কোরান সূরা আনআম আয়াত 108 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Anam ayat 108 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা আনআম আয়াত 108 আরবি পাঠে(Anam).
  
   

﴿وَلَا تَسُبُّوا الَّذِينَ يَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ فَيَسُبُّوا اللَّهَ عَدْوًا بِغَيْرِ عِلْمٍ ۗ كَذَٰلِكَ زَيَّنَّا لِكُلِّ أُمَّةٍ عَمَلَهُمْ ثُمَّ إِلَىٰ رَبِّهِم مَّرْجِعُهُمْ فَيُنَبِّئُهُم بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾
[ الأنعام: 108]

তোমরা তাদেরকে মন্দ বলো না, যাদের তারা আরাধনা করে আল্লাহকে ছেড়ে। তাহলে তারা ধৃষ্টতা করে অজ্ঞতাবশতঃ আল্লাহকে মন্দ বলবে। এমনিভাবে আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিতে তাদের কাজ কর্ম সুশোভিত করে দিয়েছি। অতঃপর স্বীয় পালনকর্তার কাছে তাদেরকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তখন তিনি তাদেরকে বলে দেবেন যা কিছু তারা করত। [সূরা আনআম: 108]

Surah Al-Anam in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Anam ayat 108


আর তারা আল্লাহ্‌কে ছেড়ে দিয়ে যাদের উপাসনা করে তাদের গালি দিও না, পাছে তারাও শত্রুতাবশতঃ আল্লাহ্‌কে গালি দেয় জ্ঞানহীনতার জন্য। এইভাবে প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য তাদের ক্রিয়াকলাপ আমরা চিত্তাকর্ষক করেছি। তারপর তাদের প্রভুর কাছেই হচ্ছে তাদের প্রত্যাবর্তন, তখন তিনি তাদের জানিয়ে দেবেন কি তারা করতো।


Tafsir Mokhtasar Bangla


১০৮. হে মু’মিনগণ! মুশরিকদের আল্লাহর সাথে পূজা করা মূর্তিগুলোকে তোমরা গালি দিয়ো না। যদিও না সেগুলো নগণ্য ও গালি খাওয়ার উপযুক্ত। যাতে মুশরিকরা আল্লাহর যথাযথ সম্মান না জেনে আগ বাড়িয়ে তাঁকে গালি দিয়ে না বসে। যেভাবে এদের জন্য ভ্রষ্টতাকে সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে তেমনিভাবে আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য তাদের আমলকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে দেই। চাই তা ভালো হোক কিংবা খারাপ। তখন তারা সেই সাজানো আমলটিই করে বসে। অতঃপর কিয়ামতের দিন তাদের প্রতিপালকের নিকটই তাদের প্রত্যাবর্তন হবে। তখন তিনি দুনিয়ার আমল সম্পর্কে অবহিত করে তাদেরকে সেগুলোর প্রতিদান দিবেন।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


তারা আল্লাহকে ছেড়ে যাদেরকে আহবান করে, তাদেরকে তোমরা গালি দেবে না। কেননা, তারা বৈরীভাবে অজ্ঞানতাবশতঃ আল্লাহকেও গালি দেবে।[১] এভাবে আমি প্রত্যেক জাতির দৃষ্টিতে তাদের কার্যকলাপ সুশোভন করেছি। অতঃপর তাদের প্রতিপালকের নিকট তাদের প্রত্যাবর্তন, অনন্তর তিনি তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে তাদেরকে অবহিত করবেন। [১] এ নির্দেশ মন্দের উপায়-উপকরণের পথ বন্ধ করার নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। অর্থাৎ, কোন বৈধ কাজ করলে যদি তা কোন অন্যায়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে সেই বৈধ কাজকে ত্যাগ করা উচিত। অনুরূপ নবী করীম ( সাঃ )ও বলেছেন, " তোমরা কারো পিতা-মাতাকে গাল-মন্দ করো না, কেননা, এইভাবে তোমরা স্বয়ং নিজেদের পিতা-মাতাকে গাল-মন্দ করার কারণ হয়ে যাবে। " ( মুসলিমঃ ঈমান অধ্যায় ) ইমাম শাওকানী লিখেছেন যে, এই আয়াত হল মন্দের উপকরণসমূহ বন্ধ করার মূল নীতির উৎস। ( ফাতহুল ক্বাদীর )

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


আর আল্লাহ্‌কে ছেড়ে যাদেরকে তারা ডাকে তাদেরকে তোমার গালি দিও না।কেননা তারা সীমালংঘন করে অজ্ঞানতাবশতঃ আল্লাহকেও গালি দেবে; এভাবে আমারা প্রত্যেক জাতির দৃষ্টিতে তাদের কার্যকলাপ শোভিত করেছি ; তারপর তাদের রব-এর কাছেই তাদের প্রত্যাবর্তন। এরপর তিনি তাদেরকে তাদের করা কাজগুলো সম্বন্ধে জানিয়ে দেবেন []। [] আলোচ্য আয়াতটি একটি বিশেষ ঘটনা সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। এতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক মাসআলা নির্দেশিত হয়েছে যে, যে কাজ করা বৈধ নয়, সে কাজের কারণ ও উপায় হওয়াও বৈধ নয়। কুরাইশ সর্দাররা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললঃ হয় তুমি আমাদের উপাস্য প্রতিমাদেরকে মন্দ বলা থেকে বিরত হও, না হয় আমরা তোমার প্রভুকে গালি দিবো। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আলোচ্য আয়াত নাযিল হয়। তাবারী যাতে বলা হয়েছে, “ আপনি ঐ প্রতিমাদেরকে মন্দ বলবেন না, যাদেরকে তারা উপাস্য বনিয়ে রেখেছে । তাহলে তারা আল্লাহকে মন্দ বলা শুরু করবে পথভ্রষ্টতা ও অজ্ঞতার কারণে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বভাবগত চরিত্রের কারণে শৈশবকালেও কোন মানুষকে বরং কোন জন্তুকেও কখনো গালি দেননি। সম্ভবত কোন সাহাবীর মুখ থেকে এমন কঠোর বাক্য বের হয়ে থাকতে পারে, যাকে মুশরিকরা গালি মনে করে নিয়েছে। [ তাফসীরে বায়যাভী'; আইসারুত তাফসীর ] কুরাইশ সর্দাররা এ ঘটনাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সামনে রেখে ঘোষণা করেছে যে, আপনি আমাদের প্রতিমাদেরকে গালি-গালাজ থেকে বিরত না হলে আমরা আপনার আল্লাহকেও গালি-গালাজ করব। এতে কুরআনের এ নির্দেশ নাযিল হয়েছে। এতে মুশরিকদের মিথ্যা উপাস্যদের সম্পর্কে কোন কঠোর বাক্য বলতে মুসলিমদেরকে নিষেধ করা হয়েছে। এ ঘটনা ও এ সম্পর্কিত কুরআনী নির্দেশ একটি বিরাট জ্ঞানের দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে এবং কতিপয় মৌলিক বিধান এ থেকে বের হয়ে এসেছে। কোন পাপের কারণ হওয়া পাপঃ উদাহরণতঃ একটি মূলনীতি এই বের হয়েছে যে, যে কাজ নিজ সত্তার দিক দিয়ে বৈধ; বরং কোন না কোন স্তরে প্রশংসনীয়ও, সে কাজ করলে যদি কোন ফ্যাসাদ অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে কিংবা তার ফলশ্রুতিতে মানুষ গোনাহে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে সে কাজও নিষিদ্ধ হয়ে যায়। কেননা, মিথ্যা উপাস্য অর্থাৎ প্রতিমাদেরকে মন্দ বলা অবশ্যই বৈধ এবং ঈমানী মর্যাদাবোধের দিক দিয়ে দেখলে সম্ভবতঃ সওয়াব ও প্রশংসনীয়ও বটে, কিন্তু এর ফলশ্রুতিতে আশংকা দেখা দেয় যে, প্রতিমাপূজারীরা আল্লাহ্ তা'আলাকে মন্দ বলবে। অতএব, যে ব্যক্তি প্রতিমাদেরকে মন্দ বলবে, সে এ মন্দের কারণ হয়ে যাবে। তাই এ বৈধ কাজটিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। [ কুরতুবী; রায়ী ] হাদীসে এর আরও একটি দৃষ্টান্ত রয়েছে। একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে বললেনঃ জাহেলিয়াত যুগে এক দুর্ঘটনায় কাবাগৃহ বিধ্বস্ত হয়ে গেলে কুরাইশরা তা পুননির্মাণ করে। এ পুননির্মাণে কয়েকটি বিষয় প্রাচীন ইবরাহিমী ভিত্তির খেলাফ হয়ে গেছে। প্রথমতঃ কা'বার যে অংশকে হাতীম' বলা হয়, তাও কাবাগৃহের অংশবিশেষ ছিল। কিন্তু পুননির্মাণে অর্থাভাবের কারণে সে অংশ বাদ দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয়তঃ কাবাগৃহের পূর্ব ও পশ্চিম দিকে দু’টি দরজা ছিল। একটি প্রবেশের এবং অপরটি প্রস্থানের জন্য নির্দিষ্ট ছিল। জাহেলিয়াত যুগের নির্মাতারা পশ্চিমের দরজা বন্ধ করে একটি মাত্র দরজা রেখেছে। এটিও ভূপৃষ্ঠ থেকে উচ্চে স্থাপন করেছে, যাতে কেউ তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কা'বা গৃহে প্রবেশ করতে না পারে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বলেনঃ আমার আন্তরিক বাসনা এই যে, কা'বা গৃহের বর্তমান নিমাণ ভেঙ্গে দিয়ে সম্পূর্ণ ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর নির্মাণের অনুরূপ করে দেই। কিন্তু আশংকা এই যে, তোমার সম্প্রদায় অর্থাৎ আরব জাতি নতুন মুসলিম হয়েছে। কা'বা গৃহ বিধ্বস্ত করলে তাদের মনে বিরূপ সন্দেহ দেখা দিতে পারে। তাই আমি আমার বাসনা মুলতবী রেখেছি। এ ব্যাপারে দেখুন [ মুসলিমঃ ১৩৩৩ ] এটা জানা কথা যে, কা'বা গৃহকে ইবরাহীমী ভিত্তির অনুরূপ নির্মাণ করা একটি ইবাদাত ও সওয়াবের কাজ ছিল। কিন্তু জনগণের অজ্ঞতার কারণে এতে আশংকা আঁচ করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ পরিকল্পনা ত্যাগ করেন। এ ঘটনা থেকেও এ মূলনীতিই জানা গেল যে, কোন বৈধ এমনকি সওয়াবের কাজেও যদি কোন অনিষ্ট অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে, তবে সে বৈধ কাজও নিষিদ্ধ হয়ে যায়। কোন কোন মুফাসসির এখানে একটি আপত্তির বিষয় উল্লেখ করেছেন। তা এই যে, আল্লাহ তা'আলা মুসলিমদের উপর জিহাদ ফরয করেছেন। যার অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হল এই যে, কোন মুসলিম কোন কাফেরকে হত্যা করলে কাফেররাও মুসলিমদেরকে হত্যা করবে। অথচ মুসলিমকে হত্যা করা হারাম। এখানে জিহাদ মুসলিম হত্যার কারণ হয়েছে। অতএব, উপরোক্ত মূলনীতি অনুযায়ী জিহাদও নিষিদ্ধ হওয়া উচিত। এমনিভাবে আমাদের প্রচারকার্য, কুরআন তিলাওয়াত, আযান ও সালাতের প্রতি অনেক কাফের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে। অতএব, আমরা কি তাদের ভ্রান্ত কর্মের দরুন নিজ ইবাদাত থেকেও হাত গুটিয়ে নেব? এর জবাব এই যে, একটি জরুরী শর্তের প্রতি উপেক্ষা প্রদর্শনের ফলে এ প্রশ্নের জন্ম হয়েছে। শর্তটি এই যে, ফ্যাসাদ অবশ্যম্ভাবী হওয়ার কারণে যে বৈধ কাজটি নিষিদ্ধ করা হয়, তা ইসলামের উদ্দিষ্ট ও জরুরী কর্মসমূহের অন্তর্ভুক্ত না হওয়া চাই। যেমন মিথ্যা উপাসকদের মন্দ বলা। এর সাথে ইসলামের কোন উদ্দেশ্য সম্পর্কযুক্ত নয়। এমনিভাবে কা'বা গৃহের নির্মাণকে ইবরাহীমী ভিত্তির অনুরূপ করার উপরও ইসলামের কোন উদ্দেশ্য নির্ভরশীল নয়। তাই এগুলোর কারণে যখন কোন ধর্মীয় অনিষ্টের আশংকা দেখা দিয়েছে, তখন এগুলো পরিত্যক্ত হয়েছে। পক্ষান্তরে যে কাজ স্বয়ং ইসলামের উদ্দেশ্য কিংবা কোন ইসলামী উদ্দেশ্য যার উপর নির্ভরশীল, যদি বিধর্মীদের ভ্রান্ত আচরণের কারণে তাতে কোন অনিষ্টও দেখা দেয়, তবু এ জাতীয় উদ্দেশ্যকে কোন অবস্থাতেই পরিত্যাগ করা হবে না। বরং এরূপ কাজ স্বস্থানে অব্যাহত রেখে যতদূর সম্ভব অনিষ্টের কাজ বন্ধ করার চেষ্টা করা হবে।

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


আল্লাহ পাক স্বীয় রাসূল ( সঃ ) এবং মুমিনদেরকে সম্বোধন করে বলছেন যে, তারা যেন মুশরিকদের দেবতাগুলোকে গালাগালি না করে এবং ভালমন্দ না বলে। এতে কিছুটা যৌক্তিকতা থাকলেও এর ফলে ঝগড়া ফাসাদ ও বিবাদ বিসম্বাদ বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ তাদের দেবতাদেরকে গালি দিলে তারাও মুসলমানদের প্রভু আল্লাহকে গালি দেবে। মুশরিকরা বলতোঃ “ হে মুহাম্মাদ ( সঃ )! আপনারা আমাদের দেবতাদের গালি দেয়া হতে বিরত থাকুন, নতুবা আমরাও আপনাদের প্রভুর নিন্দে করবো ।” তাই আল্লাহ তাআলা মুশরিকদের দেবতাদেরকে গালি দিতে মুসলমানদেরকে নিষেধ করলেন। হযরত কাতাদা ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, মুসলমানরা কাফিরদের মূর্তিগুলোকে গালি দিতেন। তখন কাফিররাও হকীকত না বুঝে বৈরীভাব নিয়ে আল্লাহ তা'আলাকে ভালমন্দ বলতো। যখন আবূ তালিব মৃত্যু শয্যায় শায়িত হন তখন কুরায়েশরা পরামর্শ করে- “ চল, আমরা আবু তালিবের কাছে যাই এবং তাঁকে অনুরোধ করি যে, তিনি যেন স্বীয় ভ্রাতুপুত্রকে আমাদের বিরুদ্ধাচরণ করতে নিষেধ করে দেন । কেননা, এটা আমাদের জন্যে লজ্জাজনক ব্যাপার হবে যে, আবু তালিবের মৃত্যুর পর আমরা মুহাম্মাদ ( সঃ )-কে হত্যা করে ফেলবো। কারণ, এরূপ করলে আরববাসী বলবে যে, আবু তালিবের জীবদ্দশায় তো কাপুরুষরা কিছুই করতে পারলো না, আর যেমনই তিনি মারা গেলেন তেমনই তারা তাকে হত্যা করে ফেললো।” সুতরাং আবু জাহেল, আবু সুফিয়ান, আমর ইবনুল আস এবং আরও কয়েকজন লোক প্রতিনিধি হিসেবে আগমন করে। তারা মুত্তালিব নামক একটি লোককে অনুমতি লাভের জন্যে প্রেরণ করে। আবূ তালিব তাদেরকে ডেকে নেন। তারা তখন। তাকে বলেঃ “ হে আবু তালিব! আপনি আমাদের বড় এবং আমাদের নেতা । মুহাম্মাদ ( সঃ ) আমাদেরকে কষ্ট দিচ্ছেন এবং আমাদের দেবতাদেরকে কষ্ট দিচ্ছেন এবং আমাদের দেবতাদেরকে গালি দিচ্ছেন। আমরা চাই যে, আপনি তাকে ডেকে নিয়ে নিষেধ করে দেন। তিনি যেন আমাদের দেবতাদের নাম পর্যন্ত না নেন! নতুবা আমরাও তাকে ও তার আল্লাহকে ছেড়ে দেব না।” এ কথা শুনে আবু তালিব মুহাম্মাদ ( সঃ )-কে ডেকে পাঠান এবং তাঁকে বলেনঃ “ এরা তোমারই কওম এবং তোমারই চাচার সন্তান । রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তখন তাকে বলেনঃ চাচা! খবর কি? এবং এরা চায় কি?' তখন তারা বলেঃ “ আমাদের উদ্দেশ্য এই যে, আপনি আমাদের উপর এবং আমাদের দেবতাদের উপর কোন হস্তক্ষেপ করবেন না । তাহলে আমরাও আপনার উপর এবং আপনার আল্লাহর উপর কোন হস্তক্ষেপ করবো না।” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাদের কথার উত্তরে বলেনঃ “ আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি কথা বলে দেবে যে, যদি তোমরা ওটা মেনে নাও তবে তোমরা আরব ও আজমের মালিক হয়ে যাবে এবং সমস্ত দেশ থেকে তোমাদের কাছে রাজস্বের সম্পদ আসতে থাকবে?” উত্তরে আবু জাহেল বললোঃ ‘আপনার একটা কথা কেন, দশটা কথা মানতে রাজি আছি বলুন সেটা কি?' তিনি বললেনঃ বল - ( আরবী ) ( আল্লাহ ছাড়া আর কেউ মা'বুদ নেই )। তারা সেটা অস্বীকার করল এবং মুখ ফিরিয়ে নিলো। আবু তালিব তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে বললেনঃ “ হে ভাতিজা! এটা ছাড়া অন্য কথা বল । তোমার কওম তো একথাতে আরও অগ্নিশর্মা হয়ে উঠছে।” একথা শুনে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বললেনঃ “ চাচাজান! এটা ছাড়া অন্য কিছু বলার আমার কি অধিকার আছে? এরা যদি আমার হাতে সূর্যও এনে দেয় তথাপি আমি এটা ছাড়া অন্য কিছুই বলতে পারি না ।” একথা দ্বারা তাদেরকে নিরাশ করাই তার উদ্দেশ্য ছিল। সুতরাং তারা তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠে তাকে বললোঃ “ আমাদের দেবতাদেরকে ভালমন্দ বলা থেকে বিরত থাকুন, নতুবা আমরাও আপনাকে ও আপনার আল্লাহকে গালি দিব ।” এ জন্যেই আল্লাহ পাক বলেনঃ তারা অজ্ঞানতা বশতঃ বৈরীভাবে আল্লাহকেই গালি দিতে শুরু করবে। সুতরাং তাদের দেবতাদেরকে গালি দিবার। যৌক্তিকতা থাকলেও এই অবস্থার প্রতি লক্ষ্য রেখে তা থেকে বিরত থাকা উচিত। কেননা, এতে বিবাদ বিসম্বাদ আরও বেড়ে যাবে। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যে তার পিতা-মাতাকে গালি দেয় সে অভিশপ্ত!' সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! কোন লোক কি তার পিতা-মাতাকে গালি দিতে পারে?” তিনি উত্তরে বলেনঃ “যে কোন লোকের পিতাকে গালি দেয়, তখন লোকটি এর পিতাকে গালি দেয় এবং যে কোন লোকের মাকে গালি দেয়, সে তখন এর মাকে গালি দেয়, সুতরাং প্রথম লোকটি যেন নিজের পিতা-মাতাকেই গালি দিলো । আল্লাহ পাক বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ এভাবেই আমি প্রতিটি জনগোষ্ঠির জন্যে তাদের আমলকে চাকচিক্যময় করে দিয়েছি ।” অর্থাৎ যেমন এই কওম মূর্তির প্রতি আসক্তিকেই পছন্দ করেছে, দ্রুপ পূর্ববর্তী উম্মতও পথভ্রষ্ট ছিল এবং তারাও নিজেদের আমলকেই পছন্দ করতো। আল্লাহ তাআলা যা ইচ্ছা তাই করে থাকেন এবং তাতেই নিপুণতা নিহিত থাকে। শেষ পর্যন্ত মানুষকে আল্লাহর কাছেই ফিরে যেতে হবে। সেইদিন তারা তাদের দুনিয়ার কৃত কার্যগুলো ভাল কি মন্দ তা জানতে পারবে। যদি সেগুলো ভাল হয় তবে তারা ভাল বিনিময় পাবে এবং যদি মন্দ হয় তবে মন্দ বিনিময়ই প্রাপ্ত হবে।

সূরা আনআম আয়াত 108 সূরা

ولا تسبوا الذين يدعون من دون الله فيسبوا الله عدوا بغير علم كذلك زينا لكل أمة عملهم ثم إلى ربهم مرجعهم فينبئهم بما كانوا يعملون

سورة: الأنعام - آية: ( 108 )  - جزء: ( 7 )  -  صفحة: ( 141 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. শুনছ? তোমরা তাদের পক্ষ থেকে পার্থিব জীবনে বিবাদ করছ, অতঃপর কেয়ামতের দিনে তাদের পক্ষ হয়ে
  2. মানুষকে ঐ দিনের ভয় প্রদর্শন করুন, যেদিন তাদের কাছে আযাব আসবে। তখন জালেমরা বলবেঃ হে
  3. এরপর অন্যদেরকে নিপাত করলাম।
  4. যে ব্যক্তি উপুড় হয়ে মুখে ভর দিয়ে চলে, সে-ই কি সৎ পথে চলে, না সে
  5. সে বলত, তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যে বিষয়ের উপর পেয়েছ, আমি যদি তদপেক্ষা উত্তম বিষয় নিয়ে
  6. তারা কি দেখে না যে, আমি তাদের দেশকে চতুর্দিক থেকে সমানে সঙ্কুচিত করে আসছি? আল্লাহ
  7. সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আপনি আমাকে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন।
  8. যদি আমাদের কাছে পূর্ববর্তীদের কোন উপদেশ থাকত,
  9. হে মুমিন গণ, তোমরা ‘রায়িনা’ বলো না-‘উনযুরনা’ বল এবং শুনতে থাক। আর কাফেরদের জন্যে রয়েছে
  10. তুমি সূর্যকে দেখবে, যখন উদিত হয়, তাদের গুহা থেকে পাশ কেটে ডান দিকে চলে যায়

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আনআম ডাউনলোড করুন:

সূরা Anam mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Anam শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত আনআম  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত আনআম  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত আনআম  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত আনআম  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত আনআম  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত আনআম  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত আনআম  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত আনআম  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত আনআম  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত আনআম  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত আনআম  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত আনআম  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত আনআম  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত আনআম  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত আনআম  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত আনআম  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত আনআম  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত আনআম  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত আনআম  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত আনআম  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত আনআম  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত আনআম  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত আনআম  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত আনআম  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত আনআম  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Wednesday, December 18, 2024

Please remember us in your sincere prayers