কোরান সূরা আহ্কাফ আয়াত 11 তাফসীর
﴿وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِلَّذِينَ آمَنُوا لَوْ كَانَ خَيْرًا مَّا سَبَقُونَا إِلَيْهِ ۚ وَإِذْ لَمْ يَهْتَدُوا بِهِ فَسَيَقُولُونَ هَٰذَا إِفْكٌ قَدِيمٌ﴾
[ الأحقاف: 11]
আর কাফেররা মুমিনদের বলতে লাগল যে, যদি এ দ্বীন ভাল হত তবে এরা আমাদেরকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারত না। তারা যখন এর মাধ্যমে সুপথ পায়নি, তখন শীঘ্রই বলবে, এ তো এক পুরাতন মিথ্যা। [সূরা আহ্কাফ: 11]
Surah Al-Ahqaaf in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Ahqaf ayat 11
আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা তাদের সন্বন্ধে বলে যারা ঈমান এনেছে, ''এটি যদি ভাল হতো তাহলে তারা এর প্রতি আমাদের পাঠ শেখাত না।’’ আর যেহেতু তারা এর দ্বারা সৎপথের দিশা পায় নি তাই তারা তো বলবেই, ''এটি এক পুরনো মিথ্যা।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
১১. কুরআন ও রাসূলের আনা বিষয়ে অবিশ্বাসীরা ঈমানদারদেরকে বলে: যদি মুহাম্মাদ যা নিয়ে আগমন করেছেন তা সত্য হতো; যা কল্যাণের প্রতি পথ দেখায় তাহলে এর প্রতি আমাদের পূর্বে ফকীর, দাস ও দুর্বলরা অগ্রণী হতে পারতো না। বস্তুতঃ তারা যেহেতু তাদের রাসূল তাদের নিকট যা নিয়ে আগমন করেছেন তা থেকে আলো গ্রহণ করে নি তাই অচিরেই তারা বলবে: তিনি আমার নিকট যা নিয়ে এসেছেন তা মিথ্যা ও পুরাতন বিষয়; আমরা এ মিথ্যার অনুসরণ করি না।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
বিশ্বাসীদের সম্পর্কে অবিশ্বাসীরা বলে, ‘এটা ভাল হলে তারা এর দিকে আমাদের অগ্রগামী হত না।’ আর যখন তারা এ ( কুরআন ) দ্বারা পরিচালিত নয়, তখন তারা বলবে যে, ‘এটা তো এক পুরাতন মিথ্যা।’[১] [১] বিলাল, আম্মার, সুহাইব ও খাব্বাব ( রাযিবয়াল্লাহু আনহুম )-এর মত মুসলিমরা ছিলেন মক্কার মধ্যে সবচেয়ে দরিদ্র ও নিঃস্ব ব্যক্তিবর্গ। কিন্তু ইসলাম গ্রহণে অগ্রগামিতার সৌভাগ্য লাভে তাঁরাই ধন্য হন। এ দেখে মক্কার কাফেররা বলত যে, এই দ্বীনে যদি কোন কল্যাণ থাকত, তবে আমাদের মত সম্মানী ও মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিরাই সর্বপ্রথম তা গ্রহণ করত, ওরা আমাদের আগে ঈমান আনতে পারত না। ( অর্থাৎ তারা নিজেরাই নিজেদের ব্যাপারে ভেবে নিল যে, আল্লাহর নিকট তাদের বিরাট মর্যাদা রয়েছে। ) এই দ্বীন যদি আল্লাহর পক্ষ হতে হত, তবে তিনি তা গ্রহণ করার ব্যাপারে আমাদেরকে পিছনে ফেলে রাখতেন না। আর আমাদের তা গ্রহণ না করার অর্থই হল যে, এটা একটি পুরাতন মিথ্যা। অর্থাৎ, কুরআনকে তারা 'পুরাতন মিথ্যা' বলে আখ্যায়িত করল। যেমন এটাকে তারা أَسَاطِيْرُ الأَوَّلِيْنَ ( পূর্ববর্তীদের কেচ্ছা-কাহিনী )ও বলত। অথচ দুনিয়াতে কারো ধন-মালের মালিক হওয়া আল্লাহর নিকট গণ্য ব্যক্তি হওয়ার দলীল নয়। ( যেমন তাদের ভুল ধারণা ছিল বা শয়তান তাদেরকে এই ভুল ধারণায় ফেলে রেখেছিল। ) আল্লাহর নিকট গণ্য হওয়ার জন্য তো ঈমান ও ইখলাসের প্রয়োজন। আর তিনি যাকে ইচ্ছা করেন তাকে এই ঈমান ও ইখলাসের ধন দানে ধন্য করেন। যেমন তিনি পরীক্ষার জন্য যাকে ইচ্ছা তাকে মাল-ধন দিয়ে থাকেন।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর যারা কুফরী করেছে তারা যারা ঈমান এনেছে তাদের সম্পর্কে বলে, ‘যদি এটা ভাল হত তবে তারা এর দিকে আমাদেরকে অতিক্রম করে যেতে পারত না [ ১ ]। আর যখন তারা এটা দ্বারা হেদায়াত পায়নি তখন তারা অচিরেই বলবে, ‘এ এক পুরোনো মিথ্যা।’ [ ১ ] কুরাইশ নেতারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ব্যাপারে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করার জন্য যেসব যুক্তি কাজে লাগাতো এটা তার একটা। তারা বলতো, ‘এ কুরআন যদি সত্য হতো এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি একটি সঠিক জিনিসের দাওয়াত দিতেন তাহলে কওমের নেতারা, গোত্ৰসমূহের অধিপতিরা এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অগ্রসর হয়ে তা গ্ৰহণ করতো। এটা কি করে হতে পারে যে, কতিপয় অনভিজ্ঞ বালক এবং কিছু সংখ্যক নীচু পর্যায়ের ক্রীতদাস যেমন বিলাল, আম্মার, সুহাইব, খাব্বাব প্রমূখ সর্বাগ্রে ঈমান আনবে অথচ কওমের গণ্যমান্য ব্যক্তি যারা জ্ঞানী ও অভিজ্ঞ এবং আজ পর্যন্ত কওম যাদের জ্ঞান-বুদ্ধি ও ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করে আসছে তারা তা প্রত্যাখ্যান করবে? নতুন এই ধর্মে মন্দ কিছু অবশ্যই আছে। তাই কওমের গণ্যমান্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তা মানছে না। অতএব, তোমরাও তা থেকে দূরে সরে যাও, এই প্রতারণামূলক যুক্তি খাড়া করে তারা সাধারণ মানুষকে শান্ত করে রাখার চেষ্টা করতো। তারা মূলত: অহংকারবশেই উপরোক্ত ধরনের কূটতর্কের অবতারণা করত। অহংকার ও গর্ব মানুষের জ্ঞান বুদ্ধিকেও বিকৃত করে দেয়। অহংকারী ব্যক্তি নিজের বুদ্ধিকেই ভালমন্দের মাপকাঠি বলে মনে করতে থাকে। সে যা পছন্দ করে না, অন্যেরা তা পছন্দ করলে সে সবাইকে বোকা মনে করে, অথচ বাস্তবে সে নিজেই বোকা। সূরা আল-আন’আমের ৫৩ নং আয়াতেও কাফেরদের এ ধরনের উক্তি বর্ণিত হয়েছে। [ দেখুন, তাবারী, ইবনে কাসীর ]
সূরা আহ্কাফ আয়াত 11 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- আর কিই বা ক্ষতি হত তাদের যদি তারা ঈমান আনত আল্লাহর উপর কেয়ামত দিবসের উপর
- অবশেষে তিনি যখন সুর্যের অস্তাচলে পৌছলেন; তখন তিনি সুর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন
- এবং অধীন করেছি শয়তানদের কতককে, যারা তার জন্যে ডুবুরীর কাজ করত এবং এ ছাড়া অন্য
- তারা কি দেখে না যে, আমি রাত্রি সৃষ্টি করেছি তাদের বিশ্রামের জন্যে এবং দিনকে করেছি
- আপনি কেবল তাদেরকেই সতর্ক করতে পারেন, যারা উপদেশ অনুসরণ করে এবং দয়াময় আল্লাহকে না দেখে
- যাদেরকে তোমরা আল্লাহর সাথে শরীক করে রেখেছ, তাদেরকে কিরূপে ভয় কর, অথচ তোমরা ভয় কর
- অতঃপর তিনি এক কার্যোপকরণ অবলম্বন করলেন।
- সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
- সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
- তারা বলতঃ আমরা যখন মরে অস্থি ও মৃত্তিকায় পরিণত হয়ে যাব, তখনও কি পুনরুত্থিত হব?
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আহ্কাফ ডাউনলোড করুন:
সূরা Ahqaf mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Ahqaf শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers