কোরান সূরা আনআম আয়াত 121 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Anam ayat 121 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা আনআম আয়াত 121 আরবি পাঠে(Anam).
  
   

﴿وَلَا تَأْكُلُوا مِمَّا لَمْ يُذْكَرِ اسْمُ اللَّهِ عَلَيْهِ وَإِنَّهُ لَفِسْقٌ ۗ وَإِنَّ الشَّيَاطِينَ لَيُوحُونَ إِلَىٰ أَوْلِيَائِهِمْ لِيُجَادِلُوكُمْ ۖ وَإِنْ أَطَعْتُمُوهُمْ إِنَّكُمْ لَمُشْرِكُونَ﴾
[ الأنعام: 121]

যেসব জন্তুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয় না, সেগুলো থেকে ভক্ষণ করো না; এ ভক্ষণ করা গোনাহ। নিশ্চয় শয়তানরা তাদের বন্ধুদেরকে প্রত্যাদেশ করে-যেন তারা তোমাদের সাথে তর্ক করে। যদি তোমরা তাদের আনুগত্য কর, তোমরাও মুশরেক হয়ে যাবে। [সূরা আনআম: 121]

Surah Al-Anam in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Anam ayat 121


আর আহার করো না যাতে আল্লাহ্‌র নাম উল্লেখ করা হয় নি, কারণ নিঃসন্দেহ এটি নিশ্চিত পাপাচার। আর নিঃসন্দেহ শয়তানরা তাদের বন্ধুবান্ধদের প্ররোচনা দেয় তোমাদের সঙ্গে বিবাদ করতে, আর তোমরা যদি তাদের আজ্ঞাপালন করো তবে নিঃসন্দেহ তোমরা নিশ্চয়ই বহুখোদাবাদী হবে।


Tafsir Mokhtasar Bangla


১২১. হে মুসলমানগণ! তোমরা আল্লাহর নামে জবাই না হওয়া পশুর গোস্ত খেয়ো না। জবাইর সময় আল্লাহর নাম উচ্চারিত হোক বা না হোক। বস্তুতঃ এমন পশুর গোস্ত খাওয়া মানে আল্লাহর আনুগত্য ছেড়ে তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করা। নিশ্চয়ই শয়তানরা মৃত পশুর গোস্ত খাওয়ার বিষয়ে তাদের বন্ধুদের অন্তরে সন্দেহ সৃষ্টি করে তোমাদের সাথে ঝগড়া করার কুমন্ত্রণা দেয়। হে মুসলমানগণ! মৃত পশুর গোস্ত খাওয়াকে হালাল করার জন্য উপস্থাপিত সন্দেহের ক্ষেত্রে তাদের অনুসরণ করলে তোমরা ও তারা সমান পর্যায়ের মুশরিক হয়ে যাবে।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


যার যবেহকালে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়নি, তা তোমরা ভক্ষণ করো না। কেননা, তা পাপ।[১] আর নিশ্চয় শয়তান তার বন্ধুদেরকে তোমাদের সাথে বিবাদ করতে প্ররোচনা দেয়।[২] যদি তোমরা তাদের কথামত চল, তাহলে অবশ্যই তোমরা অংশীবাদী হয়ে যাবে। [১] অর্থাৎ, ইচ্ছাকৃতভাবে যে পশুকে আল্লাহর নাম না নিয়েই যবেহ করা হয়েছে, তা খাওয়া ফাসেক্বী ( পাপ ) ও অবৈধ। ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) এর অর্থ এটাই করেছেন। তিনি বলেন, 'যে ভুলে যায়, তাকে ফাসেক বলা হয় না।' ইমাম বুখারীর সমর্থনও রয়েছে এরই প্রতি এবং হানাফীদেরও মত এটাই। তবে ইমাম শাফেয়ীর মত হল, মুসলিমের যবেহ করা পশু উভয় অবস্থাতেই হালাল, চাহে সে আল্লাহর নাম নিক অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দিক। আর তিনি وَإِنَّهُ لَفِسْقٌ ( কেননা, তা পাপ ) কথাটিকে গায়রুল্লাহর নামে যবেহ করা পশুর বিষয়ীভূত মনে করেছেন। [২] শয়তান স্বীয় সহচরদের মাধ্যমে এ কথা রটায় যে, মুসলিমরা আল্লাহর যবেহকৃত ( অর্থাৎ, মৃত ) পশুকে তো হারাম মনে করে, আর তাদের নিজ হাতে যবেহকৃত পশুকে হালাল মনে করে, অথচ তারা দাবী করে যে, আমরা আল্লাহকে মান্য করে চলি। মহান আল্লাহ বলেন, শয়তান এবং তার সহচরদের কুমন্ত্রণার পিছনে পড়ো না। যে পশু মৃত, অর্থাৎ, যবেহ ছাড়াই মারা গেছে, তাতে যেহেতু আল্লাহর নাম নেওয়া হয়নি, সেহেতু তা খাওয়া হালাল নয়। ( অবশ্য পঙ্গপাল ও সামুদ্রিক প্রাণী ব্যতিক্রম। কারণ, হাদীসানুযায়ী তা মৃতও হালাল। )

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


আর যাতে আল্লাহ্‌র নাম নেয়া হয়নি তার কিছুই তোমারা খেও না; এবং নিশ্চয় তা গর্হিত [] নিশ্চয়ই শয়তানরা তাদের বন্ধুদেরকে তোমাদের সাথে বিবাদ করতে প্ররোচনা দেয়; আর যদি তোমারা তাদের অনুগত্য কর, তবে তোমারা অবশ্যই মুশরিক []। [] অর্থাৎ যার উপর আল্লাহর নাম নেয়া হয় নি এমন বস্তু খাওয়া ফিসক। এখানে ‘ফিসক’ অর্থ আল্লাহ যা হালাল করেছেন তার বহির্ভূত [ জালালাইন ] সুতরাং যে সমস্ত প্রাণীর যবেহ আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে না হয়ে অপর কোন কিছুর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হবে, যেমন মূর্তি বা দেব-দেবীর নামে যবেহ করা হবে, তাও এ আয়াতের নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত হয়ে হারাম হবে। অনুরূপভাবে ইচ্ছাকৃত আল্লাহর নাম উচ্চারণ না করলে সে প্রাণীও অধিকাংশ আলেমের নিকট এ আয়াতের আওতাভুক্ত হওয়ার কারণে হারাম হবে। [ সা'দী ] [] কাফেররা যখন শুনল যে, মুসলিমরা নিজে আল্লাহর নাম নিয়ে যাযবাই করে তা খায়, আর যাযবাই করা হয় নি, এমনিতেই মারা যায় তারা তা খায় না, তখন তারা বলতে লাগল, আল্লাহ স্বয়ং যেটা যবাই করলেন সেটা তোমরা খাও না, অথচ যেটা তোমরা যবাই কর সেটা খাও, ( অর্থাৎ এটা কেমন কথা? ) [ আবু দাউদ: ২৮১৮ ইবন মাজাহঃ ৩১৭৩ ]আল্লাহ্ তা'আলা তাদের এ কথার জবাব দিতেই আলোচ্য আয়াত নাযিল করেন সাদী] এর দ্বারা বোঝা যায় যে, আনুগত্যের মধ্যেও শির্ক রয়েছে [ কিতাবুত তাওহীদ ] অর্থাৎ কেউ কোন কিছু শরীআত হিসেবে প্রবর্তন করলো আর অন্যরা তার আনুগত্য করলো, এতে যারা শরীআত হিসেবে প্রবর্তন করলো তারা হলো, তাগুত। আর যারা তার আনুগত্য করে সেটা মেনে নিলো তারা আল্লাহর সাথে শির্ক করলো। [ আশ-শির্ক ফিল কাদীম ওয়াল হাদীস.
৭৮-৭৯, ৪৯০-৪৯৩, ৯৯৫-১০৩১, ১১০৫-১১১৫
]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


এই আয়াতে এটাই বলা হয়েছে যে, যখন কোন জন্তুকে যবাই করার সময় আল্লাহর নাম নেয়া হবে না তখন সেটা হালাল নয়, যদিও যবাইকারী মুসলমান হয়। ফিকাহ্ শাস্ত্রের ইমামগণ এই মাসআলায় তিনটি উক্তির উপর মতভেদ করেছেন। কেউ বলেছেন যে, যে যবাইকৃত জন্তুর উপর আল্লাহর নাম নেয়া হয়নি সেটা হালাল নয়, নাম না নেয়া ইচ্ছাপূর্বকই হাক বা ভুল বশতঃই হোক।” ( এটা ইবনে উমার (রাঃ ), শাবী ( রাঃ ), নাফি’ ( রঃ ) এবং মুহাম্মাদ ইবনে সীরীন ( রঃ ) হতে বর্ণিত হয়েছে) আসহাবে মুতাকাদ্দেমীন ও মুতাআখখেরীনের একটি দল এ উক্তিকেই সমর্থন করেছেন। পরবর্তী শাফিঈ মাযহাবের লোকেরা তাঁদের ‘আরবাঈন’ নামক গ্রন্থে এই মতটাই গ্রহণ করেছেন। দলীল হিসেবে তারা এ আয়াতটিই পেশ করেছেন। আরও পেশ করেছেন শিকার সম্পর্কীয় নিম্নের আয়াতটিঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তোমাদের শিকারীজন্তু তোমাদের জন্যে যা আবদ্ধ রাখে তা তোমরা খাও এবং ওর উপর আল্লাহর নাম নিয়ে নাও ।( ৫:৪ ) মহান আল্লাহ ( আরবী ) দ্বারা আরও গুরুত্ব আরোপ করেছেন এবং বলা হয়েছে যে, ( আরবী )-এর ( আরবী ) সর্বনামটি ( আরবী )-এর দিকে প্রত্যাবর্তিত হচ্ছে। অর্থাৎ এরূপ যবাইকত জন্তু খাওয়া গর্হিত কাজ। আবার এ কথাও বলা হয়েছে যে, ( আরবী ) -এর দিকে প্রত্যাবর্তিত হয়েছে। অর্থাৎ গায়রুল্লাহর নামে যবাই করা গর্হিত কাজ। আর যবাই করা ও শিকার করার সময় আল্লাহর নাম নেয়ার যে হাদীসগুলো এসেছে। সেগুলো হচ্ছে আদী ইবনে হাতিম ও আবু সা'লাবা বর্ণিত হাদীসের মতই। তা হচ্ছে নিম্নরূপঃ“ যখন তোমরা তোমাদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরকে শিকারের উদ্দেশ্যে পাঠাবে এবং পাঠাবার সময় বিসমিল্লাহ বলবে তখন যদি কুকুর তোমাদের জন্যে শিকারকে ধরে রাখে এবং তা থেকে কিছুই না খায় তবে তা তোমরা খেতে পার, যদিও তা যখমী হয়ে মারা যায় ।” হাদীসটি সহীহ বুখারী ও মুসলিমেও রয়েছে। রাফি’ ইবনে খাদীজ ( রাঃ ) বর্ণিত হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেন“ যা রক্ত প্রবাহিত করে এবং আল্লাহর নাম নেয়া হয় তা তোমরা খাও ।” এই হাদীসটিও সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) জ্বিনদেরকে বলেনঃ “ তোমাদের জন্যে প্রত্যেক সেই অস্থি বা হাড্ডি হালাল যার উপর আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে ।( হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন) হযরত জুনদুব ইবনে সুফিয়ান ( রাঃ ) বর্ণিত হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেন- ঈদ-উল-আযহার দিনে যে ব্যক্তি ঈদের নামাযের পূর্বে কুরবানী করলো, তার উচিত যে, সে যেন ঈদের নামাযের পর পুনরায় কুরবানীর পশু যবাই করে। আর যে ব্যক্তি নামাযের পূর্বে কুরবানী করেনি সে যেন নামাযের পর আল্লাহর নাম নিয়ে কুরবানীর পশু যবাই করে।”হযরত আয়েশা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, জনগণ রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে জিজ্ঞেস করেন, “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! লোকেরা আমাদের কাছে গোশতের উপঢৌকন পাঠিয়ে থাকে, তারা যে ওর উপর আল্লাহর নাম নিয়েছে কি নেয়নি তা আমাদের জানা নেই ( সুতরাং তা খাওয়া আমাদের জন্যে বৈধ হবে কি? )রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) উত্তরে বলেন, “ যদি তোমাদের সন্দেহ হয় তবে তোমরা নিজেরাই আল্লাহর নাম নিয়ে তা খেয়ে নাও । হযরত আয়েশা ( রাঃ ) বলেন যে, ঐ লোকগুলো নওমুসলিম ছিল। ( এই হাদীসটি ইমাম বুখারী (রঃ ) বর্ণনা করেছেন) জনগণের জিজ্ঞেস করার কারণ এই যে, তাদের ধারণায় বিসমিল্লাহ বলা তো জরুরী, কিন্তু লোকগুলো নওমুসলিম হওয়ার কারণে বিসমিল্লাহ নাও বলে থাকতে পারে। তাই তারা জিজ্ঞেস করেন এবং রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) সতর্কতামূলকভাবে খাওয়ার সময় তাদেরকে বিসমিল্লাহ বলার উপদেশ দেন, যাতে ওর উপর বিসমিল্লাহ বলা না হয়ে থাকলেও খাওয়ার সময় বিসমিল্লাহ বলে নেয়া ওর বিনিময় হয়ে যায়। আর তিনি জনগণকে নির্দেশ দেন যে, ঠিকভাবে যেন ইসলামের আহকাম জারী হয়ে যায়। দ্বিতীয় মাযহাব এই যে, যবাই করার সময় বিসমিল্লাহ বলা মোটেই শর্ত নয়, বরং মুস্তাহাব। যদি ইচ্ছাপূর্বক বা ভুলবশতঃ আল্লাহর নাম না নেয়াও হয় তবুও কোন ক্ষতি নেই। এটাই ইমাম শাফিঈর মাযহাব। ইমাম আহমাদ ( রঃ ) এবং ইমাম মালিকও ( রঃ ) এ কথাই বলেন। ইমাম শাফিঈ ( রঃ ) ( আরবী ) -এই আয়াতকে ( আরবী )-এর উপর করেছেন। যেমন আল্লাহ পাকের ( আরবী ) এই উক্তি রয়েছে। ইবনে জুরাইজ ( রঃ ) বলেছেন যে, এখানে খেতে নিষেধ করণ দ্বারা ঐ যবাইকৃত জন্তু উদ্দেশ্য যাকে কুরায়েশরা মূর্তির জন্যে যবাই করে। অনুরূপভাবে মাজুসদের যবাইকৃত জীবও হালাল নয়। এটাই ঐ মাযহাব যার উপর ইমাম শাফিঈ ( রঃ ) চলেছেন এবং এটাই মজবুতও বটে । পরবর্তী কোন কোন মনীষী এই উক্তিটিকে এভাবে মজবুত বানাবার চেষ্টা করেছেন যে, ( আরবী )-এর ( আরবী ) টি ( আরবী ) রূপে এসেছে। অর্থাৎ আল্লাহর নাম নেয়া হয়নি এরূপ যবাইকৃত জীব তোমরা খেয়ো না, অবস্থা এই যে, এটা হচ্ছে গর্হিত কাজ। আর গর্হিত বস্তু হচ্ছে ওটাই যাকে গায়রুল্লাহর নামে যবাই করা হয়। তারপর এই দাবী করা হয়েছে যে, এটা নির্দিষ্ট ( আরবী ) এবং ( আরবী ) টি সংযোগকারী ( আরবী ) হওয়া বৈধ নয়। কেননা এই অবস্থায়। ( আরবী ) -এর বা সংযোগ -এর উপর অবশ্যম্ভাবী হয়ে যাবে। আর এটা ভুল । কেননা এই দলীল এর পরের বাক্য ( আরবী ) দ্বারা ভেঙ্গে যাচ্ছে। কারণ এখানে তো নিশ্চিত রূপেই বা সংযোগ আছে। তাহলে যেভাবে পূর্ববর্তী ( আরবী ) কে ( আরবী ) বলা হয়েছে সেভাবেই যদি একেও ( আরবী ) মেনে নেয়া হয় তবে এর উপর এই বাক্যের সংযোগ অবৈধ হবে। আর যদি এর পূর্বের ( আরবী )এর উপর ( আরবী ) বা সংযোগ স্থাপন করা হয় তবে যে প্রতিবাদ এরা অন্যদের উপর আনয়ন করেছেন সেই প্রতিবাদ তাদের নিজেদের উপরই প্রত্যাবর্তিত হবে। তবে হ্যা, যদি এই ( আরবী ) কে ( আরবী ) না মানা হয় তবে এ প্রতিবাদ মিটে যেতে পারে। কিন্তু যে দাবী করা হচ্ছিল তা সম্পূর্ণরূপে বাতিল হয়ে যাবে। আল্লাহ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ )-এর উক্তি এই যে, এর দ্বারা ঐ মৃতজন্তুকে বুঝানো হয়েছে যে আপনা আপনিই মারা গেছে। এই মাযহাবের সমর্থনে ইমাম আবু দাউদ ( রঃ )-এর একটি মুরসাল হাদীসও রয়েছে যাতে আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেন-“ মুসলমান কর্তৃক যবাইকৃত জন্তু হালাল, সে ওর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করুক বা না-ই করুক তা সে খেতে পারে । কেননা, সে নাম নিলে আল্লাহরই নাম নিতো।” এ হাদীসটি মুরসাল। তবে এর পৃষ্ঠপোষকতায় দারে কুতনীর একটি হাদীস রয়েছে যা হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে। তা এই যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেন-“ যদি মুসলমান যবাই করে এবং সে আল্লাহর নাম নাও নেয় তবুও সে তা খেতে পারে । কেননা, সেই মুসলমান স্বয়ং যেন আল্লাহরই একটা নাম।” সে যখন যবাই করে তখন তার নিয়ত এটাই থাকে যে, সে আল্লাহর নামে যবাই করছে। ইমাম বায়হাকী ( রঃ )-ও পূর্ব বর্ণিত হযরত আয়েশা ( রাঃ )-এর হাদীস থেকেই দলীল গ্রহণ করেছেন যে, জনগণ জিজ্ঞেস করলোঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! নওমুসলিম লোকেরা আমাদের কাছে গোশতের উপঢৌকন নিয়ে আসে । তারা ( যবাই করার সময় ) ওর উপর আল্লাহর নাম নেয় কি নেয় না তা আমরা জানি না ( সুতরাং তা আমরা খেতে পারি কি-না? )।” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) উত্তরে তাদেরকে বলেন,“ তোমরা ( খাওয়ার সময় ) আল্লাহর নাম নিয়ে খেয়ে নাও ।” কাজেই বুঝা গেল যে, যদি আল্লাহর নাম নিয়ে নেয়া জরুরীই হতো তবে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) প্রকৃত তত্ত্ব অনুসন্ধান করা ছাড়া ঐ গোত খাওয়ার অনুমতি দিতেন না। আল্লাহ পাকই সবচেয়ে বেশী জানেন। এই মাসআলায় তৃতীয় উক্তি এই যে, যবাইকৃত জীবের উপর যদি বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে যায় তবে তা ভক্ষণে কোন দোষ নেই। আর যদি ইচ্ছাপূর্বক বিসমিল্লাহ ছেড়ে দেয় তবে তা খাওয়া বৈধ হবে না। ইমাম মালিক ( রঃ ) এবং ইমাম আহমাদ ( রঃ )-এর প্রসিদ্ধ মাযহাব এটাই। ইমাম আবু হানীফা ( রঃ ) এবং তার সহচরবৃন্দেরও এটাই উক্তি। ইমাম আবুল হাসান তাঁর হিদায়া’ নামক গ্রন্থে লিখেছেনঃ “ ইমাম শাফিঈ ( রঃ )-এর পূর্বে এর উপর ইজমা ছিল যে, ইচ্ছাপূর্বক বিসমিল্লাহ ছেড়ে দেয়া হলে তা হারাম । এ জন্যে ইমাম আবু ইউসুফ ( রঃ ) ও অন্যান্য গুরুজন বলেছেন যে, যদি কোন শাসনকর্তা এরূপ যবাইকৃত জন্তুর গোশত বেচা কেনার অনুমতি দেয় তবে তা মান্য করা চলবে না। কেননা, এতে ইজমায়ে উম্মতের বিরোধিতা করা হবে। আর ইজমায়ে উম্মতের বিরোধিতার সাথে কোন কিছুই বৈধ হতে পারে না। হিদায়া গ্রন্থকারের এ কথা বিস্ময়করই বটে। কেননা, ইমাম শাফিঈ ( রঃ )-এর পূর্বেও এরূপ মতভেদ হওয়া প্রমাণিত আছে। আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে বেশী জানেন।ইমাম জাফর ইবনে জারীর ( রঃ ) বলেন যে, বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে গেছে এমন ব্যক্তির যবাইকৃত গোশত খাওয়াকে যে হারাম বলে সে হুজ্জতের সমস্ত উক্তি হতে বেরিয়ে পড়লো এবং রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হতে যে হাদীসটি বর্ণিত আছে তার বিরোধিতা করলো। হাদীসটি এই যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনমুসলমানের জন্যে স্বয়ং তার মুসলমান হওয়াটাই যথেষ্ট, সুতরাং যদিও সে ভুলবশতঃ যবাই করার সময় বিসমিল্লাহ না বলে তবুও তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে তা খেতে পার।” এই হাদীসটিকে ( আরবী ) বলা হয়েছে এবং অন্যেরা একে দৃঢ় করেছেন। এর দ্বারা এটা সাব্যস্ত হচ্ছে যে, এ হাদীসটিকে মারফু বলে তুল করেছেন মাকাল ইবনে উবাইদুল্লাহ আল জাযারী। ইমাম বায়হাকী ( রঃ )-এর উক্তি অনুসারে এই বর্ণনাটিই বিশুদ্ধতম। ইমাম ইবনে জারীর ( রঃ )-এর নীতি এই যে, তিনি এমন দু’একটি উক্তির প্রতি মোটেই সম্মান প্রদর্শন করেন না যা জমহুরের উক্তির বিপরীত হয় এবং ঐ ইজমাকেই তিনি আমলের যোগ্য মনে করে থাকেন। একটি লোক হাসান বসরী ( রঃ )-কে নিম্নের মাসআলাটি জিজ্ঞেস করেঃ “ একটি লোকের কাছে জবাইকৃত অনেক পাখী নিয়ে আসা হয় । ও গুলির মধ্যে কতকগুলোর উপর আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছিল এবং কতকগুলোর উপর ভুলবশতঃ নাম নেয়া হয়নি। আর এই পাখীগুলো পরস্পর মিশ্রিত হয়ে গিয়েছিল ( এখন ওগুলোর মাংস হালাল হবে কি? ) হযরত হাসান বসরী ( রঃ ) উত্তরে বলেন, “ তোমরা সবগুলোই খেতে পার ।”মুহাম্মাদ ইবনে সীরীন ( রঃ )-কে এই প্রশ্নই করা হলে তিনি উত্তরে বলেনঃ “ যেগুলোর উপর আল্লাহর নাম নেয়া হয়নি সেগুলো তোমরা খেয়ো না । কেননা, আল্লাহ তা'আলা বলেছেন ( আরবী ) অর্থাৎ “ যার উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়নি তা তোমরা খেয়ো না ।” আর ইবনে মাজায় যে হাদীসটি রয়েছে ওকে তিনি স্বীয় ফতওয়ার দলীল হিসেবে গ্রহণ করেছেন। অর্থাৎ এই তৃতীয় মাযহাবের দলীলরূপে নিম্নের হাদীসটিকেও পেশ করা হচ্ছে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেন- আল্লাহ আমার উম্মতের উপর থেকে ভুল ও বিস্মৃতিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন এবং বাধ্য হয়ে কৃত ভুল ও অপরাধকেও মাফ করেছেন ।” কিন্তু এটা চিন্তাযযাগ্য বিষয়। হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, একটি লোক নবী ( সঃ )-এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করেঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! যদি আমাদের মধ্যকার কোন লোক যবাই করে এবং বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে যায় তবে হুকুম কি?” তিনি উত্তরে বলেনঃ “মুসলমানদের মুসলমান হওয়াটাই যথেষ্ট । সে স্বয়ং তো আল্লাহর নাম বা প্রত্যেক মুসলমানের উপর আল্লাহর নাম রয়েছে। কিন্তু এই হাদীসটির ইসনাদ দুর্বল। এর বর্ণনাকারী হচ্ছে মারওয়ান ইবনে সালিম ও আবু আবদিল্লাহ শামী। এদের সম্পর্কে বহু ইমাম সমালোচনা করেছেন। এই মাসআলার উপর আমি একটি পৃথক রিসালা লিখেছি এবং তাতে ইমামদের মাযহাব, ওর উৎস, তাদের দলীল ইত্যাদি সবকিছুর উপরই আলোকপাত করেছি। আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন।ইবনে জারীর ( রঃ ) বলেন, আহলুল ইলম এ ব্যাপারে মতভেদ করেছেন যে, এই আয়াতের হুকুম কি মানসূখ বা রহিত কি-না? কেউ কেউ বলেন যে, হুকুম মানসূখ নয় বরং এর হুকুম বাকী আছে এবং তা আমলের যোগ্য। মুজাহিদ ( রঃ ) ও সাধারণ আহলুল ইলমের এটাই উক্তি । যদি হুকুম মানসূখ হতো তবে মুজাহিদ ( রঃ ) প্রমুখের উক্তি এটা হতো না। ইকরামা ( রঃ ) এবং হাসান বসরী ( রঃ ) বলেন, আল্লাহ তা'আলা বলেছেন-যার উপর আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে তা তোমরা খাও যদি তোমরা আল্লাহর আয়াতসমূহের উপর ঈমান এনে থাক। এই জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ যার উপর আল্লাহর নাম নেয়া হয়নি তা তোমরা খেয়ো না, কেননা এটা গর্হিত বস্তু। অতএব, এই আয়াতটি মানসূখ, কিন্তু নিম্নের আয়াতটি এর থেকে স্বতন্ত্র।( আরবী ) অর্থাৎ “ আহলে কিতাবের খাদ্য তোমাদের জন্যে হালাল এবং তোমাদের খাদ্য তাদের জন্যে হালাল ।( ৫:৫ ) ইবনে আবি হাতিমের উক্তি এই যে, আল্লাহ তা'আলা কুরআন কারীমে বলেছেন- যার উপর আল্লাহর নাম নেয়া হয়নি তা তোমরা খেয়ো না। অতঃপর এটা তিনি মানসূখ করতঃ মুসলমানদের উপর দয়া করেছেন এবং এর পর তিনি বলেছেন, এখন সমস্ত পবিত্র জিনিস তোমাদের জন্যে বৈধ করা হলো। এবং আহলে কিতাবের যবাইকৃত জীবও তোমাদের জন্যে হালাল। সুতরাং প্রথম হুকুমকে তিনি এই আয়াত দ্বারা মানসূখ করলেন এবং আহলে কিতাবের যবাইকৃত জীবও হালাল ঘোষণা করলেন। ইমাম ইবনে জারীর ( রঃ ) বলেন-সঠিক কথা তো এটাই যে, আহলে কিতাবের খাদ্য হালাল হওয়া এবং আল্লাহর নাম নেয়া হয়নি এমন যবাইকৃত জীব হারাম হওয়ার মধ্যে পরস্পর কোন বৈপরীত্য নেই। এই বর্ণনাটিই বিশুদ্ধ হওয়ার দাবীদার। আর যিনি একে মানসূখ বলেছেন তিনি এটাকে খাস বা নির্দিষ্ট করে নিয়েছেন মাত্র, এ ছাড়া আর কিছুই নয়। আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন। আল্লাহ পাক বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ শয়তানরা তাদের বন্ধুদের কাছে তাদের কথাগুলো অহী করে থাকে, উদ্দেশ্য এই যে, তারা ( তাদের বন্ধুরা ) যেন তোমাদের ( মুসলমানদের ) সাথে বিতর্কে লিপ্ত হতে পারে । একটি লোক হযরত ইবনে উমার ( রাঃ )-কে বললোঃ মুখতারের এই দাবী যে, তার কাছে না কি অহী আসে? হযরত ইবনে উমার ( রাঃ ) উত্তরে বলেনঃ ‘সে সত্য কথাই বলেছে। অতঃপর তিনি ( আরবী )-এই আয়াতটি পাঠ করেন। আবু যামীল হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ আমি একদা হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ )-এর কাছে বসেছিলাম। সেই সময় মুখতার হজ্ব করতে এসেছিল। তখন একটি লোক হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ )-এর কাছে এসে বলে- “ হে ইবনে আব্বাস ( রাঃ )! আবু ইসহাক ( অর্থাৎ মুখতার ) ধারণা করছে যে, আজ রত্রে নাকি তার কাছে অহী এসেছে ।” এ কথা শুনে হযরত ইবনে আব্বাস ( ৰাঃ ) বলেন, “ সে সত্য কথাই বলেছে ।” আমি তখন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লাম এবং মনে মনে ভাবলাম যে, ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) তাকে সত্যায়িত করছেন! অতঃপর হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন, “ অহী দু’ প্রকার । একটি হচ্ছে আল্লাহর অহী এবং অপরটি হচ্ছে শয়তানের অহী । আল্লাহর অহী আসে হযরত মুহাম্মাদ ( সঃ )-এর নিকট এবং শয়তানের অহী এসে থাকে তার বন্ধুদের নিকট ।” তারপর উপরোক্ত আয়াতটিই পাঠ করেন। ইকরামা ( রঃ ) হতে অনুরূপ উক্তিও পূর্বে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলার ( আরবী ) -এ উক্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে। নবী ( সঃ )-এর সাথে ঝগড়া করতো এবং বলতোঃ “ এটা কি বিস্ময়কর ব্যাপার যে, যে জীবকে আমরা হত্যা করবো সেটা আমরা খেতে পারবো, আর আল্লাহ যেটা হত্যা করবেন সেটা আমরা খেতে পারবো না ।” তখন ( আরবী ) -এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। এটাকে 'মুরসাল’ রূপে বর্ণনা করা হয়েছে। ইমাম আবু দাউদ ( রঃ ) মুত্তাসিল' রূপেই বর্ণনা করেছেন। কয়েকটি কারণে এটা চিন্তার ব্যাপার। প্রথমতঃ ইয়াহূদীরা মৃত প্রাণীকে তো খাওয়া বৈধই মনে করতো না। তাহলে এই ব্যাপারে তারা কেনই বা মতবিরোধ করতে যাবে। দ্বিতীয়তঃ এই আয়াতটি সূরায়ে আনআমে রয়েছে আর সূরায়ে আনআম হচ্ছে মক্কী সূরা। অথচ ইয়াহুদীরা বাস করতো মদীনায়। তৃতীয়তঃ এই হাদীসটি ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণনা করেছেন। আর ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) বলেন যে, লোকেরা অর্থাৎ ইয়াহূদীরা নবী ( সঃ )-এর কাছে এসেছিল। তারপর তিনি এ হাদীসটি বর্ণনা করেন। আর এটা বিস্ময়কর কথাই বটে! হাসান ( রঃ ) বলেন যে, এ হাদীসটি ‘গারীব'। সাঈদ ইবনে জুবাইর ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, এটা একটা মুরসাল হাদীস। তিবরানী ( রঃ ) হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণনা করতে গিয়ে লিখেছেন-“ যে যবাইকৃত জীবের উপর আল্লাহর নাম নেয়া হয়নি তা তোমরা খেয়ো না ।' যখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় তখন পারস্যবাসী মক্কায় কুরায়েশদেরকে লিখে পাঠায়ঃ “ মুহাম্মাদের সাথে তোমরা এ বিষয়ে তর্ক বিতর্ক কর এবং তাকে বল- যে জীবকে তোমরা ছুরি দিয়ে হত্যা করলে তা হালাল হলো, আর যেটাকে আল্লাহ স্বীয় সোনালী তরবারী দিয়ে হত্যা করলেন সেটা হারাম হয়ে গেল, এটা কি ধরনের কথা?” সেই সময় এ আয়াতটি অবতীর্ণ হলো- শয়তানরা তাদের বন্ধুদেরকে শিখিয়ে থাকে যে, তারা যেন মুসলমানদের সাথে সদা সর্বদা ঝগড়া-বিবাদ ও তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত থাকে । সুতরাং হে মুসলমানরা! যদি তোমরা তাদের কথা মত মৃতকেও হালাল মনে করতে থাক তবে তোমরাও মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। ভাবার্থ এই যে, পারস্যের শয়তানরা কুরায়েশদের কাছে অহী পাঠাতো। ইবনে আব্বাস ( রাঃ )-এর হাদীসে ইয়াহুদীদের উল্লেখ নেই এবং প্রতিবাদ থেকে বাঁচবার একমাত্র রূপ এটাই। কেননা, আয়াতটি মক্কী এবং এটাও যে, ইয়াহূদীরা তো মৃতকে পছন্দ করতো না। আবার কোন কোন শব্দে ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে- “ তোমরা যে জীবকে নিজেরা হত্যা কর তার উপর আল্লাহর নাম থাকে এবং যা নিজে নিজেই মরে যায় ওর উপর আল্লাহর নাম থাকে না ( এটা কেমন কথা )!” পারস্যবাসীর শিকানোর ফলে মুশরিকরা রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর সাহাবীদের কাছে যখন এই প্রতিবাদ করলো তখন মুসলমানদের অন্তরে একটা সন্দেহ জেগে উঠলো, সেই সময় এই আয়াত অবতীর্ণ হলো । সুদ্দী ( রঃ ) এই আয়াতের তাফসীরে বলেছেন, মুশরিকরা মুসলমানদেরকে বলেছিল-“ তোমরা এই দাবী তো করছো যে, তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টিই কামনা কর, অথচ আল্লাহর হত্যাকৃত জীব তোমরা খাও না, কিন্তু নিজের হত্যাকৃত জীব খাচ্ছ ।” তাই আল্লাহ বলছেনঃ তোমরা যদি তাদের দলীলের প্রতারণায় পড়ে যাও তবে তোমরাও মুশরিক হয়ে যাবে। যেমন তিনি বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ তারা আল্লাহকে ছেড়ে তাদের নেতা ও পুরোহিতদেরকে নিজেদের প্রভু বানিয়ে নিয়েছে ( এবং তাদেরই ইবাদত করতে শুরু করেছে )।” ( ৯:৩১ ) তখন আদী ইবনে হাতিম ( রাঃ ) বলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! তারা ঐ পুরোহিত নেতাদের তো ইবাদত করে না ।” তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ ঐ নেতা ও পুরোহিতরা হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল করে দিয়েছে, আর ঐ লোকগুলো এদের কথা মেনে নিয়েছে । এটাই হচ্ছে তাদের ইবাদত করা।”

সূরা আনআম আয়াত 121 সূরা

ولا تأكلوا مما لم يذكر اسم الله عليه وإنه لفسق وإن الشياطين ليوحون إلى أوليائهم ليجادلوكم وإن أطعتموهم إنكم لمشركون

سورة: الأنعام - آية: ( 121 )  - جزء: ( 8 )  -  صفحة: ( 143 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. নিশ্চয় মুসলমান পুরুষ, মুসলমান নারী, ঈমানদার পুরুষ, ঈমানদার নারী, অনুগত পুরুষ, অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ,
  2. তারা আল্লাহ এবং ঈমানদারগণকে ধোঁকা দেয়। অথচ এতে তারা নিজেদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে ধোঁকা দেয়
  3. তারা কি নির্ভীক হয়ে গেছে এ বিষয়ে যে, আল্লাহর আযাবের কোন বিপদ তাদেরকে আবৃত করে
  4. সমস্ত জীবের মাঝে আল্লাহর নিকট তারাই সবচেয়ে নিকৃষ্ট, যারা অস্বীকারকারী হয়েছে অতঃপর আর ঈমান আনেনি।
  5. তবুও ওরা একথাই বলবে যে, আমাদের দৃষ্টির বিভ্রাট ঘটানো হয়েছে না বরং আমরা যাদুগ্রস্ত হয়ে
  6. আসক্তির কারণে তাদের শীত ও গ্রীষ্মকালীন সফরের।
  7. তথা স্থায়ী বসবাসের জান্নাত; তাদের জন্যে তার দ্বার উম্মুক্ত রয়েছে।
  8. তাদের সামনে ভালবাসার সাথে, নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বলঃ হে পালনকর্তা, তাদের উভয়ের
  9. কিন্তু সে মিথ্যারোপ করল এবং অমান্য করল।
  10. আমার কাজ তো এক মুহূর্তে চোখের পলকের মত।

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আনআম ডাউনলোড করুন:

সূরা Anam mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Anam শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত আনআম  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত আনআম  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত আনআম  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত আনআম  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত আনআম  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত আনআম  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত আনআম  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত আনআম  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত আনআম  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত আনআম  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত আনআম  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত আনআম  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত আনআম  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত আনআম  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত আনআম  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত আনআম  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত আনআম  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত আনআম  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত আনআম  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত আনআম  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত আনআম  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত আনআম  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত আনআম  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত আনআম  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত আনআম  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Tuesday, July 16, 2024

Please remember us in your sincere prayers