কোরান সূরা ইউসুফ আয়াত 107 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Yusuf ayat 107 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা ইউসুফ আয়াত 107 আরবি পাঠে(Yusuf).
  
   

﴿أَفَأَمِنُوا أَن تَأْتِيَهُمْ غَاشِيَةٌ مِّنْ عَذَابِ اللَّهِ أَوْ تَأْتِيَهُمُ السَّاعَةُ بَغْتَةً وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ﴾
[ يوسف: 107]

তারা কি নির্ভীক হয়ে গেছে এ বিষয়ে যে, আল্লাহর আযাবের কোন বিপদ তাদেরকে আবৃত করে ফেলবে অথবা তাদের কাছে হঠাৎ কেয়ামত এসে যাবে, অথচ তারা টেরও পাবে না? [সূরা ইউসুফ: 107]

Surah Yusuf in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Yusuf ayat 107


তারা কি তবে নিরাপদ বোধ করে তাদের উপরে আল্লাহ্‌র শাস্তির ঘেরাটোপ এসে পড়া সন্বন্ধে, অথবা তারা যখন বেখেয়াল থাকে তখন ঘন্টা অতর্কিতে তাদের উপরে এসে পড়া সন্বন্ধে?


Tafsir Mokhtasar Bangla


১০৭. এ মুশরিকরা কি এ ব্যাপারে নিশ্চিত যে, তাদেরকে দুনিয়াতে এমন কোন শাস্তি গ্রাস করবে না? যা তারা প্রতিরোধ করতে অক্ষম অথবা হঠাৎ তাদের উপর কিয়ামত এসে পড়বে না? যার জন্য তারা কোন প্রস্তুতি নিতে পারবে না। এ জন্যই কি তারা ঈমান আনে না?!

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


তবে কি তারা আল্লাহর সর্বগ্রাসী শাস্তি হতে অথবা তাদের অজ্ঞাতসারে কিয়ামতের আকস্মিক উপস্থিতি হতে নিরাপদ?

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


তবে কি তারা আল্লাহ্‌র সর্বগ্রাসী শাস্তি হতে বা তাদের অজান্তে কিয়ামতের আকস্মিক উপস্থিতি হতে নিরাপদ হয়ে গেছে []? [] এ আয়াতে হুশিয়ার করা হয়েছে যে, তারা নবীগণের বিরুদ্ধাচরণের অশুভ পরিণতির প্রতি লক্ষ্য করে না। যদি তারা সামান্যও চিন্তা করত এবং পারিপার্শ্বিক শহর ও স্থানসমূহের ইতিহাস পাঠ করত, তবে নিশ্চয়ই জানতে পারত যে, নবীগণের বিরুদ্ধাচরণকারীরা এ দুনিয়াতে কিরূপ ভয়ানক পরিণতির সম্মুখীন হয়েছে। কওমে-লূতের জনপদসমূহকে উল্টে দেয়া হয়েছে। কওমে-‘আদ ও কওমে সামূদকে নানাবিধ আযাব দ্বারা নাস্তানাবুদ করে দেয়া হয়েছে। দুনিয়াতে তাদের উপর এ ধরনের আযাব আসার ব্যাপারে তারা কিভাবে নিজেদেরকে নিরাপদ ভাবছে? আর আখেরাত তা তো তাদের কাছে হঠাৎ করেই আসবে। যখন তারা সেটার আগমন সম্পর্কে কিছুই জানতে পারবে না। ইবন আব্বাস বলেন, যখন আখেরাতের সে চিৎকার আসবে তখন তারা বাজারে ও তাদের কর্মস্থলে কাজ-কারবারে ব্যস্ত থাকবে। [ বাগভী ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


১০৫-১০৭ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তাআ’লা সংবাদ দিচ্ছেন যে, ক্ষমতাবান আল্লাহর বহু নিদর্শন, তাঁর একত্বের সাক্ষ্য প্রমাণ রাতদিন মানুষের সামনে রয়েছে। তবুও অধিকাংশ লোক অত্যন্ত বেপরোয়াভাবে এগুলো থেকে উদাসীন ও অমনোযোগী রয়েছে। এই এতবড় ও প্রশস্ত আকাশ, এই বিস্তৃত যমীন, এই উজ্জ্বল নক্ষত্র-রাজি, এই আবর্তনশীল সূর্য ও চন্দ্র, এই গাছ-পালা, পাহাড়-পর্বত, শস্য-ক্ষেত্র, তরঙ্গ পূর্ণ সমুদ্র, প্রবাহিত বাতাস, বিভিন্ন প্রকারের ফল ফলাদি এবং নানা প্রকারের খাদ্য দ্রব্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর এই অসংখ্য নিদর্শনাবলী কি জ্ঞানী ব্যক্তির কোন কাজে আসে না যে, এগুলি দ্বারা সে তাঁকে চিনতে পারে, যিনি এক, অমুখাপেক্ষী, অংশীবিহীন, ক্ষমতাবান, চিরঞ্জীব এবং চিরবিদ্যমান? এগুলো দেখে কি-সে তার উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে পারে না? তাদের অধিকাংশের মাথা এমনভাবে বিগড়ে গেছে যে, তাদের আল্লাহর উপর বিশ্বাস আছে, অথচ তাঁর সাথে শরীক স্থাপন করছে। তারা আসমান ও যমীনের, পাহাড়-পর্বতের এবং দানব ও মানবের সৃষ্টিকর্তা হিসেবে আল্লাহকেই মানে, অথচ তাঁর সাথে অন্যদেরকেও শরীক করে ফেলে। এই মুশরিকরা হজ্জ করতে আসে এবং ইহরাম বেঁধে ‘লাব্বায়েক' উচ্চারণ করতে করতে বলেঃ “ হে আল্লাহ! আপনার কোন শরীক নেই, শরীক যারা আছে তাদেরও মালিক আপনি তাদের অধিকার ভুক্ত সবকিছুরও মালিক আপনি।”সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে, যখন মুশরিকরা বলতো: “ হে আল্লাহ! আমরা হাজির আছি, আপনার কোন অংশীদার নেই, তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলতেনঃ “যথেষ্ট হয়েছে । এর চেয়ে বেশী আর কিছু বলো না।” আল্লাহ তাআ’লা বলেছেন : ( আরবি ) অর্থাৎ “ নিশ্চয় শিরক চরম যুলুম ।( ৩১: ১৩ ) প্রকৃতপক্ষে এটা বড়ই অত্যাচার যে, আল্লাহর সাথে আরো কারো ইবাদত করা হবে। যেমন সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত ইবনু মাসউদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ “ আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! সবচেয়ে বড় পাপ কোনটি?” উত্তরে তিনি বলেনঃ “তা এই যে, তুমি আল্লাহর জন্যে শরীক স্থাপন করবে, অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন ।”হযরত হাসান বসরী ( রঃ ) বলেন যে, এই আয়াতের মধ্যে মুনাফিকরাও এসে পড়ে। তাদের আমলে একনিষ্ঠতা ও আন্তরিকতা থাকে না। বরং তাদের মধ্যে রিয়াকারী ও লোক দেখানো ভাব থাকে। রিয়াকারীও শির্‌কের অন্তর্ভুক্ত। কুরআন কারীম ঘোষণা করেঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ মুনাফিকরা আল্লাহকে প্রতারিত করতে চায়, কিন্তু আল্লাহর পক্ষ থেকে তারা নিজেরাই প্রতারিত হয় । তারা যখন নামাযে দাঁড়ায় তখন অত্যন্ত অলসভাবে দাঁড়ায়, তাদের উদ্দেশ্য হয় শুধু লোক দেখানো। তারা আল্লাহর যিকর খুব কমই করে।” ( ৪: ১৪২ ) এটাও স্মরণ রাখা প্রয়োজন যে, কতকগুলি শির্‌ক খুবই হালকা ও গোপনীয় হয়। স্বয়ং শির্‌ককারীও ওটা বুঝতে পারে না। হযরত হুযাইফা ( রাঃ ) একজন রুগ্ন ব্যক্তির নিকট গমন করেন। তার হাতে একটা সূতা বাঁধা ছিল। তিনি ওটা দেখে ছিঁড়ে ফেলেন এবং বলেনঃ “ মু'মিন হয়েও শিরক করছো?” অর্থাৎ তিনি এ আয়াতটিই পাঠ করেন । হাদীস শরীফে আছে যে, যে ব্যক্তি গায়রুল্লাহর কসম খেলো সে মুশরিয্‌ক হয়ে গেল। ( এ হাদীসটি ইমাম তিরমযী (রঃ ) হযরত ইবনু উমার ( রাঃ ) হতে বর্ণনা করেছেন। এবং তিনি এটাকে হাসান বলেছে)হযরত আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ ঝাড়-ফুঁক, সূতা, এবং মিথ্যা তাবীজ শির্‌ক ।( এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ ) ও ইমাম আবু দাউদ ( রঃ ) প্রভৃতি গুরুজন বর্ণনা করেছেন) তিনি আরো বলেছেনঃ “ বান্দার নির্ভরশীলতার কারণে আল্লাহ তাআ’লা তার সমস্ত বিপদ আপদ দূর করে থাকেন । হযরত আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদের স্ত্রী হযরত যায়নাব ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ ( আমার স্বামী ) হযরত আবদুল্লাহ ( রাঃ ) এর অভ্যাস ছিল এই যে, যখন বাইরে থেকে বাড়ীতে প্রবেশ করতেন তখন তিনি গলা খাকড়াতেন এবং থুথু ফেলতেন । যাতে বাড়ীর লোকেরা তাঁর আগমনের ইঙ্গিত পেতে পারে এবং তিনি যেন তাদেরকে এমন অবস্থায় না দেখেন যা তিনি অপছন্দ করেন। একদা এই ভাবে তিনি বাড়ীতে প্রবেশের আভাষ দেন, ঐ সময় আমার কাছে একজন বুড়ী বিদ্যমান ছিল, যে আমার রোগের কারণে আমাকে ঝাড়-ফুক দিতে এসেছিল। আমি তাঁর গলা খাঁকড়ানোর শব্দ শুনেই বুড়িটিকে চৌকির নীচে লুকিয়ে দেই। তিনি আমার কাছে এসে চৌকির উপর বসে পড়েন এবং আমার গলায় সূতা দেখে আমাকে জিজ্ঞেস করেনঃ “ এটা কি?” আমি উত্তরে বলিঃ এতে আমি ঝাড়-ফুক করিয়ে নিয়ে গলায় বেঁধেছি । আমার একথা শুনে তিনি ওটা ধরে ছিঁড়ে ফেলেন এবং বলেনঃ “ আবদুল্লাহর ( রাঃ ) ঘর শিরক থেকে অমুখাপেক্ষী । স্বয়ং আমি রাসূলুল্লাহকে ( সঃ ) বলতে শুনেছি যে, ঝাড়-ফুক, তাবীয এবং ডোরা-সুতা বাধা শিরক।” আমি বললামঃ “ আপনি এটা কিরূপে বলছেন? একবার আমার চক্ষু খারাপ হয়ে গিয়েছিল আমি অমুক ইয়াহূদীর কাছে যেতাম । সে আমার চোখে ঝাড়-ফুক করতো। তখন আমার চক্ষু ভাল হয়ে যেতো।” আমার এ কথা শুনে তিনি বললেনঃ “ শয়তান তোমার চোখে গুতো মারতো এবং ঝাড়-ফুঁকের কারণে সে থেমে যেতো । রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) যা শিখিয়েছেন তা যদি তুমি বলতে তবে ওটাই তোমার জন্যে যথেষ্ট হতো। তা হচ্ছেঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ হে মানুষের প্রতিপালক! আপনি কষ্ট দূর করে দিন, আপনি আরোগ্য দান করুন, আপনিই আরোগ্য দানকারী, আপনার আরোগ্য ছাড়া কোন আরোগ্য নেই, এমন আরোগ্য দান করুন যাতে কোন রোগ অবশিষ্ট না থাকে ।( এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন)ঈসা ইবনু আবদির রহমান ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একবার আবদুল্লাহ ইবনু হাকীম ( রাঃ ) রুগ্ন ছিলেন, আমরা তাঁকে দেখতে গেলাম। তাঁকে বলা হলো: “ যদি আপনি কোন ডোরা-সূতা বাঁধতেন তবে ভাল হতো ।” এ কথা শুনে তিনি বলেন, “ আমি ডোরা-সূতা বাঁধবো? অথচ রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি যে জিনিষ লটকাবে তাকে তারই দিকে সমর্পণ করা হবে । ( এ হাদীসটি মুসনাদে আহমদে বর্ণিত হয়েছে। এ হাদিস ইমাম নাসায়ীও হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ ) হতে বর্ণিত করেছে) হযরত উকবা ইবনু আমির ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যে ব্যক্তি তাবীয লটকালো সে শিরক করলো ।( এ হাদীসটিও ইমাম আহমদ (রঃ ) স্বীয় মুসনাদ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, যে ব্যক্তি তাবীয লটকায় আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করেন না এবং যে ব্যক্তি ওটা লটকায় আল্লাহ যেন ওটাকে লটকানো অবস্থাতেই রেখে দেন।হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ “আমি শরীকদের শিরক হতে অমুখাপেক্ষী । আমি ওর কোন পরওয়া করি না। যে ব্যক্তি এমন কাজ করলো যে, তাতে আমার শরীক স্থাপন করলো, আমি তাকে ও তার শিরককে পরিত্যাগ করি।” ( এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আবু সাঈদ ইবনু আবি ফুযালা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহকে ( সঃ ) বলতে শুনেছিঃ “ যখন আল্লাহ তাআ’লা সমস্ত প্রথম ও শেষের লোকদেরকে একত্রিত করবেন এমন এক দিনে, যেই দিনের ব্যাপারে কোনই সন্দেহ নেই, তখন একজন আহবানকারী আহবান করবেনঃ যে ব্যক্তি কোন কাজে শিরক করবে, যে কাজ সে আল্লাহর জন্যে করেছে, সে যেন গায়রুল্লাহর কাছেই প্রতিদান চায় । নিশ্চয় আল্লাহ শরীকদের শিরক থেকে বেপরোয়া।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত মাহমূদ ইবনু ওয়ালীদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমাদের উপর আমার যে জন্যে সবচেয়ে ভয়, তা হচ্ছে ছোট শিরক ।” সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! ছোট শির্ক কি?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “রিয়াকারী ( লোক দেখানো কাজ ) কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআ’লা লোকদেরকে কর্মের প্রতিদান প্রদান করবেন। ঐ সময় তিনি ঐ রিয়াকারদেরকে বলবেনঃ “ হে রিয়াকারগণ! তোমরা যাদেরকে দেখানোর জন্যে আমল করতে তাদের কাছেই আজ প্রতিদান চাও । দেখা যাক তারা তা দিতে পারে কি না।” ( ইমাম আহমদ (রঃ ) এই হাদীসটিও বর্ণনা করেছেন)হযরত আবদুল্লাহ ইবনু আমর ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যে ব্যক্তি কোন কাজের অশুভ লক্ষণ দেখে তা থেকে ফিরে আসলো সে মুশরিক হয়ে গেল ।” সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! এর কাফফারা কি?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “এর কাফফারা এই যে, সে বলবেঃ ( আরবি )অর্থাৎ “হে আল্লাহ! আপনার মঙ্গল ছাড়া কোন মঙ্গল নেই এবং আপনার দেয়া অমঙ্গল ছাড়া কোন অমঙ্গলই নেই । ( অর্থাৎ মঙ্গল ও অমঙ্গল উভয়েরই কারণ একমাত্র আপনিই। দুটোই আপনার পক্ষ থেকে এসে থাকে ) আর আপনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই।”বর্ণিত আছে যে, একদা হযরত আবু মুসা আশআ’রী ( রাঃ ) স্বীয় ভাষণে বলেনঃ “ হে জনমণ্ডলী! তোমরা শিরক থেকে বেঁচে থাকো । এটা পীপিলিকার গতির চেয়েও বেশি গোপনীয়।” তার একথা শুনে হযরত আবদুল্লাহ ইবনু হারব ( রাঃ ) এবং হযরত কায়েস ইবনু মাযারিব ( রাঃ ) দাঁড়িয়ে গিয়ে বলেনঃ “ আপনি এর প্রমাণ পেশ করবেন, না আমরা হযরত উমারের ( রাঃ ) কাছে গিয়ে আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করবো?” তিনি উত্তরে বলেনঃ “এর প্রমাণ আমি দিচ্ছি । একদা রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাদেরকে ভাষণে বলেনঃ “ হে লোক সকল! তোমরা এই শিরক হতে বেঁচে থাকো! এটাতো পিঁপড়ার গতির চেয়েও বেশী গোপনীয় ও সূক্ষ্ণ ।” তখন কেউ জিজ্ঞেস করেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ ) এটা পিঁপড়ার গতির চেয়েও সূক্ষ্ণ, তা হলে এর থেকে বাঁচবার উপায় কি?” তিনি জবাবে বলেনঃ “তোমরা বলোঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “হে আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি এমন কিছুকে আপনার সাথে শরীক স্থাপন করা হতে যা আমরা জানি এবং আমরা আপনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি এমন কিছু হতে, যা আমরা জানি না” । ( এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ ) বানু কাইল গোত্রের একটি লোক হতে বর্ণনা করেছেন)একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, এই বর্ণনা ছিল হযরত আবু বকর সিদ্দীক ( রাঃ ) এর তিনি জিজ্ঞেস করেছিলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! শিরক তো হচ্ছে এটাই যে, আল্লাহর সাথে অন্য কাউকেও ডাকা হয় ।” এই হাদীসে দুআ’'র শব্দগুলি নিম্নরূপ রয়েছেঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি এ থেকে যে, আমি আপনার সাথে শরীক স্থাপন করবো অথচ আমি জানি ( যে, এটা শিরক ) এবং আমি আপনার নিকট এমন কিছু হতে ক্ষমা প্রার্থনা করছি যা আমি জানিনা ।( এ হাদীসটি মুসনাদে আবি ইয়ালায় রয়েছে )হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে, হযরত আবু বকর সিদ্দীক ( রাঃ ) আরজ করেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আমাকে এমন একটি দুআ’ শিখিয়ে দিন যা আমি সকাল ও সন্ধ্যা এবং বিছানায় শয়নের সময় পাঠ করবো ।” তিনি বলেনঃ “ তুমি এ দু’আটি বলবেঃ ( আরবি )অর্থাৎঃ“হে আল্লাহ! হে আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা, দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, প্রত্যেক জিনিষের প্রতিপালক ও অধিকর্তা! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই । আমি আমার নফসের অনিষ্ঠ হতে, শয়তানের অনিষ্ট হতে এবং তার শিরক হতে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ ) ইমাম আবু দাউদ ( রঃ ) এবং ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) বর্ণনাকরেছেন এবং ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) এটাকে বিশুদ্ধ বলেছেন) অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, হযরত আবু বকর ( রাঃ ) বলেনঃ “ আমাকে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) উক্ত দুআ’’টি শিখিয়ে দেন এবং এর শেষে রয়েছে: ( আরবি )আল্লাহ পাকের উক্তিঃ “তবে কি তারা আল্লাহর সর্বগ্রাসী শাস্তি হতে অথবা তাদের অজ্ঞাতসারে কিয়ামতের আকস্মিক উপস্থিতি হতে নির্ভয় হয়ে গেছে? যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ “প্রতারণা ও দুষ্কার্যকারীরা কি এ বিষয় থেকে নির্ভয় হয়ে গেছে যে, আল্লাহ তাদেরকে যমীনে ধ্বসিয়ে দিবেন অথবা এমন স্থান হতে শান্তি আনয়ন করবেন যে, তারা বুঝতেই পারবে না? অথবা তাদের চলাফেরা অবস্থাতেই তিনি তাদেরকে পাকড়াও করবেন? তারা তাঁকে অপারগকারী নয় ।” আর এক জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ “ গ্রামবাসী এ থেকে কি নির্ভয় ও নিশ্চিন্ত হয়ে গেছে যে, তাদের কাছে তাদের শয়ন ও ঘুমন্ত অবস্থায় আমার শাস্তি চলে আসবে? গ্রামবাসী কি এ থেকে নিরাপদ হয়ে গেছে যে, তাদের কাছে দিনের পূর্বভাগে তাদের খেলা ধূলায় মত্ত থাকা অবস্থায় আমার শাস্তি এসে পড়বে? তারা কি আল্লাহর মকর থেকে নির্ভয় ও নিরাপদ হয়ে গেছে । ক্ষতিগ্রস্ত কওম ছাড়া কেউই আল্লাহর মকর থেকে নির্ভয় ও নিরাপদ থাকেনা।”

সূরা ইউসুফ আয়াত 107 সূরা

أفأمنوا أن تأتيهم غاشية من عذاب الله أو تأتيهم الساعة بغتة وهم لا يشعرون

سورة: يوسف - آية: ( 107 )  - جزء: ( 13 )  -  صفحة: ( 248 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. অতঃপর বলেছিঃ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল।
  2. করাঘাতকারী,
  3. আমি তওরাত অবর্তীর্ন করেছি। এতে হেদায়াত ও আলো রয়েছে। আল্লাহর আজ্ঞাবহ পয়গম্বর, দরবেশ ও আলেমরা
  4. এবং অপরাধীদেরকে পিপাসার্ত অবস্থায় জাহান্নামের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাব।
  5. যিনি বিচার দিনের মালিক।
  6. যারা মন্দ কাজ করে, তারা কি মনে করে যে, তারা আমার হাত থেকে বেঁচে যাবে?
  7. আইন, সীন ক্বা-ফ।
  8. এভাবেই আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।
  9. ধ্বংস হোক সে, কিরূপে সে মনঃস্থির করেছে!
  10. অনেক মুখমন্ডল সেদিন হবে উজ্জ্বল,

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ইউসুফ ডাউনলোড করুন:

সূরা Yusuf mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Yusuf শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত ইউসুফ  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত ইউসুফ  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত ইউসুফ  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত ইউসুফ  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত ইউসুফ  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত ইউসুফ  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত ইউসুফ  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত ইউসুফ  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত ইউসুফ  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত ইউসুফ  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত ইউসুফ  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত ইউসুফ  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত ইউসুফ  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত ইউসুফ  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত ইউসুফ  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত ইউসুফ  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত ইউসুফ  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত ইউসুফ  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত ইউসুফ  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত ইউসুফ  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত ইউসুফ  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত ইউসুফ  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত ইউসুফ  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত ইউসুফ  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত ইউসুফ  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Monday, November 4, 2024

Please remember us in your sincere prayers