কোরান সূরা হা-মীম আস-সাজদা আয়াত 12 তাফসীর
﴿فَقَضَاهُنَّ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ فِي يَوْمَيْنِ وَأَوْحَىٰ فِي كُلِّ سَمَاءٍ أَمْرَهَا ۚ وَزَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَحِفْظًا ۚ ذَٰلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ﴾
[ فصلت: 12]
অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে দু’দিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রত্যেক আকাশে তার আদেশ প্রেরণ করলেন। আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা। [সূরা হা-মীম আস-সাজদা: 12]
Surah Fussilat in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Fussilat ayat 12
তারপর তিনি তাদের সম্পূর্ণ করলেন সাত আসমানে, দুই দিনে, আর প্রত্যেক আকাশে তিনি আদেশ করেছেন তার করণীয়। আর আমরা নিকটবর্তী আকাশকে শোভিত করেছি প্রদীপমালা দিয়ে, আর সুরক্ষিত অবস্থায়। এটিই মহাশক্তিশালী সর্বজ্ঞাতার বিধান।
Tafsir Mokhtasar Bangla
১২. অতঃপর আল্লাহ আসমান সমূহের সৃষ্টি বৃহস্পতি ও শুক্র দু’দিনে পূর্ণ করলেন। বস্তুতঃ এর মাধ্যমে আসমান-যমীনের সৃষ্টি ছয় দিনে পূর্ণ হলো। আল্লাহ প্রত্যেক আসমানে তার জন্য নির্ধারিত বিষয় এবং আনুগত্য ও ইবাদাতের ব্যাপারে প্রত্যাদেশ অবতীর্ণ করলেন। আর আমি দুনিয়ার আসমানকে তারকারাজি দ্বারা সৌন্দর্য প্রদান করেছি এবং এর মাধ্যমে আসমানকে শয়তানদের চোরাই পথে শ্রবণের পথ রুদ্ধ করেছি। উল্লেখিত সবগুলো বিষয় সেই পরাক্রমশালীর নির্ধারণ যাঁকে কেউ পরাজিত করতে পারে না। যিনি তদীয় সৃষ্টির ব্যাপারে পরিজ্ঞাত।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে দু’দিনে সপ্তাকাশে পরিণত করলেন এবং প্রত্যেক আকাশের নিকট তার কর্তব্য ব্যক্ত করলেন।[১] আর আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করলাম প্রদীপমালা দ্বারা এবং তাকে করলাম সুরক্ষিত।[২] এ সব পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা। [১] অর্থাৎ, স্বয়ং আকাশমন্ডলীকে অথবা সেখানে বসবাসকারী ফিরিশতামন্ডলীকে বিশেষ বিশেষ কাজের এবং যিকর-আযকারের দায়িত্বে লাগিয়ে দিলেন।[২] অর্থাৎ, শয়তান থেকে সুরক্ষিত। যেমন, অন্যত্র এ কথা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। তারকারাজি সৃষ্টির তৃতীয় আর একটি উদ্দেশ্য অন্যত্র اهتِدَاءٌ ( পথ পাওয়া বা দিক নির্ণয় করা )ও বলা হয়েছে। ( সূরা নাহল ১৬:১৬ )
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
অত:পর তিনি সেগুলোকে সাত আসমানে পরিণত করলেন দু’দিনে এবং প্রত্যেক আসমানে তার নির্দেশ ওহী করে পাঠালেন এবং আমরা নিকটবর্তী আসমানকে সুশোভিত করলাম প্ৰদীপমালা দ্বারা এবং করলাম সুরক্ষিত। এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞের ব্যবস্থাপনা।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৯-১২ নং আয়াতের তাফসীর:
সবারই সৃষ্টিকর্তা, অধিকর্তা, শাসনকর্তা এবং পালনকর্তা একমাত্র আল্লাহ। সবারই উপর পূর্ণ ক্ষমতাবান একমাত্র তিনিই। যমীনের ন্যায় প্রশস্ত সৃষ্ট জিনিসকে তিনি স্বীয় পূর্ণ ক্ষমতাবলে মাত্র দুই দিনে সৃষ্টি করেছেন। মানুষের তার সাথে কুফরী করাও উচিত নয় এবং শির্ক করাও না। তিনিই যেমন সবারই সৃষ্টিকর্তা তেমনই তিনিই সবারই পালনকর্তা। এটা স্মরণ রাখার বিষয় যে, অন্যান্য আয়াতে যমীন ও আসমানকে ছয় দিনে সৃষ্টি করার কথা বর্ণিত হয়েছে, আর এখানে এগুলোকে সৃষ্টি করার সময় পৃথকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সুতরাং জানা গেল যে, প্রথমে যমীনকে সৃষ্টি করা হয়েছে। অট্টালিকা নির্মাণ করারও পদ্ধতি এটাই যে, প্রথমে ভিত্তি ও নীচের অংশ নির্মাণ করা হয়। তারপর উপরের অংশ ও ছাদ নির্মাণ করা হয়ে থাকে। যেমন মহামহিমান্বিত আল্লাহ্ বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তিনি পৃথিবীর সব কিছু তোমাদের জন্যে সৃষ্টি করেছেন, তৎপর তিনি আকাশের দিকে মনোসংযোগ করেন এবং ওকে সপ্তাকাশে বিন্যস্ত করেন ।”( ২:২৯ ) আর আল্লাহ তাআলা যে বলেছেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তোমাদেরকে সৃষ্টি করা কঠিনতর, না আকাশ সৃষ্টি? তিনিই এটা নির্মাণ করেছেন; তিনি এটাকে সুউচ্চ ও সুবিন্যস্ত করেছেন । তিনি রাত্রিকে করেছেন অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং প্রকাশ করেছেন সূর্যালোক; এবং পৃথিবীকে এরপর বিস্তৃত করেছেন। তিনি ওটা হতে বহির্গত করেছেন ওর পানি ও তৃণ, এবং পর্বতকে তিনি দৃঢ়ভাবে প্রোথিত করেছেন। এসব তোমাদের ও তোমাদের ( গৃহপালিত ) চতুষ্পদ জন্তুর ভোগের জন্যে।”( ৭৯ ২৭-৩৩ ) এর দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, আসমানকে প্রথমে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং যমীনকে এর পরে বিছানো হয়েছে; কিন্তু এর দ্বারা ভাবার্থ এই যে, পরে যমীন হতে পানি, চারা বের করা হয়েছে এবং পাহাড়কে গেড়ে দেয়া হয়েছে। যেমন এর পরেই রয়েছেঃ “ তিনি ওটা হতে বের করেছেন ওর পানি ও তৃণ ।” তারপর তিনি আসমান ও যমীনকে ঠিকঠাক করেছেন। সুতরাং দু’টি আয়াতের মধ্যে কোন বিরোধ নেই। হযরত সাঈদ ইবনে জুবায়ের ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, একটি লোক হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ )-কে বলেনঃ “ কুরআন কারীমের কতকগুলো আয়াতের মধ্যে আমি কিছুটা অনৈক্য দেখতে পাচ্ছি । যেমন একটি আয়াতে রয়েছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ ঐ দিন তাদের মধ্যে কোন বংশ সম্পর্ক থাকবে না এবং তারা পরস্পর জিজ্ঞাসাবাদ করবে না ।”( ২৩:১০১ ) অন্য আয়াতে আছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তারা একে অপরের সামনা-সামনি হয়ে পরস্পর জিজ্ঞাসাবাদ করবে ।”( ৫২:২৫ ) এক আয়াতে আছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তারা আল্লাহর কাছে কোন কথা গোপন করবে না ।”( ৪:৪২ ) অন্য আয়াতে রয়েছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ আমাদের প্রতিপালক আল্লাহর কসম! আমরা মুশরিক ছিলাম না ।”( ৬:২৩ ) এ আয়াতে রয়েছে যে, তারা গোপন করবে। আল্লাহ্ তা'আলা বলেছেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তোমাদেরকে সৃষ্টি করা কঠিনতর, না আকাশ সৃষ্টি? তিনিই এটা সৃষ্টি করেছেন ।......
এবং পৃথিবীকে এরপর বিস্তৃত করেছেন।”( ৭৯:২৭-৩০ ) এখানে মহান আল্লাহ্ আকাশ সৃষ্টির কথা উল্লেখ করেছেন যমীনের পূর্বে। আর এখানে ( সূরায়ে হা-মীম, আস্ সাজদায় ) বলেছেনঃ ( আরবী ) এখানে তিনি যমীন সৃষ্টি করার কথা উল্লেখ করেছেন আকাশ সৃষ্টির পূর্বে। আর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেছেনঃ ( আরবী ) তাহলে কি আল্লাহ্ এরূপ ছিলেন, তারপর গত হয়ে গেছেন? দয়া করে এগুলোর সঠিক অর্থ বুঝিয়ে দিন, যাতে অনৈক্য দূর হয়ে যায়। লোকটির এসব প্রশ্নের উত্তরে হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেনঃ “ যে দু’টি আয়াতের একটির মধ্যে পরস্পর জিজ্ঞাসাবাদের কথা রয়েছে এবং অন্যটিতে তা অস্বীকার করা হয়েছে । এটা দুই সময়ের কথা। শিংগায় দুটি ফুকার দেয়া হবে। প্রথম ফুৎকারের সময় পরস্পরের মধ্যে কোন জিজ্ঞাসাবাদ হবে না। দ্বিতীয় ফুঙ্কারের সময় পরস্পরের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ হবে। যে দুটি আয়াতের একটির মধ্যে কোন কথা গোপন না করার এবং অন্য আয়াতে গোপন করার কথা রয়েছে। এরও স্থল দু’টি। যখন মুশরিকরা দেখবে যে, একত্ববাদীদের গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়েছে তখন তারা বলবেঃ “ আমরা মুশরিক ছিলাম না । কিন্তু যখন তাদের মুখে মোহর লেগে যাবে এবং দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো সাক্ষ্য দিতে শুরু করবে তখন আর কিছুই গোপন থাকবে না এবং তাদের কৃতকর্মের স্বীকারুক্তি হয়ে যাবে। তখন তারা বলবেঃ “ হায়! আমরা যদি মাটি হয়ে যেতাম ।”আসমান এবং যমীনের সৃষ্টির ক্রম পর্যায়ের ব্যাপারেও কোন অনৈক্য নেই। প্রথমে দুই দিনে যমীনকে সৃষ্টি করা হয়। তারপর দুই দিনে আসমানকে সৃষ্টি করা হয়। অতঃপর যমীনের জিনিসগুলো, যেমন পানি, চারা, পাহাড়-পর্বত, প্রস্তরাদি, জড় পদার্থ ইত্যাদি দুই দিনে সৃষ্টি করেন। ( আরবী )-এর অর্থ এটাই। সুতরাং যমীনের পূর্ণ সৃষ্টিকার্য চার দিনে হয়েছে। আর আসমান সৃষ্টি করেছেন দুই দিনে।যে নামগুলো আল্লাহ তা'আলা নিজের জন্যে নির্ধারণ করেছেন ওগুলোর তিনি বর্ণনা দিয়েছেন যে, সদা-সর্বদা তিনি ঐরূপই থাকবেন। আল্লাহ তা'আলার কোন ইচ্ছাই অপূর্ণ থাকে না। সুতরাং কুরআন কারীমের মধ্যে মোটেই অনৈক্য নেই এবং এর আয়াতগুলো পরস্পর বিরোধী নয়। এর এক একটি শব্দ আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলার পক্ষ হতে এসেছে। যমীনকে আল্লাহ তা'আলা দুই দিনে সৃষ্টি করেছেন অর্থাৎ রবিবার ও সোমবারে। আর যমীনের উপর পাহাড়-পর্বত বানিয়েছেন। যমীনকে তিনি বরকতময় করেছেন। মানুষ এতে বীজ বপন করে এবং তা হতে গাছ, ফলমূল ইত্যাদি উৎপন্ন হয়। পৃথিবীবাসীর যেসব জিনিসের প্রয়োজন তার সবই যমীনেই উৎপন্ন হয়। ক্ষেত এবং বাগানের স্থানও তিনি বানিয়ে দিয়েছেন। যমীনের এই ঠিক-ঠাককরণ মঙ্গল ও বুধবারে হয়। চার দিনে যমীনের সৃষ্টিকার্য সমাপ্ত হয়। যে লোকগুলো এর জ্ঞান লাভ করতে চাচ্ছিল তারা পূর্ণ জবাব পেয়ে যায়। সুতরাং এ বিষয়ে তারা জ্ঞান লাভে সক্ষম হয়। যমীনের প্রতিটি অংশে মহান আল্লাহ ঐ জিনিস সরবরাহ করেছেন যা তথাকার বাসিন্দার জন্যে উপযোগী। যেমন ইয়ামনে আসব’, সাকূরে ‘সাকূরী’ এবং রাষ্ট্র এ তায়ালিসা’। আয়াতের শেষ বাক্যের ভাবার্থ এটাই। এটাও বলা। হয়েছে যে, যার যা প্রয়োজন ছিল, আল্লাহ তা'আলা তার জন্যে তা সরবরাহ করেছেন। এ অর্থটি আল্লাহ তা'আলার নিম্নের উক্তির সহিত সাদৃশ্যপূর্ণঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তোমরা যা কিছু চেয়েছে, তিনি ( আল্লাহ ) তোমাদেরকে তার সবই দিয়েছেন ।”( ১৪:৩৪ ) এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন যা ছিল ধূম্রপুঞ্জ বিশেষ। আল্লাহ একে এবং পৃথিবীকে বললেনঃ তোমরা উভয়ে এসো ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। অর্থাৎ আমার হুকুম মেনে নিয়ে আমি যা বলি তাই হয়ে যাও, খুশী মনে অথবা বাধ্য হয়ে।হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, যেমন আকাশকে হুকুম করা হলো সূর্য, চন্দ্র ও তারকারাজি উদিত করার। আর যমীনকে হুকুম করা হলো পানির নহর জারী করার এবং ফল-মূল উৎপন্ন করার ইত্যাদি। উভয়েই খুশী মনে হুকুম মেনে নিতে সম্মত হয়ে গেল এবং বললোঃ “ আমরা আসলাম অনুগত হয়ে । কথিত আছে যে, এদুটোকে কথোপকথনকারীদের স্থলাভিষিক্ত করা হয়। একথাও। বলা হয়েছে যে, যমীনের ঐ অংশ কথা বলেছিল যেখানে কাবা ঘর নির্মিত হয়েছে। আর আসমানের ঐ অংশ কথা বলেছিল যা ঠিক এর উপরে রয়েছে। এসব ব্যাপারে সঠিক জ্ঞানের অধিকারী একমাত্র আল্লাহ।ইমাম হাসান বসরী ( রঃ ) বলেন যে, যদি আসমান ও যমীন আনুগত্য স্বীকার না করতো তবে ওদেরকে শাস্তি দেয়া হতো, যে শাস্তির যন্ত্রণা তারা অনুভব করতো।অতঃপর আল্লাহ তা'আলা আকাশমণ্ডলকে দুই দিনে সপ্তাকাশে পরিণত করলেন। অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারে। প্রত্যেক আকাশে তিনি ইচ্ছামত জিনিস ও ফেরেশতামণ্ডলী প্রতিষ্ঠিত ও নিয়োজিত করে দেন। দুনিয়ার আকাশকে তিনি তারকারাজি দ্বারা সুশোভিত করেন যেগুলো যমীনে আলো বিচ্ছুরিত করে এবং ঐ শয়তানদের প্রতি ওরা সজাগ দৃষ্টি রাখে যারা উর্ধ জগতের কিছু শুনবার উদ্দেশ্য উপরে উঠার ইচ্ছা করে এবং ওগুলো সব দিক হতে ঐ শয়তানদের প্রতি নিক্ষিপ্ত হয়। মহান আল্লাহ বলেনঃ এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা, যিনি সবারই উপর বিজয়ী, যিনি বিশ্বজগতের প্রতিটি অংশের সমস্ত প্রকাশ্য ও গোপনীয় বিষয়ের খবর রাখেন।হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, ইয়াহূদীরা রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে আসমান ও যমীনের সৃষ্টিকার্য সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তরে বলেনঃ “ আল্লাহ তা'আলা রবিবার ও সোমবারে যমীন সৃষ্টি করেন । পাহাড় পর্বত এবং সমুদয় উপকারী বস্তুকে সৃষ্টি করেন মঙ্গলবারে। বুধবারে গাছ-পালা, পানি, শহর এবং আবাদী ও অনাবাদি অর্থাৎ জনপদ ও মরু প্রান্তর সৃষ্টি করেন। সুতরাং এটা হলো চার দিন।” এটা বর্ণনা করার পর রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এ আয়াতটিই পাঠ করেন। অতঃপর বলেনঃ “ বৃহস্পতিবারে আল্লাহ তা'আলা আসমান সৃষ্টি করেন এবং শুক্রবারে তিন ঘন্টা বাকী থাকা পর্যন্ত নক্ষত্ররাজি, সূর্য, চন্দ্র এবং ফেরেশতামণ্ডলী সৃষ্টি করেন । দ্বিতীয় ঘন্টায় প্রত্যেকটি জিনিসের উপর বিপদ আপতিত করেন যার থেকে লোক উপকার লাভ করে থাকে। তৃতীয় ঘন্টায় তিনি হযরত আদম ( আঃ )-কে সৃষ্টি করেন, তাঁকে বেহেশতে প্রতিষ্ঠিত করেন, ইবলীসকে হুকুম করেন হযরত আদম ( আঃ )-কে সিজদা করার এবং পরিশেষে তাকে সেখান হতে বের করে দেন।” ইয়াহূদীরা বললোঃ “ হে মুহাম্মাদ ( সঃ )! এরপর কি হলো?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন । তারা বললোঃ “ আপনি সবই ঠিক বলেছেন, কিন্তু শেষ কথাটি বলেননি । তা হলো এই যে, অতঃপর তিনি আরাম গ্রহণ করেন। তাদের একথা শুনে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) রাগান্বিত হলেন। তখন নিম্নলিখিত আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ আমি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী এবং এতদুভয়ের মধ্যস্থিত সবকিছু সৃষ্টি করেছি ছয় দিনে; আমাকে কোন ক্লান্তি স্পর্শ করেনি । অতএব, তারা যা বলে তাতে তুমি ধৈর্য ধারণ কর।”( ৫০:৩৮-৩৯ ) ( এটা ইবনে জারীর (রঃ ) বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এ বর্ণনাটি গারীব) হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ( একদা ) রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমার হাত ধরে বললেনঃ “ আল্লাহ তা'আলা মাটিকে শনিবারের দিন সৃষ্টি করেন । তাতে পর্বতমালা স্থাপন করেন রবিবারে। বৃক্ষরাজি সৃষ্টি করেন সোমবারে। অপ্রীতিকর জিনিস সৃষ্টি করেন মঙ্গলবারে। আলো সৃষ্টি করেন বুধবারে। জীব-জন্তু যমীনে ছড়িয়ে দেন বৃহস্পতিবারে। আর শুক্রবারের দিন আসরের এবং রাত্রির মাঝামাঝি সময়ে, দিনের শেষ ভাগে হযরত আদম ( আঃ )-কে সৃষ্টি করেন এবং এভাবে সৃষ্টিকার্য সমাপ্ত করেন।” ( এ হাদীসটি ইবনে জুরায়েজ (রঃ ) বর্ণনা করেন। ইমাম মুসলিম ( রঃ ) এবং ইমাম নাসাঈও ( রঃ ) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এটাও গারীব হাদীস। ইমাম বুখারী ( রঃ ) এটাকে মুআল্লাল বলেছেন এবং বলেছেন যে, কেউ কেউ এটাকে হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে এবং হযরত হুরাইরা ( রাঃ ) কা'ব আহবার ( রাঃ ) হতে বর্ণনা করেছেন এবং এটাই সঠিকতম)
সূরা হা-মীম আস-সাজদা আয়াত 12 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- যারা বিশ্বাস স্থাপন করে, এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তা˦#2503;দরকে ক্ষমা ও মহান প্রতিদানের প্রতিশ্রুতি
- তারা কি প্রত্যক্ষ করে না, তাদের পূর্বে আমি কত সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি যে, তারা তাদের
- যে কেউ পাপ করে, সে নিজের পক্ষেই করে। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
- তারা বলল, কোন ক্ষতি নেই। আমরা আমাদের পালনকর্তার কাছে প্রত্যাবর্তন করব।
- একশ্রেণীর লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে গোমরাহ করার উদ্দেশে অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে
- যখন তারা কান পেতে আপনার কথা শোনে, তখন তারা কেন কান পেতে তা শোনে, তা
- হে মারইয়াম! তোমার পালনকর্তার উপাসনা কর এবং রুকুকারীদের সাথে সেজদা ও রুকু কর।
- হে ঈমানদারগন! তোমাদের প্রতি নিহতদের ব্যাপারে কেসাস গ্রহণ করা বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। স্বাধীন ব্যক্তি স্বাধীন
- অতএব, আপনি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন। যেদিন আহবানকারী আহবান করবে এক অপ্রিয় পরিণামের দিকে,
- তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী। তারা শরীক করে, তিনি তা থেকে উর্ধ্বে।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা হা-মীম আস-সাজদা ডাউনলোড করুন:
সূরা Fussilat mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Fussilat শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers