কোরান সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত 11 তাফসীর
﴿وَيَدْعُ الْإِنسَانُ بِالشَّرِّ دُعَاءَهُ بِالْخَيْرِ ۖ وَكَانَ الْإِنسَانُ عَجُولًا﴾
[ الإسراء: 11]
মানুষ যেভাবে কল্যাণ কামনা করে, সেভাবেই অকল্যাণ কামনা করে। মানুষ তো খুবই দ্রুততা প্রিয়। [সূরা বনী ইসরাঈল: 11]
Surah Al-Isra in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Al Isra ayat 11
আর মানুষ মন্দের জন্য কামনা করে যেমন তার উচিত ভালোর জন্য কামনা করা। আর মানুষ সদা ব্যস্ত-সমস্ত।
Tafsir Mokhtasar Bangla
১১. মানুষ রাগের সময় তার মূর্খতার দরুন সে নিজের উপর এবং নিজ সন্তান ও সম্পদের উপর অকল্যাণের বদদু‘আ করে। যেমনিভাবে সে কখনো কখনো নিজের জন্য কল্যাণের দু‘আ করে থাকে। আমি যদি তার অকল্যাণের বদদু‘আটি কবুল করতাম তাহলে সে নিজেও ধ্বংস হতো এবং তার সম্পদ ও সন্তান ধ্বংস হয়ে যেতো। বস্তুতঃ মানুষকে চঞ্চলতা দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ জন্য সে কখনো কখনো দ্রæত নিজ ক্ষতিও কামনা করে বসে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
মানুষ যেভাবে কল্যাণ কামনা করে, সেভাবেই অকল্যাণ কামনা করে; বস্তুতঃ মানুষ শীঘ্রতা-প্রিয়।[১] [১] মানুষ যেহেতু দ্রুততা প্রিয় এবং দুর্বল মনের তাই যখন সে কোন কষ্টের শিকার হয়, তখন ধ্বংসের জন্য ঐভাবে বদ্দুআ করে, যেভাবে কল্যাণের জন্য স্বীয় প্রতিপালকের কাছে প্রার্থনা করে। এটা তো প্রতিপালকের দয়া ও অনুগ্রহ যে, তিনি তাদের বদ্দুআ কবুল করেন না। এই বিষয়টাই সূরা ইউনুসের ১০:১১ নং আয়াতে উল্লিখিত হয়েছে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর মানুষ অকল্যাণ কামনা করে [ ১ ] ; যেভাবে কল্যাণ কামনা করে; মানুষ তো প্রকৃতিগতভাবে খুব বেশি তারাহুড়াকারী। দ্বিতীয় রুকু’ [ ১ ] মানুষ কিভাবে অকল্যাণ কামনা করে তার উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মানুষ যখন নিজের কোন কাজের উপর রাগ হয় বা সন্তান-সন্ততির উপর বিরক্ত হয় তখন তাদের জন্য বদ-দো'আ করতে থাকে। বলতে থাকে, আমার ধ্বংস হোক, আমার পরিবার নাশ হোক ইত্যাদি। এ জাতীয় দো'আ করলেও তার মন কিন্তু সে দো'আ কবুল হওয়া চায় না। আবার যখন নিজে খুব ভালো অবস্থায় থাকে, বা সন্তান-সন্ততির উপর খুশী হয়ে যায়। তখন বড় বড় নেক দো'আ করতে থাকে। সে তখন এটা কবুল হওয়া মন-প্ৰাণ থেকেই চায়। [ আদওয়াউল বায়ান ] কিন্তু আল্লাহ তাঁর রহমতের কারণে মানুষের নেক-দো'আ সমূহকে কবুল করে থাকেন আর বদ-দো'আর জন্য সময় দেন। মানুষের এ তাড়াহুড়াকারী চরিত্রের কারণে যদি তিনি তাদের শাস্তি দিতেন তবে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হতো। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাউকে তার নিজের ও সন্তান-সন্ততির উপর বদ-দো'আ করতে নিষেধ করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ তোমরা তোমাদের নিজের এবং তোমাদের সন্তান-সন্ততি ও তোমাদের কর্মচারীদের উপর বদ-দো'আ করো না । অনুরূপভাবে তোমাদের সম্পদ নাশের জন্য ও বদ-দো'আ করো না। কারণ এমন হতে পারে যে, আল্লাহর দো'আ কবুলের সময় তোমাদের এ বদ-দো'আ গুলো সংঘটিত হয়ে যাবে আর তা কবুল হয়ে যাবে। ” [ আবুদাউদঃ ১৫৩২ ] অন্য এক হাদীসে আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ কষ্ট ও যাতনায় পড়ে কখনো মৃত্যু কামনা করবে না। আর যদি তাকে মৃত্যু কামনা করতেই হয়, তবে সে যেন বলেঃ “ আয় আল্লাহ! যতদিন বেঁচে থাকাটা আমার জন্য মঙ্গলজনক হয় ততদিন আমাকে জীবিত রাখেন এবং যখন মৃত্যু আমার জন্য উত্তম হয়, তখন আমার মৃত্যু দেন । ” [ বুখারীঃ ৬৩৫১ ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
আল্লাহ তাআলা মানুষের একটা বদ অভ্যাসের বর্ণনা দিচ্ছেন যে, তারা কখনো কখনো মনভাঙ্গা ও নিরাশ হয়ে গিয়ে ভুল করে নিজের জন্যে অমঙ্গলের প্রার্থনা করতে শুরু করে। মাঝে মাঝে নিজের মাল-ধন ও সন্তানসন্ততির জন্যে বদদুআ করতে লাগে। কখনো মৃত্যুর, কখনো ধ্বংসের এবং কখনো অভিশাপের দুআ করে। কিন্তু তার প্রতিপালক আল্লাহ তার নিজের চেয়েও তার উপর বেশী দয়ালু। এদিকে সে দুআ করে আর ওদিকে যদি তিনি কবুল করে নেন তবে সাথে সাথেই সে ধ্বংস হয়ে যায় ( কিন্তু তিনি তা করেন না )। হাদীসেও আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমরা নিজেদের জান ও মালের জন্যে বদ দুআ করো না । নচেৎ কবুল হওয়ার মুহূর্তে হয়তো কোন খারাপ কথা মুখ দিয়ে বেরিয়ে পড়বে।” এর একমাত্র কারণ হচ্ছে মানুষের চাঞ্চল্যকর অবস্থাও দ্রুততা। মানুষ আশুরূপায়ণ কামনাকারীই বটে।এরই পরিপ্রেক্ষিতে হযরত সালমান ফারসী ( রাঃ ) ও হযরত ইবনু আব্বাস ( রাঃ ) হযরত আদমের ( আঃ ) ঘটনা বর্ণনা করেছেন যে, তখন তাঁর রূহ তাঁর পায়ের নিম্নদেশ পর্যন্ত পৌঁছে নাই, অথচ তখনই তিনি দাঁড়াবার চেষ্টা করেন। রূহ মাথার দিক থেকে আসছিল। যখন নাক পর্যন্ত পৌঁছলো তখন তার হাঁচি আসলো। তিনি বললেনঃ ( আরবি ) ( সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্যে )। তখন আল্লাহ তাআলা বলেনঃ ( আরবি ) ( হে আদম (আঃ )! তোমার প্রতিপালক তোমার প্রতি দয়া করুন!) রূহ যখন চক্ষু পর্যন্ত পৌঁছলো তখন তিনি চক্ষু খুলে দেখতে লাগলেন। তারপর যখন নীচের অঙ্গগুলিতে পৌঁছলো তখন তিনি খুশী হয়ে নিজের দিকে তাকাতে থাকলেন। তখনো পর্যন্ত পৌঁছে নাই। অথচ হাঁটার ইচ্ছা করলেন, কিন্তু হাঁটতে পারলেন না তখন দুআ করতে লাগলেনঃ “হে আল্লাহ! রাত্রির পূর্বেই যেন পায়ে রূহ্ চলে আসে!”
সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত 11 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে ও বিক্ষিপ্ত হবে।
- তারা যখন অবাঞ্চিত বাজে কথাবার্তা শ্রবণ করে, তখন তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে,
- অতঃপর তাদের সম্পর্কে সে মনে মনে ভীত হলঃ তারা বললঃ ভীত হবেন না। তারা তাঁকে
- মানুষকে দগ্ধ করবে।
- অতএব, আমি তারকারাজির অস্তাচলের শপথ করছি,
- তিনি বললেনঃ এই তো তারা আমার পেছনে আসছে এবং হে আমার পালনকর্তা, আমি তাড়াতাড়ি তোমার
- নভোমন্ডলে, ভুমন্ডলে, এতদুভয়ের মধ্যবর্তী স্থানে এবং সিক্ত ভূগর্ভে যা আছে, তা তাঁরই।
- কিছুই নয়, আমি তাদের কাছে সত্য পৌঁছিয়েছি, আর তারা তো মিথ্যাবাদী।
- মুহাম্মদ তোমাদের কোন ব্যক্তির পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সব
- বলে দিন, তোমরা যদি মনের কথা গোপন করে রাখ অথবা প্রকাশ করে দাও, আল্লাহ সে
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা বনী ইসরাঈল ডাউনলোড করুন:
সূরা Al Isra mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Al Isra শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers