কোরান সূরা জুমু'আ আয়াত 10 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Jumuah ayat 10 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা জুমু'আ আয়াত 10 আরবি পাঠে(Jumuah).
  
   

﴿فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِن فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ﴾
[ الجمعة: 10]

অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। [সূরা জুমু'আ: 10]

Surah Al-Jumuah in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Jumuah ayat 10


তারপর যখন নামায শেষ হয়ে যায় তখন তোমরা দেশে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহ্‌র করুণাভান্ডার থেকে অণ্বেষণ করো, আর আল্লাহ্‌কে প্রচুরভাবে স্মরণ করো, যাতে তোমাদের সফলতা প্রদান করা হয়।


Tafsir Mokhtasar Bangla


১০. অতঃপর যখন জুমুআর নামায সুসম্পন্ন হবে তখন তোমরা হালাল জীবিকা ও তোমাদের প্রয়োজন মিটানোর উদ্দেশ্যে যমীনে ছড়িয়ে পড়ো এবং তোমরা হালাল উপার্জন ও হালাল লাভের মাধ্যমে আল্লাহর অনুগ্রহ অন্বেষণ করো। তোমরা জীবিকা অন্বেষণের সময় আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণ করো। তোমাদেরকে জীবিকার আন্বেষণ যেন আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন না করে। যাতে তোমরা নিজেদের পছন্দের বস্তু লাভ করতে পারো এবং অপছন্দের বস্তু থেকে রক্ষা পেতে পারো।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর[১] ও আল্লাহকে অধিকরূপে স্মরণ কর; যাতে তোমরা সফলকাম হও। [১] এর অর্থ বৈষয়িক কাজ-কর্ম ও ব্যবসা-বাণিজ্য। অর্থাৎ, জুমআর নামায শেষ করার পর তোমরা পুনরায় নিজ নিজ কাজে-কামে এবং দুনিয়ার ব্যস্ততায় লেগে যাও। এ থেকে উদ্দেশ্য হল এই ব্যাপারটা পরিষ্কার করে দেওয়া যে, জুমআর দিন কাজ-কর্ম বন্ধ রাখা জরুরী নয়। কেবল নামাযের জন্য তা বন্ধ রাখা জরুরী।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


অতঃপর সালাত শেষ হলে তোমারা যমীনে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অমুগ্রহ সন্ধান কর ও আল্লহকে খুব বেশী স্মরণ কর, যাতে তোমারা সফলকাম হও ।

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


৯-১০ নং আয়াতের তাফসীর: ( আরবী ) শব্দটি ( আরবী ) শব্দ হতে বের করা হয়েছে, কারণ এই যে, এই দিনে মুসলমানরা বড় বড় মসজিদে ইবাদতের জন্যে জমা বা একত্রিত হয়ে থাকে। আর এটিও একটি কারণ যে, এই দিনে সমস্ত মাখলুকের সৃষ্টি-কার্য পূর্ণ হয়েছিল। ছয় দিনে সারা জগত বানানো হয়। ষষ্ঠ দিন ছিল জুমআর দিন। এই দিনেই হযরত আদম ( আঃ )-কে সৃষ্টি করা হয়। এই দিনেই জান্নাতে তাঁর অবস্থান ঘটে এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত হতে বের করে দেয়া হয়। এই দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে। এই দিনের মধ্যে এমন একটি সময় রয়েছে যে, ঐ সময়ে আল্লাহ্ তা'আলার নিকট যা যা করা হয় তা-ই তিনি দান করে থাকেন।হযরত সালমান ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ( সাঃ ) তাঁকে বলেনঃ “ হে সালমান ( রাঃ )! জুমআর দিন কি?” উত্তরে তিনি বলেনঃ “আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলই ( সঃ ) ভাল জানেন ।” তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ জমুআহর দিন এমন এক দিন যে, এ দিনে তোমাদের পিতা-মাতাকে ( হযরত আদম আঃ ও হযরত হাওয়া আঃ কে ) আল্লাহ একত্রিত করেন । অথবা বলেনঃ “ তোমাদের পিতাকে ( হযরত আদমকে আঃ ) জমা করেন ।( এ হাদীসটি ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে ( মাওকুফরূপেও ) অনুরূপ বর্ণিত আছে। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন। প্রাচীন অভিধানে এটাকে ইয়াওমুল আরূবাহ বলা হতো। পূর্ববর্তী উম্মতদেরকেও প্রতি সাতদিনে একটি দিন দেয়া হয়েছিল। কিন্তু জুমআর দিনের হিদায়াত তারা লাভ করেনি। ইয়াহূদীরা শনিবারকে পছন্দ করে যেদিন মাখলুকের সৃষ্টি কার্য শুরুই হয়নি। নাসারাগণ রবিবারকে পছন্দ করে যেই দিন মাখলুক সৃষ্টির সূচনা হয়। আর এই উম্মতের জন্যে আল্লাহ তা'আলা জুমআ'হূকে পছন্দ করেছেন যেই দিন তিনি মাখলুকের সৃষ্টিকার্য পরিপূর্ণ করেছেন। যেমন সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ আমরা ( দুনিয়ায় ) সর্বশেষে আগমনকারী, আর কিয়ামতের দিন আমরা সর্বাগ্রে হবো । যাদেরকে আমাদের পূর্বে ( আসমানী ) কিতাব দেয়া হয় তারা এ দিনের ব্যাপারে মতভেদ করে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সরল সঠিক পথ প্রদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারেও তারা আমাদের পিছনে রয়েছে। ইয়াহূদীরা আগামী কাল এবং খৃষ্টানরা আগামী কালের পরের দিন।” এটা সহীহ বুখারীর শব্দ আর সহীহ মুসলিমের শব্দ হলোঃ আল্লাহ তা'আলা জুমআহ্ হতে ভ্রষ্ট করেছেন আমাদের পূর্ববর্তীদেরকে। ইয়াহুদীদের জন্যে ছিল শনিবার এবং খৃষ্টানদের জন্যে ছিল রবিবার। অতঃপর আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা আমাদেরকে আনয়ন করেন এবং জুমআ’হর জন্যে আমাদেরকে হিদায়াত দান করেন। সুতরাং তিনি রেখেছেন শুক্রবার, শনিবার ও রবিবার। এভাবে ইয়াহুদী ও খৃষ্টানরা কিয়ামতের দিন আমাদের পিছনে থাকবে। দুনিয়াবাসীর হিসেবে আমরা শেষে রয়েছি। কিন্তু কিয়ামতের দিন সমস্ত মাখলুকের মধ্যে সর্বপ্রথম আমাদের ব্যাপারে ফায়সালা করা হবে।”এখানে আল্লাহ তা'আলা জুমআর দিন স্বীয় মুসলিম বান্দাদেরকে তাঁর ইবাদতের জন্যে একত্রিত হওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন। ( আরবী ) দ্বারা এখানে দৌড়ানো উদ্দেশ্য নয়, বরং ভাবার্থ হচ্ছেঃ তোমরা আল্লাহর যিকর অর্থাৎ নামাযের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়, কাজ-কর্ম ছেড়ে দিয়ে মসজিদ পানে অগ্রসর হও। যেমন মহান আল্লাহ অন্য আয়াতে বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ মুমিন অবস্থায় যে আখিরাতের কামনা করে এবং ওর জন্যে চেষ্টা সাধনা করে ।( ১৭:১৯ )হযরত উমার ইবনে খাত্তাব ( রাঃ ) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ ( রাঃ )-এর কিরআত ( আরবী ) এর স্থলে ( আরবী ) রয়েছে। এটা স্মরণ রাখার বিষয় যে, নামাযের জন্যে দৌড়িয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে। যে, নবী ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমরা ইকামত শুনলে নামাযের জন্যে ধীরে সুস্থে যাবে, দৌড়াবে না । নামাযের যে অংশ ( জামাআতের সাথে ) পাবে তা পড়ে নিবে এবং যা ছুটে যাবে তা পুরো করবে।” অন্য একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, একবার রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) নামাযে ছিলেন এমতাবস্থায় তিনি দরযার কাছে জনগণের পায়ের জোর শব্দ শুনতে পান। নামায শেষে তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ “ ব্যাপার কি?” সাহাবীগণ উত্তরে বলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আমরা তাড়াতাড়ি করে নামাযে শরীক হয়েছি ।” তখন তিনি বললেনঃ “ না, না, এরূপ করো না । ধীরে সুস্থে নামাযে আসবে। যা পাবে পড়বে এবং যা ছুটে যাবে তা পুরো করে নিবে।" হযরত হাসান বসরী ( রঃ ) বলেনঃ আল্লাহর শপথ! এখানে এ হুকুম কখনো নয় যে, মানুষ নামাযের জন্যে দৌড়িয়ে আসবে । এটা তো নিষেধ। বরং এখানে উদ্দেশ্য হলো অত্যন্ত আগ্রহ, মনোযোগ ও বিনয়ের সাথে নামায পড়া। হযরত কাতাদা ( রঃ ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছেঃ স্বীয় মন ও আমল দ্বারা চেষ্টা কর। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ যখন তিনি ( হযরত ইসমাঈল আঃ ) এমন বয়সে পদার্পণ করলেন যে, তাঁর সাথে ( হযরত ইবরাহীম আঃ এর সাথে ) চলাফেরা করতে সক্ষম হলেন ।( ৩৭:১০২ ) জুমআর নামাযের জন্যে আগমনকারীর জুমআ’হর পূর্বে গোসল করা উচিত। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমার ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমাদের কেউ যখন জুমআ’হর জন্যে আসবে তখন যেন সে গোসল করে নেয় । এ দু' গ্রন্থেই হযরত আবূ সাঈদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ জুমআর দিন প্রত্যেক মুসলমানের উপর গোসল ওয়াজিব ।হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ প্রত্যেক মুসলমানের উপর আল্লাহর হক এই যে, সে প্রতি সাত দিনে এক দিন গোসল করবে, যাতে সে তার মাথা ও শরীর ধৌত করবে।” ( এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত জাবির ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ প্রত্যেক মুসলিমের জন্যে প্রতি সাত দিনে একদিন গোসল রয়েছে এবং তা হলো জুমআর দিন ।( ইমাম আহমাদ (রঃ ), ইমাম নাসাঈ ( রঃ ) এবং ইমাম হিব্বান ( রঃ ) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন)হযরত আউস ইবনে আউস সাকাফী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে বলতে শুনেছেনঃ “ যে ব্যক্তি জুমআ'র দিন ভালভাবে গোসল করে এবং সকালেই মসজিদ পানে রওয়ানা হয়ে যায়, পায়ে হেঁটে যায়, সওয়ার হয় না, ইমামের নিকটবর্তী হয়ে বসে মনোযোগের সাথে খুৎবাহ শুনে এবং বাজে কথা বলে না, সে প্রতি পদক্ষেপের বিনিময়ে সারা বছরের রোযা ও সারা বছরের কিয়ামের ( রাত্রে দাঁড়িয়ে ইবাদত করার ) পুণ্য লাভ করে ।( এ হাদীসটি আহলে সুনানে আরবাআহ ও ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) এটাকে খুবই উত্তম বলেছেন) হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ জুমআর দিন যে ব্যক্তি নাপাক অবস্থার গোসলের ন্যায় গোসল করে আওয়াল বা প্রথম সময়ে মসজিদে গেল সে যেন একটা উট কুরবানী করলো, যে দ্বিতীয় সময়ে হাযির হলো সে যেন একটা গরু কুরবানী করলো, যে তৃতীয় সময়ে পৌঁছলো সে একটা মেষ কুরবানী করার সওয়াব পেলো, যে হাযির হলো চতুর্থ ওয়াক্তে সে যেন সাদকাহ করলো একটা মোরগ এবং যে হাযির হলো পঞ্চম ওয়াক্তে, একটা ডিম আল্লাহর পথে সাদকাহ করার মত পুণ্য সে লাভ করলো । অতঃপর যখন ইমাম ( খুত্বাহ দেয়ার উদ্দেশ্যে ) বের হয় তখন ফেরেশতামণ্ডলী। হাযির হয়ে যিক্র শুনতে থাকেন।" ( এ হাদীসটি ইমাম বুখারী (রঃ ) ও ইমাম মুসলিম ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন) জুমআ'র দিন স্বীয় সাধ্য অনুযায়ী ভাল পোশাক পরা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, মিসওয়াক করা এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও পাক-পবিত্র হয়ে জুমআর নামাযের জন্যে আসা উচিত। একটি হাদীসে গোসলের বর্ণনার সাথে সাথেই মিসওয়াক করা ও সুগন্ধি ব্যবহারের বর্ণনাও রয়েছে। হযরত আবু আইয়ুব আনসারী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে বলতে শুনেছেনঃ “ যে ব্যক্তি জুমআর দিন গোসল করে ও স্বীয় পরিবারের লোকদেরকে সুগন্ধি মাখায় যদি থাকে, অতঃপর ভাল কাপড় পরিধান করে মসজিদে আসে ও ইচ্ছা হলে কিছু নফল নামায পড়ে নেয় এবং কাউকেও কষ্ট দেয় না ( অর্থাৎ কারো ঘাড়ের উপর দিয়ে যায় না ও কোন উপবিষ্ট লোককে উঠায় না ), অতঃপর ইমাম এসে খুৎবাহ শুরু করলে নীরবে তা শুনতে থাকে, তার এই জুমআহ্ হতে পরবর্তী জুমআ’হ্ পর্যন্ত যত পাপ হয় সবই কাফফারা বা মাফ হয়ে যায় ।( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)সুনানে আবু দাউদে ও সুনানে ইবনে মাজা হতে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে। সালাম ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি মিম্বরে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে বলতে শুনেছেনঃ “ তোমাদের মধ্যে কেউ যদি দৈনন্দিনের পরিশ্রমের কাপড় ছাড়া দু'টি কাপড় ক্রয় করে নিয়ে জুমআর নামাযের জন্যে খাস বা নির্দিষ্টি করে রাখে তবে ক্ষতি কি?” একথা তিনি ঐ সময় বলেন যখন দেখেন যে, জনগণ সাধারণ কাপড় পরিধান করে রয়েছে । তাই তিনি বলেন যে, শক্তি থাকলে কেন এরূপ করবে না? এ আয়াতে যে আযানের বর্ণনা রয়েছে ওর দ্বারা ঐ আযান উদ্দেশ্য যা ইমামের মিম্বরের উপর বসার পর দেয়া হয়। নবী ( সঃ )-এর যুগে এ আযান ছিল। যখন নবী ( সঃ ) বাড়ী হতে বেরিয়ে এসে মিম্বরে উপবেশন করতেন তখন তাঁর সামনে এই আযান দেয়া হতো। এর পূর্ববর্তী আযান নবী ( সঃ )-এর যুগে ছিল না। আমীরুল মুমিনীন হযরত উসমান ( রাঃ ) শুধু জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এই আযান চালু করেন। সহীহ বুখারী শরীফে রয়েছে যে, নবী ( সঃ ), হযরত আবু বকর ( রাঃ ) এবং হযরত উমার ( রাঃ )-এর যুগে জুমুআহর আযান শুধু ঐ সময় হতো যখন ইমাম খুৎবাহ দেয়ার জন্যে মিম্বরে বসতেন। হযরত উসমান। ( রাঃ )-এর যুগে যখন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলো তখন তিনি এই দ্বিতীয় আযান একটি পৃথক স্থানের উপর বলিয়ে নেন। ঐ স্থানটির নাম ছিল যাওরা, মসজিদের নিকটবর্তী সর্বাপেক্ষা উঁচু জায়গা এটাই ছিল। হযরত মাকল ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, যখন ইমাম জুমআর খুত্বার জন্যে বেরিয়ে আসতেন তখনই শুধু মুআযযিন আযান দিতেন। এর পর শুধু তাকবীর দেয়া হতো এবং মুসল্লীগণ নামাযে দাঁড়িয়ে যেতেন। এই সময়েই ক্রয়-বিক্রয় হারাম হয়ে যায়। হযরত উসমান ( রাঃ ) শুধু লোক জমা করবার জন্যেই প্রথম আযান চালু করেন।জুমআ'হয় হাযির হওয়ার হুকুম শুধু আযাদ-পুরুষদের উপর রয়েছে। নারী, গোলাম ও শিশুদের উপর এ হুকুম নেই। রুগ্ন, মুসাফির এবং অন্যান্য মাযুর ব্যক্তিদের উপরও এ হুকুম প্রযোজ্য নয়। যেমন ফুরূর কিতাব সমূহের মধ্যে এর প্রমাণ বিদ্যমান রয়েছে।মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ তোমরা ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর। অর্থাৎ বেচা-কেনা ত্যাগ করে তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও।উলামায়ে কিরাম এই ব্যাপারে একমত যে, জুমআর দিন যখন আযান হয়ে যাবে তখন এর পরে বেচা-কেনা সম্পূর্ণরূপে হারাম হয়ে যাবে। তবে দাতা যখন দিবে তখন সেটাও শুদ্ধ হবে কি-না এই ব্যাপারে আলেমদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। প্রকাশ্য আয়াত দ্বারা তো এটাই বুঝা যাচ্ছে যে, ওটাও শুদ্ধ হবে না। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।এরপর আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বলেনঃ বেচা-কেনা ছেড়ে আল্লাহর যিকর ও নামাযের দিকে তোমাদের গমন তোমাদের জন্যে শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর। হ্যাঁ, তবে যখন তোমাদের নামায পড়া হয়ে যাবে তখন সেখান হতে চলে যাওয়া এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধানে লেগে পড়া তোমাদের জন্যে বৈধ।আরাক ইবনে মালিক ( রাঃ ) জুমআর নামায হতে ফারেগ হয়ে মসজিদের দরযার উপর দাঁড়িয়ে যেতেন এবং নিম্নের দু'আটি পাঠ করতেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ হে আল্লাহ! আমি আপনার আহ্বানে সাড়া দিয়েছি ও আপনার হুকুম অনুযায়ী এই সমাবেশ হতে উঠে এসেছি ( ও পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়তে যাচ্ছি ), সুতরাং আপনি আমাকে আপনার অনুগ্রহ দান করুন, আপনি তো সর্বোত্তম রিযকদাতা ।( এটা ইমাম ইবনু আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)এই আয়াতকে সামনে রেখে পূর্বযুগীয় কয়েকজন মনীষী বলেছেন যে, যে ব্যক্তি জুমআর দিন নামাযের পরে ক্রয়-বিক্রয় করে আল্লাহ তা'আলা তাকে সত্তর গুণ বেশী বরকত দান করবেন।মহান আল্লাহর উক্তিঃ নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে, আর আল্লাহকে অধিক স্মরণ করবে। অর্থাৎ ক্রয়-বিক্রয়ের অবস্থাতে আল্লাহকে স্মরণ করবে। দুনিয়ার লাভের মধ্যে এমনভাবে নিমগ্ন হয়ে পড়বে না যে, পরকালের লাভের কথা একেবারে ভুলে যাবে। এজন্যেই হাদীসে এসেছেঃ “ যে ব্যক্তি কোন বাজারে গিয়ে পাঠ করেঃ ( আরবি )অর্থাৎ “আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন অংশীদার নেই, রাজত্ব ও প্রশংসা তাঁরই এবং তিনি প্রত্যেক জিনিসের উপর ক্ষমতাবান ।আল্লাহ তা'আলা তার জন্যে এক লক্ষ পুণ্য লিখে নেন এবং এক লক্ষ পাপ ক্ষমা করে থাকেন। হযরত মুজাহিদ ( রঃ ) বলেন যে, বান্দা তখনই আল্লাহর অধিক যিকরকারী হতে পারে যখন সে দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে সর্বাবস্থাতেই আল্লাহর যিকর করে।

সূরা জুমু'আ আয়াত 10 সূরা

فإذا قضيت الصلاة فانتشروا في الأرض وابتغوا من فضل الله واذكروا الله كثيرا لعلكم تفلحون

سورة: الجمعة - آية: ( 10 )  - جزء: ( 28 )  -  صفحة: ( 554 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. এটা অবতীর্ণ পরম করুণাময়, দয়ালুর পক্ষ থেকে।
  2. সুনিশ্চিত বিষয় কি?
  3. অতএব, আপনি উপদেশ দান করুন। আপনার পালনকর্তার কৃপায় আপনি অতীন্দ্রিয়বাদী নন এবং উম্মাদও নন।
  4. এই মূর্তিরা যদি উপাস্য হত, তবে জাহান্নামে প্রবেশ করত না। প্রত্যেকেই তাতে চিরস্থায়ী হয়ে পড়ে
  5. তিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে শয্যা করেছেন এবং তাতে চলার পথ করেছেন, আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ
  6. মুহাম্মদ আল্লাহর রসূল এবং তাঁর সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল। আল্লাহর অনুগ্রহ
  7. আল্লাহ পাক নিঃসন্দেহে মশা বা তদুর্ধ্ব বস্তু দ্বারা উপমা পেশ করতে লজ্জাবোধ করেন না। বস্তুতঃ
  8. এমনিভাবে আমি প্রত্যেক নবীর জন্যে শত্রু করেছি শয়তান, মানব ও জিনকে। তারা ধোঁকা দেয়ার জন্যে
  9. যারা অবিশ্বাস করে এবং আমার নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলে, তার দোযখী।
  10. যেদিন কোন বন্ধুই কোন বন্ধুর উপকারে আসবে না এবং তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা জুমু'আ ডাউনলোড করুন:

সূরা Jumuah mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Jumuah শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত জুমু'আ  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত জুমু'আ  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত জুমু'আ  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত জুমু'আ  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত জুমু'আ  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত জুমু'আ  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত জুমু'আ  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত জুমু'আ  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত জুমু'আ  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত জুমু'আ  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত জুমু'আ  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত জুমু'আ  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত জুমু'আ  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত জুমু'আ  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত জুমু'আ  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত জুমু'আ  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত জুমু'আ  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত জুমু'আ  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত জুমু'আ  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত জুমু'আ  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত জুমু'আ  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত জুমু'আ  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত জুমু'আ  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত জুমু'আ  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত জুমু'আ  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Tuesday, July 16, 2024

Please remember us in your sincere prayers