লাহ পাক ( আরবী )-এই আয়াত অবতীর্ণ করেছেন। এ আয়াতের মাধ্যমে তিনি আমাকে ওটা প্রদান করেছেন। আমি এখন ওটা তোমাকে দিয়ে দিলাম”।”সা'দ ( রাঃ ) বলেনঃ আমার ব্যাপারে চারটি আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। ( ১ ) বদরের যুদ্ধে একটি তরবারীর উপর আমি অধিকার লাভ করেছিলাম। আমি নবী। ( সঃ )-এর কাছে এসে বললাম, এ তরবারীটি আমাকে দান করুন। তিনি বললেনঃ “ যেখান থেকে ওটা গ্রহণ করেছে । ওখানেই রেখে দাও।” তিনি দু'বার এ কথা বললেন। পুনরায় আমি আবেদন জানালে তিনি ঐ কথাই বলেন। সেই সময় সূরায়ে আনফালের এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। ( ২ ) আমার ব্যাপারে দ্বিতীয় যে আয়াতটি অবতীর্ণ হয় তা হচ্ছে- ( আরবী ) ( ৪৬:১৫ ) -এই আয়াতটি। ( ৩ ) তৃতীয় হচ্ছে -( আরবী ) ( ৫:৯০ ) -এই আয়াতটি এবং ( ৪ ) চতুর্থ হচ্ছে অসিয়তের আয়াত।”মালিক ইবনে রাবীআ ( রাঃ ) বলেনঃ “ বদরের যুদ্ধে ইবনে আ’ইযের বরযুবান’ নামক তরবারীটি আমার হস্তগত হয় । রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) যখন নির্দেশ দেন যে, প্রত্যেকে যেন নিজ লুটের মাল জমা দিয়ে দেয়, তখন আমিও এই তরবারীটি জমা দিয়ে দেই। আল্লাহর রাসূল ( সঃ )-এর অভ্যাস ছিল এই যে, কেউ তাঁর কাছে কোন কিছু চাইলে তাকে তিনি বঞ্চিত করতেন না। আরকাম ( রাঃ ) এই তরবারীটি দেখে রাসূলুল্লাহ( সঃ )-এর কাছে তা চেয়ে বসেন। ফলে তিনি তাঁকে তা দিয়ে দেন।” আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার দ্বিতীয় কারণঃ আবূ উমামা ( রাঃ ) বলেনঃ আনফাল সম্পর্কে আমি আবূ উবাদা ( রাঃ )-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “ আমাদের সাথে বদরের মুজাহিদগণও ছিলেন । আর আনফালের আয়াত ঐ সময় অবতীর্ণ হয় যখন আনফালের জন্যে আমাদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হয় এবং আমরা পরস্পর উচ্চবাচ্য করতে শুরু করি। তখন আল্লাহ তাআলা এ ব্যাপারটা আমাদের হাত থেকে নিয়ে নেন এবং নবী ( সঃ )-কে প্রদান করেন। এখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এই গনীমতের মাল মুসলমানদের মধ্যে সমানভাবে বন্টন করে দেন।” উবাদা ইবনে সাবিত ( রাঃ ) বলেনঃ “ আমি বদরের যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর সাথে শরীক হয়েছিলাম । আল্লাহ শত্রুদেরকে পরাজিত করলেন। এখন একটি দল শক্রদের পশ্চাদ্ধাবন করলো এবং পলাতকদের হত্যা করলো। আর একদল সৈন্যের উপর ঝাপিয়ে পড়লো এবং তাদেরকে পরিবেষ্টন করলো। আর একটি দল নবী ( সঃ )-কে ঘিরে রেখে তার হিফাযত করতে থাকলো যেন শত্রুরা তার কোন ক্ষতি করতে না পারে। যখন রাত্রি হলো এবং তিনি গনীমতের মাল বন্টন করতে শুরু করলেন তখন যারা গনীমতের মাল একত্রিত করে রক্ষিত রেখেছিল তারা বলতে লাগলোঃ “ এর হকদার একমাত্র আমরাই ।” যারা শত্রুর পশ্চাদ্ধাবন করেছিল তারা বললোঃ “ শত্রুকে পরাজিত করার কারণ আমরাই । কাজেই এর হকদার শুধু আমরাই।” আর যারা রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর রক্ষণাবেক্ষণ করছিল তারা। বললোঃ “ আমাদের এই আশংকা ছিল যে, না জানি রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) কোন বিপদে পতিত হন । সুতরাং আমরা একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়োজিত ছিলাম।”তখন ( আরবী ) -এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। এর পর রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) গনীমতের মাল মুসলমানদের মধ্যে বন্টন করে দেন। রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর অভ্যাস ছিল এই যে, তিনি শক্রদের মধ্যে অবস্থানকালেই গনীমতের এক চতুর্থাংশ বন্টন করে দিতেন এবং যুদ্ধক্ষেত্র হতে ফিরে আসার পর এক তৃতীয়াংশ বন্টন করতেন। আর ওটা নিজের জন্যে গ্রহণ করা তিনি সমীচীন মনে করতেন না। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বদরের যুদ্ধের দিন বলেছিলেনঃ “ যে ব্যক্তি এমন এমন কাজ করবে তার জন্যে তাকে এরূপ এরূপ পুরস্কার দেয়া হবে ।” এ কথা শুনে যুবকদের দল বীরত্ব প্রমাণ করার জন্যে উঠে পড়ে লাগলেন। আর বৃদ্ধের দল মরিচা রক্ষা ও পতাকা ধারণ করে থাকলেন। অতঃপর যখন গনীমতের মাল আসলো তখন যার জন্যে যা ওয়াদা করা হয়েছিল তা নেয়ার জন্যে তিনি হাযির হন। বুদ্ধগণ বললেনঃ “ আমাদের উপর তোমাদের প্রাধান্য হতে পারে না । আমরা তোমাদের পিছনে আশ্রয়স্থল হিসেবে ছিলাম। যদি তোমাদের পরাজয় ঘটতো তবে তোমরা আমাদের কাছেই আশ্রয় লাভ করতে।” এভাবে তাদের। মধ্যে কথা কাটাকাটি হতে থাকলো। তখন সূরায়ে আনফালের এ আয়াত অবতীর্ণ হলো। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, বদর যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) ঘোষণা করেনঃ “ যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করেছে তাকে নিহত ব্যক্তির মাল থেকে এই এই পুরস্কার দেয়া হবে এবং যে ব্যক্তি কাউকে বন্দী করেছে তার জন্যে এই এই পুরস্কার রয়েছে । সুতরাং আবুল ইয়াসার দুজন বন্দীকে নিয়ে এসে বলেঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আপনি যা ওয়াদা করেছিলেন তা পূরণ করুন!” এ কথা শুনে হযরত সা'দ ইবনে উবাদা ( রাঃ ) বলে উঠলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! যদি আপনি এভাবে দিতে থাকেন তবে আপনার অন্যান্য সাহাবীদের জন্যে কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না । আমরা যে যুদ্ধক্ষেত্রে অটল থেকেছি তার কারণ এটা ছিল না যে, আমাদের মাল বা অন্য কিছু পাওয়ার লোভ ছিল এবং কারণ এটাও ছিল না যে, আমরা শত্রু দেখে হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছিলাম। আমরা তো এখানে শুধুমাত্র এ জন্যেই স্থির রয়েছিলাম যে, আপনার উপর যেন পিছন থেকে আক্রমণ না করা হয়। স্থায়ী হিফাযতেরও অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল।” মোটকথা, এ ধরনের কথা কাটাকাটি ও বচসা হয়ে গেল এবং এ আয়াত অবতীর্ণ হলো। ইরশাদ হচ্ছে- ( আরবী )অর্থাৎ “ জেনে রেখো যে, তোমরা যে গনীমতের মাল লাভ করছে তার এক পঞ্চমাংশ হচ্ছে আল্লাহর জন্যে ।( ৮:৪১ ) ইমাম আবু উবাইদিল্লাহ ( রঃ ) তাঁর ( আরবী ) নামক পুস্তকে লিখেছেন যে, গনীমতের মালকে আনফাল বলা হয় এবং ঐসব মালকে আনফাল বলা হয় যা মুসলমানরা অমুসলিম রাষ্ট্রের কাফিরদের নিকট থেকে লাভ করে থাকে। আনফালের উপর সর্বপ্রথম রাসূল ( সঃ )-এর হক রয়েছে যেমন আল্লাহ তা'আলা কুরআন পাকে বলে দিয়েছেন। বদরের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) গনীমতের মাল আল্লাহ তা'আলার হিদায়াত অনুযায়ী এক পঞ্চমাংশ বের না করেই বন্টন করেছিলেন। যেমন আমরা সা’দ ( রাঃ )-এর হাদীসে উল্লেখ করেছি। এরপর এক পঞ্চমাংশ বের করে দেয়ার আয়াত অতীর্ণ হয়। তখন পূর্ব আয়াত মানসূখ বা রহিত হয়ে যায়। কিন্তু যায়েদের বর্ণনা রয়েছে যে, পূর্ব আয়াত মানসূখ হয়নি, বরং ওটাও ঠিকই রয়েছে। আবু উবাইদাহ বলেন যে, এ ব্যাপারে আরও হাদীস রয়েছে। জমাকৃত আনফাল গনীমতের মালকে বলা হয়। কিন্তু এর এক পঞ্চমাংশ নবী ( সঃ )-এর পরিবারবর্গের জন্যে নির্দিষ্ট, যেমন কুরআন পাকে ও হাদীস শরীফে রয়েছে। আরবের পরিভাষায় আনফাল ঐ ইহসানকে বলা হয় যা শুধুমাত্র সৎ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে করা হয়ে থাকে, ইহসান তার উপর ওয়াজিব থাকে না। এটাই হচ্ছে ঐ গনীমতের মাল যা আল্লাহ তাআলা মুমিনদের জন্যে হালাল করেছেন এবং এটা ঐ জিনিস যা শুধুমাত্র মুসলমানদের জন্যেই নির্দিষ্ট। মুসলমানদের পূর্বে অন্য কোন উম্মতের জন্যে এটা হালাল ছিল না। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ আমাকে এক পঞ্চমাংশের অধিকারী বানিয়ে দেয়া হয়েছে এবং আমার পূর্বে আর কাউকেও এর অধিকারী করা হয়নি ।” আবু উবাইদাহ্ বলেন যে, যদি নেতা সেনাদলের কাউকে কোন পুরস্কার প্রদান করেন যা তার নির্দিষ্ট অংশ হতে অতিরিক্ত তবে ওটাকে নফল বা আনফাল বলা হয়। আর এটা তার কর্মনৈপুণ্য এবং শত্রুদের উপর প্রচণ্ড আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে দেয়া হয়ে থাকে। এই নফল, যা নেতার পক্ষ থেকে কারও কর্মকুশলতার কারণে দেয়া হয় তা চার পন্থায় হয়ে থাকে এবং প্রত্যেক পন্থা আপন স্থানে অন্য পন্থা হতে পৃথক। প্রথম হচ্ছে নিহত ব্যক্তির লুট করা মাল ও আসবাবপত্র। এটা হতে এক পঞ্চমাংশ বের করা হয় না। দ্বিতীয় হচ্ছে ঐ নফল যা পঞ্চমাংশ পৃথক করার পর দেয়া হয়ে থাকে। যেমন নেতা কোন ক্ষুদ্র সেনাবাহিনীকে শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করলেন! তারা গনীমতের মাল নিয়ে ফিরে আসলো। তখন নেতা ঐ সেনাদলকে এর থেকে চতুর্থাংশ বা তৃতীয়াংশ বন্টন করে দিলেন। তৃতীয় হচ্ছে এক পঞ্চমাংশ বের করার পর বাকীটা বন্টন করা হয়ে থাকে। এর মধ্য থেকে নেতা কাউকে তার কর্মতৎপরতা বিবেচনা করে যা দেয়া সমীচীন মনে করেন তা দিয়ে দেন। তারপর বাকীটা বন্টন করে দেন। চতুর্থ পন্থা এই যে, এক পঞ্চমাংশ বের করার। পূর্বেই সমস্ত গনীমত থেকে অতিরিক্ত প্রদান করা হয়ে থাকে। আর এটা হচ্ছে পানি বহনকারী, রাখাল, সহিস ও অন্যান্য মজুরদের হক। মোটকথা, এটা কয়েকভাবে বন্টন করা হয়।ইমাম শাফিঈ ( রঃ ) বলেন যে, গনীমতের মালের মধ্য থেকে এক পঞ্চমাংশ বের করার পূর্বে মুজাহিদগণকে নিহতদের যে আসবাবপত্র ও মালধন প্রদান করা হয় ওটা আনফালের অন্তর্ভুক্ত। দ্বিতীয় কারণ এই যে, পাঁচ অংশের মধ্য থেকে যে এক পঞ্চমাংশ রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর জন্যে নির্ধারিত থাকতো তা থেকে তিনি যাকে যতটুকু দেয়ার ইচ্ছা করতেন তা দিয়ে দিতেন সেটাও নফল। সুতরাং নেতার উচিত যে, তিনি যেন শত্রুদের সংখ্যাধিক্য ও মুসলমানদের সংখ্যার স্বল্পতা প্রভৃতি জরুরী বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে সুন্নাত পন্থার অনুসরণ করেন। যদি এ ধরনের যৌক্তিকতার আবির্ভাব না ঘটে তবে নফল বের করা জরুরী নয়।তৃতীয় কারণ এই যে, নেতা একটি দলকে কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে প্রেরণ করলেন এবং তাদেরকে নির্দেশ দিলেন যে, যে কেউ যা কিছু লাভ করবে তা থেকে যেন এক পঞ্চমাংশ পৃথক করে দিয়ে অবশিষ্ট গ্রহণ করে। আর এটা যুদ্ধে গমনের পূর্বেই পারস্পরিক সম্মতির মাধ্যমে মীমাংসিত হয়। কিন্তু তাঁদের এই বর্ণনায় যে বলা হয়েছে- ‘বদরের গনীমত হতে এক পঞ্চমাংশ বের করা হয়নি', এতে প্রতিবাদের অবকাশ রয়েছে হযরত আলী ( রাঃ ) বলেছিলেনঃ “ এ উট দুটি সেই উট যা আমরা বদরের দিন পাঁচ অংশের মধ্য থেকে লাভ করেছিলাম ।” আমি কিতাবুস সীরাহ্’ এর মধ্যে এটা পূর্ণভাবে বর্ণনা করেছি।( আরবী ) অর্থাৎ তোমরা এ ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর এবং পরস্পর মিলেমিশে বাস কর। একে অপরের উপর অত্যাচার করো না এবং পরস্পর শত্রু হয়ে যেয়ো না। আল্লাহ তা'আলা তোমাদেরকে যে হিদায়াত ও জ্ঞান দান করেছেন তা কি এই মাল হতে উত্তম নয় যার জন্যে তোমরা যুদ্ধ করছো? তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ( সঃ )-এর অনুগত হয়ে যাও। নবী ( সঃ ) যে ভাগ বন্টন করছেন তা তিনি আল্লাহর ইচ্ছা অনুসারেই করছেন। তাঁর ভাগ বন্টন ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত। সুদ্দী ( রঃ ) বলেন যে, ( আরবী )-এর অর্থ হচ্ছে- তোমরা পরস্পর ঝগড়া বিবাদ করো না এবং গালাগালিও করো না। আনাস ( রাঃ ) বলেনঃ একদা আমরা নবী ( সঃ )-কে দেখলাম যে, তিনি মুচকি হাসতে রয়েছেন। এ দেখে হযরত উমার ( রাঃ ) জিজ্ঞেস করলেন, “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আপনার হাসির কারণ কি?” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) উত্তরে বলেনঃ আমার উম্মতের দু’জন লোক আল্লাহর সামনে জানুর উপর ভর করে দাড়িয়ে গেছে । একজন আল্লাহকে বলছে- “ হে আমার প্রভু! এ লোকটি আমার উপর অত্যাচার করেছে । আমি এর প্রতিশোধ চাই।” আল্লাহ পাক তখন তাকে বলছেনঃ “ এ লোকটিকে অত্যাচারের বদলা দিয়ে দাও ।” অত্যাচারী উত্তরে বলছে, “ হে আমার প্রভু! এখন আমার কোন পুণ্য অবশিষ্ট নেই যে, আমি একে অত্যাচারের বিনিময়ে তা প্রদান করতে পারি ।” তখন ঐ অত্যাচারিত ব্যক্তি বলছে- “ হে আল্লাহ! আমার পাপের বোঝা তার উপর চাপিয়ে দিন ।” এ কথা বলতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) কেঁদে ফেললেন এবং তিনি কান্না বিজড়িত কণ্ঠে বললেনঃ ওটা বড়ই কঠিন দিন হবে। তাক এর প্রয়োজন বোধ করবে যে, সে তার পাপের বোঝা অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়। তখন আল্লাহ পাক প্রতিশোধ গ্রহণ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে সম্বোধন করে বলবেনঃ “ তুমি মাথা উঠিয়ে জান্নাতের প্রতি লক্ষ্য কর!” সে তখন মাথা উঠিয়ে জান্নাতের দিকে তাকাবে এবং আরয করবেঃ “হে আমার প্রভু! এখানে স্বর্ণ, রৌপ্য এবং মণি-মুক্তার তৈরী অট্টালিকা রয়েছে! হে আল্লাহ! এ অট্টালিকা কোন নবী, সিদ্দীক ও শহীদের কি?” আল্লাহ তা'আলা উত্তরে বলবেনঃ “যে কেউ এর মূল্য আদায় করবে তাকেই এটা দিয়ে দেয়া হবে ।” সে বলবেঃ “ হে আমার প্রভু! কে এর মূল্য আদায় করতে সক্ষম হবে?” আল্লাহ তা'আলা বলবেনঃ “এর মূল্য তুমিই আদায় করতে পার ।” তখন সে আরয করবেঃ “ হে আল্লাহ! কিভাবে আমি এর মূল্য আদায় করতে পারি?” মহা মহিমান্বিত আল্লাহ তখন বলবেনঃ “এটা এভাবে যে, তুমি তোমার ভাইকে ক্ষমা করে দেবে ।” সে বলবেঃ “ হে আমার প্রভু! ঠিক আছে, আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম ।” তখন। আল্লাহ পাক বলবেনঃ “ এখন তোমরা উভয়ে একে অপরের হাত ধরে জান্নাতে প্রবেশ কর!” এরপর রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বললেনঃ “তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং পরস্পরের মধ্যে সন্ধি ও মিল প্রতিষ্ঠিত কর । কেননা, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলাও মুমিনদের পরস্পরের মধ্যে সন্ধি করিয়ে দিবেন।”

সূরা আনফাল আয়াত 1 সূরা

يسألونك عن الأنفال قل الأنفال لله والرسول فاتقوا الله وأصلحوا ذات بينكم وأطيعوا الله ورسوله إن كنتم مؤمنين

سورة: الأنفال - آية: ( 1 )  - جزء: ( 9 )  -  صفحة: ( 177 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. তারা আরও বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা আমাদের নেতা ও বড়দের কথা মেনেছিলাম, অতঃপর তারা
  2. হে নবী, আপনার পত্নীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার বিলাসিতা কামনা কর, তবে
  3. আমি তোমাদের জন্যে তাতে জীবিকার উপকরন সৃষ্টি করছি এবং তাদের জন্যেও যাদের অন্নদাতা তোমরা নও।
  4. তারা বলল-তুমি আল্লাহর হুকুম সম্পর্কে বিস্ময়বোধ করছ? হে গৃহবাসীরা, তোমাদের উপর আল্লাহর রহমত ও প্রভুত
  5. আমি তো কেবল এই নগরীর প্রভুর এবাদত করতে আদিষ্ট হয়েছি, যিনি একে সম্মানিত করেছেন। এবং
  6. নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন।
  7. তারা শয়তানের মত, যে মানুষকে কাফের হতে বলে। অতঃপর যখন সে কাফের হয়, তখন শয়তান
  8. আল্লাহ যখন তোমাকে স্বপ্নে সেসব কাফেরের পরিমাণ অল্প করে দেখালেন; বেশী করে দেখালে তোমরা কাপুরুষতা
  9. আপনি কি দেখেছেন তাকে, যে বিচারদিবসকে মিথ্যা বলে?
  10. অতঃপর অকল্যাণের স্থলে তা কল্যাণে বদলে দিয়েছে। এমনকি তারা অনেক বেড়ে গিয়েছি এবং বলতে শুরু

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আনফাল ডাউনলোড করুন:

সূরা Anfal mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Anfal শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত আনফাল  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত আনফাল  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত আনফাল  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত আনফাল  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত আনফাল  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত আনফাল  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত আনফাল  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত আনফাল  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত আনফাল  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত আনফাল  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত আনফাল  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত আনফাল  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত আনফাল  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত আনফাল  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত আনফাল  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত আনফাল  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত আনফাল  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত আনফাল  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত আনফাল  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত আনফাল  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত আনফাল  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত আনফাল  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত আনফাল  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত আনফাল  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত আনফাল  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Tuesday, July 16, 2024

Please remember us in your sincere prayers